Download as docx, pdf, or txt
Download as docx, pdf, or txt
You are on page 1of 2

মানু ষের জীবন নাগর্দ ল্লার মতন- একবার উপরে যায়ে, আবার নিচে নামে । রোলার কোস্টার এর মতন

বিভিন্ন দিকে বাঁক নেয়ে ।একটা গান আছে- “পৃ থিবীটা নাকি ছোট হতে হতে... ড্রয়িং রুমে রাখা বোকা
বাক্স তে বন্দী ।“ পৃ থিবী বোকা বাক্সে বন্দী আর মানু ষ নিজের বোকা মনের গন্ডি তে বন্দী। কারণ?-
অজ্ঞান । এই অজ্ঞানের ফলে মানু ষের কাছে শান্তি-আনন্দ আদায় করা অধিকার । অজ্ঞানের কারাগারে
বাস করতে করতে মানু ষ ভ্রমিত যে শান্তি- আনন্দ কোনো বিকল্প বা অধিকার না, এটা তার স্বরূপ যেটা
চির প্রাপ্ত ।
মানু ষের অজ্ঞান একটি বৃ ক্ষের বীজ যেখান থেকে উত্পত্তি হয়ে সংসারের । বীজের থেকে অঙ্কুরের জন্ম
হলো সেই ‘আমি’ ভাবের জন্ম আর গাছের গুড়ি হলো আমাদের এই শরীর । জীবনের নাটক শুরু হয়ে
এই শরীর কে আমি ভাবা থেকে । বসন্তে যেমন গাছে পাতার জন্ম হয়, আমাদের জন্ম হলো সেই বসন্ত
যেখান থেকে শুরু হয়ে মনের কামনা । শরত্কালে পাতা ঝরার মতন, আমাদের জীবনেও এসে
উপস্থিত হয়ে শরত- ঝরে জয়ে যৌবন ঝরা পাতার মতন, এসে দাড়ায়ে মৃ ত্যু । এই জন্ম থেকে মৃ ত্যুর
জাত্রায় -পাতা যেমনি লেগে থাকে গাছের সাথে, আমাদের মন আসক্তি দিয়ে প্রানপনে লেগে থাকে
সংসারে । সবাই মালীর মতন খু ব যত্নের সাথে সংসার রুপি গাছে কর্ম রুপি জল ঢালে । মানু ষের প্রাণ
হলো বৃ ক্ষের ডাল এবং শরীরের অঙ্গ হলো প্রশাখা । আমাদের পঞ্চজ্ঞানিন্দ্রীয় হলো গাছের ফু লের মতন
যেটা আকর্ষণ করে ভ্রমর রুপী সংসারের বিষয় । গাছের ফল হলো কর্ম ফল- যেটার মধ্যে কয়েকটা মাত্র
অশ্বাধন করা যায়ে জীবনকালে কারণ বেশির ভাগ ফলই নয়ে টক নয়ে ঝরে পরে গাছের থেকে । কিন্তু
মানু ষ জানেনা এক অস্তিতের বিষয়ে- যেটা থাকে সবের পারে, সেই গাছের পাতার আড়ালে । সেটা
হলো এক পক্ষী । সে থাকে সেই গাছের ডালে- স্বাধীনভাবে । সে ডাকে কিন্তু তার ডাক আসেনা
আমাদের কানে । সে বৃ ক্ষের সর্ব অংশ থেকে বিচ্যুত । সে বসে থাকে আড়ালে, ধরা দেয়েনা সহজে ।
এক গাছ থেকে উড়ে গিয়ে বাসা বাধে আরেকটি গাছের পাতার আড়ালে । সীমিত এই জীবন রুপী
বৃ ক্ষের খেলা শেষ হলেও, থাকে শুধু সেই অনন্ত, অমর, সীমাহীন, রুপান্তর্হীন চিরস্থায়ী ব্রহ্ম রুপী পাখি
যেটা হল্ প্রকৃত আমি -আমার আসল পরিচয়- সেই ব্রহ্ম বা আত্মা । ‘অজ্ঞান’ থেকে ‘অ’ সরলেই জ্ঞান
। জ্ঞানের আগে থেকে অহংকার ‘অ’ সরলেই বাজি মাত ।
মানু ষ জীবন কাটাচ্ছে মু খোশ পোরে । তার জীবন হলো নাটকের স্ক্রিপ্ট । আর এই নাটকে আমরা করে
চলি কর্মের অভিনয় । এই নাটকে মত্ত হয়ে আমরা ভুলে যাই যে আমরা মেকআপ আর কস্টিউম পরে
। সেটা আসল আমি না । গ্রীন রুমে গিয়ে মেকআপ খু লতে হবে, তখু নই ফুটে উঠবে আসল রূপ । কিন্তু
গ্রীন রুমে যাওয়া হয়েনা, মেকআপ- পোশাক খোলা হয়েনা , নিজেকে চেনা হয়েনা । এই ভাবে জীবনে
হয়ে যায়ে ‘কার্টে ন কল’ । সামনে চলে আসে মৃ ত্যু । জন্ম- মৃ ত্যুর এই ঘু র্নিঝড় থেকে পাইনা নিস্তার ।
কিন্তু এর থেকে বাচার উপায়ে আছে । নিস্তার হয়ে কেবলমাত্র মু খোশ টা খু লে আমার আসল রূপ টা
দেখে নিলে । বাচা যায় ‘অহম ব্র্হ্মাস্মি’, আমি ব্রহ্ম- এটা হয়ে না... শুধু জেনে নিলে ।
‘অসতো মা সদগময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়ঃ’- অন্ধকার থেকে আলোর দিকে যাত্রা ।
কিন্তু গুরু না থাকলে এই পথ থেকে যায়ে অন্ধকারে আচ্ছন্ন । আমাদের কাছে মু ক্তি ও বন্ধন বিপরীত
শব্দ কিন্তু আধ্যাত্মিক পথে এটা হয়ে যায়ে সমর্থক শব্দ কেবলমাত্র গুরুর ক্ষেত্রে । গুরুর সাথে নিজেকে
ভালবাসার বন্ধনে না বাধলে মু ক্তি হয়ে পরে দুর্লভ । গুরুর প্রতি অটল ভক্তি এবং গুরুর অহেতুক
ভালবাসা, কৃপায়ে সত্য হয়ে সহজলভ্য । আমাদের জীবন কাটে বিষয়ের ঘোরে । গুরুর উপদেশ ধাক্কা
দিয়ে কাটায়ে এই ঘোর । গুরুর কৃপায়ে অন্ধকার ঘর আলোকিত হয়ে । শিষ্য অজ্ঞানের সেই অন্ধকার
ঘরে অন্ধের মত এদিক ওদিক ঠোকর খায়ে । সে কিছু দেখতে পায়েনা, তাই বলতেও পারেনা । জ্ঞানের
প্রকাশে- ঘর আলোকিত হলে চোখ উন্মিলিত হয়ে কিন্তু সব দেখেও সেই হাজার কোটি সু র্যের আলোর
জন্য তার চোখ ধাধিয়ে যায়ে । তখু নও সে কিছু প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েনা । কিন্তু গুরু বোঝে । গুরু
রাজার রাজা । তাই সেই বোঝে রাজার পাঠ । রাজা তার পু ত্র কে দিয়ে যায়ে রাজ্যের সিংহাসন । গুরুও
শিষ্য কে উত্তীর্ণ করে ভিখারী থেকেই রাজার পদে । গুরু শিষ্য কে প্রতিষ্ঠিত করে জ্ঞানের সিংহাসনে ।
কোটি কোটির মধ্যে থাকে কয়েকজন যারা দেখে তাদের প্রকৃত রূপ, প্রতিষ্ঠিত হয়ে জ্ঞানের আসনে -
হয়ে ওঠে সত্যদ্রষ্টা , ব্রহ্মজ্ঞানী । সত্যদ্রষ্টাদের মাঝেও থাকে ভাগ । কেউ কেউ হয়ে যারা সত্য জেনে
নাটক চিরতরের জন্য সমাপ্ত করে বিদায় নেয়ে মঞ্চ থেকে । কিন্তু বিরল কয়েকজনই আবার প্রবেশ
নেয়ে মঞ্চে কিন্তু এবার থাকে অন্য রূপে, অন্য স্ক্রিপ্ট, অন্য অভিনয়ে, অন্য সংলাপ। তাদের হয়ে নতুন
‘comeback’ । তার এই অভিনয় মানু ষকে করে মু গ্ধ, আন্দোলিত করে তাদের হৃদয়ে, মানু ষ ফেটে
পরে হাথতালি তে । তাদের এই নতুন স্ক্রিপ্ট হলো মানু ষের মু ক্তিসাধন । তাদের সান্নিধ্যে হয়ে চিরমু ক্ত,
চিরপ্রাপ্ত স্বরূপ সেই ব্রহ্মেরই পু নর্প্রাপ্তি। যু গে যু গে আমরা শুনেছি তাদের আগমনের কথা । এবং এই
যু গের উত্কৃষ্ট উদাহরণ হলো ভগবান । ভগবানের প্রদর্শন কারাচিত্দ্রিষ্ট । তার সৃ ষ্ট ইন্টারন্যাশনাল
বেদান্ত সোসাইটি হলো ‘নেশামু ক্তি কেন্দ্র ‘- এখানে মানু ষ কে বিষয়ের নেশা ত্যাগ করতে বাধ্য করা
হয়েনা, সে এমনিই ত্যাগ হয়ে যায়ে । জগতের নেশা ভুলিয়ে, ভগবান ও শেখায়ে নেশা করতে কিন্তু সে
হলো নিজের নেশা । জগতের নেশায়ে দুঃখ কষ্ট ধেয়ে আসে জীবনে কিন্তু নিজের নেশায়ে থাকে শুধু
সমাধান । তাই আসতে হবে তার সমীপে, দেখতে হবে তার নাটক মু গ্ধ হয়ে , যু ক্ত হতে হবে তার এই
কেন্দ্রের সাথে । আছে কেবল দুটো বিকল্প- ভিক্ষুক না রাজা ? সিধান্ত আমাদের ।

You might also like