Leaflet For Caritas

You might also like

Download as docx, pdf, or txt
Download as docx, pdf, or txt
You are on page 1of 5

কারিতাস বাংলাদেশ সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে

। এটি একটি দেশীয় সমাজকল্যাণ ও মানব উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান ৷ কারিতাস একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ
CHARITY বা LOVE এবং যার বাংলা অর্থ হলো প্রেম বা ভালবাসা । কারিতাস জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে
বাংলাদেশের সকল এবং উপশহর এলাকায় কারিতাস ঢাকা অঞ্চলের বেশ কয়েকটি প্রকল্প চলমান রয়েছে ।
তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা শহরের বিপদাপন্ন পথশিশুদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ড্রীম
প্রকল্প । ঢাকা শহরের মিরপুর, গাবতলী ও মোহাম্মদপুর এলাকায় কারিতাস জার্মানীর অর্থায়নে বিপদাপন্ন
পথশিশুদের উন্নয়নের জন্য কারিতাস ড্রিম প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

যে বয়সে শিশুদের বাবা-মা এবং আপনজনদের যত্র ও ভালবাসায় আনন্দমুখর জীবনযাপনের কথা, সে বয়সে
পথশিশুরা জীবনের নির্মমতার মুখোখুখি দীড়িয়ে তাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের নুণ্যতম চাহিদাটুকু পূরণের জন্য যুদ্ধ
করে যাচ্ছে । বাংলাদেশে ১.১৫ মিলিয়নেরও অধিক পথশিশু রয়েছে, যাদের এক-তৃতীয়াংশের বাস ঢাকা শহরে ।
বহুবিধ সমস্যার মুখোমুখি দীড়িয়ে এসব পথশিশুরা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এবং অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পরছে ।

প্রকল্পের লক্ষ্য

৪ পথশিশুরা যাতে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠার সুস্থ পরিবেশ উপভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করা
। মূলতঃ দু'টি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রকল্প কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে-

১. পথ শিশুদের জীবন ও জীবিকার উন্নয়ন করা এবং

২. ঝুঁকিতে থাকা পথশিশুদের তাদের পরিবারে ও সমাজে একীভূত করা ।

প্রকল্পের আওতাভুক্ত কর্মএলাকা - ঢাকা উওর সিটি কর্পোরেশনের শাহ্ আলী, দারুস সালাম ও মোহাম্মদপুর
থানার অন্তর্গত কর্ম এলাকা ।

২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে কর্মএলাকায় প্রকল্প কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং দু'টি ড্রপ-ইন-সেন্টারের
মাধ্যমে পথশিশুদের সংগঠিত করে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা হচ্ছে ।

পথশিশু ৪ পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন, রাস্তায় বসবাস করে বা রাস্তায় থেকে জীবিকা উপার্জনকারী
শিশুদেরকেই পথশিশু বলে । এরা সাধারণতঃ গৃহহীন, রাস্তায় কাজ ও বসবাস করে, ঘুমায় এবং তাদের পরিবার
থাকলেও পরিবারের সাথে যোগাযোগ খুবই কম | দিন কিংবা রাতের অধিকাংশ সময় এসব শিশুরা বিভিন্ন বাজার,
রেল-স্টেশন, লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনালে বা রাস্তায় টোকাইয়ের কাজ ও ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত থাকে ।
পথশিশুদের ধরন

পথশিশুরা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন-

১. একা এবং অভিভাবকহীন

২. পিতা-মাতাসহ রাস্তায় বসবাস করে

৩. পরিবারের সাথে বসবাস করলেও জীবিকার প্রয়োজনে কিংবা অন্য কোন কারণে দিনের অধিকাংশ সময়,
এমনকি রাতেও রাস্তায় বসবাস করে

৪. অন্য কারো আশ্রয়ে বসবাস কিন্তু জীবিকার প্রয়োজনে অধিকাংশ সময় রাস্তায় বসবাস করে ।

পথশিশুদের জীবনমান উন্নয়নে ভ্রীম প্রকল্পের মধ্য দিয়ে যেসব কার্যক্রম

হাতে নেয়া হয়েছে তা হলো

 মোহাম্মদপুর এবং গাবতলীতে পথশিশুদের জন্য দু'টি ড্রপ-ইন-সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ।
পথশিশুদের জন্য এখানে সকাল সাতটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত অবস্থানের সুযোগ রয়েছে । এখানে
পথশিশুদের পরিস্কার-পরিচ্ছনন হওয়ার, গোসল করার, খেলাধূলার, লেখাপড়া শেখার, জীবনভিত্তিক
শিক্ষা নেয়ার, দুপুরের খাবার খাওয়ার, বিশ্রাম নেয়ার, ঘুমাবার এবং বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে ।

 পথশিশুদেরকে তাদের পরিবার ও সমাজে একীভূতকরণের মাধ্যমে যত ও ভালবাসায় জীবনযাপনের


উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ।

 প্রকল্প বাস্তবায়নকৃত এলাকায় শিশু নির্যাতনের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া
হয়েছে ।

 স্থানীয়ভাবে শিশু সুরক্ষা কমিটি গঠনের মাধ্যমে সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদেরকে পথশিশুদের
জীবনমান উন্নয়নের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে ।
 ডিসেম্বর ২০২০ সালের মধ্যে ১,২৪০ জন পথশিশুর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করার উদ্যোগ নেয়া
হয়েছে ।

 প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে ৭৭৫ জন পথশিশুকে নিজেদেরকে নানাবিধ ঝুঁকিমূলক এবং অন্যদের
দ্বারা প্ররোচিত ক্ষতিকারক কার্যক্রম হতে রক্ষা করতে সক্ষম করে তোলা হচ্ছে ।

 প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে ৫,৫০০ টি পরিবার ও দায়িত্বশীল (ডিউটি বেয়ারার) ব্যক্তিবর্গকে


পথশিশুদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের বিষয়ে সংবেদনশীল করে তোলার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে ।

 ২০২০ সালের ডিসেম্বর এর মধ্যে ভিত্তি জরিপের মাধ্যমে কাঙ্খিত ২৫% পথশিশুদেরকে তাদের নিজ
নিজ পরিবারে এবং সমাজে একীভূত করা হবে ।

 প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে কাঙ্খিত ১,৩৯৫ জন পথশিশুদের নিয়মিতভাবে ড্রপ-ইন-সেন্টারে আসা-


যাওয়া নিশ্চিত করা হবে ।

 প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে কাঙ্থিত ১,৩৯৫ পথশিশুরা যারা নিয়মিত ড্রপ-ইন-সেন্টারে আসা-যাওয়া
করবে তদের সকলের জন্য ড্রপ-ইন-সেন্টারের সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে ।

 প্রকল্পের শিক্ষা ও ভাল অভ্যাস এবং অনুশীলনগুলি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পথশিশুরা তাদের
সহপাঠী ও সঙ্গীদের মধ্যে যোগাযোগ এবং নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধি করতে সহায়তা করা হবে ।

 প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে কাঙ্খিত ১৮০ জন পথশিশু বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ গ্রহণ নিশ্চিত করা হবে

 ডিসেম্বর, ২০২০ সালের মধ্যে ১৮০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পথশিশুকে তাদের উপযুক্ত কাজের সাথে জড়িত
করা হবে ৷

 কর্ম এলাকায় প্রকল্প মেয়াদে পথশিশুদের নির্যাতন ও হয়রানি হ্রাস করা, তাদের অধিকার সম্পর্কে
সচেতন করা এবং তাদের অধিকার সংরক্ষণে এ্যাডভোকেসি করা হবে ৷
প্রকল্পের প্রধান প্রধান সেবাসমূহ

* আউটরীচের মাধ্যমে পথশিশুদেরকে সনাক্ত করা, সেবা প্রদান করা এবং সংগঠিত করা ।

* পথশিশুদের দলে এবং ড্রপ-ইন-সেন্টারে (ডিআইসি) শিক্ষামূলক ও স্বাস্থ্যশিক্ষা বিষয়ক সেশন নেওয়া ।

* ডিআইসিতে পথশিশুদের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, মৌলিক শিক্ষা, বিনোদন ও পুষ্টি ঘাটতিপুরণ নিশ্চিত করা

* প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ও ঔষধ সহায়তা প্রদান করা

* জীবন দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ট্রেড প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা

* শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়তা করা

* ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাউন্সেলিং প্রদান এবং পরিবার পরিদর্শন করা

* VCT (Voluntary Counselling and Testing) সেবা প্রদান করা

* বিভিন্ন আয়মূলক ট্রেডে ভর্তি করে স্বাবলম্বী করা এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ কাজে উদবুদ্ধ করা

* পথশিশুদের অধিকার রক্ষায় এ্যাডভোকেসি কার্যক্রম (বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক) বাস্তবায়ন করা

* প্রতিবন্ধি শিশুদের চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং তাদের উপযোগী সহায়ক উপকরণ বিতরণ

* শিশু নির্যাতন, নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ, শিশুশ্রম নিরোধ, এইচআইভি এইডস্‌, এসটিডি, এসটিআই বিষয়ে
সেমিনারের আয়োজন করা ।

* সেবা প্রদানের সময় –

ড্রীম প্রকল্পের মোহাম্মদপুর ও গাবতলীডিআইসিতে সপ্তাহে ৬ দিন সকাল ৮:৩০ হতে বিকাল ৫:০০ পর্যন্ত
পথশিশুদের এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তাদের অভিভাবকদেরও বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা হয়। শুক্রবার এবং
সরকার ঘোষিত ছুটির দিনে ডিআইসি বন্ধ থাকে ।

আদর, স্রেহ, ভালবাসা বঞ্চিত বিপদাপন্ন পথশিশুরা আমাদের সমাজের অংশ। কোন না কোন কারণে তারা রাস্তায়
ঝুঁকিপূর্ন জীবনযাপন করছে। তাদের প্রতি রাষ্ট্রে, সমাজের এবং আমাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। সবার
আন্তরিক সহযোগিতা পেলে বিপদাপন্ন শিশুরা দেশের সু-নাগরিক হিসাবে গড়ে উঠতে পারবে।
প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থানীয় অংশীবৃন্দ -

- প্রকল্প কর্মীবৃন্দ
- স্থানীয় প্রশাসন কর্মকর্তাবৃন্দ (সিটি কর্পোরেশন, ওয়ার্ড কাউন্সিল, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ)
- সংশ্লিষ্ঠ সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ
- স্থানীয় উন্নয়ন মিত্রগণ
- পথশিশুদের অভিভাবক/পিতামাতাগণ
- সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তাগণ ।

পথশিশুদের বিপদাপন্নতা হাসে আসুন আমরা সবাই মিলে একযোগে কাজ করি । তাদের স্থায়িতৃশীল উন্নয়নে যে
যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করি ।

You might also like