Professional Documents
Culture Documents
Zakaria Mobin
Zakaria Mobin
7 hrs
ট্রেনিং সেন্টার হতে ট্রেনিং করেও কেন অনেকে ফ্রিল্যান্সার হতে পারেনা #Ekram
অনেকেই ফ্রিল্যান্সার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হয়। এতটাকা খরচ করে এবং সময় নষ্ট করে ট্রেনিং
সেন্টারে যাওয়ার পরও সফল হতে পারেনা। তখন স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। আমার বহুদিনের অভিঙ্গতার আলোকে এ ব্যর্থতার
কারনগুলো খুজে বের করার চেষ্টা করেছি। এ কারণগুলো নিজের মধ্যে থাকলে সেগুলোকে দূর করে তারপর ট্রেনিং
করতে গেলে সফলতার সম্ভাবনা আরও বাড়বে।
১) পরিশ্রম ছাড়াই ইনকাম মানষিকতা: খুব স্বপ্ন নিয়ে অনেক যুদ্ধ করে ট্রেনিংয়ে যুক্ত হচ্ছে। এরপরই যুদ্ধে জয়ী ভাব
চলে আসে। ট্রেনিংয়ে ভর্তি র চান্স পেয়েছি, মানেই ইনকাম নিশ্চিত হয়ে গেছে। আর পরিশ্রম, চেষ্টা করার দরকার
নাই। এ ধরনের স্বল্পতে বিশ্বজয়ী মানসিকতার কারনে প্রচু র স্টু ডেন্ট কোর্স শুরুর পর চেষ্টা, পরিশ্রম কমিয়ে ফেলে।
আর ফলাফল হচ্ছে, তারা ব্যর্থ হয়।
২) ক্লাশ করবে, অ্যাসাইনমেন্ট দিবেনা: ১০০% নিশ্চিত থাকতে পারেন পরপর ৫টা ক্লাশে যারা অ্যাসাইনমেন্ট জমা
না দিবে, তারা ক্লাশের প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলবে, একটা পযায়ে ক্লাশে আসা যাওয়াটা অনিয়মিত হয়ে পড়বে।
তাই শুরু থেকেই ক্লাশ অ্যাসাইনমেন্টের ব্যাপারে কঠিন হতে হবে। নো কনসিডার। এ ব্যাপারে কনসিডার করলেই
ব্যর্থ স্টু ডেন্ট বের হবে।
৩) ট্রেনিংয়ের দোষ ধরা স্টু ডেন্ট: কিছু স্টু ডেন্ট পাবেন, যারা ৫টা ক্লাশ শুরু করার পর থেকেই ক্লাশের এটা পাইনি,
ওটা পাইনি। ওইটা হলে আরো ভালো হতো, ট্রেইনারের এ দোষ, ট্রেইনারের সেই কোয়ালিটি নাই। এ টাইপ বলা
ব্যক্তিরা নিশ্চিতভাবে ব্যর্থ হবে ধরে নিন। কিসের ঘাটতি সেটা তালাস না করে, কতটু কু পেয়েছি, সেটাই যথেষ্ট,
বাকিটা পথ নিজে হেটেই বের করে নিবো, এ টাইপ ব্যক্তিদের সাফল্য নিশ্চিত থাকে। নেগেটিভ তালাশ করে, সেটা
নিয়ে হা-হুতাশ করলে আসলে নিজেরই ক্ষতি। অবশ্য ট্রেনিংয়ের দোষ ধরার মানসিকতার জন্য ফেসবুকের কিছু
সেলিব্রেটি দায়ি। তারা এ দোষ ধরার অভ্যাসটা ধীরে ধীরে সমাজে ভাইরাস হিসেবে ঢু কিয়ে দিয়েছে, যা নতু নদের
সফলতার বিশাল বাধা হয়ে দাড়িয়েছে।
৪) কাজে নামবেনা, কিন্তু ইনকামের স্বপ্নঃ কিছু স্টু ডেন্ট রয়েছে, যারা কাজে নামতে লাগাবে ২০দিন, ইনকাম চাইবে
২দিনে। কাজে নামতে দেরির জন্য হতাশ না হলেও ইনকাম ২দিনে না আসলে চরম বিরক্ত আর হতাশ হয়ে যাবে।
কাজে না নামা এসব স্বপ্নধারীরা ব্যর্থ হবেই, এটা শিউর।
৫) ব্যর্থতার ভয়ে মাঠে না নামা স্টু ডেন্ট: কাজে নেমে যদি ব্যর্থ হই, যদি কোন সমস্যা হয়, এ ধরনের ব্যক্তিরা সফল
হবেনা, এটা নিশ্চিত থাকেন। কাজে নামতে হবে, ব্যর্থ হতে হবে, অনেক কিছু লস করতে হবে, তাতে ব্যর্থ হওয়ার
পথগুলো নিজেই চেনা যায়, পথ চিনতে পারলে নিজের ভিতরেও চলার মত একটা সাহস তৈরি হয়। এরপরই
সফলতার চেহারা দেখার সুযোগ হয়। কিন্তু ব্যর্থতার ভয়ে মাঠে না নামলে কখনই সফলতা দেখবেননা। কিছু স্টু ডেন্ট
দেখেছি ৩বছর ধরে ১২টার উপর কোর্স করেছে, কিন্তু এখন পযন্ত কিছুই করার চেষ্টাও শুরু করেনি। শুধু উনি
শিখছেন আর শিখছেন। এধরনের ব্যক্তিকে স্টু ডেন্ট হিসেবে বাছাই না করাটাই শ্রেয়। কাজ শিখার পর বাকিটা মাঠে
নেমে রাস্তা চিনে নিতে হয়, তাহলেই সফলতার মুখ দেখতে পাবেন।
৬) অজুহাত দা্ঁড় করানো স্টু ডেন্টঃ বাসাতে মেহমান, মা অসুস্থ, রাস্তাতে জ্যাম, বিদ্যুৎ ছিলোনা, ইন্টারনেটে সমস্যা,
ক্লাশ ছিলো, অফিসে ব্যস্ততা ছিলো, এ ধরনের সমস্যাধারী ব্যক্তিদের স্টু ডেন্ট হিসেবে বাছাই করলে পরে ট্রেইনারকে
বদনামের ভাগীদার হতে হয়। ট্রেনিং দিয়ে যেহেতু লাইফ পরিবর্ত ন করার স্বপ্ন নিয়ে স্টু ডেন্ট আছে, সেহেতু সর্বোচ্চ
সেক্রিফাইস করা স্টু ডেন্ট এবং যে এ ট্রেনিংটাকে সবচাইতে প্রায়রিটি দিয়ে গ্রহন করতে পারে, সেই ধরনের
স্টু ডেন্টদের নিয়েই একজন ট্রেইনার ভালো স্বপ্ন দেখতে পারে। না হলে যত মেধাবী স্টু ডেন্ট হোক, কখনওই সফল
হবেনা।
৭) নিজেকে বেশি জ্ঞানী মনে করা স্টু ডেন্টঃ কোন ব্যাচে যদি এমন স্টু ডেন্ট পান, যে নিজে অনেক বেশি জানে, নিজে
অনেক জ্ঞানী, ট্রেইনার কিছুই জানেনা, ট্রেইনারের ট্রেনিং স্টাইল ভালোনা, এটাইপ বক্তব্য প্রদান করে, এ টাইপ একটা
স্টু ডেন্টই ব্যাচ ধ্বংসের কারন হয়ে দাড়ায়। পুরো ব্যাচের স্বার্থে এ ধরনের স্টু ডেন্ট একজন পেলে তাকে স্টু ডেন্ট না
বানানোই ভালো। না হলে ক্লাশ সারাক্ষণ ট্রেইনারকে জ্ঞান দেওয়ার এবং অন্য স্টু ডেন্টদেরকেও ট্রেইনারের বিপক্ষে
কনফিডেন্ট লেভেল নষ্ট করে দিবো। একটা ভাইরাস ক্লাশে না রাখাই বেটার
৮) অ্যাডভান্স টিপস, সিক্রেট টিপসের ভক্ত স্টু ডেন্টঃ ফ্রিল্যান্সিংয়ে কিছু অভিজ্ঞ এবং দক্ষ ব্যক্তি রয়েছেন, যারা
অনলাইনে নিজেদের পরিচিত করার জন্য কিংবা তার কাছ থেকে ট্রেনিং নিতে উৎসাহিত করার জন্য সিক্রেট
টিপস এবং অ্যাডভান্স টিপস শিখার লোভ দেখিয়ে প্রচার করেন। সেটাও অনেকের মাথাতে ঘুরে নেগেটিভ অবস্থা
তৈরি হয়েছে, যার কারনে ক্লাশের উপর কনফিডেন্ট কম থাকে। সেই কারনেও অনেক স্টু ডেন্ট হারিয়ে যায়, সফল
হয়না। বেসিক টিপস দিয়ে ইনকাম করে বেসিক টিপসে দক্ষ হয়ে এরপর অ্যাডভান্স টিপসে কিংবা সিক্রেট টিপসে
যাওয়ার প্লান করতে হয়। অ্যাডভান্স টিপস এবং সিক্রেট টিপস হচ্ছে মরিচিকার মত। প্রত্যেকের টিপসই সিক্রেট
টিপস হতে পারে।
পরিশেষে, আমি বলছিনা যে, ট্রেনিং সেন্টারে গিয়েই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হবে। অনলাইনেও অনেক রিসোর্স রয়েছে,
যা দেখেই ফ্রিল্যান্সিং শিখে অনেকে এখন সফল ফ্রিল্যান্সার।