Deeptam Dutta - Ki Camera Kinbo

You might also like

Download as docx, pdf, or txt
Download as docx, pdf, or txt
You are on page 1of 9

"কি ক্যামেরা কিনবো?

"
Deeptam Dutta
"কি ক্যামেরা কিনবো?" এই প্রশ্নটা মাঝে মাঝেই গ্রূপে আসে। অনেকেই বিভিন্ন সুপরামর্শ দেন। সেগুলো আবার অনেকের
বোধগম্য হয়না, তারা অভিযোগ করেন এত টেকনিক্যাল বর্ণনা তারা বোঝেন না। তাই ভাবলাম আমিও এই সুযোগে একটু
জ্ঞান দিই, কিন্তু অনেকটা জল মিশিয়ে। যারা ফটোগ্রাফী গুরু তাদের আন্তরিক শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, বুঝতেই পারছেন জল
মেশানো জ্ঞান দিতে যাচ্ছি, ক্ষমাঘেন্না করে দেবেন।
প্রথমে কয়েকটা disclaimer দিয়ে দি-
1)এখানে ফটোগ্রাফী শেখাবো না। তার জন্য এই গ্রূপে অনেক পোস্ট আছে। youtube আছে। এখানে শুধু নতু ন ক্যামেরা /
মোবাইল ও তাদের এক্সেসরিজ কেনার কথা হবে।
2)ধরে নিচ্ছি আপনার একটা মোবাইল আছে যাতে ছবি তোলা যায়। কোনো কারণে সেটার তোলা ছবিতে আপনি সন্তুষ্ট
নন, বা সেটার ক্ষমতার বাইরে এমন কিছু ছবি আপনি তু লতে চান।
3)বাজেট কম রেখে আলোচনা করবো, বুঝতেই পারছেন, যত গুড় তত মিষ্টি, এই নীতিতে বাজেট বাড়ালে আরো বেশী
ক্ষমতাওলা ক্যামেরা ইত্যাদি আপনি পাবেন।
- শুরু হোক হাতের মোবাইল টা দিয়েই। একটু ভালো সব স্মার্ট ফোন এর ক্যামেরা তেই ম্যানুয়াল মোড আছে। সাধারণত
এটা PRO MODE নামে পরিচিত। নিজে বা কাউকে দিয়ে ওই মোড টা খুঁজে বের করুন। এছাড়াও প্লে স্টোর থেকে অন্য
একটা ক্যামেরা app নামান। যেমন OPEN CAMERA। এই app টি Auto মোডেই আপনার ফোনের ক্যামেরার ওপর
আপনার অনেক বেশী কন্ট্রোল দেবে যেটা অনেক ফোনেই কোম্পানির ডিফল্ট ক্যামেরায় পাওয়া যায়না। তো এই দুই উপায়
চেষ্টা করুন। PRO MODE শেখার জন্য Youtube দেখুন বা উপযুক্ত লোকের সাহায্য নিন। যদি রেজাল্ট আপনার
মনমতো হয় তাহলে আপনার নতু ন ফোন কেনার দরকার নেই আপাতত।
- আসি দ্বিতীয় ক্ষেত্রে। আপনার বর্ত মান ফোনের তোলা ছবি পছন্দ হচ্ছেই না, নতু ন একটা মোবাইল চাইই চাই। বা বর্ত মান
ফোনটা অনেকদিনের পুরোনো, নতু ন কেনার সময় আপনার first priority ভালো ক্যামেরা।
আজকাল সব ফোনের বিজ্ঞাপনে দেখবেন AI ক্যামেরার উল্লেখ করে। আমার পরামর্শ, ফোন কিনুন সম্পূর্ণ আপনার বাজেট
অনুযায়ী,শুধু দেখে নেবেন AI(Artificial Intelligence) ক্যামেরা আছে কিনা। এর সুবিধা হলো মোবাইল নিজেই
বেশীরভাগ সময় ফটো তোলার আগে বুঝে যায় আপনি কিসের ছবি তু লতে যাচ্চেন আর সেই অনুযায়ী কিছু প্যারামিটার
চেঞ্জ করে। যেমন ল্যান্ডস্কেপ/ফু ড/নাইট/টেক্সট ইত্যাদি। এছাড়াও লেটেস্ট সব ফোনেই ফটো তোলার সুবিধার্থে অনেক
অনেক অনেক feature দেওয়া হচ্ছে।
- অনেক সুবিধার কথা ছেড়ে আমি একটু বলি আমার মতে কোন কোন ক্ষেত্রে মোবাইল ক্যামেরা একটু পিছিয়ে আছে।
1)জুম। যত দামিই হোক মোবাইল ক্যামেরার অপটিক্যাল জুম যতদূর জানি 3x আছে। সেখানে তার অর্ধেক দামী কম্প্যাক্ট
ক্যামেরাতে 5x থেকে 10x জুম পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত অপটিক্যাল জুমই আসল জুম, ডিজিটাল জুম আপনি যখন ইচ্ছা করতে
পারেন, ফটো তোলার পরও। সেটাই করা উচিৎ আমার মতে, একটা কপি রেখে।
2)শাটার ল্যাগ। আপনি শাটার টেপার কতক্ষন পর ছবি উঠছে আর পরবর্তী ছবি তোলার জন্য আপনাকে কতক্ষণ অপেক্ষা
করতে হচ্ছে। DSLR এই দিকে সবচেয়ে এগিয়ে, পিছনেই আছে মিররলেস। আধুনিক মোবাইল ও কমপ্যাক্ট ক্যামেরার
শাটার ল্যাগ প্রায় সমান কিন্তু কম্প্যাক্ট ক্যামেরার ফোকাসিং অনেক দ্রুত হওয়ায় এগিয়ে রাখবো। মোবাইল এ অনেক app
রেখে অনেকে সেটাকে স্লো করতে বাধ্য হন। ক্যামেরায় সেই অসুবিধা টা নেই।
3)ব্যাটারী। মোবাইলে অনেক কাজ একসঙ্গে করতে হয়, বিশেষত বেড়াতে গিয়ে। সেক্ষেত্রে দিনের শেষে ব্যাটারী কম পড়তে
পারে। সঙ্গে পাওয়ার ব্যাংক রেখে এই সমস্যা এড়ানো যায়।
4)ফ্ল্যাশ। মোবাইল এর ফ্ল্যাশ এর পাল্লা কম এবং আলোর পরিমান কম বেশী (flash compensation) করা যায়না।
অনেকে বাড়তি আলো লাগান মোবাইলে কিন্তু তাতেও আলো বাড়লেও পাল্লা বাড়ে না। in fact, মোবাইল ও ক্যামেরাও
ফ্ল্যাশ টেকনোলজিটাই আলাদা। ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জেনন গ্যাসটিউব ব্যবহার করে, আর মোবাইল এ ব্যবহার হয় অনেক কম
শক্তির LED।
আরো কিছু অসুবিধা আছে মোবাইল ক্যামেরার। কিন্তু থাক, প্রিয় মোবাইল এর বেশী নিন্দা করতে মন চায়না 😊
কারণ অনেক ক্ষেত্রেই ওটা দিয়েই ছবি তোলা সবচেয়ে সোজা, পকেট থেকে বের করলেই হলো।
- আজ এইটু কুই থাক। মোবাইল ক্যামেরা নিয়ে কারো প্রশ্ন থাকলে জানান। পরের পর্বে লিখবো কম্প্যাক্ট/ব্রীজ/সুপারজুম
ক্যামেরা নিয়ে।

আলোচনার দ্বিতীয় পর্বে যাবার আগে আগের পর্বে একটু ভু ল করেছিলাম, সংশোধন করে দিই। শাটার ল্যাগ এর মিররলেস
ও DSLR দুটোতেই সমান, মানে প্রায় নেইই।
আজ আমরা কথা বলবো মোবাইল ক্যামেরা নিয়ে যদি আপনার সন্তুষ্টি না আসে, সেক্ষেত্রে কি ক্যামেরা কিনতে পারেন সেই
বিষয়ে।
শুরু করি একটু অন্য ধরনের ক্যামেরা দিয়ে, যাদের বলে একশন ক্যামেরা ( Action Camera). এই ক্যামেরাগুলো
পরিচিত এদের দারুন জীবনীশক্তির জন্য। জল, ধুলো, বরফ, ছোটোখাটো ধাক্কা, হাত থেকে পড়ে যাওয়া, এইসব এদের
জলভাত। গায়ে আঁচড় ও পড়ে না 😊 এদের মধ্যে আবার দুটো ভাগ আছে যদিও তাদের মধ্যে পার্থক্যটা অস্পষ্ট। মোটামুটি
ভাবে বললে একদল আছে যারা আকারে ছোট, কোনো ফ্ল্যাশ নেই, অপটিক্যাল জুম ও নেই। এই ক্যামেরা গুলো বাজারে
অপেক্ষাকৃ ত নতু ন। একটা ব্র্যান্ড এর নাম অনেকেই শুনেছেন, GoPro। এই ধরনের একশন ক্যামেরার সুবিধা হলো শরীরে
বা হেলমেটের সঙ্গে বা বাইক ও গাড়ীতে শক্ত করে আটকে নেওয়া যায়। যারা এডভেঞ্চার স্পোর্ট স, বাইক ট্যুর, বা জলের
তলায় ফটো তোলার ইচ্ছা রাখেন তারা এই ধরনের ক্যামেরা একটা নিতে পারেন। মোবাইল এর সঙ্গে এদের মিল বেশী।
কিছু নতু ন একশন ক্যামেরা 180 ডিগ্রী ভিউ এ ভিডিও তু লতে পারে, বেড়ানোর ভিডিও বানানোর জন্য অনেক
YouTuber এই ধরণের ক্যামেরা ব্যবহার করেন।
অন্য ধরণের একশন ক্যামেরা বাজারে অনেকদিন থেকেই আছে। প্রায় সব ক্যামেরা কোম্পানির এই ধরনের এক বা
একাধিক মডেল আছে। লেখার শেষে আমি কয়েকটি মডেলের ছবি ও দাম জানার জন্য অনলাইন লিঙ্ক দেব। এই গুলোকে
Rugged body ক্যামেরা ও বলে। এদের ফ্ল্যাশ ও অপটিক্যাল জুম দুইই আছে, কিন্তু এগুলো আকারে একটু বড়, নতু ন
একশন ক্যামেরার তু লনায়। প্রধানত প্রতিকূল পরিবেশে স্টিল ছবি তু লতে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন, তবে আগে উল্লেখ
করা নতু ন একশন ক্যামেরার মতো দীর্ঘ সময় ভিডিও করতে অসুবিধা হবে এতে। বুঝতেই পারছেন দুই ধরনের একশন
ক্যামেরার পার্থক্য শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত প্রয়োজন অনুযায়ী। আকারে ছোট হবার জন্য গোপ্রো জাতীয় ক্যামেরার চাহিদাও
বেশী।
একশন ক্যামেরার ব্যাপারে খুবই সংক্ষেপে বললাম। আজকাল এই ধরনের ক্যামেরার চাহিদা বাড়ছে। অনেকেই শরীরে বা
বাইকে এগুলো লাগিয়ে বেড়ানোর প্রতিটি মুহূর্ত রেকর্ড করে রাখছেন। আন্দামান বা লাক্ষাদ্বীপ বেড়াতে গিয়ে স্কু বা করলে
এই ক্যামেরা আপনার ছবিতোলার সাধ পূর্ণ করবে। যাদের হাত থেকে দামী ক্যামেরা পড়ে যাবার ভয় আছে তাদের জন্য
তো এই একশন ক্যামেরাই চাই 😊 অনেকেই অন্য কোনো High-end ক্যামেরার সঙ্গে একটা একশন ক্যামেরা রাখেন ,
কারণ সেটা আলাদা করে চালাতে হয়না, রেকর্ডি ং শুরু করে মাথায় বা কাঁধে লাগিয়ে রাখলেই হলো।
এই ব্যাপারে কারো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই জানান।

 এর পরেই আসে কম্প্যাক্ট ক্যামেরা, কিন্তু সেখানে যাবার আগে অন্য দুরকম প্রচলিত ক্যামেরার কথা বলে এই
পর্ব শেষ করবো।
1) ভিডিও ক্যামেরা - সবাই জানেন। অনেকের বাড়িতেই আছে। বেড়াতে গিয়ে পুরো জার্নিটার ভিডিও করতে এই ক্যামেরা
বেস্ট। এই মূল সুবিধা বিরাট জুম এর পাল্লা। বহুদূরের জিনিসের ভিডিও তু লতে এই ক্যামেরা ছাড়া গতি নাই। বর্ত মানে
4K ভিডিও তোলা যায় এতে। স্টিল ছবির মান অবশ্য এতে ভালো না।
2) ইনস্ট্যান্ট ক্যামেরা - বেড়াতে নিয়ে যাবার জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়। এর মূল আকর্ষণ সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা থেকেই
একটা বর্গাকার ছবি প্রিন্ট হয়ে বেরিয়ে আসে। আজকাল যদিও কেউ ছবি প্রিন্ট প্রায় করেই না। জন্মদিন বা ওই জাতীয়
পার্টি তে অনেকে এই ধরনের ইন্সট্যান্ট ক্যামেরা ব্যাবহার করেন।
আজ এইটু কুই থাক। আবার লিখবো পরের পর্বে

তৃ তীয় পর্বে আমরা আলোচনা শুরু করবো কম্প্যাক্ট ক্যামেরা নিয়ে এবং এগিয়ে যাবো ব্রীজ বা সুপারজুম ক্যামেরার দিকে।
কম্প্যাক্ট ক্যামেরা অর্থাৎ যার লেন্স ফিক্সড, লেন্স খুলে পরিবর্ত ন করা যায় না এবং যেসব ক্যামেরা ½ ইঞ্চি সেন্সর ব্যবহার
করে (কিছু ব্যতিক্রম আছে).
কম্প্যাক্ট ক্যামেরা বেশ কিছু বছর আগে DSLR এর থেকে বেশী বিক্রি হতো, যতদিন না মোবাইল এ দারুন দারুন
ক্যামেরা আসতে শুরু করলো। এইগুলো আকারে ছোট এবং সহজেই কর্ত ার প্যান্টের পকেটে বা গিন্নীর পার্সে ফিট করে যায়।
নিকন এর কুলপিক্স সিরিজ, ক্যানন এর IXUS সিরিজ, সোনি এর সাইবারশট সিরিজ এগুলো বিখ্যাত কম্প্যাক্ট ক্যামেরার
সিরিজ। অন্যান্য কোম্পানির ও আছে।
যারা মোবাইল ক্যামেরায় সন্তুষ্ট নন কিন্তু DSLR এর জটিলতা বুঝতে বা ওজন বইতে চান না তাদের জন্য কম্প্যাক্ট
ক্যামেরা আদর্শ। দিনের স্পষ্ট আলোয়, যেকোনো কম্প্যাক্ট ক্যামেরার তোলা ছবিতে আপনার আপসোস করার কোনো
কারণ থাকবে না, এটু কু বলতে পারি। আপনার DSLR ওয়ালা সঙ্গীর সঙ্গে আপনার তোলা ছবি (একই সেটিংস এ) খুব
খুঁতখুঁতে না হলে খুঁজে পাবেন না।
একটু টেকনিক্যালি পিছিয়ে থাকার জন্য ( Sensor Size Difference) কম আলোতে বিনা ফ্ল্যাশ এ কম্প্যাক্ট ক্যামেরার
ছবি DSLR এর তু লনায় খারাপ (Noise) হয়। যদি আপনি এমন কোনো জায়গায় ছবি তু লতে চান যেখানে আলো খুব
কম কিন্তু ফ্ল্যাশ ব্যবহার করা যায় না, তাহলে মুশকিল হবে কম্প্যাক্ট ক্যামেরা নিয়ে।তবে এই পার্থক্য দিন কে দিন কমে
আসছে নতু ন মডেলে।
এর পরেই আসছে ব্রীজ ক্যামেরা বা সুপারজুম ক্যামেরা। এমন নামকরণ এর কারণ এই মডেলগুলো দেখতে প্রায় DSLR
এর মত এবং বেশ কিছু DSLR সুলভ feature দেওয়া থাকে (eg. RAW file)। এরা কম্প্যাক্ট এবং DSLR এই দুই দলের
মধ্যে ব্রীজ এর মত। এদের জুম এর পাল্লাও অনেক বেশী, তাই সুপারজুম নাম। যদিও অন্তরের অন্তঃস্থলে এরা সেই ছোট্ট
সেন্সরওয়ালা কম্প্যাক্ট ক্যামেরাই। এই মুহূর্তে DSLR না কিনতে চাইলে এই সুপারজুম ই বেস্ট অপশন। Nikon P1000
সুপারজুম এই মুহূর্তে অনেকের কাছেই একটি খুবই প্রিয় মডেল। এই জুম এই মুহূর্তে বাজারের সবচেয়ে বেশী। এছাড়াও
অনেক কম্প্যাক্ট ক্যামেরা আছে যাদের একেকজনের একেকটি বিশেষ গুনের কারণে লোকে পছন্দ করে এবং সেই বিশেষ
feature এর জন্য লোকে কেনে। একটি উদাহরণ দিই প্যানাসনিক এর FZ সিরিজ এর ক্যামেরা তে aparture f2.8
(across the zoom range) , কোম্পানীর দাবী অনুযায়ী যা কম আলোতেও ভালো ছবি তোলার সহায়ক।
DSLR এর তু লনায় কম্প্যাক্ট ক্যামেরার সুবিধা খুবই কম তাও আমার মতে কয়েকটি জায়গায় কম্প্যাক্ট ক্যামেরায় কিছু
সুবিধা পাওয়া যায়, যেমন -

1. দাম কম।
2. ব্যবহার এর জটিলতা কম।
3. মোটামুটি সিল্ড বডি হবার জন্য ধুলো ও ফাঙ্গাস কম পরে। (This is a nightmare for DSLR users)
4. একটানা বেশী সময় ভিডিও করতে পারবেন DSLR এর তু লনায় এবং ভিডিও চলাকালীন স্টিল তু লতে
পারবেন (This feature is now present at high end DSLR)

কম্প্যাক্ট ক্যামেরার ব্যাপারে আরো কোনো প্রশ্ন থাকলে জানান।


চলে আসি পরবর্তী টপিক এ, DSLR ক্যামেরা।
অনেকের ভ্রান্ত ধারণা, DSLR মানেই ভালো ছবি নিশ্চিত। না, মোটেই না। তু লনা দিই, মারুতি অল্টো আর মাহিন্দ্রা থর,
দুটো গাড়ী নিয়েই আপনি গুরুদোঙ্গমার যেতে পারেন, যদি আপনি সেই অর্থে গাড়ী চালাতে জানেন, কিন্তু থর এ গেলে গাড়ি
চালাতে অনেক আরাম, ওতে থাকা ফোর wheel ড্রাইভের জন্য। এটাই পার্থক্য।
DSLR এবং মিররলেস এই দুই এর অনেক পার্থক্য আছে কিন্তু সেই গল্পে আমি ঢু কবো না, কারণ সেই টেকনিক্যাল জার্গণ
অনেকের পছন্দ হবে না। কেনার ব্যাপারে বলি, ফটোর কোয়ালিটি দুটোরই এক (হ্যাঁ , সাধারণ চোখে কোনো ফারাক ই
পাবেন না), এবার DSLR না মিররলেস সেটা আপনার পছন্দ। কয়েকটা সুবিধা অসুবিধা বলি -

1. DSLR এর ব্যাটারী ব্যাকআপ ভালো মিররলেস এর তু লনায়। (however NOT in every case,
exception আছে)
2. মিররলেস আকারে ছোট, ওজন কম।
3. এই মুহূর্তে DSLR এর লেন্স এর সম্ভার বেশী। মিররলেস এর লেন্সের দাম বেশি, সম্ভার ও কম।

আরো কিছু পার্থক্য আছে, আপাতত উল্লেখ্য নয়।


DSLR নিয়ে আর কিছু বলবো না, কারণ আমার মতে যদি আপনি নতু ন DSLR বা মিররলেস কিনবেন তো নিজের
বাজেট অনুযায়ী কিনুন। তবে বাজেট এর মধ্যে এগুলো রাখবেন-

1. ক্যামেরা ও তার সঙ্গে প্রথম কেনা একটি বা দুটি লেন্স। সাধারণত এই সঙ্গেই কেনার Bundle অফার দেয়
কোম্পানী।
2. ক্যামেরা ব্যাগ। (যদি না আপনি ফ্রী যে ব্যাগটা পেয়েছেন ক্যামেরার সঙ্গে সেটাতে খুশি থাকেন।)
3. মেমোরী কার্ড (যদি না আপনি ফ্রী যে কার্ড টা পেয়েছেন ক্যামেরার সঙ্গে সেটাতে খুশি থাকেন।)
4. ট্রাইপড বা ওই জাতীয় কিছু stabilizar (এই নিয়ে পরের পর্বে আমরা আলোচনা করবো)
5. লেন্স ফিল্টার।
6. এই লেন্স গুলো পছন্দ না হলে নতু ন লেন্স 😊
7. আরো নতু ন লেন্স 😊 😊 ইত্যাদি

আজকের মত এটু কুই। অনেক কিছু বাদ পড়লো জানি। বিশেষ কিছু জানতে চাইলে প্লিজ প্রশ্ন করুন।
পরের পর্বের আলোচনা ক্যামেরা stabilization (tripod, monopod, bean bag etc) এইসব নিয়ে। ওটাই শেষ পর্ব

এই আলোচনার শেষ পর্বে আমরা কথা বলবো ক্যামেরা stabilization নিয়ে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অবহেলিত একটি
বিষয়। ব্যাপারটা সংক্ষেপে বলি। ছবি তোলার সময় যেকোনোভাবে ক্যামেরা সামান্য নড়ে গেলেও ছবিতে তার প্রভাব দেখা
যায়। বিভিন্ন বস্তুর outline অস্পষ্ট হয়ে যায় বা মানুষের মুখ ঝাপসা লাগে 😊 কম আলোতে ছবি তু ললে এই সমস্যা বেড়ে
যায় কারণ শাটার স্পিড কম থাকার জন্য ছবিটা তু লতে ক্যামেরার সময় বেশী লাগে, ফলে কাঁপুনি ও তার প্রভাবও বেড়ে
যায়।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য ক্যামেরা কোম্পানী অনেক চেষ্টা করে চলেছে। DSLR বা মিররলেস এই ব্যবস্থা VR
(Vibration Reduction) বা IS (Image Stabilization) নামে পরিচিত যা ক্যামেরা বা লেন্সে কোম্পানি ফিট করে
দেয়। VR system দিন কে দিন উন্নত হচ্ছে কিন্তু তাও কিছু ক্ষেত্রে খালি হাতে ছবি তোলা খুবই মুস্কিল (কেউ কেউ
পারেন, আমি জানি)যেমন লং এক্সপোজার এর সময়, যখন আপনি ছায়াপথ বা নিদেনপক্ষে ছায়াঘেরা জঙ্গলে ঝর্ণার ছবি
তু লছেন। আপনি যদি এইসব ছবি নাও তোলেন, তাহলেও অনেকগুলো সিড়ি ঁ ভেঙে যখন মন্দিরে , ঝরনায় বা পাহাড়ের
চূ ড়ায় পৌঁছালেন, হাঁফ ছাড়তে ছাড়তে ছবি তু লতে গেলে হাত কেঁ পে যাবার প্রভূ ত সম্ভাবনা। আরেকটা জিনিস, যত জুম
করে ছবি তু লবেন, হাত কাঁপার এফেক্ট তত বেশী দেখা যাবে।
এইখানে আপনার প্রয়োজন ক্যামেরা stabilizar এর। বাজারে অনেক ধরণের ক্যামেরা stabilizar আছে, পায়ের সংখ্যার
ভিত্তিতে এরা সাধারণত দুই রকম -
ট্রাইপড- 3 পেয়ে
মনোপড -1 পেয়ে (বাকি দুটো পা ফটোগ্রাফার এর)
আশা করি ছোট থেকে স্টু ডিওতে ফটো তু লতে গিয়ে ট্রাইপড এর দর্শন সবাইই পেয়েছেন। মনোপড প্রধানত বিয়েবাড়ি,
খেলার মাঠ, বা ঐরকম কোনো জায়গায় ব্যবহার হয় যেখানে ট্রাইপড এর তিনটে ঠ্যাং মেলে ধরলে লোকে হোঁচট খেতে
পারে বা পাশের ফটোগ্রাফার এর জায়গার অসুবিধা হতে পারে।
ট্রাইপড আকার অনুযায়ী মোটামুটি 4 রকম হয়, যথা-

1. প্রমান সাইজের ট্রাইপড। এগুলো পুরো মেলে ধরলে প্রায় আট ফু ট বা বেশি উঁচু হয়। প্রফেশনাল ফোটগ্রাফাররা
স্টু ডিওতে ব্যবহার করে থাকেন।TV সম্প্রচার করার সময় ভিডিও ক্যামেরা লাগানো হয় এতে, দেখে থাকবেন।
ফোল্ড করা অবস্থায় ও বেশ লম্বা ও ভারী হয়। এটা নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার কথা ভাবলে বাড়িতে অশান্তির
সম্ভাবনা আছে 😊
2. ট্রাভেল ট্রাইপড- আকারে ছোট। উচ্চতাও একটু কম, 6-7 ফু ট মতো হয়। বেশী ভাঁজ করে ছোট করা যায়
(more leg sections)। একদম সস্তা (eg Simpex) থেকে বেশ দামী (eg-Manfrotto) পাওয়া যায়। সস্তার
গুলো এলুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি, দামি ট্রাইপড তৈরি হয় কার্বন ফাইবার দিয়ে ফলে সেগুলো হালকা কিন্তু মজবুত
হয়। ট্রাইপড এর যেখানটায় ক্যামেরা আটকানো হয় সেটাকে ট্রাইপড হেড বলে। দু রকমের ট্রাইপড হেড হয় ,
Pan & Tilt type Head এবং Ball Head। দুটোরই কিছু টেকনিক্যাল সুবিধা অসুবিধা আছে, যেটা ইচ্ছা নিতে
পারেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বল হেড পছন্দ করি, তবে আপনার ক্যামেরা খুব ভারী হলে বা যদি আপনি প্রচু র
প্রচু র panorama তোলেন তবে Pan and tilt হেড নিতে পারেন।
3. ফ্লেক্সিবল ট্রাইপড- এইটা Joby নামের একটি আমেরিকার কোম্পানি প্রথম শুরু করে। এখন অনেক ডু প্লিকেট
বেরিয়েছে কিন্তু আসল জিনিসটার কোয়ালিটি আলাদা 👌 এদের মোবাইল, কম্প্যাক্ট ক্যামেরা,DSLR সবার জন্য
আলাদা আলাদা মডেল আছে, কোনটা কত ওজন নিতে পারে সেই অনুযায়ী। এর পাগুলো অনেক গাঁট দিয়ে তৈরি
যেগুলো ইচ্ছামত বাঁকানো যায়। ছবি দেখলে বুঝতে পারবেন। এই ট্রাইপড কে আপনি ইচ্ছামতো অন্যকোনো শক্ত
জিনিসের সঙ্গে আটকে নিতে পারবেন, যেমন রেলিং, গাছের ডাল, পাথর এসব। এর বিরাট সুবিধা এই যে ছোট্ট
এবং হালকা বলে সহজেই ক্যামেরা ব্যাগে ঢু কে যায়। ক্যাজুয়াল ট্রাভেল ফোটোগ্রাফাররা এর সুবিধা বুঝতে
পারবেন। নিজেদের ছবি তোলার জন্য একে সেল্ফি স্টিক এর মতোও ব্যবহার করা যায়। আমি নিজে এই ট্রাইপড
ব্যবহার করে খুব উপকৃ ত। আরো জানার জন্য Joby এর ওয়েবসাইট দেখুন।
4. টেবিল ট্রাইপড- ছোট্ট পুঁচকে ট্রাইপড। পকেটে ফিট করে যায়। মোবাইল বা ছোট কম্প্যাক্ট ক্যামেরা লাগিয়ে
টেবিলে রেখে বাড়ীর সবার ফটো তু লতে পারেন বা Youtube ভিডিও বানাতে পারেন। বেড়াতেও নিয়ে যাওয়া
যায়।

 এর পর আসছে মনোপড। এর ব্যবহার ব্যক্তিগত পছন্দের উপর নির্ভ র করছে। আমি নিজে খুব একটা এর
সুবিধা নিতে পারিনা। কিন্তু যারা ভিডিও করেন তাদের জন্য এটি বেশী প্রয়োজনীয়, অনেক সময় ট্রাইপড এর
থেকেও বেশী কাজের হয়।

- যারা জঙ্গলে সাফারী এর ছবি তু লবেন তারা বীন ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এটা জিপের রড এ বা গাড়ির জানালায়
রেখে তার উপর লেন্স বা ক্যামেরা রেখে ছবি তু ললে গাড়ীর ঝাঁকুনি অনেক কম হয়। না কিনতে চাইলে বাড়িতেও
মোটামুটি বানাতে পারেন, বাচ্চাদের পুরোনো হাফপ্যান্ট এ ঠেসে আপনার পছন্দের ডাল ভরে সেলাই করে দিন 😊 বালিশের
খোল দিয়েও হবে।
এই হলো ক্যামেরার বিভিন্ন ধরনের ঠেকনা নিয়ে আলোচনা। নতু ন বা পুরোনো ক্যামেরা বা মোবাইল এর সঙ্গে অবশ্যই
যেকোনো রকম Stabilizar ব্যবহার করুন আর ফারাকটা দেখুন ☺️
যেকোনো ট্রাইপড বা মনোপড এ মোবাইল লাগানোর জন্য আলাদা Mobile tripod এডাপ্টার পাওয়া যায়। সুতরাং একটি
ট্রাইপড থাকলেই তাতে আপনি ক্যামেরা বা মোবাইল দুটোই লাগাতে পারবেন। তবে অনলাইনে মোবাইল ট্রাইপড নামে
যেগুলো বিক্রী হয় সেগুলো নিলে ঠকবেন। সামান্য হাওয়াতে আপনার দামী মোবাইল বা ক্যামেরা উল্টে যেতে পারে কারণ
মাউন্টেড অবস্থায় ট্রাইপড খুবই টপ-হেভী হয়ে যায়, সেজন্য ভালো এবং ভারী ট্রাইপড নিন। ট্রাইপড কে আরো
stabilized করার টিপস পরে কেউ জানতে চাইলে আলোচনা হবে, youtube এও পাবেন।
অধিকাংশ ট্রাইপড এর সঙ্গে একটা কুইক রিলিজ প্লেট দেয় যেটা ক্যামেরা চটপট ট্রাইপড এ লাগাতে বা খুলতে কাজে লাগে।
ওটা ক্যামেরাতে সবসময় লাগিয়ে রাখুন। ওটা ছোট্ট জিনিস এবং খুব হারায় 😢
কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে জানান।
গত পর্বে একজন DSLR নিয়ে আরো লিখতে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু DSLR এর কোন দিকটা নিয়ে লিখবো বলেননি।
ক্যামেরা ফাংশন লিখে শেখানো খুব কঠিন। তার জন্য YOUTUBE দেখুন বা সিরিয়াসলি জানতে চাইলে কোনো কোর্সে
ভর্তি হন আর হাতেকলমে শিখুন।
ধন্যবাদ

ধরুন, আপনি নতু ন ক্যামেরা কিনেই ফেলেছেন। বা DSLR নিলে দারুন ছবি আসবে,এই বলে কোনো সেলসম্যান
আপনাকে কিনিয়েছে দামী DSLR, কিন্তু আপনি এত এত ক্যামেরা ফাংশান এর কোনটা কি ও কেন বুঝতে পারছেন না।
এই পর্বে আমরা সহজভাবে একটি সাধারণ DSLR ক্যামেরার মোড ডায়াল এর কোনটার কি কাজ আলোচনা করবো।
মোড ডায়াল হলো শাটারের পাশে গোল চাকাটা যেটা ঘুরিয়ে আপনি বিভিন্ন ক্যামেরা মোড সিলেক্ট করেন।

1. অটো মোড- আপনি শুধু শাটার টিপবেন, বাকি কাজ ক্যামেরার। অনেকেই এই মোডেই সবসময় ছবি তোলেন,
অনেকে নিজে তো তোলেই না, অন্যকেও এই মোডে ছবি তু লতে দেখলে তেড়ে আসে 😊 ওসব ছেড়ে বলি, আমার
মতে, কখন আপনার অটো মোডে ছবি তোলা উচিত আর কখন উচিত নয়।
2. যেখানে ফ্ল্যাশ ব্যবহার বারণ বা আপনি লুকিয়ে ছবি তু লছেন। ক্যামেরা যদি মনে করে সে যথেষ্ট আলো পাচ্ছে
না, মুহূর্তে ফ্ল্যাশ অন করে দেবে। বাচ্চাদের ছবি, মিউজিয়াম এর ভিতরে ছবি, লুকিয়ে ছবি, বা যেখানে ফ্ল্যাশ
ব্যবহার বারণ, সেইসব জায়গায় কখন এই অটো মোড আপনাকে ফাঁসিয়ে দেবে, 'ধরতে পারবেন না' 😊.
3. এছাড়া যদি অটো মোড এ তোলা ছবি আপনার পছন্দ না হয় তাহলে তো তু লবেন ই না। আসলে অটো মোডে
ক্যামেরা সামগ্রিক এক্সপোজার দেবার চেষ্টা করে যাতে ফ্রেমের সবকিছু ই সমভাবে এক্সপোজিত 😊 হয়। সেটা
অনেকসময় আমরা চাইনা।
4. অন্যদিকে, যেসব ছবি তোলার আপনি একটাই চান্স পাবেন, কিন্তু কি সেটিংস দেবেন জানেন না, চোখবুজে
অটো তে মারুন। নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো, জানেন তো ☺️যেমন, বাচ্চার কেক কাটা।

2) অটো মোড ফ্ল্যাশ ছাড়া - আগের মতোই সব, শুধু যাই হোক, ফ্ল্যাশ কখনোই জ্বলবে না। আমার নিজের নিকন সবসময়
ব্যাগে ঢোকার আগে এই মোডে চলে যায়, যাতে যে কেউ যেকোনোসময় যেকোনো ছবি তু লতে পারে।
3) এর পর আছে স্পোর্ট স , পোর্ট্রে ট, ফু লপাতা, সূর্যাস্ত, panorama ইত্যাদি কিছু মোড। আপনার ক্যামেরার মডেল ও
কোম্পানি অনুযায়ী এগুলো আলাদা আলাদা হবে কিন্তু নাম গুলো সেল্ফ-এক্সপ্লেনাটোরি, ওই ওই পরিস্থিতিতে ওই ওই মোডে
চলে যান আর ছবি তু লুন। কেউ যদি বিশেষ কোনো মোড সম্পর্কে জানতে চান, প্লিজ কমেন্ট করুন ক্যামেরা মডেল এর
নাম সহ।
4) আসল মজা শুরু হয় বাকি চারটি মোড এ। যাদের নাম নিকন এ P, A, S, M এবং ক্যানন এ P, Tv, Av, M।

 P- প্রোগ্রামড অটো মোড। অগাধ জলে (পড়ুন A, S, M মোডের জটিলতায়) পড়ার আগে এই মোডে একটু
হাঁটুজলে সাঁতার শিখে নিতে পারেন। এই মোডে ক্যামেরা আপনাকে তিনটি প্যারামিটার ঠিক করতে দেয় যথা
ISO, এক্সপোজার কম্পেনশেসন ও হোয়াইট ব্যালান্স। বাকি সব অর্থাৎ aperture ও শাটার স্পীড নিজে ঠিক
করে। ISO, aperture ও shutter speed নিয়ে আমরা এই লেখাতেই পরে আলোচনা করবো। বাকি দুটো নিয়ে
যদি জানতে চান প্লিজ গুগলিয়ে নিন। এই মোড টি সেমি অটোমেটিক মোড নামেও পরিচিত কারণ এতে আপনি ও
ক্যামেরা দুজনের হাতেই কিছু কিছু কন্ট্রোল থাকে। আপনাকে অপেক্ষাকৃ ত সহজ প্যারামিটারগুলো কন্ট্রোল করতে
হয় বলে অনেকেই এই মোডটি পছন্দ করেন।
 A /Av -aperture মোড (v=value)। আপনি aperture ঠিক করবেন, বাকি কাজ ক্যামেরার।
 S /Tv মোড (Tv= Time Value) শাটার স্পিড মোড - আপনি শাটার স্পিড ঠিক করবেন, বাকি কাজ
ক্যামেরার।
 M মোড - ম্যানুয়াল মোড। কারো কারো মতে the ultimate hardle in photography 😊 এই মোড শিখে
গেলেই আপনি বাকি পাতি ফটোগ্রাফার দের থেকে অনেক উঁচুতে উঠে গেলেন 😊😊 (just joking). এই মোডে
ক্যামেরা কিছু ই করে না। আপনিই সব প্যারামিটার ঠিক করে শাটার মেরে ছবি তোলেন।

এই হলো গিয়ে ক্যামেরার মোড বর্ণনা। এইবার আসবো ছবি তোলার তিনটি প্যারামিটার এর কথায় , যথা Shutter
speed, aperture ও ISO. এই ত্রিদেব কে সম্যক ভালো বুঝলে ও চালনা করতে পারলেই আপনার ফটোগ্রাফিক নির্বাণ
নিশ্চিত 👌
ফটোগ্রাফির গুরুরা এই তিনটি প্যারামিটার এর পারস্পরিক সম্পর্ক কে সহজ করে বোঝাবার জন্য এক্সপোজার ট্রাইএঙ্গেল
(Exposure Triangle) নামক একটি কনসেপ্ট তৈরী করেছেন। সেইটা নিয়ে এবার আমরা আলোচনা করবো। ছবিটা
নীচে দেওয়া হলো। অনলাইনে আরো ছবি পাবেন। একটা প্রিন্ট করে ক্যামেরার ব্যাগে ভরে রাখুন।
আমরা প্রায় সবাই বুঝি এক্সপোজার কি। এক্সপোজার হওয়া অর্থাৎ আলোকিত হওয়া। ফটোর ক্ষেত্রে ফটোর যে অংশগুলোতে
কি আছে দেখা যাচ্ছে সেটা হলো প্রপারলি এক্সপোজার পাওয়া। যেখানটা কালো হয়ে গেছে অর্থাৎ আলো পড়েনি সেখানটা
আন্ডার এক্সপোজার আর যেখানটা বেশী আলো পড়ে সাদা হয়ে গেছে সেটা ওভার এক্সপোজার, এই হলো কথা।
এবার আসুন একটু DSLR ক্যামেরা কিভাবে কাজ করে সহজে জেনে নিই। ক্যামেরার সামনে লাগানো লম্বা বা বেঁটে লেন্সের
সামনের কাঁচ দিয়ে আলো ঢোকে। লেন্সের যে দিকটা ক্যামেরায় লাগানো থাকে সেদিকে থাকে একটা ছোট্ট ফু টো যেটাকে
ছোটবড় করা যায়, আলো সেই ফু টো দিয়ে লেন্স পার হয়ে ক্যামেরায় ঢোকে। এই ফু টোর নাম APERTURE।একে নিয়ে
বিস্তারিত পরে বলবো। এরপর আলোকে নিয়ে কি করা হয় সেই ভিত্তিতেই DSLR, মিররলেস ক্যামেরা তৈরি হয়। সাধারণ
ভাবে বললে, এইখানে আলোর পথে একটা আয়না(সস্তা মডেলে) বা প্রিজম (দামী মডেলে) রাখা হয় যা আলোকে প্রতিফলিত
করে পাঠিয়ে দেয় যেখানে আমরা চোখ লাগাই সেই ভিউফাউন্ডার এ। আমরা দেখতে পারি ক্যামেরা দিয়ে যেমন দেখি।
অন্যদিকে থাকে শাটার বোতাম। যা টিপলে দুটো কাজ হয়, এক- আয়না সরে যায় ওপরে আর আলো বাধা না পেয়ে সোজা
ঢু কে যায়, অন্যদিকে দুই - শাটার জিনিসটা অনেকটা দোকানের শাটার এর মতোই। আপনি যেমন চাইবেন তত জোরে
(fast) বা আস্তে(slow) ওটা খুলে আবার বন্ধ হয়ে যায়। তো এই সব বিভিন্ন বাধা পেরিয়ে এবার আলো সোজা ঝাঁপিয়ে
পড়ে তার অন্তিম গন্তব্য ক্যামেরা সেন্সর এর বুকে, তৈরি হয় একটি ছবি। (সেন্সর কিভাবে ছবি তৈরি করে সেটা এই
আলোচনা থেকে বাইরে রাখলাম, কারণ ওটা আপনার কন্ট্রোল এ নেই, ক্যামেরা কেনার সময়েই ওই জিনিসটার কোয়ালিটি
নির্ধারিত হয়ে গেছে। তাছাড়া বেশী জটিলতা আমরা বাড়াবো না বলেছি।)।
এইবার দেখবো এক্সপোজার ত্রিভু জ এর তিনটি ইউনিট এর কি ভূ মিকা ছবির উপর। তার আগে একটা উদাহরণ দিয়ে রাখি,
যাতে বুঝতে একটু সুবিধা হয়। মনে করুন আপনি ছাদে বৃষ্টির জল জমাবার জন্য একটা বড় পিপে রেখেছেন। এমনি
সাধারণ পিপে নয়, বিশেষ কিছু সুবিধা যুক্ত পিপে। এটা পুরোপুরি বন্ধ , শুধু ওপরে একটা ফু টো আছে যেটা দিয়ে জল
ভিতরে পড়ে, এই ফু টোটা আবার ছোটবড় করা যায়। ফু টোটার আবার নিজস্ব একটা ঢাকনা আছে যেটা খোলা বন্ধ করা
যায়। এবার মনে করুন কোন এক বর্ষার দুপুরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির মধ্যে আপনি ছাদে ওই পিপের জল জমা নিয়ন্ত্রণ করছেন।
আপনার উদ্দেশ্য হলো একটা নির্দি ষ্ট পরিমাণ জল জমা করা। মনে রাখবেন, জমা জলের পরিমানটাই আপনার আসল
উদ্দেশ্য। এবার তাহলে-

1. ফু টো যত বড় তত বেশী জল জমা হবে। ছোট হলে কম হবে।


2. ফু টোর ঢাকনা যত বেশী সময় খোলা থাকবে তত বেশী জল জমা হবে। কম সময় থাকলে কম জমা হবে।
3. ফু টো বড় কিন্তু ঢাকনা কম সময় খুললে যা জল জমা হবে, ফু টো ছোট কিন্তু ঢাকনা বেশী সময় খুললেও
মোটামুটি একই পরিমান জল জমা হবে।

এইবার মনে করুন আপনার পিপের আবার বিশেষ জলাকর্ষী ক্ষমতা আছে 😊 যে ক্ষমতা আবার কম বেশি করা যায়।
অর্থাৎ আপনার পিপে প্রতিবেশীর পিপের তু লনায় জলের প্রতি বেশি (বা কম, যেমন আপনি চাইবেন ) সংবেদনশীল
(=sensitive) ।
তো এই ম্যাজিক পিপের তিনটি কন্ট্রোল ( ফু টোর মাপ, ফু টোর ঢাকনা খোলা থাকার সময় ও জলাকর্ষণ ক্ষমতা) ইচ্ছামতো
কমবেশি করে আপনি চায়ের জন্য 50ml বা চানের জন্য 5 লিটার জল জমা করতে পারবেন, যখন যেমন প্রয়োজন হবে।
এই (অদ্ভু ত) উপমাটি একটু বুঝলেন কি? তাহলেই হবে।
এইবার ভেবে নিন-
 পিপে = লেন্স ও ক্যামেরা সিস্টেম।
 জল জমানো = ছবি তোলা।
 পিপের ফু টো = Aperture
 ফু টোর ঢাকনা ও তা খোলা/বন্ধ থাকার সময়কাল = যথাক্রমে শাটার ও শাটার স্পিড।
 বিশেষ জলাকর্ষী ক্ষমতা- ISO সেনসিটিভিটি

যদি আপনি সঠিক পরিমান জল জমাতে অর্থাৎ সঠিক এক্সপোজার পেতে সমর্থ হন তবে আপনার উদ্দেশ্য সফল। কম জল
অর্থাৎ আন্ডার এক্সপোজার বা বেশি জল অর্থাৎ ওভার এক্সপোজার হলে আপনার হিসাবে কিছু ভু ল ছিল।
[ আরো এগিয়ে যাবার আগে একটা কথা বলি, এই আলোচনা পড়ে প্লিজ ভাববেন না আন্ডার বা ওভার এক্সপোজার খারাপ
বা ভু ল বা বাজে ছবি। অনেকেই ইচ্ছা করে কম বা বেশি এক্সপোজার এ ছবি তোলেন। বিষয়বস্তুর উপস্থাপন হলো ভালো
ছবির মূলসুর। ]

1. ISO- যারা ফিল্ম ক্যামেরায় ছবি তু লেছেন তাদের মনে থাকবে ফিল্মের নামের সঙ্গে একটা সংখ্যা থাকতো।
যেমন ফু জিকালার সুপিরিয়া 400 বা কোডাক 200 ইত্যাদি। এই সংখ্যাটা হলো ASA। যত বেশি ASA তত
ফাস্ট ফিল্ম অর্থাৎ তত কম আলোতে ছবি তু লতে পারবেন। ডিজিটাল ক্যামেরায় একেই ISO বলা হয়। যত বেশী
ISO ক্যামেরা সেন্সর তত বেশি আলোক সংবেদনশীল। অর্থাৎ ISO 200 তে দিনের বেলা ছবি তু ললেও রাতের
অন্ধকারে আপনাকে ISO 400 বা 800 করতে হবে। [ ISO এর সাথে ফিল্মের গ্রেন বা ডিজিটাল নয়েজ এর
একটা সম্পর্ক আছে কিন্তু ওই ব্যাপারটা আমি সচেতনভাবে বাদ দিয়ে যাচ্ছি।] DSLR এ অনেকে অটো-ISO
নামক একটি অপশন অন রাখেন এতে ক্যামেরা কে একটি পূর্বনির্ধারিত রেঞ্জ এর মধ্যে ISO বেছে নেবার
স্বাধীনতা দেওয়া হয়। (আমার ব্যক্তিগত মতে বেশীরভাগ সময় এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্যামেরা বেশী
ISO নিয়ে ছবিটা নষ্ট করে।)
2. Aperture- এটি লেন্সের মধ্যে একটি ফু টো যা দিয়ে আলো এসে সেন্সরে পড়ে। আপনারা দেখে থাকবেন
যেকোনো লেন্সের নামের মধ্যে একটা 'f'এবং তার সঙ্গে একটা পূর্ণ সংখ্যা বা দশমিক সংখ্যা থাকে। যেমন f4 বা
f2.8 ইত্যাদি। এই f হচ্ছে aperture value। এর মান কিভাবে নির্ণয় করা হয় তা জানতে চাইলে একটু অঙ্ক
করতে হবে। যথা-

f=FL÷D যেখানে FL হলো ফোকাল লেংথ এবং D হলো Aperture এর ব্যাস। উদাহরণ- একটি 200mm লেন্সের
aperture এর ব্যাস 50mm। তাহলে f=200÷50= f4। এবার ধরুন ওই 200mm লেন্সেরই aperture এর ব্যাস কমে
হলো (অর্থাৎ ফু টো আরো ছোট হলো) 25mm। তাহলে এখন f= 200÷25=f8.
তাহলে ভালো করে মনে রাখুন- Aperture এর ব্যাস যত কম কম হবে f নম্বর তত বেশী হবে & vise versa। অর্থাৎ
f1.8 এর ফু টো f4 এর ফু টো থেকে অনেক বড়। এই ধারণাটা পরিষ্কার রাখতে হবে কারণ এটা একটু গুলিয়ে দেবার মত।
ক্যামেরাতে আপনি f নম্বরটা দেখতে পাবেন শুধু,সুতরাং সেই হিসাবে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ( তবে আমার নিকন
ক্যামেরায় একটা ডিসপ্লে মোড আছে যেটাতে f value চেঞ্জ এর সঙ্গে aperture diameter এর সম্পর্ক টা ভিজুয়ালি
দেখায়। ক্যানন এ আছে কিনা জানিনা।).
তাহলে f value কখন কীভাবে কত রাখবেন? সেটাই তো আসল শেখার ব্যাপার। প্রচু র অভ্যাস ও সঠিক গুরুর সদুপদেশ
থেকে আপনাকে ধারণা করে নিতে হবে কোন পরিস্থিতিতে কত f value রাখতে হবে। তবে কয়েকটা জিনিস মনে রাখুন -

 ল্যান্ডস্কেপ বা ওই জাতীয় কোনো ছবি যেখানে বি-শা-ল একটা জায়গা আপনার ফোকাসে দরকার সেখানে f
value বাড়াবেন ,অন্তত f8 বা f10 এর উপরে।
 কম আলোতে f value কমাবেন, যেমন f2 বা f1.8.( বা আরো কম, যদি আপনার লাইকা থাকে 😢)
 যেসব ছবিতে আপনার সাবজেক্ট কে তার পারিপার্শ্বিক থেকে আলাদা করতে চান যেমন মানুষের পোর্ট্রে ট বা
পাখির ছবি বা অনেককিছু র মধ্যে একটি জিনিস, f value কমান। যেমন f4 বা f6.3.
প্রচু র অভ্যাসই এই ব্যাপারটা শেখার একমাত্র উপায়। অনেক ফটোগ্রাফী গুরুদের মতে ফিক্সেড ফোকাল লেংথ লেন্স
ব্যবহার করে শেখা উচিত কারণ এতে আপনি ফোকাল লেংথ একই রেখে বিভিন্ন f value তে ছবি তু লে শিখতে পারেন।
যদিও জুম লেন্সেও এই শিক্ষা সম্ভব।
3) শাটার স্পীড- শাটার কতক্ষন খোলা থাকছে তার উপর নির্ভ র করবে কতটা আলো শেষমেশ সেন্সরে পৌঁছাবে। এই
সময়কাল সেকেন্ডের 4000 ভাগের এক ভাগ থেকে শুরু করে 30 সেকেন্ড বা আরো বেশী হতে পারে।
যত কম সময় শাটার খোলা থাকবে অর্থাৎ শাটার স্পীড বেশী হবে তত দ্রুতগতির মুহূর্ত আপনি ছবিতে বন্দী করতে
পারবেন। যেমন 1/4000 সেকেন্ড শাটার স্পিড এ তোলা ছবিতে উড়ন্ত হেলিকপ্টার এর তিনটি পাখা স্পষ্ট আলাদা করে
দেখা যাবে। তবে বুঝতেই পারছেন, শাটার স্পীড যত বেশী তত কম আলো ঢু কবে, সুতরাং কম আলোতে বেশী শাটার
স্পীড রাখলে আলো এত কম ঢু কবে যে ছবি কালো বা আন্ডার এক্সপোজার হয়ে যাবে। বিভিন্ন শাটার স্পীডের ইফেক্ট
বোঝার জন্য সহজ উপায় হলো ঘরের ফ্যানটা ফু ল স্পিডে চালিয়ে শাটার স্পীড পরিবর্ত ন করে করে ফ্যানের ছবি তু লুন।
কত শাটার স্পীডে কি এফেক্ট আসে দেখে শিখুন।
কম শাটার স্পীড ব্যবহার হয় কোনো গতিশীল বস্তুর গতিশীলতা বোঝাতে। যেমন 1/30 সেকেন্ড স্পীডে আপনার তোলা
ফ্যানের ছবিটাই দেখুন। ব্লেডের গতিটা বোঝা যাচ্ছে। আরো কম শাটার স্পিড ব্যবহার হয় রাতের আকাশের ছবি তু লতে।
মনে রাখবেন, বেশী সময় শাটার খোলা থাকলে বেশী আলো ঢু কে আপনার ছবিকে সাদা বা ওভার এক্সপোজার করে দিতে
পারে।

 এই হলো এক্সপোজার ত্রিভু জের তিনটি বাহুর পরিচয়। এদের তিনটির সম্মিলিত প্রভাবকে বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে
নিয়ন্ত্রণ করে আপনার ছবি তোলার সাবজেক্ট কে ক্যামেরাবন্দী করাতেই আপনার মুন্সিয়ানা 😊

এই আলোচনার এখানেই ইতি, কিন্তু ক্যামেরার অনেক ফাংশন শেখা বাকি রয়ে গেল। সেটার জন্য ভালো করে ম্যানুয়াল
পড়ুন। প্রচু র প্র্যাকটিস করুন। মনে রাখবেন একজন প্রফেশনাল ফোটোগ্রাফার একদিনে প্রায় 1000 ছবি তোলেন, আমি-
আপনি হয়তো এক মাসেও অত তু লি না। সুতরাং আরো প্র্যাকটিস করুন আর ভু ল শুধরে নিন।
এতটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আর একটা কথা এক্সপোজার ত্রিভু জের মতো জটিল একটা বিষয় নিয়ে লিখতে গিয়ে জানি
অনেক ভু ল হয়েছে হয়তো। প্লিজ লেখাটার সমালোচনা করুন, নির্মমভাবে! 😊 আম্মো শিখতে চাই আরো।
গ্রূপের নিয়ম মেনে বা এডমিন অনুমতি দিলে এই লেখা শেয়ার করতে পারেন, কিন্তু দয়া করে লেখক হিসাবে প্রাপ্য সম্মানটা
দেবেন আশা করি। তবেই এই খাটনী সার্থক

You might also like