Download as pdf or txt
Download as pdf or txt
You are on page 1of 13

MORNING COFFEE

Working Title
(Draft 11)

written by

I.K.JOEL

MONIRUL ISLAM RUBEL

BASHAR GEORGIS

INOVASI FILMS
H#1167; MIRPUR DOHS
+8801716256165
inovasifilms@gmail.com
www.inovasifilms.com
Sc: 01; Day - EXT; Early Morning; teachers quarter;

মর্নিং ওয়াকের ড্রেস পরা অবস্থায় ইমরান কবির (৫৮) খোঁড়াতে খোঁড়াতে পাগলের মতো দৌড়াচ্ছে। তাঁর
প্যান্টের নিচের অংশ নিজের রক্তে ভিজে গেছে। বোঝা যাচ্ছে তাকে কেউ আঘাত করার জন্য ধাওয়া
করছে। ইমরান কবির এর চেহারা দেখা যাচ্ছে না। শুধু পা এর নিচের দিকটাই রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা
যাচ্ছে। সেই রক্ত প্যান্ট থেকে চু ইয়ে রাস্তায় পড়ছে। এক পর্যায়ে তিনি দৌড়াতে না পেরে পড়ে যান মাটিতে।

CUT TO:
Sc: 02; day int; imran's bed room and Kitchen; early morning

স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যায় ইমরান কবিরের। ঘুম থেকে উঠে বসেন বিছানায়। মুখ ঘেমে গেছে। টেবিল
ঘড়ির দিকে দেখেন। সাতটা বাজতে দশ মিনিট বাকি। সাইড টেবিলে রাখা বোতল থেকে গ্লাসে ঢেলে
ঢকঢক করে পানি খান। বিছানার পাশ থেকে ক্রাচ নিয়ে উঠে দাঁড়ান। ধীরে ধীরে রান্না ঘরের দিকে
যান।  

CUT TO:
Sc: 03; DAY INT; IMRAN'S kitchen; EARLY MORNING

রান্নাঘরে গিয়ে কফি বানানোর জন্য ইলেকট্রিক ওয়াটার কেটলিটা সুইচ অন করেন। তারপর কফির জার
পেলেও কফি মেটটা খুজেঁ পান না। কিচেন কেবিনেটে খোঁজা শুরু করেন। কেবিনেটে থাকা কফি-মেট এর
বয়াম খালি। বিরক্ত হন ইমরান।

CUT TO:
Sc: 04; DAY INT; IMRAN'S study room; EARLY MORNING

ইমরান কবির স্টাডি রুমে টেবিলের ওপরে থাকা ল্যাপটপ ওপেন করেন। একটা ডক ফাইলে অর্ধেক লেখা
আর্টি কেলের শিরোনাম--‘নির্মল করো মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’।

তিনি আরো কিছু লাইন লিখতে শুরু করেন। একটু পরে ঘরের ইন্টারকম বেজে ওঠে। তিনি আবার উঠে
যান রিসিভ করতে-

CUT TO:

স্টাডি রুমের পাশে এক কোণে ইন্টারকমটা রিসিভ করেন তিনি- 

ডঃ ইমরান
কি রোকেয়া এসেছে?

CUT TO:
Sc: 05; DAY ext; Imran's house gate; MORNING

বাড়ির গেইটে পুলিশদের সামনে রোকেয়া দাঁড়িয়ে আছে। হাতে একটা ছোট ব্যাগ।

পুলিশ
(নিচের ডিউটি পুলিশ)
জি স্যার!

1
ডঃ ইমরান
(অফস্ক্রিন ভয়েজ)
আপনারা মেয়েটাকে প্রতিদিন দাড় করিয়ে ফোন করেন কেন?

পুলিশ দুইজন রোকেয়ার ব্যাগ চেক করে ছেড়ে দেয়। ( ব্যাগ চেক করার সময় মেয়েটার মুখে
এক রকমের অসস্বস্তি দেখা যায়। ) রোকেয়া ধীর স্থির গতিতে কিছু টা এগিয়ে যায়। পেছন
থেকে একজন পুলিশ ডাক দেয় হঠাৎ- রোকেয়া ঘুরে তাকায় । পুলিশ এক মুহূর্ত কি যেন
ভাবে তারপর ইশারায় চলে যেতে বলে।

রোকেয়া আবার এগিয়ে যায় সিড়ির দিকে।

CUT TO:

Sc: 06: DAY INT; IMRAN'S HOUSE; COMMON SPACE and Kitchen;
MORNING

ঁ বেয়ে ওপরে ওঠে। দেখে ফ্ল্যাটের মেইন দরজা খোলা। ভেতরে ইমরান কবির দাঁড়ানো।
রোকেয়া সিড়ি
ইমরানকে সালাম জানিয়ে রোকেয়া এগিয়ে যায় রান্নাঘরের দিকে । পিছনে ইমরান কথা বলতে থাকে।

ডঃ ইমরান
কিছু ই করার নাইরে মা। প্রতিদিন দাড় করিয়ে চেক টেক করা,
ফোন করা… আমিও বিরক্ত হই কিন্তু ওই যে নিয়ম ...নিয়ম।

রোকেয়া
সমস্যা নাই স্যার।

রোকেয়া কিচেনে গিয়ে দেখে হট ওয়াটার কেটলিতে পানি গরম করে। চেয়ে দেখে কফি মগে শুধু কফি।
সাথেই খালি কফি মেটের জার ।

ডঃ ইমরান
নিজেই বানানোর ট্রাই করতে চাচ্ছিলাম কিন্ত; কফি মেটের
ব্যয়ামট্যাঁ খালি দেখলাম...

রোকেয়া
নতু ন কৌটা আছে তো স্যার। উপরের কেবিনেটে…

বলেই দুই জনই ইমরান সাহেবের পায়ের দিকে তাকায়। রোকেয়া চোখ সরিয়ে নেয়। কারন খোঁড়া পা নিয়ে
অত উঁচুতে কফি মেটের জার নাগাল পাওয়ার কথা না। রোকেয়া ছোট একটা টু ল নিয়ে কেবিনেট এর উপর
থেকে কফি মেটের জারটা নামিয়ে আনে। ব্যাপারটাকে স্বাভাবিক করার জন্য বলে উঠে - 

রোকেয়া
সার আপনে লেখার টেবিলে যান। আমি বানায়া নিয়ে
আসতেছি।

2
ইমরান সাহেব খোঁড়াতে খোঁড়াতে চলে যান। রোকেয়া কফি বানাতে শুরু করে। কফি বানাতে বানাতে দুই
ঘরের মাঝখান থেকে দুই জনের মধ্যেই কথা চলতে থাকে।

( অফ ভয়েজে ) 

রোকেয়া
আজকে যে এতো সকাল সকাল উঠলেন?

ডঃ ইমরান
হ্যা

রোকেয়া
কেন স্যার? ঐ খারাপ স্বপ্নডা আবার দেকছেন?

ডঃ ইমরান
হু, দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।

রোকেয়া
প্রত্যেকদিন আয়াতু ল কুরসি পইরা বুকে ফুঁ দিয়া ঘুমাইবেন।
তাইলেই কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখবেন না…
(ইমরান হাসে মৃদু ভঙ্গিতে)

ডঃ ইমরান
চাইলেই কি আর ভু লে থাকা যায়। ছয় মাসে পায়ের ব্যথাতো
ভাল হয়ে গেছে কিন্তু মনের ব্যথাটা তো আর যায় না।

Sc: 07; DAY INT; IMRAN'S STUDY ROOM; MORNING

এর মধ্যেই রোকেয়া কফি বানিয়ে টেবিলে গরম ধোয়া উড়া কফির কাপ টা রাখে।

রোকেয়া
স্যার আপনে সারাদিন বইয়া বইয়া কি লেহেন । 
ওইসব হাবিজাবি লেখা বাদ দেন তো -  কি দরকার
খামাকা মাইনষের বিশ্বাস নিয়া এত কথা কওনের!

ডঃ ইমরান
শোনো, যারা আমাকে খুন করতে এসেছিলো করেছিল
ওরা বিশ্বাসী না,ক্ষমতালোভী - ব্যবসায়ী।

ইমরান ইশারায় বসতে বলেন রোকেয়াকে। রোকেয়া খানিকটা অস্বস্তি নিয়ে উল্টো পাশের একটু দূরের
চেয়ারটাতে বসে পরে।

3
(ছাত্রী পড়ানোর ভঙ্গিতে বলতে থাকনে।
অনেকটা নিজের সাথে কথা বলার ভঙ্গিতে
কথা গুলো বলতে থাকবেন।)

ডঃ ইমরান
ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করা ওদের কাজ! সাধারণ মানুষদের
বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে ওরা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে।
ওইসব ব্যবসায়ীর দল চায় আমাদেরকে ওদের হাতের পুতুল
বানিয়ে রাখতে... 

রোকেয়া উঠে চলে যেতে নিয়ে আবার বসে পরে। এবার একটু অন্যরকম মুডে

রোকেয়া
স্যার মানুষ তো ওপরওয়ালার হাতের পুতুলই...

ইমরান
হ্যা মানুষ ওপরওয়ালার তৈরি পুতুল। তবে তিনি মানুষকে
নিজের শক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে চলার ক্ষমতাও
দিয়েছেন...আমাদের ভু লে গেলে চলবে না যে আমরা কেমন
ভাবে নিজের জীবন গড়ে তু লতে চাই, সেটা বেছে নেওয়ার
স্বাধীনতা সব সময় আমাদের হাতেই থাকে..

রোকেয়া শূন্য দৃষ্টিতে ইমরান সাহেবের কথা শুনতে থাকে। গভীর চোখে তাকিয়ে থাকে ইমরান সাহেবের
চোখের দিকে। তারপর একসময় দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে চলে যায়।পেছনে ইমরান সাহেবের বকবক চলতেই
থাকে।

ডঃ ইমরান
শোনো রোকেয়া, ছোটবেলায় সার্ক াস দেখেছো না?

রোকেয়া
হুমম, কত দেখছি

ডঃ ইমরান
সার্ক াসের হাতির বাচ্চাদের একটা হালকা চেইন  দিয়ে বেঁধে
রাখা হয়, তখন  তারা খুব চেষ্টা করে পালানোর। কিন্তু বহু
চেষ্টা করেও পালাতে পারে না, একটা সময় চেষ্টা করাই বন্ধ
করে দেয়। পরে যখন হাতিরা বড় হয়ে যায় তখনও সেই
হাতিটা কে ঠিক একই চেইন দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। অভ্যাসের
কারণে হাতিটি নিজেকে ছাড়ানোর কোনো চেষ্টাই করেনা। এই
জিনিসটা আমাদের মানুষদের সাথেও ঘটে।

উপরের কথা গুলো শুনতে শুনতে আমরা দেখবো কোলাজ শটস: সাথে মিউজিক বাজবে।

১। রোকেয়া রান্নাঘরে বাসন মাজছে।

২। শব্দ করে কল ছেড়ে দিচ্ছে।

4
৩। প্রেশার কুকারে মাংস হয়ে উঠার সিটি বেজে উঠবে।

৪। রক্তাক্ত ছু রিটা পানি দিয়ে ধুবে।

৫। ইমরান সাহেব খুব মনোযোগ দিয়ে ল্যাপটপে লিখছেন।

৬। কিছু সময় পর পর চশমা খুলে পরিষ্কার করার চেষ্টা করছেন।

৭। একটু ঝিমুনি ঝিমুনি ভাব দেখা যাচ্ছে।

হঠাৎ শুনতে পায় স্টাডি রুম থেকে ইমরানের চিৎকার-

ডঃ ইমরান
(অফ ভয়েজ)
রোকেয়া রোকেয়া…

SC: 08; DAY INT; IMRAN'S STUDY ROOM; MORNING

রোকেয়া স্টাডি রুমে ঢোকে। সে খেয়াল করে করে ইমরান ল্যাপটপের সামনে বসে আছে। পাশেই ধোঁয়া
উড়া কফির মগ। প্রায় খালি। রোকেয়া কাছে আসে ইমরানের। তাকে দেখে ইমরান বলে-
(বেশ অসুস্থ ভঙ্গিতে)

ডঃ ইমরান
রোকেয়া আমার চোখ কেমন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে...মাথাটা
ক্যামন যেন ঝিম ঝিম করছে।

রোকেয়া
(হাতের পাচ আঙ্গুল বাড়িয়ে)
বলেন তো এইখানে কয়টা আঙু ল?

ডঃ ইমরান
বুঝতে পারছি না
(রোকেয়া অনেকটা নার্ভ াস ভঙ্গীতে)

রোকেয়া
বাহ তাহলে কাজ শুরু হয়েছে!

(এখানে রোকেয়ার শরীরি ভঙ্গি, চাহনি, মুখের ভাষা সবই পরিবর্তি ত হয়ে যাচ্ছে)

CUT TO BLACK.

5
SC: 09; DAY INT; IMRAN'S STUDY ROOM; MORNING

SLOW FADE IN

স্টাডিরুমের ইমারান সাহেবকে দেখা যাচ্ছে। মুখে মোটা মাস্কিন টেপ। হাত দুটো পিছনে বাধা। চেয়ারটা
আর আগের পজিশনে নেই। টেবিলের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। রোকেয়াকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।

(ফোনিক অডিও )

ফোনের অপর প্রান্ত


ছোট একটা কাজে গত এক মাস ধরে প্রতিদিন ধরেই ফেইল
করেছ। please finish it today. Did that medicine
work? কাজ হয়েছে?

রোকেয়া
জী । কাজ শুরু হয়েছে।
(রোকেয়াকে অনেক অস্থির দেখাচ্ছে)

ফোনের অপর প্রান্ত


মনে সাহস রাখো। তু মি অন্যায় কিছু করছ না। এই রকম
একটা মানুষের বেঁচে থাকার কোন ও অধিকার নেই।

রোকেয়া
জী।

একই ফ্রেমে আমরা রোকেয়াকে ঢু কতে দেখি। তাকে আগের মতো লাগছে না। এখন তাকে একটু
কনফিডেন্ট লাগছে। সে দ্রুত জানালার কাছে যায়। জানালা লাগিয়ে পর্দ া টেনে নেয়। পর্দ া
টানতে গিয়ে দেখে দুজন পুলিশের মাঝে একজন পুলিশের হাতে দৈনিক পত্রিকা। তিনি পত্রিকা
নিয়ে হেঁ টে আসছে। রোকেয়া দ্রুত জানালা থেকে সরে আসে। এসির রিমোট দিয়ে এসি ছাড়ে।
বাইরে আউট ডোর ইউনিট শব্দ করে চালু হয়। আমরা রোকেয়ার হাতে মাংস কাটার চাকু
দেখতে পাই। সে ইমরান সাহেবের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলেন -

রোকেয়া
চিৎকার করার চেষ্টা করলে কিন্তু গলায় বসিয়ে
দিব...দরোজার নিচ দিয়ে দিতে বলবেন..

মুখ থেকে মাস্কিন টেপ আস্তে করে টান মেরে সরায়। রোকেয়া তার কোমড়ে পেচানো ওড়নায়
পিছন দিকে আটকে রাখা মাংস কাটার cleaver knife টা বের করে ইমরানের গলার
কাছে ধরে। ইমরান কবিরকে  ভীষণ আহত দেখায়। এমন সময় কলিং বেল বাজে। রোকেয়া
আলতো করে ছু রিটা গলার কাছে চেপে ধরে। ভয়ে কুঁ কড়ে উঠেন ডঃ ইমরান।এক মুহূর্তে র
নীরবতা। রোকেয়া আবারো গলায় আলতো করে চাপ দেয়। ইমরান নিঃশ্বাস চেপে ধরে।
আবারো কলিং বেল বেজে উঠে। ইমরান কথা বলার আগে একবার দেখে রোকেয়াকে । তাকে
ভীষণ আতংকিত দেখাচ্ছে।

6
পুলিশ
স্যার পেপার

ডঃ ইমরান
দরোজার নিচ দিয়ে দাও। রোকেয়া ব্যস্ত…

দরোজার নিচ দিয়ে পেপার দিয়ে যায় পুলিশ। আমরা পুলিশের বুট জুতা চলে যাওয়ার আওয়াজ
পাই। রোকেয়া কিছু সময় অপেক্ষা করে । জানালার কাছে গিয়ে কনফার্ম করে উপরে উঠে আসা
পুলিশ আগের অবস্থানে ফিরে গেছে।

* নিচের কথা গুলো ল্যাপটপ এর স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বলবে। সেই সাথে কি যেন খুজ
ঁ ছে
এমন ভঙ্গীতে চলতে থাকবে। 

ডঃ ইমরান
কে তু মি?

রোকেয়া
নাম জানতে চাইছেন? কি হবে জেনে?

ডঃ ইমরান
কি চাও আমার কাছে?

রোকেয়া
একজন মৃত মানুষের কাছে কি বা চাইবার আছে?

ইমরান - ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে …

রোকেয়া
এখনো বুঝেননি? আরে আপনার মৃত্যু তো আরও ছয়
মাস আগেই হয়ে যাওয়ার কথা। অল্পের জন্য বেঁচে
গেছেন। ( পায়ের দিকে ইশারা করে) । কিন্তু আপনি
এখনো শোধরাননি। প্রতি সপ্তাহেই ‘প্রগতিশীলতা’ ‘মুক্ত
চিন্তা’ ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ ইত্যাদি ইত্যাদির নামে
আপনি লিখেই যাচ্ছেন। কেন? হুম। 

রোকেয়া
এই যে, পেয়েছি।

রোকেয়া চেয়ারে বসে ইমরান সাহেবের মোবাইল ফোনটার ভিডিও অন করে। রোকেয়াকে যেন
উত্তেজনা ঝাপটে ধরেছে। তার হাত কাঁপতে দেখা যায়। গলার স্বর ভাঙ্গা শোনায়। সে কাঁপা
কাঁপা গলায় বলতে থাকে।

রোকেয়া
বলেন

ডঃ ইমরান

7
কি বলবো?

রোকেয়া
কনফেস করেন। মানুষতো মৃত্যুদণ্ডের আগে নিজের শেষ
ইচ্ছার কথা বলে তবে এই বিশেষ ক্ষেত্রে আপনি আমার
ইচ্ছার কথা বলবেন।

ডঃ ইমরান
কি কনফেস করব?

রোকেয়া
আপনি ভিডিওতে বলবেন - আপনার সকল লেখা ভু ল,
আপনি এখন পর্যন্ত আপনার ব্লগে যা যা লিখেছেন সব
শয়তানের প্রচোনায় লিখেছেন।

ডঃ ইমরান
(ভীষণ নার্ভ াস ভঙ্গীতে)
আমি যা সত্য তাই বলার চেষ্টা করি, ধর্মের ভু ল
ব্যখ্যা যারা দেয় তাদের বিরোধিতা করেছি...

রোকেয়া
শাটআপ। আপনার মতো দালালরা এইসব প্রগতিশীলতার বুলি
আওড়ান… আসলে আপনারা হলেন পশ্চিমের পোষা কুত্তা…
নিজেদের খুব বুদ্ধিমান ভাবেন তাই না!

ঠিক এমন সময় মেসেঞ্জারে কল আসে। বিদেশ থেকে ডঃ ইমরানের একমাত্র মেয়ে
আফসানার কল -

ডঃ ইমরান
অন্তত শেষ বারের মতো মেয়েটার সাথে কথাটা বলতে দাও।
প্লিজ। তু মিও তো …

রোকেয়া এক মুহূর্ত কি যেন ভাবে। তারপর এগিয়ে এসে বলে –

রোকেয়া
আপনাকে কুপিয়ে মাংসের কিমা বানাতে হবেনা, এখানে অল্প
একটু কেটে দিলেই হবে।

ইমরানের কানের কাছে মুখ নিয়ে নাটকীয় ভঙ্গীতে কথাগুলো বলে, রোকেয়া ফোনটা রিসিভ করে স্পিকার
মোডে দেয়। ফোনর অপর প্রান্ত থেকে ছোট একটা বাচ্চা মেয়ের গলা শুনতে পাওয়া যায়।

জোবাইদা(TELEPHONIC)
আসসালামু আলাইকুম নানা ভাই।

ডঃ ইমরান

8
(খুব স্বাভাবিক ভঙ্গীতে কথা বলার চেষ্টা
করছেন।)
ওলাইকুমুসসালাম। কেমন আছেন নানাভাই

এমন সময় জুবাইদার মা এসে যোগ দেয় কথায়-

আফসানা (TELEPHONIC)
বাবা, তোমার শরীর কেমন আজকে? রাতে ঘুম হলো?

ডঃ ইমরান
না। কাল রাতে ভাল ঘুম হয়নি।

আফসানা (TELEPHONIC)
কি করে হবে। শোনো বাবা, নেক্সট মান্থে আমি তোমাকে
কানাডা নিয়ে আসবো। কোনো একসকিউজ শুনবো না...আর
তোমার লাস্ট লেখাটা পড়লাম ব্লগে, বাবা! একটু বেশি রিস্ক
নিয়ে ফেলেছো, একটু মিনিমাইজ করো না... আমি জানি এটা
খুব আনফেয়ার, তোমাকে এরকম রিকোয়েস্ট করাটা, কিন্তু
বাবা…

রোকেয়া ইশারায় কথা সংক্ষেপ করতে বলে -

ডঃ ইমরান
আমি এখন রাখিরে মা। পরে কথা হবে। জরুরী একটা কাজের
মাঝে ছিলাম।

আফসানা
আচ্ছা বাবা, তোমার কাজ শেষ করে ফোন দাও।

ফোনটা কেটে দেয় রোকেয়া। তারপর খুব ভীত চোখে তাকায় রোকেয়ার দিকে-

ডঃ ইমরান
আর কি কথা বলার সুযোগ হবে মেয়েটার সাথে!

রোকেয়া কল কেটে আবার ভিডিও তাক করে।

রোকেয়া
না হবে না… একবার তো সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু
শুধরাননি…চলেন শুরু করি ।

ডঃ ইমরান
আমার অন্যায়টা কি বলবে? দেখ, আমি কনজারভেটিভ
মুসলিম পরিবারের সন্তান। সেভাবেই আমার বাবা মা
আমাকে বড় করেছেন। আমিও আমার সন্তানকে সেভাবেই
...

রোকেয়া

9
মিথ্যা কথা! ওসব চালাকি অনেক হয়েছে ! আপনারা ধর্মীয়
শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার চান- বিরোধিতা করেন, নিয়ন্ত্রণ চান-

ডঃ ইমরান
সকল শিক্ষা ব্যবস্থাতেই তো নিয়ন্ত্রণ থাকে । তাহলে এই ক্ষেত্রে
নয় কেন? আর আমাকে দালাল বলছো! আমি যদি প্রশ্ন করি -
যারা ধর্মকে মিলিটান্সির দিকে নিয়ে যাচ্ছে তাদের যে অন্য
কোনও স্বার্থ নেই সেটা কি তু মি নিশ্চিত?

রোকেয়া
ধর্ম রক্ষার জন্য যুদ্ধ করতে হয়।

ডঃ ইমরান
তাই? দিনের পর দিন ধর্মের গায়ে জঙ্গিবাদের কালিমা লেপে
দেয়াকে কি ধর্ম যুদ্ধ বলবে?

রোকেয়া
যারা আমাদের বিশ্বাসকে অসম্মান করে ভিন্নমত ছড়ানোর
চেষ্টা করে- মৃত্যুই তাঁদের উচিৎ শিক্ষা।

ডঃ ইমরান
না রোকেয়া!

ঠিক তখনি ইন্টারকম বেজে উঠে। রোকেয়া একটু ভাবে। তারপর ইমরানের দিকে তাকিয় বলে-

রোকেয়া

ওটা রিসিভ করে বলবেন এখন ব্যস্ত আছেন। লেখালেখি করছেন…

ইমরান

আমি মিথ্যা বলি না। মিথ্যা বলা তো হারাম।

রোকেয়াই কলটা রিসিভ করে

রোকেয়া

হ্যালো

পুলিশ (অফস্ক্রিন ভয়েজ)

ইন্টারনেটের বিল নিতে আসছে

রোকেয়া

স্যার এহন ব্যস্ত, লেকতে বসছে, কাল আসতে বলেন

ফোনটা রেখে ইমরানের দিকে তাকায় রোকেয়া-

10
রোকেয়া

যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মিথ্য বলা যায়।

ডঃ ইমরান
যুদ্ধ! কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ! আমার বিরুদ্ধে! আমার সাথে তোমার
পার্থক্য ‘বিশ্বাসে’ না। আমাদের পার্থক্য- ‘মত প্রকাশে’-
শোনো জান্নাত,

রোকেয়া, ইমরান সাহেবের মুখে হঠাৎ করে জান্নাত নামটা শুনে থমকে যায়। দুইজনের মাঝেই এক মুহূর্তে র
নীরবতা নেমে আসে।

ডঃ ইমরান
কি অবাক হলে? তু মি যে রোকেয়া নও তা বুঝতে আমার এক
মাস সময় লাগেনি। তোমার দেয়া কফিতে প্রথম চু মুকেই
বুঝেছিলাম, কিছু মিশিয়েছ। তোমার মতো আমিও তো
আজকের দিনটির জন্য অপেক্ষায় ছিলাম, জান্নাত। আমি চাই
তোমার মতো তরুণদের মুখোমুখি হতে। বসো না, বসো।
দুজনে কথা বলি- আমার বাধন খোলার দরকার নেই …

রোকায়ে ধপ করে চেয়ারে বসে পরে। স্থির চোখে ইমরানের চোখে চোখ রেখে তাকায়। ইমরান একটু
বিরতি নেয় । আবারো শেষ চেষ্টা করে যুক্তি দিয়ে ।

ডঃ ইমরান
ছোট বেলার গল্পটা কি ভু লে যাচ্ছো! প্রিয় নবীর চলার পথে
প্রতিদিন কাঁটা বিছিয়ে দেয়া বুড়ীর কথা ভাবো। উনি নবীজির
আদর্শ মেনে নিতে পারছিলেন না, কিন্তু অসুস্থ বুড়ীর যত্ন
নেয়ার ঘটনার মধ্য দিয়ে নবীজি আমাদের জন্য কি শিক্ষা রেখে
গেলেন?

রোকেয়া চু প করে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে। তার হাত আবার কাঁপতে শুরু করছে। সে আবারো ঘামছে।

ডঃ ইমরান
সামান্য ভিন্নমত- এসবে আমাদের বিশ্বাস কেন দুর্বল হয়ে
যাবে!

ডঃ ইমরান
কে, কোথায় কোন ব্লগে কি লিখলো তাঁর মতামতের ভারে কি
ধর্ম হেলে পড়বে? কারও ধর্মই তো এতোটা দুর্বল না।

11
ডঃ ইমরান
(কন্টিনিউ)

বিদায় হজের ভাষণে আমাদের কি নবীজি বলে গেছেন-


ধর্ম নিয়ে আমরা যেন বাড়াবাড়ি না করি।
পবিত্র কোরআন শরীফে বারবার বলা আছে-
কারো অবিশ্বাসের শাস্তি আল্লাহই দেবেন শেষ বিচারে।
দুনিয়ার কারো সেটা করার বিধান নেই।

ডঃ ইমরান
(কন্টিনিউ)

জান্নাত, মরীচিকার পেছনে ছু টছো কেন? যুদ্ধে কোনও


সমাধান নেই।

রোকেয়ার হাতের পেশী গুলো শিথিল হয়ে আসে। সে আলতো করে মোবাইল ফোনটা তার হাত থেকে রেখে
দেয়। এক পর্যায়ে হাতের ছু রিটাও ছুঁ ড়ে ফেলে দেয়। ( ইমরান সাহেবের কথার সাথে সাথে ক্যামেরা নরমাল
স্পীড থেকে স্লো শাটারে এর দিকে যেতে থাকে। রোকেয়ার অভিব্যক্তি গুলো পরিবর্ত ন হতে থাকে।

স্ক্রিন ব্ল্যাক

SC: 10; DAY EXT; IMRAN'S STUDY ROOM; MORNING; ADJACENT HOUSE

পিওভি শটে দেখা যাচ্ছে - রোকেয়া বাড়ির সীমানা পেড়িয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ তার
ফোনে কল আসে। সে কলটা কেটে দিয়ে সিম কার্ড টা বের করে রাস্তায় ছু ড়ে ফেলে। সামনে
এগিয়ে যায়। আমরা দূর জানালায় ডঃ ইমরান কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি।

CUT TO BLACK.

12

You might also like