Limitation Act

You might also like

Download as docx, pdf, or txt
Download as docx, pdf, or txt
You are on page 1of 63

Limitation Act ,1908

 প্রশ্ন-১

তামাদি আইনের সংজ্ঞা দাও। তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য কি? তামাদি আইন কি একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ
আইন- আলোচনা কর।

তামাদি আইনের সংজ্ঞা:

তামাদি একটি আরবী শব্দ এর আভিধানিক অর্থ হলো কোন কিছু বিলুপ্ত হওয়া কিংবা বাধা প্রাপ্ত হওয়া।
মূলত ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি পদ্ধতিগত আইন। এই আইন একটি নির্দি ষ্ট মেয়াদের পরে কোন
আইনগত অধিকারে এর বিলুপ্তি ঘটায়। কতদিনের মধ্যে কোন মামলার আপীল , রিভিউ বা রিভিশনের
জন্য আদালতে দরখাস্ত পেশ করতে হবে। কখন বিলম্ব মৌকু ফ করা যাবে ইত্যাদি বিষয় তামাদি আইনে
নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

মামলা মোকদ্দমা করার একটি নির্দি ষ্ট সময় আছে।কোন মামলা ৩ বৎসর আবার কোন মামলা ১২ বৎসর
মেয়দের মধ্যে করতে হয়। মামলার মত আপীলেরও একটি নির্দি ষ্ট সময় আছে। তামাদি আইনের প্রথম
তফসিলে উক্ত নির্ধারিত সময়সীমা বর্ণনা করা হয়েছে।

সুতরাং উপরোক্ত উল্লেখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, তামাদি আইন বলতে এমন একটি
স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন যে আইন দ্বারা সকল প্রকার দাবী বা স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিতে বৃদ্ধি যা দীর্ঘায়িত
করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য করে।এরুপ ব্যবস্থাকে তামাদি আইন
বলে।

তামাদি আইনের প্রয়োজনীতা:

১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

১) দেওয়ানী মোকদ্দমা , আপীল ও কতিপয় দরখাস্ত আদালতে দায়ের করার মেয়াদ সম্পর্কি ত আইন
একত্রীকরণ ও সংশোধন করা হয়।
২) দখলের দ্বারা ব্যবহার স্বত্বের ও অন্যান্য সম্পত্তির অধিকার অর্জ নের নির্ধারিত সময়সীমা প্রণয়ন করা হয়।
৩) তামাদি আইনের সময় সীমার দ্বারা সমাজের বিবাদ নিস্পত্তির মাধ্যমে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা হয়।
৪) মামলার দীর্ঘসূত্রীতা জিয়য়ে না রেখে জনসাধারনের ভোগান্তি লাঘব করা হয়।
৫) মামলার জটিলতা অর্থাৎ বহুতা বা সময় এর সাশ্রয় করা হয়।
৬) মামলার দীর্ঘ সূত্রীতার বন্ধের জন্য অর্থের অপচয় রোধ করা হয়।
৭) প্রতারণামূলক কার্যক্রমকে প্রতিরোধ করা হয়।
৮) প্রতিষ্ঠিত অধিকার সংরক্ষনের জন্য সহায়তা করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়।
৯) সর্বোপরি তামাদি আইন দ্বারা সর্বপ্রকার দাবী ও স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিতে দীর্ঘায়িত করে সুযোগ না
দিয়ে বরং চির দিনের জন্য নিস্পত্তি করতে সাহায্য করে।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে,দেওয়ানী আইনে তামাদি আইনের প্রয়েজনীয়তা অপরিসীম।
তামাদি আইন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন কি না?
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের সুস্পষ্ট বিধান হল এই আইনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কোন মামলা,
আপীল কিংবা দরখাস্ত আদালতে দাখিল না করলে পরবর্তীতে আদালত তা গ্রহন করবে না।
তামাদি আইনের ৩ ধারা হতে ২৫ ধারা পর্যন্ত বর্ণিত বিধান মোতাবেক যে কোন ধরণের মামলা আপীল
কিংবা দরখাস্ত দাখিলের মেয়াদ সম্পর্কে সাধারণ নিয়মাবলী ব্যতিক্রম সহ উল্লেখ করা হয়েছে। এই আইনের
মধ্যে ৫ধারায় তামাদি রেয়াত বা বিলম্ব মৌকু ফের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তামাদি আইনের ২৮ ধারায় জবর
দখলের মাধ্যমে স্থাবর সম্পত্তির মালিকানা স্বত্ব বিলপ্ত হয় এবং জবর দখরকারীর স্বত্ব অর্জ নের সময়সীমার
বিষয়ে নির্ধারিত বিধানাবলী বর্ণিত হয়েছে।
ইহা ছাড়া অত্র আইনের ১৬ও ২৭ ধারায় ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জ নের সময়সীমা সম্পর্কে বিধান রয়েছে।
তাই এই আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী বিলম্ব মৌকু ফের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে উক্ত বিধান ছাড়া আদালত
ন্যায় বিচার এর স্বার্থে তামাদি আইন দ্বারা অনুমোদিত সময় সীমার ব্যাপারে কোন অনুমান বা ক্ষমা প্রদর্শন
করবেন না। 
সুতরাং যে দাবী তামাদি হয়ে যায় তবে সময় সীমা বাড়ানোর এখতিয়ার আদালতের নেই এমনকি তামাতদ
কৃ ত দাবী বা অধিকারকে আদালতে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে না।
তাই তামাদি আইন বলতে এমন এক স্বয়ংসম্পূর্ণ আইনকে বুঝায় যে আইন দ্বারা সর্ব  প্রকার দাবী বা স্বত্বের
দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিকে  দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য
করে থাকে। তাছাড়া এই আইন প্রতারনা মূলক কার্যক্রম প্রতিরোধ করে। ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের
২৯টি ধারা ১ নং তফসিলে ১৮৩ টি অনুচ্ছেদ রয়েছে অতএব এই আইনে সব ধরনের বিধিবদ্ধ নিয়মাবলী
সন্নিবেশিত রয়েছে বিধায় একে স্বয়ং সম্পূর্ণ বিধিবদ্ধ আইন বলে গন্য করা হয়। তাই উপরোক্ত আলোচনার
সাবতত্বে বলা যায় যে ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন।

প্রশ্ন-২

তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ বা বিলম্ব মওকু ফ কাকে বলে? ধারা ৫ কি মূল মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? যুক্তি
দাও। কোন ব্যক্তি কি ৫ ধারা অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারে? কোন কোন কারণগুলি বিলম্ব মৌকু ফের
কারণ বলে গন্য করা যায়?

উত্তর:
বিলম্ব মৌকু ফ:১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারায় বর্ণিত বিলম্ব মৌকু ফের বিষয়টির আইনগত মূল্য
অপরিসীম। এই ধারা মতে কোন আপীলকারী বা দরখাস্তকারী যদি প্রমান করতে পারেন যে নির্দি ষ্ট
সময়সীমার মধ্যেও কোন আপীল , রিভিউ বা রিভিশন করতে না পারার পর্যাপ্ত কারণ ছিল মর্মে
আদালতকে সন্তোষ্ট করতে পারে সে ক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে তখন এই ব্যবস্থাকেই
আইনের ভাষায় বিলম্ব মৌকু ফ বলে।
বিলম্ব মৌকু ফের ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ-
প্রথমত: পর্যাপ্ত কারণ
দ্বিতীয়ত: আদালতকে সন্তুষ্টি করণ
এই ধারাটি আপীল মামলার জন্য প্রযোজ্য এমনকি ফৌজদারী আপীল মামলার জন্যও।
৫ ধারা কি মূল মামলার জন্য প্রযোজ্য:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারাটি কেবরমাত্র আপীল এবং রিভিউ ,রিভিশন সহ অন্যান্য উল্লেখিত
ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এমনকি ফৌজদারী মামলার আপীলের ক্ষেত্রেও ৫ ধারা প্রযোজ্য হবে। মূল মামলার
ক্ষেত্রে এ তামাদি আইনের ৫ ধারাটি প্রযোজ্য হবে না। কারণ অধিকাংশ দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে তামাদির
মেয়াদ ৩ বৎসর হতে ১২ বৎসর পর্যন্ত সম্প্রসারিত কিন্তু এই ধারার বিধান মতে আপীল এবং আবেদনের
তামাদির মেয়াদ ৭ দিন হতে ৬ মাস। যেহেতু আপীরের সময়সীমা কম সেহেতু যুক্তিসংগত কারনে আপীল
দাযের করতে কিংবা রিভিশন সহ অন্যান্য দরখাস্ত দাখিল করতে বিলম্ব হলে এই ধারা মতে উপযুক্ত কারণ
সাপেক্ষে সেই বিলম্ব মৌকু ফ করা যাইতে পারে। তাই মূল মামলায় অনেক সময় পাওয়া যায় বিধায় মূল
মামলা ৫ ধারা ব্যবহার যোগ্য নহে।
উল্লেখ্য যে যথেষ্ট কারণে বিষয়টি তথ্যগত প্রশ্ন আবার আদালতের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে,যুক্তিসংগত
স্বত্ব এবং মনোযোগের সাথে কাজ করলে বিলম্বটি এড়ানো যেত তাহলে ঐ ক্ষেত্রে আদালতে বিলম্বটি গ্রহন
নাও করতে পারেন তাছাড়া তামাদি আইনের ৫ ধারা মোতাবেক বিলম্ব মৌকু ফের জন্য কোন ব্যক্তি আবেদন
করলে তাকে বিলম্বের জন্য প্রত্যেক দিনের জন্য ব্যাখ্যা অথবা কৈফিয়ত আদালতের নিকট দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে একটি মামলার রায়ে মাদ্রাজ হাইকোট বলেন, প্রত্যেক মামলার বাদীর কর্ত ব্য হল তার মামলার
আপীল দাখিলের তারিখ জেনে রাখা; যদি তার নিজের কারণে আপীল দাযের করতে বিলম্ব ঘটে এবং এই
ধারার আওতাভূ ক্ত আদালতের স্বীয় বিবেচনা ক্ষমতা তার পক্ষে অথবা অনকূ লে বিলম্ব মৌকু ফের জন্য
পর্যাপ্ত প্রমান আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। 
অধিকার হিসাবে ৫ ধারা দাবী প্রসঙ্গে:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনে বিলম্ব মৌকু ফ এর ক্ষেত্রে কোন দরখাস্তকারী এই মর্মে আদালতের সন্তুষ্টি
বিধান করতে পারে যে, নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে অনুরুপ আপীর রিভউ ,রিবিশন দাখিল না করার ক্ষেত্রে
পয়াপ্ত কারণ ছিল তাহলে তামাদি আইনের ৫ ধারা বিধানে বিলম্ব মওকু ফের সুবিধা পাবে।
তবে এই সুবিধা কেউ অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারেন না। কারণ আদালতের স্বেচ্ছাদীন , বিবেচনামূলক
ক্ষমতার উপর নির্ভ রশীল কাজেই এধারার সুবিধা পেতে হলে পর্যাপ্ত কারণ প্রমান করতে হবে এর্ং তা
আদালতকে সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহন করতে হবে। উহা কোন অধিকার নহে, ইহা একান্তই আদালতের বিবেচ্য বিষয়।
বিলম্ব মওকু ফের ক্ষেত্রে আইন, সরকারী ও বেসরকারী মামলাকারীর মদ্যে কোন পার্থক্য করেনি। সরকারের
কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী অসাবধানতা বা অবহেলা বিলম্ব মওকু ফের ক্সেত্রেও পর্যাপ্ত কারণ হিসাবে গন্র
হয়না। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সরকার বিশেষ  কোন সুবিধা পাওয়ার অধিকারী নয়।তবে উপযুক্ত কারণে বা
পরিস্থিতিতে সরকার এর পক্ষে বিলম্ব মওকু ফের সুবিধা পাওয়া যাইতে পারে।
উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায় যে, ১৯০৮ সালের তামদি আইনের ৫ ধারাকে াধিকার হিসাবে
কেহ দাবী করতে পারে না ইহা একান্তই আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা ও পর্যাপ্ত কারণ।
কোন কোন কারণ বিলম্ব মওকু ফের কারণ হতে পারে:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারায় বিলম্ব মওকু ফের কারণ হিসাবে নিম্নে লিখিত কারণগুলি বর্ণনা
করা হয়েছে। উপমহাদেশের রায়ে যে কারণ বিবেচনা করা হয় তা নিম্নরুপ-
১) বাদীর অসুস্থতা
২) কৌ শলীর ভু ল
৩) সরল বিশ্বাসের ভু র
৪)বাদীর কারগারে থাকা
৫)রায বা ডিক্রীর সার্টি ফাই কপিতে ভু ল
৬) আইনের অজ্ঞতা
৭) ভু ল আদালতের শুনানী বা মামলা রুজু।
৮) তামাদি সময় গননায় ভু ল হলে।
উপরোক্ত কারনগুলিকে বিলম্ব মওকু ফের কারণ হিসাবে বিবেচনা করা হয।

প্রশ্ন-৩ আইনগত অযোগ্যতা বলতে কি বুঝ? একটি আইনগত অক্ষমতার পূর্বেই আর একটি অক্ষমতা শুরু হয়
সেক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি কি তামাদি আইনের কোন সুবিধা ভোগ করতে পারে আরোচনা কর।

আইনগত যোগ্যতা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৬ ধারায় শিশু এবং অক্ষম ব্যক্তিদের অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে,
সাধারণত অক্ষম ব্যক্তি ও শিশুরা তাদের নিজ অধিকারের প্রকৃ তি উপলব্ধি করে তা আদাযের জন্য আইনকে
সঠিকভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয না। তাই অক্ষম ও নাবালক শিশুদের ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইন
বিশেষ সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। যার ফলে অক্ষম  ও শিশুরা আইনি সহায়তার জন্য  অক্ষমতা অথবা
শিশুর সাবালকত্ব অর্জ ন না করা পর্যন্ত তামাদি সময় সীমা গণনা করা হয় না অর্থাৎ সক্ষম এবং সাবালক
হওয়ার পর নিযম অনুযায়ী মামলা করতে পারবে। উহাতে আইনি বাধা নাই। 
অতএব বলা যায়যে কোন ব্যক্তির কোন কার্যে আইনগত যোগ্যতার অভাবই আইনগত অক্ষমতা বলে আইনে
গন্য করা হয়ে থাকে। এই তামাদি সময় শুধুমাত্র আইনগত অক্ষমতায় আক্রান্ত হওয়ার ফলেই
কার্যকরী। এক্ষেত্রে নাবালকত্ব, পাগলত্ব এবং জড়বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিরাই আইনগত অক্ষম বলে বিবেচিত হবে।
একটি অক্ষমতা শেষ হবার পূর্বে আরেকটি অক্ষমতা শুরু হলে ঐ ব্যক্তি তামাদি আইনের কিকি সুবিধা পাবে:
১৯০৮ সালের ৬ ধারার বিধান মতে অক্ষমতার জন্য যে সমস্ত সুবিধা পাবে তা নিম্নরুপ:
অত্র আইনের ৬(২) উপধারায় বলা হযেছে যে যকন কোন ব্যক্তি ডিক্রী জারির বা দরখাস্ত দাখিলের জন্য
অধিকারী হয় এবং যে সময় থেকে তামাদির মেয়াদ গণনা করা হবে সেই সময় ঐ ব্যক্তি নাবালক পাগল বা
নির্বোধ থাকে তবে সেই ব্যক্তি আইনগত অক্ষমতা অবসান ঘটার পর অত্র আইনের ১ম তফসিলের তৃ তীয়
অনুচ্ছেদ বা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৮ ধারার উল্লেখিত সময় বাদ দিয়ে মামলা করার অধিকারী।
অত্র আইনের ৬(১) উপধারায় বলা হয়েছে যে যখন কোন ব্যক্তির একটি আইনগত অক্ষমতার অবসান  
ঘটাবার পূর্বেই আর একটি আইনগত অক্ষমতা শুরু হয় তবে অনুরুপ ব্যক্তি উভয় আইনগত
অক্ষমতার অবসান ঘটার পর তামাদি মেয়াদ গণনা শুরু হবে। ধারা ৬(১) উপধারা তামাদি মেয়াদ শেষ
হওয়ার পর মামলা করার সুযোগ থাকবে।
উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় যে, নাবালক থাকা কালে মেহেদী একটি মামলা করার অধিকার লাভ করে। সে
সাবালকত্ব হওয়ার পূবেই পাগল হয়ে যায়্ এই ক্ষেত্রে মেহেদীর নাবালকত্ব ও পাগল অবস্থায় অবসান এর তারিখ
হতে তার তামাদির সময় গণনা করতে হবে।
৬(৩) উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত আইনগত অক্ষমতা অব্যাহত থাকে সে ক্ষেত্রে
তার আইনগত প্রতিনিধি উপরে উল্লেখিত একই সময়ের মধ্যে মামলা বা দরখাস্ত পেশ করতে পারবে।
৬(৪) উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি মৃত ব্যক্তির প্রতিনিধি ও আইনগত অক্ষমতা থাকে সেক্ষেত্রে অত্র আইনে
৬(১) এবং ৬(২) উপধারা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবে।
উল্লেখ্য যে মামলা করার কারণ ঘটলে একমাত্র জীবিত ব্যক্তির অনুকূ লেই তামাদি আইনের ৬ ধারায় বিধি
বিধান মতে সময় বৃদ্ধি করা যায়্ কিন্তু যে ব্যক্তির কোন অস্তিত্ব নাই সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি উপরোক্ত ধারা
সুবিধা পাবে না। কিন্তু গর্ভ স্থ শিশু তামাদি আইনের  ৬ও ৮ দারার সুবিধা পেতে পারে। (ডিএল আর
১৫২০
আইনগত অক্ষমতার দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি অক্ষমতার সময় তামাদির সময় সীমা নির্ধারনের ক্ষেত্রে অব্যাহতি
পাবার অধিকারী কিন্তু তাই বলে এই ধারাটি সাবালকত্ব অর্জ নের পূর্বে নাবালককে মামলা করার জন্য
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে অক্ষম ব্যক্তির সুবিধাগুলো অলোচনা করা যায়।
  

প্রশ্ন-৪ সময়ের অবিরাম চলন বলতে কি বুঝ? সময় একবার চলতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অযোগ্যতা
বা অক্ষমতা তাকে থামাতে পারে না ব্যতিক্রম সহ ব্যাখ্যা কর।
সময়ের অবিরাম চলন:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৯ ধারায় সময়ের অবিরাম চলনের বিধিবিধান আলোচনা করা
হযেছে।”একবার তামাদির মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অক্ষমতা অথবা অযোগ্যতা দ্বারা
বন্ধ করা যাবে না”। একেই তামাদি আইনের ভাষায় সময়ের অবিরাম চলন বলে।
তামাদি আইনের ৯ ধারা ভাষ্যমতে সময় একবার অতিবাহিত হতে আরম্ভ করলে পরবর্তীকালীন অক্ষমতা
বা অসমর্থতা ইহাকে থামাতে পারে না তামাদি আইনের ইহাই বিধান। 
ধরা যাক রহিম জমি হতে বেদকর হওয়ার ১০ বঃসর পর সে পাগল হয়ে যায, পাগর অবস্তায় সে ৫
বৎসর ছিল এবং পরে সুস্থ হয়। এক্সেত্রে কিন্তু সে ভাল হয়ে আর মামলা করার সুযোগ পাবে না। তার
দাবী তামাদি হয়ে যাবে। কারণ তামাদিকাল শুরু হওয়ার সময় সে ভাল ছির এবং ইতোমধ্যে ১৫ বৎসর
বেদখর অবস্তায় চলে গিযেছে। তামাদি কাল আরম্ভ হওয়ার সময় নাবালক, পাগল অথবা হাবা থাকলে ৬/৮
ধারার সুবিধা পাওয়া যাবে কিন্তু একবার তামাদিকাল আরম্ভ

প্রশ্ন-৫ জবর দখল বলতে কি বুঝ? উহার উপাদানগুলি কি কি? জবর দখলের সময় লাগে কত দিন? কখন
জবর দখলকৃ ত সম্পত্তিতে দখলকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয় এবং প্রকৃ ত মালিকের স্বত্ব বিলোপ হয়? জবর
দখলকারী কি চু ড়ান্ত মালিকানা অর্জ ন করতে পারে?

১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় জবর দখল সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করা হয়েছে। এই ধারায়
বলা হয়েছে যে কোন আইনগত স্বত্বের বিরুদ্ধে প্রতিকূ ল বা বিরুদ্ধ দখলকেই জবর দখল বলে। অর্থাৎ যখন
কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকূ ল হয় তখনই জবর দখলের সৃষ্টি হয়। অন্য কথায় ১২ বৎসর এর বেশী
সময ধরে অপরের সম্পত্তি জোর পূর্বক দখলে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য
সম্পত্তির প্রকৃ ত মালিক আদালতে শরণাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবর দখলকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয়
এবং তামাদি আইনের ভাষায় একেই জবর দখর বলে।

জবর দখল বা বিরুদ্ধ দখলের উপাদান:

১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারার সম্পত্তির অধিকারের অবসান কথাটির আলোকে সম্পত্তি
জবরদখল বা বিরুদ্দ দখলের জন্য যে সমস্ত উপাদানের কথা বলা হয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে
-
১) জবরদখরকারীকে প্রকৃ তপক্ষে জমিতে দখলদার থাকতে হবে। জবরদখরকারীর দখর নাই অথচ খতিয়ানে
তার নামে দখল দেখা আছে এরুপ কাগজী দখলের কোন কাজ হবে না।
২)সম্পত্তির দখল নিরবচ্ছিন্ন, পকাশ্য এর্ং প্রকৃ ত মারিকসহ অন্যান্য সকলের বিরুদ্ধে হতে হবে। এজন্যই
জাতীয় দখলের অপর নাম বিরুদ্দ দখল জনিত স্বত্ব।
৩) জবর দখরকারীর সম্পত্তিটি জোরে দখলে রাখার ইচ্চা থাকতে হবে।
৪) জবরদখল প্রকৃ ত মালিকের জ্ঞাত সারে হতে হবে।
৫) আইনসম্মতবাবে প্রথম দখল আরম্ব হলে , পরে জবরদখরদাবী উত্থাপন করা যাবে না।
৬) বাদীর স্বত্ব অঙ্গীকারে জবরদখরকারীকে নিজেরদাবীতে জমিতে দখরদার তাকতে হবে।

জবর দখলের ক্ষেত্রে সময় লাগে কতদিন:


যখন কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকু ল হয় তখনই উহা জবর দখর হয। ১২ বৎসর এর বেশী সময় ধরে
অপর এর সম্পত্তি জোরপূবৃক দখলে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পত্তি
প্রকৃ ত মালিক আদালতে শরণাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবরদখরকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয়। তাই বলা
যায় যে, ১২ বৎসর সমযকালই জবরদখলের সময হিসাবে গণনা করা হয়। যা ১৯০৮ সালের তামাদি আইনে
২৮ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে।কখন জবর দখলকারীর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জি ত হয়:

তামাদির সময় সীমা স্বত্বের মামলার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে ১ বছর। ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮
ধারার বিধান মতে কোন বাদী যদি তার খাস দখলীয় জমি হতে বিবািদী কর্তৃ ক বেদখল হয় সেক্ষেত্রে
বাদীকে অবশ্যই বেদখলের তারিখ হতে ১২ বৎসরের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে স্বত্বসাব্যস্তে
খাস দখলের জন্য মামলা করতে হবে। অন্যথায় দাবীকৃ ত জমিতে বাদীর সকল প্রকার অধিকার এবং স্বত্ব
ধ্বংস হযে যাবে। অন্যদিকে এ আইনের ২৬ ধারায় বিধানের আলোকে বব্যবহার সিদ্ধ অধিকারের কারণেও
উক্ত সম্পত্তিতে বিবাদীর অধিকার অর্জি ত হয়। উল্লেখ্য এই জন্য তামাদি আইনের ২৬ ধারাকে অর্জ নকারী
প্রিশক্রিপশন বলে।

যে সময় হতে জবর দখলের কারণে বাদীর মালিকানা বিলুপ্তি হযে যাবে ঠিক ঐসময় হতেই জবর
দখলকারীর উপর সংশ্রিষ্ট জমির মালিকানা বর্তাবে।আর এভাবেই জবর দখলের মাধ্যমে প্রকৃ ত মালিক
ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির সম্পত্তির উপর বৈধ বা আইনগত স্বত্ব অর্জি ত হয়ে থাকে।
কখন প্রকৃ ত মালিকের স্বত্ব বিলুপ্ত হয়:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে যে কোন সম্পত্তির দখল প্রাপ্তির জন্য মামলা
দায়ের করার ব্যাপারে এই আইনের যে মেয়াদ নির্ধারিত করে দেয়া আছে তা উত্তীর্ণ হবার পর উক্ত
সম্পত্তিতে দাবীর বিলুপ্তি হয়ে যাবে। তাই তামাদি আইনের ২৮ ধারাকে বিলোপকারী প্রেসক্রিপশনও বলা
হয়।
এই ধারার বিশ্লেষনে বলা যায় যে, দখর উদ্ধারের জন্য তামাদির মেয়াদ প্রথম তফসিলে বর্ণিত আছে। উক্ত
নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হযে গেলে ঐ সম্পত্তির উপর দাবীকারীর স্বত্ব লোপ পায়। আর এই আইনের
১৪২ অনুচ্ছেদ মোতাবেক তামাদি গণনা করা হয়। 
খ বিভাগ-তামাদি আইন
প্রশ্ন-১
ক) তামাদি আইন কাকে বলে?
খ) তামাদি আইনের প্রয়োজনীতা বা যৌক্তিকতা আলোচনা কর।
গ) তামাদি আইন স্বয়ং সম্পূর্ণ কি না ব্যাখ্যা কর।
তামাদি আইন বা খরসরঃধঃরড়হ অপঃ কাকে বলে:
মামলা দায়েরের জন্য একটি নির্দি ষ্ট সময়সীমা দেয়া থাকে ঐ নির্দি ষ্ট সময়সীমা পার হলে আর মামলা করা
যায না ঐ নির্দি ষ্ট সময়সীমাকে তামাদি আইন বলে।
তামাদি একটি আরবী শব্দ এর আভিধানিক অর্থ হলো কোন কিছু বিলুপ্ত হওয়া কিংবা বাধা প্রাপ্ত হওয়া।
মূলত ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি পদ্ধতিগত আইন। এই আইন একটি নির্দি ষ্ট মেয়াদের পরে কোন
আইনগত অধিকারের বিলুপ্তি ঘটায়। কতদিনের মধ্যে কোন মামলার আপীল , রিভিউ বা রিভিশনের জন্য
আদালতে দরখাস্ত পেশ করতে হবে। কখন বিলম্ব মৌকু ফ করা যাবে ইত্যাদি বিষয় তামাদি আইনে নির্ধারণ
করে দেয়া হয়েছে।
তামাদি আইন বা খরসরঃধঃরড়হ অপঃ হচ্ছে কোন সম্পত্তির উপর থেকে মালিকানার দ্বন্দ্বকে শেষ করে
পক্ষগন যেন তাহাদের মধ্যে পারষ্পারিক বিরোধ অনেক বছর যাতে চলাতে না পারে সেজন্য তামাদি
আইনের সৃষ্টি। তামাদি আইন বা খরসরঃধঃরড়হ অপঃ সকল প্রকার প্রতারণা মুলক কাজ বন্ধ করে দেয়।
কোন মামলার দরখাস্ত কতদিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে হবে কতদিনের মধ্যে আপিল করা যাবে।
কোন সময় মামলা করতে দেরি হবার পরও আদালত মামলার দরখাস্ত গ্রহন করতে পারেন এসব বিষয় সহ
ইত্যাদি বিষয় তামাদি আইন বা খরসরঃধঃরড়হ অপঃ নির্দি ষ্ট করে দেয়। তাই দাবী বা অধিকার প্রতিষ্ঠার
ক্ষেত্রে তামাদি আইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই আইন কোন ব্যক্তির তাহার স্বত্ব বা অধিকারের জন্য কতদিনের মধ্যে মামলা দায়ের করতে পারবে তার
সময় নির্দি ষ্ট করে দেয়। একবার এর সময়সীমা অতিক্রম হয়ে গেলে আর মামলা করা যায় না। মামলা
মোকদ্দমা করার একটি নির্দি ষ্ট সময় আছে। কোন মামলা ৩ বৎসর আবার কোন মামলা ১২ বৎসর
মেয়াদের মধ্যে করতে হয়। মামলার মত আপীলেরও একটি নির্দি ষ্ট সময় আছে। তামাদি আইনের প্রথম
তফসিলে উক্ত নির্ধারিত সময়সীমা বর্ণনা করা হয়েছে।
সুতরাং উপরোক্ত উল্লেখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, তামাদি আইন বলতে এমন একটি
স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন কে বোঝায় যে আইন দ্বারা সকল প্রকার দাবী বা স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিতে বৃদ্ধি যা
দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য করে এরুপ ব্যবস্থাকে
তামাদি আইন বলে।

বিলম্বের জন্য অনেকেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আদালতের শরনাপন্ন হতে পারেন না। আইনের সূত্র হচ্ছে
বিলম্ব ন্যায় বিচারকে প্রতিহত করে” । আইনের অরো একটি নিয়ম হচ্ছে, যে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠায়
সচেতন নয়, আইন তাকে সহায়তা করে না।
আইন সচেতনতার এবং অবহেলার কারণে মানুষের অধিকার আদায় করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। নিষ্ঠু র তামাদি
আইনের প্রবল বাধা আর অতিক্রম করা যায় না। সময় একবার অতিবাহিত হয়ে গেলে আর তা ফিরে
পাওয়া যায না, মামলা মোকদ্দমা আধিক্য কমাতে এবং নাগরিকদেরকে নিজ নিজ অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট
করতেই তামাদি আইনের জন্ম। এজন্য অনেকে বলে থাকেন তামাদি আইন জবর দখলকে সমর্থন করে।
কারণ নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে জবর দখল কারীর বিরুদ্ধে উচ্ছেদ মামলা না করলে সংশ্লিষ্ট জমিতে জবর
দখরকারীর একপ্রকার শক্তিশালী বিরুদ্ধ শর্ত জন্ম নেয়। যার ফলে তাকে আর উচ্ছেদ করা যায় না। বৈধ
মালিক তার মালিকানা স্বত্ব হারায়।
সাধারণত কোন একটি বিষয়ে নালিশের উদ্ভব হলে অর্থাৎ কোন ব্যাপারে মামলা করার প্রয়োজন দেখা দিলে
প্রশ্ন জাগে মামলাটি কখন করবো। আবার অনেকে মনে করেন- করবো এক সময় বলে বসে থাকেন। কিন্তু
না ,কখন মামলা দায়ের করতে হবে সে প্রশ্নে সমাধান দিয়েছে তামাদি আইন। আর যারা মনে করেন যে
করবো এক সময় তাদের সাবধান করেছে এ আইন। যে কোন সময় আপনার কেবল খুশিমত আপনি
আপনার দাবীর সপক্ষে মামলা দায়ের করতে পারেন না, সব কিছুর যেমন একটি নিয়ম আছে , আইন
আছে, মামলা দায়েরের ক্ষেত্রেও সময়ের সেই নিয়ম বেধে দিয়েছে তামাদি আইন। তামাদি আইন মানুষকে
সাবধান করেছে যে , একটি বিশেষ সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরে আর মামলা করা যায় না।
দেশের প্রচলিত আইন এবং সরকার এটাই আশা করেন যে. প্রতিটি নাগরিক তাদের অধিকার সম্বন্ধে সদা
জাগ্রত এবং সচেতন থাকবে। কেই তাদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করলে সংক্ষু ব্ধ ব্যক্তি আইনের নির্ধারিত
সময়ের মধ্যে প্রতিকারের জন্য আদালতে উপস্থিত না হয় , তবে সেই রকম ব্যক্তিকে আইন আদালত
সাহায্য করবে না।
তামাদি আইন ধরেই নেই যে দাবী যার সত্য , সে তার দাবী আদায়ে তৎপর থাকবে।
মামলা মোকদ্দমার সময় সীমা বিষয়ে কোন বাধা নিষেধ না থাকলে দীর্ঘদিন পরে আমাদের নানাভাবে মামলা
মোকদ্দমা জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকতো।
বিষয়টি নিয়ে সর্বদা চিন্তান্বিত থাকতে হতো, সে কারণে মানবিক শান্তি বিঘিœ ত হতো।
দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হেতু প্রয়োজনীয় সাক্ষী এবং নির্ভ র যোগ্য সাক্ষ্যের অভাব হতো ফলে বিচারকের
পক্ষে কোন বিষয় সঠিকভাবে নিস্পত্তি করা কঠিন হয়ে পড়তো। কোন সময়সীমা বাধা না থাকলে মামলা
মোকদ্দমা কোন দিন শেষ হতো না।
তামাদি আইন ক্ষতি গ্রস্থ’ পক্ষকে মামলা আপীল, দরখাস্ত রিভিশন ও রিভিউ নির্ধারিত সীমার মধ্যে দাখিল
করা নির্দে শ দিয়েছে।
 নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে না করলে প্রতিপক্ষ আপত্তি উত্থাপন করুক বা না করুক তামাদি আইনের
নির্ধারিত নিয়মে আদালতে সেটা ডিসমিস করে দিবেন।
কোন বিশেষ ক্ষেত্রে এই আইন প্রয়োগ যত রুঢ়ই মনে হোক না কেন আদালতের এই আইনের বিধান মেনে
চলতে হবে।
তামাদি আইনের প্রয়োজনীতা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
১) দেওয়ানী মোকদ্দমা, আপীল ও কতিপয় দরখাস্ত আদালতে দায়ের করার মেয়াদ সম্পর্কি ত আইন
একত্রীকরণ ও সংশোধন করা হয়।
২) দখলের দ্বারা ব্যবহার স্বত্বের ও অন্যান্য সম্পত্তির অধিকার অর্জ নের নির্ধারিত সময়সীমা প্রণয়ন করা হয়।
৩) তামাদি আইনের সময় সীমার দ্বারা সমাজের বিবাদ নিস্পত্তির মাধ্যমে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা হয়।
৪) মামলার দীর্ঘসূত্রীতা জিয়য়ে না রেখে জনসাধারনের ভোগান্তি  লাঘব করা হয়।
৫) মামলার জটিলতা অর্থাৎ বহুতা বা সময় এর সাশ্রয় করা হয়।
৬) মামলার দীর্ঘ সূত্রীতার বন্ধের জন্য অর্থের অপচয় রোধ করা হয়।
৭) প্রতারণামূলক কার্যক্রমকে প্রতিরোধ করা হয়।
৮) প্রতিষ্ঠিত অধিকার সংরক্ষনের জন্য সহায়তা করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়।
৯) সর্বোপরি তামাদি আইন দ্বারা সর্বপ্রকার দাবী ও স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিতে দীর্ঘায়িত করে সুযোগ না
দিয়ে বরং চির দিনের জন্য নিস্পত্তি করতে সাহায্য করে।
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে,দেওয়ানী আইনে তামাদি আইনের প্রয়েজনীয়তা অপরিসীম।

তামাদি আইন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন কি না:


১৯০৮ সালের তামাদি আইনের সুস্পষ্ট বিধান হল এই আইনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কোন মামলা,
আপীল কিংবা দরখাস্ত আদালতে দাখিল না করলে পরবর্তীতে আদালত তা গ্রহন করবে না।
তামাদি আইনের ৩ ধারা হতে ২৫ ধারা পর্যন্ত বর্ণিত বিধান মোতাবেক যে কোন ধরণের মামলা আপীল
কিংবা দরখাস্ত দাখিলের মেয়াদ সম্পর্কে সাধারণ নিয়মাবলী ব্যতিক্রম সহ উল্লেখ করা হয়েছে। এই আইনের
মধ্যে ৫ ধারায় তামাদি রেয়াত বা বিলম্ব মৌকু ফের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তামাদি আইনের ২৮ ধারায় জবর
দখলের মাধ্যমে স্থাবর সম্পত্তির মালিকানা স্বত্ব বিলপ্ত হয় এবং জবর দখলকারীর স্বত্ব অর্জ নের সময়সীমার
বিষয়ে নির্ধারিত বিধানাবলী বর্ণিত হয়েছে।
ইহা ছাড়া অত্র আইনের ১৬ ও ২৭ ধারায় ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জ নের সময়সীমা সম্পর্কে বিধান
রয়েছে। তাই এই আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী বিলম্ব মৌকু ফের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে উক্ত বিধান ছাড়া
আদালত ন্যায় বিচার এর স্বার্থে তামাদি আইন দ্বারা অনুমোদিত সময় সীমার ব্যাপারে কোন অনুমান বা
ক্ষমা প্রদর্শন করবেন না।
সুতরাং যে দাবী তামাদি হয়ে যায় তবে সময় সীমা বাড়ানোর এখতিয়ার আদালতের নেই এমনকি তামাদি
কৃ ত দাবী বা অধিকারকে আদালতে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে না।
তাই তামাদি আইন বলতে এমন এক স্বয়ংসম্পূর্ণ আইনকে বুঝায় যে আইন দ্বারা সর্ব  প্রকার দাবী বা
স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরাম গতিকে  দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায়
সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া এই আইন প্রতারনা মূলক কার্যক্রম প্রতিরোধ করে। ১৯০৮ সালের তামাদি
আইনের ২৯টি ধারা ১ নং তফসিলে ১৮৩ টি অনুচ্ছেদ রয়েছে অতএব এই আইনে সব ধরনের বিধিবদ্ধ
নিয়মাবলী সন্নিবেশিত রয়েছে বিধায় একে স্বয়ং সম্পূর্ণ বিধিবদ্ধ আইন বলে গন্য করা হয়। তাই উপরোক্ত
আলোচনার সারতত্বে বলা যায় যে ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন।

প্রশ্ন-২
ক) তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ কি বা বিলম্ব মওকু ফ বলতে কি বুঝ?
খ) এই বিলম্ব মওকু ফের বিধান কি তামাদি আইনের মূল উদ্দেশ্যকে নস্যাৎ করে অথবা ধারা ৫ কি মূল
মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? যুক্তি দাও।
গ) কোন পরিস্থিতিতে এই বিলম্ব প্রয়োজ্য?
ঘ) কোন ব্যক্তি কি ৫ ধারা অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারে?
ঙ) কোন কোন কারণগুলি বিলম্ব মৌকু ফের কারণ বলে গন্য করা যায়?
চ) সময়ের অবিরাম চলন বলতে কি বুঝ?
ছ) সময় একবার চলতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অযোগ্যতা বা অক্ষমতা তাকে থামাতে পারে না
ব্যতিক্রম সহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:
বিলম্ব মৌকু ফ:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারায় বর্ণিত বিলম্ব মওকু ফের বিষয়টির আইনগত  মূল্য অপরিসীম। এই
ধারা মতে কোন আপীলকারী বা দরখাস্তকারী যদি প্রমান করতে পারেন যে নির্দি ষ্ট সময়সীমার মধ্যেও কোন
আপীল , রিভিউ বা রিভিশন করতে না পারার পর্যাপ্ত কারণ ছিল মর্মে আদালতকে সন্তোষ্ট করতে পারে
সে ক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে তখন এই ব্যবস্থাকেই আইনের ভাষায় বিলম্ব মওকু ফ বলে।
বিলম্ব মওকু ফ করা হলে তামাদির কারণে বারিত মোকদ্দমা গৃহীত হতে পারে।
যেমন- ১৯৮৫ সালের ১লা জানুয়ারী একটি আপীল পেশ করার শেষ তারিখ। অপীলকারী ভু লক্রমে সরল
বিশ্বাসে আপীলটি সে তারিখেই অন্য একটি ভু ল আদালতে পেশ করে। পরে ২২ এপ্রিল শুনানীর সময়
দেখা গেল আপীলটি প্রকৃ ত আদালতে পেশ করা হয়নি। ভু ল ধরা পড়ার সাথে সাথে আপীলকারী প্রকৃ ত
আদালতে আপীলটি পেশ করে। এক্ষেত্রে সরল বিশ্বাসে ভু ল হওয়ায় আদালতে বিলম্ব কওকু ফ করতে
পারেন। এরুপ অবস্থায় অপীলটি তামাদির কারণে বারিত হবে না।
বিলম্ব মৌকু ফের ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ-
প্রথমত: পর্যাপ্ত কারণ
দ্বিতীয়ত: আদালতকে সন্তুষ্টি করণ
এই ধারাটি আপীল ,বিভিশন,রিভিউ মামলার জন্য প্রযোজ্য এমনকি ফৌজদারী আপীল মামলার জন্যও।
মূল মামলা দায়ের করার সময় এই ধারার সাহায্য পাওয়া যাবে না।
৫ ধারা কি মূল মামলার জন্য প্রযোজ্য:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারাটি কেবরমাত্র আপীল এবং রিভিউ ,রিভিশন সহ অন্যান্য উল্লেখিত
ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এমনকি ফৌজদারী মামলার আপীলের ক্ষেত্রেও ৫ ধারা প্রযোজ্য হবে। মূল মামলার
ক্ষেত্রে এ তামাদি আইনের ৫ ধারাটি প্রযোজ্য হবে না। কারণ অধিকাংশ দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে তামাদির
মেয়াদ ৩ বৎসর হতে ১২ বৎসর পর্যন্ত সম্প্রসারিত কিন্তু এই ধারার বিধান মতে আপীল এবং আবেদনের
তামাদির মেয়াদ ৭ দিন হতে ৬ মাস। যেহেতু আপীরের সময়সীমা কম সেহেতু যুক্তিসংগত কারনে আপীল
দাযের করতে কিংবা রিভিশন সহ অন্যান্য দরখাস্ত দাখিল করতে বিলম্ব হলে এই ধারা মতে উপযুক্ত কারণ
সাপেক্ষে সেই বিলম্ব মৌকু ফ করা যেতে পারে। তাই মূল মামলায় অনেক সময় পাওয়া যায় বিধায় মূল
মামলায় ৫ ধারা ব্যবহার যোগ্য নহে।
উল্লেখ্য যে যথেষ্ট কারণে বিষয়টি তথ্যগত প্রশ্ন আবার আদালতের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে,যুক্তিসংগত
স্বত্ব এবং মনোযোগের সাথে কাজ করলে বিলম্বটি এড়ানো যেত তাহলে ঐ ক্ষেত্রে আদালতে বিলম্বটি গ্রহন
নাও করতে পারেন তাছাড়া তামাদি আইনের ৫ ধারা মোতাবেক বিলম্ব মৌকু ফের জন্য কোন ব্যক্তি আবেদন
করলে তাকে বিলম্বের জন্য প্রত্যেক দিনের জন্য ব্যাখ্যা অথবা কৈফিয়ত আদালতের নিকট দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে একটি মামলার রায়ে মাদ্রাজ হাইকোট বলেন, প্রত্যেক মামলায় বাদীর কর্ত ব্য হল তার মামলার
আপীল দাখিলের তারিখ জেনে রাখা; যদি তার নিজের কারণে আপীল দাযের করতে বিলম্ব ঘটে এবং এই
ধারার আওতাভূ ক্ত আদালতের স্বীয় বিবেচনা ক্ষমতা তার পক্ষে অথবা অনকূ লে বিলম্ব মৌকু ফের জন্য
পর্যাপ্ত প্রমান আদালতে উপস্থাপন করতে হবে।
অধিকার হিসাবে ৫ ধারা দাবী প্রসঙ্গে:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনে বিলম্ব মৌকু ফ এর ক্ষেত্রে কোন দরখাস্তকারী এই মর্মে আদালতের সন্তুষ্টি
বিধান করতে পারে যে, নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে অনুরুপ আপীর রিভউ ,রিভিশন দাখিল না করার
ক্ষেত্রে পয়াপ্ত কারণ ছিল তাহলে তামাদি আইনের ৫ ধারা বিধানে বিলম্ব মওকু ফের সুবিধা পাবে।
তবে এই সুবিধা কেউ অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারেন না। কারণ আদালতের
স্বেচ্ছাধীন(উরংপৎবঃরড়হধৎু চড়বিৎ) , বিবেচনামূলক ক্ষমতার উপর নির্ভ রশীল কাজেই এধারার সুবিধা পেতে
হলে পর্যাপ্ত কারণ প্রমান করতে হবে এবং তা আদালতকে সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহন করতে হবে। উহা কোন
অধিকার নহে, ইহা একান্তই আদালতের বিবেচ্য বিষয়।
বিলম্ব মওকু ফের ক্ষেত্রে আইন, সরকারী ও বেসরকারী মামলাকারীর মধ্যে কোন পার্থক্য করেনি। সরকারের
কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী অসাবধানতা বা অবহেলা বিলম্ব মওকু ফের ক্ষেত্রেও পর্যাপ্ত কারণ হিসাবে গন্য
হয়না। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সরকার বিশেষ  কোন সুবিধা পাওয়ার অধিকারী নয়।তবে উপযুক্ত কারণে বা
পরিস্থিতিতে সরকার এর পক্ষে বিলম্ব মওকু ফের সুবিধা পাওয়া যাইতে পারে।
উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায় যে, ১৯০৮ সালের তামদি আইনের ৫ ধারাকে অধিকার হিসাবে
কেহ দাবী করতে পারে না ইহা একান্তই আদালতের ইচ্ছাধীন ক্ষমতা ও পর্যাপ্ত কারণ।
তামাদি মার্জ নার জন্য কি কি শর্ত পূরণ করতে হয়:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী তামাদি মার্জ না পাওয়া যায়। কিন্তু তামাদি মার্জ না পাওয়ার
ক্ষেত্রে আদালতকে কিছু বিষয় সন্তুষ্ট করতে হয়,
নি¤েœ শর্ত গুলি দেওয়া হলো-
    বিলম্ব হওয়ার কারণটি ১৯০৮ সালের তামাদি াাইনের ৫ ধারা মোতাবেক যথেষ্ট কারণ থাকতে হবে।
    বিলম্ব হওয়ার ক্ষেত্রে দরখাস্তকারীর কোন গাফিলতি ছিল না।
    দরখাস্তকারী সরল বিশ্বাসে প্রতিকার পেতে এসেছে।
অত্র আইনে যথেষ্ট কারণ বলতে কোন কোন কারনকে যথেষ্ট কারন বলা যেতে পারে তেমন কিছুই বলা
নেই। তবে উচ্চ আদালতের নজিরের মাধ্যমে অসুস্থতাকে যথেষ্ট কারন বলা যেতে পারে।
যে সকল কারণে সাধারণত তামাদি মওকু ফ পাওয়া যেতে পারে। তা নিচে দেওয়া হলো-
ক) আদালতের আদেশ দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া
খ) জাবেদা নকল;
গ) সরল বিশ্বাসের ভু ল;
ঘ) ভু ল আদালতের মামলা দাখিল;
ঙ) অফিসের ভু ল;
চ) ভু ল পরামর্শ;
ছ) বাদীর কারগারে থাকা;
জ) প্রাকৃ তিক দূর্যোগ;
ঝ)কোর্ট ফির অপ্রতু লতা;
ঞ) বাদীর অসুস্থতা
ট) কৌশলীর ভু ল;
ঠ) রায বা ডিক্রীর সার্টি ফাই কপিতে ভু ল
ড) আইনের অজ্ঞতা
ঢ) তামাদি সময় গননায় ভু ল হলে।
ণ) মৃত্যু
এসকল কারণে সাধারণত তামাদি মওকু ফের দরখাস্ত করা যায়। যদি এসকল কারণ আদালতের নিকট যথেষ্ট
কারণ বলে বিবেচিত হয়।

সময়ের অবিরাম চলন:


একবার তামাদির মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে আরম্ভ হলে তৎপরবর্তী  মামলা দায়েরের কোন অযোগ্যতা কিংবা
অক্ষমতা উহা রোধ করতে পারে না।
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৯ ধারায় বর্ণিত এই বিধানকে ’সময়ের অবিরাম চলন’ হিসেবে অখ্যায়িত
করা হযেছে।

তামাদি আইনের ৯ ধারা ভাষ্যমতে সময় একবার অতিবাহিত হতে আরম্ভ করলে পরবর্তীকালীন অক্ষমতা
বা অসমর্থতা ইহাকে থামাতে পারে না তামাদি আইনের ইহাই বিধান।
এ আইনে আরও বলা হয়েছে যে,তবে শর্ত হয়,যেক্ষেত্রে কোন পাওনাদারকে দেনাদারের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার
পত্রনামা প্রদান করা হয়েছে, উক্ত ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকাকালে ঋণ উসুলের জন্য মামলা করার নির্ধারিত
মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া মুলতবী থাকবে।
    অক্ষমতা( উরংধনরষরঃু ) হলো,মামলা করার নিমিত্ত পরবর্তী শারীরিক সক্ষমতার অভাব যেমন-
অসুস্থতা,দারিদ্রতা ইত্যাদি।
    অযোগ্যতা (ওহধনরষরঃু) হলো, মামলা করার আইনগত যোগ্যতার অভাব ,যেমন- নাবালকত্ব,
অপ্রকৃ তিস্থ,মূর্খ হওয়া ইত্যাদি।
ধরা যাক রহিম জমি হতে বেদখল হওয়ার ১০ বৎসর পর সে পাগল হয়ে যায, পাগর অবস্থায় সে ৫
বৎসর ছিল এবং পরে সুস্থ হয়। এক্ষেত্রে কিন্তু সে ভাল হয়ে আর মামলা করার সুযোগ পাবে না। তার
দাবী তামাদি হয়ে যাবে। কারণ তামাদিকাল শুরু হওয়ার সময় সে ভাল ছিল এবং ইতোমধ্যে ১৫ বৎসর
বেদখল অবস্থায় চলে গিযেছে। তামাদি কাল আরম্ভ হওয়ার সময় নাবালক, পাগল অথবা হাবা থাকলে ৬/৮
ধারার সুবিধা পাওয়া যাবে কিন্তু একবার তামাদিকাল আরম্ভ

ছ)
সময় একবার চলতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অযোগ্যতা বা অক্ষমতা তাকে থামাতে পারে না ব্যতিক্রম
সহ ব্যাখ্যা:
তামাদি আইনের ৬ ধারায় বলা হয়েছে যে,
যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি নাবালক ,পাগল অথবা হাবা থাকে,তবে নাবালক থাকলে সাবালক হয়ে,পাগল বা
হাবা থাকলে মানুষিকভাবে সুস্থ হয়ে মামলা করতে পারে।
আবার যদি নাবালক থাকা অবস্থায় সে উন্মাদ হয়ে পড়ে তবে নাবালকত্ব ও উন্মাদতা উভয় প্রকার
অসমর্থতা অবসানের পর তার মামলার তামাদি মেয়াদ গণনা শুরু হবে।
তামাদি আইনের ৭ ধারায় বলা হয়েছে যে,
কতিপয় ব্যক্তি যৌথভাবে একটি মামলা করার বা ডিক্রি জারি দেওয়ার আধিকার আছে। কিন্তু তাদের মধ্যে
একজন আইনগত অসমর্থ অর্থাৎ নাবালক,পাগল বা হাবা এবং সেই অসমর্থ ব্যক্তির অনুমতি ছাড়াই
মামলা পরিচালনা করা যায় তাদের সকলের বিরুদ্ধে তামাদি মেয়াদ অতিবাহিত হতে থাকে যদি এমন অবস্থা
হয় যে ঐ অসমর্থ ব্যক্তির সম্মতি ব্যতীত মামরা চালনা সম্ভব নহে তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আইনগত
অসমর্থতার অবসান না হওয়া পর্যন্ত তাদের সকলের বিরুদ্ধে তামাদিকাল স্থগিত থাকবে।
ব্যতিক্রম:
সময়ের অবিরাচলন- বিধানটির চু ড়ান্ত ও অলঙ্গনীয় কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে যে ক্ষেত্রে তামাদিকাল স্থগিত যায়
সেগুলি নি¤œ রুপ-
১) তামাদির আইনের ৯ ধারার শেষে একটি শর্ত যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, যেক্ষেত্রে
কোন পাওনাদারকে দেনাদারের সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার পত্রনামা প্রদান করা হয়েছে, উক্ত ব্যবস্থাপনা অব্যাহত
থাকাকালে ঋণ উসুলের জন্য মামলা করার নির্ধারিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া মুলতবী থাকবে।
২) তামাদি আইনের ৯ ধারা বিধানের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য  মোতাবেক আপীল অথবা দরখাস্ত দাখিলের জন্যে
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা প্রমানাদি যেমন- রায়, আদেশ ডিক্রি বা রোয়েদাদের নকল নিতে আইনগত যে সময়
অতিবাহিত হবে ঐ সময়টু কু তামাদি মেয়াদকালে বাদ দিতে হবে। তাছাড়া যেদিন হতে তামাদির সময় আরম্ভ
হবে উক্তদিনকেও তামাদির গণনা হতে বাদ দিতে হবে।
৩) তামাদি আইনের ১৩ ধারা সারমর্ম অনুযায়ী বিবাদি যতদিন বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করবে ততদিন
পর্যন্ত তামাদির  গণনা স্থগিত থাকবে।
৪) তামদি আইনের ১৪ ধারার মূল বক্তব্য অনুযায়ী যদি বাদী যত œ সহকারে সরল বিশ্বাসে কোন মূল মামলা
চালাতে থাকে এবং পরবর্তীতে ধরা পড়ে যে, ঐ আদালতের সংশ্লিষ্ট মামলাটির বিচার করা এখতিয়ার নেই,
তাহলে অনুরুপ এখতিয়াবিহীন আদালতে মামলা করার সময় তামাদির সময় গণনা হতে তা বাদ যাবে।
৫) তামাদি আইনের ১৫ ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে যে, যে মামলা বা ডিক্রিজারীর দরখাস্ত দােেয়র
কিংবা জারি কোন নিষেধাজ্ঞা অথবা আদেশ দ্বারা স্থগিত রাখা হয়েছে , তার জন্য নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ
গণনার সময়, যতদিন তা নিষেধাজ্ঞা বা আদেশ বলবৎছিল, যেদিন তা প্রদত্ত হয়েছিল এবং যেদিন তা
প্রত্যাহার করা হয়েছিল , তা বাদ দিতে হবে।
এই ধারা ২ উপধারায় আরও বর্ণিত আছে যে, যে মামলার জন্যে বর্ত মানে বলবৎ  কোন আইনের বিধান
অনুযায়ী নোটিশ দেয়া হয়েছে, তার জন্যে নির্ধারিত মেয়াদ গণনায় নোটিশের সময় বাদ দিতে হবে।
৬) এই আইনের ১৬ ধারা মোতাবেক ডিক্রিজারীর নিলামে খরিদ সম্পত্তি দখল পাবার জন্যে নিলাম খরিদ্দার
কর্তৃ ক মামলা দায়ের করারর জন্য নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ সময়সীমা গণনার সময় নিলাম রদের জন্যে 
দাখিলকৃ ত কার্যধারা যতদিন চলতে, তা ঐ সময় গণনা হতে বাদ দিতে হবে।
বস্তুত এই সমস্ত ব্যতিক্রম সাপেক্ষে অপরাপর সমস্ত ক্ষেত্রে সমযের অবিরাম চলন বিধানটি যতার্থভাবে
প্রযোজ্য।

প্রশ্ন-৩
ক) তামাদি আইনে কিভাবে অধিকারকে শুধু ধ্বংস করে না,পরোক্ষভাবে অধিকার প্রদানও করে ব্যাখ্যা কর।
খ) ব্যবহার সিদ্ধ বা সুখাধিকার বা ইজমেন্ট কি?
গ) ব্যবহার সিদ্ধ বা সুখাধিকার অর্জ নের জন্য কোন কোন উপাদানের উপস্থিতি আবশ্যক অথবা তামাদি
আইনে কিভাবে ইজমেন্ট এর অধিকার অর্জ ন করা যায়?
ঘ) ব্যবহার সিদ্ধ অধিকারের ক্ষেত্রে সাধারণ সম্পত্তি ও সরকারী সম্পত্তির ক্ষেত্রে কত দিন সময় লাগে
অথবা কখন কোন ব্যক্তি দলিল ব্যতীত অন্যের স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জ ন করতে পারে?
ঙ) ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার নষ্ট বা বিলোপ হতে কত সময় লাগে?
ক)
তামাদি আইন অধিকারকে শুধু ধ্বংস করে না,পরোক্ষভাবে অধিকার প্রদানও করে ব্যাখ্যা:
নির্দি ষ্ট মেয়াদ পার হওয়ার পর তামাদি আইন মামলা দায়ের করার অধিকার বিলুপ্ত করে। মেয়াদ উত্তীর্ণ
হওয়ার পর কেউ মামলা দায়ের করতে পারে না।এক্ষেত্রে এক পক্ষের অধিকার বিলুপ্ত হবার সাথে সাথে
অন্য পক্ষের অধিকার জন্ম লাভ করে। তামাদি আইনের চতু র্থ অধ্যায়ে দখল বলে মালিকানা স্বত্ব অর্জ নের
অধিকার বর্নিত হয়েছে। যেমন- কোন ব্যক্তি ২০ বৎসর যাবৎ অব্যাহতভাবে আপন অধিকারে
আলো,বাতাস,পথ,পানি, জলপথ ভোগ করে থাকে, তবে সে আলো,বাতাস,পথ ,পানি, জলপথ এর উপর তার
অধিকার পাকা হয়ে যায়।[ ধারা ২৭] অন্যের সম্পত্তি যদি কেউ ১২ বৎসরের বেশী সময় বিনা আপত্তিতে
ভোগ দখল করতে থাকে তবে সে সম্পত্তিতেও উক্ত দখলকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয়। [ধারা-২৮]
অতএব দেখা যায়, উপরোক্ত ক্ষেত্র দুটিতে একজনের অধিকার বিলুপ্তির সাথে সাথে অপরজনের অধিকার
সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই যথার্থভাবেই বলা যায় তামাদি আইন শুধু অধিকার বিলুপ্ত করে না, অধিকার সৃষ্টিও
করে।
খ)
ইজমেন্ট রাইট বা সুখাধিকার:
 ইজমেন্ট বা সুখাধিকার বলতে এমন এক সুবিধাভোগী স্বত্বের অধিকারকে বুঝায় যা দ্বারা কোনো জমির
মালিক বা দখলকার তা জমির সুবিধাজনক ভোগের জন্য অপর কোনো ব্যক্তির জমির উপর দিয়ে কিছু
করতে বা করা অব্যাহত রাখতে, কোনো কিছু নিবৃত্ত করতে বা নিবৃত্ত অব্যাহত রাখতে পারে । (১৯৮২
সালের
ইজমেন্ট রাইট এক্ট এর ৪ ধারা)
 ব্যবহার সিদ্ধ বা সুখাধিকার অর্জ ন সম্পর্কে ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৬ ধারায় বলা হয়েছে যে,
কোনো ব্যক্তি শান্তিপূর্ণভাবে এবং প্রকাশ্যভাবে কোনো ব্যক্তির ভূ -সম্পত্তি বাঁধাহীন ভাবে ও নিরবচ্ছিন্ন ভাবে
২০ বৎসর কাল ধরে ভোগ দখল করে থাকলে তাতে তার পথ চলার অধিকার জনিত স্বত্ব অর্জি ত হয় ।
গ)
ব্যবহার সিদ্ধ বা সুখাধিকার অর্জ নের জন্য কোন কোন উপাদানের উপস্থিতি আবশ্যক অথবা তামাদি আইনে
কিভাবে ইজমেন্ট এর অধিকার অর্জ ন করা যায়:
তামাদি আইনের ২৬ ধারাটি বিশ্লেষণ করলে প্রতিয়মান হয় যে, ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জ ন করতে হলে
নি¤œ বর্ণিত শর্তাবলী পূরণ করতে হয়:
১) প্রকাশ্য ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করতে হবে।
২) অনুরূপ ভোগ দখল অধিকার হিসাবে করতে হবে।
৩) কোন রকম বাধা কিংবা আপত্তি ব্যতীত উক্ত ভোগ দখল করে যেতে হবে।
৪) অনুরুপ ভোগ দখল ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক হলেও চলবে।
৫) সাধারণ সম্পত্তির ক্ষেত্রে বিশ বছর এবং সরকারী সম্পত্তির বেলায় ষাট বছর অনুরূপ ভোগ দখল
করতে হবে।
৬) তামাদির সময় সমাপ্ত হবার দু’বছর সময়ের মধ্যেই ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার সম্পর্কি ত মামলা দায়ের করতে
হবে
  
ঘ)
ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জ নের ক্ষেত্রে সরকারী সম্পত্তি এবং সাধারণ সম্পত্তি অর্জ নের জন্য কতদিন সময়
লাগে: ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার অর্জ নের ক্ষেত্রে সরকারী সম্পত্তি ক্ষেত্রে ৬০ বছর এবং সাধারণ সম্পত্তি
অর্জ নের জন্য ২০ বছর সময় লাগে।
ঙ)
ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার নষ্ট হতে কতদিন সময লাগে:
দুই বছর পর্যন্ত একাধিকক্রমে ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার প্রয়োগ বাধা প্রাপ্ত হয়ে থাকলে তার বিলুপ্তি ঘটে
থাকে।
উল্লেখ্য যে, ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার লাভ করতে সময় প্রয়োজন হয় বিশ বছর এবং উক্ত অধিকার লোপ
পেতে সময়ের প্রয়োজন হয মাত্র দুই বছর। তাছাড়া ইজমেন্ট আইন বা ব্যবহারসিদ্ধ আইনের বিধান মতে
সময়সীমা শেষ হয়ে গেলেও ব্যবহার সিদ্ধ অধিকার বিলুপ্ত হয়।
২৭ ধারায় বলা হয়েছে যে,ব্যবহার জনিত অধিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দখলকার যদি জীবনস্বত্বে বা ৩
বছরের অধিককালের ইজারা স্বত্বে দখলকার হয়, তবে ২৬ ধারানুযায়ী মেয়াদ গণনার সময় জীবন স্বত্বাধিকারী
বা ইজারা স্বত্বের অধিকারী যতদিন দখলকার ছিলেন সে সময়টা বাদ যাবে এবং সম্পূর্ণ স্বত্বের মালিক
সংশ্লিস্ট জমির দখল নেওয়ার পর ৩ বছরের মধ্যে ব্যবহারজনিত অধিকারীকে বাধা প্রদান করলে তার
বিরুদ্ধে ব্যবহার জনিত অধিকারীর কোন দাবী টিকবে না।
কখন নির্ধারিত সময় থেকে দেরি করলেও মামলা বা আপীল করা যাবে-
 খরসরঃধঃরড়হ অপঃ, ১৯০৮ এর ৬ ধারা কিছু ক্ষেত্রে কোন মামলা বা আপীলের জন্য নির্ধারিত সময়
দেরি করার বা সময় গণনাতে দেরি করার বৈধতা দিয়েছে। এগুলো নিম্নরূপঃ
১। যদি মামলা বা কার্যধারা দায়ের করার কিংবা ডিংক্রী জারির জন্য দরখাস্ত দাখিলের অধিকারী ব্যক্তি, যে
সময় হতে তামাদির মেয়াদ গণনা করতে হইবে, সেই সময় নাবালক, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধি থাকে, সেক্ষেত্রে উক্ত
ব্যক্তি তার উক্ত অপারগতার অবসান হবার পর, অপারগতা না থাকলে, প্রথম তফসিলের তৃ তীয় স্তম্ভে
অথবা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৮ ধারায় বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে সে ওটা করতে পারতো, সেই
মেয়াদের মধ্যে মামলা বা কার্যধারা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।
২। যদি অনুরূপ কোনো ব্যক্তি, যে সময় হইতে তামাদির মেয়াদ গণনা করিতে হইবে, সে সময় উপরে বর্ণিত
যেই কোনো দুইটি অপারগতার অবসান হইবার পূর্বেই সে আরেকটি অপারগতায় পতিত হয়, সেক্ষেত্রে সেই
ব্যক্তি তাহার উভয় অপারগতার অবসান হইবার পর, অপারগতা না থাকিলে, উপরে বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে
সে ওটা করতে পারতো, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।
৩। যদি অনুরূপ কোনো ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত তাহার অপারগতা অব্যাহত থাকে, সেইক্ষেত্রে তাহার আইনানুগ
প্রতিনিধি ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর অপারগতা না থাকিলে উপরে বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে ওটা করা যেতো,
সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দাখিল করতে পারবে।
৪। যদি উপরোক্ত ব্যক্তির মৃত্যু তারিখে তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি অনুরূপ কোনো অপারগতায় পতিত হয়,
সেক্ষেত্রে তাদের ক্ষেত্রেও (১) ও (২) উপধারায় বিধৃত বিধানসমূহ প্রযোজ্য হবে।
প্রশ্ন-৪
ক) জবর দখলের সংজ্ঞা দাও অথবা বিরুদ্ধ দখল কি?
খ) জবর দখলের উপাদানগুলি কি কি?
গ) জবর দখলের ক্ষেত্রে কত সময় লাগে?
ঘ) কখন জবর দখলকৃ ত সম্পত্তিতে দখলকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয় এবং প্রকৃ ত মালিকের স্বত্ব বিলোপ হয়?
কখন কোন ব্যক্তি দলিল ব্যতীত অন্যের স্থাবর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জ ন করতে পারে?
ঙ) জবর দখলকৃ ত সম্পত্তিতে জবর দখলকারী কি চু ড়ান্ত মালিকানা অর্জ ন করতে পারে?
জবর দখলের সংজ্ঞা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় জবর দখল সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করা হয়েছে। এই ধারায়
বলা হয়েছে যে কোন আইনগত স্বত্বের বিরুদ্ধে প্রতিকূ ল বা বিরুদ্ধ দখলকেই জবর দখল বলে। অর্থাৎ যখন
কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকূ ল হয় তখনই জবর দখলের সৃষ্টি হয়। অন্য কথায় ১২ বৎসর এর বেশী
সময ধরে অপরের সম্পত্তি জোর পূর্বক দখলে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য
সম্পত্তির প্রকৃ ত মালিক আদালতে শরণাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবর দখলকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয়
এবং তামাদি আইনের ভাষায় একেই জবর দখর বলে।

জবর দখল বা বিরুদ্ধ দখলের উপাদান:


১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারার সম্পত্তির অধিকারের অবসান কথাটির আলোকে সম্পত্তি
জবরদখল বা বিরুদ্দ দখলের জন্য যে সমস্ত উপাদানের কথা বলা হয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে
-
১) জবরদখরকারীকে প্রকৃ তপক্ষে জমিতে দখলদার থাকতে হবে। জবরদখরকারীর দখল নাই অথচ খতিয়ানে
তার নামে দখল লেখা আছে এরুপ কাগজী দখলের কোন কাজ হবে না।
২) সম্পত্তির দখল নিরবচ্ছিন্ন, প্রকাশ্য এবং প্রকৃ ত মালিকসহ অন্যান্য সকলের বিরুদ্ধে হতে হবে। এজন্যই
এজাতীয় দখলের অপর নাম বিরুদ্ধ দখল জনিত স্বত্ব।
৩) জবর দখরকারীর সম্পত্তিটি জোরে দখলে রাখার ইচ্ছা থাকতে হবে।
৪) জবর দখল প্রকৃ ত মালিকের জ্ঞাত সারে হতে হবে।
৫) আইনসম্মতভাবে প্রথম দখল আরম্ভ হলে, পরে জবরদখলদাবী উত্থাপন করা যাবে না।
৬) বাদীর স্বত্ব অঙ্গীকারে জবরদখলকারীকে নিজের দাবীতে জমিতে দখলদার থাকতে হবে।
৭) জবর দখল জনিত কারনেই বেদখল অনুষ্ঠিত হতে হবে।
৮) বে-আইনিভাবে দখল অথবা জবর দখল অনুষ্ঠিত না হলে জবর দখল প্রতিষ্ঠিত হবে না।
৯) জবর দখর হবার সময হতে ১২ বছরের মধ্যে অবশ্যই দখল পুন:রুদ্ধারের জন্য বাদীকে মামলা দায়ের
করতে হবে। অন্যথায় বিবাদীর সম্পত্তির স্বত্ব অর্জি ত হবে।
জবর দখলের ক্ষেত্রে সময় লাগে কত দিন:
যখন কোন বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকু ল হয় তখনই উহা জবর দখল হয়। ১২ বৎসর এর বেশী সময়
ধরে অপর এর সম্পত্তি জোরপূবক দখলে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পত্তি
প্রকৃ ত মালিক আদালতে শরণাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবর দখরকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয়। তাই
বলা যায় যে, ১২ বৎসর সমযকালই জবর দখলের সময হিসাবে গণনা করা হয়। যা ১৯০৮ সালের তামাদি
আইনে ২৮ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে।
কখন জবর দখলকারীর সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জি ত হয়:
তামাদির সময় সীমা স্বত্বের মামলার জন্যে নির্ধারিত রয়েছে ১২ বছর। ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮
ধারার বিধান মতে, কোন বাদী যদি তার খাস দখলীয় জমি হতে বিবাদী কর্তৃ ক বেদখল হয় সেক্ষেত্রে বাদীকে
অবশ্যই বেদখলের তারিখ হতে ১২ বৎসরের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে স্বত্ব সাব্যস্তে খাস
দখলের জন্য মামলা করতে হবে। অন্যথায় দাবীকৃ ত জমিতে বাদীর সকল প্রকার অধিকার এবং স্বত্ব ধ্বংস
হযে যাবে। অন্যদিকে এ আইনের ২৬ ধারায় বিধানের আলোকে বব্যবহার সিদ্ধ অধিকারের কারণেও উক্ত
সম্পত্তিতে বিবাদীর অধিকার অর্জি ত হয়। উল্লেখ্য এই জন্য তামাদি আইনের ২৬ ধারাকে অর্জ নকারী
প্রিশক্রিপশন বলে।
যে সময় হতে জবর দখলের কারণে বাদীর মালিকানা বিলুপ্তি হযে যাবে ঠিক ঐসময় হতেই জবর
দখলকারীর উপর সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা বর্তাবে। আর এভাবেই জবর দখলের মাধ্যমে প্রকৃ ত মালিক
ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির সম্পত্তির উপর বৈধ বা আইনগত স্বত্ব অর্জি ত হয়ে থাকে।
কখন প্রকৃ ত মালিকের স্বত্ব বিলুপ্ত হয়:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন সম্পত্তির দখল প্রাপ্তির জন্য মামলা
দায়ের করার ব্যাপারে এই আইনের যে মেয়াদ নির্ধারিত করে দেয়া আছে তা উত্তীর্ণ হবার পর উক্ত
সম্পত্তিতে দাবীর বিলুপ্তি হয়ে যাবে। তাই তামাদি আইনের ২৮ ধারাকে বিলোপকারী প্রেসক্রিপশনও বলা
হয়।
এই ধারার বিশ্লেষনে বলা যায় যে, দখল উদ্ধারের জন্য তামাদির মেয়াদ প্রথম তফসিলে বর্ণিত আছে। উক্ত
নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হযে গেলে ঐ সম্পত্তির উপর দাবীকারীর স্বত্ব লোপ পায়। আর এই আইনের
১৪২ অনুচ্ছেদ মোতাবেক তামাদি গণনা করা হয়।

প্রশ্ন-৫
ক) আইনগত অক্ষমতা বা অযোগ্যতা  কি ?
খ) মামলা করার অধিকার উদ্ভব হওয়ার পূর্বেই মৃত্যু এবং প্রতারণার ফলাফলের ব্যাপারে ১৯০৮ সালের
তামাদি আইনের প্রাসঙ্গিক বিধানগুলো ব্যাখ্যা কর।
গ) লিমিটেশন, প্রেসক্রিপশন এবং এস্টোপেলের মধ্যে পাথক্য লিখ।
ঘ)তামাদি হওয়া কোন দাবি পরিশোধ করলে উহা কি পুনরুদ্ধারযোগ্য?
ঙ)তামাদির ক্ষেত্রে প্রতারনার ফলাফল আলোচনা কর।

আইনগত যোগ্যতা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৬ ধারায় শিশু এবং অক্ষম ব্যক্তিদের অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে,
সাধারণত অক্ষম ব্যক্তি ও শিশুরা তাদের নিজ অধিকারের প্রকৃ তি উপলব্ধি করে তা আদাযের জন্য
আইনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয় না। তাই অক্ষম ও নাবালক শিশুদের ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত
আইন বিশেষ সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। যার ফলে অক্ষম  ও শিশুরা আইনি সহায়তার জন্য 
অক্ষমতা অথবা শিশুর সাবালকত্ব অর্জ ন না করা পর্যন্ত তামাদি সময় সীমা গণনা করা হয় না অর্থাৎ
সক্ষম এবং সাবালক হওয়ার পর নিযম অনুযায়ী মামলা করতে পারবে। উহাতে আইনি বাধা নাই।
অতএব বলা যায় যে কোন ব্যক্তির কোন কার্যে আইনগত যোগ্যতার অভাবই আইনগত অক্ষমতা বলে
আইনে গন্য করা হয়ে থাকে। এই তামাদি সময় শুধুমাত্র আইনগত অক্ষমতায় আক্রান্ত হওয়ার ফলেই
কার্যকরী। এক্ষেত্রে নাবালকত্ব, পাগলত্ব এবং জড়বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিরাই আইনগত অক্ষম বলে বিবেচিত হবে।
খ) মামলা করার অধিকার উদ্ভব হওয়ার পূর্বেই মৃত্যু এবং প্রতারণার ফলাফলের ব্যাপারে ১৯০৮ সালের
তামাদি আইনের প্রাসঙ্গিক বিধানগুলো ব্যাখ্যা কর।
তামাদি আনের ১৭ ধারায় মোকদ্দমা রুজু করার অধিকার অর্জ নের পূর্বে মৃত্যুর ফলাফল সম্পর্কে বলা
হয়েছে। ১৭ ধারায় বলা হয়েছে-
১) যেক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি জীবিত থাকলে একটা মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল করার অধিকারী হত, কিন্তু
সেই ব্যক্তি উক্ত অধিকার সৃষ্টি হবার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করে, সেইক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির আইনানুগ প্রতিনিধি উক্ত
মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল কবার যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ার সময় হতে তামাদি মেয়াদ গণনা করা হবে।
(২) যেক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি জীবিত থাকলে তার বিরুদ্ধে কেউ একটা মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল কবার
অধিকার লাভ করত, কিন্তু সে ব্যক্তি উক্ত অধিকার সৃষ্টি হওয়ার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করে, সেক্ষেত্রে যখন মৃত
ব্যক্তির এরূপ কোনো আইনানুগ প্রতিনিধি থাকবে, যার বিরুদ্ধে বাদী মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল করতে
পারবে, তখন হতে তামাদি মেয়াদ গণনা করা হবে।
(৩) সম্পত্তি প্রয়োগের অগ্রাধিকার প্রয়োগের মামলা অথবা স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কি ত দখল বা বংশগত
কোনো পদলাভ সম্পর্কি ত মামলার ক্ষেত্রে উপরোক্ত (১) ও (২) উপধারার কোনো কিছুই প্রযোজ্য নহে।

ঙ) তামাদির ক্ষেত্রে প্রতারণার ফলাফল:


কোনো জিনিস মিথ্যে বা তার অস্তিত্ব নেই জানা সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তিকে ওই জিনিসের অস্তিত্ব সঠিক -এ
বিশ্বাস স্থাপনে কোনো কিছু করাকে সাধারণত 'প্রতারণা' বলা যায়।
সক্রিয় উদ্যেগে সত্য গোপন করে মিথ্যা বর্ণনাকারীর মাধ্যমে কৌশলের আশ্রয়ে কোন ব্যক্তিকে তার প্রাপ্য
অধিকার থেকে বঞ্চিত করার নাম প্রতারণা।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৫ ধারা অনুসারে বিক্রেতা তার বিক্রীত বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ ক্রটি ক্রেতার কাছে
প্রকাশ না করলে এক্ষেত্রে বিক্রেতা প্রতারণা করেছেন বলে গণ্য হবেন।
তামাদি আইনের ১৮ ধারায় প্রতারণার ফলাফল সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, 'যে ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি একটি
মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিল করবার অধিকারী হয়, কিন্তু প্রতারণার মাধ্যমে তাকে সেই অধিকারের বিষয়
অথবা যে স্বত্বের ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠিত, সে বিষয় জানতে দেয়া হয় নাই অথবা যে ক্ষেত্রে ওই অধিকার
প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য যে দলিল প্রয়োজনীয়, তা প্রতারণা করে তার কাছ থেকে গোপন রাখা হয়েছে, সেই
সকল ক্ষেত্রে-
 ক. প্রতারণার বিরুদ্ধে দোষী ব্যক্তির বা তার সহযোগীর বিরুদ্ধে, অথবা খ. যে ব্যক্তি সরল বিশ্বাসে এবং
মূল্যের বিনিময়ে ভিন্ন অন্য প্রকারে ওই দোষী ব্যক্তির মাধ্যমে স্বত্ব দাবি করে, তার বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি
সর্বপ্রথম যে দিন প্রতারণার কথা জানতে পারে, সেদিন থেকে অথবা দলিল গোপন করা হয়ে থাকলে
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সর্বপ্রথম যেদিন দলিলটি উপস্থাপন করতে সমর্থ হয় বা অপরপক্ষকে তা উপস্থাপন করার
জন্য বাধ্য করতে পারে, সেদিন থেকে মামলা দায়ের বা দরখাস্ত দাখিলের জন্য নির্ধারিত তামাদির মেয়াদ
গণনা করতে হবে।'
২৩ ডিএলআর-এর 'নিম ফিন্যান্স লিমিটেড বনাম বশির আহমেদ রফিক'
মামলার সিদ্ধান্ত অনুসারে, তামাদি আইনের ১৮ ধারার সুবিধে পেতে হলে প্রতারণার কথা প্লিডিংয়ে উল্লেখ
করতে হবে।
এ ধারার সাধারণ নীতি অনুসরনে ১ নং তফসিলের ৯২ নং অনেুচ্ছেদে আছে যদি কারও বিরুদ্ধে গোপনে
কোন জাল দলিল সৃষ্টি করত তা রেজিষ্ট্রি করে রাখা হয়, তবে বাদীর এই গোপন দলিলের বিষয় জানার
পর হতে তার বিরুদ্ধে তামাদিকাল গণনা শুরু হবে এবং এই গোপন জাল দলিলের বিষয় জানার তারিখ
হতে তিন বৎসরের মধ্যে তার মামলা করা চলবে। অনুরুপভাবে কাউকে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে গোপনে
তার বিরুদ্ধে কোন ডিক্রি হাসিল করে রাখলে, যেইদিন বাদী সবপ্রথম এরকম গোপন ডিক্রির বিষয় জানতে
পারবে সেইদিন হতে এই প্রকার ডিক্রি রদের মামলা করা যাবে।
সময়সীমা কারণে যাতে কেহ প্রবঞ্চনা দ্বারা তার ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত বা প্রতারিত না হয় সেইজন্য
প্রতারিত ব্যক্তি সুবিধার্থে তামাদি আ্ইনের এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতারণা প্রমান করতে পারলে বাদী এই
ধারার সুযোগ দাবী করতে পারবে অন্যথায় নয়। প্রতারণা প্রমানের ভার সর্বদায় বাদী উপর থাকবে।
দন্ডবিধির ৪১৫ ধারায় প্রতারণার সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে এবং ৪১৭ থেকে ৪২৪ ধারায় বিভিন্নভাবে
প্রতারণার শাস্তি সম্পর্কে বিধান বর্ণিত হয়েছে।

একটি অক্ষমতা শেষ হবার পূর্বে আরেকটি অক্ষমতা শুরু হলে ঐ ব্যক্তি তামাদি আইনের কি কি সুবিধা
পাবে:
১৯০৮ সালের ৬ ধারার বিধান মতে অক্ষমতার জন্য যে সমস্ত সুবিধা পাবে তা নিম্নরুপ:
অত্র আইনের ৬(২) উপধারায় বলা হযেছে যে যখন কোন ব্যক্তি ডিক্রী জারির বা দরখাস্ত দাখিলের জন্য
অধিকারী হয় এবং যে সময় থেকে তামাদির মেয়াদ গণনা করা হবে সেই সময় ঐ ব্যক্তি নাবালক পাগল
বা নির্বোধ থাকে তবে সেই ব্যক্তি আইনগত অক্ষমতা অবসান ঘটার পর অত্র আইনের ১ম তফসিলের
তৃ তীয় অনুচ্ছেদ বা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৮ ধারার উল্লেখিত সময় বাদ দিয়ে মামলা করার
অধিকারী।
অত্র আইনের ৬(১) উপধারায় বলা হয়েছে যে যখন কোন ব্যক্তির একটি আইনগত অক্ষমতার অবসান  
ঘটাবার পূর্বেই আর একটি আইনগত অক্ষমতা শুরুহয় তবে অনুরুপ ব্যক্তি উভয় আইনগত অক্ষমতার
অবসান ঘটার পর তামাদি মেয়াদ গণনা শুরু হবে। ধারা ৬(১) উপধারা তামাদি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর
মামলা করার সুযোগ থাকবে।
উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় যে, নাবালক থাকা কালে মেহেদী একটি মামলা করার অধিকার লাভ করে। সে
সাবালকত্ব হওয়ার পূবেই পাগল হয়ে যায়।এই ক্ষেত্রে মেহেদীর নাবালকত্ব ও পাগল অবস্থায় অবসান এর
তারিখ হতে তার তামাদির সময় গণনা করতে হবে।
৬(৩) উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত আইনগত অক্ষমতা অব্যাহত থাকে সে ক্ষেত্রে
তার আইনগত প্রতিনিধি উপরে উল্লেখিত একই সময়ের মধ্যে মামলা বা দরখাস্ত পেশ করতে পারবে।
৬(৪) উপধারায় বলা হয়েছে যে, যদি মৃত ব্যক্তির প্রতিনিধি ও আইনগত অক্ষমতা থাকে সেক্ষেত্রে অত্র
আইনে ৬(১) এবং ৬(২) উপধারা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবে।
উল্লেখ্য যে মামলা করার কারণ ঘটলে একমাত্র জীবিত ব্যক্তির অনুকূ লেই তামাদি আইনের ৬ ধারায় বিধি
বিধান মতে সময় বৃদ্ধি করা যায়। কিন্তু যে ব্যক্তির কোন অস্তিত্ব নাই সেই অজ্ঞাত ব্যক্তি উপরোক্ত ধারা
সুবিধা পাবে না। কিন্তু গর্ভ স্থ শিশু তামাদি আইনের  ৬ ও ৮ দারার সুবিধা পেতে পারে। (ডিএল আর
১৫২০
আইনগত অক্ষমতার দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তি অক্ষমতার সময় তামাদির সময় সীমা নির্ধারনের ক্ষেত্রে অব্যাহতি
পাবার অধিকারী কিন্তু তাই বলে এই ধারাটি সাবালকত্ব অর্জ নের পূর্বে নাবালককে মামলা করার জন্য
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে অক্ষম ব্যক্তির সুবিধাগুলো অলোচনা করা যায়।

তামাদি

১) তামাদি আইন কাকে বলে?/তামাদিও সংজ্ঞা দাও। তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা বলতে কি বুঝ? তামাদি
আইনের উদ্দেশ্য কি? ”তামাদি আইন অধিকারকে মুধু ধ্বংস কওে না, পরোক্ষভাবে অধিকার প্রদানও করে”-
ব্যাখ্যা কর। তামাদি ও প্রেসক্রিপশনের মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয় কর।
তামাদি আইনের সংজ্ঞা:
তামাদি একটি আরবী শব্দ এর আভিধানিক অর্থ হলো কোন কিছু বিলুপ্ত হওয়া কিংবা বাধা প্রাপ্ত হওয়া।
মূলত ১৯০৮ সালের তামাদি আইন একটি পদ্ধতিগত আইন। এই আইন একটি নির্দি ষ্ট মেয়াদের পরে কোন
আইনগত অধিকারে এর বিলুপ্তি ঘটায়। কতদিনের মধ্যে কোন মামলার আপিল , রিভউ বা রিভিশনের জন্য
আদালতে দরখাস্ত পেশ করতে হবে। কখন বিলম্ব মৌকু ফ করা যাবে ইত্যাতি বিষয় তামাদি আইনে নির্ধারণ
করে দেয়া হয়েছে।
মামলা মোকদ্দমা করার একটি নির্দি ষ্ট সময় আছে।কোন মামলা ৩ বৎসর আবার কোন মামলা ১২ বৎসর
মেয়দের মধ্যে করতে হয়। মামলার মত আপিলেরও একটি নির্দি ষ্ট সময় আছে। তামাদি আইনের প্রথম
তফসিলে উক্ত নির্ধারিত সময়সীমা বর্ণনা করা হয়েছে।
সুতরাং উপরোক্ত উল্লেখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, তামাদি আইন বলতে এমন একটি
স্বয়ংসম্পূণ আইন যে আইন দ্বারা সকল প্রকার দাবী বা স্বত্বের দ্বন্দ্বকে অবিরামগতিতে বৃদ্ধি যা দীর্ঘায়িত
করার সুযোগ না দিয়ে বরং তা চিরদিনের জন্য নিস্পত্তি করায় সাহায্য করে।এরুপ ব্যবস্থাকে তামাদি আইন
বলে।
তামাদি আইনের প্রয়োজনীতা:
১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রয়োজনীয়তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
১) দেওয়ানী
মামলা দায়েরের জন্য একটি নির্দি ষ্ট সময়সীমা দেয়া থাকে ঐ নিদিষ্ট সময়সীমা পার হলে আর মামলা করা
যায় না ঐনির্দি ষ্ট সময়সীমাকে তামাদি আইন বলে।
২) তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধিকরন (বিলম্ব মওকু ফ) বলতে কি বুঝ? ধারা ৫ কি মূল মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যুক্তি
দাও। কোন ব্যক্তি কি ধারা ৫ অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারে? কোন কোন কারন সমূহ যুক্তি সংগত
কারণ বলে গন্য করা যায? বিলম্ব মওকু ফের বিধান কি তামাদি আইনের মূল উদ্দেশ্যকে নস্যাৎ করে?
তামাদি আইনের ৫ ধারায় বর্ণিত ”বিলম্ব মওকু ফ”- এর বিষয়টি আইনগত মূল্য অপরিসীম। প্রথমেই স্বরণ
করিয়ে দেয় যে, এই ধারিিট মূখ্যত আপীল মামলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, এমনকি ফৌজদারী আপীলের ক্ষেত্রেও
এই ধারাটি প্রয়োগ করা যায়।
না,ধারা ৫ কি মূল মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
কোন ব্যক্তি কি ধারা ৫ অধিকার হিসাবে দাবী করতে পারে না। এটা আদালতের ই”ছাধীন ক্ষমতার উপর
নির্ভ রশীল।
আপীল, রিবিউ ও রিভিশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য:
৭ দিন থেকে ৬ মাস পর্যন্ত।
মূল মামলা ৩ বছর থেকে ১২ বৎসর পর্যন্ত।

এই ধারা মতে কোন আপীলকারী বা দরখাস্তকারী যদি প্রমান করতে পারেন যে , নির্দি ষ্ট সময়সীমার মধ্যেও
কোন অপীল, রিভিউ বা রিবিশন করতে না পারার পর্যাপ্ত কারণ ছিল তাহলে সেক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ
বৃদ্ধি করা যেতে পারে। আর একেই আইনের ভাষায় বিলম্ব মওকু ফ বলে।

৩) আইনগত অক্ষমতা/ অযোগ্যতা বলতে কি বুঝ? একটি আইনগত অক্ষমতার পূর্বেই যদি আরেকটি
অক্ষমতার উৎপত্তি বা অবতীর্ণ হয় তাহলে উক্ত ব্যক্তি কি তামাদি আইনের কোন সেকশনের সুবিধা ভোগ
করতে পারবে?
খরসরঃধঃরড়হ অপঃ, ১৯০৮ এর ৬ ধারা কিছ ক্ষেত্রে কোন মামলা বা আপীলের জন্য নির্ধারিত সময় দেরি
করার বা সময় গণনাতে দেরি করার বৈধতা দিয়েছে। এগুলো নিম্নরূপঃ
১। যদি মামলা বা কার্যধারা দায়ের করার কিংবা ডিংক্রী জারির জন্য দরখাস্ত দাখিলের অধিকারী ব্যক্তি, যে
সময় হতে তামাদির মেয়াদ গণনা করতে হইবে, সেই সময় নাবালক, উন্মাদ বা জড়বুদ্ধি থাকে, সেক্ষেত্রে উক্ত
ব্যক্তি তার উক্ত অপারগতার অবসান হবার পর, অপারগতা না থাকলে, প্রথম তফসিলের তৃ তীয় স্তম্ভে
অথবা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৪৮ ধারায় বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে সে ওটা করতে পারতো, সেই
মেয়াদের মধ্যে মামলা বা কার্যধারা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।
২। যদি অনুরূপ কোনো ব্যক্তি, যে সময় হইতে তামাদির মেয়াদ গণনা করিতে হইবে, সে সময় উপরে বর্ণিত
যেই কোনো দুইটি অপারগতার অবসান হইবার পূর্বেই সে আরেকটি অপারগতায় পতিত হয়, সেক্ষেত্রে সেই
ব্যক্তি তাহার উভয় অপারগতার অবসান হইবার পর, অপারগতা না থাকিলে, উপরে বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে
সে ওটা করতে পারতো, সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দরখাস্ত দাখিল করতে পারবে।
৩। যদি অনুরূপ কোনো ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত তাহার অপারগতা অব্যাহত থাকে, সেইক্ষেত্রে তাহার আইনানুগ
প্রতিনিধি ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর অপারগতা না থাকিলে উপরে বর্ণিত যে মেয়াদের মধ্যে ওটা করা যেতো,
সেই মেয়াদের মধ্যে মামলা দায়ের কিংবা দাখিল করতে পারবে।
৪। যদি উপরোক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর তারিখে তাহার আইনানুগ প্রতিনিধি অনুরূপ কোনো অপারগতায় পতিত
হয়, সেক্ষেত্রে তাদের ক্ষেত্রেও (১) ও (২) উপধারায় বিধৃত বিধানসমূহ প্রযোজ্য হবে।

৪) সময়ের অবিরাম চলন বলতে কি বুঝ? সময় একবার চলতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অক্ষমতা বা
অযোগ্যতা তাকে থামাতে পারবে না ব্যতিক্রম উল্লেখ সহ ব্যাখ্যা কর।
তামাদি আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী,একবার তামাদির সময় উত্তীর্ণ হতে শুরু করলে পরবর্তী কোন অক্ষমতা
অথবা অযোগ্যতার দ্বারা তা বন্ধ করা যাবে না। তবে শর্ত হলো যে, যেখানে পাওনাদারের সম্পত্তির
পরিচালনার দায়িত্ব দেনাদারের উপর অর্পন করা হয়েছে সেখানে যতোদিন তার উপর উক্ত দায়িত্ব ন্যাস্ত
থাকবে ততোদিন পর্যন্ত অনুরুপ দেনার অর্থ আদায়ের মামলার জন্য তামাদির সময়সীমা অতিবাহিত হওয়া
মূলতবী থাকবে।
প্রশ্ন-৫ তামাদির সময় গণনার ক্ষেত্রে কোন কোন দিন বাদ যায়?
ধারা-১২

প্রশ্ন-৭ জবর দখল/বিরুদ্ধ দখল বলতে কি বুঝ? জবর দখরের উপাদান গুলি কি? কখন জবর দখরকৃ ত
সম্পত্তিতে দখরকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয় এবং প্রকৃ ত মালিকের স্বত্ব বিলুপ্ত হয়? জবর দখলকৃ ত সম্পত্তিতে
জবর দখলকারী ব্যক্তি কি চু ড়ান্ত মালিকানা অর্জ ন করতে পারে?
জবরদখল:
আইনগত দখলের বিরুদ্ধে যে দখল তাকেই জবর দখল বলে।
কোন আইনগত স্বত্বের বিরুদ্ধে প্রতিকূ ল দখলকেই বিরুদ্ধ দখল বা জবর দখল বলে। অর্থাৎ যখন কোন
বিবাদীর দখল বাদীর প্রতিকূ ল হয় তখনই জবর দখলের সৃষ্টি হয়। অন্য কথায় ১২ বছরের বেশী সময় ধরে
অপরের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে রাখলে এবং উক্ত দখলের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্পত্তির
প্রকৃ ত মালিক আদালতে শরনাপন্ন না হলে ঐ সম্পত্তির উপরে জবর দখলকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয় এবং
তামাদি আইনের ভাষায় একেই জবর দখল বলে।এই বিষয় সম্পর্কি ত বিধান তামাদি আইনের ২৮ ধারায়
বর্ণিত আছে।
জবর দখলের উপাদান:
১) জবরদখলকারীকে প্রকৃ তপক্ষে জমিতে দখলদার থাকতে হবে প্রকৃ ত দখল ছাড়া খতিযানের দখল
গ্রহনযোগ্য নয়।
২) জবর দখলজনিতকারণেই জমিতে বেদখল অনুষ্ঠিত হতে হবে।
৩) অবশ্যই দখল নিরবিচ্ছন্ন, প্রকাশ্য এবং প্রকৃ ত মালিক সহ অন্যান্য সবার বিরুদ্ধে হতে হবে।
৪) জবরদখল জনিত কারণেই বেদখর অনুষ্ঠিত হতে হবে। বেআইনিভাবে দখল অথবা জবর দখল অনুষ্ঠিত
না হলে জবর দখল প্রতিষ্টিত হবে না।
৬) বিবাদীর জবর দখল অবশ্যই বাদীর বিরুদ্ধেই হতে হবে।
৭) প্রকৃ ত মালিকের জ্ঞাতসারে জবরদখল হতে হবে।
৮) জবর দখল হবার সময় হতে ১২ বছরের মধ্যে অবশ্যই দখল পুনরুদ্ধারের জন্য বাদীকে মামলা দায়ের
করতে হবে। অন্যথায় বিবাদীর সম্পত্তি অর্জি ত হবে।
৯) জবর দখল পূর্বক সম্পত্তিটি দখলে রাখবার চেষ্টায় বিবাদীকে লিপ্ত থাকতে হবে।
১০) জবর দখলকারীকে বাদীর স্বত্ব অস্বীকারে নিজের দাবীতে জমিতে দখলদার থাকতে হবে।
১১) জবরদখল অর্থাৎ বিবাদীর দ্বারা জবরদখল জনিত কারণে বাদী সম্পত্তির উপর তার শর্ত হারাবে এবং
বিবাদীর অনুকূ লে সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জি ত হবে।
১২) আইনসঙ্গতভাবে প্রথম দখল শুরু হলে পরবর্তীতে জবর দখলের দাবী উত্থাপন করা যাবে না।
কখন জবর দখলকৃ ত সম্পত্তিতে দখলকারীর স্বত্ব অর্জি ত হয় এবং প্রকৃ ত মালিকের স্বত্ব বিলুপ্ত হয়:
তামাদির সময়সীমা অতিবাহিত হয়ে গেলে অধিকার লংঘনের প্রতিকার ধ্বংস হয়ে যায়, তবে অধিকারটি
ধ্বংস হয় না। কিন্তু তামাদি আইনের ২৮ ধারাটি উপরোক্ত বিধানের ব্যতিক্রম। তামাদির সময়সীমা স্বত্বের
মামলার জন্য নির্ধারিত রয়েছে ১২ বছর। খাস জমি হতে বাদী বেদখল হলে বেদখলের তারিখ হতে ১২
বছরের মধ্যে বিবাদীর বিরুদ্ধে স্বত্বে সাব্যস্তে খাসদখলের মামলা করতে ব্যর্থ হলে বাদীর শুধু প্রতিকারই নষ্ট
হয় না। উপরন্ত সম্পত্তিতে বাদীর অধিকার পর্যন্ত বিনষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে এই আইনের ২৬ ধারার বিধানের
অলোকে ব্যবহার সিদ্ধ অধিকারের কারণে উক্ত  সম্পত্তিতে বিবাদীর অধিকার অর্জি ত হয়। উল্লেখ্য যে
তামাদি আইনের ২৬ ধারা বিধানকে বলা হয় অর্জ নকারী প্রেসক্রিপশন এবং ২৮ ধারা বিধানকে বলা হয়
বিলোপকারী প্রেসক্রিপশন।
জবর দখলকৃ ত সম্পত্তিতে জবর দখলকারী ব্যক্তি কি চু ড়ান্ত মালিকানা অর্জ ন করতে পারে:
তামাদি আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন সম্পত্তির দখলপ্রাপ্তি জন্য মামলা দায়ের করার ব্যাপারে
এই আইনের যে মেয়াদ নির্ধারিত  করে দেয়া হয়েছে তা উত্তীর্ণ হবার পর উক্ত সম্পত্তিতে দাবীর বিলুপ্তি
হয়ে যাবে।
সুতরাং এই আইনের ২৮ ধারা বিধান মোতাবেক কোন বাদী যদি তার খাস জমি হতে বিবাদী কর্তৃ ক
বেদখল হয় , তাহলে সে ক্ষেত্রে বাদীকে অবশ্যই বেদখলের তারিখ হতে ১২ বছরের মধ্যে আদালতে হাজির
হয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে স্বত্ব সাব্যস্তে খাস দখরের মামলা করতে হবে। অন্যথায় দাবীকৃ ত জমিতে বাদীর
সর্বপ্রকার অধিকার এবং স্বত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। যে সময় হতে জবর দখলের কারণে বাদীর মালিকানা
বিলুপ্তি হয়ে যাবে ঠিক ঐ সময় হতেই জবর দখলকারীর উপর সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা বর্তাবে। আর
এভাবেই জবর দখলের মাধ্যমে প্রকৃ ত মালিক ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির সম্পত্তির উপর বৈধ বা আইনগত
স্বত্ব অর্জি ত হয়ে থাকে।

তামাদি আইন - ১৯০৮


ঞযব খরসরঃধঃরড়হ অপঃ
৯নং আইন/১লা জানুয়ারী ১৯০৯
ধারা ১ - সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা
ধারা ২ - সংজ্ঞা
ধারা ৩ - তামাদির মেয়াদ অন্তেদায়েরকৃ ত মামলা ইত্যাদি খারিজ ।
ধারা ৪ - আদালত বন্ধ থাকিলে তখনকার কার্য পদ্ধতি ।
ধারা ৫ - ক্ষেত্রবিশেষে মেয়াদ বৃদ্ধিকরন ।
ধারা ৬ - বৈধ অপারগতা/আইনগত অক্ষমতা ।
ধারা ৭ - একজনের অক্ষমতা বা অপারগতা ।
ধারা ৮ - বিশেষ ব্যতিক্রম ।
ধারা ৯ - সময়ের অবিরাম চলন ।
ধারা ১২ - আইনানুগ কার্যদ্বারায় যে পরিমান সময় গননা হইতে বাদ দিতে হইবে ।
ধারা ১৩ - বাংলাদেশ এবং কয়েকটি এলাকা হইতে বিবাদির অনুপস্থিত থাকাকালীন সময় গননা হইতে বাদ
দিতে হইবে ।
ধারা ১৪ - এখতিয়ার বিহীন আদালতে সত্ উদ্দেশ্যমূলক কার্যদ্বারায় যে পরিমান সময় গননা হইতে বাদ
দিতে হইবে ।
ধারা ১৫ - কার্যক্রম স্থগিত থাকাকালীন সময় যে পরিমান সময় গননা হইতে বাদ দিতে হইবে ।
ধারা ১৬ - ডিক্রজারীতে বিক্রয় রদ করিবার কার্যদ্বারা মুলতবী থাকাকালীন যে পরিমান সময় বাদ দিতে হইবে

ধারা ১৭ - মামলা করিবার অধিকার অর্জ নের পূর্বে মৃত্যু র ফলাফল ।
ধারা ১৮ - প্রতারনার ফলাফল ।
ধারা ১৯ - লিখিত প্রাপ্তিস্বীকার ।
ধারা ২০ - উত্তর দায় সংক্রান্ত ঞ্চিন পরিশোধ অথবা সুদ প্রদানের ফলাফল ।
ধারা ২১ - অক্ষম ব্যক্তির প্রতিনিধি ।
ধারা ২৩ - অবিরাম চু ক্তিভঙ্গ বা অন্যায় করা ।
ধারা ২৫ - দলিলের সময়ের গননা ।
ধারা ২৬ - সুখাধিকার ।
ধারা ২৮ - সম্পত্তির অধিকার বিলুপ্তি ।
ধারা ২৯ - সংরক্ষন ।

সম্পত্তি হস্তান্তর আইন

Transfer of Property Act,1882

ধারা-১৩৭

অধ্যায়-৮

প্রশ্ন:১ সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে’সম্পত্তি হস্তান্তর বলতে কি বুঝায়?সম্পত্তি হস্তান্তর আইনানুযায়ী সম্পত্তির ধারণা
সম্পর্কে আরোচনা কর। কে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে?এই আইন মুসলিম আইনের বিধানকে কতটু কু
প্রভাবিত করেছে? কেন বলা হযে থাকে যে, ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের শিরোনামটি ভু ল নামের
ব্যবহার?

সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে সম্পত্তির সংজ্ঞা যেমন দেওয়া হয়নি তেমনি হস্তান্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিধানও
যুক্ত করা হয়নি, এই তথ্যের উল্লেখপূবক আলোচনা কর।
এই আইনে ৫ টি দেনদেন হয়।

১)বিক্রয়(Sale)

২)বন্ধক/রেহেন(Mortgage)

৩)বিনিময়(Exchange)

৪)দান(Gift)

৫)ইজারা(Leage)

সম্পত্তি হস্তান্তর আইন অনুযায়ী সম্পত্তির সংজ্ঞা দাও।এই আইনে কেন সম্পত্তি হস্তান্তর আইনকে স্বয়ং
সম্পূর্ণ আইন বলা হয় না? মুসলিম আইন এই আইনে কতটু কু প্রভাব বিস্তার করতে পারে?

উত্তর:
আইনে সম্পত্তি খুব ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। আইন বিশারদ হ্যালস্ বেবী এর মতে, সম্পত্তি হচ্ছে কোন
ব্যক্তির নিরঙ্কষ অধিকার যা দর কষাকষি এবং বিক্রি করা যায়। ব্যবসায়ের সুনাম, ট্রেডমার্ক , পেটেন্টস্বত্ব,গ্রন্থস্বত্ব,
চু ক্তিগত অধিকার সবই সম্পত্তি অন্তভূ ক্ত।

Law Lexicon গ্রন্থে সম্পত্তির সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে নিম্নরুপভাবে-

সম্পত্তি বলতে কোন কিছুর উপর সর্বোচ্চ অধিকারকে বুঝায়, যে অধিকার বলে ভূ মিতে বসবাস করেও বস্তু
ব্যবহার করে যা অন্যের সৌজন্যে নয়।

ভারতীয় সুপ্রীম কোর্টে র অভিমত হল, যে অধিকার বলে মানুষ একগুচ্ছ অধিকার এবং ইন্দ্রীয় গ্রাহ্য
সম্পত্তির ক্ষেত্রে দখলের অধিকার, ভোগের অধিকার, বিনষ্ট করার অধিকার, রেখে দেওয়ার অধিকার এবং
হস্তান্তর করার অধিকার লাভ করে তাকে সম্পত্তি বলে।

এলাহবাদ হাই কোর্টে র মতে, সম্পত্তি বলতে শুধুমাত্র বস্তুগত পদার্থ সমূহকেই বুঝায় এবং পদার্থের উপর
হতে লব্ধ সকল প্রকার অধিকার ও স্বত্বকে এইমত অনুযায়ী সম্পত্তি শব্দটি দ্বারা বন্ধকী দায় মোচনের ন্যায়
সংগত অধিকার কায়েমী স্বার্থ প্রভৃ তি মামলাযোগ্য অধিকার সমূহকেও অন্তভূ ক্ত করে।বিষয়ের ব্যাপকতার
কারণে সম্ভবত ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হসবতান্তর আইনে সম্পত্তির সংজ্ঞা প্রদান করা হয়নি তবে এটা
স্পষ্টযে ইন্দ্রীয় গ্রাহ্য বা অইন্দ্রীয়গ্রাহ্য সকল বস্তু যার উপর কোন ব্যক্তি তার নিজের সুবিধার্থে পূর্ণ অধিকার
ও কতৃ ত্ব প্রয়োগ করতে পারে তা হচ্ছে ঐ ব্যক্তির সম্পত্তি। বস্তুর নির্ভ রতার দৃষ্টিতে সম্পত্তি দুই প্রকার
হতে পারে-

ক)ইন্দ্রীয় গ্রাহ্য বা শরীরি


খ)ইন্দ্রীয়হীন বা অশরীরী

স্থান্তরের সম্ভাব্যতা অনুযায়ী সম্পত্তি দুই প্রকার-

ক)স্থাবর

খ)অস্থাবর

বৃটিশ অনুযায় দুই প্রকার-

Real Property

Private Property

মালিকানা শর্তে র দৃষ্টিভঙ্গিতে দুই প্রকার-

সরকারী

বেসরকারী

কোন কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাবে এবং কোন কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাবে না?

সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৬ ধারার বিধান সাপেক্ষে যে কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায়। এই ধারায় বলা
হয়েছে যে এই আইনে বা বর্ত মান বলবৎ অন্য আইনে ভিন্নরুপ কোন বিধান না থাকলে যে কোন প্রকার
সম্পত্তি হস্তান্তর করা যেতে পারে তবে কতিপয় সম্পত্তির কথা এ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলি কোন
অবস্থায় হস্থান্তরিত নয়-

১)ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকারের সম্ভবনা: সম্ভাব্য উত্তরাধিকারীর সম্পত্তি পাবার সম্ভবনা, আত্নীযের মৃত্যুর পর তার
ওছিয়তের অনুসারে সম্পত্তি পাবার সম্ভাবনা অর্থাৎ সম্পত্তি লাভে কোন সম্ভাবনাকে হস্তান্তর করা যায় না।

২)পুন:প্রবেশের অধিকার:পরবর্তীকালীন শর্তে র ভঙ্গের জন্য দখল পাবার অধিকার সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির মালিক
ব্যতীত অন্য কারো নিকট হস্তান্তর করা যায় না।

৩)ব্যবহার স্বত্ব: এটা হচ্ছে একজনের সম্পত্তি উপর আরেক ব্যক্তির অধিকার।যেমন Easement Right ব্যবহার
স্বত্বের অধিকার অন্যের নিকট হস্তান্তর করা যায় না।

৪)ব্যক্তিগত স্বার্থ: কোন সম্পত্তির ভোগ দখলের অধিকার মালিকের মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে সীমাবদ্ধ থাকলে
তিনি তা হস্তান্তর করতে পারেন না।

৫)ভবিষ্যত খোরপোষের অধিকার:ভবিষ্যৎ খোরপোষের অধিকার জনস্বার্থে হস্তান্তর অযোগ্য করা হয়েছে।

৬)কেবলমাত্র মামলা করার অধিকার:


৭)সরকারী পদ বা বেতন: কোন সরকারী পদ বা বেতন পাওনা হবার আগে বা পরে হস্তান্তর করা যায় না।

৮)বৃত্তি বা পেনশন: বৃত্তি বা পেনশন হস্তান্তর যোগ্য নহে।

৯)সংশ্লিষ্ট স্বার্থের প্রকৃ তি বিরোধী কোন স্বার্থ হস্তান্তর করা যায় না।

চিরস্থায়ীত্বের বিরুদ্ধনীতি বলতে কি বুঝ?চিরস্থায়ীত্বের বিরুদ্ধনীতি কোন কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়? এর
ব্যতিক্রমগুলি উল্লেখ কর। এটি অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে কি না? উত্তরাধিকার আইনের
আলোকে এই নীতির বিধানাবলী আলোচনা কর।

সাধারণভাবে সকল প্রকার সম্পত্তি হস্তান্তর যোগ্য। আর কোন সম্পত্তির হস্তান্তর গ্রহীতা তার সম্পত্তিটি পুন:
হস্তান্তরের অধিকারসহ আইনত সবধরনের অধিকার ভোগ করার অধিকার লাভ করে থাকে। কারণ কোন
সম্পত্তি অনির্ধারিত সময়ের জন্যে হস্তান্তরের অযোগ্য হয়ে থাকলে তা মানব জাতির অকল্যাণ বয়ে আনবে।
তাই কোন অজাত ব্যক্তির অনুকূ লে কোন সম্পতি হস্তান্তর করত: ভাবষ্যৎ সম্পত্তি সৃষ্টি স্বীকৃ তি লাভ
করতে থাকলে যদি এর বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রন আরোপ করা না যায় তাহলে অনুরুপভাবে আটকা পড়ে থাকবে।
ফলশ্রুতিতে জীবিত ব্যক্তির প্রয়োজনে জমি পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। এহেন অসুবিধা দূর করার জন্য
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১৪ ধারায় কত সময়ের মধ্যে অজাত ব্যক্তি অনুকূ লে সৃষ্টি স্বাথটি অপন বা
কার্যকর হতে হবে তা নির্দি ষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।এই ধারায় বলা হয়েছে কোন সম্পত্তি এমনভাবে ব্যবহার
করা যাবে না,যা হস্তান্তরের তারিখে জীবিত এক বা একাধিক ব্যক্তির জীবনকাল এবং এরুপ জীবনকালের
অব্যবহিত পর হতে অপর কোন ব্যক্তির নাবালক অবস্থা অতিবাহিত হবার পরে বলবৎ হবে। জীবিত ব্যক্তি
বা ব্যক্তিদের জীবনকাল সমাপ্ত সময় উক্ত নাবালকের অস্তিত্ব থাকতে এবং নাবালক সাবালক হবার সাথে
সৃষ্ট স্বার্থ তার উপর অর্পিত হবে।

সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১৪ ধারায় যে ব্যক্তি জীবিত নেই এমন অস্তিত্বহীন ব্যক্তির অনুকূ লে সরাসরি
সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ আরোপ করা হযেছে-

১)এক বা একাধিক জীবিত ব্যক্তির অনুকূ লে জীবন স্বত্ব সুষ্টি করতে হবে।

২)যে এক বা একাধিক জীবিত ব্যক্তির অনুকু লে জীবন্ত স্বত্ব সৃষ্টি করা হয় তাদের মধ্যে শেষ ব্যক্তির মৃত্যুর
পূর্বেই অজাত ব্যক্তির জন্মলাভ করতে হবে,কমপক্ষে মাতৃ গর্ভে থাকতে হবে।

এর ব্যতিক্রমগুলি:

১)ব্যক্তিগত চু ক্তি:ব্যক্তিগত চু ক্তির ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য হবে না। কিন্তু চু ক্তি দ্বারা সম্পত্তিতে কোন
ইকু টেবল স্বার্থ সৃষ্টি করলে তবে অন্যরুপ হবে।
২)কল্যানমূখী হস্তান্তর:কল্যানমূখী কোন হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য হবে। সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১৮
ধারায় বলা হয়েছে যে, ধর্মজ্ঞান, বাণিজ্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বা মানবজাতির পক্ষে কল্যাণকর কোন কার্যের
অগ্রগতির জন্য জনসাধারণের স্বার্থে সম্পত্তি হস্তান্তর করা হলে সে ক্ষেত্রে চিরস্থায়ীত্বের বিরুদ্দ নীতি হবে না।

৩)ন্যাস্ত স্বার্থ:ন্যাস্ত স্বার্থের ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য হবে না।

৪)ইজারা ক্ষেত্রে:একটি ইজারাকে চিরস্থায়ী হিসাবে অখ্যায়িত করে এতে যদি এই শর্ত রাখা হয় যে ইজারায়
উল্লেখিত যে কোন সময় ইজারা দাতা ইজারার পরিসমাপ্তি ঘটাতে পারবে তবে তা চিরস্থায়ীত্বের
বিরুদ্ধনীতিকে ক্ষু ন্ন করবে না অথবা ইজারায় এই শর্ত থাকে যে ইজারা গ্রহীতার ইচ্ছানুযায়ী ইজারা
সময়ে নবায়ন করা যাবে তবে তা চিরস্থায়ীত্বের বিরুদ্ধ নীতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না।

৫)হস্তান্তর যোগ্য নয় এমন স্বাথ:কোন হস্তান্তরকারী হস্তান্তর যোগ্য নয় এমন কোন স্বার্থ নিজের জন্য এবং
নিজের বংশধরদের জন্য যদি সংরক্ষিত রাখে এবং বংশধর না থাকলে তা তার নিজের কাছে ফিরে আসার
ব্যবস্থা থাকতে হবে।

৬)কপোরেশনের হস্তান্তর:কোন কর্পোরেশনের হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এ বিধি প্রযোজ্য হবে না।

এই নীতির উদ্দেশ্য:

ভবিষ্যৎ সম্পত্তির সৃষ্টি বা অজাত ব্যক্তির বরাবরে ভবিষ্যৎ সম্পত্তি সৃষ্টি কখন স্বীকৃ তি লাভ করতে থাকে
তখন দেখা গেল যে এর বিরুদ্ধে যদি কোন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা না যায তাহলে এইভাবে অজাত ব্যক্তির
বরাবরে একটি হস্তান্তর দ্বারাই সম্পত্তি চিরন্ত্রনভাবে আটকা পড়ে যাবে ফলে জীবিত ব্যক্তির প্রয়োজনে জমি
পাওয়া যাবে না এরুপ পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য এই আইন ১৪ ধারায় চিরস্থায়ীত্বের বিধান করা হয়েছে।

স্থাবর ও অস্তাবর উভয় সম্পত্তির হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য কিনা:

ভারতীয় আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই বিধি স্থাবর ও অস্থাবর উভয় সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। [২০
বোম্বে ৫১১]

উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধানের কোন পরিবতন হবে কিনা:

উত্তরাধিকার আইন বা Succession act এর ক্ষেত্রে এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রেও
এই বিধি সমভাবে প্রযোজ্য হবে প্রতীয়মান হয়।

১৯২৫ সালের Succession act ১১৪ ধারায় বলা হেয়েছে যে, উইলকারীর মৃত্যুর পরে বা সময় জীবিত
একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর পরও যদি উইলকৃ ত সম্পত্তিতে অধিকার অর্জ ন বিলম্বিত হয়ে থাকে তাহলে সে
উইল বৈধ হবে না।

কোন কোন শর্ত ভূ মির সাথে ধাবমান এবং কোন কোন শর্ত ধাবমান নয়?
ধারা-৪০

চু ক্তি হচ্ছে আইনের দ্বারা বলবৎ যোগ্য সম্মতি।পক্ষগনের মধ্যে পারস্পরিক প্রস্তাব ও গ্রহন এগুলির সমর্থনে
প্রতিদান থাকলে সম্মতি বা এগ্রিমেন্ট গড়ে ওঠে।এই এগ্রিমেন্ট আইন দ্বারা বলবৎযোগ্য হতে হলে চু ক্তি
আইনের ধারা ১০ এ বর্ণিত নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে হবে।

১)পক্ষগনের চু ক্তি করার যোগ্যতা

২)স্বাধীন সম্মতি

৩)আইনগত উদ্দেশ্য

৪)আইন দ্বারা বাতিল করা হয়নি এমন

৫)প্রতিদান আইনানুগ বৈধ হতে হবে।

ক্যাভিন্যান্ট সাধারনত দুই প্রকার-

১)হ্যাঁ সূচক ২)না সূচক

বিধি নিষেধ আরোপিত না সূচক ক্যাভিন্যান্ট বা ভূ মির সঙ্গে ধাপমান হয় না এরুপ ক্যাভিন্যান্ট দুই প্রকার
হতে পারে।

১)ন্যায় পরতা আইন অনুসারে

২)আইনের বিধান অনুসারে।

আইন অনুসারে নৈতিক শর্ত ব্যবহারের উপর এটা অর্পিত হয়। একে বিধি নিষেধ আরোপিত না সূচক শত
বলে। এরুপ শত নম্পত্তির ব্যবহার বা ভোগের অধিকার সীমিত তাই এগুলি নেতিবাচকভাবে সম্পত্তির
সাথে ধাবমান হয়।এই নেতিবাচক ধাবমান ক্যাভিন্যান্ট গুলো সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৪০ ধারায় বিবৃত
হয়েছে।এই ক্যাভিন্যান্ট গুরি সকল ক্ষেত্রে ভূ মির ধাবমান হয় না এবং সকল ক্ষেত্রে পরবর্তী ক্রেতার উপর
বাধ্যকর হয় না।বাধাসূচক এই শতগুলি সকলের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায় না।অন্যান্য শর্তে র ন্যায় বাধাসূচক
শর্ত গুলি তত গুরুত্বপূণ নয় কাজেই ইহা ন্যাযপর বলে বিবেচিত হয়েছে যে ,এগুলিকে শুধুমাত্র জ্ঞাত ক্রেতা
বা বিনামূল্যে হস্তান্তর গ্রহীতার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা উচিৎ।এই শর্ত বা ক্যাভিন্যান্টগুলি সম্পত্তির উন্নয়ন ও
সম্পত্তির সুবিধাজনক ভোগের জন্য প্রয়োজনীয় বলে সার্বজনীনভাবে স্বীকৃ তি লাভ করেছে বিধায় এগুলিকে
রক্ষায় ৪০ ধারার উদ্দেশ্য।বাধাসূচক ক্যাভিন্যান্ট ভূ মির ব্যবহারের উপর বাধা আরোপকারী ক্যাভিন্যান্ট ৪০
ধারার ১ম অনুচ্ছেদে আলোচিত শর্ত বা চু ক্তি ক্যাভিন্যান্ট বাধাসূচক এবং ইহা তৃ তীয় ব্যক্তির নিজের স্থাবর
সম্পত্তি উপভোগ করার জন্য অন্যের স্থাবর সম্পত্তিতে যাতে তার কোন স্বার্থ নেই বা যার উপর তার
কোন ব্যবহার শর্ত নেই তৃ তীয় ব্যক্তি কর্তৃ ক নির্দি ষ্টভাবে ভোগের উপর বাধা আরোপ করা হয়। স্থাবর
সম্পত্তির উপর এরুপ বাধা আরোপের অধিকার শুধু মাত্র জ্ঞাত ক্রেতা এবং বিনামূল্যে হস্তান্তর গ্রহীতার
বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায়। ৪০ ধারার শেষ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, উক্ত অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞাত মূল্যের
হস্তান্তর গ্রহীতার বিরুদ্ধে তা প্রয়োগ করা যাবে না।

উদাহরণ: ক ২৯,৩০ নম্বর দাগের মালিক সে ২৯ দাগ নম্বরের জমি এই শর্তে খ এর নিকট বিক্রি করল
এই ভূ মির ২৯ দাগ নম্বরের কিছু জমি খোলা রাখবে এবং কোন দালান কোঠা নির্মান করতে পারবে না।
খ ২৯ দাগ নম্বরের জমি গ এবং ৩০ দাগ নম্বরের জমি ঙ এর নিকট বিক্রি করল খ বা গ উক্ত
ভূ মিতে দালান নির্মানের উদ্যোগ নিলে ক বা ঙ তা প্রতিরোধ করতে পারবে কিনা তা এখন বিবেচ্য বিষয়।

সমাধান:২৯ দাগের কিছু অংশ খোলা রাখার জন্য ক,খ এর উপর যে শর্ত আরোপ করেছিল তা সম্পত্তি
হস্তান্তর আইনে ১১ ও ৪০ ধারা অনুসারে সিদ্ধ ছিল কাজেই ক, খ কে উক্ত নির্মান কার্য হতে বিরত
রাখতে পারে। এই শর্তে র কথা জেনেও যদি গ ২৯ দাগের জমি কেনে তবে ক,গ কেও নির্মান কার্য হতে
বিরত রাখতে পার।এরপর ক ৩০ নম্বর দাগের জমি ঙ এর নিকট বিক্রয় করলে ঙ ও এ অধিকার প্রয়োগ
করতে পারবে। কিন্তু এরুপ শর্তে র কথা না জেনে এবং মূল্যের বিনিময়ে গ ২৯ দাগের জমি কিনে থাকলে
ক বা ঙ কেউ গ কে নির্মান কার্য হতে বিরত রাখতে পারবে না।কারণ ৪০ ধারা অনুসারে এ ধরনের শর্ত
সকল ক্ষেত্রে ভূ মির সঙ্গে দৌড়ায় না্ ইহা আইনগত শর্ত নহে ন্যায়পর শর্ত কাজেই এই ধরনের শর্ত
জ্ঞাতসারে বা বিনামূল্যে গ্রহীতার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায়। অনঅবগতিতে ও মূল্যের বিনিময়ে ক্রেতার
বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায় না।

ধাপমান কভিন্যান্ট বা ভূ মির সাথে দৌড়ায় এমন কভিন্যান্ট:

সকল চু ক্তির ন্যায় সম্পত্তি হস্তান্তর চু ক্তিতেও কতিপয় শর্ত থাকে ব্যক্ত বা স্পষ্ট আর কতিপয় শর্ত থাকে
অব্যক্ত বা মৌন। আইনে স্বীকৃ ত মৌন শর্ত গুলি পক্ষগনের উপর অবশ্যই কার্যকর হবে এবং এগুলি
সম্পত্তির সাথে ধাবমান হবে।

উদাহরণ-

ক)স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির ক্ষেত্রে ৫৫(২)ধারা অনুযায়ী এটা ধরে নেওয়া হয় যে, বিক্রির সময় বিক্রেতা ঐ
সম্পত্তি বিক্রির অধিকার ছিল।

খ)রেহেন এর ক্ষেত্রে ৬৫ ধারা অনুসারে ধরে নেওয়া হয় যে রেহেন দাতা রেহেন সম্পত্তির মালিক।

গ)তেমনি ইজারার ক্ষেত্রেও ইজারা দাতা ও ইজারা গ্রহীতার উপর কতিপয় দায় দায়িত্ব থাকে যেগুলি
চু ক্তিতে উল্লেখ না থাকলেও উভয় পক্ষই তা অনুসরণ করতে বাধ্য এগুলি সব সম্পত্তির সাথে ধাবমান।

ভু মির সাথে ধাবমান শর্ত গুলি আবার দুই ভাগে বিভক্ত-

ক)আইনগত ও
খ)নৈতিক

ক)আইনগত:যে সব ভূ মির শর্ত বা Title বা লাভ প্রাপ্তির অধিকার হস্তান্তর গ্রহীতার উপর বর্তায়।এইশর্ত বা
লাভ নির্বিঘ্ন করার দায়িত্ব হস্তান্তরকারীর উপর বর্তায়।বিক্রি,রেহেন বা ইজারা যখন করা হয় তখন এর সুযোগ
গ্রহনের অধিকার ভূ মির হস্তান্তর গ্রহীতার নিকট ধাবিত হয়,তখন বলা হয় যে,শর্ত বা চু ক্তি ভূ মির সঙ্গে
দৌড়ায়।

খ)নৈতিক:ব্যবহারের অধিকারকে অর্জি ত শর্ত বা চু ক্তিকে বিধি নিষেধ আরোপিত না সূচক শর্ত বলা হয়।

টাল্ক বনাম মকহে মামলায় ইংল্যান্ডে এই নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ক্রেতা চু ক্তি করেছিল যে, কৃ ত জমিতে
সে কোন বাড়ী নির্মান করবে না, কিছুদিন পর সে ঐ জমিতে বাড়ী নির্মান করতে চাইলে আদালত তাকে
বাধা দেয় একে এক প্রকারের স্টোপেল বলা যেতে পারে। এরুপ শর্ত বা চু ক্তি সকল ক্ষেত্রে সম্পত্তির
সাথে ধাবমান হয না বা দৌড়ায় না।

প্রশ্ন:

ক)লিসপেনডেন্ট নীতিটি ব্যাখ্যা কর।এ নীতির উদ্দেশ্য কি? নোটিশের নীতি দ্বারা এ নীতির প্রয়োগ কি
ক্ষতিগ্রস্থ হবে? আলোচনা কর।

খ)মামলা চালিত অবস্থায় কৃ ত কোনো হস্তান্তর কি বাতিল?

সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫২ ধারায় লিসপেনডেস নীতি বর্ণনা করা হয়েছে। এ নীতির মূল বক্তব্য হলো, আদালতে মাম
লা বিচারাধীন থাকলে উক্ত মামলার কোনো পক্ষই মামলার ফলাফলকে প্রভাবিত করার জন্য বিরোধীয় সম্পত্তিটি হস্তান্ত
র করতে পারবে না।

অর্থা‍
ৎ এ নীতি অনুযায়ী মামলার বিরোধীয় সম্পত্তি কোনো পক্ষ হস্তান্তর করে থাকলে তার দ্বারা মামলার ফলাফল কো
নোভাবেই প্রভাবিত হবে না।

সংক্ষেপে, মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকাকালীন পক্ষগণ নতু ন কোনো অবস্থা সৃষ্টি করতে পারবে না।

ব্রিটিশ কমন ল’ থেকে এ নীতিটির উৎপত্তি।

এ ধারায় মূলত মামলা চলাকালে মামলার বিষয়বস্তু স্থিতাবস্থায় রাখার নির্দে শ প্রদান করা হয়েছে।

সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫২ ধারায় বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের ভেতরে বা বাইরে এখতিয়ারাধীন আদালতে স্থাবর সম্প
ত্তি সম্পর্কে  মামলা অথবা কার্যক্রম চলার সময় মামলাটি ষড়য্ন্ত্রমূলক না হলে এবং তাতে সম্পত্তির কোন স্বত্ব সম্পর্কে  
প্রত্যক্ষ ও সুস্পষ্টভাবে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়ে থাকলে আদালতের অনুমতি এবং কোন শর্ত  আরোপ করলে সে মোতাবেক 
ব্যতিত আর কোনো পক্ষ এরূপভাবে উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবেনা যার ফলে আদালতের সম্ভাব্য ডিক্রি বা আ
দেশের ফলে অন্যপক্ষ যে অধিকার পেতে পারে তা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা ব্যহত হতে পারে।

মামলা চলাকালীন বিষয় বলতে কি বোঝায় সে সম্পর্কে  এ ধারার ব্যাখ্যায় বর্ণিত আছে। বলা হযেছে, এ ধারার উদ্দেশ্যে 
আরজি দাখিল বা কার্যক্রম রুজু হবার তারিখ হতে, আদালতের সৃষ্টি চু রান্ত ডিক্রি জারী হয়ে সম্পূর্ণ দায় পরিশোধ না হ
ওয়া পর্যন্ত মামলা বা কার্যক্রম চলছে বলে গণ্য করতে হবে।

এ নীতিটি প্রয়োগ করতে হলে মামলাটি যথাযথ এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে দায়ের করতে হবে।

কোনো ষড়যন্তমূলক মামলার ক্ষেত্রে এ নীতিটি প্রযোজ্য হবে না ।

আর মামলার বিষয়বস্তু হস্তান্তর হলেও তাতে চলমান মামলার ফলাফলে কোনো প্রভাব পড়বে না।

লিসপেনডেস নীতির উপাদান:

১। স্থাবর সম্পত্তি সম্পর্কে  কোনো মামলা বা কার্যক্রম আদালতে বিচারাধীন থাকতে হবে।

২। যে আদালতে মামলাটি বিচারাধীন থাকবে সে আদালতের উক্ত মামলাটি বিচার করার এখতিয়ার থাকতে হবে।

৩। অনুরূপ মামলা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়ের থাকতে হবে।

৪। আদালতের অনুমতিক্রমে বা আদালত প্রদত্ত শর্ত  মোতাবেক সম্পত্তি হস্তান্তর স্বত্ব বা মালিকানা।

৫। আদালতের বিচারাধীন থাকার সময় মামলার বিষয়বস্তু অর্থা‍
ৎ স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবে না এবং করলেও 
তার দ্বারা মামলার কোনো পক্ষের অধিকার প্রভাবিত হবে না।

কাজেই, আইনের বিধান মেনে সবারই উচিৎ মামলা চলাকালীন সময়ে মামলার বিষয় বস্তুর কোনো রকম হস্তান্তর না করা
। এতে অহেতু ক জটিলতা বাড়ে। কিন্তু মামলার রায়ের কোনো পরিবর্ত ন হয় না।

বায়নানামা বহাল থাকাবস্থায় সম্পত্তি অন্য কারো কাছে কোন প্রকারের হস্তান্তর করা যাবে কি না?
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ধারা- ৫৩(খ) অনুযায়ী,বায়না নামা দলিল বহাল থাকাবস্থায় কোন স্থাবর সম্পত্তি বায়না গ্রহীতা 
ব্যতিত অন্য কারো কাছে কোন  প্রকার বিক্রয়, দান, হেবা ইত্যাদি  অর্থাৎ কোন প্রকারের হস্তান্তর করা যাবে না। যদি কোন 
প্রকারের হস্থান্তর করা হয় তাহলে যে দলিলের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে সেটি বাতিল হয়ে যাবে।
যদি আইনানুগ ভাবে বায়না নামাটি বাতিল করা হয় তাহলে ভিন্ন যে কারো কাছে হস্তান্তর করতে
পারবে।
কোন ব্যক্তি সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে?
চু ক্তি সম্পাদনের যোগ্য এবং হস্তান্তর যোগ্য সম্পত্তির স্বত্বাধিকারি অথবা যে সম্পত্তি তার নিজের না কিন্তু তা হস্তান্তর করা
র ক্ষমতা প্রাপ্ত প্রত্যক ব্যক্তি বর্ত মান আইনের অধিনে সম্পত্তির হস্তান্তর করতে পারবে।।।
বিনিময় (Exchange) কি?
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১১৮ ধারায় বলা হয়েছে যে যদি দুই বা ততোধিক ব্যক্তি তাদের পারস্পারিক ম
তামতের ভিত্তিতে একজন আর এক জনের একটি জিনিসের মালিকানা স্বত্বের বদলে অপর একজনের কোন জিনিসের 
মালিকানা স্বত্বের হস্তান্তর, অথবা কোনো একটি জিনিস অর্থ এবং অপর জিনিসটি অন্য কিছু হয় অথবা দুটি জিনিসই য
দি অর্থ হয় এবং তা যদি দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে আদান প্রদান হয়ে থাকে তাহলে সেই পদ্ধতিকে বিনিময় বলে।
যেমন: রহিম করিমকে ৫০০০/- দিল এবং করিম বিনিময়ে রহিমকে তার ২৫ শতাংশ জমি এক বছরের জন্য আবাদ ক
রার সুযোগ দিল।
বিনিময় কি ভাবে করা যায়?
বিনিময়ের সম্পত্তি দুটো যদি স্থাবর সম্পত্তি হয় এবং তার একটির মূল্য যদি ১০০ টাকা বা তার বেশি হয়, তাহলে উক্ত 
বিনিময়টি রেজিস্ট্রিকৃ ত দলিলের মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে।
কিন্তু বিনিময় মুল্য যদি ১০০ টাকার কম হয় তাহলে শুধুমাত্র দখল অর্পনের মাধ্যমে কার্যকর করা যাবে ৷
স্থাবর সম্পত্তির বিনিময় দখল অর্পনের মাধ্যমে করা যায় আবার রেজিষ্ট্রিকৃ ত দলিলের মাধ্যমেও করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য যে মৌখিক বিনিময় দ্বারা কোনো পক্ষের কোনো স্বার্থের সৃষ্টি হয় না । কাজেই অস্থাবর সম্পত্তি এবং ১০০ টাকার 
কম মূল্যের স্থাবর সম্পত্তির বিনিময় রেজিস্ট্রিকৃ ত দলিলের মাধ্যমে করা হলে তা বৈধ্য হবে ।
বিনিময়ের পক্ষসমুহের অধিকার ও দায়িত্ব: বিনিময়ের প্রত্যেক পক্ষই হলেন একজন ক্রেতা এবং বিক্রেতা । বিনিময়ের প্র
ত্যেক পক্ষই একই সংগে তাদের পরস্পরের বিষয় বস্তু, একই সময়ে হস্তান্তর এবং গ্রহন করবে। উভয় পক্ষই তাদের সস্প
ত্তির যাবতীয় বিষয়ে পরস্পরকে অবগত করবে । মোট কথা উভয় পক্ষই সমান ভাবে দায়িত্ব পালন করবে এবং অধিকার 
ভোগ করবে ।
বিনিময় এবং বিক্রয়ের মধ্যে পার্থক্য:
বিক্রয়ের ক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে সম্পত্তি হস্তান্তরিত হয়, কিন্তু বিনিময়ের ক্ষেত্রে একটি সম্পত্তির বদলে অপর একটি সম্প
ত্তি হস্তান্তরিত হয় ।
মূল্য বা টাকার বিনিময়ে সম্পত্তি হস্তান্তরকে বিক্রয় বলে । অন্য দিকে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে সম্পত্তির আপোষমূ
লক হস্তান্তরকে বিনিময় বলে ।
বিনিময়ের ক্ষেত্রে কোনো কোনো সময় দেখা যায় যে সম্পত্তির সাথে কিছু অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে যেমন বিনিময়যোগ্য 
সম্পত্তির মুল্য কম বা বেশি হলে সেক্ষেত্রে অর্থ বা টাকা প্রদান করেও বিনিময় সমন্বয় করা যেতে পারে কিন্তু বিক্রির ক্ষে
ত্রে শুধুমাত্র অর্থ বা টাকা প্রদান করতে হয়।

সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ এর ১২২ ধারায় দানকে সজ্ঞায়িত করা হয়েছে ,এতে বলা হয়েছে "কোন ব্যক্তি কতৃ ক স্বে
চ্ছাপ্রণোণিত হয়ে ও কোন প্রকার প্রতিদান গ্রহণ না করে কোন অস্থাবর বা স্থাবর সম্পত্তি অপর ব্যক্তিকে হস্তান্তর করা হ
লে এবং সে ব্যক্তি বা তার পক্ষে অন্য কেউ উহা গ্রহণ করলে তাকে বলা হয় 'দান'।যে ব্যক্তি অনুরুপভাবে সম্পত্তি হস্তা
ন্তর করে তাকে বলা হয় দান কতা  এবং যে ব্যক্তি তা গ্রহণ করে তাকে বলা হয় দানগ্রহীতা"।

প্রশ্ন-১ ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইন অনুযায়ী সম্পত্তি হস্তান্তর বলতে কি বুঝ? কেন বলা হয় যে,
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের শিরোনামটি ভু ল নামের ব্যবহার এই আইন মুসলিম আইনের
বিধানকে কতখানি প্রভাবিত করেছে?
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে ৫ ধারায় সম্পত্তি হস্তান্তরের সংজ্ঞা প্রদান করা হেেয়ছে। ৫ ধারার
মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তরের সংজ্ঞা এবং ৬ ধারার মাধ্যমে কোন কোন  সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় এবং
কোনগুলো হস্তান্তর নয়- সে সম্পর্কে বিভিন্ন বিধি বিধৃত হয়েছে।
হস্তান্তর শব্দের অর্থ হচ্ছে হাত বদল। অতএব সম্পত্তি হস্তান্তর বলতে এক ব্যক্তি কাছ হতে অন্য ব্যক্তির
কাছে সম্পত্তি অর্পণকে বোঝায়। অর্থাৎ কোন সম্পত্তি এক বক্তি হতে অন্য ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করাকেই
সম্পত্তির হস্তান্তর বলে। তবে আমরা জানি যে, স্থাবর সম্পত্তি এক স্থান হতে উঠিয়ে অন্য স্থানে নেওয়া যায়
না। তাই বলা যায় যে, কোন সম্পত্তির স্বত্ব বা দখল বা অধিকার হস্তান্তরকেই সম্পত্তির হস্তান্তর বলে।
কোন সম্পত্তির আইনগত স্বত্ব,স্বার্থ,অধিকার এবং দখল কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃ ক অন্য
কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ বা প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করাকে সম্পত্তি হস্তান্তর বলে।
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫ ধারায় বলা হয়েছে যে-
”সম্পত্তি হস্তান্তর বলতে সেই কাজকে বুঝায়, যা দ্বারা একজন জীবিত ব্যক্তি বর্ত মানে বা ভবিষ্যত কোন
সম্পত্তি এক বা একাধিক জীবিত ব্যক্তিকে বা নিজেকে বা তার নিজের এক বা একাধিক জীবিত
ব্যক্তিগনের কাছে অর্পন করেন এবং এরুপ কাজকে সম্পত্তি হস্তান্তর বলা হয়।
এই ধারানুসারে সম্পত্তি হস্তান্তর শুধুমাত্র জীবিত ব্যক্তিগনের মাঝে সম্পন্ন হবে। তাছাড়া, হস্তন্তরের জন্য
সম্পত্তির অস্তিত্ব থাকা প্রয়োজন। অস্তিত্ববিহীন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায না।
কোন ব্যক্তি যখন সম্পত্তির বিলি ব্যবস্থা করেন এবং নিজেকে এর একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করেন
তখন নিজের কাছে সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়। সম্পত্তি বলতে এই ধারা অনুসারে স্থাবর সম্পত্তি বুঝতে
হবে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইন অনুসারে সম্পত্তি হস্তান্তর বলতে পক্ষগনের কার্যদ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তরের কতিপয়
অংশকে বুঝায়। আইনের কার্যকারিতা দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তর বুঝায় না।
তাছাড়া অন্য কোন আইনে সম্পত্তি হস্তান্তরের বিধান থাকলে সম্পত্তি হস্তান্তর অকার্যকর হবে। যেমন- কোন
সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত আইন,কোম্পানী আইন প্রভৃ তি।
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের আওতায় পাঁচটি পদ্ধতির মাধ্যমে এক ব্যক্তি তার স্থাবর সম্পত্তি
অপর কোন জীবিত ব্যক্তির অনুকূ লে হস্তান্তর করতে পারে। এগুলি হচ্ছে-

  বিক্রয়

  রেহেন, 

  ইজারা, 

 দান ও

  বিনিময়
অন্য কোন পদ্ধতিতে সম্পত্তি হস্তান্তর এই আইনের আওতাভূ ক্ত নয়। তাছাড়া এই আইন অনুসারে সম্পত্তি
হস্তান্তর করতে হলে অন্য আইনের সাহায়্য ও সহযোগীতা প্রয়োজন। হস্তান্তরের চু ক্তির জন্য ১৯৭২ সালের
চু ক্তি আইন এবং হস্তান্তর দলিল কার্যকর করার জন্য ১৯০৮ সালের রেজিস্টেশন আইন প্রয়োজন।
নজীর-
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে ৫ ধারায় পক্ষগনের কার্য দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছে,কাজেই আইন
প্রয়োগ দ্বারা যে সম্পত্তি হস্তান্তর হতে পারে সে সম্পর্কে অত্র আইনে বলা হয়নি।
[চখউ ১৯৫৪ (কধৎ)৩৯২]
ব্যবসায়ের সুনাম সম্পত্তি হিসেবে গন্য হয়। নালিশযোগ্য দাবী ও সম্পত্তি বকেয়া খাজনা আদায়ের অধিকার
সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে।
[অওজ ১৯৬০ ৯ঈধষ) ৩৭৮]
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের তথ্যানুযায়ী উইরের দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না।
কারণ অত্র আইনে ৫ দারা সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, কোন জীবিত লোক সম্পর্কে শুধুমাত্র সেই ক্ষেত্রে
সম্পত্তি হস্তান্তর বলে বিবেচিত হবে।
উপরোক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায় যে, সম্পত্তি হস্তান্তর বলতে এমন এক কাজকে বুঝায় যদ্বারা কোন
জীবিত ব্যক্তি বর্ত মানে বা ভবিষ্যতে কোন সম্পত্তি এক বা একাধিক জীবিত ব্যক্তির নিকট বা তার নিজের
নিকট অর্পন করে।
’ ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের শিরোনামটি ভু ল নামের ব্যবহার’ এই আইন মুসলিম আইনের
বিধানকে কতখানি প্রভাবিত করেছে:
১৮৮২ সালের ৪নং আইন হিসেবে প্রণীত ’সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের(ঞযব ঞৎধহংভবৎ ড়ভ চৎড়ঢ়বৎঃু
অপঃ)শিরোনামটি মূলত নিম্নলিখিত দুটো কারণে ভূ ল নামের ব্যবহার হিসেবে পরিগণিত হয়-
    এই আইনে সম্পত্তির কোন সংজ্ঞা দেওয়া হয় নাই;
    হস্তান্তরের সাথে সম্পৃক্ত সকল বিধান এই আইনে যুক্ত করা হয় নাই।
উপরোক্ত দুটো বিষয়কে সামনে রেখে-
প্রথমত: সম্পত্তি শব্দটির সংজ্ঞা ব্যতিরেকে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন শিরোনামটির প্রয়োগ সঠিক নয়। কারণ
আইনে সম্পত্তি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়।
হ্যালসবেরির মতে- সম্পত্তি হচ্ছে কোন ব্যক্তির নিরঙ্কু শ অধিকার যা দরকষাকষি এবং বিক্রি করা যায়।
ব্যবসায়ের সুনাম ,ট্রেডমার্ক , পেটেন্টস্বত্ব,কপিরাইট বা গ্রন্থস্বত্ব ও চু ক্তিগত অধিকার সবই সম্পত্তির অন্তভূ ক্ত।
সম্পত্তি বলতে কোন কিছুর উপর সর্বোচ্চ অধিকার বুঝায় যে অধিকার বলে একব্যক্তি ভূ মিতে বসবাস
করে ও বস্তু ব্যবহার করে, যা অন্যের সৌজন্যে নয়।
আইনগত ধারণা হিসেবে সম্পত্তি হচ্ছে একগুচ্ছ অধিকার এবং ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সম্পত্তির ক্ষেত্রে দখলের
অধিকার,ভোগের অধিকার,বিনষ্ট করার অধিকার,রেখে দেয়ার অধিকার, হস্তান্তর করার অধিকার ইত্যাদি বুঝায়।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনকে স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন বলা যায় না। কারণ এ আইনের  সব শ্রেণীর সম্পত্তির
হস্তান্তরের বিধান বর্ণিত হয়নি এবং তা এই আইনের প্রস্তাবনা হতেই বোঝা যায়। এই আইনের প্রস্তাবনায়  বলা
হয়েছে যে, পক্ষগনের কার্যদ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের কতিপয় অংশের সংজ্ঞা প্রদান এবং সংশোধনের
প্রয়োজনে এই আইনটি প্রণয়ন করা হলো। এ অর্থে অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়টি এই আইনে স্থান
পায়নি এবং সুনির্দি ষ্ট কতগুলো পদ্ধতি ব্যতীত অন্যান্য পদ্ধতিসমূহের হস্তান্তরের বেলায় এই সম্পত্তি হস্তান্তর
আইন সম্পূর্ণ নীরব। এই আইন শুধুমাত্র বিক্রি ,দান, রেহেন, ইজারা, এবং বিনিময়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়ে
থাকে। আর স্মরণ রাখতে হবে যে, যে ক্ষেত্রে একজন জীবিত ব্যক্তির দ্বারা অন্য জীবিত ব্যক্তির বরাবরে
সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রেই পক্ষগনের কার্যকারিতার দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়েছে বলে
গন্য হবে। আবার সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫ ধারায় ভাষ্যের বিশ্লেষনে বলতে হয় যে, যেহেতু এই ধারায়
জীবিত ব্যক্তি কর্তৃ ক হস্তান্তরের বিধান বর্ণিত রয়েছে সেহেতু উইলের দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই
আইন প্রযোজ্য হবে না।
সাধারণভাবে পক্ষগনের কার্যকারিতা ছাড়াও আইনের প্রয়োগ বা কার্যকারিতার দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তর করা
যায়। কিন্তু সম্পত্তি হস্তান্তর আইনটি সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ক্ষেত্রে আইনের কার্যকারিতাকে স্বীকৃ তি দেয়নি
কিন্তু যেখানে কোন ব্যক্তি দেউলিয়া হয়ে যায় অথবা তার সম্পত্তি বাজেযাপ্ত ঘোষিত হয় সেখানে আদালত
কর্তৃ ক সম্পত্তি হস্তান্তরকেই আইনের কার্যকারিতা দ্বারা হস্তান্তর বলা যায়।
অতএব দেখা যাচ্ছে যে, ১৮৮২ সনের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের বিধান মতে পক্ষগনের কার্যকারিতার দ্বারাই
সম্পত্তি হস্তান্তর করা সম্ভব। আইনের কার্যকারিতা দ্বারাও যে সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায সে বিষয়ে  এই
আইন কিছুই বলেনি। মোট কথা আইনের কার্যকারিতার দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও এই আইনটি
প্রযোজ্য নয়। যেমন- উত্তরাধিকার,দেউলিয়া,ডিক্রিজারি,ত্যাগ ও বাজেযাপ্ত। উদাহরণ: করিম তার বাড়িটি
রহিমের কাছে বিক্রযের মাধ্যমে হস্তান্তর করে। এক্ষেত্রে এরুপ হস্তান্তরটি পক্ষগনের কার্যকারিতার দ্বারা হস্তান্তরিত
হয়েছে বলে গন্য হবে। কিন্তু করিম যদি দেউলিয়া হয়ে যায় এবং দেউলিয়া রিসিভার নিয়োগ করা হয়,তাহলে
সেক্ষেত্রে করিমের সম্পত্তির প্রয়োজন হয় না। আর এভাবে সম্পত্তির হস্তান্তরকেই আইনের কার্যকারিতার দ্বারা
সম্পত্তি হস্তান্তর বলে।
কোন হস্তান্তরের বিষয়ে সুনির্দি ষ্ট কোন বিধান সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে পাওয়া না গেলে ইকু ইটি আইনের নিরীখে
অনুরুপ হস্তান্তরটি পর্যালোচনা করা হয়ে থাকে। কাজেই কোন হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধান যথেষ্ট
বলে গন্য না হলে আদালত সমূহ ইংলিশ ইকু ইটি আইনকে এক্ষত্রে প্রয়োগ করে থাকেন। আবার অনেক
ক্ষেত্রেই সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের অধীনে সম্পত্তি হস্তান্তরের বেলায় অপরাপর আইনসমূহেরও সাহায্য নিতে
হয়। যেমন- কোন কোন সম্পত্তির হস্তান্তর সম্পূর্ণ করতে চু ক্তি আইন এবং রেজিষ্ট্রেশন আইনের শরণাপন্ন হতে
হয়। এছাড়াও এই আইনের যে সকল বিধান মুসলিম আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় সেক্ষেত্রে মুসলিম
আইনের বিধানই প্রাধান্য পাবে। কাজেই বলা যায় যে, ১৮৮২ সনের সম্পত্তি হস্তান্তর আইন স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়।
এতএব উপরোল্লিখিত বিশদ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায় যে, যদিও আইনটির শিরোনাম দেয়া হয়েছে
সম্পত্তি হস্তান্তর আইন তথাপি সম্পত্তির সংজ্ঞা এই আইনে নেই। এমনকি সকল প্রকার সম্পত্তির হস্তান্তরও
এই আইন দ্বারা সম্পন্ন করা যায় না। কারণ সর্বপ্রকার সম্পত্তির হস্তান্তর এই আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না।
কাজেই শিরোনামে এই আইনটিকে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন নামে অভিহিত করে যে ভু ল নামের ব্যবহার করা
হয়েছে তা আংশিক হলেও সত্য বলা যায়।
হস্তান্তরের সাথে সকর বিধান যুক্ত হয় নাই/স্বয়ং সম্পূর্ণ আইন হিসাবে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে হস্তান্তর সংক্রান্ত সকল বিধি বিধানকে নিয়ন্ত্রন করে না। যেমন-
১) অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর: ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে কেবলমাত্র স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত হস্তান্তরের
বিধান রয়েছে। অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর এই আইন দ্বারা সম্পন্ন হয় না।
২) আদালতের মাধ্যমে হস্তান্তর: দেউলিয়া আইন দ্বারা দেউলিয়া আদালত কর্তৃ ক ডিক্রিজারিপূর্বক স্থাবর সম্পত্তি
হস্তান্তরিত হইতে পারে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন সম্পূণনীরব দর্শকের ভ’মিকা পালন
কওে,কারণ এই সম্পর্কি ত হস্তান্তরের বিধান সম্পত্তি সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে যুক্ত করা হয়নি।
৩) ধর্মীয় ও দাতব্য উদ্দেশ্যে হস্তান্তর:মুসলিম আইনে বর্ণিত ওয়াকফ ও দানের ক্ষেত্রে সম্পত্তি হস্তান্তর এবং
হিন্দু আইনে বর্ণিত দেবোত্তর সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে স্পত্তি হস্তান্তরের বিধান প্রয়োগ হবে না।
৪) বিধি নিষেধ আরোপও নিষিদ্ধ:সম্পত্তি হস্তান্তরের উপর আংশিক বা পূর্ণ বিধি-নিষেধ আরোপ করা যাইতে
পারে। অপরদিকে মামলা চলাকালীন আদালতের নির্দে শে সম্পত্তি হস্তান্তর নিষিদ্ধ থাকতে পারে। ফলে
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে হস্তান্তরের বিধানকে স্বয়ং সম্পূর্ণ বলা যায় না।
৫) মৃত ব্যক্তি কর্তৃ ক হস্তান্তর:উইলের ক্ষেত্রেও সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের বিধান প্রযোজ্য নহে।কারণ এই ক্ষেত্রে
মৃত ব্যক্তি কর্তৃ ক জীবিত ব্যক্তি অনুকূ লে সম্পত্তি হস্তান্তর হয়ে থাকেযা সম্পত্তি হস্তান্তর আইন মুক্ত করা
হয়নি।
৬) আইনের মাধ্যমে হস্তান্তর:কোন ব্যক্তি মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি উত্তরাধিকার আইন মোতাবেক মৃত ব্যক্তি
ওয়ারেশদের নিকট হস্তান্তর হয় যার বিধান এই আইনে সংযুক্ত হয় নাই।
উপরোক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে, সম্পত্তি হস্তান্তর সংক্রান্ত সকল বিধান যেহেতু এই আইনে যুক্ত করা
হয়নি এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে দেওয়ানী কার্যবিধি ও রেজিষ্ট্রেশন আইনের উপর নির্ভ রশীল সেহেতু এই
আইনকে স্বংসম্পূর্ণ আইন বলা যায়না।
এই আইন মুসলিম আইনের বিধানকে কতখানি প্রভাবিত করেছে:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ২ ধারায় বলা হয়েছে যে, এই আইনের দ্বিতীয় অধ্যায়ে যা বর্ণিত রয়েছে তার কোন
কিছুই মুসলিম আইনের বিধানকে প্রভাবিত করবে না। মুসলিম আইন ও সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের মধ্যে দ্বন্দ্ব
দেখা দিলে মুসলিম আইন প্রাধান্য পাবে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের বিধান মতে, পক্ষগনের কার্যকারিতার দ্বারাই সম্পত্তি হস্তান্তর করা সম্ভব। আইনের
কার্যকারিতার দ্বারা নয়। কাজেই আইনের কার্যকারিতার দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও এই আইন প্রযোজ্য
নয়,যেমন- উত্তরাধিকার,দেউলিয়া,ডিক্রিজারি ইত্যাদি।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫২ ধারায় বর্ণিত লিসপেনডেন্ট নীতির আলোকে,এই আইনের সাথে মুসলিম
আইনের বিরোধ দেখা দিলে মুসলিম আইন যে প্রাধান্য পাবে তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তাই একজন দাতা
মুসলিম আইনের অধীনে একটি সম্পত্তির দখল  গ্রহীতার নিকট অর্পন করে থাকলে এবং পরে সেই দান
প্রত্যাহার করে সম্পত্তিটি ফিরিয়ে নিতে চাইলে লাহোর হাইকোর্ট তা অগ্রাহ্য করেন (১৯৬৫,পিএলডি লাহোর
২০০) কেননা,এক্ষেত্রে রিসপেনডেন্স প্রযোগ করে দান গ্রহীতা কর্তৃ ক সম্পত্তি বিক্রি করা বন্ধ করা যায না।
১৮৮২ সালের হস্তান্তর আইন অনুযায়ী সম্পত্তি বলতে কি বুঝ? ইহা কত প্রকার ও কিকি? সকল প্রকার
সম্পত্তি হস্তার যোগ্য কি? এই আইনে  কি কি সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় এবং কি কি সম্পত্তি হস্তান্তর করা
যায় না- আলোচনা কর। সম্পত্তি হস্তান্তরের আওতায় কত প্রকার সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায়?
সম্পত্তি বলতে কি বুঝ:
আইনে সম্পত্তি খুব ব্যাপক র্অথে ব্যবহৃত হয়। আইন বশিারদ হ্যালস্ ববেী এর মতে, সম্পত্তি হচ্ছে কোন
ব্যক্তরি নরিঙ্কষ অধকিার যা দর কষাকষি এবং বক্রিি করা যায়। ব্যবসায়রে সুনাম, ট্রডেমাক, পটেন্টেস্বত্ব,গ্রন্থস্বত্ব,
চু ক্তগিত অধকিার সবই সম্পত্তি অন্তভূ ক্ত।
খধি খবীরপড়হ গ্রন্থে সম্পত্তরি সংজ্ঞা দওেয়া হয়ছেে নম্নিরুপভাবে-
সম্পত্তি বলতে কোন কছিুর উপর র্সবোচ্চ অধকিারকে বুঝায়, যে অধকিার বলে ভূ মতিে বসবাস করওে বস্তু
ব্যবহার করে যা অন্যরে সৌজন্যে নয়।
ভারতীয় সুপ্রীম র্কোটরে অভমিত হল, যে অধকিার বলে মানুষ একগুচ্ছ অধকিার এবং ইন্দ্রীয় গ্রাহ্য
সম্পত্তরি ক্ষত্রেে দখলরে অধকিার, ভোগরে অধকিার, বনিষ্ট করার অধকিার, রখেে দওেয়ার অধকিার এবং
হস্তান্তর করার অধকিার লাভ করে তাকে সম্পত্তি বলে.
এলাহবাদ হাই র্কোটরে মতে, সম্পত্তি বলতে শুধুমাত্র বস্তুগত পর্দাথ সমূহকইে বুঝায় এবং পর্দাথরে উপর
হতে লব্ধ সকল প্রকার অধকিার ও স্বত্বকে এইমত অনুযায়ী সম্পত্তি শব্দটি দ্বারা বন্ধকী দায় মোচনরে ন্যায়
সংগত অধকিার কায়মেী স্বাথ প্রভৃ তি মামলাযোগ্য অধকিার সমূহকওে অন্তভূ ক্ত কর।েবষিয়রে ব্যাপকতার
কারণে সম্ভবত ১৮৮২ সালরে সম্পত্তি হসবতান্তর আইনে সম্পত্তরি সংজ্ঞা প্রদান করা হয়নি তবে এটা
স্পষ্টযে ইন্দ্রীয় গ্রাহ্য বা অইন্দ্রীয়গ্রাহ্য সকল বস্তু যার উপর কোন ব্যক্তি তার নজিরে সুবিধার্থে র্পূণ অধকিার
ও কতৃ ত্ব প্রয়োগ করতে পারে তা হচ্ছে ঐ ব্যক্তরি সম্পত্তি
সম্পত্তির প্রকারভেদ:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে সম্পত্তি কোন সংজ্ঞা শ্রেণীবিভাগ করা হয় নাই। তবে বিভিন্ন দিক হইতে  সম্পত্তির
নিম্ন রুপ শ্রেণী বিভাগ করা যায়।
১)বস্তুগত দিক হইতে দুই প্রকার; যেমন:
ক) ইন্দ্রীয় গ্রাহ্য বা শরীরি
খ) ইন্দ্রীয়হীন বা অশরীরী
২) স্থানান্তরের দিক হইতে দুই প্রকার;যেমন:
ক)স্থাবর
খ) অস্থাবর
৩) বৃটিশ আইন অনুযায়ী দুই প্রকার;যেমন:
ক) প্রকৃ ত সম্পত্তি(Real Property)
খ) ব্যক্তিগত সম্পত্তি (Private Property)
৪) মালকিানা র্শতরে দৃষ্টভিঙ্গতিে দুই প্রকার-
ক)সরকারী সম্পত্তি
খ)বসেরকারী সম্পত্তি
কোন কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাবে এবং কোন কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাবে না:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনরে ৬ ধারার বধিান সাপক্ষেে যে কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায়। এই ধারায় বলা
হয়ছেে যে এই আইনে বা বতমান বলবৎ অন্য আইনে ভন্নিরুপ কোন বধিান না থাকলে যে কোন প্রকার
সম্পত্তি হস্তান্তর করা যতেে পারে তবে কতপিয় সম্পত্তরি কথা এ ধারায় উল্লখে করা হয়ছেে যগেুলি কোন
অবস্থায় হস্থান্তরতি নয়-
১) ভবষ্যিৎ উত্তরাধকিাররে সম্ভবনা: সম্ভাব্য উত্তরাধকিারীর সম্পত্তি পাবার সম্ভবনা, আত্নীযরে মৃত্যুর পর তার
ওছয়িতে র অনুসারে সম্পত্তি পাবার সম্ভাবনা র্অথাৎ সম্পত্তি লাভে কোন সম্ভাবনাকে হস্তান্তর করা যায় না।
২) পুন: প্রবশেরে অধকিার: পরর্বতীকালীন র্শতরে ভঙ্গরে জন্য দখল পাবার অধকিার সংশ্লষ্টি সম্পত্তরি মালকি
ব্যতীত অন্য কারো নকিট হস্তান্তর করা যায়না।
৩) ব্যবহার স্বত্ব: এটা হচ্ছে একজনরে সম্পত্তি উপর আরকেব্যক্তরি অধকিার।যমেন ঊধংবসবহঃ জরমযঃ
ব্যবহার স্বত্বরে অধকিার অন্যরে নকিট হস্তান্তর করা যায় না।
৪) ব্যক্তগিত স্বাথ: কোন সম্পত্তরি ভোগ দখলরে অধকিার মালকিরে মধ্যে ব্যক্তগিতভাবে সীমাবদ্ধ থাকলে
তনিি তা হস্তান্তর করতে পারনে না।
৫) ভবষ্যিত খোরপোষরে অধকিার: ভবষ্যিৎ খোরপোষরে অধকিার জনর্স্বাথে হস্তান্তর অযোগ্য করা হয়ছে।ে
৬) কবেলমাত্র মামলা করার অধকিার:মামলা করার অধকিার যহেতেু ব্যক্তগিত অধকিার সহেতেু ইহা হস্তান্তর
করা যায় না।
৭) সরকারীপদ বা বতেন: কোন সরকারী পদ বা বতেন পাওনা হবার আগে বা পরে হস্তান্তর করা যায় না।
৮) বৃত্তি বা পনেশন: বৃত্তি বা পনেশন হস্তান্তর যোগ নহ।ে
৯) সংশ্লষ্টি র্স্বাথরে প্রকৃ তি বরিোধী কোন স্বাথ হস্তান্তর করা যায় না।
সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে উপরোক্ত বিধি-নিষেধগুলি ছাড়াও আরও দুইটি বাধা রহিয়াছে;যেমন:
১) মামলা চলাকালীন হস্তান্তর:১৯০৮ সালের হস্তান্তর আইনের ৫২ ধারা মোতাবেক মামলা চলাকালীন অবস্থায়
মামলার বিষযবস্তু অর্থাৎ যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ সে সম্পত্তি আদালতের অনুমতি ছাড়া হস্তান্তর করা যাবে
না।
২) ক্রোকাবদ্ধ সম্পত্তি: ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির ৬৪ ধারার বিধানানুসারে কোন সম্পত্তি আদালতের
নির্দে শে ক্রোকাবদ্ধ থাকিলে তা হস্তান্তর করা যায় না।
উপরে বর্ণিত বিধি নিষেধ আরোপিত সম্পত্তিসমূহ ছাড়া অন্য সকল সম্পত্তি এই আইন অনুসারে হস্তান্তর
করা যায়।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের আওতায় বিভিন্ন প্রকারের সম্পত্তি হস্তান্তর:
কেবলমাত্র পাঁচটি ক্ষেত্রে সম্পত্তি হস্তান্তর আইনটি প্রযোজ্য হইয়া থাকে। যাহা নি¤œ রুপ:
    বিক্রয়,
    রেহেন,
    ইজারা,
    দান ও
    বিনিময়
১৮৮২ সালরে সম্পতি হস্তান্তর আইনের উদ্দশ্যে সমুহঃ
১৮৮২ সালরে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন প্রণয়নরে পছিনে কি কারণ ছিল, সে সর্ম্পকে সম্পত্তি হস্তান্তর
আইনের প্রস্তাবনায় বা ভূ মকিায় ইঙ্গিতআছে,
এই আইনরে প্রস্তাবনায় বলা আছে পক্ষগণরে র্কায দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তর সর্ম্পকতি আইনরে কছিু অংশরে
সংজ্ঞা প্রদান এবং সংশোধন করার উদ্দশ্যেে এই আইন প্রণীত হয়েছে। প্রস্তাবনায় উল্লখেতি বষিয়টি ব্যাখ্যা-
বিশ্লেষণ ও গভীরভাবে র্পযালোচনা করলে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন প্রণয়নরে পছিনে আমরা নিম্নলিখিত উদ্দশ্যে
সমূহ আমরা দখেতে পাই—-
১) হস্তান্তর আইনরে কিছু অংশের সংজ্ঞা প্রদান ও সংশোধন,
২) পরিপূরক হিসাব
৩) পাঁচ প্রকারে হস্তান্তর র্কাযকর করা,
৪) সমন্বয় ঘটানো,
৫) জীবতি ব্যক্তি র্ক তৃ ক জীবতি ব্যক্তি বরাবর সম্পত্তি হস্তান্তর,
৬) স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর প্রভৃ তি।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ পাশ করার অন্যতম একটি উদ্দশ্যে হচ্ছে পাঁচ প্রকাররে হস্তান্তর র্কাযকর করা
যথাঃ
১) বিক্রয়ের মাধ্যমে হস্তান্তর,
২) বন্ধকের মাধ্যমে হস্তান্তর,
৩) ইজারার মাধ্যমে হস্তান্তর,
৪) দানের মাধ্যমে হস্তান্তর,
৫) বিনিময়ের মাধ্যমে হস্তান্তর

প্রশ্ন-২ চিরস্থায়ীত্বের (জঁ ষব ধমধরহংঃ ঢ়বৎঢ়বঃঁরঃু) বিরুদ্ধ নীতিটি ব্যাখ্যা কর। এই নীতির ব্যতিক্রম সমূহ
আলোচনা কর। এই নীতি কি স্থাবর ও অস্থাবর উভয় সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়? এর দ্বারা
উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধানের কোন পরিবর্ত ন হয় কি?
ভূ মিকা:
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে যে ধারাগুলো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভু মিকার অবতারন করেছে চিরস্থায়ীত্বের
(জঁ ষব ধমধরহংঃ ঢ়বৎঢ়বঃঁরঃু) বিরুদ্ধ নীতিটি উহাদের মধ্যে অন্যতম। এই নীতিটি প্রবর্ত নের সাথে সাথে
সম্পত্তি অবিরাম বন্দোবস্তু অবৈধ বলে বিঘোষিত হয়েছে তথা একটি ঐতিহাসিক নীতি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
চিরস্থায়ীত্বের (জঁ ষব ধমধরহংঃ ঢ়বৎঢ়বঃঁরঃু) বিরুদ্ধ নীতি:
সম্পত্তি সব সময় হস্তান্তরযোগ্য থাকবে-এটাই সাধারণ নিয়ম। কোন সম্পত্তির হস্তান্তর গ্রহীতা ঐ সম্পত্তিটি
পুন: হস্তান্তরের অধিকারসহ আইনত সবধরনের অধিকার ভোগ করবে এটাই স্বাভাবিক। কোন সম্পত্তি
অনির্ধারিত সময়ের জন্যে হস্তান্তরের অযোগ্য হয়ে থাকলে তা মানব জাতির অকল্যান বয়ে আনবে। কিন্তু
অজাত ব্যক্তির বরাবরে ভবিষ্যতে সম্পত্তি সৃষ্টি যখন স্বীকৃ তি লাভ করতে থাকে তখন একটা আশংকা
দেখা গেল যে,এভাবে অজাত ব্যক্তির বরাবরে একটি হস্তান্তরের দ্বারাই সম্পত্তিটি চিরন্তনভাবে একস্থানে আটকা
পড়তে পারে। ফলশ্রুতিতে জীবিত ব্যক্তির প্রয়োজনে জমি পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে।এরপ চিরস্থায়ীত্বের
বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ আরোপের উদ্দেশ্যে ১৪ ধারায় যে প্রবর্ত ন করা হয়েছে তাকে চিরস্থায়ীত্বের বিরুদ্ধে বিধি বলা
হয়।
এই ধারায় বলা হযেছে, কোন সম্পত্তি এমনভাবে হস্তান্তর করা যাবে না,যা হস্তান্তরের তারিখে জীবিত এক বা
একাধিক ব্যক্তির জীবনকাল এবং এরুপ জীবনকালের অব্যবহিত পর হতে অপর কোন ব্যক্তির নাবালক
অবস্থা অতিবাহিত হবার পরে বলবৎ হবে। জীবিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের জীবনকাল শেষ হবার সময় উক্ত
নাবালকের অস্তিত্ব থাকতে হবে এবং উক্ত নাবালক সাবালকত্ব অর্জ ন করা মাত্রই সৃষ্ট স্বার্থ তার উপর
বর্তাবে।
 এই বিধি অনুযায়ী কোন অস্তিত্বহীন ব্যক্তি বরাবরে সরাসরি কোন হস্তান্তরের অনুমতি দেয়া হয়নি। দুটি
শর্ত আরোপ করা হয়েছে-
১) প্রথমে এক বা একাধিক জীবিত ব্যক্তির অনুকূ লে জীবন স্বত্ব সৃষ্টি করতে হবে।
২) এই জীবন স্বত্ব এক বা একাধিক ব্যক্তির শেষ জনের জীবনকাল শেষ হবার পূর্বেই অজাত ব্যক্তির
জন্মলাভ করতে হবে,কমপক্ষে মাতৃ গর্ভে থাকতে হবে। অন্যথায উক্ত অজাত ব্যক্তির বরাবরে কোন হস্তান্তর
কার্যকর হবে না। এই নিয়মের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এই যে, হস্তান্তরের মাধ্যমে সৃষ্ট স্বত্ব বলবৎকরণ
চিরকালের জন্য স্থগিত করার সকল প্রচেষ্টা বাতিল বলে গণ্য হবে।
ব্যতিক্রম:
নিম্ন লিখিত ক্ষেত্রে চিরস্থায়ীত্বের বিধি প্রযোজ্য হবে না:
১) ব্যক্তিগত চু ক্তি:ব্যক্তিগত চু ক্তির ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য হবে না। কিন্তু চু ক্তি দ্বারা সম্পত্তিতে কোন
ইকু টেবল স্বার্থ সৃষ্টি করলে তবে অন্যরুপ হবে।
২) কল্যানমূখী হস্তান্তর:কল্যানমূখী কোন হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য হবে না। সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের
১৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, ধর্ম,জ্ঞান, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা মানবজাতির পক্ষে কল্যাণকর কোন কার্যের
অগ্রগতির জন্য জনসাধারণের স্বার্থে সম্পত্তি হস্তান্তর করা হলে, সে ক্ষেত্রে চিরস্থায়ীত্বের বিরুদ্ধ নীতি হবে না।
৩) ন্যাস্ত স্বার্থ:ন্যাস্ত স্বার্থের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
৪) ইজারা ক্ষেত্রে:একটি ইজারাকে চিরস্থায়ী হিসাবে অখ্যায়িত করে এতে যদিএই শর্ত রাখা হয় যে, ইজারায়
উল্লেখিত যে কোন সময় ইজারা দাতা ইজারার পরিসমাপ্তি ঘটাতে পারবে তবে তা চিরস্থায়ীত্বের বিরুদ্ধবিধিকে
ক্ষু ন্ন করবে না।
অথবা,ইজারায় এই শর্ত থাকে যে ইজারা গ্রহীতার ইচ্ছানুযায়ী ইজারা সময়ে সময়ে  নবায়ন করা যাবে তবে
তা চিরস্থায়ীত্বের  বিরুদ্ধবিধি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না।
৫) হস্তান্তর যোগ্য নয় এমন স্বার্থ:কোন হস্তান্তরকারী হস্তান্তর যোগ্য নয় এমন কোন স্বার্থ নিজের জন্য এবং
নিজের বংশধরদের জন্য যদি সংরক্ষিত রাখে এবং বংশধর না থাকলে তা তার নিজের কাছে ফিরে আসার
ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৬) কপোরেশনের হস্তান্তর:কর্পোরেশনের হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এ বিধি প্রযোজ্য হবে না।
৭) অগ্রক্রয়ের চু ক্তির ক্ষেত্রে এ বিধি প্রযোজ্য নয়।
এই নীতির উদ্দেশ্য:
ভবিষ্যৎ সম্পত্তির সৃষ্টি বা অজাত ব্যক্তির বরাবরে ভবিষ্যৎ সম্পত্তি সৃষ্টি কখন স্বীকৃ তি লাভ করতে থাকে
তখন দেখা গেল যে এর বিরুদ্ধে যদি কোন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা না যায় তাহলে এইভাবে অজাত ব্যক্তির
বরাবরে একটি হস্তান্তর দ্বারাই সম্পত্তি চিরন্ত্রনভাবে আটকা পড়ে যাবে ফলে জীবিত ব্যক্তির প্রয়োজনে জমি
পাওয়া যাবে না এরুপ পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য এই আইন ১৪ ধারায় চিরস্থায়ীত্বের বিধান করা হয়েছে।
স্থাবর ও অস্থাবর উভয় সম্পত্তির হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই বিধি প্রযোজ্য কিনা:
ভারতীয় আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই বিধি স্থাবর ও অস্থাবর  উভয় সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
[২০ বোম্বে ৫১১]
উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধানের কোন পরিবর্ত ন হবে কিনা:
উত্তরাধিকার আইন বা ঝঁপপবংংরড়হ ধপঃ এর ক্ষেত্রে এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। উত্তরাধিকার আইনের
ক্ষেত্রেও এই বিধি সমভাবে প্রযোজ্য হবে প্রতীয়মান হয়।
১৯২৫ সালের ঝঁপপবংংরড়হ ধপঃ ১১৪ ধারায় বলা হয়েছে যে, উইলকারীর মৃত্যুর পরে বা সময় জীবিত
একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর পরও যদি উইলকৃ ত সম্পত্তিতে অধিকার অর্জ ন বিলম্বিত হয়ে থাকে তাহলে সে
উইল বৈধ হবে না।
নজির-
ব্যক্তিগত চু ক্তির ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। তবে এক্ষেত্রে ইকু টেবল স্বার্থ সৃষ্টি হলে অন্যরুপ হবে। ৫৪
ধারা মতে, ভূ মি ক্রয়ের চু ক্তি কিংবা অত্র খরিদের চু ক্তি দ্বারা ভূ মিতে কোন স্বার্থের সৃষ্টি হবে না। অন্যদিকে
,এই  ১৪ ধারাকে স্বার্থ সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করা হয়েছে। তাই এই আইনের ৫৪ ধারা মতে চু ক্তির বেলায় 
১৪ ধারায় বর্ণিত অবিরাম হস্তান্তর নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। (অনফঁ ষ কঁ ফফঁং াং অহরলঁসধহ কযধঃঁহ 
উখজ ৩১২)
উপসংহার:
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, চিরস্থায়ীত্বের (জঁ ষব ধমধরহংঃ ঢ়বৎঢ়বঃঁরঃু) বিরুদ্ধ
নীতিটি সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী বৈপ্লবিক ও বলিষ্ট পদক্ষেপ।
প্রশ্ন-৩ নালিশ যোগ্য দাবি কি? এরুপ দাবি কিভাবে হস্তান্তর করা যায়? কে এরুপ দাবির হস্তান্তর গ্রহীতা হতে
পারে? কে পারে না? এরুপ দাবির হস্তান্তর গ্রহতিার অধিকার ও দায়দায়িত্ব আলোচনা কর।
ভূ মিকা:
নালিশযোগ্যদাবী সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে  একটি  বিশেষ উল্লেখযোগ্য অধ্যায়ের সুচনা করেছে। যে সকল
ঋণের উপর কোন জামানত নেই ,তার উপরে দাবীকে সহজভাষায় নালিশযোগ্যদাবী হিসেবে অভিহিত করা
হয়। এই প্রকার দাবীকে মোকদ্দমাযোগ্য দাবীও বলা যায়। নালিশযোগ্য দাবীর হস্তান্তর কিভাবে করা হয় এবং
হস্তান্তর করা হলে ইহা হস্তান্তরকারী, হস্তান্তর গ্রহীতা এবং সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির সাথে যুক্ত অন্য ব্যক্তির উপর কি
প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে তা আলাচনা বিষয়।
নালিশ যোগ্য দাবি:
যে সকল অধিকার প্রয়োগ দ্বারা দাবী করা যায় কিন্তু নিজ দখলে নেওয়া যায় না অথচ মামলার মাধ্যমে
প্রতিকার পাওয়া যায় তাকে নালিশ যোগ্য দাবী বলে। তবে ইহা দেওয়ানী আদালতে প্রতিকারের ভিত্তি
হিসেবে স্বীকৃ ত হয়।
সাধারণত মোকদ্দমাযোগ্য দাবীকেই নালিশ যোগ্য দাবী বলা যায়। সহজ ভাষায়, যে ঋণের পিছনে কোনরুপ
জামানত বর্ত মান নেই তার উপর দাবীকেই নালিশ যোগ্য দাবী বলে। আবার চু ক্তির ভিত্তিতে যে বস্তু কোন
ব্যক্তি পাবার অধিকারী হয় ,অনুরুপ চু ক্তির সুবিধাকেও নালিশযোগ্য দাবী বলা যায়।
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৩ ধারায নালিশযোগ্য দাবীর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। এই ধারায়
বলা হয়েছে যে,নালিশযোগ্য দাবী বলতে স্থাবর সম্পত্তির রেহেন দ্বারা বা অস্থাবর সম্পত্তি আটক রেখে প্রদত্ত
ঋণ ব্যতীত অন্যান্য ঋণের প্রতি দাবী অথবা দাবিদারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দখল নেই এরুপ কোন অস্থাবর
সম্পত্তির লাভ জনক স্বার্থের ক্ষতি বর্ত মান ,ভবিষ্যৎ বা শর্তাধীন বা ঘটনাধীন দাবীকে বুঝায় যা দেওয়ানী
আদালতে প্রতিকার যোগ্য।
উদাহরণ:
সাকিব সাফাতের কাছ থেকে ১লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করল। এই লেনদেনের ঋণের ক্ষেত্রে কোন জামানত
গ্রহণ করা হয় নাই বলে ইহা নালিশযোগ্য দাবী বলে গণ্য হবে কিন্তু এই ১ লক্ষ টাকা যদি সাকিব তার
একটি দোকান রেহেন রেখে গ্রহন করত তাহলে এই ঋণের জামানত থাকত বিধায় তা নালিশ যোগ্য দাবী
বলে গন্য হতো না।
অতএব নালিশযোগ্য বলতে সে সকল দাবীকেই বুঝায় যা আদালতের মাধ্যমে প্রতিকার যোগ্য এবং সম্পত্তি
হস্তান্তর আইনে হস্তান্তরযোগ্য।
এরুপ দাবি কিভাবে হস্তান্তর করা যায়:
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের নালিশযোগ্য দাবীর হস্তান্তর সম্পর্কে ১৩০ ধারায় বিধিবিধান বর্ণনা
করা হয়েছে। এই ধারা মতে, শুধু লিখিত দলিল সম্পাদন দ্বারা ইহা হস্তান্তর করা যায়। মূল্যের বিনিমযে হোক
বা বিনামূল্যে হোক এর জন্য লিখিত দলিল একান্ত প্রয়োজন। হস্তান্তর দলিলটিতে হস্তান্তরকারী নিজে বা তার
প্রতিনিধি কর্তৃ ক অবশ্যই স্বাক্ষরিত হতে হবে। নালিশযোগ্য দাবীর হস্তান্তর ব্যাপারে দেনাদারবেক কোন নোটিশ
দেবার প্রয়োজন  হয় না।
ইদ্রিস আলম বনাম হাজী মোহাম্মদ আলী মামলায় বলা হয় যে, এই ধারা মতে প্রত্যেক নালিশ যোগ্যদাবী
হস্তান্তর যোগ্য।{৪ বিসিআর(এডি)৩৯} তবে তা লিখিত দলিল দ্বারা হস্তান্তর করতে হবে।
আর নালিশযোগ্য দাবীর হস্তান্তর দলিলটি সম্পাদনের তারিখ হতেই কার্যকরী হবে, নোটিশ দেবার তারিখ হতে
কার্যকরী হবে না। আবার যে ক্ষেত্রে নালিশ যোগ্যদাবী পর পর কয়েকবার হস্তান্তর করা হয়ে থাকে; সে ক্ষেত্রে
হস্তান্তরের দলিল সম্পাদনের তারিখ অনুযায়ী ক্রমান্বয়ে তা কার্যকরী হবে।
এছাড়া,১৩০(২) ধারা অনুযায়ী কোন নালিশ যোগ্য দাবীর হস্তান্তর গ্রহীতা,হস্তান্তর সম্পর্কে উপরে উল্লেখিত
দলিল সম্পন্ন হবার পর উক্ত দাবী আদায়ের জন্য তার নিজ নামে মামলা দায়ের বা কর্মপন্থা গ্রহন করতে
পারবে এবং হস্তান্তরকারীর নিকট হতে অনুরুপ মামলার জন্য সম্মতি গ্রহন না করেই বা তাকে এ ব্যাপারে
পক্ষ না করেই তা করা হবে।
ব্যতিক্রম:
এ ধারার কোন বিধান জাহাজী বীমা পলিসি বা অগ্নিবীমা পলিসি (যা ১৯৩৮ সালের বীমা আইনের কোন
ধারাকে বিঘিœ ত করে তৎসম্পর্কে ) হস্তান্তর সম্পর্কে প্রযোজ্য হবে না।
উদাহরণ:ক,খ এর নিকট টাকা ঋণ করেছে। খ সেই ঋণ গ এর নিকট হস্তান্তর করেছে। খ অতপর ক এর
নিকট বর্ণিত ঋণের টাকা দাবী করল এবং ক ১৩১ ধারায় বর্ণিত বিধি মোতাবেক উক্ত হস্তান্তর সম্পর্কে
কোন প্রকার নোটিশ না পেয়ে খ কে ঋণের টাকা প্রদান করলে। উক্ত প্রদান বৈধ হবে এবং গ ঋণের
জন্য কোন মামলা দায়ের করতে পারবে না।
নালিশযোগ্য দাবী হস্তান্তরের ফলাফল/হস্তান্তর গ্রহীতার দায়:
হস্তান্তর আইনের ১৩০ ধারা মোতাবেক নালিশযোগ্য দাবী হস্তান্তরের পর হস্তান্তর গ্রহীতা হস্তান্তরকারীর স্থলাবর্তী
হয় এবং তার সমস্ত অধিকার ও প্রতিকার লাভ করে।এছাড়া হস্তান্তরকারীর বিনা অনুমতিতে এবং তাকে
পক্ষ না করে সে নিজের নামে মামলা দায়ের করে উক্ত দাবীর টাকা আদায় করতে পারে।
এরুপ হস্তান্তরের ফলে হস্তান্তর গ্রহীতার কিছু কর্ত ব্য সৃষ্টি হয়। হস্তান্তরের সময় হস্তান্তরকারীর যে সব দায় ও
ন্যায়নীতির অধীন ছিলেন হস্তান্তর গ্রহীতা সে সব দায় ও ন্যায়নীতির অধীন হবেন।
১৩৬ ধারার বিধান অনুসারে কোন বিচারক,আইনজীবী বা বিচারালয়ের কোন অফিসার কোন নালিশযোগ্যদাবী
খরিদ করতে পারবেন না। এ বিধান লংঘন করে যদি উপরিউক্ত কোন ব্যক্তি নালিশযোগ্য দাবী খরিদ করে
তবে আদালত এর প্রয়োগ বা কার্যকর করবে না।
এরুপ দাবির হস্তান্তর গ্রহীতার অধিকার ও দায়দায়িত্ব:
অধিকার:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১৩০ ধারা অনুযায়ী নালিশযোগ্য দাবীর হস্তান্তর গ্রহীতা হস্তান্তরের দলিল সম্পাদনের
পর হস্তান্তরকারীর স্থলাবর্তী হয় এবং হস্তান্তরকারীর বিনা অনুমতিতে এবং তাকে পক্ষ না করে সে নিজের
নামে মামলা দায়ের করে উক্ত দাবীর টাকা আদায় করতে পারে।
১) অধিকার ও প্রতিকার লাভ:এই প্রকার দাবী হস্তান্তরের ফলে হস্তান্তর গ্রহীতা হস্তান্তর দাতার স্থালাভিষিক্ত হন
এবং উক্ত হস্তান্তরের মাধ্যমে হস্তান্তর কারীর সকল অধিকার ও প্রতিকার বা প্রতিবিধান, ক্ষতিপূরণের আকারে
বা অন্য কোনভাবে হোক না কেন, হস্তান্তর গ্রহীতার উপর অর্পিত হবে।
২) জামিনদার দায়ী হয়:নালিশ যোগ্য দাবীর ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ঋণের কেহ জামিনদার থাকলে ,ঐ জামিনদার
হস্তান্তর গ্রহীতার নিকট দায়ী হয়।
৩) নোটিশ প্রদানের ক্ষেত্রে: ১৩০ ধারা অনুযায়ী হস্তান্তরের দলিল কার্যকরী হলেই হস্তান্তর গ্রহীতা স্বত্ব পেয়ে
যাবে; এজন্য তাকে কোন নোটিশ প্রদান করতে হবে না।
৪) মামলা দায়ের ও অব্যাহতি দেবার অধিকার: হস্তান্তর গ্রহীতার নিজের নামে মামলা করার অধিকার রয়েছে।
বৈধভাবে অব্যাহতি দেবার অধিকারও তার আছে।
৫) স্বত্বের ক্রটি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ না হবার অধিকার: নালিমযোগ্য দাবীর হস্তান্তর গ্রহীতা, হস্তান্তরকারীর স্বত্বের কোন
ক্রটি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। তাই এ অধিকার বলে সে উহা মুক্তভাবে গ্রহন করে থাকেন।
এরুপ দাবির হস্তান্তর গ্রহীতার দায়-দায়িত্ব:
১৩০ ধারা অনুসারে হস্তান্তরের নোটিশ না পাওয়া পর্যন্ত খাতক যদি পূর্ব মহাজনের সহিত কোন লেনদেন
করে তা হস্তান্তর গ্রহীতার উপর বাধ্যকর হবে।
১৩২ ধারায় বলা হয়েছে যে,নালিমযোগ্য দাবীর হস্তান্তরকারী হস্তান্তরের সময় যে সকল দায় ও ন্যায়নীতির দ্বারা
বাধ্য ছিল এর হস্তান্তর গ্রহীতাও সে সকল দায় ও ন্যায়নীতির দ্বারা বাধ্য থাকবে।
অতএব আমরা বলতে পারি যে, হস্তান্তরের সময় হস্তান্তরকারীর যে সকল দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট দাবীর সাথে
সংযুক্ত ছিল উহা দাবী গ্রহন করার সঙ্গে সঙ্গে হস্তান্তর গ্রহীতার উপর বর্তাবে।
উপসংহার:
উপরোক্ত আলোচনার আলোকে আমরা বলতে পারি যে,যে সকল ঋণের পিছনে কোন প্রকার জামানত নেই
, উহার দাবীকে অত্র আইন মোতাবেক নালিশযোগ্য দাবী হিসাবেও অভিহিত করা হয়। হস্তান্তর দলির
সম্পাদিত হবার পর হস্তান্তর দাতার সকল প্রকার অধিকার ও প্রতিকার হস্তান্তর গ্রহীতার বরাবরে অর্পিত হয়।
সাথে সাথে হস্তান্তর দাতার সমস্ত দায় ও বাধ্যবাধকতাও হস্তান্তর গ্রহীতার অনুকূ লে হস্তান্তরিত হয়।
নালিশযোগ্য দাবীর বৈশিষ্ট্য:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১৩০ ধারা অনুযায়ী কয়েকটি বৈশিষ্ট্য নি¤œ রুপ:
১) নালিমযোগ্য দাবীর জিনিস দাবীদারের দখলে থাকে না দেনাদারের দখলে থাকে।
২) নালিশ যোগ্য দাবীর কোন জামানত থাকে না।
৩) নালিশযোগ্য দাবী প্রয়োগ করা যায়।
৪) নালিশযোগ্য দাবী বর্ত মানে বা ভবিষ্যতে জন্মলাভ করতে পারে।
৫) নালিশযোগ্য দাবী শর্ত হীন বা কোন ঘটনার উপর নির্ভ রশীল বলে গন্য হতে পারে।
৬) নালিশযোগ্য দাবী দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে প্রতিকার যোগ্য।
৭) নালিশযোগ্য দাবী ১৮৭২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের আওতায় হস্তান্তর করা যায়।
৮) ১৩০ ধারা অনুযায়ী নালিশযোগ্য দাবী শুধুমাত্র লিখিত দলিলের মাধ্যমে হস্তান্তর করা যায় এই লিখিত
দলিলে হস্তান্তর কারী বা তার বৈধ প্রতিনিধি স্বাক্ষর করবেন।
৯) নালিশযোগ্য দাবী মূল্যের বিনিময়ে বা বিনামূল্যে হস্তান্তর করা যায়।
১০) নালিশযোগ্য দাবী হস্তান্তর কার্যকর হওয়ার জন্য দেনাদারকে নোটিশ দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
১১) নালিশযোগ্য দাবীর হস্তান্তর গ্রহীতা নিজ নামে মামলা দায়ের করতে পারে।
১২) নালিশযোগ্য দাবীর হস্তান্তর দলিলের অধিকারী হস্তান্তর গ্রহীতা হস্তান্তর কারীর শর্তে র কোন ক্রটি ক্ষতিগ্রস্থ
হয় না।
১৩) বিপরীত প্রমানের অভাবে আদালত ধরে নিবে যে, নালিশ যোগ্য দাবীর হস্তান্তর দলিলটি প্রতিদানের
বিনিময়ে তৈরী এবং গৃহীত হয়েছে।
১৪) নালিম যোগ্য দাবী ইংল্যান্ডের চু জেজ ইন এ্যাকশন থেকে অনেকাংশে সংকু চিত।

প্রশ্ন-৪
ক) ফিডিং দ্যা গ্রান্ট বাই এস্টোপেল(ঋববফরহম ঃযব মৎধহঃ নু ঊংঃড়ঢ়ঢ়বষ) নীতি উদাহরণ সহ আলোচনা
কর। এই নীতি আদালত কর্তৃ ক হস্তান্তরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না ? ব্যাখ্যা কর।
খ) সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে ৫৩(ক) ধারা একটি পরোক্ষইকু ইটি প্রত্যক্ষ ইকু ইটি নয় আলোচনা কর।
ফিডিং দ্যা গ্রান্ট বাই এস্টোপেল(ঋববফরহম ঃযব মৎধহঃ নু ঊংঃড়ঢ়ঢ়বষ)নীতি:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৪৩ ধারায় ফিডিং দ্যা গ্রান্ট বাই এস্টোপেল(ঋববফরহম ঃযব মৎধহঃ নু
ঊংঃড়ঢ়ঢ়বষ) নীতিটি বর্ণিত রয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে যে,যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি প্রবঞ্চনামূলকভাবে
অথবা ভু লক্রমে প্রকাশ করে যে, সে কোন একটি স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য ক্ষমতাবান এবং মূল্যের
বিনিময়ে তা হস্তান্তর করে সে ক্ষেত্রে পরবর্তীকালে এই চু ক্তি বহাল থাকার সময় সে যদি উক্ত সম্পত্তির
কোন স্বত্ব অর্জ ন করে থাকে, তাহলে গ্রহীতা দাবী করলে উক্ত হস্তান্তর তার এই পরবর্তী সময়ে অর্জি ত
স্বত্বের উপর বলবৎ হবে।
তবে গ্রহীতা তার উপযুক্ত দাবীর অধিকারের অস্তিত্ব সম্পর্কে অবহিত না থেকে সৎবিশ্বাসে মূল্য দিয়ে
সম্পত্তি ক্রয করলে এই ধারার কোন বিধান তার অধিকারকে ক্ষু ন্ন করবে না।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৪৩ ধারাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এই ধারায় হস্তান্তরের সময় স্বত্বহীন কিন্তু
পরবর্তীকালে স্বত্ব অর্জ নকারী ব্যক্তি কর্তৃ ক  হস্তান্তরের প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হয়েছে। এই ধারাটি ফিডিং দ্যা
গ্রান্ট বাই এস্টোপেল(ঋববফরহম ঃযব মৎধহঃ নু ঊংঃড়ঢ়ঢ়বষ) নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। উক্তনীতির মূলকথা
হলো এই যে, কোন ব্যক্তির চু ক্তি করার যোগ্যতা না থাকা স্বত্বেও যদি সে চু ক্তিতে আবদ্ধ হয় এবং পরবর্তী
সময়ে উক্ত চু ক্তি কার্যকরী করবার ক্ষমতা অর্জ ন করে তাহলে সে উক্ত চু ক্তি কার্যকর করতে বাধ্য থাকবে।
কারণ এরুপ চু ক্তি করার পর হস্তান্তরকারী এ যুক্তি দেখাতে পারেন যে, যখন সে তার সম্পত্তিটি হস্তান্তর
করেছিল তখন তার কোন স্বত্ব ছিল না, হস্তান্তরের পর সে হস্তান্তরিত সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জ ন করেছে।
এই নীতির মূখ্য উদ্দেশ্য এই যে, যেক্ষেত্রে হস্তান্তরদাতা সম্পত্তির হস্তান্তর করে থাকেন সেক্ষেত্রে হস্তান্তরদাতা
হস্তান্তর গ্রহীতাকে উক্ত সম্পত্তির সেই পরিমান দিতে একান্তভাবে বাধ্য থাকবে যেই পরিমান সম্পত্তি তার
বর্ত মানে আছে ও যে পরিমান সম্পত্তি সে ভবিষ্যতে অর্জ ন করবে। সংক্ষেপে যে ব্যক্তির যে সম্পত্তি নেই
তা সে হস্তান্তর করতে পারে না। আর হস্তান্তর দাতার স্বত্বধীনে তার না থাকা সম্পত্তি আসামাত্রই তা
মূল্যবান হয় এবং কার্যকারিতা লাভ করে  থাকে।
এই নীতির উদাহরণ:
নারদ নামক জনৈক হিন্দু তার পিতা কৃ ষ্ণের কাছ হতে পৃথক হয়ে বাস করার সময় চ,ছ ও জ নামক
তিনটি ক্ষেত ধীরেন এর কাছে বিক্রি করলো এবং বিক্রির পূর্বে প্রকাশ করলো যে, তার বিক্রি করার ক্ষমতা
আছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল যে নারদ জ ক্ষেতের মালিক নয় ,সম্পত্তি বাটোয়ার সময় তা নিতেশ এর
ভাগে পড়েছে। কিন্তু নিতেশ এর মৃত্যুর পরেও নারদ উত্তরাধিকারী হিসাবে জ নামক ক্ষেতটি লাভ করে।
তখন ধীরেন পূর্বের চু ক্তিটি বাতিল না করায় তাকে দেবার জন্যে নারদকে বাধ্য করতে পারবে।
উল্লেখ্য যে, ইংল্যান্ডে এই নীতিটি ফিডিং দ্যা গ্রান্ট বাই এস্টোপেল(ঋববফরহম ঃযব মৎধহঃ নু
ঊংঃড়ঢ়বষষ)নামে পরিচিত। অন্য কথায়, একেফিডিং এস্টোপেল বা ফরওয়াডিং অফ টাইটেল বাই
এস্টোপেলও বলে। সাক্ষ্য আইনের এস্টোপেল নীতির উপর এটা প্রতিষ্ঠিত বলে এরুপ নামকরণ হয়েছে।
এই নীতির মূল বক্তব্য হচ্ছেএই যে, হস্তান্তরকারী বলতে পারবে না যে, হস্তান্তরের সময় হস্তান্তরিত সম্পত্তিতে
তার কোন স্বত্ব ছিল না যদিও পরবর্তীকালে সেই সম্পত্তিতে সে স্বত্ব লাভ করেছে। স্বত্বের এরুপ ক্রটির
বিষয় উভয পক্ষের জানা থাকেলে এস্টোপেল নীতি প্রযোজ্য হবে না। কাজেই হস্তান্তরের কোন অধিকার নেই
এমন কোন ব্যক্তি কর্তৃ ক হস্তান্তরের সম্পত্তিতে কোন স্বার্থ লাভ করলে তা হস্তান্তর গ্রহীতার স্বার্থে ব্যবহার
করা যায়। আইনের নীতি হচ্ছে এই যে, যে ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির নিকট কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করে সে একথা
বলতে পারে না যে উক্ত সম্পত্তিতে হস্তান্তর গ্রহীতার কোন অধিকার নেই। এই নীতির সঙ্গে ১৮৭২ সনের
সাক্ষ্য আইনের ১১৫ ধারায় বর্ণিত এস্টোপল নীতির সাদৃশ্য রয়েছে।
মামলার সিন্ধান্ত:
ফিডিং দি গ্র্যান্ট বাই এস্টোপেল নীতি হইল, যদি কোন ব্রক্তি চু ক্তি কার্যকর করার ক্ষমতা না থাকা স্বত্বেও
কোন চু ক্তি কওে এবং পরবর্তীতে যদি উক্ত চু ক্তি কার্যকর করার ক্সমতা অজৃন কওে তবে সে চু ক্তি
কার্যকর করিতে বাধ্য থাকিবে। -গুরু নারায়ণ বনাম সেওলাল সিং ২৩ ঈডঘ ৫২১,৫২৩.
উপাদান:
এই নীতিটি প্রয়োগের জন্য নি¤œ লিখিত উপাদানগুলো থাকা প্রয়োজন:
ক) হস্তান্তরকারী ভু লক্রমে বা ইচ্ছাকৃ তভাবে ধারণা দেয় যে, সে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি হস্তান্তর করার অধিকার প্রাপ্ত।
খ) প্রতিদানের বিনিময়ে এই হস্তান্তর সম্পন্ন হযেছে। অর্থাৎ হস্তান্তর গ্রহীতা এই সম্পত্তির মূল্য হস্তান্তরকারীকে
প্রদান করেছে।
গ) প্রকৃ ত অবস্থা অর্থাৎ হস্তান্তরকারীর স্বত্বেও ক্রটির কথা হস্তান্তর গ্রহীতার অজানা ছিল।
ঘ) হস্তান্তরের সময় ঐ সম্পত্তিতে হস্তান্তরকারীর স্বত্ব না থাকলেও পরবর্তীকালে তার স্বত্ব অর্জি ত হয়েছে।
ঙ) স্বত্ব অর্জ নের সময় বিক্রয় চু ক্তিটি বলবৎ ছিল।
চ) হস্তান্তর গ্রহীতা ঐ সম্পত্তি পাবার জন্য দাবী করবে।
উপরোক্তভাবে এস্টোপেল নীতির উপাদানসমূহ আলোচনা করা যায়।
সীমাবদ্ধতা:
নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে হস্তান্তর গ্রহীতা এই নীতিটি প্রয়োগ করতে পারবে না:
১) হস্তান্তরের সময় হস্তান্তকারীর স্বত্ব সম্পর্কে প্রকৃ ত অবস্থা হস্তান্তর গ্রহীতার জানা থাকলে এই নীতিটি প্রযোজ্য
হবে না।
২) হস্তান্তরের সময় স্বত্ব না থাকলেও পরবর্তীকালে হস্তান্তরকারী তাতে স্বত্ব হতে হবে। পরবর্তীকালে ঐ
সম্পত্তিতে হস্তান্তরকারীর কোন স্বার্থ অর্জি ত না হলে এই নীতি প্রয়োগ করা যাবে না।
৩) হস্তান্তরকারীর সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিতে স্বত্ব অর্জি ত হবার সময় হস্তান্তরের চু ক্তিটি বলবৎ না থাকলে এই নীতি
প্রযোজ্য হবে না। আদালত কর্তৃ ক বা আপোষমূলে চু ক্তিটি পরিসমাপ্তি ঘটলে এ নীতি অপ্রয়োগযোগ্য হয়।
চু ক্তিটি নাকচ হবার পর হস্তান্তরকারীর স্বত্ব অর্জি ত হলেও হস্তান্তরগ্রহীতা আর সেই সম্পত্তি দাবী করতে
পারবে না।
৪) হস্তান্তরটি যদি আইনদ্বারা নিষিদ্ধ হয়ে থাকে কিংবা সরকারী নীতির বা জনস্বার্থের পরিপন্থি হয়ে থাকে তবে
এই নীতি প্রযোজ্য হবে না।
৫) হস্তান্তরটি প্রতিদানের বিনিময়ে হতে হবে। তাই দানের ক্ষেত্রে বা বিনামুল্যে সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এই
ধারাটি প্রযোজ্য হবে না।
৬) আদালত কর্তৃ ক বিক্রির ক্ষেত্রে এই ধারাটি প্রযোজ্য হবে না।
৭) এই ধারায় বর্ণিত প্রতিকার গ্রহীতার জন্য ঐচ্ছিক। সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির পরিবর্তে সে ক্ষতিপূরণ দাবী করতে
পারে। সেক্ষেত্রে এই ধারাটি প্রযোজ্য হবে না।
 আদালত কর্তৃ ক হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এস্টোপেল নীতির প্রযোজ্যতা:
 আদালত কর্তৃ ক বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৪৩ ধারায় বর্ণিত ঋববফরহম ঃযব মৎধহঃ নু
ঊংঃড়ঢ়ঢ়বষ নীতিটি প্রযোজ্য হইবে না।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৪৩ ধারা ডিাক্র জারি কেইসে বাধ্যতামুলক বিক্রযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নহে।
আদালত কর্তৃ ক ডিক্রিজারি মূলে কোন বিক্রি উক্ত ৪৩ ধারায় আওতায় আসে না।(প্রসন্ন কু মার বনাম
শ্রীকান্ত ৪০ ঈধষ.১৪৩)
একটি মামলার সিদ্ধান্ত হয যে, কোন সম্পত্তি নিলাম খরিদ্দারের বিরুদ্ধে পুর্ববতী হস্তান্তরগ্রহনকারী কোন
প্রতিকার পাবে না।(অলক মনি বনাম বানি মাধবওখজ,৪ ঈধষ.৬৭৭)
পরিশেেেষ উপরোক্ত আলোচনা হইতে বলা যায় যে, আদালত কর্তৃ ক হস্তান্তরের ক্ষেত্রে এস্টোপেল নীতি
প্রযোজ্য হইবে না।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে ৫৩(ক) ধারা একটি পরোক্ষ ইকু ইটি প্রত্যক্ষ ইকু ইটি নয়:
৫৩(ক) ধারায় যে অংশিক সম্পাদন নীতির প্রবর্ত ন করা হয়েছে তা একটা আত œ রক্ষামূলক ব্যবস্থা মাত্র।
এই ধারা বলে বাদী হয়ে মামলা করা যায় না। কিন্তু উচ্ছেদের মামলায় বিবাদী হিসেবে দখল রক্ষা করা যায়।
ইংল্যান্ডের একটা ভূ মি বিক্রীর চু ক্তি সম্পূর্ণ হবার সাথে ক্রেতা ঐ সম্পত্তির উপর ইকু ইটিগত
স্বার্থ(ঊয়ঁরঃধনষব জরমযঃ)অর্জ ন করে এবং সুনির্দি ষ্টভাবে চু ক্তি পালনের জন্য অপর পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা
করতে পারে। কিন্তু ৫৩(ক) ধারাটি প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের চু ক্তি থাকা এবং গ্রহীতা
সম্পত্তির দখলে থাকা সত্বেও সম্পত্তিতে তার স্বত্ব অর্জি ত হয় না। তবে এই ধারা বলে সে তার দখর
বহাল রাখতে পারবে। বিক্রেতা যদি দখলে থাকে ,তবে শুধু বিক্রয় চু ক্তির কারণে তাকে দখল চ্যুত করা
যাবে না। ইংল্যান্ডের প্রত্যক্ষ ইকু ইটির মত চু ক্তিটি সুনির্দি ষ্টভাবে পালন করার জন্য গ্রহীতা অত্র ধারায়
মামলা করতে পারবে না। যদিও ইকু ইটির নীতি মূলে তার অধিকার স্বীকৃ ত হয়েছে কিন্তু ইকু ইটির প্রত্যক্ষ
তৎপরতা এখানে অনুপস্থিত। তাই নিজ অধিকার বলে গ্রহীতা মামলা করতে পারে না।
বিক্রেতার অধিকার:
ন্যয়পর অধিকার (ঊয়ঁরঃধনষব জরমযঃ)
আইনগত অধিকার (খবমধষ জরমযঃ)
বায়নানামা করলে ক্রেতার নিকট ইকু টেবল রাইট চলে যায়।
পরোক্ষ ইকু ইটি প্রত্যক্ষ ইকু ইটি নয়
এ ধারা ঢাল স্বরুপ তরবারী স্বরুপ নয়
এটা আক্রমনমূলক নয় বরং আত œ রক্ষামূলক বা প্রতিরক্ষামূলক।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৩ ক ধারায় যে আংশিক সম্পাদনের নীতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে তাকে প্রত্যক্ষ
ইকু ইটি হিসাবে গণ্য করা যায় না,কারণ তা পরোক্ষ ইকু ইটির স্বরুপ মাত্র। এ নীতিটি একটি আত্নরক্ষমূলক
ব্যবস্থার প্রবর্ত ণ করেছে। এ প্রসঙ্গে ঠববৎধ জধমযধাধ জধড় াং এড়ঢ়ধষ জধড় মামলার সিন্ধান্তটি
উল্লেখযোগ্য।এই মামলার সিন্ধান্তে বলা হয়েছে যে,এই ধারা মতে বাদী হয়ে কোন মামলা দায়েরের সুযোগ
নেই। কিন্তু উচ্ছেদের মামলায় দখল রক্ষায় জন্যে বিবাদী হিসেবে মামলার অংশগ্রহন করা যায়।
ইংল্যান্ডের ইকু ইটি আইনের বিধান মোতাবেক কোন ভূ মি বিক্রয় চু ক্তি সম্পন্ন হওয়া মাত্রই ক্রেতা উক্ত
ভূ মিতে ইকু ইটিগত স্বার্থ অর্জ ন করে থাকে। এমনটি উক্ত চু ক্তিটি সুনির্দি ষ্ট কার্য সম্পাদনের জন্যে অন্য
পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। অন্যদিকে,আমাদের দেশে ৫৩ ক ধারাটি প্রযোগের বেলায়
সম্পত্তির বিক্রয চু ক্তি এবং উক্ত সম্পত্তিতে গ্রহীতা কোন স্বত্ব লাভ করে না। তবে এ ক্ষেত্রে গ্রহীতা তার
দখল বহাল রাখতে পারে।
কিন্তু উক্ত সম্পত্তির বিক্রেতা দখলে থাকলে শুধুমাত্র বিক্রি চু ক্তির কারণে বিক্রেতাকে দখলচ্যুত করা যাবে
না। এক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের প্রত্যক্ষ ইকু ইটির বিধান মোতাবেক চু ক্তির সুনির্দি ষ্ট কার্যসম্পদনের জন্য ৫৩ ক ধারা
মতে মামলা দায়েরের সুযোগ গ্রহীতার নেই। কারণ এখানে গ্রহীতার ইকু ইটিগত অধিকার আদায়ের জন্য
মামলা দায়ের করতে পারে না। তবে গ্রহীতা যদি চু ক্তিটির সুনির্দি ষ্ট কার্য সম্পাদন হবে এ প্রত্যাশায়
সম্পত্তির মূল্য সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিশোধ পূর্বক সম্পত্তির দখল গ্রহন করে থাকে তাহলে কেবলমাত্র
এরুপ ক্ষেত্রে ৫৩ ক ধারা মতে গ্রহীতা অনুরুপ অধিকার অক্ষু ন্ন রাখতে পারবে। এ প্রসঙ্গে এ হোসেন
সর্দার বনাম বাংলাদেশ সরকার মামলায় হাইকোর্ট বলেন যে, আইনসম্মত চু ক্তিমূলে সম্পত্তি দখল গ্রহন
করেছেন এরুপ কোন সম্পত্তির দখল গ্রহীতাকে তার দখল বেআইনি না হওয়া পর্যন্ত উচ্ছেদ করা যাবে না।
[১ বিবি ৪০৫]
ভবিষ্যতে চু ক্তিটির সুনির্দি ষ্ট সম্পাদন হবে এই প্রত্যাশায় যদি হস্তান্তর গ্রহীতা মূল্য সম্পূর্ণ বা আংশিক
পরিশোধ কওে এবং দখল নেয়,তবে এই ধারা বলে সে দখল বহাল রাখতে পারবে। মূল্য পরিশোধের জন্য
নির্ধারিত তারিখে যদি হস্তান্তরকারী মূল্র গ্রহণ কওে এবং হস্তান্তর গ্রহতিা যদি পূর্বেও মত দখল অব্রাহত রাখে
তবে এই ধারা বলে সে দখর সমুন্নত রাখার অধিকারহিয়। এ হোসেন সরদার বনাম বাংলাদেশ
সরকার{১বিসিআর ১৯৮,৪০৬]  মামলায় আদালত এই অভিমত ব্যক্ত করেন যে, চু ক্তির আংশিক সম্পাদনের
পর বিক্রেতা বা তার উত্তরাধিকারীদেরকে উক্ত সম্পত্তি নিয়ে কারবার করতে দেয়া যায না, যদি ক্রেতা
চু ক্তিতে তার কর্ত ব্য পালন করে এবং চু ক্তিমূলে দখল নেয়।
এমএ ইস্পাহানী লি: বনাম ডেপুটি কাস্টোডিয়ান অব এনিমি প্রপার্টি [২০ ডিএল আর (ঢাকা) ৪৯৩] মামলায়
আদালত সিন্ধান্ত দেন যে,আইন সঙ্গত চু ক্তিমূলে দখলে আছে এমন কোন দখলকারীকে উচ্ছেদ করা যাবে
না,যতক্ষন না তার দখল বেআইনি হয়। অবশ্য যদি চু ক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যায় কিংবা চু ক্তির পরিসমাপ্তি
ঘটে তবে গ্রহীতা সম্পত্তির দখলে থাকলেও এই ধারার সুযোগ সে গ্রহ করতে পারবে না।চু ক্তির
পরিসমাপ্তির পর এবং এ চু ক্তির কথা জেনেও যদি উক্ত সম্পত্তি খরিদ কওে তবে ৫৩(ক) ধারার অনুবিধির
শর্ত সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
এসকল কারণে বলা যায় যে,৫৩(ক) ধারাটি  যদিও ইকু ইটি নীতি হতে সংগ্রহীত হয়েছে তবুও এটা প্রত্যক্ষ
ইকু ইটি নয়,পরোক্ষ ইকু ইটি মাত্র।
যেহেত’ এই নীতিটি একটা আত œ রক্ষামূলক ব্যবস্থা মাত্র;সেহেতু বলা যায় যে,এটা ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত
হতে পারে, তরবারী হিসেবে নয়।

প্রশ্ন-৫
ক) কভিনেন্ট কি? বিধিনিষেধ আরোপিত না সূচক কভিনেন্ট বলতে কি বুঝায়? ভূ মির সাথে দৌড়ায় বা
ধাপমান এমন কভিনেন্ট গুলো কি কি?
খ) অনারাস দান কি? কিভাবে অনারস দান গ্রহন ও বর্জ ন করা যায়?
কাভিন্যান্ট শব্দের অর্থ হইল শর্ত বা চু ক্তি। ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১১ ধারা ও ৪০ ধারায়
কাভিন্যান্ট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হইয়াছে।
কাভিন্যান্ট (ঈড়াবহধহঃং):
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের বিধান মোতাবেক চু ক্তিভূ ক্ত পক্ষগনের মধ্যে কোন বিনিময় গ্রহনের মাধ্যমে যদি
এমন মতৈক্য সৃষ্টি হয় যা আইন দ্বারা বলবৎযোগ্য তাহলে তাকেই ক্যাভিন্যান্টস বলে। কিন্তু অনুরুপ মতৈক্য
বে-আইনি বা নৈতিকতা বিরোধী হতে পারবে না। তাবে অনুরুপ মতৈক্য পক্ষদ্বয়ের প্রস্তাব প্রদান এবং
গ্রহনের মাধ্যমে গড়ে উঠতে হবে।
কাভিন্যান্ট এর প্রকারভেদ:
কভিনেন্ট সাধারনত দুই প্রকার-
১) হ্যাঁ-সূচক  কাভিন্যান্ট; এবং
২) না-সূচক কাবিন্যান্ট
না-সূচক কাভিন্যান্ট:
হস্তান্তরকৃ ত স্থাবর সম্পত্তি ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপিত শর্ত কে না-সূচক কভেন্যান্ট বলে। এই ধরনের শর্ত
সম্পত্তির মালিকের সম্পত্তি ব্যবহারে বা ভোগের অধিকার সীমিত করতে পারে। না সূচক কাভিন্যান্ট আবার
দুইভাগে বিভক্ত; যেমন:
ক) ভূ মির সঙ্গে ধাবমান নহে এমন কাভিন্যান্ট;এবং
খ)ভূ মির সঙ্গে ধাবমান কাভিন্যান্টস;

ক) ভূ মির সঙ্গে ধাবমান নয় এমন: বিধি নিষেধ আরোপিত না সূচক ক্যাভিন্যান্ট বা ভূ মির সঙ্গে ধাপমান হয়
না এরুপ কভিনেন্ট দুই প্রকার হতে পারে।
১) ন্যায়পরতা অনুযায়ী
২) আইনের বিধান অনুযায়ী।
আইন অনুসারে নৈতিক শর্ত ব্যবহারের উপর এটা অর্পিত হয়। একে বিধি নিষেধ আরোপিত না সূচক শর্ত
বলে। এরুপ শর্ত সম্পত্তির ব্যবহার বা ভোগের অধিকার সীমিত তাই এগুলি নেতিবাচকভাবে সম্পত্তির
সাথে ধাবমান হয়। এই নেতিবাচক ধাবমান কভিনেন্ট গুলো সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৪০ ধারায় বিবৃত
হয়েছে। এই কভিনেন্ট গুলি সকল ক্ষেত্রে ভূ মির সাথে ধাবমান হয় না এবং সকল ক্ষেত্রে পরবর্তী ক্রেতার
উপর বাধ্যকর হয় না। বাধাসূচক এই শর্ত গুলি সকলের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায় না। অন্যান্য শর্তে র ন্যায়
বাধাসূচক শর্ত গুলি তত গুরুত্বপূণ নয় কাজেই ইহা ন্যায়পর বলে বিবেচিত হয়েছে যে ,এগুলিকে শুধুমাত্র
জ্ঞাত ক্রেতা বা বিনামূল্যে হস্তান্তর গ্রহীতার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা উচিৎ। এই শর্ত বা কভিনেন্ট গুলি
সম্পত্তির উন্নয়ন ও সম্পত্তির সুবিধাজনক ভোগের জন্য প্রয়োজনীয় বলে সার্বজনীনভাবে স্বীকৃ তি লাভ
করেছে বিধায় এগুলিকে রক্ষায় ৪০ ধারার উদ্দেশ্য। বাধাসূচক কভিনেন্ট ভূ মির ব্যবহারের উপর বাধা
আরোপকারী কভিনেন্ট ৪০ ধারার ১ম অনুচ্ছেদে আলোচিত শর্ত বা চু ক্তি কভিনেন্ট বাধাসূচক এবং ইহা
তৃ তীয় ব্যক্তির নিজের স্থাবর সম্পত্তি উপভোগ করার জন্য অন্যের স্থাবর সম্পত্তিতে যাতে তার কোন স্বার্থ
নেই বা যার উপর তার কোন ব্যবহার শর্ত নেই তৃ তীয় ব্যক্তি কর্তৃ ক নির্দি ষ্টভাবে ভোগের উপর বাধা
আরোপ করা হয়। স্থাবর সম্পত্তির উপর এরুপ বাধা আরোপের অধিকার শুধু মাত্র জ্ঞাত ক্রেতা এবং
বিনামূল্যে হস্তান্তর গ্রহীতার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায়। ৪০ ধারার শেষ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, উক্ত
অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞাত মূল্যের হস্তান্তর গ্রহীতার বিরুদ্ধে তা প্রয়োগ করা যাবে না।
উদাহরণ:
ক ২৯,৩০ নম্বর দাগের মালিক সে ২৯ দাগ নম্বরের জমি এই শর্তে খ এর নিকট বিক্রি করল এই ভূ মির
২৯ দাগ নম্বরের কিছু জমি খোলা রাখবে এবং কোন দালান কোঠা নির্মান করতে পারবে না। খ ২৯ দাগ
নম্বরের জমি গ এবং ৩০ দাগ নম্বরের জমি ঙ এর নিকট বিক্রি করল খ বা গ উক্ত ভূ মিতে দালান
নির্মানের উদ্যোগ নিলে ক বা ঙ তা প্রতিরোধ করতে পারবে কিনা তা এখন বিবেচ্য বিষয়।
সমাধান:
২৯ দাগের কিছু অংশ খোলা রাখার জন্য ক,খ এর উপর যে শর্ত আরোপ করেছিল তা সম্পত্তি হস্তান্তর
আইনে ১১ ও ৪০ ধারা অনুসারে সিদ্ধ ছিল কাজেই ক, খ কে উক্ত নির্মান কার্য হতে বিরত রাখতে পারে।
এই শর্তে র কথা জেনেও যদি গ ২৯ দাগের জমি কেনে তবে ক,গ কেও নির্মান কার্য হতে বিরত রাখতে
পারে। এরপর ক ৩০ নম্বর দাগের জমি ঙ এর নিকট বিক্রয় করলে ঙ ও এ অধিকার প্রয়োগ করতে
পারবে। কিন্তু এরুপ শর্তে র কথা না জেনে এবং মূল্যের বিনিময়ে গ ২৯ দাগের জমি কিনে থাকলে ক বা
ঙ কেই গ কে নির্মান কার্য হতে বিরত রাখতে পারবে না। কারণ ৪০ ধারা অনুসারে এ ধরনের শর্ত সকল
ক্ষেত্রে ভূ মির সঙ্গে দৌড়ায় না। ইহা আইনগত শর্ত নহে ন্যায়পর শর্ত কাজেই এই ধরনের শর্ত জ্ঞাতসারে
বা বিনা মূল্যে গ্রহীতার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায়। অন অবগতিতে ও মূল্যের বিনিময়ে ক্রেতার বিরুদ্ধে
প্রয়োগ করা যায় না।
ধাপমান কভিন্যান্ট বা ভূ মির সাথে দৌড়ায় এমন কভিনেন্ট:
ভূ মির সঙ্গে ধাবমান ক্যাভিন্যান্ট বা শর্ত সমূহ তাদের গুরুত্বগতকারণে যে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আরোপ করা
যায়। এই অধিকার সমূহ রাইট ইন রেম নামে পরিচিত।
সকল চু ক্তির ন্যায় সম্পত্তি হস্তান্তর চু ক্তিতেও কতিপয় শর্ত থাকে ব্যক্ত বা স্পষ্ট আর কতিপয় শর্ত থাকে
অব্যক্ত বা মৌন। আইনে স্বীকৃ ত মৌন শর্ত গুলি পক্ষগনের উপর অবশ্যই কার্যকর হবে এবং এগুলি
সম্পত্তির সাথে ধাবমান হবে।
উদাহরণ-
ক) স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির ক্ষেত্রে ৫৫(২) ধারা অনুযায়ী এটা ধরে নেওয়া হয় যে, বিক্রয়ের সময় বিক্রেতার ঐ
সম্পত্তি বিক্রয়ের অধিকার ছিল।
খ) রেহেন এর ক্ষেত্রে ৬৫ ধারা অনুসারে ধরে নেওয়া হয় যে রেহেন দাতা রেহেন সম্পত্তির মালিক।
গ) তেমনি ইজারার ক্ষেত্রেও ইজারা দাতা ও ইজারাগ্রহীতার উপর কতিপয় দায় দায়িত্ব থাকে যেগুলি চু ক্তিতে
উল্লেখ না থাকলেও উভয় পক্ষই তা অনুসরণ করতে বাধ্য এগুলি সব সম্পত্তির সাথে ধাবমান।[ধারা-
১০৮(গ)]
জমির স্বত্ব বা লাভ প্রাপ্তির অধিকার গ্রহতিার উপর বর্তায়,আর সেই স্বত্ব নির্বিঘ œ করার দায়িত্ব দাতা পক্ষের
উপর বর্তায়। বিক্রয়, রেহেন,ইজারা করা হলে এর সুবিধা গ্রহনের অধিকার ভূ মির হস্তান্তর গ্রহীতার কাচে
ধাবিত হয়। তখন বরা হয় যে,শর্ত বা চু ক্তি ভূ মির সাথে দৌড়ায়।
ভু মির সাথে ধাবমান শর্ত গুলি আবার দুই ভাগে বিভক্ত
ক) আইনগত শর্ত
খ) নৈতিক শর্ত
ক) আইনগত শর্ত :
যেসব ভূ মির শর্ত বা ঞরঃষব বা লাভ প্রাপ্তির অধিকার হস্তান্তর গ্রহীতার উপর বর্তায়। এইশর্ত বা লাভ
নির্বিঘ œ করার দায়িত্ব হস্তান্তরকারীর উপর বর্তায়। বিক্রয়,রেহেন বা ইজারা যখন করা হয় তখন এর সুযোগ
গ্রহনের অধিকার ভূ মির হস্তান্তর গ্রহীতার নিকট ধাবিত হয়,তখন বলা হয় যে,শর্ত বা চু ক্তি ভূ মির সঙ্গে
দৌড়ায়।
খ) নৈতিক শর্ত :
ব্যবহারের অধিকারকে অর্জি ত শর্ত বা চু ক্তিকে বিধি নিষেধ আরোপিত না সূচক শর্ত বলা হয়।
টাল্ক বনাম মকহে মামলায় ইংল্যান্ডে এইনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ক্রেতা চু ক্তি করেছিল যে, কৃ ত জমিতে সে
কোন বাড়ী নির্মান করবে না, কিছুদিন পর সে ঐ জমিতে বাড়ী নির্মান করতে চাইলে আদালতে তাকে বাধা
দেয় একে এক প্রকারের স্টোপেল বলা যেতে পারে। এরুপ শর্ত বা চু ক্তি সকল ক্ষেত্রে সম্পত্তির সাথে
ধাবমান হয় না বা দৌড়ায় না।

খ) অনারাস দান:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১২৭ ধারা মোতাবেক, যদি একই সময়ে একই দলিলে একই ব্যক্তির অনুকূ লে বিভিন্ন
সম্পত্তি দানসূত্রে হস্তান্তর করা হয় এবং সেগুলোর মধ্যে কোন একটি দায়বদ্ধ থাকে,তাহলে দানগ্রহীতা
উক্তদানটি সম্পূর্ণ গ্রহণ না করলে অনুরুপ দানের কিছুই সে পাবে না। আর একেই অনারাস দান বা
দায়যুক্ত দান বলে।
এই ধারাটির মূলকথা হলো, দানমূলে একই হস্তান্তরের কিছু গ্রহণ আর কিছু বর্জ ন করা চলবে না। দানটি
সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করতে হবে। নতু বা সম্পূর্ণভাবে বর্জ ন করতে হবে।
গ্রহীতা দানকৃ ত যে সম্পত্তি লাভজনক তা গ্রহন করবে আর যে সম্পত্তি ক্ষতিকর তা বর্জ ণ করবে,এটা
আইনত মেনে নেওয়া যায় না। যেমন-রহিম তার সম্পত্তিটি করিমের অনুকূ লে দান করে এবং এ সম্পত্তিটি
বন্ধক রেখে রহিম জমিরের কাছ থেকে দশহাজার (১০০০০) টাকা এক বছরপূর্বে ঋণ নিয়েছিল। এক্ষেত্রে
রহিমের ঋণ নেওয়া দশ হাজার টাকার দায়ও করিমকে গ্রহণ করতে হবে।
কিন্তু একই ব্যক্তির বরাবরে ভিন্ন ভিন্ন দলিলে ভিন্ন ভিন্ন সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয়, তাহলে দান গ্রহীতা নিজ
নিজ ইচ্ছানুযায়ী ঐগুলির মধ্যে যে কোনটি গ্রহন কওে অন্যগুলি বজৃন করতে পারে।
যদি চু ক্তিতে আবদ্ধ হবার অযোগ্য কোন ব্যক্তি দায়যুক্ত দ্রব্যের দান গ্রহন করে, তাহলে সে উক্ত গ্রহনের
ফলে দায়বদ্ধ দ্রব্যের দায়-দায়িত্ব দ্বারা বাধ্য থাকবে না। তবে চু ক্তি করার যোগ্যতা অর্জ নের পর উক্ত ব্যক্তি
যদি অনুরুপ দায়মুক্ত দানের দায় দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত হয়ে দানটি গ্রহন করে থাকেন তাহলে দায়বদ্ধ দ্রব্যের
দায়-দায়িত্ব বহনে তিনি বাধ্য থাকবেন।
প্রশ্ন-৬ মার্শালিং এবং কন্ট্রিবউশন এর সংজ্ঞা দাও ও ব্যাখ্যা কর। মার্শালিং এবং কন্ট্রিবউশন এর মধ্যে
বিরোধ দেখা দিলে কোনটি বলবৎ থাকে? আলোচনা কর।
মার্শালিং:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে মার্শালিং নীতি বা বিন্যাসের নীতি বলতে পরবর্তী কোন ক্রেতা বা রেহেন গ্রহীতা
কর্তৃ ক প্রাপ্ত অধিকারকে বুঝায়। এই নীতিটি একমাত্র বিক্রয় বা রেহেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। সম্পত্তি
হস্তান্তর আইনের ৫৬ ধারায় বিক্রযের ক্ষেত্রে এবং ৮১ ধারায় রেহেনের ক্ষেত্রে বিন্যাসের নীতি বর্ণনা করা
হয়েছে।
৫৬ ধারায় বলা হয়েছে যে,যদি দুই বা ততোধিক সম্পত্তির মালিক এগুলি কোন এক ব্যক্তির নিকট রেহেন
দেয় এবং পরে এ সম্পত্তি হতে এক বা একাধিক সম্পত্তি অন্য কারো নিকট বিক্রি করে,তবে বিপরীত
চু ক্তির অবর্ত মানে ক্রেতা যে সম্পত্তি তার নিকট বিক্রি করা হয়নি, তা হতে যতদুর সম্ভব রেহেনের টাকা
আদায় করার জন্য রেহেন গ্রহীতাকে বাধ্য করতে পারে। কিন্তু শর্ত থাকে যে,তা দ্বারা কোন রেহেন গ্রহীতা বা
তার মাধ্যমে দাবিদার অন্য কোন লোকের অধিকার অথবা মূল্যের বিনিময়ে উক্ত সম্পত্তির কোন একটিতে
কোন ব্যক্তির অর্জি ত স্বার্থ ক্ষু ন্ন করা যাবে না।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৮১ ধারায় মার্শালিং এর নীতির ব্যখ্যা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে যে,দুই বা ততোধিক
সংখ্যক সম্পত্তির মালিক যদি এগুলি একজনের নিকট রেহেন দেন এবং পরে সেগুলির মধ্য হতে কোন
সম্পত্তি অপর একজনের নিকট রেহেন দেয়, তবে বিপরীত চু ক্তির অবর্ত মানে দ্বিতীয় রেহেন গ্রহীতা তার
নিকট যে সম্পত্তি রেহেন দেয়া হয়নি,তা হতে প্রথম রেহেন গ্রহীতার পাওনা যতদূর সম্ভব আদায়  করে
নেয়ার দাবী করতে পারে। কিন্তু এরুপ দাবী প্রথম রেহেন গ্রহীতা বা উক্ত সম্পত্তিগুলির কোন একটিতে
মূল্যের বিনিময়ে স্বার্থপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির অধিকারকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারবে না।
উদাহরণ: ক তার দুটি সম্পত্তি চও ছ খ এর নিকট রেহেন দিল। তার পর আবার টাকার প্রযোজনে তার
ছ সম্পত্তিটি গ এর নিকট রেহেন দিল।এমতাবস্থায় ক যদি খ ও গ এর পাওনা পরিশোধ না করে তবে
তারা কোর্টে র মাধ্যমে ফোরক্লোজ করে সম্পত্তিগুলি বিক্রি করতে পারে।
ধরাযাক,খ তার পাওনা আদায়ের জন্য মামলা করলো এবং ডিক্রি পেল, খ এর নিকট জামানত রয়েছে চ
ও ছ সম্পত্তি। এই দু’টি সম্পত্তির মধ্যে একটি বিক্রি তার টাকা উদ্ধার করার জন্য আদালতের নিকট
আবেদন করলো। কিন্তু গ এর নিকট রেহেনের একমাত্র জামানত ছ সম্পত্তি।
এমতাবস্থায় যদি ক কে ছ সম্পত্তিটি বিক্রি করে তার টাকা উদ্ধার করতে অনুমতি দেয়া হয়, তাহলে গ এর
নিকট কোন জামানত থাকে না, অথচ ক এর নিকট চ সম্পত্তিটি তখনো থেকে যায়। এরুপ করা হলে
দ্বিতীয় রেহেন গ্রহীতা গ এর স্বার্থের ক্ষতি হয়। এসকল অবস্থা দুর করার উদ্দেশ্যে মার্শালিং নীতির প্রবর্ত ন
করা হয়েছে। এই নীতির বলে গ প্রথমে চ সম্পত্তিটি বিক্রি করার ব্যাপারে প্রথম রেহেন গ্রহীতা খ কে বাধ্য
করতে পারে। ঐ সম্পত্তি বিক্রি করে খ এর পাওনা আদায় হয়ে গেলে ছ সম্পত্তিটি গ এর নিকট থেকে
যাবে। আর পাওনা পরিশোধ হলে খ তখন ছ সম্পত্তিটি বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারবে। এটা বিক্রি করে খ
এর পাওনা পরিশোধের পর যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে তবে তা গ এর পাওনা পরিশোধে ব্যবহার করা হবে।
একে বলে মার্শালিং বা জামানত বিন্যাস।
কন্ট্রিবিউশন:
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৮২ ধারায় বলা হয়েছে যে,
যে ক্ষেত্রে রেহেন সম্পত্তি দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন থাকে এবং ঐ সম্পত্তিতে শরীকগনের
পৃথক পৃথক স্পষ্ট স্বত্ব থাকে, সেক্ষেত্রে তারা আনুপাতিক হারে রেহেন দেনা পরিশোধের জন্য দায়ী হয় এবং
বিপরীত কোন চু ক্তি না থাকলে এবং কি হারে তারা নিজ নিজ অংশ আদায় করবে সে সম্পর্কে প্রশ্ন
উত্থাপিত হলে,পরবর্তী সকল দায় পরিশোধের পর রেহেনর তারিখে প্রত্যকটি অংশের যে মুল্য হবে তার
ভিত্তিতে ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে শরীকগনের অংশ নির্ধারিত হবে।
আরো বলা হয়েছে যে,
যখন দুই সম্পত্তির মালিক একই ব্যক্তি, একটি সম্পত্তি একজনের কাছে রেহেন দেয় এবং পরে দুইটি
সম্পত্তি অন্য একজনের কাছে রেহেন দেয় এবং প্রথম দেনা প্রথম সম্পত্তি হতে পরিশোধ করা হয় তখন
বিপরীত কোন চু ক্তি না থাকলে উভয় সম্পত্তি হারাহারিভাবে দ্বিতীয় দেনা পরিশোধ করবার জন্য দায়ী হবে,
তবে প্রথম সম্পত্তি মূল্য নির্ণয়ে তার উপর হতে যে টাকা প্রথম দেনা শোধ করতে ব্যয় হয়েছে তা বাদ
দিতে হবে।
৮১ ধারা অনুসারে যে সম্পত্তিতে পরবর্তী রেহেন গ্রহীতার দাবী থাকবে তার প্রতি এই ধারার কোন বিধান
প্রযোজ্য হবে না।
উদাহরণ:ক ও খ এর দু’টি সম্পত্তি প্রত্যেকটির জন্য সমপরিমান ঋণের জন্য চ এর নিকট রেহেন দেয়।
পরে আবার ছও জ এর নিকট দেয়। এ পরিস্থিতিতে খ এর দেনা পরিশোধ না করে ক এর সমূদয়
সম্পত্তি চ গ্রহন করে অর্থ প্রদান করলে ছ ও জ এর অসুবিধা জনক হবে। চ এর এরুপ নির্বাচন
আইনের দৃষ্টিতে গ্রহনযোগ্য নয়। এরুপ ক্ষেত্রে ক ও খ এর দুটি সম্পত্তি হতে চ কে তার দায় গ্রহন
করতে হবে।
মার্শালিং ও কন্ট্রিবিউশনের মধ্যে বিরোধ:
উপরোক্ত মতবাদের মধ্যে বিরোধ বাধলে কি পরিনতি হবে- সে সম্পর্কে আলোচনা করতে হলে কন্ট্রিবিউশন
নীতি সম্পর্কে অলোচনা করা প্রয়োজন। সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৮২ ধারায় কন্ট্রিবিউশন এর নীতি
আলোচনা করা হয়েছে। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে যে, যে ক্ষেত্রে কোন এজমালী সম্পত্তি রেহেন দেয়া হয়
এবং উহাতে শরীকগণ পৃথক পৃথক স্বত্ব থাকে, তখন তারা আনুপাতিক হারে রেহেন এর জন্য দায়ী হয়
এবং সেক্ষেত্রে বিপরীত কোন চু ক্তি না থাকলে এবং কিহারে তারা নিজ নিজ দায় পরিশোধ করবে সে
সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপিত হলে, পূর্ববর্তী সকল দায় পরিশোধের পর রেহেনের তারিখে প্রত্যেকটি অংশের যে
মূল্য হবে, তার ভিত্তিতেই ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে শরিকগনের অংশ নির্ধারিত হবে।
যে ক্ষেত্রে দুই সম্পত্তির মালিক একটি সম্পত্তি একজনের নিকট রেহেন দেয় এবং পরে দুইটি সম্পত্তি
অপর একজনের নিকট রেহেন দেয় এবং প্রথম দেনা প্রথম সম্পত্তি হতে পরিশোধ করা হয়, তখন বিপরীত
কোন চু ক্তি না থাকলে প্রথম সম্পত্তি হতে প্রথম দেনা পরিশোধের পর উভয় সম্পত্তি হতেই আনুপাতিক
হারে দ্বিতীয় দেনা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু অত্র আইনের ৮১ ধারা অনুসারে যে সম্পত্তিতে পরবর্তী
রেহেন দাতার দাবী থাকবে তার প্রতি এই ধারার কোন বিধান প্রযোজ্য হবে না।
মার্শালিং ও কন্ট্রিবিউশনের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে মার্শালিং নীতি বলবৎ থাকবে, কেনানা ৮২ ধারায় বলা
হয়েছে যে, কন্ট্রিবিউশনের অধিকার মার্শালিং নীতির শর্তাধীন।
ডযবৎব গধৎংযধষষরহম ধহফ ঈড়হঃৎরনঁঃরড়হ সরমযঃ পড়হভষরপঃ রিঃয বধপয ড়ঃযবৎ, গধৎংযধষষধরহম
রং ঃড় ঢ়ৎবাধরষ.অর্থাৎ কোন ক্ষেত্রে মার্শালিং নীতি এবং কন্ট্রিবিউশন নীতির মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে
,মার্শালিং নীতি প্রধান্য লাভ করবে।
উপসংহার:
মার্শালিং মতবাদের সংজ্ঞা, বিশ্লেষন, উপাদান এবং কন্ট্রিবিউশন নীতির সাথে সংঘাত তথা ইহার পরিনতি
আলোচনা করে উপসংহারে আমারা বলতে পারি যে, মার্শেলিং নীতির প্রয়োগের মাধ্যমে পরবর্তী ক্রেতা ও
পরবর্তী রেহেন গ্রহীতার অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং কন্ট্রিবিউশন নীতির সাথে ইহারা বিরোধের
ক্ষেত্রে ইহার অর্থাৎ মার্শালিং মতবাদের প্রধান্য প্রকাশ পেয়েছে।

প্রশ্ন-৭ রিডেমশন বা রেহেন মুক্ত করার অধিকারের প্রকৃ তি কি? কে রেহেন মুক্তকরণ করতে পারেন? কখন
রেহেন মুক্ত করার অধিকার প্রয়োগ করা যায়? বাংলাদেশী রেহেন মুক্তকরণ আইনের সাথে ইংলিশ রেহেনমুক্ত
আইনের পার্থক্য নির্দে শ কর।
রেহেন মুক্ত করার অধিকারের প্রকৃ তি কি:
১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের রেহেন সম্পর্কীয় বিধানাবলীর মধ্যে রেহেন মুক্তকরণ সম্পর্কীয়
বিধানাবরী অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ণ। রেহেন মুক্ত করার অধিকার আছে আছে বলেই রেহেন দাতা তার রেহেন
সম্পত্তি মুক্ত করতে পারেন।যতদিন রেহেন থাকবে,ততদিন সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি উদ্ধারের অধিকার থাকবে।এই মূল
তত্ত্বটি ” ঙহবং ধ সড়ৎঃমধমব, ধষধিুং ধ সড়ৎঃমধমব ”মতবাদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
রেহেনের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঋণ এবং এ ঋণ পরিশোধের জন্য জামানত হিসেবে ঋণগ্রহীতা তার কোন স্থাবর
সম্পত্তি ঋণদাতাকে প্রদান করে। তাই ঋণগ্রহীতা বা রেহেন দাতা তার ঋণ পরিশোধ করলেই রেহেন সম্পত্তি
ফেরত পায়। সম্পত্তি ফিরে পাবার এ অধিকারকে রেহের মুক্তির অধিকার বলে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৬০ ধারায় বর্ণিত আছে যে, রেহেনের টাকা পরিশোধযোগ্য হবার পর যে কোন সময়
রেহেন মুক্তির অধিকার প্রয়োগ করা যায়। কাজেই নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলেও এই অধিকার বিলুপ্ত হয়
না।
যেহেতু রেহেন একটা ঋণের ব্যাপার, ঋণ পরিশোধ করতে না পারলেই তা অপনা আপনি বিক্রিতে পরিণত
হয় না। সুদসহ পরিশোধ করে রেহেন দাতার সম্পত্তি উদ্ধারের অধিকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পরও অক্ষু ন্ন
থাকবে। তাই বলা হয়েছে ঙহবং ধ সড়ৎঃমধমব, ধষধিুং ধ সড়ৎঃমধমব অর্থাৎ একটা যা রেহেন, সর্বদায় তা
রেহেন।
এই নীতি হতে বোঝা যায় যে, রেহেন ঋণের টাকা পরিশোধের জামানত বিধায় ইহাকে মালিকানার চু ড়ান্ত
হস্তান্তর বলা যায় না। এই নীতির উপর ভিত্তি করে রিডেম্পশন অধিকারকে নষ্ট করার অনুমতি ইকু ইটি
আদালত দেয় না।
এই প্রসঙ্গে নবিন চন্দ্র মোড়ল বনাম মোহন দাস মামলায়১৯ উখজ ৩৩৮[ঘধনরহ ঈযধহফৎধ গড়ৎড়ষ াং
খধষরঃ  গড়যধহ উধং ১৯ উখজ ৩৩৮] হাইকোর্ট বলেন যে,রেহেনের টাকা নির্দি ষ্ট সময়ে পরিশোধ করা
স্বত্বেও রেহেন গ্রহীতা যদি রেহেনী সম্পত্তি ফেরত দিতে অস্বীকার করে, তবে সেক্ষেত্রে জরমযঃ ড়ভ
ৎবফবসঢ়ঃরড়হ এর মামলার কারণ উদ্ভব হয়ে থাকে।
গবৃশেষে বরা যায় যে, রেহেন সম্পত্তি ফেরত পাওয়ার অধিকার একটি রেহেনের সার কথা বিধায় রেহেন
উদ্ধার করার অধিকারের উপর বাধার সৃষ্টি যে কোন শর্ত বাতিল বলে গণ্র হবে। তবে পক্সগনের কার্যদ্বারা
বা াাদালতের ডিক্রি দ্বারা নষ্ট হলে রেহেন মুক্ত করার অধিকার আর বলবৎ থাকবে না।
কে রেহেন মুক্তকরণ করতে পারেন:
রেহেনদাতাই রেহেনী সম্পত্তি মুক্ত করার প্রধান দাবিদার। ১৮৮২ সালের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের  ৫৯ (ক)
ধারা অনুসাওে রেহেন দাতার নিকট হতে সকল হস্তান্তর গ্রহীতাগণও রেহেনী সম্পত্তি রেহেনমুক্ত করতে
পারেন।
 এত্র আইনের ৯১ ধারার বিধান মতে,রেহেন দাতা ব্যতীতও চার শ্রেণীর ব্যক্তি প্রয়োজন বোধে সম্পত্তি
রেহেনমুক্ত করতে পারেন। যেমন:
ক) যে ব্যক্তির রেহেন সম্পত্তির উপর স্বার্থ আছে ।
খ) রেহেনমুক্তির অধিকারে উপর যে ব্যক্তির রয়েছে।
গ) যে ব্যক্তি রেহেনের অর্থ বা তার অংশ বিশেষ পরিশোধের নিশ্চয়তা দান করেছির বা যে গ্রান্টর ছিল।
ঘ) রেহেন সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য রেহেন দাতার যে পাওনাদার আদালতের কাছ থেকে ডিক্রি পেয়েছেন।

কখন রেহেন মুক্ত করার অধিকার প্রয়োগ করা যায়:


রেহেনের টাকা পরিশোধের জন্য নির্ধারিত তারিখে বা তারপরে কোন রেহেন মুক্ত করার অধিকারের উদ্ভব হয়
তথা-অধিকার প্রয়োগ করা যায়।কিন্তু রেহেনের টাকা পরিশোধের নির্ধারিত তারিখের পূর্বে এই অধিকার প্রয়োগ
করা যায় না।
গম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৬০ ধারার বিধান মোতাবেক,রেহেনের টাকা পরিধোদেও নির্ধারিত তারিখে বা তার
পওে এবং রেহেন গ্রহীতা কর্তৃ ক রেহেন দাতার রেহেন উদ্ধারের অধিকার আদালতের মাধ্যমে ফোরক্লজ না
করা পর্যন্ত যে কোন সময় রেহেন দাতা তার রেহেন মুক্ত করার অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

তামাদি াাইন দ্বারা বারিত হলে বা অন্য কোন কারণে এ অধিকার বিনষ্ট হলে রেহেনমুক্তি াধিকার প্রয়োগ
করা যায না। কিন্তু খাই খালাসী রেহেনের ক্ষেত্রে এই নীতিটি প্রযোজ্য হবে না।

সাধারণত রেহেন দাতাকে পূর্ণ রেহেনী সম্পত্তি মুক্ত করতে হবে, আংশিক রেহেন মুক্ত করতে পারবে না।
কিন্তু এই আইনের ৬০ ধারার ৫ম অনুচ্ছেদে এর ব্যতিক্রমী বিধান বর্ণিত হয়েছে। যে ক্ষেত্রে কোন রেহেন
গ্রহীতা উত্তরাধিকার সূত্রে বা ক্রয়মূল্যে অথবা অন্য কোনভাবে সম্পত্তি লাভ করে থাকে সেক্ষেত্রে আংশিক
রেহেনমূক্ত বা আংশিক রিডেমশন এর অধিকার প্রয়োগ করা যায়।
আংশিক রেহেনমুক্তিকরণ আইন সিদ্ধ কিনা:
সাধারণত রেহেন দাতা আংশিকভাবে রেহেন মুক্ত করতে পারে না। কেননা একটি রেহেনের জন্য রেহেন
সম্পত্তিটি একটি একক বা অবিভাজ্য জামানত। যে ক্ষেত্রে একাধিক রেহেন দাতা আছে,সে ক্ষেত্রে এ নিয়ম
প্রযোজ্য। একাধিক রেহেনদাতার ক্ষেত্রে কোন একজন রেহেন দাতা যদি রেহেন সম্পত্তিটির অংশ বিশেষ মুক্ত
করতে চায়, তবে তাকে সমগ্র রেহেন সম্পত্তিটি মুক্ত করতে হবে, আংশিক মুক্ত করা যাবে না। তবে একটি
ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম আছে যে ক্ষেত্রে আংশিক মুক্ত আইন সিদ্ধ।
ব্যতিক্রম:
৬০ ধারার ৫ম অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, যদি রেহেন গ্রহীতা রেহেন সম্পত্তিতে ওয়ারিশসূত্রে বা ক্রয়মূলে বা
অন্য কোন প্রকারে কোন অংশ লাভ করে, তবে আংশিক রিডেমশন করা যায়।
উদাহরণ:
ক তার সম্পত্তি খ এর নিকট রেহেন রাখির। খ,গকে একমাত্র ওয়ারিশ রেখে মারা গেল। এর পর রেহেন
দাতা ক,গ সহ ১০ জন ওয়ারিশ রেখে মারা গেল। এই ওয়ারিশদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের নিজ নিজ
অংশের টাকা পরিশোধ করে নিজ নিজ অংশ রেহেন মুক্ত করতে চায়। এমতাবস্থায় তারা তা করতে
পারবে। কারণ গ রেহেন সম্পত্তির অংশ বিশেষ ওয়ারিশ হিসেবে পাওয়ায় রেহেনের অবিভাজ্যতা নষ্ট
হয়েছে।[ ৩১ এলাহাবাদ ,৩৩৫]

বাংলাদেশী রেহেন মুক্তকরণ আইনের সাথে ইংলিশ রেহেনমুক্ত আইনের পার্থক্য:


রেহেনমুক্ত করণের অধিকারের বিষয়ে বর্ত মানে আমাদের দেশ এবং ইংলিশ আইনের মধ্যে মৌলিক কোন
পার্থক্য নেই। কিন্তু পূর্বে নির্দি ষ্ট সময়ে রেহেনের ঋণের টাকা পরিশোধ না করলে রেহেনী সম্পত্তি মুক্ত করার
অধিকার রেহেন দাতার ছিল না। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের ন্যঅয়পরতা আদালত রেহেন দাতাকে এহেন
অসুবিধা বা বন্ধু কী সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রতিকার প্রদানের জন্যে এগিয়ে আসে এবং বিধান
করে যে, রেহেনের ঋণের টাকা পরিশোধের নির্দি ষ্ট সময়সীমা অতিবাহিত হয়ে গেলেও রেহেন দাতা তার
রেহেনী সম্পত্তি রেহেনমুক্ত করতে পারবে।
কাজেই এ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ইংল্যান্ডে প্রথমত রেহেনদাতা আইনগত অধিকার বলে নির্দি ষ্ট সময়ের মধ্যে
ঋণের টাকা পরিশোধ পূর্বক রেহেনী সম্পত্তি মুক্ত করতে পারে এবং দ্বিতীয়ত ঋণের টাকা পরিশোধের নির্দি ষ্ট
সময়সীমা শেষ হয়ে যাবার পরেও ইকু ইটিগত অধিকার বলে রেহেনদাতা ঋণের টাকা পরিশোধ করে রেহেনী
সম্পত্তি মুক্ত করে দিতে পারেন।
তবে আমাদের দেশে ইংল্যান্ডের উক্ত রেহেনমুক্ত করণের দুটো অধিকারকে বিধিবদ্ধ আকারে একটি আইনগত
অধিকারে স্বীকৃ তিদানপূর্বক ১৮৮২ সনের সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৬০ ধারায় রিডেমশনের অধিকার নামে
একটি বিধানের প্রবর্ত ন করেছে । এই বিধান প্রবর্ত নের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল রেহেনদাতাকে ইকু ইটির অধিকার
প্রদান করা।

ক)লসিপনেডন্টে নীতটিি ব্যাখ্যা কর।এ নীতরি উদ্দশ্যে ক? মামলা চলাকালে সম্পত্তি হস্তন্তর করা যায় কিনা?
নোটশিরে নীতি দ্বারা এ নীতরি প্রয়োগ কি ক্ষতগ্রিস্থ হব? আলোচনা কর।
খ)মামলা চালতি অবস্থায় কৃ ত কোনো হস্তান্তর কি বতিল?
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনরে ৫২ ধারায় লসিপনেডসে নীতি র্বণনা করা হয়ছে।ে এ নীতরি মূল বক্তব্য হলো,
আদালতে মামলা বচিারাধীন থাকলে উক্ত মামলার কোনো পক্ষই মামলার ফলাফলকে প্রভাবতি করার জন্য
বরিোধীয় সম্পত্তটিি হস্তান্তর করতে পারবে না।
র্অথাৎ এ নীতি অনুযায়ী মামলার বরিোধীয় সম্পত্তি কোনো পক্ষ হস্তান্তর করে থাকলে তার দ্বারা মামলার
ফলাফল কোনোভাবইে প্রভাবতি হবে না।
সংক্ষপে, মামলা আদালতে বচিারাধীন থাকাকালীন পক্ষগণ নতু ন কােনো অবস্থা সৃষ্টি করতে পারবে না।
ব্রটিশি কমন ল’ থকেে এ নীতটিরি উৎপত্ত।ি
এ ধারায় মূলত মামলা চলাকালে মামলার বষিয়বস্তু স্থতিাবস্থায় রাখার নর্দি শে প্রদান করা হয়ছে।ে
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনরে ৫২ ধারায় বলা হয়ছেে যে বাংলাদশেরে ভতেরে বা বাইরে এখতয়িারাধীন আদালতে
স্থাবর সম্পত্তি সর্ম্পকে মামলা অথবা র্কাযক্রম চলার সময় মামলাটি ষড়য্ন্ত্রমূলক না হলে এবং তাতে
সম্পত্তরি কোন স্বত্ব সর্ম্পকে প্রত্যক্ষ ও সুস্পষ্টভাবে প্রশ্ন উত্থাপতি হয়ে থাকলে আদালতরে অনুমতি এবং
কোন র্শত আরোপ করলে সে মোতাবকে ব্যততি আর কোনো পক্ষ এরূপভাবে উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর
করতে পারবনো যার ফলে আদালতরে সম্ভাব্য ডক্রিি বা আদশেরে ফলে অন্যপক্ষ যে অধকিার পতেে পারে
তা কোনোভাবে ক্ষতগ্রিস্ত বা ব্যহত হতে পার।ে
মামলা চলাকালীন বষিয় বলতে কি বোঝায় সে সর্ম্পকে এ ধারার ব্যাখ্যায় র্বণতি আছ।ে বলা হযছে,ে
এ ধারার উদ্দশ্যেে আরজি দাখলি বা র্কাযক্রম রুজু হবার তারখি হত,ে আদালতরে সৃষ্টি চু রান্ত ডক্রিি
জারী হয়ে সর্ম্পূণ দায় পরশিোধ না হওয়া র্পযন্ত মামলা বা র্কাযক্রম চলছে বলে গণ্য করতে হব।ে
এ নীতটিি প্রয়ােগ করতে হলে মামলাটি যথাযথ এখতয়িার সম্পন্ন আদালতে দায়রে করতে হব।ে
কোনো ষড়যন্তমূলক মামলার ক্ষত্রেে এ নীতটিি প্রযোজ্য হবে না ।
আর মামলার বষিয়বস্তু হস্তান্তর হলওে তাতে চলমান মামলার ফলাফলে কোনো প্রভাব পড়বে না।
লসিপনেডসে নীতরি উপাদান:
১। স্থাবর সম্পত্তি সর্ম্পকে কোনো মামলা বা র্কাযক্রম আদালতে বচিারাধীন থাকতে হব।ে
২। যে আদালতে মামলাটি বচিারাধীন থাকবে সে আদালতরে উক্ত মামলাটি বচিার করার এখতয়িার থাকতে
হব।ে
৩। অনুরূপ মামলা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়রে থাকতে হব।ে
৪। আদালতরে অনুমতক্রিমে বা আদালত প্রদত্ত র্শত মোতাবকে সম্পত্তি হস্তান্তর স্বত্ব বা মালকিানা।
৫। আদালতরে বচিারাধীন থাকার সময় মামলার বষিয়বস্তু র্অথাৎ স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবে না
এবং করলওে তার দ্বারা মামলার কোনো পক্ষরে অধকিার প্রভাবতি হবে না।
কাজইে, আইনরে বধিান মনেে সবারই উচৎি মামলা চলাকালীন সময়ে মামলার বষিয় বস্তুর কোনো রকম
হস্তান্তর না করা। এতে অহতেু ক জটলিতা বাড়।ে কন্তিু মামলার রায়রে কোনো পরর্বিতন হয় না।
বায়নানামা বহাল থাকাবস্থায় সম্পত্তি অন্য কারো কাছে কোন প্রকাররে হস্তান্তর করা যাবে কি না?
সম্পত্তি হস্তান্তর আইনরে ধারা- ৫৩(খ) অনুযায়ী,বায়না নামা দললি বহাল থাকাবস্থায় কোন স্থাবর সম্পত্তি বায়না
গ্রহীতা ব্যততি অন্য কারো কাছে কোন  প্রকার বক্রিয়, দান, হবো ইত্যাদি  র্অথাৎ কোন প্রকাররে হস্তান্তর করা
যাবে না। যদি কোন প্রকাররে হস্থান্তর করা হয় তাহলে যে দললিরে মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে সটেি বাতলি
হয়ে যাব।ে
যদি আইনানুগ ভাবে বায়না নামাটি বাতলি করা হয় তাহলে ভন্নি যে কারো কাছে হস্তান্তর করতে
পারব।ে
কোন ব্যক্তি সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পার?ে
চু ক্তি সম্পাদনরে যোগ্য এবং হস্তান্তর যোগ্য সম্পত্তরি স্বত্বাধকিারি অথবা যে সম্পত্তি তার নজিরে না কন্তিু
তা হস্তান্তর করার ক্ষমতা প্রাপ্ত প্রত্যক ব্যক্তি র্বতমান আইনরে অধনিে সম্পত্তরি হস্তান্তর করতে পারব।ে।।

You might also like