Download as pdf or txt
Download as pdf or txt
You are on page 1of 26

সূচিপত্র

আমাদের কথা (১০-১৩)


ইমাম ইবনু তাইমিয়াহ রহ. (১৪-১৬)
অন্তরের র�োগব্যাধি (১৭-২৬)
শারীরিক অসুস্থতার আলামত..................................................20
অন্তরের ব্যাধি : আলামত ও প্রতিকার........................................ 21
অন্তর ও শরীরের র�োগের মধ্যে পার্থক্য. ..................................... 24
কামনা-বাসনা ও ল�োভ-লালসা অন্তরকে অন্ধ করে দেয় (২৭-৪৪)
নফসের ল�োভ-লালসা ও কামনা-বাসনা......................................2৯
কামনাবাসনা ও ল�োভলালসা : পরস্পর ওতপ্রোতভাবে জড়িত............ ৩৪
লালসা কুমন্ত্রণা দেয়, বাস্তবায়নের পথ দেখায় প্রবৃত্তি. ..................... 3৭
লালসা ও হিংসা : স্বরূপ ও প্রকৃতি. ......................................... 3৮
লালসা ও কামনার স্তরবিন্যাস................................................ ৪৩
প্রবৃত্তির কাছে অন্তর পরাস্ত হয়, অতঃপর হয় নিহত (৪৫-৬২)
অন্তর যেন কামনার খাঁচায় বন্দী.............................................. 4৭
দুনিয়ার মহব্বতে ডুবে অন্তর পথভ্রষ্ট হয়.................................... 4৯
আল্লাহর গ�োলামি : স্বরূপ ও প্রকৃতি......................................... ৫২
প্রবৃত্তির অনুসরণ মানুষকে ধ্বংস করে....................................... ৫৪
প্রবৃত্তির ফিতনায় অন্তরের চিকিৎসা.......................................... 5৭
কৃ পণতা, প্রবৃত্তি ও প্রেমাসক্তি (৬৩-৮০)
অবজ্ঞা ও অন্যায় হিংসারই প্রতিফল......................................... ৬৫
কামনা ও আসক্তি : করণীয় ও বর্জনীয়...................................... ৭০
প্রেমাসক্তির ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়........................................ ৭১
স্বভাব-প্রকৃতি ও অন্তরের ব্যাধি.............................................. ৭৬
কিছু উপকারী প্রতিষেধক ও কার্যকর ওষুধ...................................7৯
হিংসা ও ঈরষা ্ (৮১-৯৬)
হিংসার স্বরূপ ও প্রকার....................................................... ৮৩
সৎ কাজে প্রতিয�োগিতা হিংসা নয়........................................... ৮৬
হিংসার নানা কারণ............................................................ 8৮
সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা মানুষের মর্যাদা বুলন্দ করে................................. ৯২
অন্তরদাহ্ অনিষ্টের আধার (৯৭-১০৯)
হিংসাবৃত্তি এক সার্বজনীন আর্তি.............................................. 9৯
ঐচ্ছিক ও আবশ্যিক সহনশীলতা...........................................১০২
পরহিংসার প্রতিষেধক.......................................................১০৫
পদাধিকারীদের পরশ্রীকাতরতা..............................................10৭
মানুষ মানসিক দাসত্বের শেকলে বন্দী (১১০-১২৫)
মানুষ স্বীয় প্রবৃত্তির পূজারী...................................................1১১
একান্ত প্রয়�োজন ছাড়া ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ...................................1১৪
আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করা উত্তম ধৈর্যের পরিপন্থী নয়................... 11৯
আল্লাহর গ�োলামির মধ্যেই শ্রেষ্ঠ স্বাধীনতা নিহিত..........................1২১
দেহের তু লনায় মনের স্বস্তি-অস্বস্তি বেশি গুরুত্বপূর্ণ(১২৬-১৪৪)
অন্তরের আর�োগ্য আত্মশুদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত............................. 12৭
মন�োব্যাধি যেমন ক্ষতিকর শিফাও তেমনি কল্যাণকর......................1৩১
প্রবৃত্তি হল�ো মন�োব্যাধির আঁতুড়ঘর.........................................1৩৫
তাকওয়াই মন�োব্যাধির সর্বোত্তম প্রতিষেধক................................1৩৬
দুঃখ-দুর্দশার মধ্যেও থাকে শিফা............................................1৪১
অন্তরের আর�োগ্য ও শুশ্রূষা (১৪৫-১৫৪)
অন্তরের আর�োগ্য ও প্রতিষেধক.............................................1৪৬
অন্তরের জীবনীশক্তি (১৫৫-১৭০)
আত্মশুদ্ধি বাড়ায় মনের প্রাণশক্তি...........................................1৫৬
ঈমান ও নিফাক আত্মিক শুদ্ধাশুদ্ধির জনক................................1৬১
জীবিত ও মৃত অন্তরের ব্যবধান.............................................1৬৩
মন�োব্যাধির জন্য কুফরি আবশ্যক নয়.......................................1৬৬
অন্তর সর্বদাই হিদায়াতের মু খাপেক্ষী (১৭১-১৮২)
সুপথ অবলম্বনে সার্বক্ষণিক মুখাপেক্ষিতা...................................1৭৪
প্রাণবন্ততা অন্তরকে মন্দ বিষয় থেকে দূরে রাখে........................... 17৭
যে মন নিজ-গহনে প�োষে আল্লাহর প্রেম (১৮৩-২০১)
আল্লাহর প্রতি মনের একনিষ্ঠতা সব অনিষ্টকর বস্তু ও প্রবৃত্তির
প্রতির�োধক....................................................................1৮৫
সম্পদের অজিফা এবং মনের দাসত্বের সঙ্গে এর সম্পর্ক..................18৮
আল্লাহপ্রেমের প্রকৃতি ও তাৎপর্য............................................18৯
আল্লাহপ্রেমের আলামত......................................................1৯১
আল্লাহর পরিপূর্ণ দাসত্ব......................................................1৯৫
আল্লাহর দাসত্বের স্তরসমূহ..................................................1৯৭
হৃদয়ের আশা-প্রত্যাশা আল্লাহর নিকটে হওয়াতেই নিরাপত্তা
ও মু ক্তি (২০২-২২৮)
আশা-প্রত্যাশা কেবল আল্লাহর নিকটেই করা............................. ২০৪
শিরককারীর জন্য তার শিরকটা ভয়ের কারণ............................. ২০৬
আশার উপায়-মাধ্যম........................................................ 20৯
কালিমায়ে তাওহিদের মর্ম অনুধাবন : মানুষের শ্রেণিভেদ................ 2১২
ইখলাস : জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায়.................................... 2১৩
আল্লাহর ‘জন্য’ এবং আল্লাহর ‘সঙ্গে’ ভাল�োবাসা......................... 21৯
অন্তরের ‘কথা-কাজে’ও শিরক হয়........................................ 2২৩
অন্তরের নিজস্ব সত্যায়ন অনুসারে আমল করার আবশ্যকতা............. 2২৩
নিষ্ঠা-ইখলাস ও আত্মবিলীনেই আছে আত্মার আবেহায়াত (২২৯-২৪৪)
ইখলাসের স্বাদ ও সুফল..................................................... 2৩১
সুপথ ও বিপথের নেতা যারা................................................ 2৩৩
ফানা বা আত্মবিল�োপের সঙ্গে ইখলাসের সম্পর্ক ও তার প্রকারভেদ.... 2৩৫
তাসাউফের কিছু পরিভাষার ব্যাখ্যা......................................... 2৪০
আল্লাহ ও রাসু লের ভাল�োবাসাই প্রতিটি কবু ল-আমলের
প্রাণসঞ্জীবনী (২৪৫-২৭৬)
ইখলাস : নববি দাওয়াতের সারাংশ.........................................24৭
আল্লাহর পূর্ণ ভাল�োবাসাই দ্বীনের মূল ভিত.................................24৯
ভাল�োবাসলে প্রেমাস্পদকে সন্তুষ্ট করতে হয়.............................. 2৫৩
বান্দা ও রবের মধ্যে ভাল�োবাসার বিনিময় হয়..............................25৯
একটি ভুল ধারণার সংশ�োধন............................................... 2৬৫
হৃদয়ের ভাল�োবাসা ও বন্ধুত্ব (২৭৭-২৯৩)
ভাল�োবাসার শীর্ষ চূড়া........................................................27৮
ঈমানের মিষ্টতা : আল্লাহর প্রতি বান্দার উপচান�ো ভাল�োবাসার নির্যাস 2৮১
দাসত্বের হাকিকত ও স্বরূপ................................................. 2৮৩
আল্লাহপ্রেমিকদের নানারকম হালত....................................... 2৮৪
আল্লাহর প্রতি যথাযথ ভাল�োবাসার নীতি.................................. 2৮৬
বান্দা ও রবের মধ্যে ভাল�োবাসার বিনিময়................................. 28৯
আত্মার পরিশুদ্ধিই মহাসাফল্য (২৯৪-৩১২)
অসৎকর্ম বর্জন আর সৎকর্ম সম্পাদনেই আত্মার পরিশুদ্ধি................29৭
আত্মাকে প্রবৃত্তির খপ্পর থেকে বাঁচান�োই হল�ো প্রকৃত ইবাদত ও
মুজাহাদা......................................................................৩০৪
ইবাদতে নিষ্ঠা ও ইখলাস সব সন্দেহ-সংশয় ও প্রবৃত্তিপূজার অবসান
ঘটায়..........................................................................৩০৬
আল্লাহর ভাল�োবাসায়ই লাভ হয় ঈমানের মিষ্টতা......................... 30৮
ভাল�োবাসার টান (৩১৩-৩২৩)
আল্লাহর মহান সত্তার প্রতি ভাল�োবাসা....................................3১৫
গাইরুল্লাহর প্রতি ভাল�োবাসার অশুভ পরিণতি............................31৯
তাওহিদি ভাল�োবাসার কয়েকটি আবশ্যক প্রতিক্রিয়া..................... 3২২
আত্মার আমল (৩২৪-৩৪৩)
আত্মার আমল ও তাতে মানুষের স্তরভেদ................................. 3২৫
আল্লাহপ্রেমিকরাও কখন�ো কখন�ো গুনাহে জড়িয়ে পড়ে................. 32৮
সততা : মুমিন ও মুনাফিকের পার্থক্যরেখা................................. 3৩৪
কথা ও কাজের সততা...................................................... 33৯
আত্মিক বিষয়াদিই দ্বীনের মূল অংশ........................................3৪১
প্রতিটি মানুষ হৃদয়ের কর্ম-বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে (৩৪৪-৩৬৬)
প্রতিটি মানুষ হৃদয়ের বিশেষ ক্রিয়াকলাপের জন্য আদিষ্ট................. 34৭
সংশ�োধনয�োগ্য কিছু ভুল....................................................3৫০
ভাগ্য নির্ধারিত থাকাটা আমলের পরিপন্থী নয়............................. 3৫৫
সৃষ্টি সংক্রান্ত ও দ্বীন-সংশ্লিষ্ট বিষয়.......................................... 35৮
প্রশংসনীয় আত্মবিল�োপ (৩৬৭-৩৮১)
সর্বোতভাবে আল্লাহমুখী হ�োন.............................................. 36৯
তাওয়াক্কুল ও রবের আনুগত্য : দুয়ের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্কের
আবশ্যকতা................................................................... 3৭০
হৃদয়ের ভাঙন : আল্লাহর জন্য তার খুলুস ও একনিষ্ঠতার প্রমাণ........ 3৭৩
প্রাণবিশিষ্ট কেউই ইচ্ছাশক্তি-বিহীন নয়.................................... 3৭৪
ইচ্ছাশক্তির বিবেচনায় মানুষের প্রকারভেদ................................ 37৯
প্রথম মজলিস

অন্তরের র�োগব্যাধি
Ĺ শারীরিক অসস্থতার
ু আলামত
Ĺ অন্তরের ব্যাধি : আলামত ও প্রতিকার
Ĺ অন্তর ও শরীরের র�োগের মধ্যে পার্থক্য
প্রথম মজলিস

অন্তরের র�োগব্যাধি
মসজিদের ভেতর-বাহির ল�োকে ল�োকারণ্য। কানায় কানায় ভরে গেছে চারপাশ;
তিল ধারণের ঠাঁই নেই যেন। উপস্থিত হয়েছেন সমসাময়িক অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী,
ভক্ত-অনুরক্ত, আলিম, তালিবুল ইলমসহ অগণিত জনসাধারণ। জ্ঞানের প্রতি
এক-বুক পিপাসা নিয়ে চাতক পাখির মত�ো চেয়ে আছেন যুগশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্বের
দিকে। তিনি আর কেউ নন—শাইখুল ইসলাম তাকিউদ্দিন আহমদ ইবনু আবদুল
হালিম ইবনু তাইমিয়া।
শাইখ আল�োচনা শুরু করলেন। সকলেই যেন সমানভাবে শুনতে পায়—তাই
আসন ঠিক মধ্যখানে। উপস্থিত প্রত্যেকের হাতেই কাগজ ও কলম। সকলেই
প্রস্তুত তাঁর মূল্যবান কথামালা কাগজের খাতায় এবং হৃদয়ের পাতায় লিপিবদ্ধ
করে নেওয়ার জন্য। ক�োথাও ক�োন�ো আওয়াজ নেই। সুনসান নীরবতা বিরাজ
করছে চারদিকে। নিস্তব্ধতা ও গম্ভীরতার চাদর যেন ছেয়ে আছে পুর�ো মজলিস।
সহসাই এমন পিনপতন নীরবতা ভেঙে শাইখের সুমধুর কণ্ঠে ধ্বনিত হল�ো—
‫أ‬ َْ
‫اهلل ِم ْن ُش ُر ْو ِر � ْن ُف ِس َنا َو ِم ْن َس ِّي َئ ِت‬ ُ
ِ ‫ال َح ْم ُد ِ ّٰ ِل َن ْس َت ِع ْي ُنه َو َن ْس َت ْغ ِف ُره َو َن ُع ْوذ ِب‬
َ َ ْ ‫ َو‬،‫هللا َف َل ُم ِض َّل َل ٗه‬
‫ َو أ� ْش َه ُد أ� ْن‬،‫من ُي ْض ِل ْل َفل َه ِاد َي له‬ ُ ‫ َم ْن َي ْه ِد‬،‫أ� ْع َما ِل َنا‬
ُ َ َ
‫ َص ّٰلى‬،‫ َو أ� ْش َه ُد أ� َّن ُم َح َّم ًدا َع ْب ُد ٗه َو َر ُس ْوله‬،‫هللا َو ْح َد ٗه ل َش ِر ْي َك له‬ ُ ‫َل إ ٰل َه َإ ِّل‬
ِ
ً‫هللا َع َل ْي ِه َو َع ٰلى ٰا ِل ٖه َو أ� ْص َحا ِب ٖه َو َس َّل َم َت ْس ِل ْيما‬
ُ
‘সকল প্রশংসা আল্লাহর; আমরা তাঁর কাছে সাহায্য কামনা করি; তাঁর
কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা ও মন্দ কাজের অনিষ্ট
থেকে তাঁর কাছেই পরিত্রাণ চাই। আল্লাহ যাকে সুপথে পরিচালিত করেন,
19
অন্তরের রোগব্যা

তাকে কেউ বিপথে নিতে পারে না। আর তিনি যাকে বিপথে নেন, তাকে
কেউ সুপথে আনতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি—আল্লাহ ছাড়া ক�োন�ো
ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর ক�োন�ো শরিক নেই; আমি আরও সাক্ষ্য
দিচ্ছি—মুহাম্মাদ ‫ ﷺ‬তাঁর বান্দা ও রাসূল। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হ�োক তাঁর
ওপর, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর ওপর।’
আল্লাহ তাআলা মুনাফিকদের সম্পর্কে বলেন—
َ ‫الل َم َر ًضا َو َل ُه ْم َع َذ ٌاب أ� ِل ٌيم ب َما َك ُانوا َي ْك ِذ ُب‬
‫ون‬ ُ َّ ‫ِفي ُق ُلوبه ْم َم َر ٌض َف َز َاد ُه ْم‬
ِ ِِ
‘তাদের অন্তরে আছে ব্যাধি; অনন্তর আল্লাহ তাদের ব্যাধি আরও
বাড়িয়ে দিয়েছেন। এবং তাদের মিথ্যাচারের কারণে তাদের জন্য রয়েছে
যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’    [1]
ْ َّ ‫ِل َي ْج َع َل َما ُي ْل ِقي‬
‫الش ْي َط ُان ِف ْت َن ًة ِل َّل ِذ َين ِفي ُق ُلو ِب ِه ْم َم َر ٌض َوال َق ِاس َي ِة ُق ُل ُوب ُه ْم‬
‘এজন্য যে, শয়তান যা প্রক্ষেপণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন,
তাদের জন্যে, যাদের অন্তরে আছে ব্যাধি এবং যারা পাষাণহৃদয়।’    [2]
ْ َ ُ ْ ُ ْ َ ٌ َ َ ْ ُ ُ َ َّ َ َ ُ َ ُ ْ َ ْ َ ْ َ ْ َ
‫ون ِفي ال َم ِد َين ِة‬ ‫ل ِئن لم ينت ِه المن ِافقون وال ِذين ِفي قلو ِبهم مرض والمر ِجف‬
ً‫َل ُن ْغر َي َّن َك به ْم ُث َّم َال ُي َجاو ُ ِر َون َك ف َيها إ َّال َقليال‬
ِ ِ ِ ِ ِِ ِ
‘মুনাফিকরা এবং অন্তরে ব্যাধিগ্রস্তরা এবং মদিনায় গুজব রটনাকারীরা
যদি বিরত না হয়, তবে আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আপনাকে সক্ষমতা
দান করব। অতঃপর এই শহরে তারা আপনার প্রতিবেশী হয়ে অল্প দিনই
থাকতে পারবে।’    [3]
َّ
‫ون َو ِل َي ُق َول ال ِذ َين ِفي ُق ُلو ِب ِه ْم‬ َ ‫اب َو ْال ُم ْؤ ِم ُن‬
َ ‫اب َّال ِذ َين أ� ْو ُتوا ْالك ِـ َت‬
َ ‫َو َال َي ْرَت‬
ُ َّ ‫َم َر ٌض َو ْال َك ِاف ُرو َن َم َاذا أ� َر َاد‬
‫الل ِب َه َذا َم َث ًال‬

    [1]  সূরা বাকারা, আয়াত-ক্রম : ১০


    [2]  সূরা হজ, আয়াত-ক্রম : ৫৩
    [3]  সূরা আহযাব, আয়াত-ক্রম : ৬০
20
রূহের চিকিৎসা

‘আহলে কিতাব ও মুমিনগণ যেন ক�োন�ো সন্দেহে পতিত না হয়। আর


যাতে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা ও কাফিররা বলে যে, আল্লাহ এই
অভিনব উক্তি দ্বারা কী ব�োঝাতে চেয়েছেন!’    [1]
ُّ ‫َق ْد َج َاء ْت ُك ْم َم ْو ِع َظ ٌة ِم ْن َر ِّب ُك ْم َو ِش َف ٌاء ِل َما ِفي‬
‫الص ُدو ِر َو ُه ًدى َو َر ْح َم ٌة‬
‫ين‬َ ‫ِل ْل ُم ْؤ ِمن‬
ِ
‘ত�োমাদের কাছে ত�োমাদের রবের পক্ষ থেকে উপদেশবাণী এসেছে এবং
মুমিনদের জন্য এসেছে অন্তরের র�োগের নিরাময়, হিদায়াত ও রহমত।’    [2]

‫ين ِإ َّال‬
َ ‫الظا ِل ِم‬ َ ‫َو ُن َن ّز ُل ِم ْن ْال ُق ْ آر�ن َما ُه َو ِش َف ٌاء َو َر ْح َم ٌة ِل ْل ُم ْؤ ِمن‬
َّ ‫ين َو َال َيز ُيد‬
ِ ِ ِ ِ
ً‫َخ َسارا‬
‘আমি কুরআনে এমন বিষয় নাজিল করি যা র�োগের নিরাময় এবং
মুমিনদের জন্য রহমত। পাপীদের ত�ো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়।’    [3]
ْ َ ْ ُ ْ َ ‫َ َ ْ ُ ُ َر‬
‫ َو ُيذ ِه ْب َغ ْي َظ ُق ُلو ِب ِه ْم‬،‫ين‬ ‫ويش ِف صدو قو ٍم مؤ ِم ِن‬
‘তিনি মুমিনদের অন্তরসমূহ প্রশমিত করবেন এবং তাদের মনের ক্ষোভ
দূর করবেন।’    [4]

ু আলামত
শারীরিক অসস্থতার
শারীরিক অসুস্থতা মূলত সুস্থতার বিপরীতার্থক। এটি দেহাভ্যন্তরে সৃষ্ট এমন এক
সমস্যা, যার কারণে মানুষের অনুধাবনশক্তি কিংবা প্রাকৃতিক সঞ্চালনশক্তিতে
বিঘ্ন ঘটে। অনুধাবনশক্তিতে বিঘ্ন ঘটার অর্থ হল�ো—দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি
হারিয়ে ফেলা অথবা ক�োন�োকিছুর বিপরীত অবস্থা অনুভব করা। যেমন : মিষ্টি
দ্রব্যকে মনে হল�ো তিক্ত, কিংবা এর উল্টো। এমনও হতে পারে—সে এমন কিছু
আঁচ করতে পারছে, বাস্তবে যার ক�োন�ো অস্তিত্বই নেই।
    [1]  সূরা মুদ্দাসসির, আয়াত-ক্রম : ৩১
    [2]  সূরা ইউনুস, আয়াত-ক্রম : ৫৭
    [3]  সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত-ক্রম : ৮২
    [4]  সূরা তাওবা, আয়াত-ক্রম : ১৪-১৫
21
অন্তরের রোগব্যা

প্রাকৃতিক সঞ্চালনশক্তিতে বিঘ্ন ঘটার অর্থ হল�ো—হজমশক্তি হ্রাস পাওয়া, কিংবা


স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হওয়া। পাশাপাশি ক্ষতিকর
খাবারের ওপর আকর্ষণ অনুভব করা। খাবারের এমন অনিয়মের জন্য মানুষ কষ্টে
ভুগলেও প্রাণনাশের ঘটনা সাধারণত ঘটে না। কিন্তু মানুষ প্রায়ই জেনে-বুঝে
ক্ষতিকর খাবার খেয়ে এমন ঘটনা ঘটায়। এ-থেকে ব�োঝা যায়—ইচ্ছাশক্তির
ওপর মানুষের এক প্রকার নিয়ন্ত্রণ-ক্ষমতা রয়েছে। এই ক্ষমতা ব্যবহার করে
কখন�ো কখন�ো সে নিজ দেহে নিজেই যন্ত্রণা তৈরি করে। এই যন্ত্রণা সাধারণত দুটি
কারণে হয়ে থাকে। এক. পরিমাণগত সমস্যার কারণে; দুই. অবস্থাগত সমস্যার
কারণে। পরিমাণগত সমস্যার অর্থ হল�ো—মানবদেহে ক�োন�ো বিশেষ উপাদানের
স্বল্পতা দেখা দেওয়া; এমন অবস্থায় স্বল্পতা পূরণে প্রয়�োজনীয় খাবার গ্রহণ করতে
হয়। অথবা ক�োন�ো উপাদানের বাহুল্য ঘটা; তখন আবার সুস্থতার জন্য অতিরিক্ত
উপাদান কমিয়ে আনার প্রয়�োজন পড়ে। অবস্থাগত সমস্যার উদাহরণ হিসেবে
উল্লেখ করা যায় মানবদেহের তাপমাত্রার বিষয়টি। দেহের তাপমাত্রা প্রয়োজনের
তুলনায় কম কিংবা বেশি থাকলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন প্রয়�োজনীয়
চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়।

অন্তরের ব্যাধি : আলামত ও প্রতিকার


আমি বললাম, ‘শ্রদ্ধেয় শাইখ! এ ক্ষেত্রে আমার ক�োন�ো দ্বিমত নেই যে,
শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ার আলামত হচ্ছে—শরীরে যন্ত্রণা অনুভব করা অথবা
দেহাভ্যন্তরে ক�োন�ো সমস্যা সৃষ্টি হওয়া, যেমনটি আপনার থেকেও জানলাম।
কিন্তু দৈহিক ও আত্মিক ব্যাধির মধ্যে সাদৃশ্যবিধান ঠিক কীভাবে সঙ্গত?’
শাইখ ইবনু তাইমিয়া বললেন, ‘প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ! দেহের মত�ো মনেরও কিছু
র�োগ আছে। র�োগের কারণে মানুষের অন্তরে সমস্যা সৃষ্টি হয়। যাতে তার
চিন্তাশক্তি ও ইচ্ছাশক্তি নষ্ট হয়ে যায়।
‘খুলে বলি—বিভিন্ন রকম সংশয় ও সন্দেহের দ্বারা মানুষের চিন্তাশক্তি নষ্ট হয়।
এর প্রভাবে কখন�ো সে সত্য অনুধাবনে অসমর্থ হয়, কখন�ো-বা মিথ্যাকে সত্য
মনে করে। পরবর্তী সময়ে নষ্ট হয় তার ইচ্ছাশক্তিও। তখন উপকারী কিছু তার
আর ভাল�ো লাগে না, মন ঝুঁকতে থাকে সকল মন্দ জিনিসের দিকে।
‘আগেই বলেছি দেহের মত�ো মনেরও কিছু র�োগ আছে। এবার চলো, বিস্তারিত
22
রূহের চিকিৎসা

আল�োচনা করা যাক। বিভিন্ন তাফসিরগ্রন্থে ‫ض‬ ٌ ‫ َم َر‬শব্দের ব্যাখ্যা করা হয়েছে
‫ َش ٌّك‬শব্দ দিয়ে, আবার কখন�ো-বা করা হয়েছে ‫ َر ْي ٌب‬শব্দ দিয়ে। অর্থাৎ, যে
শব্দ দিয়ে দেহের র�োগ ব�োঝান�ো হয়, ঠিক একই শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে মনের
ব্যাধি ব�োঝাতে। যেমন : মুজাহিদ ও কাতাদাহ রাহিমাহুমাল্লাহ কুরআনের
আয়াত—‫ض‬ ٌ ‫ ِفي ُق ُلوبه ْم َم َر‬-এর তাফসিরে ‫ َم َر ٌض‬শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন ‫َش ٌّك‬
ِِ ٌ ‫ َم َر‬শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন— ‫َش ْه َو ٌة ٰإلى‬
শব্দ দিয়ে। আবার কখন�ো কখন�ো ‫ض‬
‫ ّ ِالزٰنى‬বা ব্যভিচারের
َْ َّ প্রতি ْ আসক্ তি দিয়ে। যেমনটি দেখা যায় কুরআনের আয়াত
َ َ َ َ َ
‫فيطمع ال ِذي ِفي قل ِب ِه مرض‬-এ ‫ َم َر ٌض‬শব্দের ব্যাখ্যায়। সুতরাং আমরা বুঝতে
َ
পারলাম—দেহের মত�ো মনেরও র�োগ আছে। কুরআনের ভাষায় যাকে বলা
হয়েছে সন্দেহ, সংশয় বা পরনারীর প্রতি আসক্তি।    [1]
‘আরও একটি বিষয় খেয়াল করা যাক। আমরা প্রায়ই দেখতে পাই—অসুস্থ
মানুষ যে কারণে কষ্ট পায়, সুস্থ কেউ হয়ত�ো তাতে কষ্ট পায় না। এজন্য দেখা
যায়—সামান্য শীত, গরম কিংবা ছ�োট�োখাট�ো কাজে অসুস্থ মানুষটি কষ্ট পাচ্ছে,
ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সুস্থ কারও জন্য এসব কিছুই না। অসুস্থ ল�োকটির
এই অক্ষমতার কারণ হল�ো—অসুস্থতার দরুণ সৃষ্ট দুর্বলতা। র�োগব্যাধি মূলত
শারীরিক শক্তি হ্রাস করে মানুষকে দুর্বল করে দেয়। এই অবস্থায় সে একজন সুস্থ
ও শক্তিশালী মানুষের মত�ো সবকিছু করতে সক্ষম থাকে না।
‘একজন মানুষকে সুস্থ থাকতে র�োগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে হয়। র�োগব্যাধির
সংক্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আবার একজন র�োগাক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে নতুন
ক�োন�ো র�োগ প্রবেশ করলে অসুস্থতা আরও বেড়ে যায়। তবে ক�োন�ো প্রতিষেধক
দেয়া গেলে অসুখ কমে যায়।
‘সহজ কথায়—যে কারণে মানুষ র�োগাক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে, সেই কারণ
বৃদ্ধি পেলে তার র�োগ ও দুর্বলতা বাড়তে থাকে, কমতে থাকে শারীরিক শক্তি
ও সক্ষমতা। এভাবে হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটতে ঘটতে এক পর্যায়ে হয়ত�ো সে মারাই
যায়। এমতাবস্থায় যদি সে এমন ক�োন�ো পথ্য বা প্রতিষেধক গ্রহণ করে যা তার
অসুস্থতা দূর করতে সক্ষম, তাহলে সে সুস্থ হতে থাকে এবং ফিরে পেতে থাকে
হারান�ো শক্তি ও সামর্থ্য। ঠিক একই ঘটনা ঘটে মনের র�োগের ক্ষেত্রেও।’

    [1]  নোট : ‫ ريب‬،‫ شك‬،‫ مرض‬অর্থ যথাক্রমে ‘ব্যাধি’, ‘সন্দেহ’ ও ‘সংশয়’।


23
অন্তরের রোগব্যা

আবার আরজ করলাম, ‘মুহতারাম, আপনার কথা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম
যে, অন্তরের ব্যাধি মূলত সন্দেহ, সংশয় কিংবা প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা থেকেই জন্ম
নেয়। কিন্তু অন্তরের ব্যাধি এবং দৈহিক র�োগের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে।
তা হল�ো—দৈহিক র�োগে আক্রান্ত হলে মানুষ শরীরে ব্যথা অনুভব করে,
অপরদিকে অন্তরের ব্যাধির ক�োন�ো ব্যথা নেই। আমার ধারণা উভয়ের মধ্যে
এটি একটি ম�ৌলিক ব্যবধান।’
শাইখ ইবনু তাইমিয়া বললেন, ‘না, বিষয়টি তেমন নয়। বরং অন্তরের ব্যাধির
কারণেও ব্যথা অনুভব হয়। বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য একটি উদাহরণ দিচ্ছি,
কুরআনুল কারিম থেকে প্রমাণও পেশ করছি। দেখ�ো, ক্রোধ বা রাগ এক ধরনের
অনুভূতি। আমরা এটিকে কলবের একটি সমস্যা বা ব্যাধি হিসেবে ধরে নিতে
পারি। শত্রুপক্ষ ত�োমাকে পরাস্ত করলে তুমি ক্রুদ্ধ হও। এবং এই পরিস্থিতি
ত�োমার হৃদয়ে একরকম কষ্টও তৈরি করে। কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ
করেন—
ْ َ ْ ُ ْ َ ‫َ َ ْ ُ ُ َر‬
‫ َو ُيذ ِه ْب َغ ْي َظ ُق ُلو ِب ِه ْم‬، ‫ين‬ ‫ويش ِف صدو قو ٍم مؤ ِم ِن‬
“তিনি মুমিনদের অন্তরসমূহকে প্রশান্ত করবেন। তাদের অন্তরের ক্রোধ
দূর করবেন।”    [1]
‘বক্ষ্যমাণ আয়াতে আমরা দেখতে পাচ্ছি—মন থেকে ক্রোধ দূরীকরণকেই
ُ َ َ َُ
কুরআনে শিফা বা সুস্থতা বলা হয়েছে। আরবরা বলে থাকে—‫فل ٌن َشفى غ ْيظ ُه‬
অর্থাৎ, অমুকের রাগ প্রশমিত হয়েছে। আমরা আরও দেখতে পাই—নিহতের
আত্মীয়রা হত্যার বিচার পেলে খুশি হয়, এতে তারা আত্মিক প্রশান্তি লাভ করে,
তাদের ক্রোধ প্রশমিত হয়। এমন আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে।
‘এই যে মনের অশান্তি দূর হওয়া এবং প্রশান্তি লাভ করা—এটাই হল�ো ক্রোধ,
দুশ্চিন্তা কিংবা মনের যাতনার মত�ো র�োগ থেকে সুস্থতা। এই সবগুল�ো সমস্যার
কারণেই মানুষ মনের মধ্যে ব্যথা অনুভব করে, যন্ত্রণায় ভ�োগে। এমনিভাবে ‫َش ٌّك‬
ٌ
(সন্দেহ) ও ‫( َج ْهل‬অজ্ঞতা)-এর র�োগও মানুষকে ব্যথিত করে। দেখ�ো, নবীজি
‫ ﷺ‬ইরশাদ করেন—

    [1]  সূরা তাওবা, আয়াত-ক্রম :১৪-১৫


24
রূহের চিকিৎসা
ُّ ‫هال َس أ� ُلوا ِإ ْذ َل ْم َي ْع َل ُموا َف ِإ َّن َما ِش َف ُاء ْال ِع ّ ِي‬
‫الس َؤ ُال‬ َّ
“ক�োন�ো বিষয়ে যখন তাদের অবগতি না থাকে, তখন জিজ্ঞেস করে নেয়
না কেন? অজ্ঞতা থেকে আর�োগ্য লাভের উপায়ই ত�ো জিজ্ঞাসা।”    [1]
‘এভাবে একজন সন্দিহান ও সংশয়গ্রস্ত মানুষ মানসিক কষ্টে ভ�োগে, যতক্ষণ-না
সে তার কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করতে পারে। যেমন : বিজ্ঞজনের
জবাবে আশ্বস্ত হয়ে প্রশ্নকারী বলে, “তিনি আমাকে সন্তোষজনক জবাব
দিয়েছেন।”’

অন্তর ও শরীরের র�োগের মধ্যে পার্থক্য


আমি বললাম, ‘শাইখ যদি আমাদের জন্য আরও কিছু উদাহরণ তুলে ধরতেন,
তাহলে হয়ত�ো অন্তর ও শরীরের র�োগের পার্থক্যটা আমাদের কাছে আরও স্পষ্ট
হত�ো। শাইখ হয়ত�ো খেয়াল করে থাকবেন—অসুস্থতার দরুণ শরীর একসময়
প্রাণ হারায়, কিন্তু অন্তরের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটে না।’
শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া বললেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে যথায�োগ্য জিজ্ঞাসা।
আমি চেষ্টা করব এমন আরও কিছু উদাহরণ তুলে ধরতে, যাতে সকলের সংশয়
কেটে যায়।
‘আমরা জানি—মৃত্যু হচ্ছে র�োগের পরবর্তী ধাপ। অর্থাৎ, প্রথমে মানুষ অসুস্থ
হয়, তারপর হয়ত�ো মারা যায়। এ হিসেবে চরম মূর্খ ও অজ্ঞ একজন মানুষের হৃদয়
হচ্ছে মৃত; আর এক বা একাধিক বিষয়ে অজ্ঞ ব্যক্তির হৃদয় ঠিক মৃত না, তবে
অসুস্থ। দেহের মত�ো মানুষের মনেরও জীবন, মরণ, র�োগ ও আর�োগ্য আছে।
শুধু তাই নয়, বরং দেহের জীবন, মরণ, র�োগ ও আর�োগ্যের তুলনায় মনের
জীবন, মরণ, র�োগ ও আর�োগ্যের বিষয়টি বৃহত্তর, বিস্তৃত। এজন্য ব্যাধিগ্রস্ত
অন্তরে যখন কামনা-বাসনা ও ল�োভ-লালসা স্থান পায়, তখন র�োগ আরও
মারাত্মক আকার ধারণ করে। অপরদিকে সে যখন জ্ঞানী-গুণীদের সংস্পর্শে

    [1]  আবু দাউদ, হাদিস-ক্রম : ৩৩৬; এটি মূলত হাদিসের একটি অংশ। হযরত জাবিরের সূত্রে বর্ণিত
সনদে হাদিসটি যঈফ। আবু দাউদে একই অর্থে কাছাকাছি শব্দে ইবনে আব্বাসের সূত্রে হাদিসটি বর্ণিত
আছে। শুয়াইব আরনাউত ইবনু আব্বাসের সনদকে হাসান বলেছেন। হযরত জাবিরের বর্ণনায়
‫أ‬ ‫َهـ ّـا‬
‫� َّال‬
এর স্থলে এসেছে।
25
অন্তরের রোগব্যা

আসে, জ্ঞান ও প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ শ�োনে, তখন অন্তর র�োগমুক্ত হয়, অগ্রসর
হয় কল্যাণের দিকে। আল্লাহ তাআলা বলেন—
ّ ٰ َّ َ ‫ِّل َی‬
‫الشیط ُن ِف ْت َن ًة ِل َّل ِذ َین ِفی ُق ُلو ِب ِهم َّم َر ٌض‬ ‫جع َل َما ُی ِلقی‬
“এ কারণে যে, শয়তান যা প্রক্ষেপণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে
দেন তাদের জন্যে, যাদের অন্তরে র�োগ আছে।”    [1]
‘বক্ষ্যমাণ আয়াত থেকে আমরা বুঝতে পারি, আল্লাহ এমন ল�োকদের ব্যাপারে
ফিতনার কথা বলছেন, যাদের অন্তর ব্যাধিগ্রস্ত। আর শয়তান মূলত ব্যাধিগ্রস্ত
অন্তরেই সন্দেহের বীজ বপন করতে সক্ষম হয়। এদিকে ঈমান থেকে দূরে সরার
কারণে তাদের হৃদয় শুষ্ক ও পাষণ্ড হয়ে থাকে । র�োগাক্রান্ত হওয়ায় এইসকল
ল�োকদের অন্তর থাকে দুর্বল। তাই শয়তান তাদের হৃদয়ে কুমন্ত্রণা ঢেলে দেওয়ার
সুয�োগ পায় এবং তা তাদের জন্য ফিতনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে মুমিনদের
উপহাস করতে করতে ঈমান আনার ব্যাপারেও তাদের মনে বিতৃষ্ণা সৃষ্টি হয়।
তাই ঈমান আনা তাদের জন্য হয়ে যায় নিদারুণ পরীক্ষা। এ-সম্পর্কে আল্লাহ
তাআলা ইরশাদ করেন—
ْ َ ُ ُ َّ ٌ َ َّ ُ ُ َ َّ َ َ ُ ٰ ُ َ َ َّ َ
‫ون ِفی ال َم ِد ِین ِة‬‫ل ِئن لم ینت ِه المن ِفقون و ال ِذین ِفی قلو ِب ِهم مرض و الم ِرجف‬
“মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে র�োগ আছে তারা এবং মদিনায় গুজব
রটনাকারীরা যদি বিরত না হয়।”    [2]
َّ
‫َو ِل َی ُق َول ال ِذ َین ِفی ُق ُلو ِب ِهم َّم َر ٌض‬
“এবং যাতে যাদের অন্তরে র�োগ আছে, তারা বলে যে...”    [3]
‘উল্লিখিত আয়াতে লক্ষণীয় বিষয় হল�ো—এখানে যাদের অন্তর ব্যাধিগ্রস্ত বলা
হয়েছে, তাদের হৃদয় কিন্তু কাফির ও মুনাফিকদের অন্তরের মত�ো একেবারে মৃত
না। আবার মুমিনদের অন্তরের মত�ো সুস্থও না। বরং সন্দেহ ও কামনার র�োগে
তাদের হৃদয় র�োগাক্রান্ত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন—
    [1]  সূরা হজ, আয়াত-ক্রম : 5৩
    [2]  সূরা আহযাব, আয়াত-ক্রম : ৬০
    [3]  সূরা মুদ্দাসসির, আয়াত-ক্রম : ৩১
26
রূহের চিকিৎসা
ۡ َّ ۡ
‫َف َیط َم َع ال ِذ ۡی ِف ۡی َقل ِب ٖه َم َر ٌض‬
“ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে।”    [1]
‘এখানে ব্যাধি অর্থ প্রবৃত্তির লালসা। কেননা র�োগব্যাধিমুক্ত কারও সম্মুখ দিয়ে
ক�োন�ো নারী হেঁটে গেলে সে হয়ত�ো তার দিকে তাকাবেই না। অপরদিকে
লালসাগ্রস্ত মানুষ ল�োভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে। এবং সে তার আত্মার
দুর্বলতা ও হৃদয়ের র�োগের স্তর অনুপাতে মন্দ কর্মের দিকে ধাবিত হবে। তাই
নারীরা যখন ক�োমল কণ্ঠে ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলে, তখন অসুস্থ হৃদয়ের
মানুষেরা কুচিন্তায় নিমজ্জিত হয়।’
এতটুকু বলে শাইখ আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘বিষয়টি কি স্পষ্ট হল�ো?
ত�োমাদের আপত্তি কি কাটল?’
আমি বললাম, ‘জি। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।’
শাইখ বললেন, ‘আজকের মত�ো এখানেই সমাপ্তি ঘ�োষণা করছি। এ মজলিসে
আমরা আত্মার ব্যাধি নিয়ে আল�োচনা করলাম। ইনশাআল্লাহ, আগামী মজলিসে
এর প্রতিকার নিয়ে আল�োচনা হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।’

    [1]  সূরা আহযাব, আয়াত-ক্রম : ৩২


নবম মজলিস

অন্তরের আর�োগ্য ও শুশ্রূষা


Ĺ অন্তরের আর�োগ্য ও প্রতিষেধক
নবম মজলিস

অন্তরের আর�োগ্য ও শুশ্রূষা


কথা ছিল আজ অন্তরস্থ র�োগ নিরাময়ের ওষুধপত্র, প্রতিষেধক, উপাদান ও
উপকরণ নিয়ে আল�োচনা হবে। তাই আমরা প্রচণ্ড আগ্রহ ও উদ্দীপনা নিয়ে
শাইখুল ইসলাম তাকিউদ্দিন ইবনু তাইমিয়ার মজলিসে উপস্থিত হয়েছি। এর
কারণ হল�ো, গত মজলিসে শাইখ হৃদয়স্থ ব্যাধির স্বরূপ ও প্রকৃতি প্রসঙ্গে কথা
বলতে গিয়ে অন্তরের জীবন-মরণসহ বিভিন্ন র�োগব্যাধি সম্পর্কিত আল�োচনার
অবতারণা করেছেন। আর আজকের মজলিসে থাকবে সেই সকল ব্যাধির
চিকিৎসা-পদ্ধতি সম্পর্কিত আল�োচনা।
শাইখ মসনদে বসতে বসতেই পুর�ো মজলিস কানায় কানায় ভরে গেল। তিনিও
গাম্ভীর্যপূর্ণ ও দীপ্তিময় বদনে উপস্থিত জনতার দিকে মায়াবী নজরে তাকালেন।
তারপর হামদ-নাত দরূদ ও সালাম পাঠ করলেন, বললেন—‘প্রিয় সুধী! বিগত
হালকায় আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, আজ আমরা অন্তরস্থ
র�োগ নিরাময়ের উপায় ও উপকরণ বলে দেব। কারণ ইত�োপূর্বে আমরা কেবল
এসবের পরিচয়-প্রকৃতি, অনিষ্ট ও ক্ষতিই তুলে ধরেছিলাম। আল্লাহ সুবহানাহু
ওয়া তাআলা আমাদের সহায় হ�োন, তাওফিক দিন।

অন্তরের আর�োগ্য ও প্রতিষেধক


‘প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা! আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, অন্তরের শিফা-
শুশ্রূষার জন্য এমন ঈমানি প্রতিষেধক অপরিহার্য, যা পর্যাপ্ত কার্যকরী ও যথেষ্ট
শক্তিশালী। এই চিকিৎসা গ্রহণে আগ্রহী ও পরিপূর্ণরূপে প্রস্তুত-অন্তরের জন্য
নিম্নোক্ত প্রতিষেধক প্রয়�োগ করা যেতে পারে।
147
অন্তরের আরোগ্য ও শু

‘প্রথম
প্রথম প্রতিষেধক—আল-কুরআন : কুরআন হল�ো অন্তরস্থ যাবতীয় ব্যাধির
জন্য শিফা স্বরূপ—বিশেষত সংশয় ও সন্দেহের মত�ো র�োগের জন্য ত�ো
মহ�ৌষধ। কুরআনের বাণী-বর্ণনা, আয়াত ও নিদর্শন হক ও বাতিলের মধ্যে
স্পষ্ট পার্থক্যরেখা টেনে দেয়; অনুভব-অনুভূতি, চিন্তা-চেতনা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা
বিনষ্টকারী এবং সংশয় উদ্রেককারী যাবতীয় ব্যাধি এমনভাবে সমূলে ধ্বংস করে
যে, এরপর আর বান্দার সত্য-মিথ্যা চিনতে, হক-বাতিল বুঝতে বেগ পেতে হয়
না; প্রতিটা বিষয় সে নিজস্ব রূপ ও প্রকৃতিতে দেখতে সক্ষম হয়৷’
‘কুরআনে রয়েছে প্রজ্ঞা-হিকমত, ওয়াজ-নসিহত, ভীতি-প্রদর্শন, সুসংবাদ-
জ্ঞাপন এবং শিক্ষণীয় ঘটনাবলির বিবরণ, যা অন্তরের র�োগমুক্তিকে একরকম
অপরিহার্য করে ত�োলে। কুরআনের সংস্পর্শে এলে অন্তর সকল সৎকাজের
প্রতি আগ্রহী হয় এবং যাবতীয় অনিষ্টতা ও কদর্যতা এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করে;
ভাল�োবাসতে শুরু করে সরল-সঠিক পথ, ঘৃণা ও অবজ্ঞা তৈরি হয় ভ্রান্ত পন্থার
প্রতি, যদিও একসময় ভুলের প্রতিই তার আসক্তি ছিল, ভাল�োর প্রতি ছিল
অনীহা।’
‘কুরআন হল�ো চিত্ত-বিনষ্টকারী র�োগব্যাধির জন্য এমন এক প্রতিষেধক, যা
র�োগপ্রতির�োধ করেই যাবে, যতক্ষণ-না অন্তর সুস্থ হয়, চিন্তার পরিশুদ্ধি ঘটে
এবং ওই স্বভাব ও প্রকৃতিতে ফিরে আসে, যেমন শরীর সুস্থ হলে তার স্বাভাবিক
প্রক্রিয়া ফিরে পায়। মানুষের অন্তরের খ�োরাক হল�ো ঈমান ও কুরআন। এই
আহার গ্রহণে আত্মা পরিশুদ্ধ ও পরিপক্ব হয়। ঠিক যেমন পরিমিত পানাহারে
মানুষের সুস্বাস্থ্য বহাল থাকে এবং স্থিতি লাভ করে। অধিকন্তু অন্তরের পরিশুদ্ধি
দৈহিক সুস্বাস্থ্যের মত�ো।’
দ্বিতীয় প্রতিষেধক—যাকাত : যাকাতের শাব্দিক অর্থ হল�ো বৃদ্ধি পাওয়া,
‘দ্বিতীয়
পরিপক্ব হওয়া। এখানে এটিই উদ্দেশ্য। কিন্তু কীভাবে? যাকাত শব্দটিকে কর্তার
সাথে সম্পৃক্ত করলে অর্থ দাঁড়ায়, ক�োন�ো কিছুর বৃদ্ধি ঘটা, সুপরিপক্ব হওয়া।
দেহের মত�ো মনেরও উন্নতি-অগ্রগতির প্রয়�োজন আছে। উপরন্তু পরিশুদ্ধ ও
পরিপক্ব হওয়া অবধি অন্তরের সমৃদ্ধি ও উন্নতি একান্ত প্রয়�োজনীয়।’
‘তবে লক্ষণীয় বিষয় হল�ো, দৈহিক উন্নতি ও ঋদ্ধি অর্জনের জন্য স্বাস্থ্যকর
খাবার গ্রহণের পাশাপাশি যেমন ক্ষতিকর খাবার পরিহার করতে হয়, তেমনি
148
রূহের চিকিৎসা

মনের বেলায়ও এটি প্রয�োজ্য। অর্থাৎ পরিমাণ মত�ো উপকারী খাবার খেলে এবং
অখাদ্য-কুখাদ্য ত্যাগ করলে দৈহিক উন্নতি সাধিত হয়। অনুরূপভাবে আত্মিক
ঋদ্ধি ও পরিশুদ্ধির জন্য উপকারী উপাদান গ্রহণ করা এবং ক্ষতিকর সবকিছু
পরিহার করা আবশ্যক। কৃষিকাজের ক্ষেত্রেও এই পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পরিচর্যা ছাড়া ভাল�ো ফলন আশা করা নিছক ব�োকামি।’
তৃতীয় প্রতিষেধক—সাদাকাহ : সাদাকাহ সাধারণ কিছু নয়। এটি গুনাহকে
‘তৃ
এমনভাবে মুছে দেয়, যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়। সাদাকাহর মাধ্যমে
অন্তর পরিশুদ্ধি লাভ করে। তাছাড়া যাকাত শব্দটি গুনাহ থেকে পবিত্রতা হবার
অর্থকে জ�োরাল�োভাব ফুটিয়ে ত�োলে। আল্লাহ তাআলা বলেন—
ْ
‫ُخذ ِم ْن أ� ْم َوا ِل ِه ْم َص َد َق ًة ُت َط ِّه ُر ُه ْم َو ُ َتز ِّكي ِهم ِب َها‬
“আপনি তাদের সম্পদ থেকে সাদাকাহ গ্রহণ করুন, যার মাধ্যমে আপনি
তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং যা তাদের পক্ষে বরকতের কারণ হবে।”’    [1]
‘অনুরূপভাবে অশ্লীলতা-কদর্যতা, পাপাচার ও অনাচার ত্যাগ করলেও অন্তর
পবিত্র হয়। মনের মধ্যে এসবের উপস্থিতি দেহের মধ্যে ক্ষতিকর উপাদান
বিদ্যমান থাকার মত�ো। যেমন বিষাক্ত রক্ত বের করে ফেললে শরীর ব্যথামুক্ত
হয়, প্রাকৃতিক শক্তি বৃদ্ধি পায়, স্বস্তি ও শান্তি অনুভূত হয়, অনন্তর স্বাস্থ্যেরও
উন্নতি হয়, একইভাবে বান্দা যখন গুনাহ থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা করে,
তখন তার আত্মিক শক্তি বৃদ্ধি পায়, নেকআমলের প্রতি স্পৃহা জাগে এবং
বিভিন্ন অনিষ্ট ও কদর্যতা থেকে মুক্ত থাকায় মানসিক স্বস্তি ও প্রশান্তি অনুভূত
হয়। তাই বলা হয়—অন্তরের বৃদ্ধি ও ঋদ্ধি হল�ো পরিশুদ্ধি ও পরিপক্বতার
মধ্যে। আল্লাহ তাআলা বলেন—
‫الل َع َل ْي ُك ْم َو َر ْح َم ُت ُه َما َ ز َك ٰى ِم ُنكم ّ ِم ْن أ� َح ٍد أ� َب ًدا‬ ُ َ َ َ
ِ َّ ‫َول ْول ف ْضل‬
“যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া তোমাদের প্রতি না থাকত, তবে তোমাদের
কেউ কখনও পরিশুদ্ধ হতে পারতে না।”    [2]

    [1]  সূরা তাওবা, আয়াত-ক্রম : ১০৩


    [2]  সূরা নুর, আয়াত-ক্রম : ২১
149
অন্তরের আরোগ্য ও শু
َ َ
‫ۖ ُه َو أ ْ�ز َك ٰى ل ُك ْم‬ ‫و ِإن ِق َيل ل ُك ُم ْار ِج ُعوا َف ْار ِج ُعوا‬.َ
“যদি তোমাদেরকে বলা হয় ফিরে যাও, তবে ফিরে যাবে—এটিই
তোমাদের জন্যে অধিক পবিত্রতার।”    [1]
َ ٰ َ ‫ُقل ِّل ْل ُم ْؤ ِمن‬
‫ۗ ِإ َّن‬ ‫ۚ َذ ِل َك أ ْ�ز َك ٰى ل ُه ْم‬ ‫ين َي ُغ ُّضوا ِم ْن أ� ْب َص ِار ِه ْم َو َي ْح َف ُظوا ُف ُرو َج ُه ْم‬ ِ
َ‫الل َخب ٌير ب َما َي ْص َن ُعون‬. َ َّ
ِ ِ
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং য�ৌনাঙ্গের
হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য সর্বাধিক পবিত্রতা রয়েছে। নিশ্চয় তারা
যা করে আল্লাহ তা সম্পর্কে অবহিত।”    [2]

‫ َو َذ َك َر ْاس َم َر ِّب ِه َف َص َّل ٰى‬. ‫ق ْد أ� ْف َل َح َمن َتز َّك ٰى‬.َ


“নিশ্চয় সাফল্য লাভ করবে সে, যে শুদ্ধ হয় এবং আপন রবের নাম
স্মরণ করে, অতঃপর নামাজ আদায় করে।”    [3]
َ ‫ َو َق ْد َخ‬. ‫ق ْد أ� ْف َل َح َمن َ ز َّك َاها‬.َ
‫اب َمن َد َّس َاها‬
“যে নিজেকে শুদ্ধ করে, সেই সফলকাম হয় এবং যে নিজেকে কলুষিত
করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়।”    [4]
َ َ ُْ ََ
‫يك ل َع َّل ُه َ َّيز َّك ٰى‬ ‫ وما يد ِر‬.
“আপনি কী জানেন, সে হয়তো পরিশুদ্ধ হত�ো।”    [5]
َ َ َّ
‫ َو أ� ْه ِد َي َك ِإل ٰى َر ِّب َك َف َت ْخ َش ٰى‬. ‫ف ُق ْل َهل ل َك ِإل ٰى أ�ن َتز َّك ٰى‬.َ
“সুতরাং (তাকে) বলুন, ত�োমার কি এ আগ্রহ আছে যে তুমি শুধরে
যাবে? আমি তোমাকে তোমার রবের দিকে পথ দেখাব, যাতে তুমি তাঁকে
    [1]  সূরা নুর, আয়াত-ক্রম : ২৮
    [2]  সূরা নুর, আয়াত-ক্রম : ৩০
    [3]  সূরা আ’লা, আয়াত-ক্রম : ১৪-১৫
    [4]  সূরা শামস, আয়াত-ক্রম : ৯-১০
    [5]  সূরা আবাসা, আয়াত-ক্রম : ৩
150
রূহের চিকিৎসা

ভয় কর।”’    [1]
আমি বললাম, ‘শাইখের কথা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, পাপাচার ও
অনাচার ত্যাগ করাই অন্তরের ঋদ্ধি ও পরিশুদ্ধির কারণ। তাছাড়া গুনাহ ও
কুকর্ম যদিও বাস্তবতার বিবেচনায় একরকম কমতি ও ঘাটতি, কিন্তু যখন অন্তর
গুনাহমুক্ত হয়, তখন এর পরিবর্তে তাতে বৃদ্ধি ও ঋদ্ধি ঘটে।’
শাইখ বললেন, ‘হ্যাঁ, বিষয়টি এমনই। অর্থাৎ যদিও তাযকিয়ার    [2] মূলে হল�ো
খাইর-বরকত বা বৃদ্ধি-সমৃদ্ধি, তথাপি এটি অর্জিত হয় অকল্যাণ দূরীকরণের
মাধ্যমেই। একারণেই তাকিয়া উভয়টির সমন্বয়ে সাধিত হয়। আল্লাহ তাআলা
বলেন—
َ ‫ َّال ِذ َين َل ُي ْؤ ُت‬. ‫ين‬
‫ون َّالز َك َاة‬ َ ‫َو َو ْي ٌل ِّل ْل ُم ْشرك‬
ِِ
“আর মুশরিকদের জন্যে রয়েছে দুর্ভোগ, যারা যাকাত আদায় করে না।”    [3]
‘বক্ষ্যমাণ আয়াতে যাকাত দ্বারা উদ্দেশ্য—তাওহিদ ও ঈমান। অধিকন্তু এর
মাধ্যমেই অন্তরের প্রাথমিক ও সর্ববৃহৎ পরিশুদ্ধি ঘটে। কেননা এটি ইসলামের
এমন এক মূলমন্ত্র, যা অন্তরে আল্লাহর প্রভুত্বের ওপর দৃঢ়তা স্থাপন করে এবং
সৃষ্টিকুলের দাসত্বের প্রতি অনীহা সৃষ্টি করে। আর এটাই হল�ো পবিত্র কালিমা—
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর হাকিকত তথা বাস্তবতা। আর এই প্রত্যয়ই কেবল
আত্মশুদ্ধির দ্বার উম্মুক্ত করতে পারে।’
চতুর্থ প্রতিষেধক—তাযকিয়া : ‘তাযকিয়ার শাব্দিক অর্থ হল�ো—ক�োন�ো কিছু
‘চতু
পবিত্র করা। এই পবিত্রকরণ হতে পারে কারও ব্যক্তিসত্তায়৷ আবার হতে পারে
কারও বিশ্বাস ও বর্ণনায়। প্রথমটির উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে—‫عدلته‬
অর্থাৎ তাকে তুমি ন্যায়পরায়ণ বানালে; এভাবে তখন বলা যাবে, যখন ত�োমার
ওসিলায় কারও নফস ন্যায়পরায়ণতার গুণে গুণান্বিত হবে। দ্বিতীয়টির উদাহরণ
হল�ো কুরআনের আয়াত—
َ
‫َفل ُ َتز ُّكوا أ� ُنف َس ُك ْم‬
    [1]  সূরা নাযিয়াত, আয়াত-ক্রম : ১৮-১৯
    [2]  আত্মশুদ্ধি
    [3]  সূরা ফুসসিলাত, আয়াত-ক্রম : ৬-৭
151
অন্তরের আরোগ্য ও শু

“অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা ক�োরো না।”’    [1]


‘অর্থাৎ ত�োমরা নফসের পবিত্রতার বর্ণনা দিয়�ো না। এই আয়াতের উদ্দেশ্য আর
َّ َْ‫َ ْ أ‬
সূরা শামস-এর নবম আয়াত (তথা : ‫‘—قد �فل َح َمن َ زك َاها‬যে নিজেকে শুদ্ধ
করে, সেই সফলকাম হয়।’    [2])-এর উদ্দেশ্য এক নয়৷ কেননা কে সত্যিকারের
আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে পেরেছে, তা কেবল আল্লাহই বলতে পারেন। কুরআনে
ইরশাদ হচ্ছে—
‫ُه َو أ� ْع َل ُم ِب َم ِن َّات َق ٰى‬
“তিনি ভাল�ো জানেন কে সংযমী।”’    [3]
‘যাইনাব রাদিয়াল্লাহু আনহা’র ইসলামপূর্ব নাম ছিল বাররাহ। তাঁকে বলা
হয়েছিল, “নিজেকে নিজেই পবিত্র দাবি করছ?” অতঃপর নবীজি সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নাম রাখেন যাইনাব। আর আল্লাহ তাআলার বাণী—
َ ‫أ� َل ْم َت َر ِإ َلى َّال ِذ َين ُ َيز ُّك‬
ُ َّ ‫ۚ َبل‬ ‫ون أ� ُنف َس ُهم‬
‫الل ُ َيز ِّكي َمن َي َش ُاء‬ ِ
“আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা নিজেদেরকে পূত-পবিত্র বলে
থাকে, অথচ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে পবিত্র করেন!”’    [4]
‘এই আয়াতের উদ্দেশ্য হল�ো—ওই সকল ল�োকের অবস্থা বর্ণনা করা, যারা
নিজেকে পরিশুদ্ধ করে এবং মানুষের কাছে সেটা বলে বেড়ায়। যেমন নাকি
সত্যায়নকারী সাক্ষীদেরকে ন্যায়পরায়ণতার ব্যাপারে সত্যায়ন করে।’
পঞ্চম প্রতিষেধক—ন্যায়পরায়ণতা : পরিমিতিব�োধ, মধ্যপন্থা ও ন্যায়পরায়ণতা
‘পঞ্চম
নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায়পরায়ণতার মাধ্যমে অন্তর পরিশুদ্ধ হয়, যেমন
জুলুমের কারণে হয় নষ্ট ও ভ্রষ্ট। এ কারণে সকল গুনাহই বান্দার নিজের ওপর
জুলুম ও অন্যায় হিসেবে বিবেচিত। আর জুলুম ও অন্যায় হল�ো ন্যায়ের উল্টো।
ত�ো, গুনাহের পরিস্থিতিতে মানুষ নিজের সঙ্গে ন্যায় নয় বরং অন্যায় আচরণ
করে থাকে। উপরন্তু অন্তরের পরিশুদ্ধি ঘটে ন্যায় ও ইনসাফের মাধ্যমে; অন্যায়
    [1]  সূরা নাজম, আয়াত-ক্রম : ৩২
    [2]  সূরা শামস, আয়াত-ক্রম : ৯
    [3]  সূরা নাজম, আয়াত-ক্রম : ৩২
    [4]  সূরা নিসা, আয়াত-ক্রম : ৪৯
152
রূহের চিকিৎসা

ও অবিচারে তাতে অনিষ্টতা ও কদর্যতা ছড়ায়। যখন মানুষ নিজের ওপর


জুলুম করে, তখন সে নিজেই একসাথে জালিম ও মাজলুম তথা অত্যাচারী ও
অত্যাচারিত হয়। অনুরূপভাবে, কেউ ইনসাফ করলে তা নিজের প্রতি সুবিচার
বলা যায়। আসলে আমল যেহেতু তার থেকেই ঘটছে, তাই এর ফলাফলও তার
দিকেই বর্তাবে—সহজ হিসেব। আল্লাহ তাআলা বলেন—
َ
‫ل َها َما َك َس َب ْت َو َع َل ْي َها َما اك ْـ َت َس َب ْت‬
“সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার ওপর বর্তায় যা সে
করে।”’    [1]
‘ষষ্ঠ
ষষ্ঠ প্রতিষেধক—আমল : ভাল�ো-মন্দ, সৎ-অসৎ—সবধরনের আমলেরই
দুটি প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান। একটি বাইরে, আরেকটি ভেতরে, তথা
অন্তরে। শুধু তাই নয়, বাইরের আগেই বরং আভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
আর নফস পরিশুদ্ধ হয় আদল ও ইনসাফের মাধ্যমে এবং খারাপ ও বিনষ্ট হয়
জুলুমের কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেন—
‫ۖ َو َم ْن أ� َس َاء َف َع َل ْي َها‬ ‫َّم ْن َع ِم َل َصا ِل ًحا َف ِل َن ْف ِس ِه‬
“যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যই করে, আর যে অসৎকর্ম
করে, তা তার ওপরই বর্তাবে।”    [2]

‫ۖ َو ِإ ْن أ� َس أ� ُت ْم َف َل َها‬ ‫ِإ ْن أ� ْح َس ُنت ْم أ� ْح َس ُنت ْم ِ َأل ُنف ِس ُك ْم‬


“তোমরা যদি ভাল�ো কিছু কর, তবে নিজেদের জন্যই ভাল�ো করবে; আর
যদি মন্দ কিছু কর, তবে তাও নিজেদের জন্যই।”’    [3]
‘পূর্ববর্তী মনীষীদের কেউ কেউ বলেছেন—“সৎকাজসমূহ অন্তরে আল�ো ছড়ায়,
দেহের শক্তি বাড়ায়, চেহারা উজ্জ্বল করে, রিজিকে প্রশস্ততা আনে, সৃষ্টির প্রতি
ভাল�োবাসা জাগায়; আর বদকাজ অন্তরকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে, চেহারায় কলঙ্ক
লেপে, শরীরকে নিস্তেজ করে, রিজিকে সংকীর্ণতা আনে এবং মানুষের প্রতি
    [1]  সূরা বাকারা, আয়াত-ক্রম : ২৮৬
    [2]  সূরা ফুসসিলাত, আয়াত-ক্রম : ৪৬
    [3]  সূরা ইসরা, আয়াত-ক্রম : ৭
153
অন্তরের আরোগ্য ও শু

ঘৃণা সৃষ্টি করে।” আল্লাহ তাআলা বলেন—


ٌ ‫ُك ُّل ْامرئ ب َما َك َس َب َر ِه‬
‫ين‬ ٍِ ِ
“প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।”    [1]

‫ ُك ُّل َن ْف ٍس ِ ب َما َك َس َب ْت َر ِه َين ٌة‬.


“প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী।”    [2]
َ َ َ ْ َ ‫َ أ‬
ِ َّ ‫َوذ ِّك ْر ِب ِه �ن ُت ْب َسل َنف ٌس ِب َما َك َس َب ْت ل ْي َس ل َها ِمن ُد ِون‬
‫الل َو ِل ٌّي َول َش ِف ٌيع‬
َّ َٰ ْ َّ
‫ۗ أ�ول ِئ َك ال ِذ َين أ� ْب ِس ُلوا ِب َما َك َس ُبوا‬ ‫و ِإن َت ْع ِد ْل ُك َّل َع ْد ٍل ل ُي ْؤ َخذ ِم ْن َها‬ َۖ
“তাদেরকে কুরআন দ্বারা উপদেশ দিন, যাতে কেউ নিজ কর্মের কারণে
এমনভাবে গ্রেফতার না হয়ে যায় যে, আল্লাহ ব্যতীত তার কোন�ো
সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী আর থাকে না; এমনকি যদি তারা বিনিময়
হিসেবে জগতের সবকিছু প্রদান করে, তবু তাদের কাছ থেকে তা গৃহীত
হবে না। এরাই ওই সকল ল�োক যারা নিজেদের কৃতকর্মের কারণে ধরা
পড়ে গেছে।”’    [3]
‘‫ تبسل‬শব্দের অর্থ হল�ো বন্ধককৃত, আবদ্ধ বা কারারুদ্ধ। এখানে যে বিষয়টি
লক্ষণীয় তা হল�ো—মানবদেহ যখন র�োগমুক্ত হয়, তখন সে তার স্বাভাবিক
রুচিব�োধ ফিরে পায়। অসুস্থ হলে আবার এই রুচিব�োধের অনুপস্থিতি দেখা দেয়।
ত�ো, একজন মানুষের অবস্থা যে পর্যায়েই থাকুক না কেন, সে তার সাধ্যানুযায়ী
সর্বোচ্চ ভাল�ো অবস্থানে যেতে চাইবে এটাই ত�ো কাম্য। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ
করেন—
َ ُ َ
‫َولن َت ْس َت ِط ُيعوا أ�ن َت ْع ِدلوا َب ْي َن ِّالن َس ِاء َول ْو َح َر ْص ُت ْم‬
“তোমরা চাইলেও স্ত্রীদের মধ্যে সমতাবিধান করতে সক্ষম হবে না।”    [4]

    [1]  সূরা তুর, আয়াত-ক্রম : ২১


    [2]  সূরা মুদ্দাসসির, আয়াত-ক্রম : ৩৮
    [3]  সূরা আনআম, আয়াত-ক্রম : ৭০
    [4]  সূরা নিসা, আয়াত-ক্রম : ১২৯
154
রূহের চিকিৎসা
َّ َ ْ ْ ْ
‫ۖ ل ُن َك ِّل ُف َن ْف ًسا ِإل ُو ْس َع َها‬ ‫َو أ� ْو ُفوا ال َك ْي َل َوال ِم َيز َان ِبال ِق ْس ِط‬
“ন্যায্যভাবে ওজন ও মাপ পূর্ণ কর�ো। তবে হ্যাঁ, আমি কাউকে তার
সাধ্যের অতীত কিছু চাপিয়ে দিই না।”’    [1]
‘আল্লাহ তাআলা রাসূলদেরকে পাঠিয়েছেন এবং কুরআন নাজিল করেছেন,
যেন তাঁরা মানুষের মধ্যে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেন। আর সর্বশ্রেষ্ঠ ইনসাফ হল�ো,
এক আল্লাহর ইবাদত করা যার ক�োন�ো শরিক নেই; এর পরবর্তী ইনসাফ হল�ো,
মানুষের হক আদায়েরে ক্ষেত্রে নিষ্ঠার আচরণ করা; সর্বশেষ নিজের প্রতি জুলুম
না করা।’
আল�োচনার এ পর্যায়ে এসে আমি বললাম, ‘মুহতারাম! আপনার কথা থেকে
আমরা বুঝতে পারলাম যে, ইনসাফ, পরিমিতিব�োধ ও ন্যায়পরায়ণতা হল�ো
অন্তরের সুস্থতা ও নিরাপত্তার উপকরণ। কেননা জুলুম ও অন্যায় হল�ো আত্মিক
ব্যাধির বাহন।’
শাইখ বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি ঠিকই বলেছ। জুলুম ও অবিচার অন্তরের অন্যতম
প্রধান র�োগ। আর ইনসাফ হল�ো অন্তরস্থ যাবতীয় র�োগের আর�োগ্যসাধনের
প্রতিষেধক।’
‘ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল রহমাতুল্লাহি আলাইহি কিছু মানুষকে উদ্দেশ করে
বলেছিলেন, “যদি তুমি নিজে সঠিক পথে থাক, তবে অন্যকে ভয় পাবে কেন?”
বলার উদ্দেশ্য হল�ো—মাখলুককে ভয় করাও শিরক ও অন্যান্য গুনাহের মত�োই
একটি আত্মিক ব্যাধি। সুতরাং এটি থেকেও বেঁচে থাকতে হবে।’
আজ এখানেই শেষ হল�ো। আগামী মজলিসে আবারও আমরা অন্তরস্থ
র�োগব্যাধির চিকিৎসা নিয়ে শাইখের আল�োচনা শুনব, ইনশাআল্লাহ।

    [1]  সূরা নিসা, আয়াত-ক্রম : ১৫২

You might also like