Professional Documents
Culture Documents
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংকের ভূমিকা
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংকের ভূমিকা
সারা বিশ্বে এখনো করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। সেই সঙ্গে মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে। গত ডিসেম্বর থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরু
হয়েছে। বিশ্বের ১৯৯টি দেশে ২ কোটি ৮০ লাখ বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, মারা গেছেন ৯ লাখ ৭ হাজারের বেশি মানুষ।
এখন পর্যন্ত যত ধরণের ব্যাধি নিয়ে বৈশ্বিকভাবে জরুরী অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, তার মধ্যে করোনাভাইরাসকেই সবচেয়ে
মারাত্মক বলে ঘোষণা দিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান।
করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্টি হওয়া এই সংকট মোকাবেলায় সদস্য দেশগুলোকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের
ওয়েবসাইটে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্টি হওয়া মানবিক ও অর্থনৈতিকি সংকট মোকাবেলায় সদস্য
দেশগুলোকে সহায়তা দেবে তারা। তাদের বিশেষ নজর থাকবে দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা জনগণের দেশগুলোর দিকে।
জরুরিভিত্তিতে দেওয়া প্যাকেজ সহায়তার মধ্যে থাকছে কম সুদের ঋণ, অনুদান এবং কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা। করোনা
ভাইরাসের প্রকোপে অনেক দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে মন্দার মুখে পড়তে পারে। এই হুঁশিয়ারির পরেই বিশ্বব্যাংক তাদের সাম্প্রতিক
সাহায্যের কথা জানায়।
বিশ্বজুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নতু ন করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্যগত ও অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবেলায় সদস্য দেশগুলোর জন্য
গত ৩ মার্চ প্রাথমিকভাবে ১২ বিলিয়ন (১ হাজার ২০০ কোটি) ডলার সহযোগিতার ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক গ্রুপ। আইডিএ,
আইবিআরডি ও আইএফসির যৌথ যোগানের এই তহবিল কভিড-১৯ (নভেল করোনা ভাইরাস) মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে
উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করবে। ঘোষিত সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে দরিদ্র এবং সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঝুঁকির আওতায় থাকা
দেশগুলো প্রাধান্য পাবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কবলে পড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোয় স্বাস্থ্যখাতে এই এক হাজার ২০০ কোটি ডলার
ঋণ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের সহযোগী বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সদস্য দেশগুলোর সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিতরণের জন্য এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ইতোমধ্যে করোনার প্রভাব মোকাবিলায় জরুরিভাবে দেওয়ার জন্য ১৪ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করেছে সংস্থাটি। করোনা
ভাইরাসের তাৎক্ষণিক প্রভাব এবং আগামী বছরের সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর অনেক অর্থের প্রয়োজন হবে।
এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে আগামী ১৫ মাসের জন্য সম্ভাব্য ঋণ বিতরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।দেশগুলোর স্বাস্থ্যখাতের প্রয়োজনসহ
অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য বড় সহায়তা প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ তাদের চাহিদার কথা জানিয়েছে।
করোনার প্রভাবে আফ্রিকার অনেক দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। বহু স্কু লে ঝড়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। অর্থনীতির মন্দায় পড়ছে
অনেক দেশ। সদস্য দেশগুলোর দরিদ্রদের সহায়তাসহ অর্থনীতির উন্নয়নে এই সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক।
মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি করোনাভাইরাস মহামারীর ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশকে ১০৫ কোটি ডলার
(বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা) ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই ঋণের ফলে দেশে কমপক্ষে আড়াই লাখ
তরুণের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগ হবে দু’শ কোটি ডলার। পাশাপাশি সরকারের প্রতিবছর ২০ কোটি ডলার সাশ্রয়
হবে।