Abdul Gafur Vs Bangladesh

You might also like

Download as docx, pdf, or txt
Download as docx, pdf, or txt
You are on page 1of 6

আব্দুল গাফুর বনাম সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (১৯৯৭) ১৭ বিএলডি (হাইকোর্ট বিভাগ) ৫৬০

মামলার ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

আবেদনকারী, জনাব আব্দুল গাফু র এর বড় মেয়ে হাসিনা বেগম, বয়স –


১৫ বছর, ১৯৯২ সালের মার্চ মাসে তার নিজ গ্রাম আরিচ পুর, টঙ্গী হতে নিখোঁজ হয় এবং দীর্ঘ
সময় পর্যন্ত তার বাবা আব্দুল গফু র, স্বীয় পরিধির সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও খোঁজ পেতে ব্যর্থ হয়।
১৯৯৬ সালের নভেম্বরে, আবেদনকারী, জনাব আব্দুল গাফু র এর সাথে এক মহিলার দেখা হয় যিনি
সদ্য ইন্ডিয়া থেকে এসেছিলেন এবং আবেদনকারীকে জ্ঞাত করেন যে তার মেয়ে বর্ত মানে এম.এম.এম
হাউজ, রোড নং- ৮, পোস্ট – লিলুয়া (বালি পুলিশ স্টেশনের অধীন), জেলা- হাওড়া, ভারতে অবস্থান
করছেন। এই তথ্যে জ্ঞাত হবার পর, ২১শে নভেম্বর, ১৯৯৬ সালে আব্দুল গাফু র , চেয়ারম্যান,
মানবাধিকার ব্যুরো, ঢাকা’র নিকট তার মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে একটি পত্র লিখেন। এই আবেদনের
পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি তার মেয়ের সাথে দেখা করতে সমর্থ হয়
এবং একই সাথে তারা এই মামলার ১নং বিবাদী (সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ
সরকার) ১৭.০১.১৯৯৭ এবং ২৫.০৩.১৯৯৭ পাঠানো দুটি পত্রের মাধ্যমে অনুরোধ করেন যাতে শিশু
পাচারের শিকার হাসিনা বেগমকে দ্রুত মুক্তির মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। পত্রে উল্লেখ করা হয়
শিশু পাচারের শিকার হাসিনা বেগমের প্রতি নির্মম আচরন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে, হাসিনা বেগম
তার নানা’র কাছে একটি পত্র পাঠাতে সমর্থ হয় যেখানে সে তার নির্মম জীবন যাপনের করুন
দিনাতিপাতের কথা ব্যক্ত করে। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি পুনরায় আরেকটি চিঠি
প্রেরন করে ‘সংলাপ’ নামের একটি নারী অধিকার কেন্দ্রে যেটি ভারতের একটি সামাজিক নিবন্ধিত
বেসরকারি সংস্থা এই মর্মে যে হাসিনা নামের যে মেয়ের ঠিকানা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্ত মানে
এম.এম.এম হাউজ, রোড নং- ৮, পোস্ট – লিলুয়া (বালি পুলিশ স্টেশনের অধীন), জেলা- হাওড়া, ভারত,
তা আদৌ সঠিক কিনা এবং সেই মেয়েটিই বাংলাদেশের আব্দুল গাফু রের হারানো মেয়ে হাসিনা বেগম
কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য। এই সংস্থাটি হাসিনা বেগমের জাতীয়তা বাংলাদেশি হিসেবে নিশ্চিত
করে। তারা চিঠির উত্তরে জানায় যে হাসিনা বেগম ২৩ বছর বয়সী একজন বাংলাদেশি,
২৫.১১.১৯৯২ তারিখ হতে লিলুয়া হোম এ অবস্থান করছে যার রেফারেন্স নাম্বার, ভাঙ্গাবঙ্গোলা,
পি.এস.সি / নং.৭২/ ৯২, তারিখ ১৯.০৩.১৯৯২, ৩৬৬/৩৬৫/৩৭২ অধীনস্থ। এতদসত্বেও, বিবাদী (সচিব,
পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার) হাসিনা বেগমের মুক্তির বিষয়ে দৃশ্যমান কোন
ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এবং এরই ধারাবাহিকতায় সংক্ষু ব্ধ ব্যক্তি, আব্দুর গাফু র বাদী হয়ে
মহামান্য হাইকোর্টে , গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০২ নং অনুচ্ছেদে অর্পিত অধিকারবলে

1
আব্দুল গাফুর বনাম সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (১৯৯৭) ১৭ বিএলডি (হাইকোর্ট বিভাগ) ৫৬০

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সচিবকে বিবাদী করে একটি রিট আবেদন
করেন যার রিট পিটিশন নং. ১৯৯১ এর ৪০৩১.

মামলার বিচার্য বিষয় সমূহঃ

এই মামলায় ১নং বিবাদী (সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ


সরকার) তার উপর অর্পিত দায়িত্বের অবহেলা এবং বিলম্ব করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা
আইনজীবী সমিতি হতে পরপর দুইবার চিঠি দেবার পরেও তিনি তা নজরে এনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের
তদবির পরিচালনা শুরু করতে পারেন নি। পূর্বোক্ত মামলার সংক্ষিপ্ত ঘটনা এবং এর ধারাবাহিকতায়
করা রিট পিটিশন পর্যালোচনা করে অনুধাবন করা যায় যে এই মামলার বিচার্য বিষয় ছিল
নিম্নোক্ত –

১. সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, তার উপর অর্পিত স্বীয় দায়িত্বের
অবহেলা কিংবা দায়িত্ব পালনে বিলম্ব করেছেন কিনা?

২. সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার , এর নিকট বাংলাদেশ জাতীয়


মহিলা আইনজীবী সমিতি’র পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল কিনা?

৩. হাসিনা বেগম কে কেন তার বর্ত মান অবস্থান এম.এম.এম হাউজ, রোড নং- ৮, পোস্ট –
লিলুয়া (বালি পুলিশ স্টেশনের অধীন), জেলা- হাওড়া, ভারত হতে উদ্ধার করা হবে না এবং এর
কারণ।

প্রাসঙ্গিক আইন

এই মামলাটি একটি সাংবিধানিক আইন সংশ্লিষ্ট মামলা হওয়ায় এখানে গনপ্রজাতন্ত্রী


বাংলাদেশের সংবিধানের ৩ টি অনুচ্ছেদ যথাক্রমে ২৭, ৩১, ৩২ আরোপ করা হয়েছে। অন্য কোন
আইন আরোপ কিংবা মামলা রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা হয় নি। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের
সংবিধানের ৩ টি অনুচ্ছেদ যথাক্রমে ২৭, ৩১, ৩২ এই সংবিধানের তৃ তীয়ভাগে ( মৌলিক অধিকার )
বিবৃত হয়েছে যা নিম্নোক্ত-

2
আব্দুল গাফুর বনাম সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (১৯৯৭) ১৭ বিএলডি (হাইকোর্ট বিভাগ) ৫৬০

আইনের দৃষ্টিতে ২৭। সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের
সমতা অধিকারী।
 

আইনের আশ্রয়- ৩১। আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ
লাভের অধিকার যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে
অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইনানুযায়ী
ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির
  জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।

জীবন ও ব্যক্তি- ৩২। আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা হইতে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত
স্বাধীনতার করা যাইবে না।
অধিকাররক্ষণ  

যুক্তি তর্ক উপস্থাপন

বাদীঃ এই মামলার বাদী আব্দুল গাফু র এর পক্ষে মহামান্য আদালতে তার পক্ষে
মামলা পরিচালনা এবং উপস্থাপনা করেছেন বিজ্ঞ আইনজীবী সিমা জহুর। যুক্তি তর্ক উপস্থাপনার
সময় বাদী পক্ষের এই বিজ্ঞ আইনজীবী এই মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরনী তু লে ধরেন। বাদী’র মেয়ে
হাসিনা বেগম একজন বাংলাদেশি হওয়া সত্ত্বেও তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সীমানা
পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নিয়ে বেআইনি ভাবে আটক করে রাখা হয়। এমতাবস্থায়, একজন
স্বাধীন দেশের নাগরিক হওয়া সত্বেও রাষ্ট্র তার মুক্তির জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি যদিও তা
যথাযথ মাধ্যম দ্বারা অবগত করা হয়েছিল।

3
আব্দুল গাফুর বনাম সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (১৯৯৭) ১৭ বিএলডি (হাইকোর্ট বিভাগ) ৫৬০

শিশু পাচারের নির্মম শিকার হাসিনা বেগম, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ
নং ৩১ এবং ৩২ অনুযায়ী ভারতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের আইনানুগ সহযোগিতা লাভের অধিকার
রাখেন। এবং এই দায়িত্ব অবশ্যই রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যে অন্তর্ভু ক্ত যা কিনা এই মামলার ১ নং
বিবাদী পালন করতে বাধ্য। এই অনুচ্ছেদ বাদীপক্ষকে তাদের আবেদন মহামান্য আদালতের নিকট
আরও গুরুত্বপুর্ন করে তু লেছে। অন্যভাবে বলা যায় এই ৩১ নং অনুচ্ছেদ এই মামলার সুরক্ষাকবচ
হিসেবে কাজ করেছে। এবং এরই প্রেক্ষিতে এই মামলার বিবাদী, সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী
বাংলাদেশ সরকার, হাসিনা বেগমের মানবাধিকার সরাসরি উপেক্ষা করেছেন।

অনুচ্ছেদ নং ৩১ স্পষ্টতই এটা বর্ননা করে যে, এই অনুচ্ছেদ নাগরিকের প্রতি সরকারের
সুরক্ষা প্রদানের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করে এবং সেটা পৃথিবীর যেকোন প্রান্তেই হোক না কেন। কিন্তু
সরকারের এই অবহেলা এবং যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণে হাসিনা বেগমের দৈন্য
দুর্দ শা শুধু বেড়েই যায় নি, সে হারিয়েছে তার মৌলিক মানবাধিকার যা সুস্পষ্টতই মানবাধিকারের
লঙ্গন এবং সংবিধান পরিপন্থী। বিবাদী নং ১, সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ
সরকার, হাসিনা বেগম কে অনুচ্ছেদ ৩১ এ বর্নিত সহায়তা প্রদানে অসমর্থ হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ২৭ এ বর্নিত আইনের দৃষ্টিতে সমতা লাভের অধিকার, যা কিনা বাংলাদেশ সকল
নাগরিকের জন্য দ্বর্থ্যহীন ভাবে প্রযোজ্য। এই মামলায় হাসিনা বেগম তার দেশের সরকারের কাছে
সেই অধিকার চেয়েও কোন প্রতিকার পায়নি কিংবা এর পরিপ্রেক্ষিতে কোন দৃশ্যত পদক্ষেপ গৃহীত
হয় নি, যা স্পষ্টতই তার মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

বিজ্ঞ আইনজীবী সিমা জহুর তার বক্তব্য উপস্থাপনার শেষে আরও বলেন, ইতিমধ্যেই
এতটা সময় পেরিয়ে গেছে যাতে হাসিনা বেগম হারিয়ে ফেলেছেন তার জীবনের অনেকটা সময়।
ঠিক এই মুহুর্ত থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হাসিনা বেগমের মুক্তির জন্য কাজ শুরু করা উচিত, এবং সেই
মর্মে এই মামলার বিবাদীদের নির্দে শ দেওয়া অত্যাবশ্যক যাতে করে নির্দ োষ হাসিনা বেগম দ্রুত
ভারত থেকে স্বভূ মি তে ফিরতে পারে যেখান থেকে তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়া
হয়েছিল।

বিবাদীঃ এই মামলার প্রধান বিবাদী, সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ


সরকার, এর পক্ষে মহামান্য আদালতে মামলা পরিচালনা এবং উপস্থাপনা করেছেন বিজ্ঞ আইনজীবী
মোহাম্মদ মাহবুব আলী। বিবাদী, সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মহামান্য

4
আব্দুল গাফুর বনাম সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (১৯৯৭) ১৭ বিএলডি (হাইকোর্ট বিভাগ) ৫৬০

হাইকোর্টে পূর্বোক্ত নোটিশের দ্বারা অনুপস্থিত ছিলেন। এর মাধ্যমে বিবাদীর নেতিবাচক মনোভাবের
পরিচয় পাওয়া যায়।

১নং বিবাদী, সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, স্বশরীরে আদালতে
উপস্থিত হতে পারে নি এবং একই সাথে নিজেদের স্বপক্ষে যুক্তিতর্ক করতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি
নিজেদের যুক্তি তর্কে আত্মপক্ষ সমর্থনের অংশ হিসেবে তারা এমন কোন কাগজ বা নথি উপস্থাপন
করতে পারে নি যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে হাসিনা বেগম বাংলাদেশের নাগরিক নয়। যুক্তিতর্কে র
কোথাও এই বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করা হয় নি যে হাসিনা বেগম কে ভারতে পাচার করা হয়েছিল
এবং এই দেশের সীমানা পার করা হয়েছিল তার নিজের মতের বিরুদ্ধে, কারণ পাচার হবার সময়
হাসিনা বেগমের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর, যাতে করে বোঝা যায় পাচার হবার সময় হাসিনা বেগম
একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরী ছিলেন। হাসিনা বেগমকে বাংলাদেশ হতে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল
তার মতের বিরুদ্ধেই।

আদালতের মতামত ও চূ ড়ান্ত রায়

দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মহামান্য আদালত এই মামলায় চূ ড়ান্ত


রায় দেন এই মর্মে যে, বিবাদীর অনুপস্থিতিতে প্রতীয়মান হয় যে, বাদীর আবেদন ছিল সংগত এবং
তাতে বিবাদীর আচরণ ছিল কারণহীন অযৌক্তিক ব্যর্থতা। বিবাদী এমন কোন পদক্ষেপ গ্রহন করে
নি যাতে করে রাষ্ট্র হাসিনা বেগমের মুক্তি নিশ্চিত করতে পারে এবং যা প্রমান করে এই রাষ্ট্র তার
সকল নাগরিকের প্রতি সমান আচরণ করে। সুশাসন নীতি অনুযায়ী একটি সরকারকে অবশ্যই
আইন অনুযায়ী কাজ করতে হয় এবং তার উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। কারণ, জন
দায়বদ্ধতা এবং গ্রহনযোগ্যতার পূর্বশর্ত হল যে সরকারের যেকোন কাজ হতে হবে সুবিবেচনা এবং
ন্যায়বিচার প্রসূত।

মহামান্য আদালত এই মর্মে অনুধাবন করেন যে, এই মামলায় রাষ্ট্র সুবিচার, সুবিবেচনা
এবং নাগরিকের বৈধ দাবি কে অবজ্ঞা করেছেন এবং বাদীপক্ষকে ন্যুনতম রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা করতে
ব্যর্থ হয়েছেন দ্ব্যর্থকভাবে যা কিনা রাষ্ট্রের জন্য অমর্যাদাকর। সাধারণভাবে এই ধরনের পরিস্থিতিতে
বিবাদীকে যা করতে হয় তা হলো মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে
পুনর্বাসন করা। কিন্তু এই রাষ্ট্র তা করতে কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ব্যর্থ হয়েছে এবং ফলস্বরুপ

5
আব্দুল গাফুর বনাম সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (১৯৯৭) ১৭ বিএলডি (হাইকোর্ট বিভাগ) ৫৬০

একজন নির্দ োষ মানুষকে নিজ দেশ ব্যতীত অন্য দেশে ৫ বছরের অধিক সময় মানবেতর জীবন
যাপন করতে হয়েছে, বিনা অপরাধে নিজ দেশ ছেড়ে পরবাসে কাটিয়ে দিতে হয়েছে জীবনের মূল্যবান
কিছু সময়। এই আদালত বাদীপক্ষকে সান্ত্বনা জানায় এবং বিবাদী পক্ষ, সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়,
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, এর যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়াকে অননুমোদিত ও অসাংবিধানিক
ঘোষনা করে। মহামান্য আদালত অর্থ অথবা জরিমানা কিংবা পুনর্বাসন সম্পর্কি ত কোন আদেশ
প্রদান করেন নি।

মহামান্য আদালত এই মর্মে বিবাদী, সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ


সরকার, এর প্রতি আদেশ জারি করেন যে, হাসিনা বেগমের দ্রুত মুক্তিতে ৬০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রীয়
ভাবে পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে এবং এর প্রেক্ষিতে বাদীর আইনজীবীকে রাষ্ট্র কর্তৃ ক গৃহীত ব্যবস্থার
সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

You might also like