Download as xlsx, pdf, or txt
Download as xlsx, pdf, or txt
You are on page 1of 78

হাদিস

আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, সর্বোত্তম
কালাম হল আল্লাহর কিতাব, আর সর্বোত্তম আদর্শ হল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ আর সবচেয়ে নিকৃ ষ্টতম বিষয় হল কু সংস্কারসমুহ। তোমাদের কাছে
যা ঘোষণা করা হচ্ছে তা বাস্তবায়িত হবেই, তোমরা ব্যর্থ করতে পারবে না (৬ঃ ১৩৪)।

মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা
বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। (এ সময়)
তিনি বললেনঃ অবশ্যই আমি আল্লাহ তা'আলার কিতাব অনুযায়ী তোমাদের মাঝে
ফায়সালা করব।

মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সকল উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু যে
অস্বীকার করে। তারা বললেন, কে অস্বীকার করে। তিনি বললেনঃ যারা আমার অনুসরণ
করে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার অবাধ্য হবে সে-ই অস্বীকার করল।

আবু নুআয়ম (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে কু রআন পাঠকারী
সমাজ! তোমরা (কু রআন ও সুন্নাহর উপর) সুদৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই তোমরা অনেক পিছনে
পড়ে আছ। আর যদি তোমরা (সিরাতে মুস্তাকীম থেকে সরে গিয়ে) ডান কিংবা বামের পথ
অনুসরণ কর তাহলে তোমরা (হেদায়েত থেকে) অনেক দুরে সরে যাবে।

আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ মুকরী (রহঃ) ... আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমদের সবচেয়ে বড় অপরাধী সেই ব্যাক্তি
যে এমন বিষয়ে প্রশ্ন করে যা পূর্বে হারাম ছিল না। কিন্তু তার প্রশ্নের কারণে তা হারাম হয়ে
গেছে।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ করো সেই সময়ের কথা, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে তার
পুত্রকে বলল, হে বৎস, আল্লাহর সঙ্গে শরিক কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা
বড় জুলুম। ’ (সুরা : লুকমান : আয়াত : ১৩)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে ব্যক্তি তাঁর
সঙ্গে শরিক করে। এ ছাড়া অন্য পাপ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর যে ব্যক্তি
আল্লাহর সঙ্গে শিরক করল, সে অত্যন্ত গুরুতর অপবাদ আরোপ করল। ’ (সুরা : নিসা,
আয়াত : ৪৮)

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর নিশ্চিত জেনো, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করে
আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন। তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর যারা (এরূপ)
জুলুম করে তাদের কোনো রকমের সাহায্যকারী লাভ হবে না। ’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত :
৭২)
হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা আগের
জাতিদের কাছে জুমার মর্যাদা অজ্ঞাত রাখেন। তাই ইহুদিরা শনিবার নির্ধারণ করে। আর
খ্রিস্টানরা রবিবার নির্ধারণ করে। অতঃপর আমরা আসি। আমাদের তিনি জুমার দিনের
মর্যাদা প্রকাশ করেন। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮৫৬)

আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা
কাহাফ পড়বে কেয়ামতের দিন তার পায়ের নিচ থেকে আসমানের সীমা পর্যন্ত একটি
উজ্জ্বল আলো প্রকাশ পাবে যা তার চারদিক আলোকিত করবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী
সময়ের গুনাহ মাফ করা হবে। ’ (আত তারগিব ওয়াত তারহিব, ২৯৮/১)

আউস বিন আউস সাকাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার
দিন ভালো করে গোসল করল, দ্রুততর সময়ে মসজিদে গেল ও (ইমামের) কাছাকাছি
বসে মনোযোগ দিয়ে (খুতবা) শুনল, তাঁর জন্য প্রতি কদমের বদলে এক বছরের রোজা ও
নামাজের সওয়াব থাকবে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৫)

জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে
ভালো কিছুর দোয়া করলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা সময়টি আসরের পর
অনুসন্ধান করো। ’ (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর : ১০৪৮)

হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসে, আল্লাহর জন্যই বিদ্বেষ পোষণ
করে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই দান করে, আর আল্লাহর জন্যই কাউকে কোনো কিছু দেওয়া
থেকে বিরত থাকে সে স্বীয় ঈমানকে পূর্ণ করল। ’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৬৮১)

ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুমিন তারাই, যাদের সামনে আল্লাহকে স্মরণ করা হলে তাদের
অন্তর কম্পিত হয়, আর যখন তাদের সামনে আল্লাহর আয়াতগুলো তিলাওয়াত করা হয়,
তখন তাদের ঈমানের জ্যোতি বৃদ্ধি পায় এবং তারা তাদের প্রতিপালকের ওপর ভরসা
রাখে। ’ (সুরা আনফাল, আয়াত : ২)

ইরশাদ হয়েছে, ‘এতে (কোরআন) যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের শরীর
রোমাঞ্চিত হয়, অতঃপর তাদের দেহমন বিনম্র হয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে। ’ (সুরা
ঝু মার, আয়াত : ২৩)

পবিত্র কোরআনে বেশি পরিমাণে আল্লাহর জিকির করার নির্দে শ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ
হয়েছে, ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে (সর্বাবস্থায়) আল্লাহর জিকির করে। ’ (সুরা আলে ইমরান,
আয়াত : ১৯১)

আহমাদ ইবনু আবূ রাজা' (রহঃ) ... আলী (রাঃ) বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, (ঐ সময়ের) সমগ্র নারীদের মধ্যে ইমরানের
কন্যা মারিয়াম হলেন সর্বোত্তম আর (এ সময়ে) নারীদের সেরা হলেন খাদীজা (রাঃ)।
রাসুল (সা.) খাবার গ্রহণের আগে সব সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলতেন।তার সঙ্গীদেরও
বিসমিল্লাহ বলতে উৎসাহিত করতেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে ও ডান
হাত দ্বারা খানা খাও। এবং তোমার দিক হতে খাও। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫১৬৭,
তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯১৩)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, “যখন তোমরা খানা খেতে শুরু করো
তখন আল্লাহর নাম স্মরণ করো। আর যদি আল্লাহর নাম স্মরণ করতে ভু লে যাও, তাহলে
বলো, ‘বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওআখিরাহ। ” (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৩৭৬৭,
তিরমিজি, হাদিস নং: ১৮৫৮)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) পানাহারের আগে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে
নিতেন। (মুসনাদে আহমাদ)

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) খাওয়ার পর কু লি করতেন এবং হাত ধৌত
করতেন। (মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে মাজাহ)

আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) পায়াবিশিষ্ট বড় পাত্রে খাবার খেতেন না। কাতাদা
(রা.) কে জিজ্ঞেস করা হলো, তাহলে কীসের ওপর খানা খেতেন? তিনি বললেন,
‘চামড়ার দস্তরখানের ওপর। ’ (বোখারি : ৫৩৮৬)

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা বাম হাত দ্বারা
খাবার খেয়ো না ও পান করো না। কেননা শয়তান বাম হাতে খায় ও পান করে। ’ (বুখারি,
হাদিস নং: ৫৩৭৬; মুসলিম, হাদিস নং: ২০২২)

রাসুল (সা.) খাওয়ার সময় সর্বদা হাত চেটে খেতেন। না চাটা পর্যন্ত কখনো হাত মুছতেন
না। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ
করবে, তখন হাত চাটা নাগাদ তোমরা হাতকে মুছবে (ধোয়া) না। ’ (বুখারি, হাদিস নং :
৫২৪৫)

রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করো তখন আঙু ল চেটে খাও। কেননা
বরকত কোথায় রয়েছে তা তোমরা জানো না। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ১৯১৪)

জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের খাবার আহারকালে যদি লুকমা
পড়ে যায়, তাহলে ময়লা ফেলে তা ভক্ষণ করো। শয়তানের জন্য ফেলে রেখো না। ’
(তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯১৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪০৩)

আবু হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-এর দরবারে ছিলাম।
তিনি এক ব্যক্তিকে বলেন, আমি টেক লাগানো অবস্থায় কোনো কিছু ভক্ষণ করি না।
(বুখারি, হাদিস নং: ৫১৯০, তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯৮৬)

রাসুল (সা.) কখনো খাবারের দোষ ধরতেন না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)
কখনো খাবারের দোষ-ত্রুটি ধরতেন না। তার পছন্দ হলে খেতেন, আর অপছন্দ হলে
খেতেন না। (বুখারি, হাদিস নং : ৫১৯৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৩৮২)
রাসুল (সা.) খাবারে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল
(সা.) কখনো খাবারে ফুঁ দিতেন না। কোনো কিছু পান করার সময়ও তিনি ফুঁ দিতেন না।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪১৩)

আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) খাবার শেষ করে বলতেন, ‘আলহামদুলিল্লাহি
হামদান কাসিরান ত্বয়্যিবান মুবারাকান ফিহি, গায়রা মাকফিইন, ওলা মুয়াদ্দায়িন ওলা
মুসতাগনা আনহু রাব্বানা। ’ তিনি কখনো এই দোয়া পড়তেন: ‘আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি
আতআমানা ওয়াছাকানা ওয়াজাআলানা মিনাল মুসলিমিন। ’ (বুখারি, হাদিস নং :
৫৪৫৮)

হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করল সে জান্নাতের
সুগন্ধিও পাবে না, অথচ তার সুগন্ধি ৪০ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়। ’
(বুখারি, হাদিস: ৩১৬৬)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আল্লাহর জমিনে তোমরা দম্ভ ভরে চলো না, কেননা তু মি
কখনই এ জমিন বিদীর্ণ করে এর নিচে যেতে পারবে না, আর উচ্চতায় তু মি কখনো
পর্বতসমানও হতে পারবে না। (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত ৩৭)

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাক। কেননা হিংসা নেক আমলকে
এমনভাবে ধ্বংস করে দেয়, যেমন আগুন কাঠের টু করাকে খেয়ে ফেলে। (জ্বালিয়ে দেয়)।
(আবু দাউদ, মিশকাত)

আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব, যারা আমার
ইবাদত নিয়ে অহংকার করে তারা শিগগিরই অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
(সুরা মুমিন (৪০), আয়াত ৬০)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘অচিরেই এমন ফিতনার
আত্মপ্রকাশ ঘটবে, যার ফলে উপবিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডায়মান ব্যক্তি থেকে উত্তম থাকবে। আর
দণ্ডায়মান ব্যক্তি চলমান ব্যক্তি থেকে উত্তম থাকবে। আর চলমান ব্যক্তি দ্রুতগামী ব্যক্তি
থেকে ভালো থাকবে। যে ব্যক্তি ওই ফিতনায় জড়িয়ে পড়বে তাকে সে ফিতনা ধ্বংস করে
দেবে। আর যে ব্যক্তি কোনো আশ্রয়স্থল পাবে, সেটা দিয়ে তার আশ্রয় নেওয়া উচিত। ’
(মুসলিম, হাদিস : ৭১৩৯)

মুনাফিক সম্পর্কে সুরা বাক্বারাহর ১৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা
(মুনাফিক) যখন ঈমানদার লোকদের সঙ্গে মিলিত হয়, তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি।
কিন্তু যখন নির্জ নে তারা তাদের দলনেতাদের সঙ্গে মিলিত হয়, তখন বলে, আসলে আমরা
তোমাদের সঙ্গেই আছি, আমরা তাদের সঙ্গে ঠাট্টাই করি মাত্র।

হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে
উত্তমরূপে অজু করে সওয়াবের উদ্দেশ্যে তার কোনো মুসলমান রুগ্ন ভাইকে দেখতে
যাবে, তাকে জাহান্নাম থেকে ৬০ বছরের পথ দূরে রাখা হবে। ’ -আবু দাউদ
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে
কোনো মুসলমান কোনো রুগ্ন মুসলমানকে দেখতে যায় এবং ৭ বার বলে, আমি মহান
আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি, যিনি মহান আরশের অধিকারী, তিনি যেন আপনাকে
আরোগ্য দান করেন। এতে তাকে নিশ্চয় আরোগ্য দান করা হয়, যদি না তার মৃত্যু উপস্থিত
হয়। -আবু দাউদ ও তিরমিজি

হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রুগ্ন
ব্যক্তিকে দেখতে রওয়ানা হলো, সে আল্লাহর রহমতের সাগরে সাঁতার কাটতে থাকলো,
যতক্ষণ না সে তথায় গিয়ে বসে। যখন সে গিয়ে বসল, তখন সে রহমতের সাগরে ডু ব
দিল। -মালেক ও আহমদ

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
‘আল্লাহতায়ালার নিকট হাত তু লে হাতের তালু সামনে রেখে দোয়া কর। হাত উল্টো করো
না। দোয়ার শেষে উত্তোলিত হাত মুখমন্ডলে বুলিয়ে নাও। ’ -আবু দাউদ

সেজদারত অবস্থায় দোয়া করা হলে তা কবুল হয়- রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে সময়টাতে
বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটতম অবস্থায় থাকে তা হলো সেজদারত অবস্থা। সুতরাং
তোমরা সে সময় আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চাও বা প্রার্থনা করো। ’ (মুসলিম)

জমজমের পানি পান করার সময়ের দোয়া করা হলে তা কবুল হয়- রাসূল (সা.) বলেন,
‘জমজম পানি যে নিয়তে পান করা হবে, তা কবুল হবে। ’ অর্থাৎ এই পানি পান করার
সময় যে দোয়া করা হবে, ইনশাআল্লাহ তা অবশ্যই কবুল হবে। (ইবনে মাজাহ)

আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া কবুল হয়। হজরত আনাস (রা.) থেকে
বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া করা হলে তা
ফিরিয়ে দেয়া হয় না। ’ (তিরমিজি)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা
বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও—যদি তোমরা মুমিন হও। অতঃপর যদি তোমরা না করো,
তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা নাও। ’ (সুরা: বাকারা, আয়াত
২৭৮-২৭৯)

জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক ও
তার সাক্ষীদ্বয়ের ওপর অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন এরা সবাই সমান। (মুসলিম,
হাদিস: ৩৯৮৫)

জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি
ফজরের নামাজ পড়বে, সে আল্লাহর জিম্মায় থাকবে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৭)

আবু মুসা আশয়ারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুটি
শীতল সময়ে নামাজ আদায় করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ (বুখারি ও মুসলিম)
হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, ফিতরাত (নবীদের পন্থা) হলো পাঁচটি বিষয়: খৎনা করা,
নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং গোঁফ
খাটো করা। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২৯২)

ভবিষ্যৎ বিষয় জানার জন্য জাদুকর বা গণকদের বিশ্বাস করা এবং তাদের কাছে আসা-
যাওয়া করা ইসলামে নিষিদ্ধ। এর দ্বারা বান্দার আমল বিনষ্ট হয়। নবীজি (সা.) এর
ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি গণকের কাছে গেল এবং তাকে কোনো
ব্যাপারে প্রশ্ন করল, ৪০ রাত তার কোনো নামাজ কবুল হবে না। (মুসলিম, হাদিস: ৫৭১৪)

সাহাবি ইবনে ওমর (রা,) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিকার করা বা
গবাদি পশু পাহারা অথবা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কু কু র লালন-পালন
করে, প্রতিদিন ওই ব্যক্তির দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়। ’ (তিরমিজি, হাদিস :
১৪৮৭)

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের এই
দ্বিনে (ইসলাম ধর্মে) কোনো নতু ন কিছু সৃষ্টি করে, যা (যার ভিত্তি) তার মধ্যে নেই তা
প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ’ (বুখারি, হাদিস: ২৬৯৭)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল সে মহান আল্লাহর
রক্ষণাবেক্ষণের অন্তর্ভু ক্ত হলো...। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৯)

বিখ্যাত তাবেয়ি আবু বকর বিন উমারাহ তাঁর পিতা রুআয়বাহ থেকে বর্ণনা করেন, আমি
রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘এমন কোনো ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্যোদয়ের
আগের এবং সূর্যাস্তের আগের অর্থাৎ ফজর ও আসরের নামাজ আদায় করে।
’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩২২)

বিখ্যাত সাহাবি আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাতের অন্ধকারে
মসজিদগুলোতে যাতায়াতকারীদের কিয়ামতের দিনের পরিপূর্ণ নুরের সুসংবাদ দাও। ’
(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৭৮১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন
অর্ধেক রাত পর্যন্ত (নফল) নামাজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ
জামাতের সঙ্গে আদায় করল সে যেন সারা রাত জেগে নামাজ আদায় করল। ’ (মুসলিম,
হাদিস : ১৩৭৭)

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী
কোনো নামাজ নেই। এ দুই নামাজের ফজিলত যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে
হলেও তারা উপস্থিত হতো। ’ (বুখারি, হাদিস : ৬৫৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও তার সব কিছুর চেয়ে
উত্তম। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৫৭৩)
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন আপনার প্রতিপালক ফেরেশতাদের বলেন,
নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীতে আমার প্রতিনিধি পাঠাবো। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩০)

হজরত সাওবান রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তির জন্য হালাল নয় কারও
গৃহাভ্যন্তরে অনুমতি ব্যতীত দৃষ্টিপাত করা... এবং কেউ যেন প্রস্রাব-পায়খানার চাপ নিয়ে
নামাজ না পড়ে। (জামে তিরমিজি, হাদিস-৩৫৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস-৯১)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা বিনা অপরাধে ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের
কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে। (সুরা
আহযাব, আয়াত: ৫৮)

অন্য হাদিসে আছে, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপদাতা, অশ্লীলভাষী ও


গালিগালাজকারী হয় না। (তিরমিজি, হাদিস নং : ২০৪৩)

আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি [আল্লাহর
অবাধ্যাচরণ] এবং তার সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করা কু ফরি। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ৬০৪৫,
৭০৭৬; তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯৮৩)

অন্য এক হাদিসে আছে, ‘কবিরা গুনাহগুলোর একটি হলো নিজের বাবা-মা’কে অভিশাপ
করা। ’ জিজ্ঞেস করা হল, আল্লাহর রাসুল! মানুষ নিজের বাবা-মা’কে কিভাবে অভিশাপ
করে?’ তিনি বললেন, ‘যখন সে অন্যের বাবাকে গালি-গালাজ করে, তখন সে নিজের
বাবাকেও গালি-গালাজ করে থাকে। আর সে অন্যের মা-কে গালি দেয়, বিনিময়ে সে তার
মা-কেও গালি দেয়। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ৫৯৭৩, তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯০২)

হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সাবধান!
তোমরা নির্জ নে নারীদের কাছেও যেও না। ’ এক আনসার সাহাবি বললেন, ইয়া
রাসূলাল্লাহ! দেবর সম্পর্কে আপনার নির্দে শ কী? নবীজি (সা.) বললেন, ‘দেবর তো মৃত্যুর
সমতু ল্য। ’ (মুসলিম, ২৪৪৫)

আতিথেয়তার ফজিলত বর্ণনা করে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে
বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানের সমাদর করে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৯)

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে অলিমায় শুধু ধনীদের আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং গরিবদের বাদ
দেওয়া হয়, তা সবচেয়ে নিকৃ ষ্ট খাবার। ’ (বুখারি, হাদিস : ৪৭৯৯)

আবুল ইয়ামান (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলার নিরানব্বইটি (এক কম একশতটি) নাম আছে।
যে ব্যাক্তি এ নামসমূহ মুখস্থ করে রাখবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
আবূ নুআঈম (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করো না। কারো
কসম করতে হলে সে যেন আল্লাহর নামেই কসম করে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা বিনা অপরাধে ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের
কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে। (সুরা
আহযাব, আয়াত: ৫৮)

রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি [আল্লাহর অবাধ্যাচরণ] এবং তার
সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করা কু ফরি। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ৬০৪৫, ৭০৭৬; তিরমিজি, হাদিস
নং: ১৯৮৩)

হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, আমি আমার উম্মতের জন্য ছোট শিরকের ভয় যত
করছি, এত ভয় অন্য কোনো বিষয়ে করি না। উপস্থিত সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া
রাসূলুল্লাহ! ছোট শিরক কি? হুজুর (সা.) উত্তর দিলেন, তা হচ্ছে- রিয়া।

আমের ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, শীতল
গনিমত হচ্ছে শীতকালে রোজা রাখা। (তিরমিজি, হাদিস: ৭৯৫)

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, বিশুদ্ধ নিয়তে যে ব্যক্তি এক দিন রোজা রাখল মহান
আল্লাহ প্রতিদানস্বরূপ জাহান্নাম ও ওই ব্যক্তির মাঝখানে ৭০ বছরের দূরত্ব তৈরি করে
দেবেন। (বুখারি, হাদিস: ২৮৪০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে মুমিন অন্য বিবস্ত্র মুমিনকে কাপড় পরিয়ে দিল, মহান
আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরিয়ে দেবেন। (তিরমিজি, হাদিস: ২৪৪৯)

মহান আল্লাহ ঈমানদারদের গুণাবলি সম্পর্কে বলেন, ‘তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা
থাকে। তারা তাদের রবকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি,
তা থেকে ব্যয় করে। ’ (সুরা: সাজদা, আয়াত : ১৬)

বুখারি শরিফে আছে, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যখন
তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম’ আয়াতটি নাজিল হলো, তখন
রাসুল (সা.) বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ’ ”(বুখারি)

রাসুল (সা.) বলেছেন, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূ মিকম্প
হবে, সময় সংকু চিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং খুনখারাবি বাড়বে, তোমাদের
সম্পদ এতো বাড়বে যে, উপচে পড়বে। (বোখারি, হাদিস নং : ৯৭৯)

আল্লাহ বলেন, ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের
নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন। ’ (সুরা
শুরা : ৩০)
মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি জনপদের মানুষগুলো ঈমান আনতো এবং (আল্লাহকে) ভয়
করতো, তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে
দিতাম, কিন্তু তারা (আমার নবীকেই) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং তাদের কৃ তকর্মের
জন্য আমি তাদের পাকড়াও করলাম। ’ (সুরা আরাফ : ৯৬)

হাদিসের একাধিক বর্ণনা থেকে সুস্পষ্ট যে, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলতেন, ‘সেই ব্যক্তির নামাজ হয় না; যে ব্যক্তি তাতে সুরা ফাতিহা পড়ে না।’ (বুখারি,
মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকি)

‘আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি নামাজ (সুরা ফাতিহা) কে আমার ও আমার বান্দার মাঝে
আধাআধি ভাগ করে নিয়েছি। (সুরাটির) অর্ধেক আমার জন্য এবং অর্ধেক আমার বান্দার
জন্য। আর আমার বান্দা তাই পায়, যা সে প্রার্থনা করে।

মুখ ও কথা প্রসঙ্গে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-‘কোন বান্দার
ঈমান ঠিক হয় না যতক্ষণ না তার অন্তর ঠিক হয়। তেমনিভাবে কোন বান্দার অন্তর ঠিক হয়
না যতক্ষণ না তার মুখ ঠিক হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে প্রশ্ন করা হলো- কোন কর্মটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে
যাবে। তিনি বললেন- আল্লাহভীতি, সদাচরণ ও উত্তম চরিত্র। আবার তাকে প্রশ্ন করা হলো,
কোন কাজটি সবচাইতে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। তখন তিনি বলেন-
‘মুখ ও লজ্জাস্থান।(তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাকে হাকেম,
আদাবুল মুফরাদ, বায়হাকি, ইবনে হিব্বান)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয়ই বান্দার পরিণাম চিন্তা ব্যতিরেকেই এমন কথা
বলে যে কথার কারণে সে ঢু কে যাবে জাহান্নামের এমন গভীরে। যার দূরত্ব পূর্ব (পশ্চিম) এর
দূরত্বের চেয়েও বেশি।’ (বুখারি, মুসলিম)

হজরত সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে নিশ্চয়তা দেবে যে, সে অন্যের কাছে কিছু চাইবে না;
ভিক্ষা করবে না। তাহলে আমি তার জান্নাতের যিম্মাদার হবো। হজরত সাওবান রাদিয়াল্লাহু
আনহু বলেন, আমি। এরপর তিনি কারো কাছে কোনো কিছুই চাননি।’ (আবু দাউদ,
মুসনাদে আহমাদ)

হজরত ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন-
‘যে ব্যক্তি কঠিন অভাবে জর্জ রিত; সে মানুষের সামনে প্রয়োজন পূরণের ইচ্ছা প্রকাশ
করলে এ অভাব দূর হবে না। আর যে ব্যক্তি তার অভাবের কথা শুধু আল্লাহর কাছে বলে,
আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট। হয় তাকে তাড়াতাড়ি মৃত্যু দিয়ে অভাব থেকে মুক্তি দিবেন
অথবা তাকে কিছু দিনের মধ্যে ধনী বানিয়ে দেবেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মুসতাদরাকে
হাকেম, বায়হাকি)
আবু দাউদ শরীফের একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাগ আসে
শয়তানের কাছ থেকে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুন নেভাতে লাগে পানি। তাই
যখন তোমরা রেগে যাবে, তখন অজু করে নেবে। ’
মুসলিম শরীফের এক হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রাগের সময় নিজেকে
সামলে নিতে পারে, সেই প্রকৃ ত বাহাদুর।

আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, রাগ দেখানোর সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে তা নিয়ন্ত্রণ করতে
পারে, আল্লাহতায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন পুরস্কৃ ত করবেন।

কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘লোকেরা আপনাকে জিজ্ঞেস করে, তাদের জন্যে কি কি
হালাল করা হয়েছে। হে নবী! আপনি বলে দিন, তোমাদের জন্যে হালাল করা হয়েছে সে
সব জিনিস- যা পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও উত্তম-উৎকৃ ষ্ট।

নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, তিনটি অভিশাপ আহ্বানকারী জিনিস থেকে তোমরা
দূরে থাকো। তা হচ্ছে- পানি পানের স্থানে, রাস্তার মাঝখানে ও ছায়াচ্ছন্ন স্থানে পায়খানা
করা। -আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ
(সা.) বলেছেন, ‘যে বান্দা আল্লাহর পক্ষ থেকে অল্প রিজিক পেয়ে খুশি থাকে,
আল্লাহ্তায়ালা তার তরফ থেকে অল্প আমলে খুশি থাকেন। ’ -মুসনাদে আহমদ

কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা
বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও—যদি তোমরা মুমিন হও। অতঃপর যদি তোমরা না করো,
তাহলে আল্লাহ ও তার রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা নাও। ’ (সুরা: বাকারা, আয়াত
২৭৮-২৭৯)

জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক ও
তার সাক্ষীদ্বয়ের ওপর অভিসম্পাত করেছেন এবং বলেছেন এরা সবাই সমান। (মুসলিম,
হাদিস: ৩৯৮৫)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির কাছে দুইজন স্ত্রী আছে; সে ব্যক্তি যদি তাদের মধ্যে সমতা না
রাখে তবে কেয়ামতের দিন সে ব্যাক্তি তার দেহের এক পার্শ্ব ভাঙ্গা অবস্থায় উপস্থিত হবে।’
(তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

হজরত আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সুন্নাত নিয়ম হচ্ছে, নিজের স্ত্রী থাকার পরেও কোনো
লোক কু মারী নারীকে বিয়ে করলে সে তার সঙ্গে একাধারে সাতদিন অবস্থান করবে এবং
সায়্যিবা (অকু মারী) নারীকে বিয়ে করলে একাধারে তিন দিন তার সাথে অবস্থান করবে।’
তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, বুখারি, মুসলিম)

ব্যবসার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'তোমরা
ব্যবসা করো, কেননা রিজিকের ১০ ভাগের ৯ ভাগই রয়েছে ব্যবসায়।'
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘(বেঁচাকেনায়) বেশি বেশি কসম
খাওয়ায় মালের কাটতি (বিক্রি বেশি) হয়, কিন্তু (আল্লাহ তাতে) বরকত দূর করে দেয়।
(বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ)

হজরত উবায়দ ইবনু রিফাআহ তাঁর বাবার মাধ্যমে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের
দিন হাশরের ময়দানে ব্যবসায়ীগণ বদকাররূপে উপস্থিত হবেন। অবশ্য যারা মুত্তাক্বি,
পরহেজগার, নেককার ও সত্যবাদী হবেন তারা এরূপ হবেন না।’ (তিরমিজি, ইবনে
মাজাহ)

হজরত আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘(যারা) সত্যবাদী, আমানতদার ব্যবসায়ী (কেয়ামতের দিন তারা) নবি,
সিদ্দিক ও শহিদদের দলে থাকবেন। (তিরমিজি, দারাকু ত্বনি)

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তিকে কন্যাসন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবং সে
ধৈর্যের সঙ্গে তা সম্পাদন করেছে, সেই কন্যাসন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে আড়
(প্রতিবন্ধক) হবে।’ (তিরমিজি)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কন্যা সন্তানের লালন-পালনের বিষয়ে আরও
বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির তিনটি কন্যাসন্তান বা তিনজন বোন আছে, আর সে তাদের সঙ্গে
উত্তম আচরণ করেছে, তাদের নিজের জন্য অসম্মানের কারণ মনে করে না, সে অবশ্যই
জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (তিরমিজি)

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দুজন কন্যা সন্তানকে লালন-পালন ও দেখাশোনা করল (বিয়ের
সময় হলে ভালো পাত্রের কাছে বিয়ে দিল) সে এবং আমি জান্নাতে এরূপ এক সঙ্গে
প্রবেশ করব, যেরূপ এই দুটি আঙু ল (এ কথা বলার সময় তিনি নিজের দুই আঙু ল মিলিয়ে
দেখালেন)।’ (তিরমিজি)

কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-‘যে নিজের আত্মাকে (পাপ-
পঙ্কিলতা থেকে) পবিত্র করে সেই সফল হয় আর যে তাকে কলুষিত করে (সে) ধ্বংস হয়।’
(সুরা শামস : আয়াত ১০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে চু প থাকে সে মুক্তি পায়। ’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৫০১)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সব শোনা কথা প্রচার ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট। ’
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৯২)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের কাছে যদি কোনো ফাসেক
ব্যক্তি কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তা যাচাই করো। অজ্ঞতাবশত কোনো গোষ্ঠীকে
আক্রান্ত করার আগেই, (না হলে) তোমরা কৃ তকর্মের জন্য লজ্জিত হবে। ’ (সুরা হুজুরাত,
আয়াত: ৬)
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ কোরো না।
নিশ্চয়ই কান, চোখ, অন্তরের প্রতিটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে। ’ (সুরা বনি ইসরাঈল,
আয়াত : ৩৬)

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা পরস্পরের দোষচর্চা কোরো না। তোমাদের কেউ কি তার
মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? নিশ্চয়ই তোমরা তা অপছন্দ করবে। তোমরা
আল্লাহকে ভয় করো, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। ’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১২)

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি তারা তোমাদের সঙ্গে বের হতো, তবে শুধু বিভ্রান্তিই বৃদ্ধি
পেত। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তারা তোমাদের ভেতর ছোটাছুটি করত। তোমাদের ভেতর
তাদের কথা শোনার (বিশ্বাস করার) লোক রয়েছে। আল্লাহ অত্যাচারীদের সম্পর্কে অবগত
আছেন। ’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৪৭)

পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যার বক্ষকে আল্লাহ ইসলামের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন,
অতঃপর সে তার রবের দেওয়া জ্যোতির মধ্যে আছে। ’ (সুরা: জুমার, হাদিস: ২২)

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর অবশ্যই আমরা তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষু ধা, ধন
ও প্রাণের ক্ষতির মাধ্যমে এবং ফল-শস্যাদি বিনষ্টের মাধ্যমে। ’ (সুরা: বাকারা, আয়াত:
১৫৫)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যখন কোনো বান্দার
কল্যাণ চান, তখন তার অন্তর ধনী করে দেন এবং তার অন্তরে তাকওয়া দান করেন। আর
আল্লাহ যার অকল্যাণ চান, তখন তার সামনে দরিদ্রতা ছড়িয়ে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান,
হাদিস: ৬২১৭)

মুআবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বিনের
প্রজ্ঞা দান করেন। আল্লাহই দানকারী আর আমি বণ্টনকারী। (বুখারি, হাদিস: ৭১)

আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ যখন তার বান্দার মঙ্গল কামনা করেন,
তখন দুনিয়ায় তাকে অতি তাড়াতাড়ি বিপদাপদের সম্মুখীন করা হয়। আর যখন তিনি
কোনো বান্দার অকল্যাণের ইচ্ছা করেন, তখন তিনি তার গুনাহর শাস্তি প্রদান থেকে বিরত
থাকেন। অবশেষে কিয়ামতের দিন তাকে এর পরিপূর্ণ আজাবে নিপতিত করেন।
(তিরমিজি, হাদিস: ২৩৯৬)

রাসুল (সা.) বলেন, কোনো ব্যক্তির জন্য বিনাশ্রমে আল্লাহর পক্ষ থেকে মর্যাদার আসন
নির্ধারিত হলে আল্লাহ তার শরীর, সম্পদ অথবা সন্তানকে বিপদগ্রস্ত করেন। অতঃপর সে
তাতে ধৈর্যধারণ করলে শেষ পর্যন্ত বরকতময় মহান আল্লাহ কর্তৃ ক নির্ধারিত উক্ত মর্যাদার
স্তরে উপনীত হয়। (আবু দাউদ, হাদিস: ৩০৯০)

রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন কোনো আহলে বাইতের কল্যাণ চান, তখন তার মধ্যে
নম্রতার উদ্রেক ঘটান। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৪৪৭১
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন তার বান্দা সম্পর্কে কল্যাণের
ইচ্ছা করেন, তখন তাকে আমল করতে দেন। বলা হলো—হে আল্লাহর রাসুল! কীভাবে
তিনি আমল করতে দেন? তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে তিনি তাকে নেক আমলের
তাওফিক দান করেন। (তিরমিজি, হাদিস: ২১৪২)

ভবিষ্যৎ বিষয় জানার জন্য জাদুকর বা গণকদের বিশ্বাস করা এবং তাদের কাছে আসা-
যাওয়া করা ইসলামে নিষিদ্ধ। এর দ্বারা বান্দার আমল বিনষ্ট হয়। নবীজি (সা.) এর
ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি গণকের কাছে গেল এবং তাকে কোনো
ব্যাপারে প্রশ্ন করল, ৪০ রাত তার কোনো নামাজ কবুল হবে না।(মুসলিম, হাদিস : ৫৭১৪)

সাহাবি ইবনে ওমর (রা,) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিকার করা বা
গবাদি পশু পাহারা অথবা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কু কু র লালন-পালন
করে, প্রতিদিন ওই ব্যক্তির দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়। ’ (তিরমিজি, হাদিস :
১৪৮৭)

জুনদাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর শপথ!
আল্লাহ অমুক লোককে মাফ করবেন না। আর আল্লাহ তাআলা বলেন, ওই ব্যক্তি কে? যে
শপথ খেয়ে বলে যে আমি অমুককে মাফ করব না? আমি তাকে মাফ করে দিলাম এবং
তোমার শপথ নষ্ট করে দিলাম। (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৭৫)

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের এই
দ্বিনে (ইসলাম ধর্মে) কোনো নতু ন কিছু সৃষ্টি করে, যা (যার ভিত্তি) তার মধ্যে নেই তা
প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ’ (বুখারি, হাদিস : ২৬৯৭)
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমলের ফলাফল নির্ভ র করে নিয়তের ওপর। ’ (বুখারি,
হাদিস : ১

ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা নিজের দ্বিন থেকে ফিরে যাবে এবং কাফির অবস্থায়
মৃত্যুবরণ করবে, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের যাবতীয় আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। আর তারাই
হলো দোজখবাসী। তাতে তারা চিরকাল বাস করবে। ’ (সুরা: বাকারা, আয়াত: ২১৭)

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মানুষ মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু তিন ধরনের আমল জারি থাকে।
এক. সদকায়ে জারিয়া (চলমান পুণ্য। দুই. ওই জ্ঞান, যার মাধ্যমে মানুষ উপকৃ ত হয়। তিন.
সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। ’ (নাসায়ি, হাদিস: ৩৬৫১)

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘তোমরা সন্তানদের নামাজের প্রতি যত্নবান হও এবং
তাদের ভালো কাজে অভ্যস্ত করো। কেননা কল্যাণ লাভ অভ্যাসের ব্যাপার। ’ (সুনানে
বায়হাকি, হাদিস : ৫০৯৪)
হজরত রাসূলুল্লাহ বলেন, ‘জিকির করতে করতে যে ব্যক্তি নিজের জিহ্বা সতেজ রাখবে,
সে হাসতে হাসতে জান্নাতে যাবে।
আলী ইবনু জা’দ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম কখনো কোন খাদ্যবস্তুকে মন্দ বলতেন না। রুচি হলে খেয়ে নিতেন নতু বা ত্যাগ
করতেন।

সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) ... আমর ইবনু তাগলিব (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তোমরা কিয়ামতের পূর্বে এমন এক
জাতির সাথে যুদ্ধ করবে যারা পশমের জুতা ব্যবহার করে এবং তোমরা এমন এক জাতির
সাথে যুদ্ধ করবে যাদের চেহারা হবে পিটানো ঢালের ন্যায়।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মহাকালের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত, কিন্তু তারা নয়; যারা
বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্য ধারণে সহায়তা
করে।’ (সুরা আসর, আয়াত: ১-৩)।

ইবনে আব্বাস (রা.) আরো বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর একটি সুরমাদানি ছিল। প্রত্যেক
রাতে (ঘুমানোর আগে) ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন।’
(সুনানুল কু বর লিল ইমাম বাইহাকী , হাদিস : ৮৫১৬)

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা সাদা
কাপড় পরিধান করো এবং তা দিয়ে তোমাদের মৃতদের কাফন পরাও। কেননা তা
তোমাদের উত্তম পোশাক। আর তোমাদের জন্য উত্তম সুরমা হলো ‘ইসমিদ’ সুরমা। কারণ
তা দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং চোখের পাপড়ি গজায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৭৮)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানবসন্তান, তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকার ও


বেশভূ ষার জন্য আমি তোমাদের পোশাক দিয়েছি এবং তাকওয়ার পরিচ্ছদই সর্বোত্কৃ ষ্ট।’
(সুরা আরাফ, আয়াত : ২৬)

ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন নারীদের বোলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের
লজ্জাস্থানের হেফাজত করে; তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ থাকে তা ছাড়া তাদের
আভরণ প্রদর্শন না করে।’ (সুরা নুর, আয়াত : ৩১)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী, স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিনদের নারীদের বোলো,
তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা
সহজতর হবে, ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা
আহজাব, আয়াত : ৫৯)

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পুরুষদের সুগন্ধি হলো, যার সুগন্ধি
স্পষ্ট কিন্তু রং চাপা আর নারীদের সুগন্ধি হলো, যার রং স্পষ্ট কিন্তু গন্ধ চাপা।’ (সুনানে
নাসায়ি, হাদিস : ৫১১৭)

সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা সাক্ষী থাক।
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, ঘোড়ার কপালের কেশগুচ্ছে কিয়ামত পর্যন্ত কল্যাণ ও বরকত নিহিত
রয়েছে।

মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি আমার উম্মতের কাউকে যদি অন্তরঙ্গ
বন্ধু রূপে গ্রহণ করতাম, তবে আবূ বকরকেই গ্রহণ করতাম। তবে তিনি আমার (দ্বীনি) ভাই
ও সাহাবী।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যিনি তোমাদের জন্য তা (পানি) দিয়ে শস্য, জাইতু ন,
খেজুরগাছ, আঙু র ও সব ধরনের ফল
ফলান। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন। ’ (সুরা নাহল, আয়াত :
১১)

মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী, তু মি তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন নারীদের বলো, তারা
যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে।
ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’(সুরা : আহজাব,
আয়াত: ৫৯)

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর অঙ্গীকার পূর্ণ করো। অবশ্যই অঙ্গীকার সম্পর্কে
জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত: ৩৪)

অন্যত্র মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করো। ’
(সুরা মায়েদা, আয়াত: ১)
আরও ইরশাদ করেন, ‘আর আল্লাহর অঙ্গীকার পূরণ করো।
’ (আল-আনআম, আয়াত: ১৫২)

অন্যত্র ইরশাদ করেন, ‘(বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরা এমন) যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ
করে এবং অঙ্গীকার ভঙ্গ করে না। ’ (সুরা রাদ, আয়াত: ২০)

মহান আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করার পর সে
অঙ্গীকার পূর্ণ করো। ’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৯১)।

মহানবী (সা.) বলেন, ‘যার মধ্যে আমানতদারি নেই, তার মধ্যে ঈমান নেই। অনুরূপ যে
ব্যক্তি অঙ্গীকার রক্ষা করে না, তার মধ্যে দ্বীন নেই। ’ (বায়হাকি, মিশকাত, পৃষ্ঠা : ১৫)

মহানবী (সা.) আরও ইরশাদ করেন, ‘মুনাফিকের নিদর্শন তিনটি: কথা বললে মিথ্যা বলে,
অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে, আমানত রাখলে খিয়ানত করে। অন্য বর্ণনায় রয়েছে চারটি।
চতু র্থটি হলো যখন বিবাদ করে, গালাগাল করে। ’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত, ১৭ পৃষ্ঠা)

হাদিসে কু দসিতে রয়েছে, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি বিচার দিবসে তিন ব্যক্তির
বিরুদ্ধে বাদী হবো। ১. যে ব্যক্তি অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে, ২. যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন
ব্যক্তিকে বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করে এবং ৩. যে ব্যক্তি কোনো কর্মচারী নিয়োগ করে
তার কাছ থেকে পূর্ণ কাজ আদায় করে, কিন্তু তার পারিশ্রমিক প্রদান করে না’ (সহিহ
বুখারি)।
মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো নেতার আনুগত্যের অঙ্গীকার করে, তার উচিত
সাধ্যমতো তার আনুগত্য করা (মুসলিম)। তাই কাউকে বৈধ কোনো কিছুর প্রতিশ্রুতি
দিলে বা অঙ্গীকার করলে তা পূর্ণ করা আবশ্যক। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

অন্য আরেকটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত:


‘নবী করীম (ছাঃ) আঙ্গুল ও প্লেটকে চেঁ টে খেতে আদেশ করেছেন এবং বলেছেন,
‘যখন তোমাদের কেউ খাবার খাবে আঙ্গুল চেঁ টে না খেয়ে হাত মুছবে না। কেননা সে জানে
না যে, কোন খাবারে বরকত আছে’।

আল্লাহ বলেন ---


"তোমরা জেনে রেখ, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতু ক, শোভা-সৌন্দর্য, পারস্পরিক গর্ব-
অহঙ্কার আর ধন-মাল ও সন্তানাদিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

ইমাম ইবনুল জাওযি (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এমন অনেক ইবাদতগুজার লোক আছে,
যারা অধিক নামাজ আদায় করে, অধিক রোজা রাখে, কিন্তু আত্মার পরিশুদ্ধির ব্যাপারে
গুরুত্ব দেয় না। ফলে নিজের অজান্তেই তারা অহংকার, লৌকিকতা, মুনাফিকি ও অজ্ঞতায়
আক্রান্ত হয়ে যায়।’ [আত-তাবসিরাহ: ২/২০৮]

ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘দেহের রোগের তু লনায় অন্তরের রোগ বেশি
জটিল। কেননা, দেহের রোগ হয়তো রোগীকে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যায়। কিন্তু অন্তরের রোগ
রোগীকে অনন্ত দুঃখ-কষ্টে (জাহান্নামে) পৌঁছে দেয়। ইলম (দ্বীনের জ্ঞান) ছাড়া এ রোগের
অন্য কোনো ঔষধ নেই।’ [মিফতাহু দারিস সা‘আদাহ: ১/৩০৬]

ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমার দেহ স্পর্শ করে বলেনঃ হে আবদুল্লাহ! দুনিয়াতে এমনভাবে বসবাস করো যেন তু মি
একজন প্রবাসী অথবা পথচারী মুসাফির। তু মি নিজেকে কবরবাসীদের অন্তর্ভু ক্ত মনে
করো। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ৪১১৪]

আল্লাহ ‫ ﷻ‬বলেছেন, কেউ জানে না আগামীকাল সে কি অর্জ ন করবে এবং কেউ জানে
না কোন্‌স্থানে তার মৃত্যু ঘটবে। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত। (সূরা লুকমান:৩৪)

আল্লাহ ‫ ﷻ‬বলেছেন, হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর; আর প্রত্যেকের উচিত


চিন্তা করে দেখা সে আগামীকালের (কিয়ামতের / পরকালের) জন্য কি প্রেরণ করেছে;
তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। (সূরা
হাশর:১৮)

কোরআনে এসেছে- ‘জমিনের উপর যা কিছু রয়েছে, সবই ধ্বংস হয়ে যাবে; একমাত্র
আপনার মহিমায় এবং মহানুভব পালনকর্তা ছাড়া।’ (সুরা আর-রাহমান : আয়াত ২৬-২৭)
হজরত আবু মুসা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, (এমন একটা সময় আসবে যখন) একজন পুরুষকে দেখতে
পাবে তার পেছনে চল্লিশজন নারী অনুসরণ করছে আশ্রয়ের জন্য। কেননা, তখন পুরুষের
সংখ্যা অনেক কমে যাবে আর নারীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে।’ (বুখারি)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রকৃ ত ঈমানদার ব্যক্তি কারো প্রতি
ভৎসনা ও লানত করে না এবং সে কোনো অশালীন এবং অশ্লীল কথাও বলে না।
(তিরমিজি)

হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো মুসলিমকে গালিগালাজ করা ফাসেকি (জঘন্য পাপ)
কাজ আর কোনো মুসলিমকে হত্যা করা কু ফরি।’ (বুখারি)

কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহ
তাআলার বিধান ও গণনায় মাস বারোটি। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত
বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।’ (সুরা তাওবাহ :
আয়াত ৩৬)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘বছরে মাস ১২টি। এরমধ্যে সম্মানিত
মাস ৪টি। তিনটি মাস ধারাবাহিক- জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। আর চতু র্থ মাসটি
হলো- রজব। যা (আরবি মাস) জমাদিউল আখির ও শাবানের মর্ধবর্তী মাস।’ (বুখারি)

হাদিসে এসেছে-
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সত্যের কাছাকাছি থাকো এবং সরল-
সোজা পথে চলো। মুমিনের যে কষ্টই হোক না কেন, এমনকি তার গায়ে যদি একটি কাঁটাও
বিঁধে বা সে কোনো বিপদে পড়ে; তবে এ সব কিছুই তার গুনাহর কাফফারা হয়ে যায়।’
(তিরমিজি)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ যার মঙ্গল চান তাকে দুঃখ-কষ্টে ফেলেন।’ (বুখারি)

হজরত সাহল ইবনু সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে; যার ছায়ায় একজন
জান্নাতি ১০০ বছর পর্যন্ত চলবে, তবুও বৃক্ষের ছায়াকে অতিক্রম করতে পারবে না।’
(বুখারি)

হজরত সাহল ইবনু সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতিরা জান্নাতে বালাখানাগুলো দেখতে পাবে, যেমন তোমরা
আকাশে তারকাগুলো দেখতে পাও।’ (বুখারি)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমার সঙ্গে যে সম্পর্ক ছিন্ন করে,
তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ো; তোমার প্রতি যে অবিচার করে, তাকে ক্ষমা করো।’ (তিরমিজি)
হজরত আদি ইবনে হাতেম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেদের বাঁচাও; যদি
তা অর্ধেক খেজুর দ্বারা হয় তবুও।’ (বুখারি ও মুসলিম)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুসলিমদের মধ্যে সবচেয়ে বড়


অপরাধী হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যার প্রশ্ন করার ফলে কোনো জিনিস হারাম করে দেওয়া হলো;
অথচ এর আগে তা হালাল ছিল।’ (বুখারি ও মুসলিম)

কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রেও সৌন্দর্য, সহনশীলতা ও শিষ্টাচার বজায় রাখার কথা বলেছেন
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি বলেছেন-
‘মানুষের জন্য ইসলামের সৌন্দর্য হচ্ছে অনর্থক কথাবার্তা পরিহার করা।’ (তিরমিজি, ইবনে
মাজাহ)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো নারী যেন সঙ্গে মাহরাম
ব্যক্তি ছাড়া একাকী তিন দিনের (দূরত্বে) কোনো সফর না করে।’ (মুসলিম)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘যে নারী আল্লাহ ও আখেরাতের
উপর ঈমান এনেছে তার জন্য সঙ্গে কোনো মাহরাম ব্যক্তি ছাড়া তিন দিনের দূরত্বে পথের
সফর করা বৈধ নয়।’ (মুসলিম)

মুসলিম ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আনসারদের প্রতি মুহব্বত ঈমানেরই নিদর্শন এবং তাঁদের
প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করা মুনাফেকীর পরিচায়ক।

মুসলিম (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) বদরী সাহাবী আবূ মাসউদ (রাঃ) সূত্রে
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, স্বীয় আহ্‌লের
(পরিবার পরিজনের) জন্য ব্যয় সাদাকা।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, 'কাজ ততটু কু করবে; যতটু কু করার শক্তি তোমার আছে। কেননা
আল্লাহ তাআলা সে পর্যন্ত বিরক্ত হন না; যতক্ষণ না তোমরা বিরক্ত হও।' (বুখারি, মুসলিম,
ফতহুল বারি)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, 'মুমিন ব্যক্তি নিজেকে নিজে অপমানিত
করা উচিত নয়।' সাহাবায়ে কেরাম জানতে চাইলেন, মুমিন ব্যক্তি কীভাবে নিজেকে নিজে
অপমানিত করে? তিনি উত্তরে বললেন, '(মুমিন ব্যক্তি) নিজেকে নিজে অসহনীয় (কষ্টের
কাজের) পরীক্ষায় নিপতিত করে।' (তিরমিজি)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের কারও আল্লাহর প্রতি সু-
ধারণা পোষণ করা ছাড়া মৃত্যুবরণ করা উচিত নয়।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

অন্য হাদিসে এসেছে ‘আমি আমার বান্দার সাথে তেমনি ব্যবহার করি, যেমন সে আমার
সম্বন্ধে ধারণা রাখে। এখন সে আমার প্রতি যা ইচ্ছা ধারণা রাখুক।’ (মুসনাদে আহমাদ)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা ধারণা থেকে বেঁচে থাক।
কেননা ধারণা মিথ্যা কথার নামান্তর।’ (বুখারি, মুসলিম)

হজরত মুআবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি নিজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘তু মি যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় জানার জন্য পেছনে
লাগো। তাদের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করবে কিংবা অন্তত বিপর্যয়ের দ্বার প্রান্তে পৌছে দেবে।’
(আবু দাউদ

অন্য এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুসলিমদের


গিবত করো না এবং তাদের দোষ অনুসন্ধান করো না। কেননা যে ব্যক্তি মুসলিমদের দোষ
অনুসন্ধান করে, আল্লাহ তার দোষ অনুসন্ধান করেন। আল্লাহ যার দোষ অনুসন্ধান করেন,
তাকে নিজ ঘরেও লাঞ্ছিত করে দেন।’ (আবু দাউদ)

আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘নিশ্চয়ই যারা এটা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা
ছড়িয়ে পড়ু ক, তাদের জন্য দুনিয়া ও পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আর আল্লাহ
জানেন এবং তোমরা জান না।’ (সুরা নুর : আয়াত ১৯)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য মধ্যমপন্থা অবলম্বনে
কিছু উপদেশ দিয়েছেন। কী সেই উপদেশ?
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সাদাসিধে থাকো, মধ্যপন্থা অবলম্বন
করো এবং হাসি-খুশিতে থাকো।’ (মিশকাত)

হাদিসে এসেছে- হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন আমি
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেয়ে বেশি মৃদু হাসি হাসতে কাউকে দেখিনি।’
(তিরমিজি)
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান হলো
মসজিদ আর নিকৃ ষ্ট স্থান হলো বাজার

বুখারির বর্ণনায় এসেছে- যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় (৫ ওয়াক্তে) মসজিদে যাতায়াত করে,


আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের মেহমানদারী প্রস্তুত রাখেন মর্মে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি

নবিজী বলেছেন- সবচেয়ে বেশি নেকি পান ওই ব্যক্তি যিনি সবচেয়ে দূর থেকে মসজিদে
আসেন এবং ওই ব্যক্তি বেশি পুরস্কৃ ত হন, যিনি আগে এসে (নামাজের) অপেক্ষায়
থাকেন। এরপর ইমামের সঙ্গে নামাজ পড়েন।’ (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত) [ মুত্তাফাক্ব
‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯৯।]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রথম কাতার হলো ফেরেশতাদের
কাতারের ন্যায়। যদি তোমরা জানতে এর ফজিলত কত বেশি, তবে তোমরা এখানে
আসার জন্য অতি ব্যস্ত হয়ে উঠতে।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ, মিশকাত)
নবিজী আরও বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন যে ৭ শ্রেণির মানুষ আল্লাহর আরশের ছায়ায়
আশ্রয় পাবে, তাদের এক শ্রেণি হলো ওইসব ব্যক্তি- যাদের অন্তর মসজিদের সাথে
লটকানো থাকে। যখনই বের হয়, পুনরায় ফিরে আসে।’ (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, অন্যত্র নামাজ পড়ার চেয়ে আমার
এই মসজিদে নামাজ পড়ায় এক হাজার গুণ উত্তম এবং মাসজিদে হারামে নামাজ পড়া
এক লাখ গুণ উত্তম।’ (বুখারি ও মুসলিম, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত)

অন্য এক হাদিসে এ মর্মে ঘোষণা করা হয়েছে যে, এ নামাজগুলো যদি জুমা মসজিদে
আদায় করা হয় তবে তার সওয়াব হবে ৫শ’ গুণ বেশি।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‌যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলা ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার
অতিথির অভ্যর্থনা ও আদর-যত্ন করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলা ও পরকালের
প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা নীরব থাকে।’ (বুখারি, মুসলিম,
তিরমিজি)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নীরব থাকলো, সে নাজাত (মুক্তি) পেলো।’
(তিরমিজি)

হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-


উপুর হয়ে বুকের উপরে ভর দিয়ে শোয়া নিষিদ্ধ, কারণ শয়তান এইভাবে শোয়।’ (বুখারি)

কখনো বিনা ওজরে বাম হাতে খাওয়া কিংবা পান না করা। কেননা বাম হাতে পান করা
শয়তানের কাজ। হাদিসে এসেছে- ‘বাম হাতে খাওয়া বা পান করা নিষিদ্ধ, কারণ বাঁ হাতে
শয়তান খায়।’ (রিয়াদুস সালেহিন)

পশুর হাড় দিয়ে ইস্তেঞ্জা না করা। হাদিসে এসেছে- ‘পশুর হাড় দিয়ে ইস্তেঞ্জা করা নিষিদ্ধ,
কারণ আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করা প্রাণীর হাড়গুলো যা মানুষ ফেলে দেয়, তা মুসলিম
জিনদের খাবার।’ (বুখারি)

হাদিসে এসেছে- ‘সন্ধ্যা সময় বাচ্চাদের বাইরে বের হতে দিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন এবং ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখতে বলেছেন,
কারণ তখন জিনেরা বাইরে বের হয়।’

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমার উম্মতের যদি কষ্ট না হতো, তাহলে আমি
প্রতি নামাজের সময় তাদের মেসওয়াক করার আদেশ দিতাম। ' –সহিহ বোখারি: ৮৩৮

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'মেসওয়াক মুখকে পবিত্র, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন
করে এবং তা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির মাধ্যম। ' -মেশকাত: ৩৮১
মেসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত বোঝা যায় হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি
হাদিস দ্বারা। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে ও মেসওয়াক করেছেন। -সহিহ
বোখারি: ৪০৮৪

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আরকাম রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, যখন নামাজ দাঁড়িয়ে যায়- আর
তোমাদের কারও প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেয়; সে যেন প্রথমে প্রয়োজন সেরে
নেয়। (জামে তিরমিজি, হাদিস-১৪২)

হজরত সাওবান রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তির জন্য হালাল নয় কারও
গৃহাভ্যন্তরে অনুমতি ব্যতীত দৃষ্টিপাত করা... এবং কেউ যেন প্রস্রাব-পায়খানার চাপ নিয়ে
নামাজ না পড়ে। (জামে তিরমিজি, হাদিস-৩৫৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস-৯১)

মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোন স্ত্রী স্বামীর উপস্থিতিতে তাঁর
অনুমতি ছাড়া নফল রোযা রাখবে না।

ইরশাদ হয়েছে, ‘যে কেউ কোন নেক আমল করবে তাকে তার দশ গুণ সওয়াব প্রদান করা
হবে। ’ (সুরা আল-আনআম: ১৬০) সুতরাং রমজানের এক মাসের ১০ গুণ হলো দশ মাস
আর শাওয়াল মাসের ছয়দিনের দশগুণ হলো ৬০ দিন অর্থাৎ দুইমাস।

আল্লাহতায়ালার নির্দে শ হলো, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত-
দরূদ পেশ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি সালাত পেশ করো এবং তাকে
যথাযথভাবে সালাম জানাও। ’ -সূরা আহজাব: ৫৬

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর আস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরূদ পাঠ
করবে, আল্লাহ তার ওপর দশবার দরূদ পাঠ করবেন। ’ –সহিহ মুসলিম: ৩৮৪

হজরত ইবনে মাসঊদ (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তি সব লোকের তু লনায় আমার বেশি নিকটবর্তী হবে,
যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমার ওপর দরূদ পড়বে। ’ –সুনানে তিরমিজি: ৪৮৪

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা আমার কবরকে


উৎসব কেন্দ্রে পরিণত করো না। তোমরা আমার প্রতি দরূদ পেশ কর। কারণ, তোমরা
যেখানেই থাক, তোমাদের পেশকৃ ত দরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়। ’ –সুনানে আবু দাউদ:
২০৪২
হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই অভিশাপ দিলেন যে, ‘সেই ব্যক্তির নাক ধূলা-ধূসরিত হোক, যার
কাছে আমার নাম উল্লেখ করা হল, অথচ সে (আমার নাম শুনেও) আমার প্রতি দরূদ
পড়ল না

হজরত আলী (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘প্রকৃ ত কৃ পণ সেই ব্যক্তি, যার কাছে আমি উল্লিখিত হলাম (আমার
নাম উচ্চারিত হল), অথচ সে আমার প্রতি দরূদ পাঠ করল না। ’ –সুনানে তিরমিজি:
৩৫৪৬

আল্লামা ইবনুল কায়্যিম জাওজি (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ বিষয়ক জ্ঞানগুলো আল্লাহ ছাড়া
অন্য যেকোনো বিষয়ক জ্ঞানের উৎস। আর আল্লাহর নামগুলো সম্পর্কে জানা এবং তা
আয়ত্ত করা আল্লাহ বিষয়ক জ্ঞানগুলোর মূল।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর জন্য আছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা
তাঁকে সেসব নামেই ডাকবে। ’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৮০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর ৯৯টি নাম আছে। যে তা আয়ত্ত করল সে
জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৭৩৬)

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলমানদের খাদ্যশস্য মজুদ রাখে, আল্লাহপাক তার ওপর
দরিদ্রতা চাপিয়ে দেন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৫৫)

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে খাদ্যশস্য গুদামজাত করে সে অভিশপ্ত। ‘ (ইবনে মাজাহ)

রাসুল (সা.) আরো বলেন,‘যে ব্যক্তি ৪০ দিনের খাবার মজুদ রাখে, সে আল্লাহর জিম্মা
থেকে বেরিয়ে যায়। ‘ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২০৩৯৬)
অন্য হাদিসে এসেছে : ‘যে ব্যক্তি খাদ্যশস্য গুদামজাত করে সে অপরাধী। ’ (আল
মু’জামুল কাবির : ১০৮৬)

হাদিসে পাকে এসেছে-


হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজে সুরা আল-কাফিরুন এবং ‘কু ল হুওয়াল্লাহু
আহাদ’ (সুরা ইখলাস) তেলাওয়াত করতেন।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে
মাজাহ)

হাদিসে পাকে এসেছে-


নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘ওই ব্যক্তি তার ঈমানকে দৃঢ়
করলো যে কাউকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসলো, কাউকে আল্লাহর জন্য ঘৃণা করলো,
কাউকে কোনো কিছু দিল আল্লাহর জন্য আর কাউকে কোনো কিছু দেয়া থেকে বিরত
থাকল শুধু আল্লাহর জন্য।’ (তিরমিজি)
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মহব্বত ও দয়ার প্রতীক ‘মুমিন’। ওই
ব্যক্তির মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই, যে কারো সঙ্গে মহব্বত রাখে না এবং মহব্বত প্রাপ্ত হয়
না।’ (মুসনাদে আহমাদ

আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে ঘোষণা করেন- ‘আপনি


মুমিনদেরকে সুসংবাদ দিন যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় অনুগ্রহ (জান্নাত)
রয়েছে।’ (সুরা আহযাব : আয়াত ৪৭)

মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন- আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য কর, যাতে
তোমরা দয়া/অনুগ্রহ পেতে পার।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩২)

আর তোমরা প্রতিযোগিতা (ত্বরা) কর, তোমাদের প্রভু র কাছে ক্ষমা এবং জান্নাতের জন্য,
যার প্রস্থ আকাশ ও পৃথিবীর সমান, যা মুত্তাকিদের (ধর্মভীরুদের) জন্য প্রস্তুত রাখা
হয়েছে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৩)

আল্লাহ তাআলা বলেন- আর তোমরা নিজেদের রবের ক্ষমার দিকে এবং সে জান্নাতের
দিকে তীব্র গতিতে চল যার (জান্নাতের) বিস্তৃ তি আসমানসমূহ ও জমিনের সমান, যা
মুত্তাকিদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘সততা ও সত্য অবলম্বন কর,
মধ্যবর্তী পথ অনুসরণ কর এবং আল্লাহর অনুগ্রহের সুসংবাদ গ্রহণ কর। কারও কাজ
তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে না। শ্রোতারা বললো- আপনাকেও নয় কি হে আল্লাহর রাসুল!
উত্তর হলো- আমার কর্ম আমাকেও জান্নাতে নেবে না। তবে আল্লাহ যদি স্বীয় রহমত দ্বারা
আমাকে আবৃত করে নেন।’ (বুখারি, মুসলিম)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা যখন আল্লাহর কাছে জান্নাত
চাইবে তখন ফেরদাউস চাইবে; কেননা তা সর্বোচ্চ জান্নাত। সবচেয়ে উত্তম ও মধ্যম স্থানে
অবস্থিত জান্নাত; সেখান থেকেই জান্নাতের নহরসমূহ প্রবাহিত। আর তার ছাদ হলো
দয়াময় আল্লাহর আরশ।’ (বুখারি)

জান্নাতের বর্ণনায় নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতের একটি ইট
রৌপ্যের ও একটি ইট স্বর্ণের, তার নীচের আস্তর সুগন্ধি মিশকের, তার পাথরকু চিগুলো
হীরে-মুতি-পান্নার সমষ্টি, আর মিশ্রণ হচ্ছে, ওয়ারস ও যাফরান। যে তাতে প্রবেশ করবে সে
তাতে স্থায়ী হবে, মরবে না; নেয়ামত প্রাপ্ত হবে, হতভাগা হবে না; যৌবন কখনও ফু রিয়ে
যাবে না; কাপড়ও কখনো ছিড়বে না।’ (মুসনাদে আহমাদ, ইবন হিব্বান)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘এক ওমরাহ থেকে আরেক ওমরার মধ্যবর্তী সময়ের ছগিরা
গুনাহসমূহের কাফফারা স্বরূপ। আর মাবরূর (কবুল) হজের বিনিময় জান্নাত ছাড়া কিছুই
নয়।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তু মি (হজ করার জন্য) বাইতু ল্লাহর
উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হও; তখন থেকে তোমার বাহন যতবারই পা ওঠানামা করে
প্রত্যেকবারের বিনিময়ে মহান আল্লাহ তোমার জন্য একটি সওয়াব লেখেন এবং একটি
গুনাহ মুছে দেন।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব)

হাদিসে এসেছে-
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ’তোমরা হজকে ওমরাহ ও ওমরাহকে
হজের অনুগামী করো। (অর্থাৎ বারবার হজ-ওমরাহ করো) কারণ হজ-ওমরাহ উভয়েই
দারিদ্র্য থেকে মুক্তি এবং গুনাহসমূহকে সেরূপ দূর করে দেয় যেরূপ কামারের হাপর লোহার
ময়লা দূর করে দেয়।’ (নাসাঈ, তিরমিজি)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার জীবনের শোভা।’ (সুরা
কাহফ : আয়াত ৪৬)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের মহৎ করে
গড়ে তোলো এবং তাদের উত্তম আদব তথা শিষ্টাচার শিক্ষা দাও।’ (মুসলিম

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, ‘ ‘সন্তানদের আদব তথা শিষ্টাচার
শিক্ষা দেওয়া সম্পদ দান করা অপেক্ষা উত্তম।’ (বায়হাকি)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য হজ করলো এবং স্ত্রী সহবাস, যাবতীয়
অশ্লীল কাজ ও গালমন্দ থেকে বিরত থাকলো; সে ওই দিনের মতো (নিষ্পাপ) হয়ে
ফিরলো; যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছিলো।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহজু আনহু বলেন, তোমরা হজ ও ওমরার


ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখ। কারণ এ দুটি দারিদ্রতা এবং গুনাহ উভয়টি দূর করে দেয়;
যেমন হাপর লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা দূর করে। আর মাবরূর হজের প্রতিদান জান্নাত
বৈ কিছুই নয়।’ (তিরমিজি, ইবনে খুজায়মা, নাসাঈ)

‘আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও; তবেই তোমরা
বিজয়ী হবে।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৯)

‘আর এ কারণে আল্লাহ ঈমানদারদের পাক-পবিত্র করতে চান এবং কাফেরদেরকে ধবংস
করে দিতে চান।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪১)

‘তোমাদের কি ধারণা- তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি
তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত
১৪২)

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, মুমিন রোগাক্রান্ত হলে আল্লাহ তাকে (গুনাহ থেকে) এমনভাবে পরিচ্ছন্ন
করেন; যেভাবে হাপড় লোহাকে পরিচ্ছন্ন করে।' (আদাবুল মুফরাদ)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'কোনো ব্যক্তি রোগাক্রান্ত হলে ওই অবস্থায় সে তার
সুস্থাবস্থায় যেরূপ আমল করতো সেরূপ সওয়াব তার জন্য লেখা হয়।' (মুসনাদে আহমাদ,
মুসনাদে বাযযার, মুসতাদরাকে হাকেম, আদাবুল মুফরাদ)

অতিরক্তি খাবার খাওয়া সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন-

‘মুমিন এক অন্ত্রণালীতে খাবার খায়। আর কাফের অবিশ্বাসীরা সাত অন্ত্রণালীতে খাবার


খায়।’ (তিরমিজি)

হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম কখনো কোনো খাবারকে খারাপ বলেননি। তিনি কোনো খাবার পছন্দ হলে
খেয়েছেন আর অপছন্দ হলে তা ত্যাগ করেছেন।’ (বুখারি)

হজরত উবাদা ইবনু সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আরো এসেছে যে,
উপস্থিত লোকদের একজন বললো- আমরা খুব বেশি বেশি দোয়া করতে পারি। নবিজী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা তার চেয়েও বেশি বেশি
দানকারী বা কবুলকারী।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-

নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে (পবিত্র অবস্থায়
থাকে) তাদেরকে ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)

হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহুআনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন, ‘সব মুসলমানের ওপর আল্লাহর এ হক আছে যে, প্রতি সপ্তাহে (অন্তত) একদিন
গোসল করবে এবং মাথা ও শরীর ধুয়ে নেবে।’ (বুখারি)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কোরবানির দিনগুলোতে আল্লাহর কাছে
পশুর রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে অধিক পছন্দনীয় আমল আর নেই।’ (তিরমিজি)

কোরবানি মহান আল্লাহর নির্দে শ। আল্লাহ তাআলা বলেন-‘অতএব আপনার পালনকর্তার


উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ু ন এবং কোরবানি করুন।’ (সুরা কাউসার : আয়াত ২)

আল্লাহ তাআলা বান্দাকে কোরবানি সম্পর্কে মানুষকে এ শিক্ষা ও উৎসাহ দিয়েছেন-‘(হে


রাসুল! আপনি) বলুন, অবশ্যই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার
মৃত্যু বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৬২)
হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের সন্তান-সন্তুতি ওপর, নিজেদের ধন-
সম্পদের ওপর বদ-দোয়া কর না। কেননা হতে পারে তোমরা আল্লাহর কাছে এমন সময়ে
এমন কিছু প্রার্থনা করলে, যখন তার কাছে প্রার্থনা করলে তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া
দিয়ে দেবেন।’ (মুসলিম)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-


‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার
বাবা-মা, তার সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় হবো।’ (বুখারি)

কোরআনের বর্ণনায়-

‘তোমাদের ওপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি
তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা শুরা : আয়াত ৩০)

হজরত মুয়াজ ইবনে আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহ আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ক্রোধ সংবরণ করবে অথচ সে তা বাস্তবায়িত করার
ক্ষমতা রাখে। আল্লাহ তাআলা তাকে কেয়ামতের দিন সমস্ত সৃষ্টির সামনে ডেকে
(জান্নাতের) হুর থেকে যত ইচ্ছা গ্রহণ করার ইখতিয়ার দেবেন।’ (ইবনে মাজাহ)

হাদিসে এসেছে-নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত
ইসতেগফার (তওবা) করবে, আল্লাহ ওই বান্দাকে তার সব সংকট থেকে উত্তরণের
(মুক্তির) পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা (পেরেশানি) মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয়
উৎস থেকে তার রিজিক-এর ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা এবং
আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহ তাআলার কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের
দিনের চেয়েও উত্তম।’ (ইবনে মাজাহ)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এক জুমা থেকে অপর জুমা
এতদুভয়ের মাঝে (পাপের) কাফ্‌ফারা হয়ে যায়, যদি কবিরা (বড়) গুনাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত না
হয়ে থাকে।’ (মুসলিম)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে
গোসল করে সকাল সকাল মসজিদে আসবে এবং ইমামের কাছাকাছি বসবে এবং
মনোযোগ দিয়ে (খুতবা) শুনবে ও চু প থাকবে তার জুমা’র নামাজে আসার প্রত্যেক
কদমের বিনিময়ে এক বছরের নামাজ ও রোজা পালনের সওয়াব হবে।’ (তিরমিজি,
নাসাঈ)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই জুমার দিন এমন একটি সময়
আছে যে সময়ে কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে কোনো ভালো জিনিসের প্রার্থনা করলে
তিনি তাকে তা দান করেন। তিনি বলেন, তা সামান্য সময় মাত্র।’ (বুখারি ও মুসলিম);
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনেই কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।’
(মুসলিম)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম যদি জুমার দিনে অথবা
জুমার রাতে মারা যায় তবে আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফেতনা থেকে মুক্তি দেবেন।’
(তিরমিজি)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা
বলো।তা হলে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম ত্রুটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের পাপ
ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, তারা অবশ্যই মহাসাফল্য
অর্জ ন করবে। ’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৭০-৭১)

মহানবী (সা.) বলেন, তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার পরিবারের কাছে উত্তম। আর
আমি আমার পরিবারের কাছে তোমাদের চেয়ে উত্তম। তোমাদের কোনো সঙ্গী মৃত্যুবরণ
করলে তার সমালোচনা পরিত্যাগ করো। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৯৫)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের সঙ্গে সত্ভাবে জীবন যাপন করবে; তোমরা যদি
তাদের অপছন্দ করো, তবে এমন হতে পারে যে, আল্লাহ যাতে প্রভূ ত কল্যাণ রেখেছেন
তোমরা তাকেই অপছন্দ করছ। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৯)

ইরশাদ হয়েছে, ‘নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে যেমন আছে তাদের ওপর
পুরুষদের; কিন্তু নারীদের ওপর পুরুষের আছে মর্যাদা। আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২২৮)

আল্লাহ বলেন, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে আছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের
মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের সঙ্গিনীদের—যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও
এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের
জন্য তাতে অবশ্যই বহু নিদর্শন আছে। ’ (সুরা : রোম, আয়াত : ২১)

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তি পুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত
জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে
পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)

কু রআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা নির্দে শ দিয়েছেন-‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত


আদায় কর ও পশু কু রবানি কর।’ (সূরা কাউসার, আয়াত-২)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কু রবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছে না আসে’।
(ইবনে মাজাহ-৩১২৩)

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না উহার (জন্তুর) গোশত এবং রক্ত, বরং
পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া। (সূরা হাজ্জ, আয়াত-৩৭
হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন,
‘তোমরা অবশ্যই মুসিন্না (নির্দি ষ্ট বয়সের পশু) কু রবানি করবে। তবে তা তোমাদের জন্য
দুষ্কর হলে ছয় মাসের মেষ-শাবক কু রবানি করতে পার’। (সহিহ মুসলিম-১৯৬৩)

কু রবানির গোশত কু রবানিদাতা ও তার পরিবারের সদস্যরা খেতে পারবে, আল্লাহ রাব্বুল
আলামিন বলেন, ‘অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং দুস্থ, অভাবগ্রস্তকে আহার
করাও’। (সূরা হজ্জ, আয়াত-২৮)

হাদিসে এসেছে-‘আর তা প্রস্তুতকরণে তা থেকে কিছু দেওয়া হবে না’। (সহিহ বুখারি-
১৭১৬)। তবে দান বা উপহার হিসাবে কসাইকে কিছু দিলে তা নাজায়েজ হবে না

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কোরবানির দিনগুলোতে আল্লাহর কাছে
পশুর রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে অধিক পছন্দনীয় আমল আর নেই।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা বান্দাকে কোরবানি সম্পর্কে মানুষকে এ শিক্ষা ও উৎসাহ দিয়েছেন-হে


রাসুল! আপনি) বলুন, অবশ্যই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার
মৃত্যু বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৬২)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বেঁচে
থাক। আর তা হল আল্লাহর সঙ্গে শরীক স্থির করা ও যাদু করা।

সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন রোগে কোন সংক্রমণ নেই, শুভ-
অশুভ বলতে কিছু নেই, অশুভ কেবল নারী, ঘোড়া ও ঘর এ তিন জিনিসের মধ্যেই হতে
পারে।

মুহাম্মদ (রহঃ) ... সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি সকাল বেলা সাতটি আজওয়া খুরমা
খেয়ে নিবে, তাকে সে দিন কোন বিষ অথবা যাদু ক্ষতি করতে পারবে না।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারও কোন খাবার
পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তাকে সম্পূর্নভাবে ডু বিয়ে দিবে, তারপরে ফেলে দিবে। কারন, তার
এক ডানায় থাকে শিফা, আর অন্য ডানায় থাকে রোগ জীবানু।
নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা খাও, পান কর, পরিধান কর এবং দান কর, তবে অপচয় ও
অহংকার পরিহার করো

আদম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইযারের যে পরিমান টাখনুর নীচে যাবে, সে পরিমান জাহান্নামে যাবে।

হাদিসের বর্ণনায়, ‘নিঃসন্দেহে জুমা সপ্তাহের সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন।
আল্লাহ তাআলার কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ (ইবনে
মাজাহ)
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘এক জুমা’ থেকে অপর জুমা’
এতদুভয়ের মাঝে (গুনাহের জন্য) কাফ্‌ফারা হয়ে যায়, যদি কবিরা (বড়) গুনাহের সঙ্গে
সম্পৃক্ত না হয়ে থাকে।’ (মুসলিম

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল
করে আগে আগে মসজিদে আসবে এবং ইমামের কাছেবর্তী হবে এবং মনোযোগ দিয়ে
(খুতবা) শুনবে ও চু প থাকবে তার জুমার নামাজে আসার প্রত্যেক কদমে এক বছরের
নামাজ ও রোজা পালনের সওয়াব হবে।’ (তিরমিজি, নাসাঈ)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, নিশ্চয়ই জুমার দিনে এমন একটি সময়
আছে যে সময়ে কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে কোনো ভালো জিনিসের প্রার্থনা করলে
তিনি তাকে তা দান করেন। তিনি বলেন, তা সামান্য সময় মাত্র।’ (বুখারি ও মুসলিম);
কেউ কেউ বলেন, এটি আসরের নামাজের পরের সময়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমার দিনেই কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।’
(মুসলিম)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম যদি জুমার দিনে অথবা
জুমার রাত্রিতে মৃত্যুবরণ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফিতনা থেকে রক্ষা
করবেন।’ (তিরমিজি)

হজরত কায়স বিন রুমি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেন, কোনো একজন মুসলিম অন্য মুসলিমকে দুই বার ঋণ দিলে এ
ঋণদান আল্লাহর পথে সে পরিমাণ সম্পদ একবার সদকা করার সমতু ল্য।’ (ইবনে মাজাহ)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে, আল্লাহ
তাআলা কেয়ামতের দিন তার বিপদগুলো দূর করে দেবেন।’ (বুখারি)

হজরত বুরাইদাহ আল-আসলামি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু


আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি (ঋণগ্রস্ত) অভাবি ব্যক্তিকে অবকাশ দেবে, সে
দান-খয়রাত করার সওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি ঋণ শোধের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও
সময় বাড়িয়ে দেবে সেও প্রতিদিন দান-খয়রাত করার সওয়াব পাবে।’ (ইবনে মাজাহ)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতে মগ্ন হও।
আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করবো এবং তোমার দারিদ্র দূর করবো। তু মি যদি তা
না করো, তাহলে আমি তোমার অন্তর পেরেশানী দিয়ে পূর্ণ করবো এবং তোমার দরিদ্রতা
দূর করবো না।’ (ইবনে মাজাহ, তিরমিজি)
মহান রাব্বুল আলামিন মানুষকে সতর্ক হওয়ার জন্য ঘোষণা করেছেন- ‘কিন্তু তোমরা
দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দাও।’ (সুরা আলা : আয়াত ১৬)‘অথচ আখিরাতই উৎকৃ ষ্ট(১)
ও স্থায়ী।’ (সুরা আলা : আয়াত ১৭)

হজরত জারির ইবনু আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির প্রতি অনুগ্রহ/দয়া করেন
না; যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করে না।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

হজরত আবু মুসা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘একজন মুমিন অপর মুমিনের জন্য এক ঘরের মতো, যার একাংশ
অপরাংশকে সুদৃঢ় রাখে। অতপর তিনি এক হাতের আঙু ল অন্য হাতের আঙু লের মধ্যে
প্রবেশ করান।' (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

হজরত নুমান ইবনু বাশির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সব মুমিন এক ব্যক্তির (দেহের) মত, যদি তার চোখ অসুস্থ হয়
তখন তার পুরো দেহ অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর যদি তার মাথায় ব্যথা হয় তখন তার পুরো
শরীরই ব্যথিত হয়।’ (মুসলিম, মিশকাত)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তু মি ঈমানদারদের তাদের


পারস্পরিক সহানুভূ তি, বন্ধু ত্ব ও দয়া-অনুগ্রহের ক্ষেত্রে একটি দেহের মত দেখবে। যখন
দেহের কোনো অঙ্গ অসুস্থ হয় তখন পুরো শরীর তার জন্য বিনিদ্র ও জ্বরে আক্রান্ত হয়।’
(বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)

আবূ নুআয়ম (রহঃ) ... ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোকের ইযার (লুঙ্গি) নেই, সে যেন পায়জামা; আর যার জুতা
নেই। সে যেন মোজা পরে।

আমর ইবনু আসিম (রহঃ) ... কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস
(রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ কোন জাতীয় কাপড় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর নিকট বেশী প্রিয় ছিল? তিনি বললেনঃ হিবারা-ইয়ামনী চাদর

আলী ইবনু জা’দ (রহঃ) ... উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ যে লোক দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরবে, পরকালে সে তা পরবে না।

হজরত আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, তিনটি হলো ধারাবাহিক মাস- জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। আর
একটি হলো রজব মাস। জমাদিউস সানি ও শাবান মাসের মধ্যবর্তী মাস অর্থাৎ
রমজানের আগের মাসের আগের মাস।’ (বুখারি)

হাদিসে এসেছে-

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এটি (মহররম) শাহরুল্লাহ তথা আল্লাহর
মাস।’ (মুসলিম)
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের পর সবচেয়ে উত্তম রোজা
হলো মহররম মাসের রোজা।’ (মুসলিম)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মহররম হলো আল্লাহ তাআলার
(কাছে একটি মর্যাদার) মাস। এই মাসে এমন একটি দিন আছে, যাতে তিনি অতিতে
একটি সম্প্রদায়কে ক্ষমা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অপরাপর সম্প্রদায়কে ক্ষমা
করবেন।’ (তিরমিজি)

কোরআনের বর্ণনায় আরও এসেছে-

‘যে ভালো কাজ করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎ কাজ করে,
তার প্রতিফলও সে-ই ভোগ করবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই জুলুম
করেন না।’ (সুরা হা-মিম সাজদা : আয়াত ৪৬)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে আমার রওজা জিয়ারত
করলো তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব হয়ে গেলো। (মুসলিম) নবিজি সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, ‘যে হজ করলো কিন্তু আমার রওজা জিয়ারত
করলো না ; সে আমার প্রতি জুলুম করলো।’ (তিরমিজি)

হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির হলো- ‫اَل ِإَلَه ِإاَّل هللا‬
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, আর সর্বোত্তম দোয়া হলো- ‫َاْلَحْم ُد هلل‬আলহামদুলিল্লাহ।’ (মুসতাদরাকে
হাকেম)

হরজত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, যারা বেশি বেশি তাওবাহ-
ইসতেগফার করে; তাদের সামনে যত সংকটই (অভাব) থাকু ক না কেন, মহান আল্লাহ
তাআলা তা সমাধান করে দেন।’ (মুসতাদরেকে হাকেম)

হাদিসে এসেছে-
‘দান করার কিছু যদি না থাকে তবে একটি খেজুরের অংশ দিয়ে হলেও দান করার মাধ্যমে
জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা কর।

হাদিসে এসেছে-

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো বান্দা যখন অজু করে পবিত্র
হয়ে ঘুমায় আর ঘুমানোর পর যদি কোনো কারণে রাতে তার ঘুম ভেঙে যায় তবে সে যেন
(একটু হলেও) আল্লাহর জিকির করে। যদি কেউ আল্লাহ জিকির করার পর তার কাছে
দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করে তবে আল্লাহ তাআলা তাকে (চাহিদা
মোতাবেক) তা-ই দিয়ে দেন।’ (মুসনাদে আহমদ)

মহান আল্লাহ কোরআনুল কারিমে ঘোষণা করেন-‘আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে
নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে আর আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত
করবো।’ (সুরা ত্বহা : আয়াত ১২০)
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘আত্মীয়তার হক রাহমানের মূল। যে তা সংরক্ষণ করবে, আমি তাকে
সংরক্ষণ করবো। আর যে তা ছিন্ন করবে, আমি তাকে (আমার থেকে) ছিন্ন করবো।’
(বুখারি)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘যদি কোনো নারী (স্ত্রী) অহেতু ক তার স্বামীর কাছে তালাক চায় তবে তার জন্য জান্নাতের
সুঘ্রাণও হারাম হয়ে যায়।’ (আবু দাউদ)

হজরত আবু মাসউদ আল-বদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—'নিঃসন্দেহে কোনো মুসলিম যখন তার পরিবারের জন্য
খরচ করে তা সাদাকা হিসেবে গন্য হবে যদি সে তাকে (ইবাদাত) মনে করে।' (বুখারি ও
মুসলিম)
কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসেকি এবং তার সঙ্গে লড়াই করা কু ফরি।’ (কিতাবুল
আদব, বুখারি)

হাদিসে পাকে এসেছে-‘প্রকৃ ত ঈমানদার ব্যক্তি কারো প্রতি ভৎসনা ও লানত করে না
এবং সে কোনো অশালীন এবং অশ্লীল কথাও বলে না।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

হাদিসে পাকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন
এভাবে-প্রকৃ ত মুসলমান তো সেই ব্যক্তি, যার কথা ও হাত থেকে অন্য মুসলমান
নিরাপাদ থাকে।’ (বুখারি, মিশকাত)

হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
গালিগালাজকারী, অশালীনভাষী এবং অভিসম্পাতকারী ছিলেন না। আমাদের কারো
উপর তিনি নারাজ হলে শুধু এটু কু বলতেন যে, তার কি হল! তার কপাল ধুলিময় হোক।’
(বুখারি, কিতাবুল আদব)

কোরআনুল কারিমে এভাবে এসেছে-

‘আর জান্নাতকে উপস্থিত করা হবে মুত্তাকিদের জন্য, (সেখানে) কোনো দূরত্ব থাকবে না।
এরই প্রতিশ্রতি দেওয়া হয়েছিল প্রত্যেক (আল্লাহ) অভিমুখী, (তাঁর হুকু মের)
হিফাজতকারীর জন্য। যারা না দেখে পরম দয়াময়কে ভয় করে এবং (আল্লাহ) অভিমুখী
ক্বলবে (অন্তর নিয়ে) উপস্থিত হয়।’ (সুরা ক্বাফ : আয়াত ৩১-৩৩)

যে কথা বলেছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা-

‘তোমরা সেখানে শান্তিতে প্রবেশ কর এবং এটিই চিরকালের আবাসস্থলে প্রবেশের দিন।
জান্নাতে যা তাদের মনে চায় সব পাবে এবং আল্লাহর কাছে আছে আরো বেশি।’ (সুরা ক্বাফ
: আয়াত ৩৪-৩৫)
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘প্রত্যেক নেশার বস্তুই মাদক
(খামার) আর প্রত্যেক নেশার জিনিসই হারাম।’ (মুসলিম)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যা বেশি সেবন করলে নেশার সৃষ্টি
হয় তা কম সেবন করাও হারাম।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ)
আল্লাহ তাআলা বলেন-‘তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিক্ষেপ করো না।’ (সুরা
বাকারা : আয়াত ১৯৫)
আল্লাহ তাআলা বলেন-‘তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল ও অপবিত্র বস্তু হারাম করা
হয়েছে।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ১৫৭)

জাহান্নামীদের খাবার প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক বলেন-‘এটা তাদের পুষ্টিও যোগাবে না ক্ষু ধাও
নিবারণ করবে না।’ (গাশিয়াহ : আয়াত ৭)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ তাআলা তিনটি কাজের নির্দে শ দেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন-(হে নবি!) আপনি ক্ষমাশীলতার নীতি অবলম্বন করুন। সৎ
কাজের নির্দে শ দিন এবং মূর্খদেরকে এড়িয়ে চলুন।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ১৯৯)

কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-‘যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় দান
করে, রাগ নিয়ন্ত্রণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে থাকে। আর আল্লাহ (বিশুদ্ধচিত্ত)
সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৪)

একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-‘যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ করো কিংবা
গোপন করো অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান।’
(সুরা নিসা : আয়াত ১৪৯)

রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন-

‘অপরাধ মার্জ না (ক্ষমা) করার কারণে, আল্লাহ (মার্জ নাকারীর) সম্মান ও ইজ্জত বাড়িয়ে
দেন।’ (মুসলিম)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের বর্ণনায় আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বান্দা আমাকে যেমন মনে করে আমি তার জন্য
তেমনই হয়ে থাকি। আর সে যখন আমাকে স্মরণ করে তখন আমি তার হয়ে যাই।

হজরত আবদুল্লাহ শাকিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক ব্যক্তির অন্তরে দুটি কক্ষ আছে। একটিতে ফেরেশতা থাকে
এবং অপরটিতে শয়তান। যখন মানুষ আল্লাহর জিকিরে মশগুল হয় তখন শয়তান দূরে
সরে যায় এবং যখন জিকির থেকে গাফেল হয়ে পড়ে, তখন শয়তান নিজের ঠোঁট তার
অন্তরে স্থাপন করে এবং কু -মন্ত্রণা দিতে থাকে।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মোফরাদ’ ব্যক্তিগণ বিজয়ী হয়ে গেছে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা
করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! মোফরাদ ব্যক্তি কারা? তিনি বললেন, ‘অধিক পরিমাণে
জিকিরকারী নারী ও পুরুষ।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিদানকারী আত্মীয়তার হক আদায়কারী


নয়। বরং আত্মীয়তার হক আদায়কারী সে ব্যাক্তি, যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার
পরও তা বজায় রাখে।

কাবীসা (রহঃ) ... উসাইদ সায়েদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আনসারদের ঘরগুলোর মধ্যে নাজ্জার গোত্রের ঘরগুলোই উত্তম।

আবূ নুয়াঈম (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ আমি নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, চোগলখোর কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে
না।

উমর ইবনু হাফস (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তু মি আল্লাহর নিকট ঐ ব্যাক্তিকে
সবচেয়ে নিকৃ ষ্ট পাবে যে দু'মুখো। সে এদের সামনে একরূপ নিয়ে আসতো আর ওদের
কাছে অন্য রূপে ধরা দিত।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এক মুসলিমের ওপর অপর মুসলিমের পাঁচটি অধিকার রয়েছে।
(তাহলো)- সালামের জবাব দেওয়া, রুগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া,
দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দাতার জবাব দেওয়া।’ (বুখারি ও মুসলিম)

মুহাম্মাদ ও আহমাদ ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন ব্যাক্তি তার মুসলিম ভাইকে ’হে
কাফির’ বলে ডাকে, তখন তা তাদের দু’জনের কোন একজনের উপর বর্তায়।

রাসুল (সা.) বলেছেন- তোমরা পরস্পর পরস্পরকে আল্লাহ তাআলার অভিসম্পাত, তাঁর
গজব ও জাহান্নামের বদদোয়া কোরো না। [ তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭৬ ]

রাসূ্লুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রাখে, সে


তাদেরই দলভু ক্ত এবং তাঁর হাসর-নাশর তাদের সাথেই হবে।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ হে মহিলা সমাজ! তোমরা সাদাকাহ করতে থাক। কারণ আমি
দেখেছি জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই অধিক। (সহিহ বুখারীঃ৩০৪)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যদি কারো উপর কোন কষ্ট আসে আল্লাহ্‌তা'আলা এর
কারণে তাঁর গুনাহসমূহ ঝরিয়ে দেন, যেমনভাবে গাছ হতে পাতা ঝরে পড়ে। (সহিহ
বুখারীঃ৫৬৮৪)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌তায়ালা ইয়াহূদীদের ধ্বংস করুন। কেননা তারা তাদের
নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে। (সহিহ বুখারি ঃ ৪৩৭)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ নিশ্চয় তোমাদের মাথায় পেরেক ঠু কে দেয়া অনেক বেশী
ভালো ঐ মহিলাকে স্পর্শ করা থেকে, যে তাঁর জন্য হালাল নয়। (সহীহুল জামেঃ ৪৯২১)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ দুনিয়ার প্রতি অনুরাগী হবেনা, তাহলে আল্লাহ্‌তোমাকে


ভালোবাসবেন, আর মানুষের কাছে যা আছে তাঁর ব্যাপারেও আগ্রহী হবেনা, তাহলে
মানুষও তোমাকে ভালোবাসবে। (ইবনে মাজাহঃ ৪১০২)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি জামাতের সাথে এশার সালাত আদায় করল, সে
অর্ধ-রাত্রি কিয়াম করল। আর যে ফজরের সালাত জামাতে আদায় করল, সে সারারাত
নামায পড়ল। (সহিহ মুসলিম ঃ ৬৫৬, আবু দাউদ ঃ ৫৫৫)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেকদিন সকালবেলায় সাতটি আজওয়া (উৎকৃ ষ্ট
) খেজুর খাবে, সেদিন কোন বিষ ও যাদু তাঁর ক্ষতি করবেনা। (সহিহ বুখারি ঃ ৫৪৪৫ )

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ মুনাফিকদের উপর ফজর ও এশার নামাজ অপেক্ষা ভারী
নামাজ আর নেই। যদি তারা এর গুরুত্ব ও ফযিলত জানতো তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও
অবশ্যই উপস্থিত হত । (সহিহ মুসলিম ঃ ৬৫১, আবু দাদুদ ঃ ৭২৬০)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে অতিরঞ্জন করা থেকে দূরে থাকো।
কারণ দ্বীনের ব্যাপারে অতিরঞ্জন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেদের ধ্বংস করেছে। (ইবনে
মাজাহ ঃ ৩০২৯ )

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ তু মি এমনভাবে আল্লাহ্‌র ইবাদত কর, যেন তু মি আল্লাহ্‌কে দেখতে
পাচ্ছ । আর যদি তু মি তাকে দেখতে না পাও তবে তিনি তোমাকে দেখছেন। (সহিহ
মুসলিম ঃ২ )

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ভালো কাজের পরিকল্পনা করল, কিন্তু বাস্তবে সে ঐ
কাজ করতে পারলো না তবুও সে ব্যক্তির জন্য সওয়াব লেখা হবে। (সহিহ মুসলিম
ঃ৩৫৪)

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সুরা কাহফ এর প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করবে, সে
দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা পাবে। (সহীহ আল জামেঃ ৭২০১)

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ পবিত্রতা হচ্ছে সালাতের চাবি, তাকবীরের মাধ্যমে সালাতে
অন্যান্য কাজ হারাম হয়ে যায় এবং সালামের মাধ্যমে সালাত থেকে হালাল হয়ে বের হতে
হয়। (আবু দাউদ, তিরমিজি , নাসাই )

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটু কু ই যথেষ্ঠ যে, সে যা কিছু
শোনে বিনা বিচারে তাই-ই বর্ণনা করে । (সহিহ মুসলিম )
রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ জুমুআর সালাতে আসলে , সে যেন
গোসল করে। (সহীহ বুখারি ঃ৮৭৭)

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌তোমাদের দেহ ও মুখমন্ডলের দিকে ফিরেও দেখেন না


বরং তোমাদের অন্তর ও আমলের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন । (সহিহ মুসলিম ঃ২৫৬৪)
রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ যে মুসলমানের দৃষ্টি কোন মেয়ের সৌন্দর্যের ওপর পড়ে এবং সে
দৃষ্টি সরিয়ে নেয়, এ অবস্থায় আল্লাহ্‌তাঁর ইবাদাতে বিশেষ স্বাদ সৃষ্টি করে দেন।

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ্‌
তায়ালা তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। (সিলসিলা সহীহহাঃ ২৩২৮ )

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ এই দুনিয়াটার মুল্য যদি আল্লাহ্‌র নিকট একটা মশার ডানার
সমতু ল্য হত তবে তিনি কোন কাফেরকে এক ঢোক পানিও পান করতে দিতেন না।
( তিরমিযী ঃ ২৩২০)

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌পবিত্রতা ছাড়া সালাত কবুল করেন না এবং হারাম পন্থায়
উপার্জি ত মালের দান-খয়রাত কবুল করেন না। (সুনানে ইবনে মাজাহ ঃ ২৭৪ )

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ চু গলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবেনা। অর্থাৎ যে একজনের কথা
অন্যজনকে লাগিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করে । (রিয়াযুস স্বা-লিহীন ঃ ১৫৪৪)

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ উত্তম কোন কাজই অবজ্ঞা করোনা, যদি তা তোমার কোন
মুসলিম ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাও হয়। (সহিহ মুসলিম ঃ২৬২৬)

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা আপন পিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না। যে ব্যক্তি তাঁর
পিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে কাফির। (সহীহ মুসলিম (ইফা) ঃ১২২)

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ খাবারের শুরুতে তোমরা বিসমিল্লাহ্‌বল, ডান হাতে খাদ্য গ্রহণ
কর এবং খাবারের সামনের অংশ হতে আহার কর। (সহিহ বুখারি ঃ ৫৩৭৬ )

রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ মানুষ যেদিন আল্লাহ্‌তা'আলার সামনে দাঁড়াবে , সেদিন তাদের
কেউ কেউ নিজের ঘামে কানের অর্ধাংশ পর্যন্ত ডু বে যাবে। (সহিহ মুসলিম ঃ২৮৬২)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বর্ণনা করেছেন যে,
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-‘আল্লাহর রাস্তায় নিহত হওয়া ঋণ ছাড়া
সব গুনাহকে মাফ করিয়ে দেয়।’ (মুসলিম)

হজরত আল মিক্বদাম ইবনু মাদিকারিব আল কিন্দী রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন,


রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-‘আল্লাহ তাআলার কাছে একজন
শহিদের জন্য ছয়টি মর্যাদা রয়েছে। (তার মধ্যে প্রথমটি হলো)- (শত্রুর আঘাতে) তার শরীর
থেকে প্রথমবার রক্ত বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়।’ (মুসনাদে
আহমাদ)

হাদিসে এসেছে-

ধ্বংস হোক তারা, যেসব নারী সুগন্ধি মেখে বের হলো এবং অন্য কোনো পুরুষের নাকে
সেটার ঘ্রাণ গেলো; ওই নারী ব্যাভিচারিণী।’ (জামে)
হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘আল্লাহ লানাত করেছেন ওইসব
নারীর প্রতি যারা অন্যের শরীরে উল্কি অংকণ করে, নিজ শরীরে উল্কি অংকণ করায়।’
(বুখারি, মুসলিম)

হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, যে নারী নকল চু ল লাগায়, তার প্রতি
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত করেছেন।’ (বুখারি)

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আজাবের) নিদর্শনগুলো
পাঠাই। ’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত নং : ৫৯)

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, “বলে দাও, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা
তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম। ’ (সুরা আনআম, আয়াত নং : ৬৫)

বুখারি শরিফে আছে, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যখন
তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম’ আয়াতটি নাজিল হলো, তখন
রাসুল (সা.) বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ’ ”(বুখারি)

রাসুল (সা.) বলেছেন, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূ মিকম্প
হবে, সময় সংকু চিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং খুনখারাবি বাড়বে, তোমাদের
সম্পদ এতো বাড়বে যে, উপচে পড়বে। (বোখারি, হাদিস নং : ৯৭৯)

আল্লাহ বলেন, ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের
নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন। ’ (সুরা
শুরা : ৩০)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের মধ্যে উত্তম
ব্যক্তির সংবাদ দেব না? তারা বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম যে দীর্ঘায়ু লাভ করে এবং সুন্দর
আমল করে।’ (মুসনাদে আহমাদ)

হাদিসে এসেছে-
‘নিশ্চয়ই শুভ্র চু লবিশিষ্ট মুসলিমকে সম্মান করা আল্লাহকে সম্মান করার শামিল।’ (আবু
দাউদ)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রবীণদের সঙ্গেই তোমাদের কল্যাণ,
বরকত আছে।’ (ইবনে হিব্বান, মুসতাদরাকে হাকেম)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ছোটরা বড়দের, চলমান ব্যক্তি বসা
ব্যক্তিকে এবং কমসংখ্যক বেশিসংখ্যককে সালাম দেবে।’ (বুখারি)

হজরত মুআবিয়া ইবন আবু সুয়িান রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের
ইলম দান করেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার তওবায় সেই ব্যক্তির
চেয়েও বেশি খুশি হন, যার উট গভীর মরুভূ মিতে হারিয়ে যাওয়ার পর আবার সে তা
ফিরে পায়। (বুখারি ও মুসলিম)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ যার ভালো চান তাকে বিপদগ্রস্ত করেন।’ (বুখারি)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, নবী ও মুমিনদের জন্য উচিত নয় যে, তারা মুশরিকদের
জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। যদিও তারা আত্মীয় হয়। তাদের কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার
পর যে, নিশ্চয়ই তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনের অধিবাসী।’ (সুরা তওবা: আয়াত ১১৩)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা
কোনো কারণ ছাড়াই ইচ্ছাকৃ তভাবে ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির অন্তরে মোহর
মেরে দেন।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)

অন্য এক হাদিসে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘যে ব্যক্তি পর
পর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পেছনের দিকে নিক্ষেপ করলো।
(মুসলিম)।’

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই ভু লকারী মুসলিম বান্দার জন্য
বামপাশের ফেরেশতা ছয় ঘন্টা পর্যন্ত কলম উঠিয়ে রাখে। বান্দা যদি অনুতপ্ত হয় এবং
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তাহলে তা মাফ করে দেওয়া হয়, নতু বা একটি গুনাহ লেখা হয়।
(তাবারানি, বায়হাকি)

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে যে, ‘তোমরা নগণ্য ছোট ছোট গুনাহ থেকে সাবধান হও; কেননা
সেগুলো মানুষের কাঁধে জমা হতে থাকে এরপর তাকে ধ্বংস করে দেয়।’ (মুসনাদে
আহমাদ, জামে)

আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে এ কথারই ঘোষণা দিয়েছেন এভাবে-‘নিশ্চয়ই


তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে মুত্তাকি ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে সম্মানিত।’ (সুরা হুজরাত
: আয়াত ১৩)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে লোক অভাবি ঋণগ্রস্তকে সুযোগ প্রদান করে অথবা ঋণ মাফ
করে দেয়, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে নিজ আরশের ছায়ায় আশ্রয় প্রদান
করবেন, যেদিন তার আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না।’ (তিরমিজি
১৩০৬)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন আমার সুপারিশে
ধন্যব্যক্তি সবচেয়ে সুখী মানুষ। আর সে হলো- যে অন্তর বা নফস থেকে ইখলাস তথা
নিখাদ চিত্তে বলে, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া ইবাদাতের উপযুক্ত কোনো
সত্য উপাস্য নেই।’ (বুখারি
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর সে দিনেক ভয় কর, যে দিন একজন অন্যজন থেকে
এতটু কু ও উপকৃ ত হবে না এবং সে দিন কারও কোনো সুপারিশ গৃহীত হবে না এবং
কারও কাছ থেকে কোনো বিনিময় গ্রহণযোগ্য হবে না এবং তারা কোনো প্রকার
সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৪৮)

হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘একজন শহীদের সুপারিশ তার নিজ পরিবারের সত্তর জনের জন্য
গ্রহণ করা হবে।’ (আবু দাউদ)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, হে মানব সম্প্রদায় ! সুখ বিনাশকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি করে স্মরণ
করো।’ (তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) !
সবচাইতে বুদ্ধিমান লোককে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করে
এবং মৃত্যু পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি গ্রহণে লেগে থাকে।’ (ইবনে মাজাহ)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা বনি আদমের জন্য জিনার একটা অংশ
নির্ধারিত রেখেছেন। সে তাতে অবশ্যই জড়িত হবে। চোখের জিনা হলো- দেখা, জিহবার
জিনা হলো- কথা বলা, কু প্রবৃত্তি কামনা ও খাহেশ সৃষ্টি করা এবং যৌনাঙ্গ তা সত্য অথবা
মিথ্যা প্রমাণ করে।’ (বুখারি ৬২৪৩)
রেফারেন্স

সহীহ বুখারীঃকু রআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন


(৬৭৮১)

সহীহ বুখারীঃকু রআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন


(৬৭৮২)

সহীহ বুখারীঃকু রআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন


(৬৭৮৩)

সহীহ বুখারীঃকু রআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন


(৬৭৮৫)

সহীহ বুখারীঃকু রআন ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারন


(৬৭৯১)
bd apps

আম্বিয়া কিরাম (আঃ) ৩১৯১


BD APPS (10th JUNE)
BD APPS (30th JUNE)
সহীহ বুখারী:জাহ্‌মিয়াদের মতের খণ্ডন ও তাওহীদ
প্রসঙ্গ (৬৮৮৮)
সহীহ বুখারী:জাহ্‌মিয়াদের মতের খণ্ডন ও তাওহীদ
প্রসঙ্গ (৬৮৯৭)

bd apps 22 nd july

You might also like