Professional Documents
Culture Documents
TG - G - 7 - History and Social Science - pdf-06.12.2022 - Compressed
TG - G - 7 - History and Social Science - pdf-06.12.2022 - Compressed
শিক্ষক সহায়িকা
সপ্তম শ্রেণি
(পরীক্ষামূলক সংস্করণ)
রচনা ও সম্পাদনা
আবুল ম�োমেন
অধ্যাপক স্বাধীন সেন
অধ্যাপক আকসাদুল আলম
ড. দেবাশীষ কুমার কুন্ডু
অধ্যাপক পারভীন জলী
ড. সুমেরা আহসান
মুহাম্মদ রকিবুল হাসান খান
ঊমা ভট্টাচার ্য
সিদ্দিক বেলাল
বহ্নি বেপারি
সানজিদা আরা
শিল্পনির্দেশনা
মঞ্জুর আহমদ
চিত্রণ
ইউসুফ আলী ন�োটন
প্রচ্ছদ
ইউসুফ আলী ন�োটন
গ্রাফিক্স
ম�ো: রুহুল আমিন
প্রেক্ষাপটনির্ভর
অভিজ্ঞতা
শিখন প্রক্রিয়া
শিখন ক�ৌশল
অভিজ্ঞতা
প্রকল্পভিত্তিক
পরিবেশের সাথে মিথস্ক্রিয়া
সমস্যা ও চ্যলেঞ্জভিত্তিক
পর ্যবেক্ষণ
অনুসন্ধানমূলক
হাতে কলমে কাজ
সহয�োগিতামূলক
দলগত কাজ
সংয�োগমূলক
পঠন
প্রেক্ষাপটনির্ভর
স্মৃতিতে ধারণ
প্রতিফলনমূলক
সক্রিয় পরীক্ষণ
পর ্যবেক্ষণ
য�োগ্যতার উপাদান
জ্ঞান
দক্ষতা
দৃষ্টিভঙ্গি
মূল্যব�োধ
বিমূর্ত ধারণায়ন
5
অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনকে ব�োঝান�োর জন্য সাধারণভাবে একটি চক্রাকার ছককে ব্যবহার করা হয়। যেখানে
চারটি মূল ধাপ অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের শিখন নিশ্চিত হয়।
১. বাস্তব অভিজ্ঞতা: এই ধাপে শিক্ষার্থী বাস্তবে বিষয়ভিত্তিক ক�োন�ো অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাবে।
২. প্রতিফলনমূলক পর ্যবেক্ষণ: এরপর তারা পর ্যবেক্ষণ, আল�োচনা, অনুসন্ধান, পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্যে
আগের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করবে।
৩. বিমূর্ত ধারণায়ন: এই ধাপে শিক্ষার্থীরা ক�োন একটি সাধারণ ধারণায় বা নিজস্ব ব্যাখ্যায় উপনীত হবে।
প্রয়�োজনে বিভিন্ন উপাদান বা রিস�োর্সের সহয�োগিতা নেবে।
৪. সক্রিয় পরীক্ষণ/প্রয়�োগ: অর্জিত ধারণা অন্য ক�োন অভিজ্ঞতায় বা পরিস্থিতিতে ব্যবহার করবে।
শিক্ষকের ভূমিকা
নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এতদিনের অভ্যস্ত ভূমিকা একটু বদলে নিতে হবে।
আপনারা হলেন এই পদ্ধতির অগ্রপথিক বা অগ্রযাত্রী, শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়কের দায়িত্ব পালন
করবেন। শুধু মনে রাখতে হবে ওদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার সুয�োগ যেন ক�োন�োভাবে নষ্ট না হয়। অভিজ্ঞতাভিত্তিক
শিখন পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষার্থীরা যাতে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন ক�ৌশলের ধাপ অনুযায়ী তাদের
কার ্যক্রম পরিচালিত করতে পারে তাতে শিক্ষক সহায়তা দেবেন মাত্র। ওদের পথ খজে ুঁ না পাওয়া দেখে বা
কাজের সময় বাঁচান�োর বিবেচনা থেকে বা অন্য নানাকারণে আগেই বা মাঝপথে অভ্যাসবশত কি করতে হবে
তা শিক্ষার্থীদের বলে দেওয়ার ইচ্ছা দমান�ো আপনার পক্ষে মুশকিল হতে পারে। কিন্তু তা দমিয়ে রাখতেই হবে।
মনে রাখতে হবে সঠিক উত্তর নয় শেখার প্রক্রিয়া শেখাটাই এ পর ্যায়ে মূল ব্যাপার। শিশুরা নিজেরাই এই শিখন
প্রক্রিয়ায় ৭টি য�োগ্যতা অর্জন করবে। তারা ক�োন তথ্য বা বিষয়বস্তু যতটা শিখবে তার চেয়ে বেশি শিখবে ঐ
বিষয়টা কিভাবে শিখতে হয় তার প্রক্রিয়া (How to learn)। কাজেই এখানে পারা বা না পারার বিষয়টা
ভিন্নভাবে বুঝতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন সে প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করতে পারে। আরেকটি বিষয় খেয়াল
রাখা দরকার-কিছু ম�ৌলিক ধারণা বাদে ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানের ক�োন প্রশ্নেরই একটিমাত্র আদর্শ উত্তর
বা সমাধান নেই। আপনারা প্রয়�োজনে তাদের কিছু কিছু ইশারা দেবেন, চিন্তার খ�োরাক য�োগাবেন যেমনটা
চলার পথে গাড়ি থেমে গেলে অভিজ্ঞ মানুষের সহয�োগিতা নিতে হয়। ওরা জ্ঞানাভিযানে চলতে শুরু করলে
আপনার কাজ হবে নজর রাখা, পর ্যবেক্ষণ করা, প্রয়�োজনে সহায়তা করা, কিন্তু অপ্রয়�োজনে নয়। তারপর আছে
মূল্যায়নের কাজ। এ নিয়েও আমরা আল�োচনা করব।
আপনারা ত�ো জানেনই প্রত্যেক শিশুই কেবল স্বতন্ত্র মানুষ নয়, স্বকীয় মানুষও। এই স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তা
মূল্যবান। ফলে ওদের ব্যক্তি পরিচয়হীন একটা দল/শ্রেণি ভাবা ঠিক হবে না, ওদের প্রত্যেকেরই নিজ গুণাবলি
ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে স্বতন্ত্র পরিচয় আছে। সেটার সাথে শিক্ষকের নিবিড় পরিচয় ঘটা জরুরি, তাতে প্রত্যেকের
য�োগ্যতার বিকাশ এবং প্রত্যেকের জন্যে যথার্থ ন্যায্য পরিবেশ সৃষ্টি সহজ হয়। সেই সাথে মূল্যয়নও ঠিকভাবে
করা সহজ হয়ে যাবে।
6
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
শিখন-শেখান�ো সামগ্রির ব্যবহার:
এই শিক্ষাক্রমে য�োগ্যতা অর্জনকে গুরুত্ব দিয়ে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন-শেখান�ো ক�ৌশলসহ অন্যান্য ক�ৌশল
ব্যবহার করা হয়েছে। কাজেই শিখন-শেখান�ো সামগ্রি অর্থাৎ এই শিক্ষকদের সহায়িকা, পাঠ্য পুস্তক এবং
অন্যান্য সামগ্রীও এমনভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে যেন শিক্ষার্থীদের জন্য কাঙ্ক্ষিত শিখন অভিজ্ঞতা অর্জিত হতে
পারে । এই সহায়িকাতে প্রতিটি য�োগ্যতা অর্জনের জন্য কী ধরণের শিখন অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের প্রয়�োজন
হতে পারে তা বিবেচনা করে শিক্ষকদের সহায়তার জন্য বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
প্রত্যেকটি য�োগ্যতার শিখন অভিজ্ঞতাকে আবার প্রয়�োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সংখ্যক সেশনে বিভক্ত করে বর্ণনা
করা হয়েছে। একেকটি সেশন একেক দিন পরিচালিত হবে ধরে নিয়ে শিক্ষক সহায়িকাটি সাজান�ো হয়েছে।
প্রত্যেকটি য�োগ্যতার জন্য নির্ধরিত শিখন অভিজ্ঞতা অর্জনে শিক্ষার্থীদের সহয�োগিতা করার ক্ষেত্রে আপনারা
প্রাসঙ্গিক যেসকল তথ্য জানার প্রয়�োজন ব�োধ করতে পারেন, সেরকম কিছু প্রাষঙ্গিক তথ্য এই সহায়িকার
পরিশষ্টতে সংযুক্ত পাবেন। অবশ্যই সেসব তথ্যই সব চাহিদা পূরণ করার জন্য যথেষ্ট নয়। আপনারা যদি
প্রাসঙ্গিক ধারণা ও তথ্য জানার জন্য বিভিন্ন বই, পত্র-পত্রিকা এবং ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান
করেন তাহলে সমৃদ্ধ হবেন। শিক্ষার্থীদেরও উৎসাহিত করবেন পাঠ্যপুস্তকের বাইরে নির্ভরয�োগ্য অন্যান্য
উৎস যেমন বিভিন্ন বই, পত্র-পত্রিকা এবং ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অনুসন্ধান করার জন্য। তাছাড়া
শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণয়নকৃত পাঠ্যপুস্তকও শিক্ষক সহায়িকার মত একইভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে তাদের
বয়�োসপ�োয�োগী ভাষা ও ঢং এ। পাঠ্যপুস্তকও আপনাদের শিখন অভিজ্ঞতাগুল�োর জন্য পরিকল্পনা ও করণীয়
বুঝতে সহায়তা করবে। আপনারা অবশ্যই সেশন পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি নেবার সময় শিক্ষক সহায়িকার
সাথে সাথে পাঠ্যপুস্তকে শিখন অভিজ্ঞতার একই অংশ পড়ে নেবেন। এই শিক্ষাক্রমের আরেকটি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল�ো আন্তঃবিষয়ক সমন্বয়, অর্থাৎ ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের য�োগ্যতা অর্জন করার সময়
কখনও কখনও অন্যান্য বিষয়ের অর্জিত য�োগ্যতা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আবার কখনও এই বিষয়ের
য�োগ্যতা অন্য বিষয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়ে যাবে বা এই বিষয়ের মাধ্যমে অন্য বিষয়ের য�োগ্যতার। বিষয়ের
ধারণায়নে নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন বিষয়টি যে, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের সাথে নিবিড়ভাবে
সম্পর্কিত হলেও, মূলত সমাজ ও বিশ্বনাগরিকত্ব, পরিবেশ ও জলবায়ু এবং জীবন ও জীবিকা শিখন-ক্ষেত্রগুল�ো
অধিক গুরুত্ব পেয়েছে। এর সাথে বাংলা, ইংরেজি, ডিজিটাল টেকন�োলজি, শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়গুল�ো থেকে
অর্জিত য�োগ্যতা ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের য�োগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। য�োগ্যতাগুল�ো
সাজান�োর সময় এক বিষয়ের সাথে অন্য বিষয়ের মাঝে এই সম্পর্কগুল�োর সমন্বয় নিশ্চিত করা হয়েছে।
কাজেই আপনারা অবশ্যই আন্তঃসম্পর্কযুক্ত বিষয়গুল�োর য�োগ্যতাগুল�ো বিবেচনায় নিয়ে প্রয়�োজনীয় ক্ষেত্রে
সংশ্লিষ্ট অন্য বিষয়ের শিক্ষকদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে শিখন অভিজ্ঞতাগুল�ো বাস্তবয়নের পরিকল্পনা
করবেন। ধরা যাক, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের য�োগত্যা ইসাবি ৭.৪ এ মুক্তিযুদ্ধের দেশি বিদেশি বন্ধুরা
প্রকল্পটি উপস্থাপনার কথা বলা হয়েছে বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রে কেউ যদি নাটক, দেয়াল পত্রিকা,
গান, নাচ, গল্প বা তথ্যচিত্র নির্মাণ করতে চায় তাহলে তাদের ডিজিটাল টেকন�োলজি এবং শিল্প ও সংস্কৃতি
বিষয় থেকে অর্জিত এসব য�োগ্যতা ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে এই তিন বিষয়ের শিক্ষকদের মাঝেও
সমন্বিত পরিকল্পনা থাকতে হবে। এই সব শিখন সামগ্রীই ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য নির্ধারি
ত ৮টি য�োগ্যতা অর্জনের জন্য প্রয়�োজনীয় সম্ভাব্য শিখন অভিজ্ঞতার পরিকল্পনার উদাহরণ। আপনারা এগুল�ো
ব্যবহার করবেন। কিন্তু এগুল�োর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন না। ধীরে ধীরে ধারণা পরিস্কার হলে আপনারাও নতুন
নতুন প্রাসঙ্গিক শিখন অভিজ্ঞতার পরিকল্পনা সাজাবেন। এভাবেই এক সময় আপনারা হয়ে উঠবেন আগামী
দিনের মানুষ গড়ার দক্ষ কারিগর।
7
মূল্যায়নে শিক্ষকের করনীয়:
শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দুই ভাবে মূল্যায়ন করবে। প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতার সাথে সাথে চলবে “শিখনকালীন
মূল্যায়ন” যার মূল উদ্দেশ্য থাকবে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত ফিডব্যাক দিয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে প�ৌঁছানতে
সাহায্য করা। আরেকটি হল সামষ্টিক মূল্যায়ন, যার মূল উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীর এই শ্রেণির এই বিষয়ের জন্য
নির্ধারিত ৭টি য�োগ্যতা সে অর্জন করল�ো কিনা তার সামগ্রিক বিশ্লেষণ করা। এই সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৬
মাস এবং ১২ মাস পর। তবে কিছু কিছু শিখনকালীন মূল্যায়ন কার ্যক্রমের ফলাফলও এই সামষ্টিক মূল্যায়নে
য�োগ হবে (কাজেই তার রেকর ্ড রাখতে হবে)। ক�োন ক�োন মূল্যায়ন কার ্যক্রম ক�োন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে
এবং কিভাবে তার রেকর ্ড সংসরক্ষন করতে হবে (ছক, বা চেক্লিস্ট, বা রুব্রিক্স ব্যবহার করে) তা শিক্ষক
সহায়িকায় উল্লেখ আছে। প্রতি শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন কার ্যক্রমে পারদর্শিতা নির্দিষ্ট “পারদর্শিতার নির্দেশক”
অনুযায়ী মূল্যায়ন করতে হবে। এই শ্রেণির এই বিষয়ের জন্য ম�োট ১১ টি পারদর্শিতার নির্দেশক নির্ধারণ করা
হয়েছে। এই নির্দেশক গুল�ো মূল যে ৭টি একক য�োগ্যতা এই শ্রেণিতে আনা হয়েছে সেগুল�োকে পরিমাপ করবে।
একেকটি একক য�োগ্যতা অর্জনে শিক্ষার্থীকে এক বা একাধিক পারদর্শিতার নির্দেশক অর্জন করতে হয়।
প্রতিটি নির্দেশকের জন্য তিনটি স্তর দেয়া আছে- প্রারম্ভিক, বিকাশমান, এবং দক্ষ। শিক্ষার্থী প্রতিটি নির্দেশকে
এই তিনটি স্তরের যেক�োন�ো একটি স্তর অর্জন করবে। বিভিন্ন মূল্য্যয়ন কার ্যক্রম পর ্যবেক্ষণ করে শিক্ষক প্রতি
শিক্ষার্থীর জন্য এই ১১ টি পারদর্শিতার নির্দেশকের জন্য প্রারম্ভিক, বিকাশমান, বা দক্ষ যেক�োন�ো একটি স্তর
নির্ধারণ করবেন। কি ধরনের ব�োধগম্যতা, আচরণ, বা পরিবর্তন ক�োন ধরনের স্তর নির্দেশ করে তা দেয়া আছে-
অর্থাৎ প্রতি নির্দেশকের জন্য তিনটি করে স্তরের বর্ণনা দেয়া আছে।
8
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
শ্রেণি ভিত্তিক মূল সামাজিক কাঠাম�ো, রীতিনীতি, মূল্যব�োধ এবং সমাজে মানুষের অবস্থান ও ভূমিকা যে
য�োগ্যতঃ প্রেক্ষাপট অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে তা অনুসন্ধান করে এর পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের
সাদৃশ্য ও ভিন্নতার কারণ উপলব্ধি করে পারস্পরিক সহয�োগিতার ভিত্তিতে সহাবস্থান
এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে টেসসই উন্নয়নে ভূমিকা নির্ধারণ করা।
শ্রেণি ভিত্তিক একক পারদর্শিতার পারদর্শিতার স্তর
য�োগ্যতা নির্দেশক প্রারম্ভিক বিকাশমান দক্ষ
য�োগ্যতা-৭.১ ১। অনুসন্ধানের অনুসন্ধানের অনুসন্ধানের অনুসন্ধানের
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি বৈজ্ঞানিক বৈজ্ঞানিক ধাপসমূহ বৈজ্ঞানিক ধাপসমূহ বৈজ্ঞানিক ধাপসমূহ
ব্যবহার করে ধাপসমূহ ব্যবহার ব্যবহার করে ব্যবহার করে ব্যবহার করে
য�ৌক্তিক সিদ্ধান্তে করে বিভিন্ন বিভিন্ন সামাজিক বিভিন্ন সামাজিক বিভিন্ন সামাজিক
প�ৌঁছান�ো এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান, রীতিনীতি প্রতিষ্ঠান,
সামাজিক কাঠাম�ো, প্রতিষ্ঠান, রীতিনীতি ও ও মূল্যব�োধ সংক্রান্ত রীতিনীতি ও
রীতিনীতি ও রীতিনীতি ও মূল্যব�োধ সংক্রান্ত নিজের ক�োন�ো মূল্যব�োধ সংক্রান্ত
মূল্যব�োধ যে ধ্রুব মূল্যব�োধ সংক্রান্ত নিজের ক�োন�ো পূর্বানুমান বা ধারণা নিজের ক�োন�ো
নয় বরং প্রেক্ষাপট নিজের ক�োন�ো পূর্বানুমান বা ধারণা যাচাইয়ের মাধ্যমে পূর্বানুমান বা
অনুযায়ী পরিবর্তিত পূর্বানুমান বা যাচাইয়ের মাধ্যমে য�ৌক্তিক সিদ্ধান্তে ধারণা যাচাইয়ের
হতে পারে তা ধারণা যাচাইয়ের য�ৌক্তিক সিদ্ধান্তেও প�ৌছাতে পারছে কিন্তু মাধ্যমে য�ৌক্তিক
হৃদয়ঙ্গম করতে মাধ্যমে প�ৌছাতে পারছে তার পরিবর্তনশীলতা সিদ্ধান্তে প�ৌছে তার
পারা য�ৌক্তিক সিদ্ধান্তে না এবং তার উপলব্ধি করতে পরিবর্তনশীলতা
প�ৌছে তার পরিবর্তনশীলতাও পারছে না। উপলব্ধি করতে
পরিবর্তনশীলতা উপলব্ধি করতে পারছে।
উপলব্ধি করতে পারছে না।
পারছে।
9
য�োগ্যতা-৭.২ ১। নিজের ও নিজের ও অন্য নিজের ও অন্য নিজের ও অন্য
নিজের ও অন্য অন্য সম্প্রদায়ের সম্প্রদায়ের সম্প্রদায়ের সম্প্রদায়ের
সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য বৈশিষ্ট্যেসমূহ বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য
বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য ও ভিন্নতা চিহ্নিত চিহ্নিত করতে ও ভিন্নতা চিহ্নিত ও ভিন্নতা চিহ্নিত
ও ভিন্নতা উপলব্ধি করে পারস্পরিক পারলেও সাদৃশ্য ও করতে পারলেও করে পারস্পরিক
করে সহয�োগিতার নির্ভরশীলতা ভিন্নতাও চিহ্নিত পারস্পরিক নির্ভরশীলতা
ভিত্তিতে উপলব্ধি করতে করতে পারছে নির্ভরশীলতা উপলব্ধি উপলব্ধি করতে
পারছে। না পারস্পরিক করতে পারছে না। পারছে।
পারস্পরিক সম্পর্ক
নির্ভরশীলতাও
স্থাপন করতে পারা উপলব্ধি করতে
পারছে না।
৩। নিজের ও নিজের ও অন্য নিজের ও অন্য নিজের ও অন্য
অন্য সম্প্রদায়ের সম্প্রদায়ের সবাই সম্প্রদায়ের সবাই সম্প্রদায়ের সবাই
সবাই মিলে মিলে ভাল�ো থাকার মিলে ভাল�ো থাকার মিলে ভাল�ো
ভাল�ো থাকার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট থাকার লক্ষ্যে
লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কার ্যক্রম গ্রহণের কার ্যক্রম গ্রহণের সুনির্দিষ্ট কার ্যক্রম
কার ্যক্রম গ্রহণ গুরুত্ব উপলব্ধি গুরুত্ব উপলব্ধি করতে গ্রহণ করতে
করতে পারছে। করতে পারছে না। পারছে। পারছে।
য�োগ্যতা-৭.৩ ১। উৎস ও শ্রোতা ভিন্ন ভিন্ন উৎস ভিন্ন ভিন্ন উৎস ও ভিন্ন ভিন্ন উৎস ও
ঐতিহাসিক ভেদে একই ও শ্রোতা ভেদে শ্রোতা ভেদে একই শ্রোতা ভেদে একই
তথ্য যে উৎস ঐতিহাসিক একই ঐতিহাসিক ঐতিহাসিক তথ্যের ঐতিহাসিক তথ্যের
এবং শ্রোতার তথ্যের পরিবর্তন তথ্যের পরিবর্তন পরিবর্তন এর কথা পরিবর্তন নিদ্রিষ্ট
উপর নির্ভর করে চিহ্নিত করতে তুলে ধরতে উল্লেখ করলেও প্রেক্ষাপট বা ঘটনার
এবং তা যে পেরে ঐতিহাসিক পারেনি, ফলে নিদ্রিষ্ট প্রেক্ষাপট নিরিখে চিহ্নিত
ব্যক্তিনিরপেক্ষ নয় তথ্য যে ঐতিহাসিক তথ্য বা ঘটনার নিরিখে করতে পেরে
ব্যক্তিনিরপেক্ষ যে ব্যক্তিনিরপেক্ষ চিহ্নিত করতে ঐতিহাসিক তথ্য
তা উপলব্ধি করতে
নয় তা উপলব্ধি নয় তা সুস্পষ্ট পারেনি, ফলে যে ব্যক্তিনিরপেক্ষ
পারা করতে পারছে। ভাবে প্রকাশ করতে ঐতিহাসিক তথ্য নয় তা সুস্পষ্ট
পারেনি। যে ব্যক্তিনিরপেক্ষ ভাবে প্রকাশ করতে
নয় তা সুস্পষ্ট পেরেছে
ভাবে প্রকাশ করতে
পারেনি।
10
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
11
য�োগ্যতা-৭.৭ ১। স্থানীয় প্রাকৃতিক শুধু স্থানীয় স্থানীয় ও বৈশ্বিক
স্থানীয় ও বৈশ্বিক ও বৈশ্বিক পরিবেশের প্রেক্ষাপটে প্রাকৃতিক উভয় প্রেক্ষাপটে
প্রেক্ষাপটে প্রেক্ষাপটে প্রভাবে সামাজিক পরিবেশের প্রভাবে প্রাকৃতিক
প্রাকৃতিক ও প্রাকৃতিক ও পরিবেশের সামাজিক পরিবেশের পরিবেশের
সামাজিক সামাজিক পরিবর্তন এবং পরিবর্তন এবং প্রভাবে সামাজিক
পরিবর্তনের পরিবেশের সামাজিক সামাজিক পরিবেশের পরিবেশের
আন্তঃসম্পর্ক বিভিন্ন ধরনের পরিবেশের পরিবর্তনের ফলে পরিবর্তন এবং
পরিবর্তন পরিবর্তনের প্রাকৃতিক পরিবেশের সামাজিক
উদঘাটন করে
পর ্যাল�োচনা ফলে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ধরণ পরিবেশের
টেকসই উন্নয়নের করে এদের পরিবেশের অনুসন্ধান করতে পরিবর্তনের
লক্ষ্যে নিজস্ব আন্তঃসম্পর্ক পরিবর্তনের ধরণ পারছে এবং এদের ফলে প্রাকৃতিক
গণ্ডিতে কার ্যকর উদঘাটন করতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আন্তঃসম্পর্ক ও পরিবেশের
ভূমিকা পালন পারছে। । অনুসন্ধান করতে উপলব্ধি করতে পরিবর্তনের
করতে পারা পারলেও স্থানীয় পারছে। কিন্তু ধরণ অনুসন্ধান
ও বৈশ্বিক উভয় বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট করে উভয়ের
প্রেক্ষাপটে এর বিবেচনায় এনে আন্তঃসম্পর্ক
সামগ্রিক চিত্র এদের আন্তঃসম্পর্ক উপলব্ধি করতে
এবং উভয়ের উপলব্ধি করতে পারছে।
আন্তঃসম্পর্ক পারছে না।
উপলব্ধি করতে
পারছে না।
২। স্থানীয় স্থানীয়/বৈশ্বিক শুধু স্থানীয় প্রেক্ষাপটে স্থানীয় ও বৈশ্বিক
ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রাকৃতিক প্রাকৃতিক ও উভয় প্রেক্ষাপটে
প্রেক্ষাপটে ও সামাজিক সামাজিক পরিবেশের প্রাকৃতিক ও
প্রাকৃতিক ও পরিবেশের আন্তঃসম্পর্ক সামাজিক
সামাজিক আন্তঃসম্পর্ক বিবেচনায় নিয়ে পরিবেশের
পরিবেশের বিবেচনা এবং নিজস্ব গণ্ডিতে আন্তঃসম্পর্ক
আন্তঃসম্পর্ক টেকসই উন্নয়নের টেকসই উন্নয়নে বিবেচনায় নিয়ে
বিবেচনায় নিয়ে উপায় উপলব্ধি কার ্যকর ভূমিকা নিজস্ব গণ্ডিতে
নিজস্ব গণ্ডিতে করতে পারলেও পালন করতে টেকসই উন্নয়নে
টেকসই উন্নয়নে নিজস্ব গণ্ডিতে পারছে। কার ্যকর ভূমিকা
কার ্যকর ভূমিকা টেকসই উন্নয়নে পালন করতে
পালন করতে কার ্যকর ভূমিকা পারছে।
পারছে। পালন করতে
পারছে না।
12
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
ব�োঝা যায়।
ব�োধহয় সামাজিক কাঠাম�ো এবং এর উপাদান নিয়ে কার�ো কার�ো মনে সংশয় থাকতে পারে। বেশ, তাহল এ
দুটি বিষয়ও খ�োলসা করে নেওয়া যাক।
ধরুন য�োগায�োগ ব্যবস্থা একটা সামাজিক কাঠাম�ো। এক সময় দাঁড়টানা পাল ত�োলা ন�ৌকা আর গরু-মহিষের
গাড়িই ছিল ভরসা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে দু’জায়গাতেই অর্থাৎ সড়ক ও ন�ৌপথে কত পরিবর্তন এসেছে
সেসব আপনারা ভাল�োই জানেন।
আবার দেখুন পরিবারও একটি সামাজিক কাঠাম�ো। তাতেও কি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন আসে নি? এক
সময় চাচা-কাকাদের পরিবার নিয়ে বিরাট একান্নবর্তী পরিবার ছিল আমাদের, এখনকার বেশির ভাগই স্বামী-
স্ত্রী-সন্তানদের একক পরিবার হচ্ছে, বড়জ�োর সঙ্গে কার�ো বৃদ্ধ বাবা-মা থাকেন। খেয়াল করলে দেখবেন বিয়ের
অনুষ্ঠান, গ্রামীণ মেলা, খাবারদাবার, প�োশাক, সাজসজ্জা, ভাষার ব্যবহার, পারিবারিক অনুষ্ঠান সব তাতেই
পরিবর্তনের ছাপ পড়ছে।
কৃষি আমাদের সমাজের বহুকালের প্রধান অঙ্গ। সময়ের প্রবাহে তাতে কত পরিবর্তন ঘটেছে একবার ভাবুন।
পরিবর্তন মানবসমাজের এক অনিবার ্য অনুষঙ্গ। তাই পরিবর্তনকে ব�োঝা এবং ভাল�ো-মন্দ ঠিকভাবে চেনা ও
ভাল�োটি গ্রহণ করা এগিয়ে যাওয়ার জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে নতুন জিনিস, নতুন কথা, নতুন জ্ঞান অনেক সময়ই সহজে গ্রহণ করে না মানুষ, একেবারে সামাজিকভাবে
বয়কট করেছে, এমনও দেখা গেছে। যখন এদেশে ইংরেজরা প্রথম মুদ্রণ যন্ত্র বা ছাপাখানা এনেছিল তখন মুসলিম
এবং হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের গোঁড়া মানুষরা এটিকে শয়তানের যন্ত্র বলে মুদ্রিত কাগজ বা বই ছতে
ুঁ ও নিষেধ
করেছিলেন! এখন আমরা বই, পত্রিকা বা ছাপান�ো কাগজপত্র ছাড়া ভাবতেও পারি না। এরকম ভুল ধারণার
বশবর্তী হয়ে একর�োখা অবস্থান নিলে নিজেকেই ঠকতে হয়। তাই অনুসন্ধান এত জরুরি, তাই পরিবর্তনের
বার্তাটা ঠিকমত ব�োঝা এত গুরুত্বপূর্ণ।
এটি মূলত সমাজবিজ্ঞানের পাঠ হলেও এর সাথে জীবন ও জীবিকা, শিল্প ও সংস্কৃতির য�োগ রয়েছে।
য�োগ্যতা ইসাবি ৭.২
নিজের ও অন্য সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য ও ভিন্নতা উপলব্ধি করে সহয�োগিতার ভিত্তিতে পারস্পরিক
সম্পর্ক স্থাপন করতে পারা।
ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা নিজেকে চিনেছে, নিজের বহুমাত্রিক পরিচয় সম্পর্কে জেনেছে। এবারে তারা নিজ নিজ
সম্প্রদায়কে যেমন বুঝবে তেমনি অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য এবং ভিন্নতাও উপলব্ধি করবে। কেন করবে?
যেন সহয�োগিতার ক্ষেত্রগুল�ো চিনতে পারে ও তা বুঝে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী ও সক্ষম হয়। একটি
সুস্থ নাগরিকসমাজ গঠনের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সমাজবদ্ধ প্রাণি হিসেবে মানুষ যা কিছু করে এই যেমন কথা বলা থেকে খাওয়া, প�োশাক থেকে বিছানা, উৎসব-
অনুষ্ঠান থেকে আনন্দ-বেদনা প্রকাশের রীতি, ধর্ম পালন থেকে আবেগ-অনুভ‚তির প্রকাশ ইত্যাদির সমষ্টি হল
তার সংস্কৃতি। ভাষাগত কারণে যার সাথে সাংস্কৃতিক ঐক্য দেখা যাবে ধর্মীয় কারণে তার সাথে সাংস্কৃতিক
পার্থক্য থাকতে পারে, যেমন মুসলিম ও হিন্দুদের প্রার্থনার ধরণা বা বিয়ের অনুষ্ঠান। আবার দেখা যাবে ধর্মীয়
কারণে ঐক্য থাকলেও ভাষার কারণে সাংস্কৃতিক পার্থক্য তৈরি হয়, যেমন চাকমা ও মারমা উভয় সম্প্রদায়
ব�ৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও তাদের মধ্যে ভাষা ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য ব্যাপক। তাই বুঝতে হবে পার্থক্য ও সাদৃশ্য
মানবসমাজে স্বাভাবিক বিষয়।
সমাজের পাশাপাশি আধুনিক কালে সব মানুষই একেকটি রাষ্ট্রের নাগরিক। তার যেমন কিছু অধিকার আছে
তেমনি তাকে কিছু দায়িত্বও পালন করতে হয়। রাষ্ট্র চলে সংবিধান ও আইনের ভিত্তিতে, অঙ্গ আছে তিনটি,
সরকার গঠন ও জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের ধরণ আছে। এসব নিয়ে তৈরি হয় একজন নাগরিকের রাজনৈতিক
পরিচয়। এ তার রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ।
15
ফলে সামাজিক পরিচয়ের সাথে সাথে প্রত্যেকের রয়েছে রাষ্ট্রীয় নাগরিক পরিচয়। বিভিন্ন ধর্ম, গ�োত্র, অঞ্চলের
মানুষ তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ভিন্নতা সত্বেও একই নাগরিক পরিচয়ের অধিকারী হতে পারে। সেখানে
তাদের সাদৃশ্য। তারা একই প্রতিষ্ঠানে চাকুরি, একই পেশা, একই রাজনৈতিক সংগঠন, একই শিল্পচর্চাসহ
পারস্পরিক নানান সাদৃশ্যও খজে ুঁ পেতে পারে। রাষ্ট্র হল নাগরিকদের মধ্যে সমতা তৈরি ও সমন্বয়ের
পরিকাঠাম�ো।
নিশ্চয় আমরা বুঝতে পারছি যে অনুসন্ধান করলে ভিন্নতার মধ্যেও সাদৃশ্যের অনেক ক্ষেত্র খজে ুঁ পাওয়া যাবে
যা পরস্পর সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক হবে।
এটিতে সমাজতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের উপাদান রয়েছে।
য�োগ্যতা- ইসাবি ৭.৩
যে ক�োন�ো ঐতিহাসিক তথ্য যে এর উৎস এবং শ্রোতার চিন্তা ও মন�োভাবের উপর নির্ভর করে এবং তাই তা যে
ব্যক্তিনিরপেক্ষ নয় তা উপলব্ধি করতে পারা।
কথাটা ব�োধহয় আরেকটু পরিস্কার করে নেওয়া ভাল�ো হবে। ঐতিহাসিক তথ্যের উৎস সাধারণত তিনটি
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ঐতিহাসিক দলিল, বই এবং ব্যক্তি। বই লেখেন যে ঐতিহাসিক তিনিও একজন ব্যক্তি।
আবার সব মানুষেরই নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা থাকে এবং তার ভিত্তিতেই তিনি ক�োন�ো তথ্যকে গুরুত্ব দেন ক�োন�ো
তথ্যকে দেন না, এভাবে তথ্যের ব্যাখ্যাতেও ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে ভেদাভেদ হয়। আবার যিনি শ্রোতা তাঁর নিজস্ব
ধারণা থাকতে পারে, অথবা ক�োন�ো ধারণাই হয়ত থাকে না। যাঁর নিজস্ব ধারণা থাকে তিনি তার আল�োকে
ঘটনা বিচার করেন, যার থাকে না তিনি যা পড়েন বা শ�োনেন সাধারণত তা-ই বিশ্বাস করে নেন।
একটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাক। পলাশীর যুদ্ধ নিয়ে ইংরেজ ঐতিহাসিকদের লেখায় ক্লাইভ ও তার বাহিনীর
বীরত্ব ও সাফল্যের কথা লেখা হয়। বেশির ভাগ বাঙালি ঐতিহাসিক ব্রিটিশদের ষড়যন্ত্র ও মীরজাফরের
বিশ্বাসঘাতকতাকেই সিরাজের পরাজয়ের কারণ হিসেবে দেখান। ইংরেজরা সিরাজদ�ৌল্লাকে একজন অনভিজ্ঞ
অমিতাচারী তরুণ শাসক হিসেবে দেখান, বাঙালিরা তাঁকে একজন ট্র্যাজিক নায়ক ও উচ্চাভিলাষী স্বজনের
বিশ্বাসঘাতকতার নির্মম শিকার হিসেবে তাঁর প্রতি সহানুভূতি জাগিয়েই লেখেন।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধেরও পাকিস্তানিদের বা পাকিস্তানপন্থীদের ভাষ্য ভিন্ন রকম। আবার ১৯৭১ সনে অবরুদ্ধ দেশে
অনেকে বাধ্য হয়ে পাকিস্তানের পক্ষে বললেও পরে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেছেন।
এ সব দৃষ্টান্ত থেকে বলা যায় ইতিহাসের বস্তুনিষ্ঠ তথ্য বা ব্যাখ্যা সব সময় সহজভাবে পাওয়া যায় না। এর
জন্যে ঐতিহাসিক ঘটনার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ধারণা, ঘটনার পরম্পরা জানা এবং সংশ্লিষ্ট ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের
সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা সহায়ক হবে। ফলে এখানেও শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধান, বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্তে প�ৌঁছান�োর কাজ
রয়েছে। আর তাতেই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্তে প�ৌঁছান�োর সম্ভব হবে।
এটি মূলত ইতিহাসভিত্তিক য�োগ্যতা। তবে ইতিহাসের এমন দৃষ্টান্ত নেওয়া সম্ভব যাতে সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত
অন্যান্য বিষয়ের আল�োচনাও প্রাসঙ্গিক হতে পারে যেমন অর্থনীতি (বৈষম্যের ইতিহাস), প্রত্নতত্ত্ব ইত্যাদি।
য�োগ্যতা- ইসাবি ৭.৪
মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট পর ্যাল�োচনা করে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও
ভূমিকা মূল্যায়ন করতে পারা।
মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের কেবল গ�ৌরবময় অধ্যায় নয়, এর রয়েছে বহুমাত্রিক তাৎপর ্য যা ব�োঝার জন্যে
স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষ সম্পর্কেও ধারণা থাকা দরকার। কারণ এই ধারণা ছাড়া কারা
আমাদের গ�ৌরবের অংশীদার, কারাই বা ছিল বিপক্ষে এ সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হবে না।
এ ইতিহাস বহুল আল�োচিত হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এ সম্পর্কে আমাদের ধারণা ভাসা ভাসা অস্পষ্ট হয়ে
পড়েছে। বিশেষত সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ড ও জেলহত্যার মত ইতিহাসের কলঙ্কময় ঘটনার
16
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেরও বিকৃতির জের সম্পূর্ণ কাটে নি, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপ�োষকতায় এই বিকৃতি ঘটায়
এবং প্রায় টানা দুই দশক এভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার ফলে একটি প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং এর মহানায়ক
এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যেমন জানতে পারে নি তেমনি আমাদের পক্ষের ও বিপক্ষের ব্যক্তি ও শক্তি
সম্পর্কেও অনেকেই বিভ্রান্তিতে ভ�োগেন। কিন্তু এ ইতিহাসের গ�ৌরবের প্রেরণা যাতে প্রজন্ম প্রজন্মান্তর বহমান
থাকে তার জন্যে এর পুঙ্খানুপুঙ্খ দিকসহ বিভিন্ন দিক জানা জরুরি। এই প্রেক্ষাপটে এই অধ্যায়টিকে অধ্যয়ন
করতে হবে এবং কাজটার গুরুত্বও অনুধাবন করতে হবে।
এ য�োগ্যতা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এবং মূলত ইতিহাসই এর বিষয়।
য�োগ্যতা- ইসাবি ৭.৫
প্রচলিত রীতিনীতি, মূল্যব�োধ ইত্যাদি কীভাবে সামাজিক কাঠাম�োর ওপর প্রভাব ফেলে এবং এই কাঠাম�োর
দ্বারা সেগুল�ো কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় তা অন্বেষণ করতে পারা।
সবাই জানি রাষ্ট্র চলে আইনের দ্বারা আর সমাজ চলে প্রচলিত রীতিনীতি ও মূল্যব�োধের দ্বারা। আমরা এও জানি
যে রাষ্ট্র চালাতে হলে আইনের মাধ্যমে নানা প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রীয় কাঠাম�ো গড়ে তুলতে হয়- সংবিধান থেকে
সংসদ, প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগ, বিজিবি থেকে সেনাবাহিনী, সচিবালয় থেকে ইউনিয়ন পরিষদ ইত্যাদি
অনেক কাঠাম�োই প্রয়�োজন হয়। সমাজেও বিবাহ, সংসার, ধর্ম, শিক্ষা, উৎসব, অনুষ্ঠান, মূল্যব�োধ ইত্যাদি
নানান কাঠাম�ো গড়ে ওঠে। বলাই বাহুল্য সমাজ মানুষের প্রাচীন ক্ষেত্র, তুলনায় রাষ্ট্র নবীন। একইভাবে বলা
যায় সামাজিক রীতিনীতি ও মূল্যব�োধ প্রাচীন কাল থেকে গড়ে উঠেছে, তুলনায় রাষ্ট্রীয় আইনকানুন বিধিবিধান
সাম্প্রতিক বিষয়। সামাজিক কাঠাম�ো মানুষের বহুকালের অভ্যাসে জীবনাচরণে গড়ে উঠেছে। এর ক�োন�ো স্পষ্ট
লিখিত ভাষ্য থাকে না, কেবল মানুষ বংশ পরম্পরায় এগুল�ো পালন করে। লিখিত বিধান নয় বলে এগুল�ো
ব্যক্তির শিক্ষা, রুচি, সামর্থ্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। কাল ও অঞ্চল ভেদে এতে পরিবর্তন ও পার্থক্য দেখা যায় এবং
তাই স্বাভাবিক। বাস্তব কারণে, ব্যক্তির ইচ্ছায় ও প্রয়�োজনে একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে ছ�োট একক পরিবার
গড়ে উঠেছে। বিয়ের আচার অনুষ্ঠানে আগেকার গ্রামীণ কৃষিসমাজের যে প্রভাব দেখা যেত তার রূপান্তর ঘটে
এখন গ্রামের বিয়েতেও নাগরিক রীতিনীতি ও মূল্যব�োধের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। আজকাল বিয়ে বা উৎসবে
ধর্ম-নির্বিশেষে খাবার ও প�োশাকে অনেক সাযুজ্য দেখা যায়। আবার অনেক সময় দেখা যায় সামাজিক প্রথা
তথা রীতি ও মূল্যব�োধ রক্ষা করতে গিয়ে কেউ কেউ অনিচ্ছায় অনেক নিয়ম পালন করেন, অনেকে সামর্থ্য না
থাকলেও ধার দেনা করে রীতি রক্ষা করেন। চাকরির সাক্ষাৎকারে ঘর�োয়া প�োশাকে যাওয়া যাবে না তা আমরা
সহজ বুদ্ধিতে মেনে নিই, কিন্তু ধর্মস্থানে তাতে বাধা নেই। হাসপাতালে র�োগি দেখতে হলে বিশেষ সময় মানতে
হয় কিন্তু বাড়িতে র�োগিকে দেখতে সুবিধা মত সময়েই আমরা যাই।
কেবল মনে রাখতে হবে মানবজীবন গতিশীল, পরিবর্তনমুখী বলে তার জীবনের সব তাতেই পরিবর্তন ঘটে।
সামাজিক রীতিনীতি মূল্যব�োধে যেমন ঘটে তেমনি রাষ্ট্রের সংবিধানেও পরিবর্তন/সংশ�োধন চলতেই থাকে।
একইভাবে সামাজিক কাঠাম�ো, রীতিনীতি ও মূল্যব�োধের মধ্যেও চলে পরস্পরকে প্রভাবিত পরিবর্তিত করার
কাজ। সমাজবিজ্ঞানের বিষয় হলেও এর সাথে জীবন-জীবিকার সাথে সম্পর্ক টানা যায়।
য�োগ্যতা- ইসাবি ৭.৬
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকার ওপর কীরকম
প্রভাব ফেলে তা অনুসন্ধান করতে পারা।
এই য�োগ্যতায় ব্যক্তির সামাজিক ও রাজনৈতিক ভূমিকা সম্পর্কে শিক্ষার্থী সচেতন হবে। সময়ের সাথে সাথে
এতে যে যুগ�োপয�োগী পরিবর্তন ঘটে অর্থাৎ ব্যক্তির প্রেক্ষাপট বদলে যায় তা লক্ষ্য করবে। এতে যে ব্যক্তির
ভূমিকায়ও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে তাও বুঝতে পারবে। দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায় ব্যাপকভাবে ট্রাক্টর চালু
হওয়ায় গরু ও লাঙল দিয়ে হাল চাষ উঠে যাচ্ছে। এতে কৃষকের ভূমিকা বদলে যাচ্ছে, ঘর থেকে গ�োয়াল উঠে
যাচ্ছে, রাখালের বৃত্তি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আগেকার ক্ষেতমজুরদের অনেকে শহর বা মফস্বলে রিক্সা বা ভ্যান
17
চালায়। আবার কৃষিসংক্রান্ত কাজ কমায় মেয়েদের অনেকে তৈরি প�োশাক শিল্পে য�োগ দিচ্ছে। অনেকে নতুন
সম্ভাবনার সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বেকার হয়ে পড়ে কষ্টে দিন কাটায়। অনেকে পরিবর্তনের মাধ্যমে
প্রাপ্ত সুয�োগ কাজে লাগিয়ে মাছ চাষ, ফল চাষ, গরুর খামার, হাঁস-মুরগি পালন করে ভাগ্য পরিবর্তনও করছে।
তবে গুণগতভাবে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হচ্ছে শিক্ষার বিস্তারের ফলে। উচ্চশিক্ষায় সফল হয়ে অনেক গ্রামীণ
কৃষিজীবী পরিবারের সন্তান চাকরি বা ব্যবসায় যুক্ত হয়ে সফল হচ্ছে, শহরের বাসিন্দা হয়ে যাচ্ছে।
একসময় অফিসে অনেক টাইপিস্ট থাকতেন, এখন কম্প্যুটার অপারেটর থাকেন। টাইপরাইটার ছিল কেবল
লেখার যন্ত্র, কিন্তু কম্প্যুটার তা নয়। ফলে টাইপিস্ট ও অপারেটরদের মধ্যে শিক্ষা, দৃষ্টিভঙ্গিতে অনেক পার্থক্য
লক্ষ্য করা যাবে। এরকম অজস্র দৃষ্টান্ত মিলবে এদেশে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশেও।
বাংলাদেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখি ১৯৭৫-এর পরে দীর্ঘদিন দেশ চলেছে সামরিক শাসনের
অধীনে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার তখন ছিল না। ১৯৯০-এর গণ-আন্দোলনের পরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে
এসেছে। তবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশে সঠিক রাজনৈতিক চেতনা ফেরাতে আরও সময় লেগেছে। এর
মধ্যে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন গঠন, প্রচার ও আচরণবিধি ইত্যাদিতে অনেক পরিবর্তন
ঘটেছে। রাজনৈতিক দলে ভাঙাগড়া যেমন বাস্তবতা তেমনি নতুন দল বা জ�োট গঠনও স্বাভাবিক। এসব
পরিবর্তনের দিকে নজর রাখতে হবে এবং তার ফলাফল ও প্রভাব বিবেচনায় রাখতে হবে।
এটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয় হলেও অর্থনীতি প্রসঙ্গত আল�োচনা করা যাবে।
য�োগ্যতা- ইসাবি ৭.৭
স্থানীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের আন্তসম্পর্ক উদ্ঘাটন করে টেকসই উন্নয়নের
লক্ষ্যে নিজস্ব গণ্ডিতে কার ্যকর ভূমিকা পালন করতে পারা।
শিক্ষার্থীরা প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের কথা আগেই জেনেছে। এ দুইয়ে যে আন্তসম্পর্ক রয়েছে তা তারা
কিছুটা হলেও বুঝতে পারে। এবারে সেটা আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে। কারণ পরিবর্তন এবং আন্তসম্পর্ক
দুই-ই হল অকৃত্রিম সত্য। তাই এই বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করেই কেবল উন্নয়নকে টেকসই করা সম্ভব। সেই
সাথে বুঝতে হবে নিজের কাজ ও ভূমিকা পরিধি। কারণ একজন মানুষ তার পরিসরে কাজ করেই যথাযথ
ভূমিকা পালন করতে পারে।
দক্ষিণের জেলাগুল�োয় বারবার সমুদ্রের ন�োনা পানি হানা দিচ্ছে। তাই ক্রমে এ অঞ্চলে আগেকার প্রচলিত ধানের
পরিবর্তে ন�োনা পানির প্রতি সহনশীল জাতের ধান উৎপাদন করা হচ্ছে। আবার অনেকে বাস্তবতার পরিবর্তনের
সাথে সাথে পেশা বদলেও ঘের তৈরি করে চিংড়ি চাষিতে পরিণত হয়েছেন। প্রাকৃতিক কারণেই এখানকার
চাষিদের জীবনে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। অনেকে ধানচাষি থেকে মাছচাষিতে পরিণত হয়েছেন। আবার নদী
ভাঙনের ফলে জমি হারিয়ে অনেকে চাষি থেকে মজুরে পরিণত হন, অনেকে গ্রাম ছেড়ে শহরে থাকতে বাধ্য
হন। তাদের সমাজ জীবনেও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।
এদিকে দেখা যাচ্ছে সারা বিশ্বে ইংরেজি ভাষার প্রভাব বাড়ছে। এমনকি জার্মানি, ফ্রান্সের মত যেসব উন্নত
দেশে মাতৃভাষার বাইরে ইংরেজি চর্চা ছিল না, সেসব দেশেও এখন ইংরেজির চর্চা বেড়েছে। আবার জলবায়ু
পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে এবং তাতে বিশ্বের উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল ডুবে
গেলে ক�োটি ক�োটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে। এই বিপদের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
এটি অর্থনীতির বিষয় হবে এর সাথে শিক্ষার্থীরা ভূগ�োল ও পরিবেশ, সমাজতত্ত্ব, আইন সম্পর্কেও জানবে।
18
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
19
মূল্যায়ন:
য�োগ্যতা ৭.১ এর জন্য রয়েছে ম�োট ২ টি পারদর্শিতার নির্দেশক।
- ৬ মাস
পরে আলাদা
ক�োন�ো মূল্যায়ন
কার ্যক্রম নেই।
শিখনকালীন
মূল্যায়ন থেকে
তথ্য নেয়া হবে।
- ১২ মাস
পরে আলাদা
ক�োন�ো মূল্যায়ন
কার ্যক্রম নেই।
শিখনকালীন
মূল্যায়ন থেকে
তথ্য নেয়া হবে।
20
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
21
সামাজিক রীতি-নীতি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে একটি জীবন ঘনিষ্ঠ এবং সবার জীবনের সাথেই প্রাসঙ্গিক
এমন একটি বিষয় নিয়ে আমরা শুরু করব�ো, বিষয়টি মজারও বটে- দাঁত পড়ার পর আমরা সেই দাঁত কী
করি?
এই সেশনে করণীয়:
প্রথম পড়া দাঁতটির গল্প লেখা ও ছবি আঁকা
▪ এই সেশনে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করব�ো, “ত�োমাদের প্রথম যখন দাঁত পড়ে সেই দাঁত গুল�ো ত�োমরা
কী করেছিলে?”
▪ তারা সেটা বইয়ে নির্ধারিত স্থানে সংক্ষেপে লিখে পাশে তার ছবি আঁকবে আর পাশের বন্ধুর সাথে
তাদের গল্প শেয়ার করবে।
▪ কেউ যদি মনে না করতে পারে, তবে সে বাসায় গিয়ে বাবা মা বা তার এই ঘটনা বলতে পারে এমন
আত্মীয়র কাছ থেকে জেনে নিয়ে বাড়িতে কাজটি করবে। কেউ যদি বলে সে কিছুই করেনি ফেলে
দিয়েছে, তবে সেটি ই সে লিখবে ও আঁকবে।
অনুসন্ধানের ধাপ গুল�ো আল�োচনা
▪ দাঁত পড়া নিয়ে আল�োচনায় শিক্ষার্থীদের এবারে আগ্রহী করে তুলব এ নিয়ে আরও অনুসন্ধান করার।
সেক্ষেত্রে অনুসন্ধানের ধাপ গুল�ো তাদের কার�ো মনে আছে কিনা তা জিজ্ঞাসা করব�ো। তাদের কাছ
থেকে প্রথমে শুনব�ো।
▪ এরপর সম্ভব হলে ৬ষ্ঠ শ্রেণির “বিজ্ঞানের চ�োখ দিয়ে চারপাশ দেখি” অধ্যায়টির নির্দিষ্ট অংশ
তাদেরকে পড়তে দেব�ো।
▪ এছাড়া নিচের ছকটি যা তাদের ৭ম শ্রেণির বইয়ে আছে তা নিয়ে আল�োচনা করব�ো। সম্ভব হলে
মাল্টিমিডিয়া পাওয়ার পয়েন্টে বা প�োস্টার পেপারে ধাপ গুল�ো দেখাব�ো। প্রতি ধাপে তাদের কাছ
থেকে উদাহরণ জানতে চাইব�ো।
22
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
অনুসন্ধানের জন্য বিষয়বস্তু (Top- যে বিষয়ে অনুসন্ধান করা হবে যেমন- “আমাদের এলাকায়
ic) নির্ধারণ করা পরিবর্তন”
অনুসন্ধানের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন
আগের ধাপে নির্ধারিত বিষয়বস্তুটি যেমন- “আমাদের এলাকায়
(Inquiry Question) সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন আমরা পরিবর্তন” বিষয়ের জন্য অনুসন্ধানী
উত্থাপন করা চিন্তা করে লিখব�ো বা তৈরি করব�ো। প্রশ্ন হতে পারে:
এই প্রশ্নগুল�োর উত্তরই আমরা এই প্রশ্ন-১. আমাদের এলাকায় আগে
অনুসন্ধানী ধাপগুল�োর মাধ্যমে খজে ুঁ রাস্তা-ঘাট কীরকম ছিল?
বের করব�ো। প্রশ্ন-২ আগে আমাদের এলাকার
মানুষ এর কী কী পেশা ছিল?
প্রশ্ন-৩ আগে এলাকায় কী কী উৎসব
পালন হত?
প্রশ্ন থেকে মূল ধারনা (key con- প্রতিটি অনুসন্ধানের প্রশ্নের মধ্যে যেমন, প্রশ্ন-১. আমাদের এলাকায়
ুঁ
cept) খজে বের করা এক বা একাধিক মূল ধারনা রয়েছে। আগে রাস্তা-ঘাট কীরকম ছিল? এই
সেগুল�ো চিহ্নিত করতে পারলে প্রশ্নে এই তিনটি মূল ধারনা রয়েছে:
আমাদের বুঝতে সুবিধা হবে ক�োথায় আমাদের
থেকে আর কীভাবে তথ্য সংগ্রহ করা এলাকা
দরকার।
আমাদের
এলাকায় আগে
রাস্তা ঘাট
কীরকম ছিল
অতীত রাস্তা
কাল ঘাট
তথ্যের উৎস (Data Source) যে প্রশ্নের উত্তর খজছি ুঁ সেটি জানার যেমন, প্রশ্ন-১. আমাদের এলাকায়
নির্বাচন করা জন্য কার কাছে বা ক�োথায় যেতে আগে রাস্তা-ঘাট কীরকম ছিল?
হবে? যেমন- হতে পারে ক�োন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য আমরা
জাদুঘর বা সংগ্রহ শালা, ক�োন�ো বই এলাকার বয়�োজ্যষ্ঠ্য মানুষের কাছে
বা ম্যাগাজিন, ক�োন�ো মানুষ যে এই যেতে পারি, আগের ক�োন�ো মানচিত্র
বিষয়টি সম্পর্কে জানেন, ক�োন�ো দেখতে পারি, বা এ বিষয়ে ক�োন
প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, ইন্টারনেট, ভিডিও লেখা পড়তে পারি।
ইত্যাদি।
তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি (Data তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি হল যে উপায়ে প্রশ্ন-১. আমাদের এলাকায় আগে
collection method) আমরা তথ্য উৎস থেকে তথ্য রাস্তা-ঘাট কীরকম ছিল? এর
নির্ধারণ সংগ্রহ করব�ো। যেমন- প্রশ্নমালা, জন্য আমরা এলাকার বয়�োজ্যষ্ঠ্য
সাক্ষাৎকার, পর ্যবেক্ষণ, দলীয় মানুষদের একসাথে করে দলীয়
আল�োচনা ইত্যাদি। আল�োচনা করতে পারি। তাদের
আল�োচনা থেকে আমরা আমাদের
প্রশ্নের উত্তর জেনে নিতে পারি।
23
তথ্য সংগ্রহ করা (Data Col- এই ধাপে নির্বাচিত পদ্ধতিতে যেমন- প্রশ্ন-১. আমাদের এলাকায়
lection) নির্বাচিত মানুষের কাছ থেকে বা আগে রাস্তা-ঘাট কীরকম ছিল?
স্থান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এটি জানার জন্য আমরা ৪/৫ জন
বয়সে বড় এমন মানুষ, অর্থাৎ
বয়�োজ্যষ্ঠ্য মানুষ নির্বাচন করে
তাদের কাছে গিয়ে তাদের অনুমতি
নিয়ে তাদের সাথে দলীয় আল�োচনা
করতে পারি। তাদের প্রদত্ত উত্তর
গুল�ো লিখে রাখব অথবা রেকর ্ড ও
করতে পারি।
তথ্য বিশ্লেষণ করা (Data আমরা যে তথ্য সংগ্রহ করি সেগুল�ো সংগ্রহ করা তথ্য ব্যবহার করে
Analysis) থেকে সরাসরি প্রশ্নের উত্তর পাওয়া আমরা আগের সময়ের রাস্তা ঘাট
যায় না। সেগুল�ো পড়তে হয়, চিহ্নিত করে একটি মানচিত্র তৈরি
সাজাতে হয়, অথবা কিছু হিসাব করতে পারি।
নিকাশ করতে হয়। এর ফলে তথ্য আবার ৩ জনের তথ্য কে একত্রিত
হয়ে ওঠে অর্থপূর্ণ। এই প্রক্রিয়াকে করে এলাকার প্রধান প্রধান সড়কপথ
বলে তথ্য বিশ্লেষণ। গুল�ো সম্পর্কে বর্ণনা লিখতে পারবে।
ফলাফল বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ (Re- তথ্য বিশ্লেষণের পর আমরা যেমন- উপরের উদাহরণের ক্ষেত্রে
sults/Findings) আমাদের অনুসন্ধানী প্রশ্নের উত্তর আমাদের ফলাফল হতে পারেঃ আগে
ুঁ পাই। এটিই আমাদের ফলাফল। আমাদের এলাকায় উত্তর পশ্চিম
খজে
অর্থাৎ আমরা একটি সিদ্ধান্তে পাশে ক�োন�ো সড়ক ছিল না। এখন
প�ৌঁছলাম। সেখানে অনেক বড় একটা সড়ক
তৈরি হয়েছে। এর ফলে এখন উত্তর
আর দক্ষিণের মধ্যে যাতায়াত সহজ
হয়েছে। তবে আগে অনেক ছ�োট
ছ�োট মেঠ�ো পথ ছিল। এখন সেগুল�ো
নেই। মানুষ এখন পায়ে হেটে চলাচল
কম করে।
ফলাফলটি অন্যদের কাছে উপস্থাপন নানা উপায়ে আমরা আমদের যেমন- উপরের উদাহরণের ক্ষেত্রেঃ
বা শেয়ার করা (Communi- অনুসন্ধানী প্রক্রিয়ায় পাওয়া ফলাফল ছবিঃ দুটি একই এলাকার ম্যাপ এর
cating the result) অন্যদের সামনে তুলে ধরতে পারি। ছবি থাকবে পাশাপাশি, যেখানে
যেমন- গ্রাফ, সারণী, ছবি, ভিডিও, আগের ও পরের সড়ক গুল�ো দেখান�ো
লিখিত প্রতিবেদন, নাটক ইত্যাদি। থাকবে। আগে উত্তর পশ্চিমে ক�োন
বড় সড়ক ছিল না, এখন আছে;
আগে অনেক মেঠ�ো পথ ছিল, এখন
নেই ইত্যাদি। ছ�োট হবে এই ছবি।
24
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সেশন ২ ও ৩: দাঁত পড়া নিয়ে মজার মজার রীতি-নীতি অনুসন্ধান ও উপস্থাপনা (শিক্ষক ও সতীর্থ
মূল্যায়ন)
এই সেশনে করণীয়:
▪ এবারে তারা প্রথমবারের মতন এই শ্রেণিতে অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক ধাপ গুল�ো অনুসরণ করে দাঁত
পড়া নিয়ে মজার মজার রীতি-নীতির খ�োজ করবে। যেহেতু এটি অনুসন্ধান মূলক কাজ গুল�োর মধ্যে
প্রথম, তাই এটিতে শিক্ষার্থীদের বেশি সাহায্যের প্রয়�োজন হতে পারে।
▪ প্রথমে পুর�ো ক্লাস কে ৫/৬ জনের এক একটি দলে ভাগ করে দেব�ো। এই অনুসন্ধানে সবাই একই
অনুসন্ধানী প্রশ্ন নিয়ে কাজ করবে- দাঁত পড়া নিয়ে আমাদের পরিবার বা এলাকা বা সমাজে কী ধরণের
রীতি-নীতি আর গল্প প্রচলিত আছে? এক্ষেত্রে সেই রীতি টি ক�োন অঞ্চলের তা উল্লেখ করতে বলব�ো
শিক্ষার্থীদের। প্রথম ক্লাসে তারা দলে বসে পরিকল্পনা করবে ও তা উপস্থাপন করবে। সবাই সবাইকে
ফিডব্যাক দিবে, আমরা শিক্ষকেরাও দিব�ো। অনুসন্ধানের পরিকল্পনার আগেই তাদেরকে বই এর
মূল্যায়ন ছক বা রুব্রিক্স টি দেখাব আমরা। তারা বুঝবে প্রতি ধাপে তাদের কাছ থেকে আমাদের কী
প্রত্যাশা।
▪ এই সেশনে আমরা পরের সেশনের “হাইপথেসিস” ব�োঝান�োর জন্য তাদেরকে তাদের অনুসন্ধানের
ফলাফল সম্পর্কে পূর্বানুমান করতে বলব। যেমন- কত ধরনের রীতি-নীতি থাকতে পারে? এলাকা
অনুযায়ী কি একেক ধরনের রীতি-নীতি প্রচলিত?- এরকম। তারা অনুমান করবে প্রত্যেকে আলাদা
ভাবে ও তা লিখে রাখবে।
25
▪ সেদিন ছুটির পর এবং তার পরদিন তারা তাদের অনুসন্ধানী কাজ গুল�ো করবে- বই পড়া, সাক্ষাৎকার
নেয়া, তথ্য বিশেষণ, এবং উপস্থাপনা তৈরি। তাদের পরিকল্পনা দেখে ও তাদের সাথে আল�োচনা করে
উপস্থাপনার দিন ঠিক করব�ো আমরা। আর এর মাঝে আমদের পরবর্তী ক্লাসগুল�ো আমরা চালিয়ে
যাব�ো।
প্রতিটি অনুসন্ধান মূলক কাজ আমরা এভাবেই করব�ো, প্রয়�োজন মত তাদের সময় দেব�ো এক
বা দুই দিন। মাঝে ছুটির দিন হলে ভাল হয়। তাদের কাজ তারা ক্লাস এর শেষে করতে থাকবে।
আমরা এই সময়ে অন্য সেশন গুল�ো নিতে থাকব�ো।
আমরা চেষ্টা করব�ো যেন শিক্ষার্থীরা সব ধাপ গুল�োরই পরিকল্পনা করে আগে থেকেই। তবে
প্রথম দিকে এবং কিছু ক্ষেত্রে তথ্য হাতে না আসার আগেই সেটি বিশ্লেষণ ও উপস্থাপনার ক�ৌশল
সম্পর্কে পরিকল্পনা তায়ের জন্য কঠিন হতে পারে। সেক্ষেত্রে এ দুটি ধাপের পরিকল্পনা তারা তথ্য
হাতে এলে করতে পারে।
▪ আমাদের তথ্য সংগ্রহে তাদের বই এ দেয়া ছকটি তারা ব্যবহার করতে পারে-
26
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ উপস্থাপনার দিন প্রত্যেক দল উপস্থাপন করবে একে একে।
উপস্থাপনায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের উপযুক্ত মাধ্যম ও ক�ৌশল ব্যবহার করার জন্য অনুপ্রাণিত
করব�ো। ক�োন শিক্ষার্থী বা দলের উপস্থাপনায় নতুনত্ব, সৃজনশীলতা থাকলে তা উৎসাহ দেব
আমরা। মানচিত্র, গান, ছবি, ভিডিও, নাটক, টিভি শ�ো, গেইম ইত্যাদি। ক্লাসে যদি বিশেষ চাহিদা
সম্পন্ন শিক্ষার্থী থাকে তবে উপস্থাপনার ক�ৌশল ঠিক করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মাথায় রাখতে
হবে যেন ক্লাসের সবাই তাদের উপস্থাপনা বুঝতে পারে এবং অংশগ্রহণ করতে পারে। যেমন
যদি কারও ছ�োট লেখা পড়তে অসুবিধা হয়, তবে প�োস্টার এর লেখা বড় বড় করে লেখা, অথবা
সবাইকে হাতে হাতে পড়ার জন্য ছ�োট লিফলেট দেয়া ইত্যাদি। শিক্ষার্থীদের এ ধরনের উদ্যোগ
প্রশংসা করব�ো আমরা। এতে করে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবে। তবে আমাদের উদ্যোগ গুল�ো যেন
এমন না হয় যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বিচ্ছিন্ন অনুভব করে। তাদের জন্য ক�োন
আয়�োজন করলে সেটা সবার জন্যই করলে ভাল হয়। যেমন- লিফলেট দিলে সেটা শুধু শ্রবণ
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বা বড়দের লেখা দেখতে অসুবিধা হয় এমন শিক্ষার্থীদের না দিয়ে ক্লাসের
সবাইকেই দেব�ো আমরা। এতে করে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষারথিরা ক্লাসে স্বচ্ছন্দ ব�োধ
করবে। তবে তাদের প্রতি অবশ্যই আমাদের অতিরিক্ত মন�োয�োগ ও চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
তাদের প্রতি আমাদের সামান্য আগ্রহ, ও চেষ্টা তাদের কে অনেক উতসাহত ও অনুপ্রানিত করতে
পারে। তাদের অংশগ্রহণ আমাদের এক বিশাল অর্জন।
▪ উপস্থাপনার শেষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে চাইব�ো, এলাকা ভিত্তিক ক�োন ধারা বা প্যাটার্ন
কি তারা দেখতে পাচ্ছে কিনা দাঁত পড়ার রীতি-নীতি নিয়ে? অনেক দূরবর্তী স্থানেও কেন একই গল্প
প্রচলিত? এক্ষেত্রে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অভিবাসন আর মিডিয়ার ব্যবহার তুলে ধরতে পারি আমরা।
27
আদর্শ বা প্রত্যাশা
তথ্য
তথ্য সংগ্রহের আগে তথ্য সংগ্রহের পরে
সংগ্রহ
সংগ্র
অনুসন্ধানের প্রশ্নের মূল তথ্য উৎস তথ্য তথ্য তথ্য ফলাফল বন্ধুর প্রতি
প্রশ্ন বিষয়বস্তু (সঠিক সংগ্রহের সংগ্রহ বিশ্লেষণ উপস্থাপন আমার
(প্রশ্নটি বা প্রশ্ন (প্রশ্নে যে ুঁ
উত্তর খজে পদ্ধতি (পরিকল্পনা (সঠিক (স্পষ্ট মন্তব্য/
গুল�ো সুনির্দিষ্ট, মূল বিষয় বের করার (তথ্য উৎস অনুযায়ী উপায়ে ভাবে ও ফিডব্যাক
দল আকর্ষণীয় ও আছে জন্য এটি/ থেকে তথ্য তথ্য উৎস তথ্য আকর্ষণীয়
অনুসন্ধানের সেগুল�ো এগুল�ো সংগ্রহের থেকে তথ্য সাজিয়ে/ উপায়ে
মধ্য দিয়ে চিহ্নিত উপযুক্ত জন্য এটি সংগ্রহ হিসাব অনুসন্ধানী
সমাধান য�োগ্য) করতে তথ্য উৎস) উপযুক্ত করতে নিকাশ প্রক্রিয়া
পেরেছে) পদ্ধতি) ও রেকর ্ড করে আর
করতে অনুসন্ধানী ফলাফল
পেরেছে) প্রশ্নের উপস্থাপন
উত্তর/ করেছে)
সমাধানে
প�ৌঁছাতে
পেরেছে)
দল-১
দল-২
দল-৩
দল-৪
দল-৫
▪ মূল কাজের ফিডব্যাক ছাড়াও শিক্ষার্থীরা দলীয় কাজে তাদের নিজ দলের বন্ধুদের অংশগ্রহণের ধরন
মূল্যায়ন করবে নিচের ছকটি ব্যবহার করে। এই ছকটি ও তাদের বুঝিয়ে দেব�ো আমরা। বই এ নিচের
ছক আর নির্দেশনাটি দেয়া আছে।
28
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
নিজ দলের সদস্যদের মূল্যায়ন
পুর�োপুরি করেছে, কিছুটা করেছে, আরও অনেক ঊন্নতি করতে হবে- এই কথা গুল�ো ব্যবহার করে ফিডব্যাক
দিতে পারি আমরা।
আনাই
সুমন
অর�োরিন
ওমেরা
▪ আমরাও মূল্যায়ন করব�ো ও ফিডব্যাক দেব�ো শিক্ষার্থীদের দলীয় অনুসন্ধানের কাজের, নিচের ছকটি
ব্যবহার করে। যেহেতু এটি প্রথম অনুসন্ধানী কাজ তাই তাদের কার ্যকর ক�ৌশলগুল�োর প্রশংসা করা
এবং ভুল ত্রুটি সংশ�োধন খুবই জরুরি। তারা ভালভাবে ধাপ গুল�ো বুঝতে পারলে ধীরে ধীরে তারা
স্বাবলম্বী অনুসন্ধানকারী হিসেবে গড়ে উঠবে। এখানে লক্ষ্যনীয় যে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে আমাদের
মূল্যায়ন ছক এর সরল একটি ধরন ব্যবহার করা হয়েছে।
29
আদর্শ বা প্রত্যাশা
তথ্য
তথ্য সংগ্রহের আগে তথ্য সংগ্রহের পরে
সংগ্রহ
সংগ্র
অনুসন্ধানের প্রশ্নের মূল তথ্য উৎস তথ্য তথ্য তথ্য ফলাফল দলের প্রতি
প্রশ্ন বিষয়বস্তু (সঠিক সংগ্রহের সংগ্রহ বিশ্লেষণ উপস্থাপন আমার
(প্রশ্নটি বা প্রশ্ন (প্রশ্নে যে ুঁ
উত্তর খজে পদ্ধতি (পরিকল্পনা (সঠিক (স্পষ্ট মন্তব্য/
গুল�ো সুনির্দিষ্ট, মূল বিষয় বের করার (তথ্য উৎস অনুযায়ী উপায়ে ভাবে ও ফিডব্যাক
দল আকর্ষণীয় ও আছে জন্য এটি/ থেকে তথ্য তথ্য উৎস তথ্য আকর্ষণীয়
অনুসন্ধানের সেগুল�ো এগুল�ো সংগ্রহের থেকে তথ্য সাজিয়ে/ উপায়ে
মধ্য দিয়ে চিহ্নিত উপযুক্ত জন্য এটি সংগ্রহ হিসাব অনুসন্ধানী
সমাধান য�োগ্য)
য�োগ্য) করতে তথ্য উৎস) উপযুক্ত করতে নিকাশ প্রক্রিয়া
পেরেছে) পদ্ধতি) ও রেকর ্ড করে আর
করতে অনুসন্ধানী ফলাফল
পেরেছে) প্রশ্নের উপস্থাপন
উত্তর/ করেছে)
সমাধানে
প�ৌঁছাতে
পেরেছে)
দল-১
দল-২
দল-৩
দল-৪
দল-৫
30
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
আদর্শ বা প্রত্যাশা
তথ্য
তথ্য সংগ্রহের আগে তথ্য সংগ্রহের পরে
সংগ্রহ
সংগ্র
অনুসন্ধানের প্রশ্নের মূল তথ্য উৎস তথ্য তথ্য তথ্য ফলাফল দলের জন্য
প্রশ্ন বিষয়বস্তু (সঠিক সংগ্রহের সংগ্রহ বিশ্লেষণ উপস্থাপন আমার
(প্রশ্নটি বা প্রশ্ন (প্রশ্নে যে ুঁ
উত্তর খজে পদ্ধতি (পরিকল্পনা (সঠিক (স্পষ্ট ভাবে মন্তব্য/
গুল�ো সুনির্দিষ্ট, মূল বিষয় বের করার (তথ্য উৎস অনুযায়ী উপায়ে ও আকর্ষণীয় ফিডব্যাক
আকর্ষণীয় ও আছে জন্য এটি/ থেকে তথ্য তথ্য উৎস তথ্য উপায়ে
দল অনুসন্ধানের সেগুল�ো এগুল�ো সংগ্রহের থেকে তথ্য সাজিয়ে/ অনুসন্ধানী
মধ্য দিয়ে চিহ্নিত উপযুক্ত জন্য এটি সংগ্রহ হিসাব প্রক্রিয়া আর
সমাধান য�োগ্য)
য�োগ্য) করতে তথ্য উৎস) উপযুক্ত করতে নিকাশ ফলাফল
পেরেছে) পদ্ধতি) ও রেকর ্ড করে উপস্থাপন
করতে অনুসন্ধানী করেছে)
পেরেছে) প্রশ্নের
উত্তর/
সমাধানে
প�ৌঁছাতে
পেরেছে)
অগ্রসর আদর্শ প্রশ্নের প্রশ্নের প্রশ্নের তথ্য উৎস পরিকল্পনা সঠিক অনুসন্ধানী
৩টি বৈশিষ্ট্যই সব গুল�ো উত্তরের থেকে অনুযায়ী উপায়ে কাজটি
বিদ্যমান মূল বিষয় জন্য তথ্য তথ্য তথ্য এমনভাবে
চিহ্নিত সবচেয়ে সংগ্রহের সংগ্রহ সাজিয়ে/ উপস্থাপন
করতে উপযুক্ত জন্য করেছে হিসাব করেছে যা
পেরেছে তথ্য উৎস সবচেয়ে এবং নিকাশ সবার জন্য
নির্বাচন উপযুক্ত সঠিক করে ব�োধগম্য
করতে পদ্ধতি উপায়ে অনুসন্ধানী এবং
পেরেছে নির্বাচক রেকর ্ড প্রশ্নের উপস্থাপনার
করতে করেছে। উত্তর/ ক�ৌশলও
পেরেছে। সমাধানে আকর্ষণীয়
প�ৌঁছাতে
পেরেছে।
31
বিকাশমান আদর্শ প্রশ্নের প্রশ্নের সব প্রশ্নের তথ্য উৎস পরিকল্পনা তথ্য অনুসন্ধানী
১ টি বা ২ না হলেও উত্তরের থেকে অনুযায়ী সাজিয়ে/ কাজটি
টি বৈশিষ্ট্য অন্তত জন্য তথ্য তথ্য তথ্য হিসাব এমনভাবে
বিদ্যমান একটি উৎস সংগ্রহের সংগ্রহ নিকাশ উপস্থাপন
মূল বিষয় নির্বাচন জন্য করেছে করেছে। করেছে যা
চিহ্নিত করতে পদ্ধতি কিন্তু কিন্তু তা সবার জন্য
করতে পেরেছে নির্বাচন সঠিক দিয়ে ব�োধগম্য
পেরেছে কিন্তু তা করতে উপায়ে অনুসন্ধানী হলেও
উপযুক্ত পেরেছে রেকর ্ড প্রশ্নের উপস্থাপনার
হয় নি। কিন্তু তা করতে উত্তর/ ক�ৌশল
সঞ্চেয়ে আরও সমাধানে আকর্ষণীয়
উপযুক্ত সাহায্যের প�ৌঁছাতে নয়।
নয়। প্রয়�োজন। আরও
সাহায্যের
প্রয়�োজন।
প্রারম্ভিক আদর্শ প্রশ্নের তথ্য পরিকল্পনা তথ্য উপস্থাপনার
প্রশ্নের ক�োন উত্তরের সংগ্রহের অনুযায়ী সাজিয়ে/ ক�ৌশল
বৈশিষ্ট্যই জন্য জন্য তথ্য হিসাব আকর্ষণীয়
বিদ্যমান নেই প্রাসঙ্গিক প্রাসঙ্গিক সংগ্রহ নিকাশ হলেও
ক�োন�ো কনও এবং করতে উপস্থাপনাটি
তথ্য উৎস পদ্ধতি সঠিক এখন�ো ব�োধগম্য
নির্বাচন নির্বাচন উপায়ে আরও নয়/
করতে করতে রেকর ্ড- সাহায্যের
পারেনি পারেনি। দুতর জন্য প্রয়�োজন।
ই আর তাই
সাহায্যের অনুসন্ধানী
প্রয়�োজন। প্রশ্নের
উত্তর/
সমাধানে
প�ৌঁছাতে
পারেনি।
মূল্যায়ন:
পারদর্শিতার নির্দেশক ২ এর জন্য মূল্যায়ন:
মূল্যায়ন ছক/রুব্রিক্স ব্যবহার করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন করব�ো আমরা এবং শিক্ষার্থীরা তাদের নিজের
দলের সদস্যদের। এই তথ্য ব্যবহার করে পারদর্শিতার নির্দেশক ২ এর স্তর নির্ধারণ করব�ো প্রতিটি শিক্ষার্থীর
জন্য। এজন্য ৬ মাস পরের সামষ্টিক মূল্যায়নে সব শেষের অনুসন্ধানী কাজটির এবং ১২ মাস পরের সামষ্টিক
মূল্যায়নের জন্য সব শেষের অনুসন্ধানী কাজটির মূল্যায়ন করব�ো।
এর সাথে প্রতিফলন মূলক কার ্যক্রমের মূল্যায়নও য�োগ হবে। এজন্য ৬ মাস পরের সামষ্টিক মূল্যায়নে
শিক্ষার্থীদের প্রতিলন ডায়েরির মূল্যায়ন য�োগ হবে। আর ১২ মাস পরের সামষ্টিক মূল্যায়নে য�োগ হবে প্রতিফলন
ডায়েরির মূল্যায়ন এবং বছর শেষের আল�োচনা সভা (পরে বর্ণনা আছে)।
32
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
শিক্ষার্থীরা অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক ধাপগুল�োর চর্চা শুরু করেছে। শিক্ষার্থীরা কখন�ো কখন�ো অনুসন্ধানের
আগেই অনুসন্ধানী প্রশ্নের উত্তর এর সম্পর্কে একটা ধারনা করতে পারে বা অনুমান নির্ভর উত্তর দিতে
পারে, বা তাদের মনে অসচেতন ভাবেও এগুল�ো আসতে পারে। এ পর ্যায়ে শিক্ষার্থীদেরকে আমরা ব্যক্তিগত
ধারনা বা অনুমান নির্ভর সিদ্ধান্ত যে অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক ধাপ অনুসরণ করে যাচাই করে য�ৌক্তিক
সিদ্ধান্তে প�ৌঁছান�ো যায় তা ব�োঝার জন্য কিছু কাজ করতে সাহায্য করব�ো।
এই সেশনে করণীয়:
ব্যক্তিগত ধারনা আর য�ৌক্তিক সিদ্ধান্তের মধ্যে তুলনা
▪ এবারে আমরা শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করব�ো তারা যে অনুমান করেছিল তা কিসের ভিত্তিতে?
তাদের অনুমান কি সঠিক নাকি ভুল ছিল? অনুমানটি তারা কিভাবে যাচাই করল�ো?
▪ এসব প্রশ্ন থেকে তাদেরকে হাইপ�োথিসিস এর ধারনা তুলে ধরব
33
পূর্বানুমান বা অনুমিত সিদ্ধান্ত (Hypothesis):
অনেক সময় আমরা আমাদের অনুসন্ধানী কাজের জন্য তথ্য সঙ্গহের আগেই আমাদের এই অনুসন্ধানের
ফলাফল সম্পর্কে একটা অনুমান করি। একে বলে পূর্বানুমান বা অনুমিত সিদ্ধান্ত (Hypothesis)।
সাধারণত আমাদের ব্যক্তিগত ধারনা বা সাধারণ বুদ্ধি (Common sense) থেকে আমরা এরকমটি
মনে করে থাকি। আমাদের এই অনুমান ভুল বা সঠিক হতে পারে। আমরা অনুসন্ধনের জন্য যে তথ্য সংগ্রহ
করি তার বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারি আমাদের এই পূর্বানুমান সঠিক নাকি ভুল ছিল। তখন আমরা
প্রয়�োজনে আমাদের ধারনাটি শুধরে নেই। এভাবেই আমরা য�ৌক্তিক সিদ্ধান্তে প�ৌছাতে পারি। তাহলে কেউ
আমার ধারনা নিয়ে প্রশ্ন তুললে সেটি যে ব্যক্তিগত ধারনা নয় বরং বৈজ্ঞানিক ধাপ অনুসরণ করে য�ৌক্তিক
সিদ্ধান্তে আসা হয়েছে তা আমরা বুঝিয়ে বলতে পারব।
▪ এরপর তারা ব্যক্তিগত ধারণা আর য�ৌক্তিক সিদ্ধান্তের মধ্যে তুলনা করবে নিচের ছক ব্যবহার করে
(শিক্ষার্থীদের বই এ দেয়া আছে)
বিষয়বস্তু আগের ধারনা বা অনুমান অনুসন্ধানী কাজের বর্ননা পরের ধারনা বা য�ৌক্তিক সিদ্ধান্ত
আমাদের ক্লাসের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা ক্লাসের সবার কাছ থেকে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা একক
শিক্ষার্থীদের (৫০% এর বেশি) একক তাদের পরিবারের সদস্য পরিবারে বাস করছে (৭৫%) ।
পরিবারের ধরন পরিবারে বাস করছে। সম্পর্কে তথ্য নিলাম। এক্ষেত্রে অনুমিত সিধান্তটি সঠিক
ছিল।
তথ্যের ভিত্তিতে নিজের নিজের ব্যক্তিগত অনুমান নিজের ব্যক্তিগত অনুমান নিজের ব্যক্তিগত
অনুমান যাচাই করে চিহ্নিত করতে পারলেও প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ ও অনুমান প্রাসঙ্গিক তথ্য
যুক্তি সঙ্গত সিধান্তে প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে পারলেও সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে
প�ৌছাতে পারা বিশ্লেষণ করতে পারছে যুক্তি সঙ্গত সিদ্ধান্তে তা যাচাই করতে পারছে
না। তার ফলে সিদ্ধান্তেও প�ৌছাতে পারছে না। এবং তা থেকে একটি
প�ৌছাতে পারছেনা। যুক্তি সঙ্গত সিদ্ধান্তে
প�ৌছাতে পারছে।
35
অনুসন্ধানের ধাপ গুল�োর প্রতিফলন
অনুসন্ধানের ধাপ গুল�োর প্রতিফলন এর কার ্যাবলী: সেশন ৫ (অর্ধেক)
শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে এই অধ্যায় ও অন্য অধ্যায়ে বিভিন্ন অনুসন্ধান মূলক কাজ করবে বৈজ্ঞানিক এই ধাপ গুল�ো
অনুসরণ করে। এই ধাপগুল�োতে তাদের নিজ কাজের বিচার বিশ্লেষণ বা প্রতিফলন করা খুবই জরুরি। আর এই
প্রতিফলনের চর্চা থাকবে চলমান, বছর জুড়ে।
এরপর তাদেরকে একটি প্রতিফলন মূলক ডায়েরি বা জার্নাল বানাতে বলব�ো। জার্নালে কী কী উল্লেখ করতে
পারে তার নমুনা দিতে পারি-
- ধাপটির বর্ণনা
- ধাপটিতে কি কি চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন হয়েছি
- কিভাবে তা সমাধান করলাম
- কি শিখলাম
- এরপর এই কাজটি আবার করলে হলে কি কি বিষয় অন্যভাবে করব�ো?
- এই ধাপটি সম্পন্ন করায় আমার অনুভূতি …
- ইত্যাদি
বিভিন্ন দেশে দাঁত পড়া নিয়ে প্রচলিত রীতি নীতি অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ৫ (৫.৫-৬)
এবারে শিক্ষার্থীরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশুরা দাঁত পরলে সেই দাঁত কি করে তা অনুসন্ধান করবে বৈজ্ঞানিক
ধাপ অনুসরণ করে। এতে স্থান ভেদে যে এই রীতি নীতি ও এ সংক্রান্ত প্রবাদ ভিন্ন রূপ লাভ করে তা বুঝতে
পারবে। অনুসন্ধানের ধাপের চর্চাও হবে।
সেশন ৫.৫-৬: অন্য দেশে শিশুদের দাঁত পড়ার রীতি নীতি অনুসন্ধান
37
এই সেশনে করণীয়:
▪ প্রথমে তাদেরকে মধ্য আমেরিকার কিছু দেশে শিশুদের দাঁত পরলে দাঁত নিয়ে তারা কী করে সেই
মজার রীতি-নীতি বলব। তাদের বই এ দেয়া আছে এ সংক্রান্ত মিশরের রীতি নীতি । নিচের লিঙ্ক
টিতে এ সংক্রান্ত অনেক মজা মজার রীতি নীতি আছে। আমরা যেক�োন�ো একটি বলব। বলে উৎসাহিত
করব�ো অন্যান্য দেশের শিশুদের দাঁত পরলে দাঁত নিয়ে তারা কী করে তা অনুসন্ধান করার।
মধ্য আমেরিকার কিছু দেশে বাবা মায়েরা শিশুদের পড়া দাঁতটি মালা বানিয়ে শিশুর গলায় পরিয়ে দেয়। ধারনা
করা হয় এটা আদিকালের জলদস্যুদের কাছ থেকে পাওয়া রীতি। জলদস্যুরা মনে করত�ো যে শিশুদের জিনিশ
শক্তি আর স�ৌভাগ্যের প্রতীক। [এই ফাকে আমরা তাদের কাছ থেকে মধ্য আমেরিকার কিছু দেশ সম্পর্কে
জানতে চাইতে পারি, জানাতেও পারি।]
তথ্য উৎস
How Different Cultures Celebrate Baby Tooth Loss - Dr. Kucera
(caringtreechildrensdentistry.com)
মিশর (Egypt) এর কথা মনে আছে? বলত�ো মিশর কিসের জন্য বিখ্যাত? মিশরের
ুঁ দেয় সূর্যের দিকে আর সূর ্য মামাকে বলে
শিশুরা তাদের প্রথম পড়ে যাওয়া দাঁতগুল�ো ছড়ে
উজ্জ্বল সাদা নতুন দাঁত দিতে তাদের।
তথ্য উৎস:
তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি:
তথ্য সংগ্রহ: এজন্য আমরা নিছে দেওয়া ছকটি ব্যবহার করতে পারি
38
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
তথ্য বিশ্লেষণ:
ফলাফল/ সিদ্ধান্ত উপস্থাপন:
তথ্য সংগ্রহের জন্য তারা এই ছকটি ব্যবহার করতে পারে (শিক্ষার্থীদের বই এ দেয়া আছে)
মহাদেশ/ দেশ/
দাঁত পড়লে রীতিনীতি রীতিনীতি সংক্রান্ত ধারণা
এলাকার নাম
১/ মিশর ও শিশুরা সজ�োরে দাঁত সূর্যের দিকে ছড়ে
ুঁ সূর্যের মত উজ্জ্বল সাদা দাঁত উঠবে
অন্যান্য কিছু দেয়
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ
২/ অস্ট্রেলিয়া
৩/ ভারত
৪/ তাজিকিস্তান
▪ সেশন-৬ এ শিক্ষার্থীরা নানা উপায়ে তাদের এই তথ্য উপস্থাপন করবে। ম্যাপ, গান, ছবি, ভিডিও,
নাটক ইত্যাদি নানা বৈচিত্রময় ও সৃজনশীল উপায়ে উপস্থাপনায় উৎসাহ দেব�ো ও সাহায্য করব।
নতুন যে প্রশ্ন মাথায় এল�ো: শিক্ষার্থীদের একটি অনুসন্ধান করতে গিয়ে এ সংক্রান্ত আনা
নতুন প্রশ্ন মাথায় আসতে পারে। যেমন- কিছু কিছু এলাকায় আবার এই রীতি-নীতি
গল্পগুল�ো একই কেন�ো? তাদের বলব�ো প্রশ্ন গুল�ো প্রতিফলন ডায়েরি তে লিখে রাখতে।
কিভাবে এগুল�ো অনুসন্ধান করা যায় তাতে তাদের সাহায্য করব�ো, যেন নিজেরাই সেগুল�ো
করতে পারে।
39
সামাজিক রীতি নীতির ধারনা লাভ
সামাজিক রীতি নীতির ধারনা গঠনের জন্য কার ্যাবলী: সেশন ৭ ও ৮
শিক্ষার্থীরা নিজ পরিবার, এলাকায়, ও অন্য দেশে দাঁত পরলে শিশুরা কী কী করে এগুল�ো অনুসন্ধান করল�ো।
এগুল�োই যে সামাজিক রীতি নীতি তা আমরা আগেই বলে দেব�ো না। অনুসন্ধান গুল�ো শেষ হলে এটি নিয়ে
আল�োচনা করব�ো, তাদের কাছ থেকে শুনব�ো। আর তারা বলতে না পারলে তখন আমরা বলে দেব�ো আর বই
থেকেও দেখাব�ো, পড়তে বলব�ো। এতে তাদের সামাজিক রীতির ধারনা সুদৃঢ় হবে। সাথে তারা নিজ সমাজ
ও অন্য দেশর বিভিন্ন রীতি-নীতি অনুসন্ধান করবে এবারে।
সেশন ৭: চিন্তা করি, বন্ধুর সাথে জ�োড়া গঠন করি, ভাবনার আদান-প্রদান করি (Think-Pair-Share)
এই সেশনে করণীয়:
▪ এই সেশনের অর্ধেক সময়ে আমরা শিক্ষার্থীদের এতদিন যে অনুসন্ধান করল�ো তারা, তা সংক্রান্ত
কিছু প্রশ্ন উপস্থাপন করতে বলব�ো যা তারা জানতে ইচ্ছুক, আমরা নিজেরাও তাতে সংয�োজন
করব�ো। যেমন-
▪ বিভিন্ন এলাকায় দাঁত পড়ার পর প্রচলিত যেই কাজগুল�ো, এগুল�োকে কী বলে? এগুল�োর ক�োন�ো
নাম আছে?
▪ দাঁত পড়া ছাড়া অন্য বিষয়ে কি এরকম প্রচলিত নিয়মকানুন আছে? থাকলে কী কী বিষয়ে আছে?
▪ এইসব নিয়মকানুন কেন ও কিভাবে একটি এলাকায় তৈরি হয়?
▪ এইসব নিয়মকানুনগুল�ো কি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়?
▪ শিক্ষার্থীরা প্রথমে নিজে চিন্তা করবে। এরপর তারা পাশের বন্ধুর সাথে জ�োড়া গঠন করবে আর
তাদের ভাবনা চিন্তা গুল�ো শেয়ার করবে। এই কাজটিকে বলে think-pair-share।
▪ তাদের ধারনা গঠন হবে
40
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
দীর্ঘদিন ধরে ক�োন�ো এলাকার মানুষেরা বা ক�োন�ো সমাজের মানুষেরা যে বিভিন্ন নিয়মকানুন,
আচার-আচরণ মেনে চলে তাকে আমরা বলি প্রচলিত রীতি-নীতি। এগুল�োর পিছনে প্রায়ই সেই
এলাকার ও সেই সময়ের মানুষের বিভিন্ন বিশ্বাস এবং প্রাকৃতিক ও সামাজিক অবস্থা জড়িত থাকে। যেমন-
গ্রীস এর শিশুরা দাঁত দেয় ইঁদুর বা শুকর কে, আবার শ্রীলঙ্কার শিশুরা এটি দেয় কাঠবিড়ালি কে। আমার
ভারতের ক�োথাও ক�োথাও বিশ্বাস করা হত যে শালিক পাখি নতুন দাঁত নিয়ে আসবে। কেন? চিন্তা করে দেখত।
▪ এই সেশনের বাকি সময়ে আমরা বিভিন্ন প্রচলিত রীতি-নীতি অনুসন্ধানের জন্য আগের মতই
পরিকল্পনা করতে বলব�ো। তাদেরকে বলব�ো- দাঁত পড়া নিয়ে আমরা বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন প্রচলিত
রীতিনীতি অনুসন্ধান করেছি। এছাড়াও অন্যান্য বিষয়েও বিভিন্ন সমাজে নানা ধরণের রীতিনীতি
প্রচলিত আছে। আমরা সেগুল�োও অনসন্ধান করতে পারি। দেখতে পারি -ক�োন�ো একটি সময়কালে,
নির্দিষ্ট সমাজে, এগুল�ো কেন তৈরি হয়েছে? অনুসন্ধানের ধাপ অনুসরণ করে আমরা প্রশ্ন তৈরি করি
ও উত্তর খজি।ুঁ বয়সে যারা বড় তারা হয়ত�ো এগুল�ো অনুসন্ধানে তথ্য দিয়ে আমাদের সাহায্য করতে
পারেন (অতীতের রীতি নীতি নিয়ে)।
বিষয়বস্তু: বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচলিত রীতি-নীতি
কিছু অনুসন্ধানের প্রশ্ন (উদাহরণ):
▪ শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক প্রবেশ করলে আমরা কেন দাঁড়াই?
▪ কবে থেকে এই প্রচলন এসেছে?
▪ কেন এই রীতির প্রচলন হল?
▪ আর ক�োন ক�োন দেশে এধরনের প্রচলন আছে? ক�োন ক�োন দেশে নেই?
41
সেশন ৮: বিভিন্ন প্রচলিত রীতি-নীতি অনুসন্ধান
এই সেশনে করণীয়:
▪ আজ ক্লাসের অর্ধেক সময়ে শিক্ষার্থীরা তাদের অনুসন্ধানী কাজের উপস্থাপনা করবে। তাদেরকে
প্রয়�োজনীয় ফিডব্যাক দেব�ো আমার যেন�ো তারা এই কাজ গুল�ো আরও ভাল�ো ভাবে করতে পারে।
বন্ধুদেরও সুয�োগ দেব�ো বন্ধুদের ফিডব্যাক দিতে।
▪ বাকি অর্ধেক সময়ে তারা বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রীতি-নীতির পরিবর্তন নিয়ে অনুসন্ধান
এর পরিকল্পনাটি করবে। এজন্য প্রথমে ক�োন�ো দেশের সামাজিক রীতি-নীতির পরিবরতনের একটি
মজার উদাহরণ দেব�ো। যেমন-
এরপর অন্য ক�োন�ো দেশের অন্য ক�োন একটি সামাজিক রীতি অনুসন্ধানের কাজের পরিকল্পনা তারা করবে।
সামাজিক রীতি-নীতির পরিবর্তন
সামাজিক রীতি-নীতির পরিবর্তন অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ৯
তারা সামাজিক রীতি-নীতি কি তার ধারণা লাভ করল�ো, সেটির স্থান ভেদে পরিবর্তনও দেখল। এবারে তারা
সময়ের সাথে সাথে দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সামাজিক রীতি-নীতির পরিবর্তন অনুসন্ধান করবে।
সেশন ৯: বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রীতি-নীতির পরিবর্তন নিয়ে অনুসন্ধান
এই সেশনে করণীয়:
▪ পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা যে কাজ করেছে তা তারা এই সেশনে উপস্থাপন করবে।
একটি অনুসন্ধানের প্রশ্ন নিয়ে অনুসন্ধান কাজ শুরু করি। এটি হতে পারে আমার নিজের সমাজের ক�োন�ো রীতি-
নীতির পরিবর্তন অনুসন্ধান অথবা অন্য ক�োন�ো দেশ বা সমাজের।
42
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
বিষয়বস্তু: বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রীতি-নীতির পরিবর্তন
কিছু অনুসন্ধানের প্রশ্ন (উদাহরণ):
▪ আমার নিজ সমাজের ________________________ রীতি-নীতি কিভাবে সময়ের সাথে সাথে
পরিবর্তিত হয়েছে?
▪ _______________________ সমাজের _______________________________ রীতিনীতি
সময়ের সাথে সাথে কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে?
▪ আমাদের এলাকার পেশার পরিবর্তন হয়েছে কিভাবে?
▪ বিভিন্ন সময়ে আমাদের রাষ্ট্রের পরিবর্তন হয়েছে কিভাবে? (৬ষ্ঠ শ্রেণির অনুসন্ধানী পাঠ এর সাহায্য
নিতে পার�ো)।
▪ বিভিন্ন সময়ে আমাদের সমাজে পরিবারের কাঠাম�োতে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে?
শিক্ষার্থীরা এতদিন সামজিক রীতি নীতি নিয়ে কাজ করেছে। এবারে তারা সামাজিক মূল্যব�োধের ধারণা
43
গঠন করবে।
সেশন 10: মিলির স্বপ্ন নিয়ে প্রশ্ন ভিত্তিক আল�োচনা
এই সেশনে করণীয়:
▪ এই ক্লাসে প্রথমেই আমরা পাঠ্য বই এ “মিলির স্বপ্ন” টি পড়তে বলব�ো।
কয়েকদিন ধরেই ক্লাসে খুব গণ্ডগ�োল বেধে গেছে। ক্লাসের মধ্যে চলছে গুনগুন ফিস ফিস। সবাইকে বেশ
বিরক্ত মনে হয়। খুশি আপা আজ ক্লাসে ঢুকে বলল, “কি হয়েছে ত�োমাদের বল�ো ত�ো? সারাদিন ত�োমরা
এত ঝগড়াঝাঁটি করছ, ক্লাসে সবাই মনে হচ্ছে এ ওর প্রতি রেগে আছ। ত�োমরা ত�ো এরকম কর�ো না, মিলে
মিশেই থাক। কি হল ত�োমাদের?” সবাই একসাথে হইচই করে উঠল�ো।
আনাই বলল, “আপা, রূপা প্রতিদিন কার�ো না কার�ো জিনিস না বলে নিয়ে যাচ্ছে। আজ ও আমার টিফিন
খেয়ে ফেলেছে।“ গণেশ বলল, আমার স্কেল না বলে নিয়ে গেছে…”। কাঁকন বলল, “আমার কলম নিয়ে
গেছে”…… রূপা কিছুই বলে না চুপ করে থাকে।
অর�োরিন বলল, “খুশি আপা, শিহান আজ আপনি ক্লাসে ঢুকেছেন সেটা দেখেও উঠে দাঁড়ায় নি”। নন্দিনী
উত্তেজিত হয়ে বলল�ো, “ ক�োন শিক্ষক আসলেই শিহান উঠে দাঁড়াচ্ছে না।“ শিহান ফিক ফিক করে হাসে।
সবাই খুবই রেগে যায় ওর উপর।
এবার গণেশ বলল, “আপা রনি একটু আগে ক্লাসে ঘ�োষণা দিল যে আপনি নাকি আজ ক্লাস নিবেন না” ।
দীপঙ্কর বলল, “আরে, রনি ত�ো প্রতিদিনই সবাইকে নানা মিথ্যা কথা বলছে। রনি তার ঝাঁকরা চুল চুলকায়
এমন ভাবে যেন সে কিছু করেনি।
এরকম অভিয�োগ নানাজনের বিরুদ্ধে চলতেই থাকে। খুশি আপা বললেন, “আচ্ছা চল এক এক জন করে
সবার ঘটনা গুল�ো দেখি। আপা জিজ্ঞাসা করলেন, আচ্ছা বলত�ো রনি কি করেছে? সবাই হই ছই করে বলে
উঠল�ো, ও সারাদিন মিথ্যে কথা বলছে। আপা জিজ্ঞাসা করলেন, “তাতে কী হয়েছে?” সবাই ত�ো খুশি
আপার প্রশ্ন শুনে অবাক। সবাই বলল আপা মিথ্যা বলা খুবই খারাপ। আপা জিজ্ঞাসা করল�ো, কে বলেছে,
কবে বলেছে মিথ্যা বলা খুবই খারাপ?” সবাই ত এবার ভাবল�ো খুশি আপা মনে হয় পাগল হয়ে গেছে। এগুল�ো
কি প্রশ্ন! কিন্তু সবাই চিন্তায় পড়ল�ো, আসলেই ত আমরা মিথ্যা কথা কেন পছন্দ করি না? মিথ্যা বলাকে কেন
আমরা খারাপ মনে করি?
---------------------------------ধর ফর করে ঘুম থেকে জেগে উঠল�ো মিলি। সে বলল, “উফফ কি অদ্ভুত
স্বপ্ন দেখলাম! ”
▪ এরপর তাদেরকে কিছু ধারাবাহিক প্রশ্নের মাধ্যমে একটি আল�োচনায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করব�ো।
44
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
মুক্ত আল�োচনা:
- কেন আমরা মিথ্যা বলাকে খারাপ মনে করি?
- মিথ্যা বলা খারাপ এটা আমরা কিভাবে, কার কাছ থেকে, কবে জানলাম?
- এরকম আর কি কি বিষয় আছে যেগুল�ো সাধারণত আমরা সবাই পছন্দ বা অপছন্দ করি? (এটি
নির্ধারণের জন্য আমরা নিচের ছকটি ব্যবহার করতে পারি।)
- এগুল�োকে আমরা কী বলতে পারি?
যেসকল বৈশিষ্ট্য আমরা সাধারণত পছন্দ করি যেসকল বৈশিষ্ট্য আমরা সাধারণত অপছন্দ করি
২। সময়ানুবর্তীতা
▪ এসব আল�োচনা ও কাজের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মূল্যব�োধের ধারনাকে অনুধাবনে সাহায্য
করব�ো।
সমাজে এরকম কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা আমরা মানুষের মধ্য থাকলে ভাল�ো বলি। আবার এমন কিছু
বৈশিষ্ট্য আছে যা আমরা মানুষের মধ্য থাকলে খারাপ বলি। এগুল�ো হল আমাদের সমাজে কিছু
প্রচলিত
▪ মূল্যব�োধ বা ভেলুজ (Values)। সমাজে যেমন রয়েছে রীতি-নীতি, তেমনি রয়েছে কিছু মূল্যব�োধ।
▪ এ পর ্যায়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসের সামাজিক মূল্যব�োধের পরিবর্তন নিয়ে দলীয় অনুসন্ধান
এর পরিকল্পনা করতে সাহায্য করব�ো। পরিকল্পনা শুরুর আগে প্রথমেই প্রশ্ন করব�ো “আচ্ছা বল�ো ত�ো,
এইসব সামাজিক মূল্যব�োধ কি পরিবর্তন হয়? কীভাবে আর কখন?”
45
বিষয়বস্তু:
কিছু অনুসন্ধানের প্রশ্ন (উদাহরণ):
▪ বর্তমানকালে বাংলাদেশের মানুষ বড়দের কে সম্মান নিয়ে কী ধরণের মূল্যব�োধ ধারণ করে আর
আগে বাংলাদেশের মানুষ বড়দের কে সম্মান নিয়ে কি ধরণের মূল্যব�োধ ধারণ করত�ো?
▪ বাংলাদেশের মানুষ বড়দের কে সম্মান নিয়ে যে মূল্যব�োধ ধারণ করে অন্য দেশের মানুষও কী একই
রকম মূল্যব�োধ ধারণ করে নাকি ভিন্ন রকম?
46
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সেশন ১০: সময়ের সাথে সাথে এবং স্থান ভেদে মূল্যব�োধের পরিবর্তন অনুসন্ধান (শিক্ষক ও সতীর্থ
মূল্যায়ন)
এই সেশনে করণীয়:
▪ এই ক্লাসে শিক্ষার্থীরা সময়ের সাথে সাথে এবং স্থান ভেদে মূল্যব�োধের পরিবর্তন অনুসন্ধান এর দলীয়
কাজটি উপস্থাপন করবে।
▪ এই অনুসন্ধান কাজটি আমরা মূল্যায়ন ছক ব্যবহার করে মূল্যায়ন করব�ো। এটি সামষ্টিক মূল্যায়নে
য�োগ হবে। সাথে শিক্ষার্থীদের করা সতীর্থ মূল্যায়ন ও য�োগ হবে। শিক্ষার্থীদেরকে শধু অনুসন্ধান এর
প্রক্রিয়াটি মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে। আমরা অনুসন্ধানের প্রক্রিয়ার সাথে সাথে অনুসন্ধানের বিষয়ে
তাদের অনুধাবনটিও মূল্যায়ন করব�ো এবার।
আদর্শ বা প্রত্যাশা
তথ্য
তথ্য সংগ্রহের আগে তথ্য সংগ্রহের পরে
সংগ্রহ
সংগ্র
অনুসন্ধানের প্রশ্নের মূল তথ্য উৎস তথ্য তথ্য তথ্য ফলাফল মূল্যব�োধ
প্রশ্ন বিষয়বস্তু (সঠিক সংগ্রহের সংগ্রহ বিশ্লেষণ উপস্থাপন সংক্রান্ত
(প্রশ্নটি বা প্রশ্ন (প্রশ্নে যে উত্তর খ ুঁ
জে পদ্ধতি (পরিকল্পনা (সঠিক (স্পষ্ট ধারনা বা
গুল�ো সুনির্দিষ্ট, মূল বিষয় বের করার (তথ্য উৎস অনুযায়ী উপায়ে ভাবে ও অনুধাবন
আকর্ষণীয় ও আছে জন্য এটি/ থেকে তথ্য তথ্য উৎস তথ্য আকর্ষণীয় (মূল্যব�োধ
দল অনুসন্ধানের সেগুল�ো এগুল�ো সংগ্রহের থেকে তথ্য সাজিয়ে/ উপায়ে যে
মধ্য দিয়ে চিহ্নিত উপযুক্ত জন্য এটি সংগ্রহ হিসাব অনুসন্ধানী পরিবর্তিত
সমাধান য�োগ্য)
য�োগ্য) করতে তথ্য উৎস) উপযুক্ত করতে নিকাশ প্রক্রিয়া হয় তা
পেরেছে) পদ্ধতি) ও রেকর ্ড করে আর অনুধাবন
করতে অনুসন্ধানী ফলাফল করবে)
পেরেছে) প্রশ্নের উপস্থাপন
উত্তর/ করেছে)
সমাধানে
প�ৌঁছাতে
পেরেছে)
দল-১
দল-২
দল-৩
দল-৪
দল-৫
47
আদর্শ বা প্রত্যাশা
তথ্য
তথ্য সংগ্রহের আগে তথ্য সংগ্রহের পরে
সংগ্রহ
সংগ্র
অনুসন্ধানের প্রশ্ন প্রশ্নের মূল তথ্য উৎস তথ্য তথ্য তথ্য ফলাফল দলের জন্য
(প্রশ্নটি বা প্রশ্ন বিষয়বস্তু (সঠিক সংগ্রহের সংগ্রহ বিশ্লেষণ উপস্থাপন আমার
গুল�ো সুনির্দিষ্ট, (প্রশ্নে যে ুঁ
উত্তর খজে (পরিকল্পনা (সঠিক (স্পষ্ট ভাবে মন্তব্য/
পদ্ধতি
আকর্ষণীয় ও মূল বিষয় বের করার ও আকর্ষণীয় ফিডব্যাক
(তথ্য উৎস অনুযায়ী উপায়ে
অনুসন্ধানের আছে জন্য এটি/ থেকে তথ্য তথ্য উৎস তথ্য উপায়ে
দল মধ্য দিয়ে সেগুল�ো এগুল�ো থেকে তথ্য সাজিয়ে/ অনুসন্ধানী
সংগ্রহের
সমাধান য�োগ্য) চিহ্নিত উপযুক্ত সংগ্রহ হিসাব প্রক্রিয়া আর
জন্য এটি
করতে তথ্য উৎস) উপযুক্ত করতে নিকাশ ফলাফল
পেরেছে) পদ্ধতি) ও রেকর ্ড করে উপস্থাপন
করতে অনুসন্ধানী করেছে)
পেরেছে) প্রশ্নের
উত্তর/
সমাধানে
প�ৌঁছাতে
পেরেছে)
অগ্রসর আদর্শ প্রশ্নের প্রশ্নের প্রশ্নের তথ্য উৎস পরিকল্পনা সঠিক অনুসন্ধানী মূল্যব�োধ
৩টি বৈশিষ্ট্যই সব গুল�ো উত্তরের থেকে অনুযায়ী উপায়ে কাজটি যে স্থান/
বিদ্যমান মূল বিষয় জন্য তথ্য তথ্য তথ্য এমনভাবে কাল ভেদে
চিহ্নিত সবচেয়ে সংগ্রহের সংগ্রহ সাজিয়ে/ উপস্থাপন পরিবর্তিত
করতে উপযুক্ত জন্য করেছে হিসাব করেছে যা হয় তা
পেরেছে তথ্য উৎস সবচেয়ে এবং নিকাশ সবার জন্য স্পষ্ট ভাবে
নির্বাচন উপযুক্ত সঠিক করে ব�োধগম্য উল্লেখ
করতে পদ্ধতি উপায়ে অনুসন্ধানী এবং করেছে
পেরেছে নির্বাচক রেকর ্ড প্রশ্নের উপস্থাপনার
করতে করেছে। উত্তর/ ক�ৌশলও
পেরেছে। সমাধানে আকর্ষণীয়
প�ৌঁছাতে
পেরেছে।
48
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
বিকাশমান আদর্শ প্রশ্নের প্রশ্নের সব প্রশ্নের তথ্য উৎস পরিকল্পনা তথ্য অনুসন্ধানী মূল্যব�োধ
১ টি বা ২ না হলেও উত্তরের থেকে অনুযায়ী সাজিয়ে/ কাজটি যে
টি বৈশিষ্ট্য অন্তত জন্য তথ্য তথ্য তথ্য হিসাব এমনভাবে পরিবর্তিত
বিদ্যমান একটি উৎস সংগ্রহের সংগ্রহ নিকাশ উপস্থাপন হয় তা
মূল বিষয় নির্বাচন জন্য করেছে করেছে। করেছে যা উল্লেখ
চিহ্নিত করতে পদ্ধতি কিন্তু কিন্তু তা সবার জন্য করেছে
করতে পেরেছে নির্বাচন সঠিক দিয়ে ব�োধগম্য তবে স্থান
পেরেছে কিন্তু তা করতে উপায়ে অনুসন্ধানী হলেও বা কাল
উপযুক্ত পেরেছে রেকর ্ড প্রশ্নের উপস্থাপনার ভেদে এর
হয় নি। কিন্তু তা করতে উত্তর/ ক�ৌশল পরিবর্তন
সঞ্চেয়ে আরও সমাধানে আকর্ষণীয় আলাদা
উপযুক্ত সাহায্যের প�ৌঁছাতে নয়। ভাবে
নয়। প্রয়�োজন। আরও উল্লেখ
সাহায্যের করতে
প্রয়�োজন। পারেনি।
প্রারম্ভিক আদর্শ প্রশ্নের তথ্য পরিকল্পনা তথ্য উপস্থাপনার
প্রশ্নের ক�োন উত্তরের সংগ্রহের অনুযায়ী সাজিয়ে/ ক�ৌশল
বৈশিষ্ট্যই জন্য জন্য তথ্য হিসাব আকর্ষণীয়
বিদ্যমান নেই প্রাসঙ্গিক প্রাসঙ্গিক সংগ্রহ নিকাশ হলেও
কনও
ক�োন�ো এবং করতে উপস্থাপনাটি
পদ্ধতি
তথ্য উৎস সঠিক এখন�ো ব�োধগম্য
নির্বাচন
নির্বাচন করতে উপায়ে আরও নয়/
করতে পারেনি। রেকর ্ড- সাহায্যের
পারেনি দুতর জন্য প্রয়�োজন।
ই আর তাই
সাহায্যের অনুসন্ধানী
প্রয়�োজন। প্রশ্নের
উত্তর/
সমাধানে
প�ৌঁছাতে
পারেনি।
49
কিছু কিছু সামাজিক মূল্যব�োধ আছে যেগুল�ো সাধারণত পৃথিবীর সব দেশেই একই রকম যেমন
মিথ্যা বলা বা চুরি করা কে খারাপ মনে করা আর সবার সাথে মিলে মিশে থাকা কে ভাল মনে করা
হয়। আবার কিছু কিছু মূল্যব�োধ আছে যেগুল�ো সমাজ বা দেশ ভেদে ভিন্ন হতে পারে। সময়ের সাথে সাথেও
আমাদের সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন মূল্যব�োধ গুল�ো পরিবর্তিত হয়; এগুল�ো ক�োনটাই অপরিবর্তনশীল বা ধ্রুব নয়।
আমাদের শিক্ষাক্রমে কিছু মূল্যব�োধ ও গুণাবলির কথা উল্লেখ রয়েছে। আমরা চাই বিভিন্ন শিখন অভিজ্ঞতার
মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের এইসব মূল্যব�োধ ও গুণাবলির বিকাশ ঘটুক। এজন্য এই অধ্যায়ে আমাদের
সুয�োগ রয়েছে তাদের কিছু ম�ৌলিক মূল্যব�োধ (Core Values) চর্চাকে উদ্বুদ্ধ করার।
সংহতি: এক হয়ে থাকার মানসিকতা। ভিন্নতা, বৈচিত্র্য ও শ্রেণিভেদ সত্ত্বেও ব্যক্তিগত ইচ্ছা ও অগ্রাধিকারকে
পেছনে রেখে কতগুল�ো সামষ্টিক ইচ্ছা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং মানবিক মূল্যব�োধের পরিপ্রক্ষিতে সকলে
মিলে বড় ক�োন�ো লক্ষ্য অর্জনে কাজ করা
দেশপ্রেম: ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিজ দেশের সার্বিক কল্যাণে নিজেকে
নিয়�োজিত রাখাই হচ্ছে দেশপ্রেম
সম্প্রীতি: ভিন্নতা, বৈচিত্র্য ও শ্রেণিভেদের মধ্যেও বিদ্যমান দৃঢ়তাসমূহের সম্মিলনে সর্বোচ্চ ঐক্য প্রদর্শন
এবং বজায় রাখাই হচ্ছে সম্প্রীতি
পরমতসহিষ্ণুতা: ভিন্নমত বা ভিন্ন চিন্তাধারাকে সূক্ষচিন্তন দক্ষতা প্রয়�োগের মাধ্যমে গ্রহণ বা বর্জনের
স্বাধীনতা এবং এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহনশীলতা প্রর্দশন হচ্ছে পরমতসহিষ্ণুতা। বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও ধর্মের
অনুসারীদের মত
50
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
প্রকাশের স্বাধীনতা এবং অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা প্রদর্শন হচ্ছে পরমতসহিষ্ণুতা।
শ্রদ্ধা/সম্মান: বৈশিষ্ট্য, স্বাতন্ত্র্য ও গুণাবলির আল�োকে পারস্পরিক ইতিবাচক অনুভূতির প্রকাশই শ্রদ্ধা বা সম্মান।
স্থায়িত্বপূর্ণ ও মর ্যাদাপূর্ণ সহাবস্থানে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানব�োধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শুদ্ধাচার: শুদ্ধাচার মানে নিজের কাছে দায়বদ্ধ থেকে যেক�োন�ো পরিস্থিতিতে নৈতিকভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত এবং
পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক ক�োন পরিবীক্ষণ ছাড়াই নিজ দায়বদ্ধতা থেকে নৈতিকভাবে সঠিক
সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেয়াই শুদ্ধাচার।
সতাত: একটি নৈতিক গুণ যা সত্যবাদিতা ও ন্যায়পরায়ণতার চর্চা করতে উদ্বুদ্ধ করে
উদ্যম: দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক ও মানসিক কর্মক্ষমতা
গণতান্ত্রিকতা: পরমতসহিষ্ণুএবং সকলের মত প্রকাশের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন ও শ্রদ্ধাশীল
অসাম্প্রদায়িকতা: নজ সম্প্রদায়সহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল
উদ্যোগ: ক�োন�ো কাজ বা সমস্যা সমাধানে আগ্রহী হওয়া ও শেষ পর ্যন্ত অনুপ্রাণিত থাকা
ইতিবাচকতা: ক�োন�ো কাজ, কথা, ঘটনা বা বিষয়ের ভাল দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেয়া
নান্দনিকতা: সৃজনশীল কাজের স�ৌন্দর ্য উপলব্ধি করে তার চর্চা করার মননশীল মন�োভাব প�োষণ করা
মানবিকতা: মানুষ ও সৃষ্টি জগতকে ভালবাসা, পরিচর ্যা করা, সংরক্ষণ করা ও নিরাপত্তা প্রদানে সচেষ্ট হওয়া
দায়িত্বশীলতা: সকল দায়িত্ব ও কাজ সময়মত, গুরুত্ব সহকারে ও যথাযথভাবে সম্পাদন করা
সহমর্মিতা: অন্যের মনের অবস্থা ও অনুভূতি আন্তরিকভাবে অনুধাবন করে তার সঙ্গে একাত্ম হওয়া
▪ এবারে শিক্ষার্থীরা দলে বসে কিছু সামাজিক রীতি নীতি ও মূল্যব�োধের তালিকা তৈরি করবে যা তারা
চর্চা করতে চায়। সেখান থেকে বাছাই করে তারা ১০ টি সামাজিক রীতি-নীতি ও মূল্যব�োধ নির্ধারণ
করবে যা তারা দৈনন্দিন জীবনে চর্চা করতে চায়। এক্ষেত্রে আমরা শিক্ষাক্রম এ থাকা মূল্যব�োধ ও
গুণাবলীকে প্রাধান্য দেব।
51
▪ তারা কাগজের গাছ বানাবে রঙ্গিন কাগজ দিয়ে। এবারে তা লাগাবে ক্লাসের দেয়ালে। গাছ গুল�োর
শাখা প্রশাখা আছে কিন্তু ক�োন পাতা নেই। তারা যখনই কেউ এই নির্দিষ্ট সামাজিক রীতি নীতি ও
মূল্যব�োধ সংক্রান্ত ক�োন�ো কাজ করবে তখন ই সেটি একটি রঙ্গিন কাগজের পাতায় লিখে সেই নির্দিষ্ট
গাছটিতে তারা জুড়ে দেবে নিচে তাদের নাম সহ। বছর শেষে গাছটি পাতায় পাতায় ভরে উঠবে।
শিক্ষার্থীদের উদাহরণ দিয়ে পাতায় কই লিখবে তা আমরা বুঝিয়ে বলব�ো। শিক্ষার্থী সয়মানুবর্তিতা
গাছটিতে একটি পাতা য�োগ করতে পারে “এই মাসে আমি প্রতিদিন ঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে প�ৌঁছেছি”।
▪ এই কাজটি তারা বছর জুড়ে করবে। আমরা লক্ষ্য রাখব�ো যেন সব শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এই
কাজে। মাঝে মাঝে ক্লাসে ঢুকে নতুন পাতা গুল�ো পড়ে শ�োনাব এবং শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেব�ো।
চিন্তা করি
- ক�োন গাছে বেশি পাতা হল? কেন?
- আমি ক�োন গাছে বেশি পাতা য�োগ করেছি? কেন?
- ক�োন গাছে সবচেয়ে কম পাতা য�োগ করেছি? কেন?
- ক�োন ধরনের চর্চা আমি বেশি করছি? ক�োন গুল�োতে আমার আরও চর্চার প্রয়�োজন? কিভাবে তা
করতে পারি?
52
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
53
বিষয়বস্তু:
অনুসন্ধানের প্রশ্ন
তথ্য উৎস:
তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি ও ক�ৌশল:
তথ্য সংগ্রহ:
তথ্য বিশ্লেষণ:
ফলাফল/ সিদ্ধান্ত উপস্থাপন:
ভূমিরূপের পরিবর্তন
ভূমিরূপের পরিবর্তন অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ১৩
সেশন ১৩: মহাদেশীয় সঞ্চালনের ছবি দেখা, আল�োচনা ও তরমুজ দিয়ে পরীক্ষণ
কাদা ও বিস্কুট দিয়ে ভূমিরূপ পরিবর্তনের পরীক্ষণ
এই সেশনে করণীয়:
মহাদেশীয় সঞ্চালনের ছবি দেখা, আল�োচনা ও তরমুজ দিয়ে পরীক্ষণ
▪ আজ ক্লাসে ঢুকে আমরা বলব�ো, আমরা ত�ো সময়ের সাথে প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের কী কী পরিবর্তন
হয় তা অনুসন্ধান করছি। এবার আমরা দেখি যে আমাদের চারপাশে অনেক ধরণের ভূমিরূপ আছে,
এগুল�োরও কি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন ঘটে? চল আমরা কিছু ছবি দেখি। ছবি গুল�ো আমরা
54
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
মহাদেশীয় সঞ্চারণ
পেঙ্গু
য়া
লরেশিয়া
পেঙ্গু
বিষুব রেখা য়া বিষুব রেখা
গন্ডোয়ানা
উত্তর আ উত্তর আ
মেরিকা এশিয়া মেরিকা এশিয়া
ইউর�োপ ইউর�োপ
বিষুব রেখা বিষুব রেখা
দক্ষিণ আ দক্ষিণ আ
মেরিকা আফ্রিকা মেরিকা আফ্রিকা
ভারত ভারত
অস্ট্রেলিয়া অস্ট্রেলিয়া
অ্যান্টার্কটিকা অ্যান্টার্কটিকা
১০০ মিলিয়ন বছর আগে বর্তমান সময়ের পৃথিবী
ছবিতে তারা কি দেখছে তা জিজ্ঞাসা করব�ো। মহাদেশ গুল�ো ক্রমান্বয়ে সরে সরে যাচ্ছে সেটি তারা নিজেরাই
বলবে। তখন আমরা বলব�ো যে,
আমাদের প্রত্যেকটি মহাদেশ আছে একেকটি প্লেট বা পাতের উপর। এই পাত গুল�ো যেহেতু ভেসে থাকে তাই
কখনও ভেসে একে অপরের কাছে আসে আবার কখনও একে অন্যের থেকে দূরে চলে যায়।
▪ এরপর তাদের জিজ্ঞাসা করব�ো, আছা বলত�ো, “প্লেট গুল�ো ভেসে থাকে কেন?” তাদের বক্তব্য
শুনব�ো। তারপর বলব�ো, এটা জানার জন্য চল�ো আমরা একটা মজার কাজ করি।
▪ একটি তরমুজ বা জাম্বুরা, অথবা কমলা লেবু নিয়ে আসব�ো ক্লাসে। বলব�ো বলত এটা দিয়ে কিহবে?
অনেকেই হয়ত বলতে পারবে কারণ বই এ দেখেছে।
▪ তখন আমরা তরমুজটি কাটব�ো নিচের ছবির মত�ো করে। কাটার পর তরমুজের একটি ফালি দেখিয়ে
বলব�ো বলত এটি দেখত�ো কিসের মত�ো লাগছে? তাদের কে পাওয়ার পয়েন্ট এ এই ছবি দেখাব�ো।
সম্ভব না হলে বই থেকে দেখতে বলব�ো।
55
শিক্ষার্থীরা বুঝে বলবে এটি দেখতে একদম পৃথিবীর মত�োই।
▪ জিজ্ঞাসা করব�ো, তরমুজের ভিতরে যেমন নরম অংশ আছে পৃথিবীরও কি একই রকম নরম অংশ
আছে?সেটির নাম কি? তাদের বলার সুয�োগ দেব�ো। না পারলে বলে দেব�ো যে পৃথিবীর ভিতরে গলিত
লাভা আছে।
▪ এবারে প্রশ্ন করব, আমরা ত�ো জানি লাভা হচ্ছে তরল জিনিস, তাহলে পৃথিবীর উপরিভাগের ত�ো
সবসময় নড়াচড়া করা উচিত তাই না? আসলেই তা নড়ছে কিন্তু আমরা সবসময় সেটা টের পাই না।
কখন কখন টের পাব বলত? তারা না বলে বলে দেব�ো যে, যখন ভূমিকম্প হয় তখন!
▪ তাদের বলব�ো, এই প্লেটগুল�োর বিভিন্ন রকম চলাচলের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীর নানা
ভুমিরূপের। চল সেটি আমরা মজার একটি পরিক্ষা করে দেখি-
উপকরণ:
৬টি বিস্কুট (প্লেট কে প্রতিনিধিত্ব করে)
শেভিং ফ�োম/ জেলি/ কাদামাটি (এগুল�ো ম্যাগমা কে প্রতিনিধিত্ব করে)
চামচ
টিস্যু (এটি ভূত্বক কে প্রতিনিধিত্ব করে)
ছ�োট ৩টি ট্রে/ থালা অথবা একটি থালাকে ত ভাগে ভাগ করে
56
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সাধারণ কর্ম পদ্ধতি (পাঠ্য বই এ দেয়া আছে)
প্রথমে ট্রের মধ্যে শেভিং ফ�োম স্প্রে করে/ জেলি/ কাদামাটি দিয়ে ম্যাগমার একটি স্তর তৈরি করব�ো।
২. চামচ দিয়ে ম্যাগমা টি সমতল করব�ো যাতে এটি সবদিকে সমান হয়।
৩. ম্যাগমার উপরে একটি টিস্যু আলত�ো করে পেতে দেব�ো।
কর্মপদ্ধতি-খ: ২ নং ট্রে
৪. এরপর ম্যাগমার উপরে আমরা আবার দুটি বিস্কুটকে একটু দূরত্বে রাখব�ো
৫. এরপর দুটি বিস্কুটকে একে অন্যের সাথে মুখ�োমুখি সংঘর্ষ করাব�ো এবং সেই স্থানে ক�োন ধরণের ভূমিরূপের
সৃষ্টি হয়েছে তা দেখব�ো।
কর্মপদ্ধতি-গ: ৩ নং ট্রে
৪.এবার�ো ম্যাগমার উপরে আমরা আবার দুটি বিস্কুটকে একটু দূরত্বে রাখব�ো
৫. এবার দুটি বিস্কুট কে একে অন্যের পাশ দিয়ে নিয়ে যাব�ো, ক�োন�ো সংঘর্ষ ছাড়া এবং সেই স্থানে ক�োন
ধরণের ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়েছে তা দেখব�ো।
57
ক খ গ
শিক্ষার্থীরা নিচের ছক ব্যবহার করে তাদের পরীক্ষণের ফলাফল এর ছবি আঁকবে ও লিখবে।
ছক: বিস্কুটের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ
ট্রে সংঘর্ষের ফলে ম্যাগমা ও প্লেটের অবস্থার চিত্র
১ নং ট্রে
২ নং ট্রে
58
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
৩ নং ট্রে
▪ ছবি আঁকা শেষ হলে তাদের কাছ থেকে জানব কি কি ধরনের ভূমিরূপ তৈরি তারা দেখতে পাচ্ছে?
দেখলাম প্লেট এর চলাচলের কারণে কখনও তৈরি হচ্ছে পাহাড়ের মত�ো ভূমিরূপ আবার কখনও হচ্ছে
মহাসাগরের সৃষ্টি।
▪ এবারে বলব�ো, বাংলাদেশেও ত�ো বিভিন্ন ধরণের ভুমিরূপ আছে সেগুল�োও ত�ো এরকম ক�োন�ো না
ক�োন�ো ঘটনার দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছে তাই না! এবারে চল বাংলাদেশের ভূমিরূপ নিয়ে অনুসন্ধান চালাই।
বাংলাদেশের ভূমিরূপ
বাংলাদেশের ভূমিরূপ অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ১৪
বিষয়বস্তু:
অনুসন্ধানের প্রশ্ন
তথ্য উৎস:
তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি ও ক�ৌশল:
তথ্য সংগ্রহ:
তথ্য বিশ্লেষণ:
ফলাফল/ সিদ্ধান্ত উপস্থাপন: মানচিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করতে পারি আমরা
▪ আমার শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করব�ো তারা কিভাবে তাদের এই ফলাফল উপস্থাপন করতে পারে?
মানচিত্র কে একটি ক�ৌশল হিসেবে বলবে আশা করি। নাহলে মানচিত্রে বিভিন্ন রংয়ের মাধ্যমে
স্থানগুল�ো চিহ্নিত করে উপস্থাপন করতে পারি- সেটি আমরা তাদের ধারনা দেব�ো।
▪ সবাই প্রয়�োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশের একটি মানচিত্রে সময়ের সাথে সাথে গড়ে ওঠা
বিভিন্ন ভূমিরূপ চিহ্নিত করবে এবং লিজেন্ড বা সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে ক�োন রং ক�োন
ভূমিরূপকে নির্দেশ করে সেটি চিহ্নিত করবে। তারা তাদের বইএ দেয়া মানচিত্রটি ও ব্যবহার করতে
পারে। দরকার হলে সব শেষে এই ম্যানুয়াল এ দেয়া মানচিত্র টি আমরা দেখাতে পারি পওার পয়েন্ট
এ।
60
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
এই সেশনে করণীয়:
61
ম্যাপ দেখা ও আল�োচনা (চ্যুতি রেখার ধারণা)
▪ আজ আমরা ক্লাসে ভুমিকম্প নিয়ে জানতে চাইব�ো। তাদের কি অভিজ্ঞতা, তাদের কী অনুভূতি?
এরপর তাদের কিছু পত্রিকার কাটিং দেখাব�ো বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্পের খবর। তাদের জিজ্ঞাসা
করব�ো, বাংলাদেশের ক�োন ক�োন এলাকায় আজকাল বেশি বেশি ভূমিকম্প হচ্ছে? কেন? ঘন ঘন
ভূমিকম্প হওয়ার সাথে মহাদেশীয় পাত বা প্লেটের ক�োন�ো সম্পর্ক আছে কি?
▪ এবারে তাদেরকে আমরা পাওয়ার পয়েন্ট, বা প�োস্টারে নিচের ম্যাপ দেখিয়ে চ্যুতি রেখার ধারণা
দেব�ো। বিষয়টা সম্পর্কে জানতে প্রথমে আমাদের বাংলাদেশের অবস্থান ক�োন ক�োন প্লেটে পড়েছে
সেটা দেখতে হবে। বলব চল�ো আমরা বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক অবস্থানের একটা স্যাটেলাইট থেকে
নেয়া ছবি দেখি।
ইউর�োশিয়ান প্লেট
.মি
2 সে
বছরে
.মি
বার্মিজ প্লেট
৬ সে
বছরে
ইন্ডিয়ান প্লেট
62
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ উপরের ধারনা গুল�ো যেন শিক্ষার্থীরা ম্যাপ বিশ্লেষণ করে নিজেরাই বুঝতে পারে সেটি সাহায্য করব।
▪ এরপর তাদের নিচের ম্যাপটি দেখাব
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল
রংপুর
দিনাজপুর
সিলেট
বগুড়া
ময়মনসিংহ
রাজশাহী
টাঙ্গাইল
কুষ্টিয়া ঢাকা
কুমিল্লা
যশ�োর
খুলনা বরিশাল ন�োয়াখালী
বাগেরহাট চট্টগ্রাম
ভ�োলা
পটুয়াখালী
কক্সবাজার
সবচেয়ে ঝকি ুঁ পূর্ণ বঙ্গোপসাগর
ুঁ পূর্ণ
মাঝারি ঝকি
ুঁ পূর্ণ
কম ঝকি
সূত্র: জিএসবি
63
ভূমিকম্প সংক্রান্ত কর্মশালার আয়�োজন
▪ এবারে শিক্ষার্থীদের বলব�ো আমরা কী করতে পারি? আমরা কি প্লেট সড়াতে পারব? তাহলে কী
করতে পারি? ভূমিকম্পে যেন ক্ষয়ক্ষতি কম হয় তার ব্যবস্থা করতে পারি? সেটি কীভাবে করতে
পারি? তাদের কাছ থেকে শুনব�ো। তাদের উত্তরে না এলে, নগরায়নের বিষয়টি তুলব�ো।
▪ এরপর তাদের বলব�ো সক্রিয় নাগরিক ক্লাব থেকে আমরা কি কিছু করতে পারি কিনা। তাদের
আইডিয়া গুল�ো শুনব�ো। সেখান থেকে আমরা কিছু করতে পারি। ভূমিকম্প সংক্রান্ত কর্মশালার
আয়�োজন করতে পারি।
ভূমিকম্প সংক্রান্ত কর্মশালার আয়�োজন:কিছু বিদ্যযল্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতে সক্রিয় নাগরিক ক্লাব গঠন
করেছিল শিক্ষার্থীরা। যেহেতু কমিটির বয়স এক বছর হয়ে গেছে তাহলে আমরা আবার নতুন ভাবে নির্বাচন
করে সপ্তম শ্রেণির জন্য সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের কার ্যক্রম শুরু করতে উদ্বুদ্ধ করব�ো।
সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের আয়�োজনে একজন অগ্নি নির্বাপক অফিসার কে এনে ভূমিকম্প দুর্যোগ হলে এবং পরে
কী করণীয় সে সম্পর্কে একটি কর্মশালার আয়�োজন করবে শিক্ষার্থীরা।
▪ কর্মশালার পরে তারা ভূমিকম্প চলাকালীন এবং পরবর্তীতে যা যা করনীয় সেই বিষয় গুল�োর উপর
তাদের বিদ্যালয়ের মাঠে একটি ডিসপ্লের আয়�োজন করবে।
▪ বিভিন্ন সচেতনতা মূলক প�োস্টার তারা তৈরি করে বিদ্যালয়ে লাগাবে/ প্রদর্শন করবে।
▪ কাজ শেষে আমরা সবাইকে অভিনন্দন জানাব�ো।
ভূমিকম্প সতর্কতা
জরুরি ফাস্ট এইড, পানি অগ্নি ভূমিকম্প হবার সময় কাছাকাছি শক্ত যেখানেই থাকি আতংকিত না হওয়া
নির্বাপক ইত্যাদি হাতের কাছে রাখা ক�োন�ো টেবিলের নিচে চলে যাওয়া
পরিবর্তন
সামাজিক প্রাকৃতিক
ঋতু
রীতি-নীতি মূল্যব�োধ ভুমিরূপ
আবহাওয়া
65
সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন।
স্থান ভেদে পরিবর্তন স্থান ভেদে পরিবর্তন
এবারে তাদের বলি ,চল�ো আমরা চ�োখ বন্ধ করে চিন্তা করি, যদি আমাদের সকল জায়গায় ভূমিরূপ একই রকম
হত�ো -ধর পৃথিবীর ক�োন�ো দেশে ক�োন�ো মরুভূমি নেই, নেই সাগর, মালভূমি, সমুদ্র। আছে শুধু সমতল ভূমি।
তাহলে কেমন হত? কেমন হত�ো আমাদের জীবন? কী কী কাজ করা যেত না? কী কী কাজ নতুন ভাবে করতে
হত? এরকম একটি ছবিও আঁকি।
এমন যদি হত, পৃথিবীর সব ভূমিরূপ একটি-সমতল ভূমি। তাহলে কেমন হত�ো বল�ো ত�ো!
তাহলে পৃথিবী অনেক গরম হয়ে যেত।
পাখিরা গাছ ছাড়া, তাদের বাসা হারাত।
………………………………
……………………………
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান (অনুশীলন বই) পৃষ্ঠা নং 42 এ ছবি দুইটি ব্যবহার করবেন।
ঠিক একই ভাবে আমরা আমাদের আশে পাশের বিভিন্ন সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিষয়গুল�োতে যদি সময় ও স্থান
ভেদে পরিবর্তিত না হত�ো, তবে কেমন হত�ো তা চিন্তা করে লিখি ও ছবি আঁকি। যেমন-সকলের পেশা একই
হলে, প্রতিদিন, সারাজীবন একই খাবার খেলে ইত্যাদি। এই কাজটিতে শখারথিদের চিন্তার স্বাধীনতা দেব�ো।
সবার কাজ সবাইকে দেখার সুয�োগ করে দেব।
একেক সময়ের সমাজ ছিল একেক রকম। একেক সময়ের প্রকৃতি একেক রকম। একেক এলাকার রীতি-নীতি,
মূল্যব�োধ, যেমন ভিন্ন, তেমনি ভিন্ন তাদের ভূপ্রকৃতি, আবহাওয়া। কী চমৎকার এই বৈচিত্র্য! যদি সমাজ ও
প্রকৃতিতে একই জিনিস প্রচলিত থাকত�ো, সমাজ ও প্রকৃতির উপাদান একই রকম হত�ো, তবে কেমন হত�ো?
আমাদের অনুসন্ধান কি এত বৈচিত্র্যপূর্ণ ও আনন্দময় হত�ো?
66
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সেশন ১7: পরিবর্তনশীলতা নিয়ে বিতর্ক
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষার্থীদের সাহায্য করব সামাজিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের বিভিন্ন কাঠাম�ো ও উপাদানের পরিবর্তন
নিয়ে কিছু বিবৃতি লিখতে। দুই দলে বিভক্ত হয়ে তারা এর পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে।
▪ প্রতি বিবৃতির জন্য দুইটি করে দল হবে। একটি দল এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে। অন্য দল এর বিপক্ষে
যুক্তি তুলে ধরবে। ব�োর ্ড এ প্রতিটা বিবৃতি লিখে তার পাশে পক্ষে ও বিপক্ষের জন্য দল নির্ধারণ করে
দেব�ো। তারপর তাদের দলীয় আল�োচনার জন্য সুয�োগ দেব�ো। তারা দলে বসে তাদের যুক্তি গুল�ো
ঠিক করবে। তারা দল থেকে দুই জন কে ঠিক করবে যারা তাদের যুক্তি তুলে ধরবে।
▪ প্রত্যেক দল তাদের যুক্তি তুলে ধরার জন্য ২ মিনিট করে সময় পাবে। এরপর এক দল আরেক দলের
যুক্তি খণ্ডন করার জন্য ১ মিনিট করে সময় পাবে।
▪ এভাবে প্রত্যেকটি বিবৃতি নিয়ে বিতর্ক হবে। সব দল শুনবে।
আত্মমূল্যায়ন
সেশন-১৭: এ পর ্যন্ত যা যা শিখলাম (আত্ম- মূল্যায়ন)
শিক্ষার্থীদের ধারণা সুদৃঢ় করার জন্য কার ্যাবলী: সেশন ১৭
আত্মমূল্যায়ন
সেশন-১৭: এ পর ্যন্ত যা যা শিখলাম (আত্ম- মূল্যায়ন)
আত্মমূল্যায়ন
67
এই সেশনে করণীয়:
এবারে শিক্ষার্থীদের পুর�ো ক্লাসের একটি সংক্ষিপ্ত আল�োচনা করে তাদের কে তাদের নিজের মূল্যায়ন করতে
বলব�ো নিচের প্রশ্ন ধরে। তারা তাদের বই এর পাতায় রাখা জায়গাটি ব্যবহার করতে পারে।
এ পর ্যন্ত যা যা শিখলাম:
এ পর ্যন্ত আমরা যা যা শিখেছি তার বিবেচনায়,
১। যে তিনটি বিষয় আমি একদম নতুন শিখেছত
২। যে তিনটি বিষয় আমার কাছে খুব আগ্রহ জাগিয়েছে বা মজা লেগেছ
৩। যে তিনটি বিষয় আমার নতুন করে জানার ইচ্ছা হচ্ছে, এখান থেকে জানতে পারিনি
৪। যে বিষয়গুল�ো আমার কাছে স্পষ্ট নয় বা ঠিক মত বুঝতে পারিনি
অনুসিন্ধানের ধাপ নিয়ে একটি আল�োচনা সভা (বছরের শেষে সামষ্টিক মূল্যায়নের অংশ হিসেবে যাবে)
▪ তাদের জিজ্ঞাসা করব�ো তারা কি টিভি তে আল�োচনা সভা দেখেছে কিনা? বা অন্য ক�োথাও। তারা
ত�ো এখন অনেক কিছু জানে, তারাও একটি আল�োচনা সভা করতে পারে অনুসন্ধানের ধাপ গুল�ো
নিয়ে। বড় বড় মানুষেরা যারা ক�োন একটা বিষয়ে অনেক জানেন ব�োঝেন তারা সেটি নিয়ে আল�োচনা
করেন। সেখানে একজন মডারেটর বা সঞ্চালক থাকেন যিনি বিভিন্ন প্রশ্ন করেন, আল�োচনা অন্য
দিকে চলে গেলে সেটিকে আবার মূল বিষয়ে ফিরিয়ে আনেন। আমাদের আল�োচনা সভার বিষয়বস্তু-
অনুসন্ধানী কাজের প্রতিফলন। এবারে আমরাই সঞ্চালক হব�ো। পরবর্তীতে তাদের এই দায়িত্ব দেব�ো।
▪ ম�োট ৫ টি দলে সবাই ভাগ হবে। দলে বসে সবার প্রতিফলন ডায়েরি ঘেঁটে প্রতি ধাপে কী কী শিখেছে
তা নিয়ে আল�োচনা করল�ো আর মূল বিষয়গুল�ো লিখে রাখবে। প্রতি দল তাদের একজন সদস্যকে
আল�োচনা সভায় আল�োচনার জন্য নির্বাচন করল�ো। বাকিরা সবাই শ্রোতা।
68
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
শিক্ষার্থী দের কাছ থেকে প্রত্যাশা
আমরা যেন এই আল�োচনা সভায় প্রকাশ করতে পারি যে
▪ প্রতি ধাপে কি করতে হবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা আমাদের রয়েছে
▪ ধাপগুল�োর আমরা বিশ্লেষণ- করতে পারছি- প্রতি ধাপে কী কী ধরনের সমস্যা হতে পারে আর
কিভাবে ম�োকাবিলা করা যায় তার অন্তত একটা গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা উল্লেখ করতে পারছে
▪ ধাপগুল�ো বিশ্লেষণে নিজের বা বন্ধুদের বাস্তব উদাহরণ ব্যবহার করেছে
প্রতিফলনের মূল্যায়ন রুব্রিক্স
▪ পারদর্শিতার নির্দেশক ২ এর সাথে য�োগ হবে (১২মাস শেষের সামষ্টিক মূল্যায়নে):
দলের নাম প্রতি ধাপে কি করতে ধাপগুল�োর বিশ্লেষণ- করতে ধাপগুল�ো বিশ্লেষণে নিজের
হবে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট পেরেছে- কী কী ধরনের বা বন্ধুদের বাস্তব উদাহরণ
ধারণা রয়েছে সমস্যা হতে পারে আর ব্যবহার করেছে
কিভাবে ম�োকাবিলা করা
যায়
দল-১
দল-২
দল-৩
দল-৪
দল-৫
69
সম্প্রদায়
৭.২। শ্রেণিভিত্তিক য�োগ্যতা: নিজের ও অন্য/ ভিন্ন সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য ও ভিন্নতা উপলব্ধি করে
সহয�োগিতার ভিত্তিতে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারা
এরপর শিক্ষার্থীরা নিজেদের তৈরি রুব্রিক্স ব্যবহার করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পেশাজীবী সম্প্রদায়গুল�োর
ুঁ বের করবে।
বৈশিষ্ট্য খজে
▪ চতুর্থ ধাপে আশেপাশের সম্প্রদায়গুল�োর প্রতি শিক্ষার্থী কতটা সংবেদনশীল, অন্যান্য সম্প্রদায়কে সে
কতটা সাহায্য করে তা খজতে ুঁ দেব�ো। শিক্ষার্থীদের বলব, আমরা যাদের কাছ থেকে সাহায্য নিচ্ছি,
তাদের জন্য আমাদের কী করণীয়, চল�ো ভেবে বের করি এবং তালিকা তৈরি করি। সক্রিয় নাগরিক
ক্লাবের মাধ্যমে এই কাজটি শিক্ষার্থীরা বছরব্যাপী করবে। তাদের উৎসাহিত করব যেন তারা নির্দিষ্ট
কাজে কেবল নয়, অন্যের প্রতি সহয�োগিতার এই মন�োভাবটি নিজেদের সার্বিক আচরণেও ধারণ
করে। বিভিন্ন সম্প্রদায়কে সাহায্য করার কাজগুল�োর মধ্যে কিছু কিছু শিক্ষার্থীদের দলে করতে দেব�ো,
আর এককভাবেও করবার জন্য কিছু কাজ বাছাই করতে সাহায্য করব।
70
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
এরপর শিক্ষার্থীদের দলীয় এবং একক কাজের হিসেব রাখবার জন্য পাঠ্যবইয়ের মতন করে একটা ছক তৈরি
করতে বলব।
এসকল কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, সে বিষয়ে আমরা
যত্নবান হব। তাদের বিভিন্ন কাজের এবং পেশার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সাহায্য করব। শিক্ষার্থীকে নিজের কর্তব্য
সম্বন্ধে সচেতন হতে এবং অন্যদের প্রতি কর্তব্য পালন করতে সহায়তা করব। এই ব�োধ এবং কর্মসূচিগুল�ো
তারা যেন জীবনব্যাপী চর্চা করে, সে বিষয়ে উৎসাহিত করব।
মূল্যায়ন:
পারদর্শিতার নির্দেশক ৩, ৪ আর ৫ এর মূল্যায়ন হবে এই অধ্যায়ে। এক্ষেত্রে ৬ মাস শেষে আলাদা ক�োন
সামষ্টিক মূল্যায়ন থাকবে না এটির জন্য। তবে শিখন কালীন মূল্যায়ন থেকে তথ্য নিয়ে ৬ মাস শেষের
সামষ্টিক মূল্যায়নে য�োগ করা হবে। ক�োন ক�োন মূল্যায়ন কার ্যক্রম থেকে তথ্য নিতে হবে এবং ক�োন রুব্রিক্স
ব্যবহার করে তা দেয়া আছে। বাকি মূল্যায়ন কার ্যক্রম ও ছক শিখনকালীন মূল্যায়নের জন্য এবং ফিডব্যাক
দেয়ার জন্য ব্যবহার করব�ো।
১২ মাস পর সামষ্টিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এর জন্য আলাদা একটি মূল্যায়ন কার ্যক্রম থাকবে। অন্যান্য নির্দেশকের
সাথে এটি ও মূল্যায়ন করা হবে তখন।
এই অধ্যায়ে ‘সম্প্রদায়’ বলতে কমিউনিটিকে ব�োঝান�ো হয়েছে। দীর্ঘদিন একই জায়গায় থাকা বা একসঙ্গে
কাজ করা অথবা আলাদা জায়গায় থাকলেও বিশ্বাস, ভাবনায় একাত্মতা থাকলে সম্প্রদায় বা কমিউনিটি গড়ে
ওঠে। সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে অনেকগুল�ো বিষয়ে মিল থাকতে পারে যেমন: নৃতাত্ত্বিক গ�োষ্ঠী, ভাষা,
প�োশাক, ধর্ম, কাজ, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, বসবাসের স্থান, ঘরবাড়ি, পেশা, রুচি-পছন্দ ইত্যাদির মিল। আবার
একটি বা দুটি বৈশিষ্ট্যের মিলের ভিত্তিতেও সম্প্রদায় তৈরি হতে পারে।
71
সেশন ১: ক�োন�ো বিশেষ সম্প্রদায়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়া
এই সেশনে করণীয়:
▪ এই সেশনের আমরা শিক্ষার্থীদের এমন একটি সম্প্রদায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব�ো যার সদস্যরা
একে অপরের সঙ্গে অনেকগুল�ো অভিন্ন বৈশিষ্ট্য শেয়ার করে। এমন একটি সম্প্রদায় বেছে নেব,
যার বৈশিষ্ট্যগুল�ো স্পষ্ট করে ব�োঝা যায়। যেমন: বাউল সম্প্রদায়, বেদে জনগ�োষ্ঠী, বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক
জনগ�োষ্ঠী, নানান ঐতিহ্যবাহী পেশাজীবী সম্প্রদায় যেমন কামার, কুমার, তাঁতি, জেলে, ময়রা,
মুচি, ধ�োপা, নাপিত, মেথর, বাওয়ালি, জ�োলা, শব্দকর, মালাকার, চা-শ্রমিক ইত্যাদি। সম্ভব হলে
শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য সম্প্রদায়টির আবাসস্থলে নিয়ে যাব। তাদের সংস্কৃতির
বস্তুগত এবং অবস্তুগত উপাদানগুল�ো উপাদাগুল�ো দেখা, ব�োঝা, অনুভব করবার সুয�োগ করে দেব�ো।
প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় যা ব�োঝা যাবে না, তা প্রশ্ন করে জেনে নেব�ো। আমরা নিজেরা আগে সম্প্রদায়টি
সম্পর্কে জেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের তাদের আবাসস্থলে নিয়ে যাব। নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হলে একটি
সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে শ্রেণিকক্ষে আনবার ব্যবস্থা করব। সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করতে যিনি
আসবেন তিনি তাদের সম্প্রদায়ের ব্যবহার ্য সামগ্রী যেমন: প�োশাক, বাদ্যযন্ত্র, কাজ করবার সরঞ্জাম,
গয়না ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে আসবেন। যেমন: একজন কুমার চাক এবং মাটি নিয়ে আসতে পারেন।
শিক্ষার্থীরা তার সঙ্গে মাটির জিনিস তৈরির কাজ করতে পারে; যা তাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা দেবে
এবং আনন্দদায়ক হবে।
▪ প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন সম্ভব না হলে আমরা শিক্ষার্থীদের ক�োন�ো বিশেষ সম্প্রদায় সম্পর্কিত লেখা
পড়ে শ�োনাব কিংবা ছবি/ ভিডিও/ মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ইত্যাদি দেখাব অথবা শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই
থেকে ‘দেখে আসি বেদে বহর’ গল্পটি পড়তে দেব�ো। আমরা নিজেরাও একটি বিশেষ সম্প্রদায় সম্পর্কে
(পাঠ্যবইয়ের উদাহরণ অনুযায়ী) তথ্য সম্বলিত গল্প তৈরি করতে পারি।
▪ যে সম্প্রদায়ের সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে দিতে চাই, সেশনের শুরুতেই সে সম্প্রদায় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের
প্রশ্ন করব। প্রশ্ন করবার আগে শিক্ষার্থীদের সেই সম্প্রদায়ের ব্যবহার ্য বা তৈরি করা ক�োন�ো বাস্তব
সামগ্রী অথবা ছবি দেখাতে পারি। যেমন: একটি মাটির হাঁড়ি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারি, কারা
এটি বানায় (কুমার)? চা-বাগানের ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারি, যারা চা-পাতা ত�োলে তাদের
কখনও দেখেছে কিনা (চা-শ্রমিক)। শিক্ষার্থীদের বেদে সম্প্রদায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চাইলে
অনুশীলন বই থেকে ‘যেমন খুশি তেমন সাজ�ো’ সম্পর্কিত আল�োচনার প্রসঙ্গ তুলে প্রশ্ন করতে পারি,
তারা কখনও এরকম ক�োন�ো মানুষ দেখেছে কিনা। লক্ষণীয়, আমরা নির্দিষ্ট সেশনের আগে ‘সম্প্রদায়’
শব্দটি শিক্ষার্থীদের সামনে বলব না।
▪ শিক্ষার্থীদের ক�োন�ো একটি বিশেষ সম্প্রদায় সম্পর্কে কী পূর্ব ধারণা আছে তা জানবার পরে আমরা
সম্প্রদায়টির সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেব�ো।
সেশন ২: একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করা এবং নিজের সম্প্রদায়ের সঙ্গে ক�োন
বৈশিষ্ট্যটি মেলে তা অনুসন্ধান করা
72
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
এই সেশনে করণীয়:
সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যগুলো চিহ্নিত করা
▪ যে সম্প্রদায়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা পরিচিত হয়েছে, তাদের মধ্যে বিশেষ কী কী বিষয় লক্ষ্য করেছে, তা
ুঁ বের করবে। শিক্ষার্থী যদি উত্তর
প্রশ্ন করে জেনে নেব; যার মাধ্যমে শিক্ষার্থী সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য খজে
দিতে অসুবিধা ব�োধ করে তাহলে তাকে সাহায্য করব। প্রশ্ন করব, তাদের মধ্যে ক�োন ক�োন বিষয়ে
মিল আছে? যদি ওই সম্প্রদায়ের বিশেষ ক�োন�ো ভাষা থাকে তাহলে প্রশ্ন করব, “তারা নিজেদের
মধ্যে ক�োন ভাষায় কথা বলে?” যদি প�োশকের আলাদা ধরণ থাকে তাহলে প্রশ্ন করব, “তারা
কীরকম প�োশাক পরে?” এভাবে তাদের কাজ, জীবনযাপনের পদ্ধতি, বিশ্বাস, রীতিনীতি, উৎসব
ইত্যাদি যে বিষয়ে ওই বিশেষ সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় তার সবকিছু প্রশ্নের মাধ্যমে বের করে
আনব। তবে লক্ষ্য রাখব, অকারণে শিক্ষার্থীদের ক�োন�ো সংকেত দেওয়ার চেষ্টা করব না। যদি তারা
বৈশিষ্ট্যের বিষয়গুল�ো ভাল�ো করে লক্ষ্য না করে, কেবল তাহলেই প্রশ্ন করব। শিক্ষার্থীরা বৈশিষ্ট্যগুল�ো
বুঝতে পারছে মনে হলে আল�োচনা বন্ধ করব; সবগুল�ো বৈশিষ্ট্য নিয়ে আল�োচনা করব না।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের ৫/৬ জনের কয়েকটি দলে ভাগ করে ওই বিশেষ সম্প্রদায়ের কী কী উল্লেখয�োগ্য
বিষয় দেখেছে তার একটা তালিকা তৈরি করতে দেব�ো।
▪ কাজ শেষ হলে প্রতিটি দলকে নিজেদের তালিকা পড়ে শ�োনাতে বলব। একই বিষয় যেখানে একাধিক
দলের তালিকায় এসেছে সেগুল�োকে আলাদা করে চিহ্নিত করে একটি দলের তালিকায় সেটি রেখে
বাকি দলগুল�ো থেকে বাদ দেব�ো।
▪ এবারে দলগুল�োকে প্রত্যেকটা বিষয় আলাদা আলাদা কাগজে, সংক্ষেপে, বড় বড় করে লিখতে
বলব। সম্ভব হলে প্রতিটি দলকে টুকর�ো টুকর�ো রঙিন কাগজ দেব�ো, রঙিন কাগজ না থাকলে সাদা
কাগজ দেব�ো। ক্লাসরুমে একটি বড় প�োস্টার পেপার/ খবরের কাগজ টাঙিয়ে দেব�ো। সবার লেখা
শেষে সবগুল�ো দলের লেখা কাগজ প�োস্টার পেপারে ওপর থেকে নিচে আলপিন বা আঁঠা দিয়ে
ধারাবাহিকভাবে সাঁটিয়ে দিতে বলব।
▪ সাঁটান�ো শেষে শিক্ষার্থীদের তালিকাটি ভাল�ো করে দেখতে বলব। জানতে চাইব, আমরা তালিকায়
যে বিষয়গুল�ো রেখেছি সেগুল�ো থেকে …….দের (যাদের সম্পর্কে জানলাম) ক�োন�ো উল্লেখয�োগ্য
ুঁ পাচ্ছি? শিক্ষার্থীরা যে বৈশিষ্ট্য খজে
বৈশিষ্ট্য কি খজে ুঁ পাচ্ছে তা মুখে বলতে বলব।
▪ সকলের সঙ্গে আল�োচনার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুল�োর নাম ঠিক করব। প্রতিটি দলকে বলব তাদের দেখা
বিষয়বস্তুর পাশে বৈশিষ্ট্যের নাম লিখে দিতে।
▪ এভাবে সবগুল�ো দলের তালিকা একত্র করে অনুশীলন বইয়ে দেওয়া নিচের নমুনা অনুযায়ী একটা
নতুন তালিকা তৈরি হবে।
73
যা দেখেছি বৈশিষ্ট্য
74
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সম্প্রদায় বা কমিউনিটি হল�ো একটি ছ�োট বা বড় জনগ�োষ্ঠী যাদের মধ্যে বিশ্বাস, সামাজিক রীতিনীতি,
মূল্যব�োধ, পরিচয়, ভ�ৌগ�োলিক অবস্থান ইত্যাদি বিষয়ে মিল থাকে। তারা নিজেদের একটি বিশেষ
জনগ�োষ্ঠী হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের মধ্যে একাত্মতার ব�োধ এবং পারস্পরিক সহয�োগিতা থাকে। একটি
জাতি, একটি নৃতাত্ত্বিক গ�োষ্ঠী, এক ভাষাভাষী মানুষ, একটি ধর্মীয়/ রাজনৈতিক বিশ্বাসের মানুষ এক একটি
সম্প্রদায়। বৃহৎ অর্থে, সম্প্রদায় হল�ো মানুষের একটি দল; এই দল ছ�োট-বড় যে-ক�োন�ো আকারের হতে পারে।
দুইজন মানুষের একটি পরিবারও একটি সম্প্রদায় আবার সারা বিশ্বের মানুষও এক ‘মানব-সম্প্রদায়’ এর
সদস্য। একটি রাজনৈতিক দল, একটি ধর্মীয় গ�োষ্ঠী, খেল�োয়ারদের একটি দল, একটি ক্লাবও একটি সম্প্রদায়।
ব্যক্তিগত সামাজিক সম্পর্কও সম্প্রদায় তৈরি করে। এক পেশায় কাজ করলেও একটি সম্প্রদায় হয়, এমনকি
একটি অফিসের সব মানুষকেও একটি সম্প্রদায় বলা যায়। ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন দল, একটি স�োশ্যাল
মিডিয়ার সদস্য, ক�োন�ো একটি বিশেষ উদ্দেশ্য, বিশ্বাস, পছন্দের ভিত্তিতে একটি সামাজিক য�োগায�োগ মাধ্যমে
একত্রিত হওয়া মানুষরাও এক একটি সম্প্রদায় তৈরি করে। একটি এলাকার বা একটি গ্রামের মানুষকেও
একটি সম্প্রদায় বলতে পারি। সম্প্রদায় বা কমিউনিটি হল�ো একটি ছ�োট বা বড় জনগ�োষ্ঠী যাদের মধ্যে
বিশ্বাস, সামাজিক রীতিনীতি, মূল্যব�োধ, পরিচয়, ভ�ৌগ�োলিক অবস্থান ইত্যাদি বিষয়ে মিল থাকে। তারা
নিজেদের একটি বিশেষ জনগ�োষ্ঠী হিসেবে পরিচয় দেয়। তাদের মধ্যে একাত্মতার ব�োধ এবং পারস্পরিক
সহয�োগিতা থাকে। একটি জাতি, একটি নৃতাত্ত্বিক গ�োষ্ঠী, এক ভাষাভাষী মানুষ, একটি ধর্মীয়/ রাজনৈতিক
বিশ্বাসের মানুষ এক একটি সম্প্রদায়। বৃহৎ অর্থে, সম্প্রদায় হল�ো মানুষের একটি দল; এই দল ছ�োট-বড় যে-
ক�োন�ো আকারের হতে পারে। দুইজন মানুষের একটি পরিবারও একটি সম্প্রদায় আবার সারা বিশ্বের মানুষও
এক ‘মানব-সম্প্রদায়’ এর সদস্য। একটি রাজনৈতিক দল, একটি ধর্মীয় গ�োষ্ঠী, খেল�োয়ারদের একটি দল,
একটি ক্লাবও একটি সম্প্রদায়। ব্যক্তিগত সামাজিক সম্পর্কও সম্প্রদায় তৈরি করে। এক পেশায় কাজ করলেও
একটি সম্প্রদায় হয়, এমনকি একটি অফিসের সব মানুষকেও একটি সম্প্রদায় বলা যায়। ইন্টারনেট ভিত্তিক
বিভিন্ন দল, একটি স�োশ্যাল মিডিয়ার সদস্য, ক�োন�ো একটি বিশেষ উদ্দেশ্য, বিশ্বাস, পছন্দের ভিত্তিতে একটি
সামাজিক য�োগায�োগ মাধ্যমে একত্রিত হওয়া মানুষরাও এক একটি সম্প্রদায় তৈরি করে। একটি এলাকার বা
একটি গ্রামের মানুষকেও একটি সম্প্রদায় বলতে পারি।
লিঙ্গ বৈচিত্র্য: লিঙ্গ হল�ো আমাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য। আমরা প্রথাগত ধারণায় মনে করি, পৃথিবীতে কেবল
দুট�ো লিঙ্গের মানুষের অস্তিত্ব আছে ∑ নারী এবং পুরুষ। কিন্তু বাস্তবতা হল�ো XX এবং XY ক্রোম�োজমের
বাইরেও ক্রোম�োজম প্যাটার্ন রয়েছে এবং নারী-পুরুষ ছাড়াও লিঙ্গের অস্তিত্ব রয়েছে। আমরা সেই সম্পর্কে
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করে জেনে নেব। লিঙ্গ বৈচিত্র্য সম্পর্কে ক�োন�ো দ্বিধা-সংশয় থাকলে তা কাটিয়ে
উঠবার চেষ্টা করব।
জেন্ডার বৈচিত্র্য: জেন্ডার-পরিচয় আমাদের মানসিক বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ আমরা নিজেকে কী হিসেবে অনুভব করি।
মানুষ নিজেকে নারী অথবা পুরুষ হিসেবে যেমন ভাবতে পারে, তেমনি নারী বা পুরুষের যে প্রথাগত ধারণা
আছে, তার বাইরে গিয়েও নিজেকে অনুভব করতে পারে; তার শারীরিক লিঙ্গ পরিচয় যেমনই হ�োক না কেন।
জেন্ডারেরও রয়েছে অনেক প্রকরণ। কিন্তু সামাজিক প্রথাগত ধারণা জেন্ডারের বৈচিত্র্যকে সব সময়ে মেনে
নেয় না। তাই একজন মানুষের জেন্ডার-পরিচয় যা-ই হ�োক না কেন সমাজ আশা করে, প্রতিটি মানুষ সমাজের
নির্দিষ্ট করে দেওয়া অবস্থানে থাকবে এবং সে অনুযায়ী ভূমিকা পালন করবে। অর্থাৎ শারীরিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী
যে নারী, সে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট আচরণ করবে এবং যার শারীরিক বৈশিষ্ট্য পুরুষের, সে পুরুষের জন্য নির্দিষ্ট
আচরণ করবে। কিন্তু সমাজের এই বেধে দেওয়া জেন্ডার-ভূমিকা বাস্তবতার সঙ্গে সবসময়ে মেলে না; সমাজে
জেন্ডার বৈচিত্র্য আছে। আমরা লিঙ্গ ও জেন্ডার বৈচিত্র্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিয়ে, এই বৈচিত্র্যকে স্বীকার
করে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করব।
76
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইব, তারা নারী-পুরুষের বাইরে আর ক�োন�ো ধরণের মানুষ দেখেছে
কিনা। তারা ‘হিজড়া’ বা এই ধরণের কিছু উত্তর দিতে পারে, নাও দিতে পারে। ‘হিজড়া’ শব্দটি
বললে তাকে জানাব যে, ‘হিজড়া’ একটি নির্দিষ্ট সংস্কৃতির নাম। তারা প্রথাগত সমাজের বাইরে একটি
সুনির্দিষ্ট জীবনযাত্রার ধরণ গড়ে ত�োলে। এই সুনির্দিষ্ট জীবনযাত্রার বাইরের মানুষের লিঙ্গ পরিচয়
যা-ই হ�োক না কেন, সে ‘হিজড়া’ সংস্কৃতির অংশ না। শিক্ষার্থীরা এই প্রশ্নের উত্তর না দিলে আমরা
শুরুতে এই আল�োচনায় যাব না। এরপরে শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বই থেকে ‘শরীফার গল্প’ পড়তে
বলব।
▪ গল্প পড়া শেষে শিক্ষার্থীদের একজন/ কয়েকজন ট্রান্সজেন্ডার মানুষের ছবি দেখাব। নজরুল ইসলাম ঋতু,
শাম্মী রানী চ�ৌধুরী, বিপুল বর্মণের মতন বাংলাদেশের অনেক ট্রান্সজেন্ডার এবং হিজড়া জনগ�োষ্ঠীর
মানুষ সমাজ জীবনে এবং পেশাগত জীবনে সাফল্য পেয়েছেন। তাদের সম্পর্কে জানাব এবং দেশের
বাইরের অন্যান্য লিঙ্গের সফল মানুষদের কথাও বলব। আমার বলায় যেন সংবেদনশীলতার অভাব
না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখব।
▪ এরপর নারী, পুরুষ, ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা, ভাবনা,
অনুভূতি, জিজ্ঞাস্য নিয়ে মুক্ত আল�োচনা করতে দেব�ো। শরীফার গল্প থেকে আল�োচনা শুরু করতে
পারি। আল�োচনার জন্য উত্থাপিত প্রশ্নের নমুনা:
১. শরীফার কী হয়েছিল?
২. ল�োকজন কেন তাকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করত? এ বিষয়ে ত�োমার কী মনে হয়?
৩. শরীফার সঙ্গে যা ঘটেছে, ত�োমার কি সেটা ঠিক বলে মনে হচ্ছে? কেন?
৪. শরীফার জীবনটা আর কী রকম হতে পারত?
৫. হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষ সম্পর্কে ত�োমার আশেপাশের ল�োকদের কী বলতে শুনেছ? ত�োমার নিজের কী
মনে হয়?
৬. (শিক্ষার্থী যদি হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে নিজের বা অন্যের ক�োন�ো নেতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা
জানায়) ভেবে বলি, কেন এরকম ঘটল/ ঘটে? তাদের জীবনে কী কী বদল হলে এরকম ঘটনা ঘটত না?
মুক্ত আল�োচনায় তাদের অনেক কিছু বলে দেব�ো∑ এমনটা নয়; বরং তাদের অনেক কিছু বলতে দেব�ো। অর্থাৎ
মন খুলে কথা বলবার, নিজেদের মধ্যে আদান-প্রদান করবার সুয�োগ দেব�ো। ভাবা, প্রশ্ন করা, উত্তর খোঁজার
পরিসর দেব�ো। শিক্ষার্থী যদি এমন ক�োন�ো কথা বলে যেটি অসংবেদনশীল বলে মনে হচ্ছে, তাহলে “এটা কী
ধরণের কথা বললে!”∑ এই জাতীয় বাক্যের প্রয়�োগ করব না। প্রয়�োজনব�োধে বলব, “আমরা কি বিষয়টা
নিয়ে আর একটু ভাবব?” অথবা “ত�োমার কথা ত�ো জানলাম, এই বিষয়ে অন্যদের কী মত, শুনে দেখি ত�ো।”
77
সেশন ৪-৫.৫: লিঙ্গ ও জেন্ডারের ধারণার সঙ্গে পরিচিত হওয়া
এই সেশনে করণীয়:
▪ দুট�ো আলাদা প�োস্টার পেপার/ খবরের কাগজে সকলের জন্য দৃশ্যমান করে ছেলেদের জিনিস এবং
মেয়েদের জিনিস শির�োনাম লিখব। কাগজদুট�ো দেয়ালে ঝুলিয়ে দেব�ো। (ছবির পেছনে ব�োথ সাইড
টেপ ব্যবহার করে ব�োর্ডেও কাজটি করতে পারি)। এরপর শিক্ষার্থীদের কিছু খেলনা, সাজগ�োজের
জিনিস, কাজের সরঞ্জাম, প�োশাক ইত্যাদির ছবি দেখাব। ছবিগুল�ো যেন অনুশীলন বইয়ের নমুনা
ছবির মতন সুনির্দিষ্ট করে ছেলেদের বা মেয়েদের জন্য বানান�ো পণ্যের হয়। শিক্ষার্থীদের বলব, ছেলে
আর মেয়ে দুট�ো দলে ভাগ হয়ে যেতে। তারপর শিক্ষার্থীদের বলব, যে জিনিসগুল�োকে সাধারণভাবে
ছেলেদের আর যে জিনিসগুল�োকে মেয়েদের বলা হয়, সেগুল�ো দল অনুযায়ী বেছে নাও। বাছবার পরে
সেগুল�ো শির�োনাম অনুযায়ী প�োস্টার পেপারে সাঁটিয়ে দিতে বলব। সাঁটান�ো হলে শিক্ষার্থীদের কাছে
জানতে চাইব,
ত�োমরা কেন এই জিনিসগুল�ো বেছে নিলে? তারা হয়ত উত্তর দেবে, এগুল�ো ছেলেদের জিনিস/ এগুল�ো মেয়েদের
জিনিস। এবারে প্রশ্ন করব, কীভাবে ত�োমরা জানলে ক�োনটা ছেলেদের জিনিস আর ক�োনটা মেয়েদের জিনিস?
এরকম পার্থক্য কেন হয়? উত্তর দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বইয়ের ছবিটি দেখতে বলব।
ছেলে এবং মেয়েদের জিনিসগুল�ো দুজনের মাথার ওপরেই মিলিয়েমিশিয়ে আছে।
জানতে চাইব, ছবি দেখে কী মনে হচ্ছে? ছেলে-মেয়ের জিনিস আলাদা না হয়ে এরকম হলে কী সুবিধা, কী
অসুবিধা হত�ো?
▪ এরপর মুক্ত আল�োচনার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করতে বলব। অনুশীলন বইয়ের নমুনা প্রশ্নগুল�ো
নিয়েও শিক্ষার্থীরা আল�োচনা করতে পারে।
▪ আমরা নিজেদের ছেলে এবং মেয়ে বলে আলাদা করে চিনি কীভাবে?
▪ ছেলে বা মেয়ে হিসেবে আমরা আমাদের পছন্দের প�োশাক, রং, খেলনা, কাজগুল�ো কি নিজেরাই
78
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
পছন্দ করি?
▪ ছেলেদের খেলনা-মেয়েদের খেলনা, ছেলেদের কাজ-মেয়েদের কাজ কীসের ভিত্তিকে নির্দিষ্ট করি?
▪ একজন মানুষকে বাইরে থেকে দেখেই কি সব সময়ে সে ছেলে না মেয়ে তা ব�োঝা যায়?
▪ অন্যরা আমাদের সম্পর্কে কী ভাবছে তা আমাদের লিঙ্গগত পরিচয়কে কীভাবে প্রভাবিত করে?
▪ এমনটা কি হতে পারে যে, কাউকে আমরা তার শরীর বা চেহারা দেখে, গলার স্বর শুনে ছেলে বা মেয়ে
বলে ভাবছি কিন্তু সে নিজেকে ভিন্ন কিছু ভাবছে?
▪ আল�োচনা শেষে শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বইয়ের প�োস্টারটি দেখতে বলব এবং এই তথ্যগুল�ো বুঝিয়ে
বলব, একটি শিশু যখন জন্ম নেয় তখন তার শরীর দেখে আমরা ঠিক করি সে নারী নাকি পুরুষ। এটি
হল�ো তার জৈবিক লিঙ্গ পরিচয়। জৈবিক লিঙ্গ পরিচয়ের ভিত্তিতে একজন মানুষের কাছে সমাজ যে
আচরণ প্রত্যাশা করে তাকে আমরা ‘জেন্ডার’ বা ‘সামাজিক লিঙ্গ’ বলি। কিন্তু একজন মানুষ তার
শারীরিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নিজের জেন্ডার-পরিচয় অনুভব না-ও করতে পারে। ফলে তার জেন্ডার-
ভূমিকা প্রচলিত ভূমিকার চেয়ে ভিন্নরকম হয়। অথচ লিঙ্গগত পরিচয়ের সঙ্গে তার জেন্ডার ভূমিকা
না মিললে সমাজের প্রথাগত ধারণায় বিশ্বাসী মানুষেরা তাকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। তাতে
মানুষটি সামাজিক ও মানসিক সংকটের মুখে পড়ে।
79
নানারকম লিঙ্গের মানুষের ছবি দিয়ে প�োস্টার নতুন করে আঁকতে হবে।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের একটি কেইস বিশ্লেষণ করতে দেব�ো এবং সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন নিয়ে দলে আল�োচনা করে
ুঁ
উত্তর খজতে বলব�ো আমরা- (শিক্ষক কর্ক তৃ মূল্যায়ন)
শহীদ নামের ছেলেটির বয়স ১৬। ক্লাসে একদিন শিক্ষক সবাইকে জিজ্ঞাসা করল কে বড় হয়ে কি হতে চায়?
শহীদ নাচ খুব ভালবাসে এবং সে বলল সে বড় হয়ে নৃত্য শিল্পী হতে চায়। মুনিয়া বলল- “তুমি কি মেয়ে
নাকি?”। শহীদ বলল- “ছেলেরা কি নৃত্য শিল্পী হতে পারে না?”
- শহীদের লিঙ্গ গত পরিচয় কি?
- তার জেন্ডার পরিচয়ের ক�োন অংশটি এখানে উঠে এসেছে? সেটই কেমন?
- শহীদ বড় হয়ে নৃত্য শিল্পী হতে চায় শুনে মুনিয়া কেন�ো বলল- “তুমি কি মেয়ে নাকি”?
- শহীদকে এধরনের কথা বললে কি হতে পারে বলে ত�োমার মনে হয়?
- শহীদের বড় হয়ে নৃত্য শিল্পী হতে চাওয়ার ব্যাপারে তুমি কী মনে কর এবং কেন?
- এরকম ক�োন ঘটনা কি ত�োমার জীবনে বা ত�োমার পরিচিত কারও জীবনে ঘটেছে? নাম না উল্লেখ করে সেটি
লিঙ্গ ও জেন্ডার এর প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা কর।
মূল্যায়ন রুব্রিক্স:
মূল্যায়নের ক্ষেত্র প্রারম্ভিক বিকাশমান দক্ষ
লিঙ্গ ও জেন্ডারের পার্থক্য দুটি ধারনার একটি যেক�োন�ো একটি ধারনা দুটি ধারনাই বুঝে
নির্ণয় ধারনাও স্পষ্ট নয় বলে স্পষ্ট নয় বলে সঠিকভাবে সঠিকভাবে পার্থক্য করতে
দুটির পার্থক্য করতে পার্থক্য করতে পারছে না। পারছে।
পারছে না।
গল্পে লিঙ্গ ও জেন্ডারের ন্বন্দটি স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত দ্বন্দটি চিহ্নিত করতে গল্পে লিঙ্গ ও জেন্ডারের
মধ্যকার দ্বন্দটি চিহ্নিত করতে পারছে না। পারলেও লিঙ্গ ও জেন্ডার মধ্যকার দ্বন্দটি স্পষ্ট ভাবে
করতে পারা পরিচয় দিয়ে ব্যাখ্যা চিহ্নিত করতে পারছে।
করতে পারছে না।
নিজের জেন্ডার পরিচয় শহীদ কে মুনিয়ার এরকম শহীদ কে মুনিয়ার এরকম শহীদ কে মুনিয়ার এরকম
নির্ধারণে অন্যের বা মন্তব্য করায় শহীদের মন্তব্য করায় শহীদের মন্তব্য করায় শহীদের উপর
সমাজের হস্তক্ষেপের উপর যে নেতিবাচক উপর তা নেতিবাচক তা কী ধরনের নেতিবাচক
নেতিবাচক প্রভাব বিশ্লেষণ প্রভাব পড়তে পারে সেটি প্রভাব পড়তে পারে তা প্রভাব পড়তে পারে তার
করতে পারা অনুধাবন করতে পারছে উল্লেখ করতে পারলেও, কম্পখহে একটি গুরুত্বপূর্ণ
না। কি ধরনের প্রভাব ফেলতে পয়েন্ট উল্লেখ করতে
পারে তা উল্লেখ করতে পেরেছে (যেমন- সে
পারছে না। জীবনের লক্ষ্য অর্জনের
ইচ্ছা হারিয়ে ফেলতে
পারে)
80
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
লিঙ্গ ও জেন্ডার পরিচয়ের অন্যের জেন্ডার আর লিঙ্গ অন্যের জেন্ডার আর লিঙ্গ অন্যের জেন্ডার আর লিঙ্গ
ব্যাপারে সংবেদনশীলতা পরিচয় কে তার নিজস্ব পরিচয় তার নিজস্ব ও পরিচয় যে তার নিজস্ব ও
ও ব্যক্তিগত ব্যাপার মনে ব্যক্তিগত ব্যাপার কিনা ব্যক্তিগত ব্যাপার সেটা
করছে না। সে ব্যাপারে সে/তারা প্রকাশ করছে।
সন্দিহান।
লিঙ্গ ও জেন্ডার এর লিঙ্গ ও জেন্ডার এর নিজের বা পরিচিত নিজের বা পরিচিত
দ্বন্দ নিজের জীবন বা দ্বন্দ সংক্রান্ত নিজের বা মানুষের জীবনের একটি মানুষের জীবনের একটি
প্রপ্রিপ্রেক্ষিতের সাথে পরিচিত মানুষের জীবনের গল্প বলতে পারছে কিন্তু গল্প বলতে পারছে যেটিতে
সম্পৃক্ত করতে পারা ক�োন�ো গল্প বলতে পারছে তাতে সুস্পষ্ট ভাবে লিঙ্গ সুস্পষ্ট ভাবে লিঙ্গ ও
না। ও জেন্ডার এর দ্বন্দ ফুটে জেন্ডার এর দ্বন্দ ফুটে
উঠেছে না। উঠেছে।
▪ শিক্ষার্থীরা যখন ছক পূরণ করবে তখন অনুশীলন বইয়ের এই ছকটি ব�োর্ডে আঁকব। (আগে থেকে
প�োস্টার পেপারেও তৈরি করে আনতে পারি।)
81
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুনে সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্যগুল�ো বামদিকের ঘরে লিখব।
▪ তারপর এদেশের হিজড়া জনগ�োষ্ঠীর মানুষ কিংবা শরীফাদের মতন যেসব মানুষ একসঙ্গে থাকে
ুঁ
তাদের সংস্কৃতি, জীবনযাত্রার বৈশিষ্ট্যগুল�ো ‘শরীফার গল্প’ থেকে শিক্ষার্থীদের খজতে বলব এবং
ব�োর্ডে লেখা বৈশিষ্ট্যগুল�োর ক�োনটার সঙ্গে মিল আছে আর ক�োনটার সঙ্গে মিল নেই তা বলতে
বলব। ওদের মতামত শুনে উপযুক্ত ঘরে টিক চিহ্ন দেব�ো।
▪ ছক পূরণ শেষে প্রশ্ন করব, আমাদের দেশের বৈচিত্র্যময় লিঙ্গের মানুষদের কি আমরা একটি
‘সম্প্রদায়’ বলতে পারি? শিক্ষার্থীদের উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে বলব, আমরা একটা ‘রুব্রিক্স’ তৈরি করতে
পেরেছি, যার মাধ্যমে যে-ক�োন�ো সম্প্রদায়কে চিহ্নিত করা যাবে। (যদি শিক্ষার্থীর উত্তর ‘না’ হয়,
তাহলে সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করা অথবা হিজড়া সম্প্রদায়কে পরিচয় করিয়ে দেওয়া∑
ক�োথায় ঘাটতি আছে তার রিভিউ করব।)
82
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অনুপস্থিতি বিষয়ে অনুশীলন বইয়ের অংশটি শিক্ষার্থীদের পড়তে বলব
রূপা বলল, একটা দুর্গন্ধ পাচ্ছ? রনি বলল, স্কুলের পেছন দিক থেকে গন্ধটা আসছে। ফ্রান্সিস জানাল, বাজারের
পাশেই একটা বড় ডাস্টবিন আছে। ওই পথে ওকে স্কুলে আসতে হয়। আজ আসবার সময়ে দুর্গন্ধে ওর প্রায়
বমি চলে এসেছিল। ল�োকজনকে বলাবলি করতে শুনেছে, দুদিন ধরে পরিচ্ছন্নতাকর্মী আসেনি। আরও দুদিন
যদি তারা না আসে তাহলে বাজারে আর কেউ ঢুকতেই পারবে না। নীলা বলল, আমার চাচা একবার খুব অসুস্থ
হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তখন দেখেছি, পরিচ্ছন্নতাকর্মীর আসতে দেরি হয়েছে বলে, অপারেশন
করতেও অনেক দেরি হয়েছিল। মামুন বলল, পরিচ্ছন্নতাকর্মী কি অপারেশন করে নাকি? নীলা বলল, তা কেন!
কিন্তু অপারেশন করবার আগে অপারেশন থিয়েটার পরিস্কার করতে হয়। মামুন বলল, তাই ত�ো! হাসপাতাল
শুনলেই মনে হয় সেখানে ডাক্তার আর নার্স খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তারা না এলে মানুষ চিকিৎসা সেবা পাবে
না। কিন্তু হাসপাতালে র�োগীর সেবায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীও ত�ো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন! আদনান বলল, যদি
পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজ করা বন্ধ করে দেয় তাহলে ত�ো পৃথিবীর যত জায়গায় মানুষ আছে, সব জায়গাই
ন�োংরায় ভরে যাবে।
▪ এরপর তাদের কাছে জানতে চাইব, অনুশীলন বইয়ের ঘটনার মতন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অনুপস্থিতি
বিষয়ে ওদের ক�োন�ো অভিজ্ঞতা আছে কিনা। (আমাদের দেশে সব জায়গা যে অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন না
সে বিষয়টি মাথায় রাখব।) যেসব জায়গা পরিচ্ছন্ন না সেখানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাকলে কেমন হত�ো?
আমরা রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ন�োংরা না করলে কেমন হত�ো? ইত্যাদি প্রশ্ন করব। এমনভাবে প্রশ্ন করব
যেন, প্রশ্নোত্তর থেকে পরিচ্ছন্ন থাকার এবং আমাদের জীবনে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অবদানের গুরুত্ব
শিক্ষার্থীদের বক্তব্য থেকে প্রকাশিত হয়।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের জানাব পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মধ্যে যারা হরিজন সম্প্রদায়ের তাদের আলাদা
বাসস্থান, আলাদা ভাষা, রীতিনীতি আছে। তাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিয়ে তৈরি ভিডিও দেখাতে
পারি অথবা তাদের সম্পর্কে গল্প করতে পারি। এজন্য নিচের লিংকটি ব্যবহার করতে পারি।
https://www.youtube.com/watch?v=-_ACM3EvJPg
▪ শিক্ষার্থীদের জানাব যে, বংশানুক্রমে যারা সুনির্দিষ্ট পেশায় কাজ করে তাদের এক একটি আলাদা
সম্প্রদায় তৈরি হয়। আবার পেশা বংশানুক্রমিক না হলেও পেশার ভিত্তিতে এক একটি পেশাজীবী
সম্প্রদায় তৈরি হয়।
ুঁ বের
সেশন ৬-৭: অনুসন্ধানমূলক কাজের মাধ্যমে আশেপাশের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য খজে
করা ও উপস্থাপন করা
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইব, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ছাড়া আর ক�োন ক�োন পেশাজীবী সম্প্রদায়কে
তার আশেপাশে দেখতে পায়? তাদের উত্তরগুল�ো ব�োর্ডে লিখব: ডাক্তার, শিক্ষক, মুচি, কুমার,
রিকশাওয়ালা, দর্জি, তাঁতি, জেলে….।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের বলব, চল�ো আমরা প্রত্যেকে, রুব্রিক্স ব্যবহার করে, আমাদের আশেপাশের
83
পেশাজীবী সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য খজে ুঁ বের করি। কাজটি আমরা দলীয়ভাবে, অনুসন্ধানী কাজের ধাপ
অনুসরণ করে করব। শিক্ষার্থীদের এলাকা অনুযায়ী ৫/৬ জনের দলে ভাগ করে দেব�ো। ‘য�ৌক্তিক
সিদ্ধান্তে প�ৌঁছান�ো’ অধ্যায়ের মতন করে অনুসন্ধানী কাজ করতে বলব। ওই অধ্যায়ের সেশন ১
এর মতন করে নির্দেশনা দেব�ো। সেশন ২ ও ৩ এর নির্দেশনা অনুসরণ করব। শিক্ষার্থীদের বলব,
সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আশেপাশের পেশাজীবীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে দেখতে যে
ক�োন ক�োন পেশাজীবীকে আমরা পেশার ভিত্তিতে একটি সম্প্রদায় বলতে পারি। সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য
ুঁ
খজবার জন্য আমরা যে রুব্রিক্স তৈরি করেছি তার আল�োকে প্রশ্নমালা তৈরি করতে বলব। যেমন: ১.
আপনার পেশা কি বংশানুক্রমিক? আপনার পরিবারের এবং আশেপাশের ল�োকজনও কি এই পেশায়
যুক্ত? ২. আপনারা যারা একই পেশায় কাজ করেন তাদের কি সুনির্দিষ্ট ক�োন�ো নিয়ম, রীতিনীতি,
ভাষা, প�োশাক ইত্যাদি আছে যা অন্যদের চেয়ে আলাদা? ৩. আপনারা কি পেশার ভিত্তিতে নিজেদের
পরিচয় দেন? ৪. আপনার পেশার মানুষদের ক�োন�ো সংগঠন আছে কি? আপনি কি তাতে যুক্ত?
▪ আমরা উপস্থাপনের জন্য একটি দিন ঠিক করব। কীসের ভিত্তিতে তাদের কাজটির মূল্যায়ন হবে তা
আগে থেকেই জানিয়ে দেব�ো। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে ফলাফল উপস্থাপন করতে
উৎসাহিত করব।
▪ দলগুল�ো ফলাফল উপস্থাপন করার পর তাদের কাজের ফিডব্যাক দেবো।
পেশাজীবী সম্প্রদায় কে ক�োন নির্দিষ্ট পেশাজীবী একটি সম্প্রদায় কে একটি নির্দিষ্ট পেশাজীবী
সনাক্ত করতে পারা সম্প্রদায় কে সনাক্ত সনাক্ত করে তাদের সম্প্রদায় কে সনাক্ত
করতে পারেনি। নিয়ে কাজ করেছে করে তাদের নিয়ে কাজ
তবে তাদের পেশাজীবী করেছে।
সম্প্রদায় হিসেবে চিহ্নিত
করতে পারেনি
পেশাজীবী সম্প্রদায়ের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের
মূল বৈশিষ্ট্য গুল�ো অল্প কিছু বৈশিষ্ট্য শুধু মূল বৈশিষ্ট্য গুল�ো মূল বৈশিষ্ট্য গুল�ো
চিহ্নিত করতে পেরে চিহ্নিত করতে পেরেছে চিহ্নিত করতে পারলেও চিহ্নিত করতে পেরেছে
নিজ সম্প্রদায়ের সাথে এবং তা থেকে নিজ তা থেকে নিজ এবং তা থেকে নিজ
মিল/অমিল খজে ুঁ বের সম্প্রদায়ের সাথে মিল- সম্প্রদায়ের সাথে মিল- সম্প্রদায়ের সাথে মিল-
করতে পারা অমিল খজে ুঁ বের করতে অমিল খজে ুঁ বের করতে অমিল খজে ুঁ বের করতে
পারছে না। পারছে না। পেরেছে।
84
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সেশন ৮-৯: অনুসন্ধানমূলক কাজের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পেশাজীবী সম্প্রদায়গুল�োর
ুঁ বের করা ও উপস্থাপন করা
বৈশিষ্ট্য খজে
এই সেশনে করণীয়:
▪ আগের অনুসন্ধানী কাজ থেকে সম্প্রদায়কে চিহ্নিত করবার টুলে নতুন ক�োন�ো বৈশিষ্ট্য য�োগ করতে
পারছি কিনা, এ বিষয়ে সকলের মতামত নেব।
ুঁ বের
▪ তারপর বলব, এবারে আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের পেশাজীবী সম্প্রদায়গুল�োর বৈশিষ্ট্য খজে
করার জন্য অনুসন্ধানী কাজ করব। আগের দল অনুযায়ী কাজ করতে দিতে পারি বা প্রয়�োজনব�োধে
একটু অদল-বদল করে দিতে পারি। শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট, বই, পত্রিকা ইত্যাদির সাহায্য নিয়ে
ুঁ বের করতে বলব। এছাড়া পরিবারের, আশেপাশের বা পরিচিত কেউ বিদেশে থাকলে তার
তথ্য খজে
সঙ্গে য�োগায�োগ করে তথ্য সংগ্রহ করতে উৎসাহিত করব।
▪ আগের মতই উপস্থাপনের দিন ঠিক করব, বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে ফলাফল উপস্থাপন করতে
শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করব। কীসের ভিত্তিতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে তা জানিয়ে দেব�ো।
▪ উপস্থাপনের পর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করব এবং ফিডব্যাক দেব�ো।
85
▪ জানতে চাইব, আমাদের আশেপাশে কোন কোন পেশাজীবী মানুষ আমাদের সাহায্য করেন?
রিকশাওয়ালা, দ�োকানদার, গাড়ি চালক, গৃহকর্মী, ফেরিওয়ালা, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নাপিত, শিক্ষক,
চিকিৎসক, মিস্ত্রী, দার�োয়ান, পুলিশ ইত্যাদি উদাহরণ আসবে। প্রশ্ন করব, আশেপাশের পেশাজীবীরা
ত�ো আমাদের জন্য অনেক কাজ করেন, আমরা তাদের জন্য কী কী করি? (ধারণা করা যাচ্ছে,
শিক্ষার্থীরা সাহায্য নেওয়ার উদাহরণ যত সহজে খজে ুঁ বের করতে পারবে, নিজে সাহায্য করবার
অভিজ্ঞতা ততটা বলতে পারবে না।)
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, অনুশীলন বই থেকে নিচের ছকটি পূরণ করতে।
আমার আশেপাশের
আমি তার কাছে যে সাহায্য পাই আমি তাকে যেভাবে সাহায্য করি
পেশাজীবী
১.
২.
৩.
৪.
৫.
▪ ক�োন�ো শিক্ষার্থী যদি সেবা বা পণ্যের বিনিময়ে টাকা দেওয়ার উদাহরণ দেয় তাহলে (অনুশীলন
বইয়ের আল�োচনার মতন করে) “সেবার মূল্য যে কেবল টাকা দিয়ে পরিশ�োধ করা যায় না” একথা
বুঝিয়ে বলব।
কেউ আমাকে সাহায্য করলে, তার জন্যও আমার কিছু করার আছে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, ধন্যবাদজ্ঞাপনও যে
জরুরি তা বাস্তব উদাহরণের সাহায্যে ব�োঝাব। এক্ষেত্রে সরাসরি নিজের বক্তব্য প্রকাশ না করে বিভিন্ন পরিস্থিতি
বর্ণনা করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মন্তব্য শুনতে পারি। যেমন: অরিত্রর মা অসুস্থ। সে মাকে নিয়ে হাসপাতালে
গেল। অরিত্রর কাছে টাকা আছে, কিন্তু তাও সে মায়ের চিকিৎসা করাতে পারল না। কারণ ওইদিন হাসপাতালে
ডাক্তারদের ধর্মঘট ছিল।
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, আমরা যাদের কাছ থেকে সাহায্য নিচ্ছি, তাদের জন্য আমদের কী করণীয়, চল�ো
ভেবে বের করি এবং তালিকা তৈরি করি। নমুনা তালিকা:
86
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের একদিন বিশ্রাম করতে দিয়ে সপ্তাহে একদিন বিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন করা
▪ কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, জৈব সার, প্রাকৃতিক কীটনাশক সম্পর্কে জানান�ো
▪ দরিদ্র শিশুদের লেখাপড়ায় সাহায্য করা, নতুন বা পুর�োন�ো বই, শিক্ষা উপকরণ, খেলনা ইত্যাদি
দেওয়া
▪ আশেপাশের সম্প্রদায়ের বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে গল্প করা, তাদের বই, পত্রিকা পড়ে শ�োনান�ো
▪ ব্যাংকে জমান�ো টাকা দিয়ে শীতবস্ত্র দেওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে পরিবারগুল�োকে সহায়তা
দেওয়া
▪
▪ শিক্ষার্থীদের জানাব, কাজটি আমরা সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের মাধ্যমে বছরব্যাপী করব এবং নিজেদের
আচরণেও প্রয়�োগ করব।
▪ তাদের এলাকাভিত্তিক দল তৈরি করতে সাহায্য করব।
▪ শিক্ষার্থীদের তৈরি তালিকা থেকে দলে করবার জন্য আমরা কিছু কাজ বেছে নেব, আর কিছু কাজ
এককভাবে করতে বলব।
▪ দলীয় এবং একক কাজের তালিকা অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বছরব্যাপী আশেপাশের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের
মানুষদের সহয�োগিতা করবে। আমি তাদের কাজের নিয়মিত খোঁজ-খবর নেব�ো, উৎসাহ য�োগাব।
প্রয়�োজন হলে সহায়তা এবং পরামর্শ দেব�ো।
▪ দলীয় এবং একক কাজের হিসেব রাখবার জন্য শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের ছকটি ব্যবহার করতে
বলব।
▪ তাদের কাজের বিষয়টি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝিয়ে বলব। কাজের উদাহরণ: ফাতেমা ও তার বন্ধুরা
দরিদ্রদের শীতবস্ত্র দিয়েছে, রনি তার চাচাত�ো ব�োন ইতিকে দাদুর সঙ্গে গল্প করা, তাকে বই পড়ে
শ�োনান�োয় অনুপ্রাণিত করেছে।
দলীয়
কাজ
একক
কাজ
▪ বছর শেষে বা ষান্মাষিক হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাজগুল�োর মূল্যায়ন করব। এক দল আরেক দলের
কাজ মনিটর করবে ও মূল্যায়ন করবে
87
মূল্যায়নের ছক
পারদর্শিতার নির্দেশক ৪ ও ৫ এর জন্য
পেশাজীবী সম্প্রদায় আশে পাশের ক�োন�ো আশে পাশের এক আশে পাশের তিনটি বা
চিহ্নিত করা পেশাজীবী সম্প্রদায় কে বা দুইটি পেশাজীবী তার বেশি পেশাজীবী
সঠিক ভাবে চিহ্নিত সম্প্রদায় চিহ্নিত করতে সম্প্রদায় চিহ্নিত করতে
করতে তাদের সাহায্যের পেরেছে পেরেছে
প্রয়�োজন
পেশাজীবী সম্প্রদায় এর পেশাজীবী সম্প্রদায় এর পেশাজীবী সম্প্রদায় পেশাজীবী সম্প্রদায় এর
সাথে আল�োচনা করে কাছে গিয়ে তাদের সাথে এর কাছে গিয়ে তাদের কাছে গিয়ে তাদের সাথে
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ আল�োচনা করে তথ্য সাথে আল�োচনা করলেও আল�োচনা করে তাদের
সংগ্রহ করতে পারেনি। তাদের সম্পর্কে তেমন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ক�োন�ো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছে।
উঠে আসেনি।
পেশাজীবী সম্প্রদায় কে ক�োন�ো পেশাজীবী শুধু একটি পেশাজীবী অন্তত পক্ষে একটি
সাহায্য করা সম্প্রদায় কে সাহায্য সম্প্রদায় কে একটিমাত্র পেশাজীবী সম্প্রদায়
করতে পারেনি। কাজে সাহায্য করতে কে তাদের একাধিক
পেরেছে। কাজে বা অন্যক�োনভাবে
সাহায্য করেছে। অথবা
একাধিক পেশাজীবী
সম্প্রদায় কে সাহায্য
করেছে।
88
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
পেশাজীবী সম্প্রদায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন
হ্যাঁ না
সম্মান করেছে
হ্যাঁ বিকাশমান
না প্রারম্ভিক
এই বিষয়ে দক্ষ স্তরটি আমরা আপাতত ব্যবহার করব�ো না। এসব বিষয়ে দক্ষ হয়ে ওঠা সময় সাপেক্ষও বটে।
89
মুক্তিযুদ্ধের দেশি ও বিদেশি বন্ধুরা
শ্রেণিভিত্তিক য�োগ্যতা: ইসাবি ৭.৪
মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট পর ্যাল�োচনা করে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও
ভূমিকা মূল্যায়নের সক্ষমতা।
মূল্যব�োধ ও দৃষ্টিভঙ্গি:
▪ ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্দ্ধে উঠে জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে উদ্বুদ্ধ হবে এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে
সামাজিক ঘটনাকে বিশ্লেষণের য�োগ্যতা অর্জন করবে।
▪ জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক
প্রেক্ষাপটও উপলব্ধি করবে।
▪ মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয়, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ও বৈশ্বিক স্তরে বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা
সম্পর্কে জানবে ও তা মূল্যায়ন করতে শিখবে।
▪ আত্মপরিচয়ের প্রচলিত দেশ, ধর্ম, ভাষা-সংস্কৃতির পরিচয়ের পাশাপাশি নিজের আন্তর্জাতিক,
বৈশ্বিক পরিচয়ের সন্ধান পাবে এবং এতে বিশ্বনাগরিক ও বিশ্ব মানবতাব�োধ তৈরি হবে।
▪ ইতিহাসের ক�োন�ো ঘটনার সরল ব্যাখ্যার পাশাপাশি এবং বহু পাক্ষিক জটিল বাস্তবতা সম্পর্কে
সচেতনতা অর্জন ও তা উপলব্ধি করবে।
সারসংক্ষেপ
শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে প্রকল্পভিত্তিক কাজ করবে। এ জন্য শিক্ষক ও
শিক্ষার্থীদের কিছু কাজ সম্পন্ন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা কাজগুল�ো দলগতভাবে সম্পন্ন করবে। শিক্ষকরা শুধু
সহায়কের ভূমিকা পালন করবেন। ক�োন অবস্থাতেই শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরাসরি ভূমিকা
নেবেন না বা কাজ করে দেবেন না। কাজ করার জন্য শিক্ষার্থীরা পরিবার ও সমাজের বিভিন্ন মানুষের কাছ
থেকে মতামত ও তথ্য গ্রহণ করবে। শিক্ষার্থীরা প্রথমে নিজেরাই পরিকল্পনা করবে এবং এরপর পরিকল্পনা
অনুসারে ধাপে ধাপে কাজগুল�ো সম্পন্ন করবে। এবারের কাজের বৈশিষ্ট্য কি আমরা খেয়াল করেছি? একাজটি
মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার চেয়ে তথ্যের ওপর বেশি নির্ভরশীল। এ বিষয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার অধিকারী
মানুষ বেশি পাওয়া যাবে না, তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্ভর করতে হবে তথ্যাভিজ্ঞ ব্যক্তির ওপর (গবেষক,
অধ্যাপক, ভাল�ো পাঠক) গবেষণা গ্রন্থ ও পাঠ্য বই, পুর�োন�ো পত্রিকার সংগ্রহ, মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ও ভিডিও,
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন প্রকাশনার ওপর। ফলে প্রয়�োজনে শিক্ষার্থীদের তথ্যের উৎস সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে
সহায়তা করতে হবে শিক্ষকদের। তারা সাক্ষাৎকার গ্রহণ, বক্তব্য গ্রহণ, পত্র-পত্রিকা ও গ্রন্থপাঠ, চলচ্চিত্র ও
ভিডিও দর্শন, ইন্টারনেট ব্যবহার করে পরিকল্পনা অনুসারে ধাপে ধাপে কাজ সম্পন্ন করবে।
কাজের মাধ্যমে তারা মুক্তিযুদ্ধের বৃহত্তর প্রেক্ষাপট, যেমন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বুঝবে।
তারা বুঝবে যে মুক্তিযুদ্ধ কেবল বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এতে আরও আঞ্চলিক
ও বৈশ্বিক বিভিন্ন পক্ষ ভ‚মিকা পালন করেছিল। যারা এতে যুক্ত হয়েছিল তাদের সাথে আমাদের ধর্ম-ভাষা-
কৃষ্টিগত মিল-অমিলের প্রশ্ন সেদিন ওঠে নি। অর্থাৎ ব্যক্তিক ও স্থানিক গুরুত্ব ছাপিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক
ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বই ছিল বেশি। এটি ক�োন�ো একমাত্রিক বা একরৈখিক বিষয় ছিল না। বহুমাত্রিক ও
বহুরৈখিক বিষয়। এটি উপলব্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ব্যক্তিগত পরিচয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক
পরিচয় ( যেমন : বিশ্বনাগরিক) সম্পকে সচেতন হবে।
90
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
তবে শিক্ষার্থীরা সরাসরি জানবে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশি হয়েও ক�োন ক্ষেত্রে ক�োন ব্যক্তি আমাদের
পক্ষে কাজ করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন দেশের অবস্থান ও ভ‚মিকা সম্পর্কে জানবে এবং তা
মূল্যায়নেও সক্ষম হবে।
▪ এই অনুসন্ধান, পঠনপাঠন, দেখা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জানবে -
▪ মুক্তিযুদ্ধের বহুপক্ষীয় বাস্তবতা এবং পক্ষের ও বিপেক্ষের মূল দেশ ও ব্যক্তির পরিচয় জানবে।
▪ মুক্তিযুদ্ধ যে একমাত্রিক নয় বহুমাত্রিক বিষয় তা জানবে ও বুঝবে।
▪ ক�োন�ো ক�োন�ো দেশ বিপক্ষে থাকলেও সেসব দেশের সচেতন মানুষের ( যেমন পাকিস্তান,
যুক্তরাষ্ট্র) মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকার কথা জানবে।
▪ বিদেশিদের যেসব কাজ মুক্তিযযুদ্ধের গতিপথে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছে সেসব সম্পর্কে
জানবে ও তা বুঝবে।
▪ মুক্তিযুদ্ধে দেশ হিসেবে ভারতের এবং নেতা হিসেবে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধির ভ‚মিকা জানবে ও
তার তাৎপর ্য উপলব্ধি করবে।
এসব উপলব্ধি শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ক�োন�ো সামাজিক ঘটনাকে বিশ্লেষণ করার য�োগ্যতা
তৈরি করবে এবং তাদেরকে দেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, সহনশীলতা ও বৈশ্বিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করবে।
অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত তথ্যসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও প্রচার করার জন্য তথ্য প্রযুক্তি সহায়তা
গ্রহণ করতে পারবে। কার ্যক্রমটি সুষ্ঠুভাবে ও নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা
পাঠ্যপুস্তকলব্ধ জ্ঞানসহ বর্ণিত অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর ্যাল�োচনা করব। কী কী উপায়ে মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক
ও বৈশ্বিক বিভিন্ন পক্ষের ভ‚মিকা সম্পর্কে অনুসন্ধান করা যায় সে বিষয়ে দলগত প্রস্তাবনা তৈরি করবে। অনুসন্ধান
পরিচালনার জন্য তথ্য ফরম (টুলস) নিজেরাই তৈরি করবে।
পাঠ্যবইয়ে প্রদত্ত অধ্যাপক আজিজুল হকের মত ব্যক্তির প্রদত্ত বক্তব্যই হবে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত বর্তমান বিষয়ের
তথ্য অনুসন্ধানের প্রাথমিক ক্ষেত্র। দলের প্রত্যেক সদস্য সম্ভাব্য বই, পত্রিকা, ব্যক্তি, চলচ্চিত্র, ভিডিও ইত্যাদির
তালিকা তৈরি করবে। তারপরে কাজের ধাপগুল�ো ধারাবাহিকভাবে লিখবে ও কাজ শুরু করবে। প্রত্যেক দল
পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ক�ৌশল ও সময়সীমা, দলীয় ও ব্যক্তিগত দায়িত্ব, চ্যালেঞ্জসম‚হ শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করবে
এবং ফিল্ড ট্রিপ/অতিথিদের আমন্ত্রণের পূর্বে নিজেদের কর্মকান্ডের রূপরেখা প্রণয়ন করবে।
শিক্ষার্থীরা সাক্ষাৎকার/ আল�োচনার জন্য সুবিধাজনক সময় ও স্থান নির্ধারণ করবে এবং পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী
আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিখনফল ভিত্তিক/ পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎকার সহায়িকা/প্রশ্নপত্রের উত্তর জানার চেষ্টা
করবে। সাক্ষাৎকারসমূহ ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির হওয়ায় প্রাপ্ত প্রতিটি তথ্য হবে ম�ৌলিক ও ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন। দলের
শিক্ষার্থীরা সকলেই যাতে বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করে অবদান রাখতে পারে সে বিষয়টি শিক্ষকরা নিশ্চিত করবেন।
শিক্ষার্থীরা সংগৃহীত তথ্য পরিমার্জন ও বিশ্লেষণ করে একটি রিপ�োর্ট প্রস্তুত করবে। একই সাথে কীভাবে প্রাপ্ত তথ্য
উপস্থাপন করবে সে সিদ্ধান্ত নেবে (প�োস্টার, নাটিকা, গান, ভিডিও, বই, প্রদর্শনী, দেয়াল পত্রিকা ইত্যাদি)। অনুষ্ঠান
আয়�োজনের সার্বিক প্রস্তুতি (যেমন ক�োথায়, কীভাবে আয়�োজন করবে, কাদের দাওয়াত দিবে, নিজেদের কী ধরণের
প্রস্তুতি লাগবে) গ্রহণ করতে শ্রেণি শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষকের সহায়তা নেবে। যেক�োন�ো জাতীয় (যেমন ২৬শে মার্চ
স্বাধীনতা দিবস, ১৪ই এপ্রিল বাংলা নববর্ষ, ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস) দিবসের সাথে মিলিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষক,
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গের সামনে উপস্থাপন করবে। পরে কীভাবে ক�োন পর ্যায়ে তাদের অর্জিত
জ্ঞান, দেশপ্রেম, জাতীয়তাব�োধ ও গণতান্ত্রিক চেতনা সৃষ্টিতে কাজে লাগাবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত উপস্থাপনা করবে।
পরিকল্পনা, প্রস্তুতি, সাক্ষাৎকার ও উপস্থাপনাসহ সকল পর ্যায়ের কাজসমূহ ভিডিওতে ধারণ করে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব
ব্যবস্থাপনায় তাদের প্রকল্প হিসেবে সংরক্ষণ ও প্রচার করবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এসব তথ্য পরবর্তী গবেষণার জন্য
প্রাতিষ্ঠানিক ও জাতীয়ভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
91
মূল্যায়ন:
শিখন কালীন মূল্যায়ন ছাড়া এখানে ৬ মাস পর আলাদা ক�োন�ো সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে না। শিখন কালীন
মূল্যায়নের অংশ হিসেবে যে প্রজেক্টের কাজ তারা করবে ও উপস্থাপন করবে, তার ভিত্তিতেই পারদর্শিতার
নির্দেশক ৭.৪ এর মূল্যায়ন হবে য়ার সেটি ই ৬ মাস এর সামষীক মূল্যায়নে য�োগ হবে।
সেশন-১
ধাপ ১: অনুসন্ধানমূলক প্রকল্পভিত্তিক শিখন সম্পর্কে ধারণা
▪ মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর ্যায়ে বিভিন্ন ব্যক্তি/পক্ষের ভূমিকা বিষয়ক এই কাজটি শিক্ষার্থীরা
অনুসন্ধানমূলক প্রকল্প পরিচালনার ধাপ অনুসরণ করে করবে। অনুসন্ধানমূলক কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে
ইত�োমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি।
প্রকল্পভিত্তিক কাজে মূলত সক্রিয় অনুসন্ধানের মাধ্যমে আমরা ক�োন�ো বাস্তব সমস্যা
ুঁ
সমাধানের চেষ্টা করি অথবা ক�োন�ো চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নের উত্তর খজি। এই কাজগুল�ো
তুলনামূলকভাবে দীর্ঘসময় ধরে করে থাকি। অনুসন্ধানমূলক কাজের মাধ্যমে আমরা যে
ফলাফল পাই তা সমস্যাটির সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষের কাছে উপস্থাপন করি যাতে সংশ্লিষ্টরা
উপকৃত হতে পারে।
▪ একটা বিষয় আমাদের পরিস্কারভাবে জেনে রাখতে হবে যে, প্রকল্পভিত্তিক কাজ মানেই সব সময়
অনুসন্ধানমূলক কাজ নয় । প্রকল্পে অনুসন্ধান থাকতে পারে, কিন্তু ক�োন�ো মডেল তৈরি করা বা ক�োন�ো
কিছু সৃষ্টি করা বা ক�োন�ো বাস্তব সমস্যার সমাধানও প্রকল্পভিত্তিক কাজ হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে
বলা যায় যে, একটি প্রদর্শনী আয়�োজন, দেয়াল পত্রিকা তৈরি, ক�োন�ো অ্যালবাম বা বিষয়ভিত্তিক মডেল
তৈরি করা বা ক�োন�ো এলাকার মানচিত্র প্রস্তুত করাও প্রকল্পভিত্তিক কাজের উদ্দেশ্য হতে পারে।
▪ পুর�ো প্রকল্পের কাজ করতে আমরা শিক্ষার্থীদের যেভাবে সহায়তা করব�ো তা ব�োঝার জন্য নিচের
ডায়াগ্রামে কাজের ধাপসমূহ দেখান�ো হয়েছে (এই ডায়াগ্রাম শিক্ষকের ব�োঝার সুবিধার্থে)। এরপরে
প্রতিটি ধাপের বিস্তারিত বিবরণ বর্ণিত আছে।
92
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
ধাপ ২: ওরিয়েন্টেশন/ সমস্যা চিহ্নিতকরণ
▪ মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি/পক্ষ/সংস্থা/দেশের ভূমিকা বিষয়ে এই প্রকল্পভিত্তিক কাজের ক�োন�ো একটি
শির�োনাম শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কথ�োপকথনের মাধ্যমে বের করে আনার জন্য আমরা নিচের মত
মানসিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি। (এটি একটি উদাহরণ মাত্র, আমরা নিজেদের মত করে শ্রেণিকক্ষে
মানসিক অবস্থা সৃষ্টি করব�ো)।
ক) আমাদের দেশ কীভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে?
খ) কেন�ো, কখন এবং কত দিন ধরে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে?
গ) কার নেতৃত্বে, কীভাবে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে?
ঘ) শুধু কি বাংলাদেশের মানুষেরাই মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছিলেন? অন্যান্য দেশের মানুষেরা কী
ক�োন�ো অবদান রেখেছিলেন? এঁদের মধ্যে কারও কথা কি ত�োমরা জান?
ঙ) উত্তর হ্যাঁ হলে, তিনি কী ধরণের ভূমিকা রেখেছিলেন?
▪ এই ধরনের কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে আমরা ক্লাসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আল�োচনার পরিবেশ তৈরি করব�ো।
এই প্রসঙ্গে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি ক�োন�ো মানুষের বীরত্বের ক�োন�ো ঘটনা বলতে পারি। উদাহরণ
হিসেবে শিক্ষকের জবানিতে নিচের ঘটনাটি দেয়া হল, মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি মানুষদের অসংখ্য বীরত্বের/
মানবিকতার ঘটনা থেকে এরকম অন্য ক�োন�ো ঘটনাও আমরা বলতে পারি –
93
পাকিস্তানি সামরিক সদস্যদের চ�োখকে ফাঁকি দিয়ে ড্রিং ৩২ ঘণ্টার বেশি সময় হ�োটেলে লুকিয়ে ছিলেন।
উদ্দেশ্য একটাই - পাকিস্তানের হিংসাত্মক ঘটনার খবর তিনি বিশ্ববাসীকে জানাবেন। ২৭ ঘণ্টা পরে যখন
কারফিউ বা সান্ধ্য আইন তুলে নেওয়া হয় তখন তিনি রাস্তায় টহলরত মিলিটারির চ�োখ এড়িয়ে পথে
নামলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং পুর�োন�ো ঢাকার কিছু জায়গা থেকে তিনি
গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের ছবি তুললেন, খবর সংগ্রহ করলেন।
তাঁর আসল কাজ ত�ো হল, এবার অবরুদ্ধ দেশ থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরুতে হবে, কারণ খবরটা ত�ো
বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে। নানা ক�ৌশলে, এমনকি তথ্য টুকে রাখা কাগজ, ছবির নেগেটিভ ম�োজার মধ্যে
লুকিয়ে রেখে ক�োন�ো মতে বিমানে উঠে অবরুদ্ধ দেশ ছেড়ে সাইমন ব্যাংকক প�ৌঁছান।
ব্যাংকক থেকেই তিনি তাঁর বিখ্যাত প্রতিবেদন ‘পাকিস্তানে ট্যাংকের নিচে বিদ্রোহ দমন’ শির�োনাম
পাঠিয়ে দেন তাঁর পত্রিকা লন্ডনের দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফে। এটি ২৯ মার্চ প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনটির শুরুর বাক্য ছিল এরকম - ‘সৃষ্টিকর্তা এবং ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের নামে ঢাকা আজ বিধ্বস্ত
ও ভয়ার্ত এক শহর। চব্বিশ ঘণ্টা ধরে ঠান্ডা মাথায় বর্বরভাবে কামানের গ�োলার আঘাতে ঢাকায় একরাতে
অন্তত ৭০০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, বিশাল বিশাল এলাকার ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং পূর্ব
পাকিস্তানের স্বাধীনতার সংগ্রামকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।’ সে রাতের পরে প্রেতপুরির মত বিধ্বস্ত,
অগ্নিদগ্ধ, স্তূপিকৃত লাশের এক শহর দেখে তাঁর মনে হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম তখনকার মত
শেষ। কিন্তু এই খবর এবং তার সাথের ছবিগুল�ো বিশ্ববাসীর কাছে এই বাংলায় পাকিস্তানিদের চালান�ো
ভয়ঙ্কর হত্যাকান্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে সুস্পষ্ট বারতা দিয়েছিল। এটি মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পক্ষে বিশ্ব
জনমত গঠনে সহায়ক হয়েছিল।
সাইমন ড্রিং সারা জীবনে ভিয়েতনাম যুদ্ধসহ পৃথিবীর নানা প্রান্তে ২০টি যুদ্ধ ও বিপ্লবের খবর সংগ্রহ করে
বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপিয়ে ছিলেন, টিভিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। ২০২১ সনে ৭৬ বছর বয়সে তাঁর
মৃত্যু হয়।
▪ এ ত�ো গেল একজন সাইমন ড্রিং-এর কথা। এরকম অনেক বিদেশি মানুষ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নানা
রকমভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা কি কখনও জানব�ো না আমাদের মুক্তি ও স্বাধীনতার
জন্যে এমন অসংখ্য বিদেশিদের কথা! এমন উদার মানবিক জনগ�োষ্ঠীর কথা!
▪ ..নিশ্চয়ই জানব�ো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে জানব�ো কীভাবে?
▪ এবার আমরা ও শিক্ষার্থী জানব যে ইতিহাসের সব উপাদান, সব বৈশিষ্ট্য নিজেদের ছ�োট্ট গন্ডিরমধ্যে
পাওয়া যাবে না। এর জন্যে বইপুস্তক, নথিপত্রসহ বিভিন্ন অপ্রচলিত উৎসের খোঁজ করতে পারি, যেমন
চলচ্চিত্র, ভিডিও, ক�োন�ো গবেষক বা বিশেষজ্ঞের সহায়তা, পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা ইত্যাদি।
▪ ব�োঝা যাচ্ছে এবারের য�োগ্যতা অর্জনে আমাদের রীতিমত গবেষকের মত কাজ করতে হবে।
সেশন-২
▪ এই সেশনের শুরুতে আমরা জানতে চাইতে পারি, মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন পক্ষ
সম্পর্কে তারা কী কী জানতে চায়? শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারে, যেমন- কী ঘটেছিল, পক্ষ-
বিপক্ষ কীভাবে নির্ণয় করা যায়। বিভিন্ন ব্যক্তি, দেশ, সংস্থার নাম করে পক্ষ জানতে চাইতে পারে।
তাদের শ�োনা দুয়েকজন ব্যক্তি, দুএকটি ঘটনা সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারে। তারা যা যা প্রশ্ন করবে সে
সবগুল�োকে আমরা ন�োট করব�ো এবং আল�োচনা শেষে কয়েকটি মূল প্রশ্নে ভাগ করে নেব�ো, যেগুল�োর
ুঁ বের করবে। যেমন-
উত্তর এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা খজে
94
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
১। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিপুল শরণার্থীরা ক�োথায় এবং কীভাবে আশ্রয় পেয়েছিল?
২। অপারেশন সার্চলাইটের নৃশংস হত্যাকান্ডের খবর বিশ্বে কীভাবে ছড়িয়েছিল?
৩। প্রবাসী সরকার গঠন ও মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে কারা সাহায্য করেছিল?
এরকম আরও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আল�োচনা হতে পারে।
▪ এই পর ্যায়ে আমরা শ্রেণিকক্ষের কার�ো পরিবারের কেউ এ বিষয়ে বিশেষ ভাবে জানেন কিনা তা জিজ্ঞেস
করতে পারি। যদি এমন কেউ থাকেন তবে তাদের সহায়তা আমরা নিতে পারি।
▪ এরপর আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইব�ো, অধ্যাপক আজিজুল হকের কাছে তারা যে বিবরণী
শুনেছে সে বিষয়ে আরও তথ্য ক�োথা থেকে জানা যেতে পারে? শিক্ষার্থীদের উত্তরে অনেক কিছু আসতে
পারে, যেমন- এলাকার তথ্যাভিজ্ঞ মানুষদের কাছ থেকে, পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেসব তথ্য আছে
সেখান থেকে, স্থানীয় লাইব্রেরী থেকে, ওই সময়ের পত্রপত্রিকা থেকে, ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট
থেকে ইত্যাদি।
▪ তখন আমরা তাদের কাছে জানতে চাইতে পারি, এসব উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য সঠিক কিনা তা কীভাবে
জানব? শিক্ষার্থীরা তাদের মত করে উত্তর দেবে, সেখানে একাধিক উৎস থেকে তথ্য যাচাই করার মত
উত্তর থাকলে আমরা সেটার উপর জ�োর দেব�ো।
▪ এরপর আমরা জিজ্ঞেস করতে পারি মুক্তিযুদ্ধের এই দিকটি সম্পর্কে এলাকার ঘটনা যারা জানেন না
তাদের জানান�োর জন্য আমরা কী করতে পারি। শিক্ষার্থীদের উত্তর নিয়ে কিছুটা আল�োচনা করে আমরা
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যের সাথে এই আল�োচনার সম্পর্ক স্থাপন করব�ো।
▪ এবার এই পুর�ো আল�োচনার ভিত্তিতে এই পুর�ো কাজটি কীভাবে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাবে সে অনুযায়ী
আমরা ধাপসমূহকে য�ৌক্তিকভাবে সাজাব�ো এবং ব�োর্ডে তার একটি র�োড ম্যাপ তৈরি করব�ো।
▪ আমাদের ব�োঝার সুবিধার্থে শুরুতে যে ডায়াগ্রাম দেয়া হয়েছিল তা ক্লাসে শেয়ার করবেন না। বরং তার
আল�োকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মতামত নিয়ে ধাপে ধাপে কাজের পরিকল্পনা সাজাবেন।
সেশন-৩
ধাপ ৩: প্রস্তুতি (দলগঠন ও কর্মপরিকল্পনা)
▪ এই পর ্যায়ে আমরা শিক্ষার্থীদের দল গঠন করার নির্দেশ দেব�ো। শিক্ষার্থীদের কাছেই জানতে চাইবো
কীভাবে দল গঠন করলে নির্দিষ্ট ক�োন�ো ব্যক্তি/দেশ/ঘটনা/অনুষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করা সহজ হবে।
শিক্ষার্থীরা কাছাকাছি বাসায় থাকে এমন ভাবে দল গঠন করার প্রস্তাব দিতে পারে। যে মতামতই
আসুক, সবার আল�োচনার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট নীতি মেনে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের বাসস্থানের
এলাকা ভিত্তিক/ সংখ্যা ভিত্তিক দল গঠন করবে এবং দলে প্রত্যেকের দায়িত্ব নিশ্চিত করে শিক্ষকের
পরামর্শ গ্রহণ করবে।
▪ প্রতি দলে ৮ থেকে ১০ জন সদস্য থাকতে পারে, পুর�ো কার ্যক্রম দলীয় কাজভিত্তিক হবে এবং সকল
শিক্ষার্থী শুরু থেকে শেষ পর ্যন্ত তার নির্ধারিত দলের সাথে কাজ করবে।
▪ মূল কাজ শুরু করার পূর্বে দীর্ঘমেয়াদি এই কাজে দলের সদস্যরা কী কী নিয়ম-নীতি মেনে চলবে তার
একটি তালিকা তৈরি করবে এবং সকলে অনুসরণ করার জন্য একমত হবে। নিচে নমুনা হিসেবে
কয়েকটি নিয়ম উল্লেখ করা হল�ো-
95
শিক্ষার্থীদের পালনীয় নিয়ম-নীতি
১ কাজ করার সময় সকল সদস্যের প্রয়�োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
২ দলের সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিজের মতামত য�ৌক্তিকভাবে দৃঢ়তার সাথে তুলে
ধরা
৩ নিজের মতামত প্রকাশে কখনও ক�োন�ো কারণেই দ্বিধা না করা
৪ অন্যের মতামত শ্রদ্ধার সাথে য�ৌক্তিক বিচার-বিশ্লেষণ করে গ্রহণ করা
৫ দলীয় কাজে ছেলে-মেয়ে ও সক্ষমতার ধরণ নির্বিশেষে দলের সকল সদস্যের সক্রিয় অংশগ্রহণ
নিশ্চিত করা
৬ সাক্ষাৎকার নেওয়ার আগেই সাক্ষাৎকার দাতার অনুমতি নেওয়া.......
৭
৮
৯
▪ আগের ধাপের র�োড ম্যাপ অনুযায়ী প্রত্যেক দল নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার জন্য
তাদের নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে। আমরা প্রতিদলের শিক্ষার্থীদের সাথে আল�োচনার মাধ্যমে
কর্ম পরিকল্পনা বিষয়ক ধাপসমূহ তৈরি করতে সহয�োগিতা করব�ো।
সেশন-৪
ধাপ ৪: বিদ্যমান তথ্য পর ্যাল�োচনা (লিটারেচার রিভিউ)
▪ যদিও এর আগে অনুসন্ধানমূলক কাজের ক্ষেত্রে যে ম�ৌলিক ধাপগুল�োর কথা জেনেছিলাম সেখানে
বিদ্যমান তথ্য পর ্যাল�োচনা বা লিটারেচার রিভিউ এর ধাপটি ছিল না, এখানে এই কাজটিতে এই ধাপটি
যুক্ত হবে। অনুসন্ধানমূলক কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় বিদ্যমান তথ্য জানা থাকলে নতুন কী তথ্য
সংগ্রহ করতে হবে তা নির্ধারণ করা সহজতর হয়।
▪ আমরা এই ধাপে সবগুল�ো দলের কাছে জানতে চাইব�ো, যে বিষয়টি নিয়ে আল�োচনা হচ্ছে সে বিষয়ে
যেসব তথ্য/ঘটনা/নিদর্শন ইত�োমধ্যে সংরক্ষণ করা হয়েছে সেসব ক�োথায় পাওয়া যাবে? যদিও
সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরবর্তী ধাপে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করবে, তবে এই ধাপে
বিদ্যমান তথ্য পর ্যাল�োচনা করবে। শিক্ষার্থীরা কেউ কেউ হয়ত বই, পত্রিকা, ডকুমেন্টারি, দলিলপত্র
ইত্যাদির উদাহরণ দিতে পারে। আমরা তখন সকল দলকে নির্দেশ দেব�ো সম্ভাব্য উৎসের তালিকা তৈরি
করতে এবং তালিকা অনুযায়ী উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে।
▪ প্রতিটি দল নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে তালিকায় থাকা উৎসসমূহ থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে এবং তথ্য উৎসের
তালিকা এবং অনুসন্ধান প্রক্রিয়াসহ তাদের প্রাপ্ত তথ্যাবলি শিক্ষকের সাথে শেয়ার করবে।
পাঠ্যপুস্তক থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অংশটুকু পরিশিষ্টতে সংযুক্ত করতে হবে
▪ এই সেশনের কার ্যক্রম হিসেবে আমরা শিক্ষার্থীদের বই পড়া ক্লাব গঠনে সহয�োগিতা করব�ো। লাইব্রেরিতে
ুঁ
নিয়ে গিয়ে কীভাবে লাইব্রেরিতে বই খজতে হয়, ব্যবহার করতে হয়, লাইব্রেরি ব্যবহারের নিয়ম-নীতি
এবং সদস্য হয়ে বই ধার নিতে হয় সে বিষয়গুল�ো হাত-কলমে দেখিয়ে দেব�ো।
96
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সেশন- ৫
বই পড়া ক্লাব
▪ আমরা শিক্ষার্থীদের সক্রিয় নাগরিক ক্লাব ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব গঠনের পদ্ধতি অনুসরণ করে বই
পড়া ক্লাব গঠনে সহায়তা করব�ো।
▪ ক্লাব গঠন শেষ হলে প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা বই পড়া ক্লাবের কাজের ধরণ এবং সারা বছরের
কাজের পরিকল্পনা করতে সহয�োগিতা করব�ো।
▪ প্রথম দিনেই লাইব্রেরিতে (স্কুল/স্থানীয়/থানা/জেলা লাইব্রেরিতে (যদি থাকে) নিয়ে গিয়ে সবাইকে সদস্য
করে কীভাবে বই ধার নিতে হয় এবং ফেরৎ দিতে হয় তা শিখিয়ে দেব�ো। আর যদি স্কুলে বা আশেপাশে
ক�োন�ো লাইব্রেরী না থাকে তাহলে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকগণ ও এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষদের
সহয�োগিতায় স্কুলের একটি কক্ষে লাইব্রেরি গড়ে ত�োলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে বই পড়া ক্লাবের
কার ্যক্রম হিসেবে। সাথে প্রতি সপ্তাহে বা পনের�ো দিনে একটি করে বই পড়ার কর্মসূচি ত�ো থাকবেই।
▪ এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থা যারা শিশুদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে ইত�োমধ্যে কাজ করছে বিধি-বিধান
মেনে তাদের সহয�োগিতাও গ্রহণ করা যেতে পারে।
▪ বই পড়া ক্লাবের সাথে অন্য সকল বিষয়েরই সম্পৃক্ততা রয়েছে। কাজেই ঐসব বিষয়ের শিক্ষকদের
সাথেও আল�োচনা করে সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের উপস্থিতি ও ক্লাসের সময় ক্লাবের কাজে যাতে ব্যবহার
করা হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। প্রয়�োজনে প্রধান শিক্ষকের সহয�োগিতা গ্রহণ করবেন।
সেশন-৬
ধাপ ৫: অনুসন্ধান ও তথ্য সংগ্রহ
▪ এই পর ্যায়ে শিক্ষার্থীরা যার যার পরিবারের বয়স্ক স্বজন/প্রতিবেশীদের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক
ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে। তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রতি দল নিজেরা আল�োচনা করে
সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রশ্নমালা তৈরি করবে।সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রশ্নমালা হল�ো তথ্য সংগ্রহের একটি
উপকরণ। আমরা এতে কিছু প্রশ্ন আগে থেকেই তৈরি করে রাখি যেগুল�ো সাক্ষাৎকারদাতাদের জিজ্ঞাসা
করি। এই প্রশ্নগুল�ো এমনভাবে তৈরি করতে হয় যেন এগুল�োর উত্তর পাওয়া গেলে অনুসন্ধানের মূল
ুঁ পাওয়া যায়।
প্রশ্নগুল�োর উত্তর খজে
অনুসন্ধানের জন্য প্রশ্ন সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রশ্নমালা
১। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিপুল শরণার্থীরা ক�োথায় এবং ১। মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনি ক�োথায় ছিলেন?
কীভাবে আশ্রয় পেয়েছিল? ২। তখন আপনার বয়স কত ছিল�ো?
৩। আপনার এলাকার মানুষজন মুক্তিযুদ্ধের সময় অন্য
ক�োথাও কি আশ্রয়ের জন্য গিয়েছিলো?
৪। উত্তর হ্যা হলে ক�োথায়েআশ্রয় নিয়েছিল�ো?
৫।.....
৬।...
(উপরের নমুনা অনুসারেশিক্ষার্থীরা প্রয়�োজনীয় আর�ো
প্রশ্ন তৈরি করে নিতে পারে।)
97
২। অপারেশন সার্চলাইটের নৃশংস হত্যাকান্ডের খবর উপরের নমুনা প্রশ্নের মত�ো করে শিক্ষার্থীরা তাদের
বিশ্বে কীভাবে ছড়িয়েছিল? সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রশ্নমালা তৈরি করে নিতে পারে।
৩। প্রবাসী সরকার গঠন ও মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে কারা উপরের নমুনা প্রশ্নের মত�ো করে শিক্ষার্থীরা তাদের
সাহায্য করেছিল? সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রশ্নমালা তৈরি করে নিতে পারে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর নাম:
তারিখ:
▪ আমরা শিক্ষার্থীদের সরাসরি সাহায্য না করলেও তদারকি করব�ো। দলের প্রত্যেকে নিজ পরিবার/
প্রতিবেশী থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে। দলের সব সদস্য তাদের প্রাপ্ত তথ্য একত্র করে সেগুল�ো নিয়ে
আল�োচনা করবে। প্রতিটি দল শিক্ষকের সাথে তাদের প্রাপ্ত তথ্য শেয়ার করবে। এরপর আমরা প্রতিটি
দলকে বলব�ো দলের সদস্যদের পাওয়া তথ্য থেকে অন্তত একটি বিশেষ ঘটনা/তথ্য দলের পক্ষ থেকে
ক্লাসের সবার সাথে শেয়ার করতে।
▪ প্রতি দলের উপস্থাপনার পর আমরা তাদের সংগৃহীত ঘটনাবলীতে যেসব জায়গার উল্লেখ পাওয়া গেছে
সেখান থেকে নতুন তথ্য পাওয়া যায় কিনা তা শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধান করতে বলবো। এই প্রসঙ্গে এই
এলাকায় প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে কিংবা বর্ষীয়ান ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্য সংগ্রহ
করবে। কাজে যাবার আগে তারা শিক্ষকের সাথে দলীয় পরিকল্পনা শেয়ার করবে।
▪ আমরা শিক্ষার্থীদের পরিকল্পনা ফল�ো আপ করব�ো এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য সকল ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক
সহয�োগিতা দেব�ো। আমরা ক�োন মতামত চাপিয়ে না দিয়ে প্রয়�োজনীয় পরামর্শ দেব�ো এবং প্রয়�োজনে
কারিগরি (যেমন- তথ্য সংগ্রহের জন্য রেকর ্ডার, ক্যামেরা ইত্যাদি) ও প্রশাসনিক (যেমন- ক�োন জায়গায়
প্রবেশ করতে বিশেষ অনুমতি দরকার হলে প্রধান শিক্ষকের পরামর্শক্রমে চিঠি দেয়া) সহায়তা দেব�ো।
▪ শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় /ল�োকালয়ে মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি সংবাদিকদের ভূমিকা, মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি
সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশনের ভূমিকা, শরণার্থী সমস্যা ম�োকাবিলায় মূল ভার বহনকারী দেশ ভারত
এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের ভূমিকা, প্রবাসী সরকার ও ভারত সরকারের মধ্যেকার সম্পর্ক, মুক্তিযুদ্ধ
সংগঠন এবং বিজয় অর্জন পর ্যন্ত তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধির নেতৃত্ব ও এতে
দেশটির অবদান, জাতিসঙ্ঘ ও অন্যান্য বিশ্ব সংস্থার ভূমিকা, স�োভিয়ত ইউনিয়ন ও অন্যান্য মিত্র দেশের
ভূমিকা, শিল্পী-সাহিত্যিকদের উদ্যোগ প্রভৃতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ
দলের সদস্যরা ন�োট করবে।
▪ দলের শিক্ষার্থীরা পর ্যায়ক্রমে সকলেই যাতে বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করে অবদান রাখতে পারে সে
বিষয়টি আমরা সচেতন ভাবে লক্ষ রাখব�ো।
সেশন-৭-৮
ধাপ ৬: তথ্য যাচাই ও বিশ্লেষণ
▪ আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্যের সঠিকতা যাচাই কীভাবে করবে তার ধারনা নেবো ও প্রয়�োজনীয়
পরামর্শ দেব�ো। তবে শিক্ষার্থীদের উপর ক�োন মতামত চাপিয়ে দেব�ো না।
▪ শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই এর মাধ্যমে গ্রহন-বর্জন করে তা বিশ্লেষণ করবে এবং
নিজেদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই কাজের অভিজ্ঞতাসমূহ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও অন্যান্য দলের
সামনে উপস্থাপন করবে।
98
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সেশন-৯-১০
ধাপ ৭: ফলাফল তৈরি ও উপস্থাপন
ুঁ এনেছে
▪ এই পর ্যায়ে আমরা জানতে চাইব�ো, এই কাজের মধ্য দিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের যেসব ঘটনা খজে
সেগুল�ো কীভাবে তারা অন্যদের জানাতে পারে?
▪ শিক্ষার্থীরা দলে আল�োচনা করে সৃজনশীল ও অভিনব উপায় পরিকল্পনা করতে পারে। যেমন- ফট�োবুক,
ডকুমেন্টারি, দেয়ালিকা, প�োস্টার, লিফলেট, ফট�োগ্রাফি বা আঁকা ছবি প্রদর্শনী, বই, নাটক ইত্যাদি।
শিক্ষক এই ক্ষেত্রে পুর�োপুরি স্বাধীনভাবে তাদের পরিকল্পনা করতে দেবেন, শুধু সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ ও
ইস্যুসমূহ সম্পর্কে সচেতন থাকবেন। শিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে দলগুল�ো তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন
করবে এবং ক�োন জাতীয় দিবসে তা অন্যান্য ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সাথে শেয়ার করবে।
▪ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকগণের প্রয়�োজনীয় পরামর্শ ও ফিডব্যাক অনুসারে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রকল্পটি উপস্থাপন
অনুষ্ঠানের আয়�োজন করবে। অতিথি হিসেবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, থানা শিক্ষা কর্মকর্তা, অভিভাবক,
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি / মুক্তিয�োদ্ধারা উপস্থিত থাকবেন।
▪ বিদ্যালয়ে উদযাপিত যেক�োন�ো জাতীয় দিবস যেমন, ৭ই মার্চ, ১৭ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমান এর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস, ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস, ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা
দিবস , ১৪ই এপ্রিল ১লা বৈশাখ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শ�োক দিবস, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস, ১৬
ডিসেম্বর বিজয় দিবস প্রভৃতি জাতীয় দিবসের সাথে মিলিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও
কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গের সামনে উপস্থাপন করবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এসব তথ্য পরবর্তী গবেষণার জন্য
প্রাতিষ্ঠানিক বা জাতীয়ভাবে সংরক্ষনের ব্যবস্থা করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক যেক�োন�ো আল�োচনায় যেন জাতিগত বিদ্বেষ বা ঘৃণার তৈরি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে
হবে। বিষয়গুল�োকে রাজনৈতিক প্রেখাপটে বিশ্লেষনে আগ্রহী করে তুলতে হবে।
তাদের কাজ ও কাজের উপস্থাপনায় কয়েকটি বিষয় এর প্রতিফলন যেন থাকে সেটি লক্ষ্য করতে বলব�ো:
১। এক বা একাধিক স্থানীয় পক্ষের (ব্যক্তি/সংস্থা/দেশ ইত্যাদি) অংশগ্রহণ, কাজ বা ভূমিকা পর ্যাল�োচনা ও এ সম্পর্কে
দলের মতামত।
২। এক বা একাধিক আন্তর্জাতিক পক্ষের (ব্যক্তি/সংস্থা/দেশ ইত্যাদি) অংশগ্রহণ, কাজ বা ভূমিকা পর ্যাল�োচনা ও এ
সম্পর্কে দলের মতামত।
৩। সব পর ্যাল�োচনা করে বিভিন্ন দেশের ব্যাপারে মিত্র ও বিপক্ষ শক্তির ব্যাপারে তাদের মন�োভাব।
99
ধাপ ৯: ডকুমেন্টেশন
দলীয় কাজের বিভিন্ন ধাপের তথ্যসমূহ এবং সারসংক্ষেপ সংরক্ষণ করতে আমরা প্রয়�োজনীয় পরামর্শ ও
ফিডব্যাক দেব�ো। শিক্ষার্থীরা দলীয় কাজের বিভিন্ন ধাপের তথ্যসমূহ, আত্ম-প্রতিফলনের লিখিতরূপ এবং
অর্জিত শিখনের সারসংক্ষেপ (ছবি/ভিডিও/লিখিতরূপ/ খসড়া এর হার ্ড বা সফট কপি) শিক্ষকের মাধ্যমে
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংরক্ষণ করবে।
মূল্যায়ন রুব্রিক্স:
শিক্ষার্থীদের প্রজেক্টের কাজ ও তার উপস্থাপন ও সে সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব থেকে তথ্য নিয়ে এই মূল্যায়ন ছক পূর্ণ কর�ো।
পারদর্শিতার নির্দেশক ৭ এর জন্য ব্যবহার করব�ো-
মূল্য্যনের ক্ষেত্র প্রারম্ভিক বিকাশমান দক্ষ
মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় পক্ষের মুক্তিযুদ্ধে তারা যে মুক্তিযুদ্ধে তারা যে মুক্তিযুদ্ধে তারা যে
ভূমিকা পর ্যাল�োচনা প্রশ্নের উত্তর খজছে ুঁ ুঁ তার
প্রশ্নের উত্তর খজছে ুঁ তার
প্রশ্নের উত্তর খজছে
তার প্রেক্ষিতে ক�োন�ো প্রেক্ষিতে অন্তত পক্ষে প্রেক্ষিতে অন্তত পক্ষে
স্থানীয় পক্ষের ভূমিকা একটি স্থানীয় পক্ষের একটি স্থানীয় পক্ষের
(ব্যক্তি/সংস্থা/দেশ ভূমিকা (ব্যক্তি/সংস্থা/ ভূমিকা (ব্যক্তি/সংস্থা/
ইত্যাদি) উল্লেখ করলেও দেশ ইত্যাদি) সামান্য দেশ ইত্যাদি) গভীরভাবে
পর ্যাল�োচনা করতে পর ্যাল�োচনা করতে পর ্যাল�োচনা করতে
পারেনি। পেরেছে। পেরেছে।
মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তারা
পক্ষের ভূমিকা যে প্রশ্নের উত্তর খজছে ুঁ ুঁ
যে প্রশ্নের উত্তর খজছে ুঁ
যে প্রশ্নের উত্তর খজছে
পর ্যাল�োচনা তার প্রেক্ষিতে ক�োন�ো তার প্রেক্ষিতে অন্তত তার প্রেক্ষিতে অন্তত
আন্তর্জাতিক পক্ষের পক্ষে একটি আন্তর্জাতিক পক্ষে একটি আন্তর্জাতিক
ভূমিকা (ব্যক্তি/সংস্থা/ পক্ষের ভূমিকা (ব্যক্তি/ পক্ষের ভূমিকা (ব্যক্তি/
দেশ ইত্যাদি) উল্লেখ সংস্থা/দেশ ইত্যাদি) সংস্থা/দেশ ইত্যাদি)
করলেও পর ্যাল�োচনা সামান্য পর ্যাল�োচনা গভীরভাবে পর ্যাল�োচনা
করতে পারেনি। করতে পেরেছে। করতে পেরেছে।
বিভিন্ন দেশের প্রতি সকল প্রেক্ষাপট সকল প্রেক্ষাপট সকল প্রেক্ষাপট
ভ্রাতৃত্বব�োধ পর ্যাল�োচনা শেষে বিভিন্ন পর ্যাল�োচনা শেষে পর ্যাল�োচনা শেষে বিভিন্ন
দেশ, সংস্থা ও মানুষের বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও দেশ, সংস্থা ও মানুষের
প্রতি কৃতজ্ঞতা ব�োধের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রতি কৃতজ্ঞতা ব�োধ
প্রকাশ অনুপস্থিত। ব�োধ প্রকাশ করেছে প্রকাশ করেছে এবং
কিন্তু ক�োন দেশ, জাতি ক�োন দেশ, জাতি বা
বা গ�োষ্ঠীর প্রতি ঘৃনার গ�োষ্ঠীর প্রতি ঘৃণা ব�োধ
প্রকাশ রয়েছে। জাগ্রত হয়নি- একে
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
হিসেবেই ব্যাখ্যা করতে
পারছে।
100
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
মূল্যায়ন:
শিখন কালীন মূল্যায়ন ছাড়া এখানে ৬ মাস পর আলাদা ক�োন�ো সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে না। শিখন কালীন
মূল্যায়নের অংশ হিসেবে যে অনুসন্ধানী কাজ তারা করবে ও উপস্থাপন করবে, তার ভিত্তিতেই পারদর্শিতার
নির্দেশক ৭.৫ এর মূল্যায়ন হবে আর সেটি ই ৬ মাস এর সামষীক মূল্যায়নে য�োগ হবে।
101
সামাজিক রীতিনীতির বৈশিষ্ট্য অনুসন্ধান
সামাজিক রীতিনীতির বৈশিষ্ট্য অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ১-৫
102
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
কার�ো সাথে দেখা হলে সালাম দেয়ার ছবি, বড়দের ছ�োটরা বসার জায়গা করে দিচ্ছে, কার�ো সাথে দেখা
হলে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করছে, বাসায় মেহমান আসলে আপ্যায়ন করা হচ্ছে ইত্যাদি ঘটনার ছবি যুক্ত
করতে হবে।
ছবি: এরকম ছবি আঁকতে হবে। পুরুষের প্যার্ট পরা থাকবে, ধুতি না। বিয়ের ছবিতে হার্ট চিহ্ন থাকবে না।
শিক্ষার্থীরা ছবি দেখে বর্ণনা দেবে। তারপর বলব, এগুল�োও আমাদের সমাজে প্রচলিত নানান নিয়ম। জানতে
চাইব, এরকম আর ক�োন�ো নিয়মের কথা কি ত�োমাদের মনে পড়ছে? শিক্ষার্থীদের উত্তরগুল�ো শুনব। প্রয়�োজনে
ওদের আগের পাঠগুল�োর কথা মনে করিয়ে দেব�ো, নিজেও কিছু য�োগ করব।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের বলব, অনুশীলন বইয়ের ছকটা ব্যবহার করে আমাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও
প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে তারা ক�োন ক�োন সামাজিক নিয়ম মেনে চলে তার একটি তালিকা তৈরি
করতে। এসব নিয়ম-কানুন তারা ক�োথা থেকে জানতে পেরেছেন? নিয়ম না মানলে কী হতে পারে?
এসব প্রশ্নের উত্তরও জেনে নিতে বলব। বলব যে, ছকটিতে উদাহরণ হিসেবে একটি সামাজিক নিয়মের
কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা যতগুল�ো খজেুঁ পাবে সবগুল�ো এই তালিকায় য�োগ করব আর প্রশ্ন করে
উত্তরও জেনে নেব। আমরা আরও বেশি ঘর এঁকে যতগুল�ো সম্ভব সামজিক নিয়ম এই তালিকায় যুক্ত
করব। কাজটি বুঝিয়ে দিয়ে ওদের বাড়ির কাজ হিসেবে করতে দেব�ো।
103
সেশন ২-৪: সামাজিক রীতিনীতির প্রয়�োজনীয়তা উপলব্ধি করা
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে তাদের তৈরি তালিকা উপস্থাপন করতে বলব।
▪ উপস্থাপন শেষে শিক্ষার্থীদের নিজে চিন্তা করতে দেব�ো। এরপর তাদের পাশের বন্ধুর সাথে জ�োড়া গঠন
করে নিজের ভাবনা-চিন্তাগুল�ো শেয়ার করতে বলব (think-pair-share)। তারপর তাদের ভাবনা
নিয়ে আল�োচনা করব। উপস্থাপন, ভাবনা ও আল�োচনা থেকে তাদের ধারণা গঠন হবে:
অধিকাং শ মানুষ সামাজিক নিয়ম-কানুনগুল�ো জেনেছে তাদের পরিবার, পাড়া-পড়শি এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের
কাছ থেকে।
সবাই জানে, এসব নিয়ম-কানুন মেনে না চললে আইন ক�োন�ো শাস্তি দেয় না। কিন্তু সমাজের অধিকাংশ মানুষ এইসব
নিয়ম-না-মানা মানুষদের অপছন্দ করে।
সমাজের এই অলিখিত নিয়ম-কানুনগুল�োকে সামাজিক রীতিনীতি বা সংস্কার বলে। সামাজিক রীতিনীতি আমাদের
বলে দেয় ক�োন পরিস্থিতে, ক�োন পরিবেশে, কার সাথে একজন মানুষকে কী ধরনের আচরণ করতে হবে। এগুল�ো মেনে
চলবার ক�োন�ো আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই কিন্তু কেউ না মানলে সমাজের মানুষ তাকে অপছন্দ করতে পারে।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের জ�োড়া অথবা দল গঠন করে পাঠ্যবই থেকে সামাজিক রীতিনীতির বৈশিষ্ট্য ও
ভূমিকার পয়েন্টগুল�ো ভাগ করে দেব�ো। তাদের নিজেদের মধ্যে আল�োচনার জন্য পাঁচ মিনিট সময়
দেব�ো, তারপর পুর�ো ক্লাসকে উদাহরণসহ বুঝিয়ে বলতে বলব। ক�োন�ো জ�োড়া বা দলের সাহায্যের
প্রয়�োজন হলে সাহায্য করব।
104
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সমাজে সামাজিক রীতিনীতির ভূমিকা
১। সমাজে মানুষের আচার ব্যবহার কেমন হবে তা ঠিক করে দেয়।
২। সমাজের যাতে সবকিছু ঠিকমত�ো কাজ করে তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা পালন করে।
৩। মানুষের সমাজ গড়ে ত�োলার যে মূল উদ্দেশ্য∑সবাইকে নিয়ে ভাল�ো থাকা, তা অর্জনে ভূমিকা রাখে।
৪। সবাই যদি সামাজিক রীতিনীতি মেনে একই রকম আচার-ব্যবহার চর্চা করে তাহলে সমাজের প্রতিদিন যে
কাজগুল�ো হয় তা সুষ্ঠুভাবে হতে পারে।
৫। সমাজের মানুষের প্রতিদিনের কাজকর্ম যাতে কমবেশি একই রকম রুটিন অনুযায়ী চলে সে জন্য একটি সাধারণ
মান ঠিক করে দেয়।
৬। সামাজিক মূল্যব�োধ চর্চার সুয�োগ তৈরি করে।
৭। সামাজিক বিচারে সফলতার মানদণ্ড তৈরি করে মানুষের মাঝে সফলতার অনুভূতি তৈরি করতে সহায়তা করে।
সেশন ৫: সামাজিক রীতিনীতির প্রয়�োজনীয়তা উপলব্ধি করা
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বই থেকে নিচের অংশটুকু পড়তে বলব:
গ�ৌতম বলল, কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না, সমাজে সবাই একই ধরনের রীতিনীতি বা নিয়ম-কানুন মেনে
চলে কেন?
খুশি আপা বললেন, খুবই ভাল�ো প্রশ্ন করেছ�ো। ত�োমরা যখন এমন সুন্দর সুন্দর প্রশ্ন কর�ো তখন আমার খুব
আনন্দ হয়! তারপর রহস্যময়ভাবে একটুখানি হেসে বললেন, কিন্তু এ প্রশ্নের উত্তর আমরা আজ খজব�ো ুঁ না।
আগামীকাল আমরা এ প্রশ্নের উত্তর নিয়ে কাজ করব�ো।
………….………….………….………….………….……......…
………….………….………….………….………….……......…
সালমা-শিহানদের অভিজ্ঞতাও আল�োচনা করে সারণিটি পূরণ করার পর খুশি আপা বাকিদের উদ্দেশ্যে
বললেন, এবার ত�োমরাও ক�োন একটা রীতিনীতি বাছাই করে, পরীক্ষামূলকভাবে দুই এক দিনের জন্য
অনুসরণ করে, উপরের সারণিটা পূরণ করে নিয়ে এস�ো। তবে সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বললেন যে,
অবশ্যই যাতে বাবা বা মা যে ক�োন একজনকে ভাল�োভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে জানিয়ে রাখে। যাতে ক�োন
সমস্যা হলে তিনি অন্যদের বুঝিয়ে বলতে পারেন।
▪ পড়া শেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুক্ত আল�োচনা করব, অনুশীলন বইয়ের বন্ধুদের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, ওরা সে
বিষয়ে কী মনে করে। ওরা যদি একই কাজ করে তাহলে কী ঘটবে? শিক্ষার্থীরা বয়সে কিশ�োর, এই সময়ে অনেক
রীতিবির�োধী কাজ করবার ইচ্ছে বা অভিজ্ঞতা কার�োর কার�োর থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তাদের নিরুৎসাহিত
না করে, সমাল�োচনা না করে, তাদের অভিজ্ঞতাগুল�োও শুনব। আশেপাশের যারা রীতি মানে না, তাদের ক্ষেত্রে
অন্যদের প্রতিক্রিয়া কেমন দেখেছে, জানতে চাইব। শিক্ষার্থীদের সব রীতি মানতে ইচ্ছে করে কিনা, না ইচ্ছে হলে
কেন হয় না, না মানলে তার ফল কী হতে পারে, সেই ফলাফলকে তারা কীভাবে নেবে ইত্যাদি বিষয়ে যতটা সম্ভব
বিস্তারিত কথা বলবার সুয�োগ দেব�ো। যতটা সম্ভব ব্যক্তিগত মত না দেওয়ার চেষ্টা করব, প্রয়�োজনব�োধে য�ৌক্তিক
উদাহরণ দেব�ো, শিক্ষার্থীকে ভাববার, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুয�োগ দেব�ো, নিজস্ব ভাল�ো-মন্দের ভাবনা চাপিয়ে দেব�ো
না। মনে রাখব, শিক্ষার্থীরা ভুল করতে করতেও শিখবে, কিন্তু চাপিয়ে দেওয়া ক�োন�ো শিক্ষা জীবনে স্থায়ী হয় না।
105
▪ আল�োচনা শেষে শিক্ষার্থীদের ধারণা গঠন হবে:
106
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সেশন ৬-৮: সামাজিক মূল্যব�োধের ধারণা
এই সেশনে করণীয়:
▪ এই সেশনের শুরুতে শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বই থেকে ছবি দেখতে বলব। সম্ভব হলে সামাজিক মূল্যব�োধ
প্রকাশিত হয় এরকম আরও কিছু ছবি দেখাব।
ছবি: রাস্তার পাশে পরিস্কার করা, র�োগীর সেবা করা, বয়স্কদের সাহায্য করা, দলে কাজ করার ছবি আঁকতে
হবে, অন্ধ ব্যক্তিকে রাস্তা পারাপারে সহয�োগিতা করা, বন্যার্ত মানুষকে দলগতভাবে সহয�োগিতা করা, আহত
বন্যপ্রাণীর সেবা যত্ন করা, জাতীয় সম্পদ রক্ষা করছে এমন কিছু ছবি দিতে হবে।
▪ ছবি দেখা শেষ হলে শিক্ষার্থীদের ৫/৬ জনের দলে বিভক্ত করে ছবিগুল�ো থেকে কী ব�োঝা গেল তা
আল�োচনা করে দলগতভাবে উপস্থাপন করতে বলব। কাজটি করার জন্য অনুশীলন বই থেকে নিচের
ছকটি ব্যবহার করতে বলব।
▪ কাজ শেষ হলে প্রতিটি দলের কাজ শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে বলব।
▪ সবার উপস্থাপনা শেষ হলে বলব, ত�োমাদের উপস্থাপন থেকে ব�োঝা গেল, ছবিতে কিছু সামাজিক ঘটনা
তুলে ধরা হয়েছে যেখানে ক�োন ব্যাক্তি বা একদল মানুষ কিছু কাজ করছে। জানতে চাইব, ছবিতে যেসব
কাজ দেখান�ো হয়েছে সেগুল�োকে ভাল�ো না মন্দ কাজ বলে হচ্ছে? সবাই বলবে, ভাল�ো কাজ।
▪ এরপর জানতে চাইব, কেউ যদি এই কাজগুল�ো করে তাহলে আমরা তাকে কেমন মানুষ বলে মনে করি?
শিক্ষার্থীরা বলবে, ভাল�ো মানুষ। তারপর জানতে চাইব, ভাল�ো মানুষের কী কী বৈশিষ্ট্য ছবিগুল�োয়
দেখতে পাচ্ছি? ‘সামাজের সেবা করা, দয়া, মায়া, পর�োপকার, সহয�োগিতার মন�োভাব” শিক্ষার্থীরা এ
ধরণের জবাব দেবে। তবে অনুশীলন বইয়ে যা লেখা আছে, এর বাইরেও যেন শিক্ষার্থীরা উদাহরণ দেয়,
সে বিষয়ে লক্ষ রাখব।
107
▪ এবারে শিক্ষার্থীদের কাছে ভাল�ো মানুষের আর কী কী বৈশিষ্ট্য হয় তা জানতে চাইব। শিক্ষার্থীদের
জবাবগুল�ো শুনব। তারপর জিজ্ঞাসা করব, আচ্ছা, আমরা জানলাম কীভাবে যে এগুল�ো ভালো মানুষের
বৈশিষ্ট্য? শিক্ষার্থীদের নিজেদের অভিজ্ঞতা জানান�োর সুয�োগ দেব�ো∑ ক�োথায়, কার কাছে শুনেছে
এগুল�ো ভাল�ো কাজ? তাদের করা ক�োন কাজগুল�োকে অন্যরা ভাল�ো বলেছে, উৎসাহিত করেছে?
ল�োকে তাদের কী ধরণের কাজ করবার পরামর্শ দিয়েছে? ইত্যাদি প্রশ্ন থেকে তাদের অভিজ্ঞতাগুল�ো
উঠে আসবে। তাদের ধারণা গঠন হবে:
আমাদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী বা সমাজ আমাদের শিখিয়েছে যে এগুল�ো ভাল�ো কাজ
এবং দেখা যাচ্ছে সমাজের অধিকাংশ মানুষ এগুল�োকে ভাল�ো কাজ হিসেবে মনে করছে।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের বলব, এবারে চল�ো, আমরা পরিবারে ও সমাজে ভাল�ো কাজ হিসেবে মনে করা
হয়∑ এমন কিছু কাজ চিহ্নিত করি এবং এ সব ভাল�ো কাজ করার পেছনে যে নীতিগুল�ো থাকে সেগুল�ো
ুঁ বের করে তালিকা করি। কাজটি তারা দলে করবে। শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বইয়ের ছকটি উদাহরণ
খজে
হিসিবে ব্যবহার করে কাজ করতে বলব।
ক্রম সমাজ স্বীকৃত ভাল�ো কাজের নীতি
নমুনা
১. বয়স্ক ব্যক্তিকে রাস্তা পার হতে পর�োপকার
সাহায্য করা
২. অন্যের মতামত মেনে নিতে পরমতসহিষ্ণুতা
না পারলেও শ্রদ্ধাসহ শ�োনা
৩. অন্যের জিনিস অনুমতি ছাড়া
না নেওয়া
৪.
৫.
▪ কাজ শেষে শিক্ষার্থীদের তৈরি তালিকাগুল�ো উপস্থাপন করতে বলব।
▪ উপস্থাপন শেষে বুঝিয়ে বলব, এই যে নীতিগুল�ো, যার মাধ্যমে আমরা ক�োনটা ভাল�ো কাজ আর ক�োনটা
খারাপ কাজ তা বুঝতে পারি তাকে ‘মূল্যব�োধ’ বলা হয়। এর মাধ্যমে আমরা সমাজ কী গ্রহণ করবে ও
করবে না সে সম্পর্কে জানাতে পারি। মূল্যব�োধগুল�ো সমাজের শৃঙ্খলা বজায় রাখে। সমাজ বিভিন্নভাবে
মানুষকে এসব নীতির সাথে প্রতিনিয়ত পরিচিত করায়। তাদের ধারণা গঠন হবে:
সমাজ স্বীকৃত যে সব নীতিমালা সাধারণভাবে সমাজের মানুষকে ক�োন কাজটি উচিত/ ঠিক আর
ক�োন কাজ অনুচিত/ ভুল, সে সম্পর্কে ধারণা দেয় তাকে মূল্যব�োধ বলে। মূল্যব�োধ মানুষকে সমাজ
জীবনে ক�োন বিষয়গুল�ো মূল্যবান বা গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে শেখায়।
108
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের বলব, নানা সমাজে গ্রহণয�োগ্য মূল্যব�োধগুল�ো সেখানকার প্রচলিত নানান কথা,
ছড়া, প্রবাদ-প্রবচনে পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীদের অনুশীলন বইয়ে লেখা বিভিন্ন দেশের প্রবাদবাক্যগুল�ো
পড়তে দেব�ো।
▪ এরপর এই প্রবাদবাক্যগুল�োর অর্থ এবং এর মধ্যকার মূল্যব�োধ নিয়ে দলে আল�োচনা করতে দেব�ো।
তারপর অনুশীলন বইয়ের ছকটি পূরণ করতে বলব।
প্রবাদবাক্য মূল্যব�োধ
সংকটের সময়ে বুদ্ধিমানরা সাঁক�ো তৈরি করে আর পারস্পরিক সহয�োগিতা
ব�োকারা বানায় দেয়াল।
তুমি যা কর�ো তা যদি কাউকে জানতে দিতে না সততা
চাও, তবে সে কাজ কখন�ো ক’র�ো না।
দশে মিলি করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ। একাত্মতা
▪ ছক পূরণ শেষে শিক্ষার্থীদের কাছে মূল্যব�োধগুল�োর নাম জানতে চাইব। শিক্ষার্থীরা মূ্ল্যব�োধগুল�ো
বুঝতে পারবে কিন্তু হয়ত যথার্থ শব্দ ব্যবহার করে সবগুল�ো প্রকাশ করতে পারবে না। তাদের উপযুক্ত
ুঁ পেতে সাহায্য করব।
শব্দ খজে
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, প্রবাদবাক্যগুল�োর ক�োন�োটায় পারস্পরিক সহয�োগিতা, ক�োন�োটায় সময়ানুবর্তিতার
মূল্যব�োধ ইত্যাদির কথা বলা হয়েছে। আমরা যদি নানান দেশের আরও প্রবাদবাক্য জানতে পারি,
তাহলে সেই সমাজের মূল্যব�োধগুল�ো সম্পর্কেও অনেক কিছু জানতে পারব। এরপর শিক্ষার্থীদের দলে
ভাগ হয়ে বিদেশে থাকা পরিচিতজন, ইন্টারনেট, আশেপাশের মানুষ, বিভিন্ন বই ইত্যাদি উৎস থেকে
ুঁ বের করতে বলব।
প্রবাদবাক্য সংগ্রহ করে এর মধ্যকার মূল্যব�োধগুল�ো খজে
▪ কাজটির জন্য দু’একদিন সময় দেব�ো। শিক্ষার্থী-দলগুল�োকে বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে কাজগুল�ো
উপস্থাপন করতে উৎসাহিত করব।
▪ নির্দিষ্ট দিনে শিক্ষার্থীরা তাদের কাজ উপস্থাপন করবে। কাজগুল�োর মূল্যায়ন করব এবং প্রয়�োজনীয়
ফিডব্যাক দেব�ো।
109
ুঁ বের করা
সেশন ৯: সামাজিক রীতিনীতি ও মূল্যব�োধ খজে
এই সেশনে করণীয়:
▪ সেশনের শুরুতে শিক্ষার্থীদের কাছে সামাজিক রীতিনীতি ও মূল্যব�োধের মধ্যে পার্থক্য জানতে চাইব।
তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও কাজের মাধ্যমে যে ধারণা গঠন হয়েছে তার ভিত্তিতে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা
করবে।
▪ এরপর এই অনুশীলন বইয়ের ছক অনুযায়ী বিষয়টি সম্পর্কে মুক্ত আল�োচনা করব।
110
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
থিম: সমাজের প্রয়�োজনে রীতিনীতি ও মূল্যব�োধ তৈরি হয়, সমাজের প্রয়�োজনেই বদলায়
সেশন ১০-১২: নির্বাচন
সেশন ১৩-১৫: আইন পরিষদ ও ছায়া সংসদ
সেশন ১৬- : রাষ্ট্র এবং সরকার
থিম: সমাজের প্রয়�োজনে রীতিনীতি ও মূল্যব�োধ তৈরি হয়, সমাজের প্রয়�োজনেই বদলায়
এই সেশনে করণীয়: (এই সেশনটি যতটা সম্ভব ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিকে একসঙ্গে নিয়ে পরিচালনা করব।)
▪ এই সেশনের শুরুতে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন করব, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাবের মাধ্যমে আমরা কী কী
কাজ করেছি? এই কাজগুল�ো কতটা গুরুত্বপূর্ণ? আমাদের ক্লাবগুল�োর যদি কমিটি না থাকত, যদি
প্রত্যেকের দায়িত্ব ভাগ না করা থাকত তাহলে কি কাজগুল�ো সুন্দরভাবে করা যেত?
▪ চেষ্টা করব যেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কাছাকাছি সময়ে এই ক্লাসটি
শুরু হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের বলব, চল�ো আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিকে সঙ্গে নিয়ে শুরুতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ
ক্লাবের নির্বাচন করি। বলব, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীর জন্য একই কমিটি হবে। তাতে
ক্লাবের সদস্যসংখ্যাও বাড়বে, আবার কাজের ব্যপ্তিও বাড়বে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আল�োচনা করে
নির্বাচনের দিন-তারিখ ঠিক করব।
▪ সকলের আল�োচনার ভিত্তিতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব-কমিটিতে কী কী পদ প্রয়�োজন, তার তালিকা
তৈরি করব। নির্বাচনে কে ক�োন পদে মন�োনয়ন চায়, তাদের নামেরও তালিকা করব। তালিকা তৈরির
জন্য আমরা অনুশীলন বইয়ের ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব-কমিটির সদস্যপদের তালিকা’ ছকটি ব্যবহার
করব। পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, প্রকাশনা সম্পাদক ইত্যাদি পদ রাখতে
পারি আবার নাও পারি। প্রয়�োজনে পদের সংখ্যা বাড়িয়ে-কমিয়ে নেব।
▪ নির্বাচনের আয়�োজন করবার জন্য ষষ্ঠ এবং সপ্তম দুই শ্রেণি থেকে তিন-চারজন নিরপেক্ষ সদস্য নিয়ে
একটি কমিটি তৈরি করব। যার নাম দেব�ো নির্বাচন কমিশন। এই কমিটি নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রতীক
বরাদ্দ করবে। দুই ক্লাসের সকলের নাম লিখে ভ�োটার তালিকা তৈরি করবে। নির্বাচনের নিয়মকানুন
বা নির্বাচনী আচরণবিধিও তৈরি করবে। আচরণবিধি তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুশীলন বই
থেকে ‘নির্বাচনি আচরণবিধি’ ছকটি ব্যবহার করতে বলব।
▪ দুই ক্লাসের সমসংখ্যক প্রতিনিধিত্ব রেখে শিক্ষার্থীদের দুই থেকে-তিনটি প্যানেল তৈরি করতে বলব।
প্রতিটি প্যানেল থেকে কে ক�োন পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তার তালিকা প্রকাশ করতে বলব।
111
▪ প্রত্যেকটি প্যানেলকে শ্লোগান, প্লাকার ্ড, প�োস্টার ইত্যাদি তৈরিতে উৎসাহিত করব। প�োস্টার লাগান�োর
জন্য বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের কয়েকটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দেব�ো। প্রচার-প্রচারণার জন্য গান-কবিতা তৈরি
করা, সুন্দরভাবে বক্তৃতা করা, সুশৃংঙ্খল সমাবেশ ও মিছিল করতে উৎসাহিত করব। নির্বাচনে অংশ
নেওয়া দলগুল�োকে নিজেদের নির্বাচনি ইশতেহার বানতে বলব যেখানে তাদের প্যানেল নির্বাচনে
জয়ী হলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য তারা কী কী কাজ করবে তার বর্ণনা লেখা থাকবে।
▪ নির্বাচনকে ঘিরে পুর�ো স্কুলে যেন একটা উৎসবের আমেজ তৈরি হতে পারে সে বিষয়ে যত্নশীল হব�ো।
▪ নির্বাচনের দিন নির্বাচন কমিশন প্রচার-প্রচারণা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেবে। তারা প্রার্থীর প্রতীকসহ
ব্যালট পেপার তৈরি করবে। এটি তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন অনুশীলন বইয়ের ব্যালট পেপারের
উদাহরণটি (বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব নির্বাচন) ব্যবহার করতে পারে।
▪ টিফিনের পরে বা শেষ দুই পিরিয়ডের সময়ে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের জন্য যেন শ্রেণিকার ্যক্রম বিঘ্নিত
না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখব। শিক্ষার্থীরা ক্লাব কার ্যক্রমের সময়ে অথবা প্রয়�োজনে বিদ্যালয়ের সময়ের
পরে কিছুটা বাড়তি সময় বিদ্যালয়ে থেকে নির্বাচনের কার ্যক্রম করবে। এ বিষয়ে কর্পতৃ ক্ষের কাছ
থেকে যথাবিহিত অনুমতি নেব।
▪ নির্বাচনের আগে সেচ্ছাসেবক দল গঠন করতে বলব। তারা নির্বাচনের দিন পাটের দড়িতে রঙিন
কাগজের পতাকা ঝুলিয়ে বা অন্যকিছু দিয়ে ভ�োট কেন্দ্রের সীমানা নির্ধারণ করবে। ভ�োটকেন্দ্রে
ঢ�োকার জন্য ভ�োটারদের লাইনে দাঁড়তে সাহায্য করবে। ভ�োটকেন্দ্রে ঢুকবার মুখে দুই দিকে দুইটা
টেবিল থাকবে। সেখানে প্রতিটি প্যানেলের স্বেচ্ছাসেবকরা ভ�োটার তালিকার সঙ্গে পরিচয়পত্র মিলিয়ে
ভ�োটার সনাক্ত করবে। ভ�োটারদের ভ�োট দিতে সাহায্য করবে; সিল ও ব্যালট পেপার দিয়ে বুঝিয়ে
দেবে, কীভাবে ভ�োট দিতে হবে। ভ�োটাররা পর্দাঘেরা গ�োপন কক্ষে গিয়ে, ব্যালট পেপারে পছন্দের
প্রার্থীর প্রতীকে সিল দিয়ে, ব্যালট বাক্সে রাখবে। স্বেচ্ছাসেবকদের আগে থেকেই বিষয়গুল�ো বুঝিয়ে
দেব�ো এবং তদারক করব।
▪ নির্বাচনের দিন যেন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সকলেই উপস্থিত থাকে সে বিষয়ে উৎসাহিত করব। সকলেই
যেন সক্রিয় নাগরিক হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে সে বিষয়ে উৎসাহ দেব�ো।
▪ ভ�োট গ্রহণ শেষ হলে স্বেচ্ছাসেবকদের সহয�োগিতায় ভ�োট গণনা করব। সেখানে প্রধান শিক্ষকসহ
অন্যান্য শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। সকল বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর
বিজয়ীদের অভিনন্দন জানাব।
▪ স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীদের বলব, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব-নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়েছে তাদের নামের
তালিকা ন�োটিশ ব�োর্ডে ঝুলিয়ে দিতে।
▪ নির্বাচন শেষে বলব, আমরা যেভাবে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাবের কমিটি নির্বাচন করেছি, বাংলাদেশের
আইনসভার সদস্য নির্বাচনও এভাবে হয়। বাংলাদেশের আইনসভাকে ‘সংসদ’ বলা হয়। তবে
আমাদের নির্বাচন আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে কিছু তফাৎও আছে। সংসদ নির্বাচনে
112
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ বা আইন সভার ছবি দেখিয়ে বলব, আমরা নির্বাচনের
মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব কমিটি গঠন করে ক্লাবের কার ্যক্রম পরিচালনা করব। একইভাবে
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ অর্থাৎ আইনসভার সদস্যদের বাছাই করা হয়।
▪ এরপর বলব, চল�ো আমরা অনুশীলন বই, অন্যান্য বইপত্র, ইন্টারনেট, শিক্ষক ও অন্যান্য ব্যক্তি
যারা এ বিষয়ে অনেক তথ্য জানেন তাদের সহয�োগিতা নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয়
সংসদের কার ্যক্রম সম্পর্কে অনুসন্ধানী কাজ করি। শিক্ষার্থীদের পাঁচ-ছয়জনের দলে ভাগ হতে সাহায্য
করব। কাজটি করার জন্য তাদের অনধিক দুই দিন সময় দেব�ো।
113
পাহাড়পুর ব�ৌদ্ধ বিহারে শিয়াল-মানুষের সখ্য
ডিবিসি নিউজ
শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, এই পৃথিবী কেবল মানুষের নয়। সকল প্রাণ, সকল প্রাণীর এখানে বেঁচে থাকবার,
বেড়ে উঠবার সমান অধিকার আছে। মানুষ যদি পুর�ো পৃথিবীকে কেবল নিজের জন্য দখল করে
রাখতে চায়, সকলের অধিকার কেড়ে নিয়ে কেবল একাই বাঁচতে চায়, তাহলে আসলে শেষ পর ্যন্ত
কেউই বাঁচবে না। ওদের কাছে জানতে চাইব, ক�োন�ো এমন ক�োন�ো অসহায় প্রাণীর কথা ওরা জানে
কিনা, যারা মানুষের একটুখানি সহয�োগিতা পেলে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের
মতন করে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও ভাবনা শেয়ার করতে উৎসাহিত করব।
▪ আমাদের আশেপাশের/ পথের ক�োন প্রাণীকে আমরা সাহায্য করতে পারি সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের
মতামত দিতে বলব। যদি ক�োন�ো তর্ক-বিতর্ক তৈরি হয় সেটি থামিয়ে দেব�ো না, সমাধান করতেও
যাব না। শিক্ষার্থীরা ক�োন পথের প্রাণীকে সাহায্য করবে সে বিষয়ে একমত হ�োক বা না হ�োক, বলব,
আমরা ত�ো ক্লাবের মাধ্যমে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব�ো।
▪ শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইব, তারা টেলিভিশনে জাতীয় সংসদের অধিবেশন দেখেছে কিনা। না
দেখলে সংসদ টেলিভিশন দেখতে উৎসাহিত করব। বলব, আমরা ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে জাতীয়
সংসদের আদলে ‘ছায়া সংসদ’ তৈরি করি চল�ো। সেখানে পথের প্রাণীকে সাহায্য করবার বিষয়টি
বিল আকারে আসবে। শিক্ষার্থীদের বলব, সংসদে উত্থাপিত আইনের খসড়া বা প্রস্তাবকে বিল বলে।
▪ ওদের বলব, এবার তাহলে সংসদে বসে আমরা নতুন আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের এই
শ্রেণিকক্ষই হবে আইনসভা। ক্লাব নির্বাচনে বিজয়ীদের মধ্য থেকে সাধারণ সম্পাদককে ‘রাষ্ট্রপতি’,
সভাপতিকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসেব নিয়�োগ দেব�ো। প্রধানমন্ত্রীকে আইনমন্ত্রী, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী,
পানিসম্পদ মন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ইত্যাদি মন�োনয়ন করতে বলব। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়�োগ দেবে। একজন
স্পিকারও নিযুক্ত হবে। বিজয়ী প্যানেলের বাকিরা সরকারি দলের সাংসদ আর অন্যান্যরা বির�োধী
দলের সাংসদ হল�ো। এভাবে আমরা জাতীয় সংসদের আদলে ছায়া সংসদ তৈরি করব।
▪ কয়েকজন সংসদ সদস্যকে আল�োচনার ভিত্তিতে আইনের একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করতে বলব।
এরপর বির�োধী দলের একজন সদস্যকে আইনের খসড়াটি সংসদে বিল আকারে উপস্থাপন করতে
বলব। সরকারি ও বির�োধী দলের সংসদ সদস্যরা নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করবে। সবশেষে স্পিকার
ম�ৌখিক ভ�োটের আয়�োজন করবে। কণ্ঠভ�োটে “হ্যাঁ” জয়যুক্ত হলে আইনটি লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির
স্বাক্ষরের জন্য পেশ করতে বলব। যদি বিলটি পাশ না হয় তাহলে আবারও আল�োচনার মাধ্যমে
সংশ�োধনী এনে সংসদে উত্থাপন করতে বলব। এভাবে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাবের একটি আইন তৈরি
করার জন্য শিক্ষার্থীদের কাজ করতে দেব�ো।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের দলগতভাবে অনুশীলন বই থেকে ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ পরিকল্পনার ছক’কে
উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করে সারাবছর কী কাজ করবে তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে বলব।
114
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সেশন ১৬ : রাষ্ট্র এবং সরকার
এই সেশনে করণীয়:
▪ সেশনের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইব, আমরা ত�ো সরকার গঠন করলাম, আইনও তৈরি
করলাম, কিন্তু আইন যদি কেউ না মানে তাহলে কী হবে? শিক্ষার্থীদের উত্তরগুল�ো শুনব। আশা করা
যায়, তারা শাসন ও বিচার বিভাগের বিষয়ে একটি প্রাথমিক ধারণা দিতে পারবে। শিক্ষার্থীরা বলতে
পারবে, আইন না মানলে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়, মামলা হয়, বিচার হয়, শাস্তি হয় ইত্যাদি। শিক্ষার্থীরা
যতটুকুই বলতে পারুক না কেন তাদের উৎসাহিত করব।
▪ এবারে শিক্ষার্থীদের একটা প�োস্টার দেখিয়ে বা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে নিচের ছবির
মতন ছবি দেখাব। জানতে চাইব, কী দেখতে পাচ্ছ? “সরকার যেমন একটা প্রতিষ্ঠান, সে আবার
আলাদা আলাদা তিনটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করে।” শিক্ষার্থীরা এই ধরণের কথা বলতে পারবে
বলে আশা করছি।
শিক্ষার্থীদের বলব, ছবিতে যা দেখতে পাচ্ছ, বুঝিয়ে বল�ো। আশা করা যায় শিক্ষার্থীরা সার্বভ�ৌমত্বের বিষয়টি
ছাড়া বাকিগুল�ো সহজেই বুঝতে পারবে।
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, পুতুল-নাচে একেকটি পুতুল সুতার মাধ্যমে অন্যের নির্দেশে চলে। ছবিতে দেখতে
পাচ্ছি, সুতাগুল�ো কেটে দেওয়া হচ্ছে, অর্থাৎ এখানে প্রতীকী অর্থে কিছু ব�োঝান�ো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের
কাছে জানতে চাইব, ছবিতে যে দেখতে পাচ্ছ, পৃথিবীর দেশগুল�োর সুতা কেটে দেওয়া হচ্ছে, এর মানে
কী হতে পারে? তাদের জানাব, একটি দেশ যে নিজের ইচ্ছামত পরিচালিত হয়, অন্য দেশের ইচ্ছায়
নয়, তার কারণ তাদের পুতুল-নাচের পুতুলের মতন ক�োন�ো সুতা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়নি। এই যে
বন্ধনমুক্তি, এটাই সার্বভ�ৌমত্ব। তাদের বুঝিয়ে বলব,
115
সার্বভ�ৌমত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের চরম ও চূড়ান্ত ক্ষমতা। এই ক্ষমতার বলেই রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরের সকল ব্যক্তি,
সংগঠন ও সংস্থার ওপর খবরদারি করতে পারে, আদেশ-নিষেধ জারি করতে পারে। এর বলে রাষ্ট্র
বাইরের শক্তির নিয়ন্ত্রণমুক্ত থাকে।
রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য:
▪ একটা রাষ্ট্র হতে গেলে সরকারের সঙ্গে নির্দষ্ট ভূ-খণ্ড, জনগণ আর সার্বভ�ৌমত্ব (বাইরের ক�োন�ো
প্রতিষ্ঠানের হস্তক্ষেপ ছাড়া কাজ করবার পূর্ণ স্বাধীনতা) ।
▪ রাষ্ট্র তার সকল ইচ্ছা বা কাজ সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে।
▪ সাধারণভাবে রাষ্ট্রকে ক�োথাও দেখা যায় না।
▪ কিন্তু ক�োন নির্দিষ্ট ভূখন্ডে, যখন অন্য যে ক�োন�ো রাষ্ট্র বা শক্তির নিয়ন্ত্রণহীনভাবে জনগণের উপর আইন
প্রয়�োগ করে বা জনগণের কল্যাণ করার জন্য বিভিন্ন কাজ করে তখন রাষ্ট্রের অস্তিত্ত্ব টের পাওয়া যায়।
▪ রাষ্ট্র একটি ভূখন্ডের জনগণের সকলের ইচ্ছায় গড়ে ত�োলা একটি সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।
▪ রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের বলব, আচ্ছা, আমরা যে নির্বাচন করলাম, সরকার গঠন করলাম, ছায়া সংসদে
বিল পাস করলাম, সেখানেও কি মূল্যব�োধ, রীতিনীতি কাজ করেছে? খজে ুঁ দেখি ।
ুঁ বের করে অনুশীলন বইয়ের ‘সামাজিক-রাজনৈতিক
▪ প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নির্দেশনা অনুযায়ী খজে
প্রতিষ্ঠানে রীতিনীতি মূল্যব�োধ’ তালিকাটি পূরণ করতে বলব। এটিকে বাড়ির কাজ হিসেবেও দিতে
পারি।
রাষ্ট্র, সরকার, আইন এবং রীতিনীতি ও মূল্যব�োধের পারস্পরিক প্রভাব
রাষ্ট্র, সরকার, আইন এবং রীতিনীতি ও মূল্যব�োধের পারস্পরিক প্রভাব অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ১৭-
থিম: সমাজের প্রয়�োজনে রীতিনীতি ও মূল্যব�োধ তৈরি হয়, সমাজের প্রয়�োজনেই বদলায়
সেশন ১৭-১৮: সামাজিক মূল্যব�োধ রাজনৈতিক কাঠাম�োকে প্রভাবিত করে, রাজনৈতিক কাঠাম�োয় বদল
হলে সামাজিক রীতিনীতি বদলায়
সেশন ১৯-২০: রাষ্ট্র, সরকার, আইন এবং রীতিনীতি ও মূল্যব�োধের পারস্পরিক প্রভাব
থিম: সমাজের প্রয়�োজনে রীতিনীতি ও মূল্যব�োধ এবং আইন-কানুন তৈরি হয়, সমাজের প্রয়�োজনেই
বদলায়
116
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
১৯০৮ সালেও কেবল পৃথিবীর এইটুকু অংশে সমস্ত নারীদের ভ�োটধিকার ছিল
117
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের বলব, সামাজিক রীতিনীতি ও মূল্যব�োধ সমাজে কীভাবে কাজ করে আর
কীভাবেই বা তা সময়ের সাথে বদলে যায়, চল�ো অনুশীলন বই থেকে প্রখ্যাত সমাজ সংস্কারক,
সাহিত্যিক রামম�োহন রায় এর জীবনীর অংশবিশেষ পড়ে বিষয়টি বুঝবার চেষ্টা করি।
▪ রামম�োহন রায়- এর জীবনী পড়া শেষ হলে শিক্ষার্থীদের বলব, দলগতভাবে অনুশীলন বইয়ের
‘কীভাবে সামাজিক রীতিনীতি পরিবর্তিত হয়?’ ছকটি ব্যবহার করে, রামম�োহন রায়- এর সময়কার
সামাজিক রীতিনীতি কীভাবে পরিবর্তন হল�ো, তার প্রক্রিয়াটি নিজের ভাষায় লিখে উপস্থাপন করতে।
▪ শিক্ষার্থীরা কাজটি শেষ করলে শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে বলব। তাদের ফিডব্যাক দেব�ো এবং
মূল্যায়ন করব।
▪ এরপর শিক্ষার্থীদের বলব, আচ্ছা চল�ো, আমরা এ বিষয়ে একটি বিতর্ক প্রতিয�োগিতার আয়�োজন
করি। আমরা অনুশীলন বইয়ের উদাহরণ অনুসরণ করে বিতর্ক প্রতিয�োগিতার বিষয় নির্ধারণ করতে
পারি অথবা পাঠ্যবই থেকেও বেছে নিতে পারি।
১। কেবল আইনের পরিবর্তনের মাধ্যমেই সম্ভব সব মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
২। নারীর কাজ ঘর সামলান�ো আর পুরুষের কাজ রাষ্ট্র পরিচালনা
২। সব মানুষের মতামতের ক�োন গুরুত্ব নেই, কেবল বুদ্ধিমানের মতামতই শ�োনা উচিত।
৩। .........
৪। .......
৫।
▪ বিতর্ক শেষে যারা বিতর্কে অংশগ্রহণ করেনি তাদের মুক্ত আল�োচনায় আহ্বান করব। সে আল�োচনায়
শিক্ষার্থীরা সামাজিক রীতিনীতি, মূল্যব�োধ, আইন, সরকার∑ এসবের বদল নিয়ে নিজেদের ভাবনা
অনুযায়ী মুক্ত আল�োচনা করবে।
▪ এ পর ্যায়ে শিক্ষার্থীদের ধারণা গঠন হবে:
সেশন ১৯-২০: রাষ্ট্র, সরকার, আইন এবং রীতিনীতি ও মূল্যব�োধের পারস্পরিক প্রভাব
▪ এই সেশনের শুরুতে শিক্ষার্থীদের বলব, আমরা দেখলাম, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সামাজিক
কাঠাম�োয় অনেক রকমের বদল হয়। তাদের প্রশ্ন করব, এই বদলগুল�ো হয় কী করে? শিক্ষার্থীরা
মানুষের শিক্ষা-দীক্ষা-ভাবনা, আইন ইত্যাদি নানারকম বদলের কথা বলতে পারে। না বলতে পারলে
অনুশীলন বই থেকে নিচের উদাহরণটি দিতে পারি:
118
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
মিলি বলল, আমাদের এলাকায় একটা মেয়ের বিয়ের কথা হয়েছিল। ওর বাবা-মা রাজিও ছিল। কিন্তু
মেয়েটার বয়স মাত্র পনের বলে বিয়েটা আর দেয়নি। কারণ ওর চাচা বাঁধা দিয়েছে। বলেছে, এখন
বাল্যবিবাহ আইনত নিষিদ্ধ। যখন আইনে বাধা ছিল না তখন অনেক ছ�োটবেলায় ছেলেমেয়েদের বিয়ে
হয়ে যেত।
▪ বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান পদ্ধতির ধাপ অনুসরণ করে তথ্য সংগ্রহের জন্য বই, পত্রপত্রিকা, ইন্টারনেট ও
সাক্ষাৎকারের সাহায্য নিয়ে তাদের অনুসন্ধান কাজটি করতে বলব। এই কাজের জন্য তাদের দুই-
তিন দিন সময় দেব�ো।
▪ এরপর শিক্ষার্থীরা বিষয় অনুযায়ী অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করবে। উপস্থাপনের দিন বিভিন্ন মাধ্যম
ব্যবহার করে উপস্থাপন করবে।
▪ শিক্ষার্থীদের কী কী বিষয়ে মূল্যায়ন করা হবে তা আগেই জানিয়ে রাখব। উপস্থাপনের পর তাদের
ফিডব্যাক দেব�ো ও মূল্যায়ন করব।
119
শিক্ষার্থীরা যেন তাদের অনুসন্ধানী কাজ ও উপস্থাপনায় নিচের বিষয় গুল�ো তুলে ধরে তা তাদের আগেই
বলে দেব�ো-
▪ আশে পাশের বিভিন্ন মূল্যব�োধ সনাক্ত করা
▪ আশে পাশের বিভিন্ন সামাজিক কাতাহ্মো সনাক্ত করা
▪ সামাজিক কাঠাম�োর উপর প্রচলিত রীতিনীতি বা মূল্যব�োধ এর প্রভাব বিশ্লেষণ
▪ প্রচলিত রীতিনীতি বা মূল্যব�োধ এর উপর সামাজিক কাঠাম�োর প্রভাব বিশ্লেষণ
120
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
সুবল-সুশীলের ক�োন ক�োন আচরণে ল�োকজন ওদের ওপর বিরক্ত হয়েছিল সেটা গল্প থেকে খজতে ুঁ বলব।
শিক্ষার্থীরা দেখবে, যখন সুবল-সুশীল বাবা ও ছেলের অবস্থান অনুযায়ী ভূমিকা পালন করছে না, তখন সমাজের
ল�োকজন বিরক্ত হচ্ছে, তেড়ে আসছে; যেমনটা ফুটবল খেলায় অবস্থান ও ভূমিকার সঙ্গতি না থাকলে ঘটে।
কিছু বাস্তব উদাহরণ দেব�ো, বাবা-মা যদি বাজার না করে সব টাকা দিয়ে খেলনা কিনে খেলে বা চকলেট-
আইসক্রিম খেয়ে ফেলে, তাহলে ল�োকে কী বলবে? ইত্যাদি। শিক্ষার্থীদেরও উদাহরণ দিতে উৎসাহিত করব।
শিক্ষার্থী এই অনুভবে প�ৌঁছ�োবে যে, অবস্থান অনুযায়ী ভূমিকা পালনের কিছু সামাজিক রীতিনীতি আছে। সেগুল�ো
মেনে চললে অধিকাংশ মানুষ তার ভূমিকাকে ঠিকঠাক বলে মনে করে।
সেশন ১.৫-৩: বয়স বাড়লে সমাজে ব্যক্তির ভূমিকা ও অবস্থান বদলায়
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, আমরা ত�ো গল্পে দেখলাম বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অবস্থান বদলায় আর
অবস্থান বদলালে ভূমিকাও বদলায়। গল্পে অনেক কিছুই ঘটতে পারে, কিন্তু বাস্তবেও কি এরকম
হয়? শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হাইপ�োথিসিস/ পূর্বানুমান করতে উৎসাহিত করব। তারা নিজেদের
হাইপ�োথিসিসগুল�ো লিখেও রাখতে পারে। তাদের হাইপ�োথিসিসের পেছনে যুক্তিগুল�োও শুনব।
▪ এরপর বলব, আমরা একটা অনুসন্ধানী কাজের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখি, ছ�োটবেলায় আর পরিণত
বয়সে মানুষের অবস্থান ও ভূমিকা কেমন হয়।
▪ তথ্য সংগ্রহের জন্য শিক্ষার্থীদের নিজের পরিবারের ল�োকজন এবং আশেপাশের মিলিয়ে পাঁচজন
বড় মানুষের সাক্ষাৎকার নিতে বলব। পেশা, বয়স, লিঙ্গ, অর্থনৈতিক অবস্থা, পদ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যে
যতটা সম্ভব বৈচিত্র্যময় অবস্থানের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে বলব। নারী পুরুষ ধনবান দরিদ্র
খ্যাতিমান ক্ষমতাবান∑ নানারকম মানুষ। পুলিশ, আইনজীবী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি
(ইমাম, ভিক্ষু, পূজারী, ফাদার, নান), দার�োয়ান, গৃহকর্মী, শিল্পপতি, অভিনেতা, বেকার ইত্যাদি যত
অবস্থানের মানুষের কথা মনে পড়ে, সকলে মিলে বলব।
123
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য যেন অনুশীলন বই থেকে ‘বিভিন্ন বয়সে আমার অবস্থান
ও ভূমিকা’ ছকটি ব্যবহার করে।
▪ শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইব, ছকের লেখা দেখে ওদের কী মনে হচ্ছে? সাক্ষাৎকারে কী জানতে
চাওয়া হবে? ওরা উত্তর দেওয়ার পর সুনির্দিষ্ট করে বুঝিয়ে দেব�ো, সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হবে,
তার স্কুলে পড়বার বয়সে তিনি ক�োথায় ক�োথায় যেতেন, সেখানে কার কার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি
হয়েছিল, কী কী করতেন। এখন তিনি ক�োথায় ক�োথায় যান, কার কার সঙ্গে সম্পর্ক আছে, ক�োথায়
কী করেন। অর্থাৎ সাক্ষাৎকারদাতার শৈশব ও বর্তমানের বিভিন্ন অবস্থান এবং বিভিন্ন ভূমিকা সম্পর্কে
জানবে।
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, স্কুলে পড়বার বয়স মানে ৫/৬∑১৬/১৭ বছর। ওরা যাদের সাক্ষাৎকার নেবে
তাদের সবাই স্কুলে না-ও যেতে পারে।
▪ শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন য�োগ্যতাসম্পন্ন ৫/৬ জনের দলে ভাগ হতে সাহায্য করব।
▪ অনুসন্ধানী কাজ করার জন্য অনধিক দুই দিন সময় দেব�ো। অনুসন্ধানের কাজে প্রতিফলনমূলক
ডায়েরির ব্যবহার করতে বলব। ফলাফল উপস্থাপনের তারিখ ঠিক করব। বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে
ফলাফল উপস্থাপন করতে উৎসাহিত করব।
▪ উপস্থাপনের দিন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে ফলাফল উপস্থাপন করবে।
(সতীর্থ এবং শিক্ষক কর্ক তৃ মূল্যায়ন হবে)
বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমার অবস্থান ও ভূমিকা বিশ্লেষণ
বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমার অবস্থান ও ভূমিকা বিশ্লেষণের কার ্যাবলী: সেশন ৪-৬
মানুষের সঙ্গে মানুষের কথাবার্তা, কাজ, ভাবের বিনিময় ইত্যাদি য�োগায�োগ বা মিথস্ক্রিয়ার
ফলে প্রতিষ্ঠান (পরিবার, বিদ্যালয়, আমলাতন্ত্র, ধর্ম, রাজনৈতিক দল) এবং গ�োষ্ঠী (খেলার সঙ্গী, ফুটবল
টিম, প্রতিবেশী) তৈরি হয়। এই প্রতিষ্ঠান ও গ�োষ্ঠীতে ব্যক্তি অবস্থান (status) করে ও ভূমিকা (role)
পালন করে।
ব্যক্তির অবস্থান দুই রকমের হতে পারে:
▪ অর্জিত- যা ব্যক্তি সক্ষমতা ও চেষ্টা দ্বারা আয়ত্ব করে। যেমন: বিচারপতির পদ, প্রধানমন্ত্রীত্ব,
খেল�োয়ার
▪ অর্পিত- জন্মসূত্রে বা প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত বিষয়। যেমন: নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, হরিজন-ব্রাহ্মণ
অবস্থান অনুযায়ী ব্যক্তির যে অধিকার ও দায়িত্ব থাকে তাকে আমরা ভূমিকা বলি। অন্যভাবে বলা যায়,
একজন মানুষের অবস্থান অনুযায়ী সমাজ তার কাছে যে আচরণ প্রত্যাশা করে সেটিই তার ভূমিকা।
তাই সুবল যখন ছেলে হয়েছিল, তখন মাস্টারের কাছে তামাক চেয়ে মার খেয়েছিল । প্রত্যেক মানুষের
একই সময়ে আবার জীবনের বিভিন্ন সময়ে পারিবারিক, পেশাগত ইত্যাদি বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপটে
অনেকগুল�ো অবস্থান ও ভূমিকা থাকে।
একই সমাজের সকল মানুষের অবস্থান ও ভূমিকা এক না। একজন মানুষের অবস্থান নির্ধারিত হয় তার
পরিচিতি, সুনাম, পদ, ক্ষমতা, অর্থনৈতিক অবস্থা, পারিবারিক মর ্যাদা, বয়স, লিঙ্গ ইত্যাদির ভিত্তিতে।
একজন মানুষকে সমাজের অন্যান্য মানুষ কীভাবে মূল্যায়ন করবে, কতটা সম্মান ও গুরুত্ব দেবে তা তার
সামাজিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে।
▪ শিক্ষার্থীদের বড় হয়ে নিজেকে ক�োন অবস্থানে দেখতে চায় ভাবতে বলব। সেজন্য এখন থেকেই
ভূমিকা পালন করবার জন্য উৎসাহিত করব।
▪ আল�োচনা শেষে শিক্ষার্থীদের বলব, আমরা ত�ো এখনকার সময়ের বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপটে
ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা দেখলাম। এবারে একটু অতীতে ফিরে দেখি, সেই সময়ে বিষয়গুল�ো
কেমন ছিল। তাদের ষষ্ঠ শ্রেণির অনুসন্ধানী পাঠ থেকে মিশর, মেস�োপটেমিয়া, গ্রিক এবং র�োমান
সভ্যতা সম্পর্কে পড়ে আসতে বলব।
125
নানা সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা বিশ্লেষণ
নানা সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা বিশ্লেষণের কার ্যাবলী: সেশন ৭-৮
রাজা
পুর�োহিত ও আঞ্চলিক
শাসক
কৃষক ও
পশুপালক
ক্রীতদাস ও
গৃহকর্মী
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, প্রাচীন মিশরীয় সমাজের মতন আমাদের সমাজেও ত�ো নানারকম মানুষ
আছে∑গৃহকর্মী, রিকশাওয়ালা, ডাক্তার, ইমাম, সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাহিত্যিক,
খেল�োয়ার, অবসরপ্রাপ্ত মানুষ, বিজ্ঞানী। তাদের পদ, ক্ষমতা, অর্থনৈতিক অবস্থা, পারিবারিক মর ্যাদা,
বয়স, লিঙ্গ ইত্যাদির আছে রকমফের। আমরা এখনকার সামাজিক প্রেক্ষাপটে তাদের অবস্থান আর
ুঁ দেখবার জন্য একটা দলীয় অনুসন্ধানী কাজ করতে পারি।
ভূমিকা খজে
126
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ শিক্ষার্থীদের ৫/৬ জনের দল গঠন করতে সাহায্য করব। প্রতি ধাপে তাদের কাছ থেকে আমাদের কী
প্রত্যাশা তা ব�োঝান�োর জন্য বইয়ের মূল্যায়ন ছক বা রুব্রিক্সটি দেখাব। প্রথম ক্লাসে তারা দলে বসে
পরিকল্পনা করবে ও তা উপস্থাপন করবে। সতীর্থ এবং শিক্ষকের ফিডব্যাক দেওয়া হবে। তাদের
পরিকল্পনা দেখে ও তাদের সাথে আল�োচনা করে উপস্থাপনার দিন ঠিক করব। এর মধ্যে পরবর্তী
ক্লাসগুল�ো চলতে থাকবে।
সেশন ৮: প্রাচীন মিশরের সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন শ্রেণির অবস্থান ও ভূমিকা অনুসন্ধান
ও উপস্থাপন
এই সেশনে করণীয়:
▪ প্রতিটি দল বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে তাদের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপন করবে
ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা বদলে সামাজিক প্রেক্ষাপটের বদলের প্রভাব অনুসন্ধান
ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা বদলে সামাজিক প্রেক্ষাপটের বদলের প্রভাব অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ১১-১৩
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইব, সামাজিক প্রেক্ষাপট কি সবসময়ে একই রকম থাকে? আগেকার
চেয়ে এখকার সামাজিক প্রেক্ষাপট যে বদলেছে, সেকথা ওরা আগের কাজগুল�োর অভিজ্ঞতা থেকে
বলতে পারবে। সুতরাং আমার কাঙ্ক্ষিত উত্তর হবে ‘না’। এরপর জানতে চাইব, সমাজের ক�োন�ো
একটি শ্রেণির আজকের যে অবস্থান এবং ভূমিকা, আগেও কি তেমন ছিল, ভবিষ্যতেও কি তেমন
থাকবে? যেহেতু ওদের অভিজ্ঞতায় তেমনভাবে আসেনি, তাই ওরা নিশ্চিতভাবে এর জবাব নাও
দিতে পারে।
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, র�োকেয়া সাখাওয়াত হ�োসেন যখন ছ�োট ছিলেন, সমাজে নারীদের জন্য ছিল
কঠ�োর পর্দাপ্রথা। তিনি নিজেও যখন খুব ছ�োট ছিলেন, তখন বাড়ির বাইরে ত�ো বটেই, এমনকি
বাড়ির ভেতরেও তাঁকে পর্দা মেনে চলতে হত�ো। তাঁর লেখা ‘অবর�োধবাসিনী’ বইয়ে তিনি প্রায়
একশ বছর আগেকার নারীদের অবরুদ্ধ অবস্থানের কথা কিছু কাহিনী বর্ণনার মাধ্যমে তুলে এনেছেন।
বইয়ের শুরুতে তিনি বলেছেন, “গ�োটা ভারতবর্ষের কুলবালাদের অবর�োধ কেবল পুরুষের বিরুদ্ধে
নহে, মেয়েমানুষের বিরুদ্ধেও। অবিবাহিতা বালিকাদিগকে অতি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়া এবং বাড়ির চাকরানি
ব্যতীত অপর ক�োন�ো স্ত্রীল�োক দেখিতে পায় না। বিবাহিতা নারীগণও বাজীকর-ভানুমতী ইত্যাদি
তামাসাওয়ালী স্ত্রীল�োকদের বিরুদ্ধে পর্দা করিয়া থাকেন।”
127
▪ এরপর ওদের অনুশীলন বইয়ের ‘অবর�োধবাসিনীর কাহিনি’ অংশটুকু পড়তে বলব।
▪ কাহিনি পড়া শেষ হলে জানতে চাইব, একশ বছরেরও আগেকার সব নারী কি অবর�োধবাসিনী ছিল?
র�োকেয়ার কথা ও লেখা থেকে তারা কিছুটা ধারণা পেয়েছে। সেই আল�োকে উত্তর দেবে, একশ
বছরেরও আগেকার সব নারী অবর�োধবাসিনী ছিল না। শিক্ষার্থীদের তাদের বক্তব্য সমর্থন করে,
এরকম উদাহরণ দিতে উৎসাহিত করব।
▪ এই আল�োচনায় মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ধারণা গঠন হবে:
সেই সময়ের সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে নারীর জন্য লেখাপড়া, রাজনীতি, চাকরি, ব্যবসা
ইত্যাদির সুয�োগ ছিল সীমিত। ফলে ঘরের বাইরে তাদের তেমন ক�োন�ো কাজের ক্ষেত্র তৈরি হয়নি।
র�োকেয়ার মতন যারা ঘরের বাইরে বেরিয়েছেন, তাদের অনেক লড়াইও করতে হয়েছে। তাঁর মতন
অবস্থানে গিয়ে ভূমিকা রাখাটা তখনকার নারীর জন্য স্বাভাবিক ব্যপার ছিল না। ওই সময়ে নারীর
সামাজিক অবস্থান এবং ভূমিকা মূলত ঘরের মধ্যেই ছিল। ঘরের বাইরের কাজে যারা এসেছে, তারা
ব্যতিক্রমী।
▪ ওদের ৫/৬ জনের দল তৈরি করতে সাহায্য করব। তারপর বলব, এইসব কাহিনি থেকে ওই সময়ের
নারীদের অবস্থান এবং ভূমিকা কেমন ছিল বলে মনে করছি তা দলগতভাবে খজে ুঁ বের করি, চল�ো।
ুঁ বের করে প্রত্যেকে নিজের অনুশীলন বইয়ের নিচের ছকটি পূরণ করবে।
শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে খজে
প্রায় একশ বছর আগেকার নারীর সামাজিক প্রায় একশ বছর আগেকার নারীর সামাজিক ভূমিকা
অবস্থান
128
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
বৃহত্তর সমাজে নারীর অবদান রাখবার ক্ষেত্রে সমাজের বা পরিবারের অনেক বাধা এখনও
আছে। কিন্তু এই সময়ের নারীদের এগিয়ে যাওয়ার সুয�োগও আছে। আইন তাদের প্রায় সকল ক্ষেত্রে
পুরুষের সমান অধিকার দিয়েছে, যেমনটা একশ বছর আগে ছিল না। সরকারও তাদের অবস্থানের উন্নয়ন
এবং সামাজিক ভূমিকা বাড়ান�োর জন্য অনেক কাজ করছে। সমাজের রীতিনীতি, মানুষের মূল্যব�োধের
অনেক বদল হয়েছে। এখন মেয়েদের ক�োন�ো কাজে সাফল্য এলে, তারা ক�োন�ো গ�ৌরব অর্জন করলে,
যারা শুরুতে বির�োধিতা করেছিল, তাদেরও অনেকের অবস্থান ও ভূমিকায় বদল আসে।
▪ এরপর বলব, আমরা র�োকেয়া সাখাওয়াত হ�োসেনের লেখা থেকে প্রায় একশ বছর আগেকার
নারীর একটা চিত্র পেয়েছি আর এখানে আমরা বর্তমান সময়ের নারীর আর একটা চিত্র পেলাম।
চল�ো, দলগতভাবে এই সময়ের নারীর অবস্থান এবং ভুমিকা খজে ুঁ ছকে সাজিয়ে উপস্থাপন করি।
শিক্ষার্থীদের আগের দলে অনুশীলন বই থেকে নিচের ছকটি পূরণ করতে দেব�ো।
বর্তমান সময়ের নারীর সামাজিক অবস্থান বর্তমান সময়ের নারীর সামাজিক ভূমিকা
(সামষ্টিক মূল্যায়ন)
ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা বদলে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বদলের প্রভাব অনুসন্ধান
ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা বদলে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বদলের প্রভাব অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ১৪-১৯
129
থিম: যুগে যুগে রাজনৈতিক বদল ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকার বদল ঘটিয়েছে
সেশন ১৪-১৫: ব্রিটিশ থেকে পাকিস্তান আমলে বাংলার রাজনৈতিক পালাবদল
সেশন ১৬-১৭: আমার এলাকার রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন; ব্যক্তির অবস্থান ও
ভূমিকা
সেশন ১৮-১৯: দেশে দেশে নানা সময়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন; ব্যক্তির অবস্থান
ও ভূমিকা
থিম: যুগে যুগে নারীর অবস্থান ও ভূমিকার বদল হয়েছে
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষর্থীদের কাছে জানতে চাইব, রাজা যদি প্রজাহিতৈষী হয় তাহলে তার নীতি প্রজাদের ওপর
কী প্রভাব ফেলে আর যদি অত্যাচারী হয়, তার প্রভাব কী? শিক্ষার্থীরা উত্তর দেওয়ার পর তাদের
অনুশীলন বই থেকে ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ কাহিনিটি পড়তে বলব।
▪ এরপর বলব, কেমন করে সাধারণ মানুষের এই অসহনীয় অবস্থার বদল ঘটল জানবার জন্য অনুশীলন
বই থেকে ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ অংশটি পড়�ো। এত বড় ইতিহাসের গল্প শিক্ষার্থীদের কাছে বিরক্তিকর
বলে মনে হতে পারে। তাই ছবি, ভিডিও ইত্যাদি সহয�োগে মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে
পারলে খুব ভাল�ো হয়, নয়ত�ো প�োস্টার তৈরি করে বা ছবির ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের গল্পের
মতন করে শ�োনান�োও যায়। এখানে লেখা সাল-তারিখ মনে রাখা শিক্ষার্থীর জন্য জরুরি না। কিন্তু
আনুমানিক কত বছর আগে বা ক�োন সময়কালের কথা, ক�োন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক�োন ঘটনা ঘটল,
তার ফলাফল কী∑ এগুল�ো অনুধাবন করা দরকার।
▪ কাহিনিদুট�ো জানা হলে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করব, সামাজিক প্রেক্ষাপটের বদলের ক�োন�ো ঘটনা কি
এখানে দেখতে পাচ্ছ? আশা করছি, ওরা ‘হ্যাঁ’ বলবে।
▪ এরপর জানতে চাইব, শাসন ব্যবস্থায় ক�োন বদলের কারণে সামাজিক প্রেক্ষাপটের ক�োন বদল
হয়েছে?ব্যক্তিকে তা কীভাবে প্রভাবিত করেছে? চল�ো, আমরা দলে বসে খজেুঁ দেখি এখানে কী কী
ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের দল তৈরি করে অনুশীলন বই থেকে নিচের ছকটি পূরণ করতে দেব�ো।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বদল ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকার বদল সামাজিক প্রেক্ষাপটের বদল
130
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ কাজ শেষে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে দেব�ো।
এই সেশনে করণীয়:
▪ শিক্ষার্থীদের বলব, আমাদের দেশের প্রতিটি এলাকাই ব্রিটিশ ভারত, পাকিস্তান আমল পেরিয়ে এসেছে,
স্বাধীনতার পরেও গণতন্ত্র কেবল নয়, স্বৈরশাসনও দেখেছে। আছে স্থানীয় সরকার, সিটি কর্পোরেশন-
প�ৌরসভা-ইউনিয়ন পরিষদ। এইসব রাজনৈতিক পালাবদলে আমাদের নিজেদের এলাকার রাজনৈতিক
ও সামাজিক প্রেক্ষাপটের বদল এবং সেখানে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা নিয়ে অনুসন্ধানী কাজ করি
চল�ো। ওদের বলব, যতটা সম্ভব বয়স্ক মানুষ এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্য
সংগ্রহ করতে।
▪ ওদের ৫/৬ জনের দল তৈরি করতে সাহায্য করব। দলীয় আল�োচনার ভিত্তিতে গবেষণা পরিকল্পনা
করে শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে বলব।
▪ গবেষণার তথ্য সংগ্রহের জন্য অনুশীলন বইয়ের ‘আমার এলাকার সামাজিক ও রাজনৈতিক
প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন; ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা’তথ্যছকটি ব্যবহার করতে বলব।
▪ কাজ শেষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে ফলাফল উপস্থাপন করবে। ফলাফল উপস্থাপনের
জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করতে শিক্ষার্থী-দলকে উৎসাহিত করব। উপস্থাপন শেষে তাদের ধারণা
গঠন হবে:
▪
▪
131
একক য�োগ্যতা -৭.৩ এর জন্য শিখন-শেখান�ো কার ্যক্রম ও মূল্যায়ন:
য�োগ্যতা ৭.৩ এর জন্য একটি মাত্র পারদর্শিতার নির্দেশক রয়েছে। সেটি হল- “উৎস ও শ্রোতা ভেদে একই
ঐতিহাসিক তথ্যের পরিবর্তন চিহ্নিত করতে পেরে ঐতিহাসিক তথ্য যে ব্যক্তিনিরপেক্ষ নয় তা উপলব্ধি
করতে পারছে”।
এই য�োগ্যতা অর্জনে শিক্ষার্থীদের আলাদা ক�োন অধ্যায় রাখা হয়নি। এটি অর্জনে এই অধ্যায়ের কিছু
বিষয়বস্তু ব্যবহার করে তাদের কাজ করতে দেয়া হবে। এজন্য সিরাজউদ্দউলার যুদ্ধে পরাজয়, বাংলাদেশে
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতাবাদ এবং চিরস্থায়ী বন্দবস্ত এগুল�োর সাথে যুক্ত বিভিন্ন ধরনের মানুষ বা গ�োষ্ঠী যে
এই ঐতিহাসিক তথ্য কে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করে তা অনুসন্ধান করবে এবং উপস্থাপন করবে। এক্ষেত্রে
তারা ক�োন ধরনের তথ্য উৎস থেকে তথ্য নিছে এবং সেই উৎস ভেদেও যে সেটি ভিন্ন রূপ ধারণ করতে
পারে সেটি উদ্ঘাত্ন করতে পারবে। যেমন-
চিরস্থায়ী বন্দবস্ত নিয়ে বিভিন্ন গ�োষ্ঠীর ঐতিহাসিক সত্যের পার্থক্য (ব্যক্তি নিরপেক্ষ নয়)
132
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
মূল্যায়ন:
এবারে শিক্ষার্থীদের বলব�ো যে তারা এরকম যেক�োন�ো একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, তথ্য বা বর্তমান ঘটনা
বিশ্লেষণ করে একই ভাবে বিভিন্ন ব্যক্তি/গ�োষ্ঠি/জাতির ভন ভিন্ন ভাবে তথ্য কে উপস্থাপন কে তুলে ধরতে।
এজন্য তারা তথ্য সংগ্রহ করবে ও উপস্থাপন করবে।
পারদর্শিতার নির্দেশক ৬ এর মূল্যায়নের জন্য
রুব্রিক্স
মূল্যায়নের ক্ষেত্র
প্রারম্ভিক বিকাশমান দক্ষ
ভিন্ন ভিন্ন উৎস ও
ভিন্ন ভিন্ন উৎস ও শ্রোতা ভিন্ন ভিন্ন উৎস ও শ্রোতা
শ্রোতা ভেদে একই
ভেদে একই ঐতিহাসিক ভেদে একই ঐতিহাসিক
ঐতিহাসিক তথ্যের
তথ্যের পরিবর্তন এর কথা তথ্যের পরিবর্তন নিদ্রিষ্ট
পরিবর্তন তুলে
ঐতিহাসিক তথ্য যে উল্লেখ করলেও নিদ্রিষ্ট প্রেক্ষাপট বা ঘটনার
ধরতে পারেনি, ফলে
ব্যক্তি নিরপেক্ষ নয় প্রেক্ষাপট বা ঘটনার নিরিখে নিরিখে চিহ্নিত করতে
ঐতিহাসিক তথ্য
তা অনুধাবন চিহ্নিত করতে পারেনি, পেরে ঐতিহাসিক তথ্য
যে ব্যক্তিনিরপেক্ষ
ফলে ঐতিহাসিক তথ্য যে যে ব্যক্তিনিরপেক্ষ নয়
নয় তা সুস্পষ্ট
ব্যক্তিনিরপেক্ষ নয় তা সুস্পষ্ট তা সুস্পষ্ট ভাবে প্রকাশ
ভাবে প্রকাশ করতে
ভাবে প্রকাশ করতে পারেনি। করতে পেরেছে
পারেনি।
133
সেশন ১৮-২০: দেশে দেশে নানা সময়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন;
ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা
এই সেশনে করণীয়:
▪ “সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কেবল ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকায় প্রভাব ফেলে
তা নয়; ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকাও সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রভাব ফেলে।” এই বিষয়ে
শিক্ষার্থীদে think-pair-share করতে দেব�ো। তাদের ধারনা গঠন হবে:
সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সমাজে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা নির্ধারণ করে দেয়।
তেমনি ব্যক্তিও সমাজের বা রাষ্ট্রের অনুম�োদনের বাইরে গিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে
ভূমিকা রাখে (change agent)। র�োকেয়া সাখাওয়াত হ�োসেন, রাজা রামম�োহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র
বিদ্যাসাগর, শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের মুক্তিয�োদ্ধারা, কলসিন্দুরের মফিজউদ্দিন প্রমূখ এর
উদাহরণ।
▪ এবারে বলব, আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন কালে ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা এবং সামাজিক
ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পারস্পরিক প্রভাব নিয়ে আমরা অনুসন্ধানী কাজ করি চল�ো।
▪ শিক্ষার্থীদের ৫/৬ জনের দল তৈরি করে দেব�ো। আল�োচনার ভিত্তিতে অনুসন্ধানী কাজের জন্য প্রতিটি
দল আলাদা আলাদা বিষয় নির্ধারণ করবে। প্রশ্নমালা তৈরি করবে। শিক্ষার্থীদের দলগুল�োকে নিজেদের
পরিকল্পনা শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করতে বলব।
▪ শিক্ষার্থীরা বই-পত্রপত্রিকা-ইন্টারনেট ইত্যাদি মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কাজটি সম্পন্ন করবে।
▪ উপস্থাপনের দিন বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে ওদের কাজের ফলাফল উপস্থাপন করবে।
▪ শিক্ষার্থীদের কাজের মূল্যায়ন করব এবং ফিডব্যাক দেব�ো।
134
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
পারদর্শিতার নির্দেশক ৯ এর জন্য মূল্যায়ন:
উপরের অনুসন্ধানী কাজ ও তার উপস্থাপনা পযবেক্ষণ করেআমরা নিচের রুব্রিক্স ব্যবহার করে মূল্যায়ন করব�ো।
135
টেকসই উন্নয়ন
য�োগ্যতা ইসাবি ৭.৭
স্থানীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের আন্তঃসম্পর্ক উদঘাটন করে টেকসই
উন্নয়নের লক্ষ্যে নিজস্ব গণ্ডিতে কার ্যকর ভূমিকা পালন করতে পারা
মূল্যায়ন:
এটি যেহেতু সর্বশেষ অধ্যায় তাই ৬ মাস শেষের সামষ্টিক মূল্যায়নে য�োগ হবার সুয�োগ নেই। ১২ মাস
শেষের সামষ্টিক মূল্যায়নে পারদরশিতার নির্দেশক ১০ এবং ১১ এর জন্য এই অধ্যায়ের মূল্যায়ন যুক্ত
হবে।
136
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
প্রাকৃতিক সম্পদের উপর সামাজিক পরিবর্তনের প্রভাব অনুসন্ধান
প্রাকৃতিক সম্পদের উপর সামাজিক পরিবর্তনের প্রভাব অনুসন্ধানের কার ্যাবলী: সেশন ১-2
আমরা আগেই জেনেছি ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণধারনা হল সামাজিক ও প্রাকৃতিক
পরিবেশের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া। এই মিথস্ক্রিয়া অনুধাবন করে প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই উন্নয়নই হল�ো
মানব সভ্যতা টিকে থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক ও
সামাজিক পরিবর্তন এবং এদের মধ্যাকার আন্তঃসম্পর্ক অনুসন্ধান করবে এবং নিজস্ব গন্ডিতে ছ�োট ছ�োট কাজ
বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে এসব সম্পদের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এই লক্ষ্যে তাদেরকে আমরা কিছু
একক ও দলীয় কাজ করতে দেব:
এই সেশনে শিক্ষার্থীরা আমাদের বেঁচে থাকার প্রয়�োজনে আমরা যে প্রতিনিয়ত প্রকৃতিকে ব্যবহার করে চলেছি
সেটা বুঝতে পারবে। পরে প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান সময় পর ্যন্ত মানুষ কি কি ধরণের প্রাকৃতিক সম্পদ
ব্যবহার করে চলেছে সেটা অনুসন্ধান করে বের করবে।
▪ সেশনের শুরুতে আমরা দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রয়�োজনে কিভাবে প্রকিৃতিকে ব্যবহার করে
চলেছি এমন কিছু সম্পদের ব্যবহারের কথা গল্প/ প্রশ্ন আকারে বলব�ো। যেমন আমরা লেখার জন্য
যে কাগজ টা পাই সেটা ক�োন জায়গা থেকে আসে? বা আমরা যে চেয়ার বা টেবিল ব্যবহার করছি
সেগুল�ো ক�োথা থেকে পাচ্ছি? এরকম কিছু প্রশ্নের মাধ্যমে আমরা যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রাকৃতিক
সম্পদ ব্যবহার করে চলেছি সে বিষয় টা স্পষ্ট করব�ো।
▪ এরপর আমরা শিক্ষার্থীদের আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়�োজনীয় সম্পদ যা আমরা প্রকৃতি থেকে
পাই এমন কিছু সম্পদের ছবি দেখাবেন।
137
পানি জ্বালানী (কয়লা)
বায়ু আবাসস্থল
খাদ্য
▪ ছবি দেখান�োর পরে তাদের এসব সম্পদ নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করব�ো। যেমন:
প্রশ্ন:
১. ছবিতে দেখান�ো সম্পদ গুল�ো থেকে ক�োনটি তারা সরাসরি পায়?
২. ক�োনটিকে রুপান্তর করতে হয়?
৩. সম্পদ গুল�ো আমরা ক�োন জায়গা থেকে পায়?
এছাড়াও অন্য প্রশ্ন করে তাদের কে অনুধাবন করাব�ো আমরা সম্পদ গুল�ো প্রকৃতি থেকে পাই। ক�োন�োটা
সরাসরি আবার ক�োন�োটা রুপান্তরিত ভাবে।
138
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ প্রাচীন মানুষের জীবনে সম্পদের ব্যবহার শির�োনামে একটি অনুসন্ধান কাজ করবে এবং প্রাপ্ত ফলাফল
একটি পৃথিবীর মানচিত্রে বিভিন্ন প্রতীকের সাহায্যে তা উপস্থাপন করবে।
▪ আমরা লক্ষ্য রাখব�ো যেন শিক্ষার্থীরা প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় পর ্যন্ত যে যে প্রাকৃতিক সম্পদ
ুঁ বের করে পৃথিবীর মানচিত্রে
ব্যবহার করেছে তা অনুসন্ধানী পাঠ ও অন্যান্য মাধ্যম থেকে খজে
প্রত্যেকটি সম্পদকে এক একটি সাংকেতিক চিহ্ন এবং প্রত্যেক সভ্যতাকে ভিন্ন ভিন্ন সাংকেতিক
চিহ্নের মাধ্যমে চিহ্নিত করে।
▪ অনুসন্ধান কাজ শেষ হলে আমরা প্রত্যেককে তাদের ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই এ পৃথিবীর
যে খালি মানচিত্র রয়েছে সেখানে বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করে প্রকৃতিক সম্পদ কে এবং যেক�োন�ো
একটি রঙ দিয়ে তারা যে সভ্যতা সভ্যতা নিয়ে অনুসন্ধান করেছে তা চিহ্নিত করতে দেব। এক্ষেত্রে
মনে রাখব�ো কাজটি তারা এককভাবে করবে। সেটা বাড়ির কাজ আকারেও যেতে পারে। ইতিহাস ও
সামাজিক বিজ্ঞান (অনুশীলন বই) পৃষ্টা নং 137 এ মানচিত্রটি ব্যবহার করবেন।
সেশন ২: নিজেদের জীবনে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার বের করা ও সময়ের সাথে মানুষের প্রাকৃতিক
সম্পদের ব্যবহারের পরিবর্তন অনুসন্ধান (শিক্ষক ও সতীর্থ মূল্যায়ন)
এই সেশনে আমরা তাদের নিজেদের জীবনে তারা কিভাবে প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার করে চলেছে এবং
মানব সভ্যতা শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর ্যন্ত আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারে যে যে পরিবর্তন গুল�ো
এসেছে সে বিষয়টা অনুধাবন করন�োর জন্য কিছু কাজ করাব�ো।
▪ প্রথমে আমরা তাদের প্রতিদিনের জীবন যাপনে তারা কি কি প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করছে তার
একটি তালিকা তৈরি করতে দেব। তাদের প্রতিদিন কে সকাল দুপুর ও রাতে ভাগ করে সেই সময়
গুল�ো তে তারা ক�োন ক�োন প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করছে তা তাদের বইয়ে দেওয়া একটি ছকের
মাধ্যমে পূরণ করবে।
সময় প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার
সকাল
দুপুর
রাত
139
▪ এরপর তারা আদি সময় হতে বর্তমান সময় পর ্যন্ত মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের পরিমাণ
কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেটা আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর কি ধরণের প্রভাব পড়ছে তা
অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার ধাপ অনুসরণ করে অনুসন্ধান করবে। শেষে অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ক্লাসে
সবার সামনে উপস্থাপন করবে।
▪ সময়ের সাথে মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার এর পরিবর্তন আমাদের প্রকৃতিতে যে যে প্রভাব
ফেলছে তা দলে আল�োচনা করে খজে ুঁ বের করবে। প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান সময় পর ্যন্ত আমাদের
প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারে যে যে পরিবর্তন এসেছে তা তারা অনুসন্ধানী পাঠ ও দলে আল�োচনা করে
খজেুঁ বের করবে, এবং উপস্থাপন করবে। মূলত তারা তাদের ব্যবহারে যে যে প্রাকৃতিক সম্পদ এসেছে
এবং প্রাচীনকালে মানুষ যে যে ধরণের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করত�ো তা খজে ুঁ বের করে লিখবে।
থিম: সামাজিক জীবনে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিবর্তনের প্রভাব:
ভূপৃষ্ঠের সুপেয় পানি সম্পদ ও ব্লু-ইক�োনমি এবং খনিজ সম্পদ-জীবাশ্ম জ্বালানি
এই ধরণের প্রভাব অনুসন্ধানের জন্য তারা দুটি প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন: আপাত দৃষ্টিতে নবায়ন য�োগ্য
একটি প্রাকৃতিক সম্পদ-পানি ও একটি অনবায়ন য�োগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ জীবাশ্ম জ্বালানী নিয়ে কিছু
পরীক্ষন ও অনুসন্ধান কাজের মাধ্যমে দেখবে এসব সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার না হলে এই সব সম্পদ
একদিন শেষ হয়ে যাবে যা টেকসই উন্নয়নের অন্তরায়।
সেশন ৩: ভূপৃষ্ঠের সুপেয় পানি সম্পদ -পৃথিবী ও বাংলাদেশে সুপেয় পানির অবস্থা
সেশন ৪, ৫ ও ৬ : ব-দ্বীপ এর গড়ে ওঠা
সেশন ৭: আমাদের সমুদ্র সম্পদ-ব্লু ইক�োনমি
সেশন ৮ ও ৯: ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার
সেশন ১০ ও ১১ : খনিজ সম্পদ-জীবাশ্ম জ্বালানি
সেশন ৩: ভূপৃষ্ঠের সুপেয় পানি সম্পদ -পৃথিবী ও বাংলাদেশে সুপেয় পানির অবস্থা
এই সেশনের জন্য আমরা প্রথমে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান পানি নিয়ে
মানচিত্রের মাধ্যমে একটি অনুসন্ধান কাজ করাব�ো যেখানে তারা একটি পৃথিবীর মানচিত্র দেখে পৃথিবীর
ুঁ
মহাদেশ গুল�োর মধ্যে ক�োথায় ক�োথায় সুপেয় পানির প্রাচুর্য্য আছে এবং ক�োথায় ক�োথায় স্বল্পতা আছে তা খজে
বের করবে এবং পরে তাদের বই এ দেওয়া একটি ছকে গ্লোবের সাহায্যে মহাদেশ অনুযায়ী দেশের নাম লিখে
ছকটি পূরণ করবে।
পৃথিবীর যে মানচিত্র আছে ওটা দেখে নিচের ছক পূরণ করবে। মানচিত্রটি পৃথিবীর বর্তমান সময়ের সুপেয়
পানির অবস্থা প্রকাশ করছে। মানচিত্রে যে রং যে অবস্থা প্রকাশ করছে তা দেখে ছকে লিখবে। ইতিহাস ও
সামাজিক বিজ্ঞান (অনুশীলন বই) পৃষ্টা নং 140 এ ছকটি ব্যবহার করবেন।
140
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
চরম পানি সংকট পূর্ণ পানির সমস্যা পর ্যাপ্ত পানি প্রচুর পানি উদ্বৃত্ত পানি
সংকট পূর্ণ হতে যাচ্ছে যে আছে আছে আছে
দেশ
দেশ যে দেশে
ছকটি পূরণ করার মাধ্যমে তারা উপলব্ধি করবে বাংলাদেশে সুপেয় পানি সম্পদ খুব খারাপ অবস্থায় আছে।
পরে কেন আমাদের দেশের এমন অবস্থা এটা অনুসন্ধান করার জন্য তারা বাংলাদেশ নামক ব-দ্বীপ গড়ে ওঠার
প্রক্রিয়া একটি পরীক্ষণের মাধ্যমে দেখবে। পরীক্ষণটি নীচের দেখান�ো পদ্ধতি ও উপকরণ ব্যবহার করে আমরা
তাদের করতে সাহায্য করব�ো।
উপকরণ
বালি, পানি, টেবিল/ অ্যালুমিনিয়াম ট্রে
পদ্ধতি
▪ একটি টেবিলে/ অ্যালুমিনিয়াম ট্রে তে বালির স্তূপ তৈরি করব�ো এবং পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেব যেন
বালির দানাগুলি একসাথে লেগে থাকে।বালির স্তরটি ক�োথাও উঁচু এবং ক�োথাও সমতল ভাবে তৈরি
করব�ো।(এখানে বালি পলি মাটি কে নির্দশ করে।)
▪ এখন বালির স্তূপের উপর থেকে পানি ঢালব�ো এমন ভাবে যেন পানি টেবিলের/অ্যালুমিনিয়াম ট্রে উপর
দিয়ে বয়ে যায়।
▪ এখন স্তূপ থেকে পলি ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া এবং স্তূপের সমতল প্রান্ত বরাবর পানি দ্বারা পলির পরিবহন
লক্ষ্য করব�ো।
▪ একইভাবে পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি করব�ো।কম পানি ঢেলে এবং বেশি পানি ঢেলে পরীক্ষা করতে থাকব�ো
এবং লক্ষ্য রাখব�ো কিভাবে বালির তৈরি ভূমিরূপটির পরিবর্তন হয়।
▪ ট্রের পানি পড়ার শুরুর স্থান ও শেষ স্থানের বালির অবস্থা পর ্যবেক্ষণ করব�ো।
▪ এরপর বালির সাথে কিছু নুড়ি পাথর যুক্ত করে পানির প্রবাহ দিয়ে দেখব�ো কি কি পরিবর্তন হয়।
141
▪ এরপর পরীক্ষনের ফলাফল তারা তাদের বই এ দেওয়া ছকে ছবি এঁকে পূরণ করবে।
▪ শিক্ষার্থীরা দেখেছে বদ্বীপ কিভাবে গড়ে ওঠে, এখন আমরা তাদের বদ্বীপ গড়ে ওঠার পেছনে নদীর
ভূমিকা নিয়ে তাদের একটি কাজ করাব�ো। এজন্য আমরা একটি বঙ্গীয় বদ্বীপ এর মানচিত্র ব্যবহার
করে শিক্ষার্থীদের মানচিত্রে ব-দ্বীপ অঞ্চল চিহ্নিত করতে বলব�ো। শিক্ষার্থীরা প্রথমে ব-দ্বীপে
প্রবেশকারী নদীগুলি সনাক্ত করবে এবং তারপর তারা নদীগুল�ো ক�োন ক�োন দেশের মধ্য দিয়ে
ুঁ বের করে ছকে লিখবে। একাজের মাধ্যমে তারা অনুধাবন করবে একই নদী
প্রবাহিত হয়েছে তা খজে
কত দেশে প্রবাহিত হচ্ছে এবং আমরা নানা দেশের মানুষ সেই একই নদীর পানি ব্যবহার করে চলেছ্
142
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
বদ্বীপের মানচিত্র হবে।
নদীর নাম যে যে দেশ হয়ে বাংলাদেশে এসেছে
▪ এরপর তারা জলবিদ্যুৎ বাঁধ এবং প্রকল্পগুলি কীভাবে ব-দ্বীপকে প্রভাবিত করতে পারে সেই সম্পর্কিত
একটি অনুসন্ধান মূলক কাজ করবে।
▪ কাজটি করার জন্যে তারা তাদের এলাকার কাছাকাছি ক�োন�ো জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা (যদি থাকে)
অথবা ক�োন�ো বাঁধ এলাকা পরিদর্শন ও পর ্যবেক্ষন করবে। প্রশ্ন তৈরি করে এলাকার মানুষের সাথে
কথা বলবে এবং প্রকল্প/ বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীর বা আশেপাশের মানুষের জীবনে এটি কি ধরণের
প্রভাব ফেলছে তা অনুসন্ধান করবে। একাজে তারা ফারাক্কা বাঁধ, টিপাইমুখ বাঁধ, তিস্তা বাঁধ এবং
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কিত তথ্য ইন্টারনেটের/ এই সম্পর্কিত বই এর সহয�োগিতা নিতে
পারবে।
▪ পরে তাদের কাজের ফলাফল গুল�োর উপর ভিত্তি করে বাঁধ সম্পর্কিত বিতর্ক প্রতিয�োগিতার আয়�োজন
করবে। যার নিয়মাবলী তৈরি করতে আমরা তাদের সাহায্য করব�ো।
বাঁধ বিতর্ক
মানুষের জীবনে বাঁধের প্রভাব সংক্রান্ত যে কাজটি আছে তা অনুসন্ধান প্রকিৃয়া অনুসরণ করে করবে। প্রাপ্ত
ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বাঁধ বিতর্কে অংশগ্রহণ করবে। (সামষ্টিক) নিচে বিস্তারিত ভাবে মূল্যায়ন
ক�ৌশল লেখা আছে
নিয়মাবলী
▪ প্রথমে আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ৫-৬ জনের ৬টি দল গঠন করে ৩ ধাপে বিতর্ক আয়�োজন
করব�ো। প্রথম ধাপে ২ দল এভাবে পর ্যায়ক্রমে ৬টি দল বিতর্কে অংশ নেবে।
▪ আমরা আমাদের অনুসন্ধান হতে প্রাপ্ত তথ্য এবং ফারাক্কা বাঁধ, টিপাইমুখ বাঁধ, তিস্তা বাঁধ ও কাপ্তাই
জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এর জন্য কিছু তথ্য ইন্টারনেট/ বই এর সাহায্যে সংগ্রহ করে একটি লিখিত
প্রতিবেদন তৈরি করব
▪ এরপর বাঁধ নির্মান এবং এর প্রভাবকে কেন্দ্র করে কয়েকটি বিষয় নির্ধারন করে বিতর্ক প্রতিয�োগিতার
আয়�োজন করব�ো।
▪ প্রতিটি দল তাদের প্রাথমিক যুক্তিগুল�ো উপস্থাপন করার সুয�োগ পাবে [8 মিনিট]।
▪ যুক্তি খণ্ডন [6 মিনিট]
▪ প্রতিটি বিতর্কের উপসংহারে, গ্রুপের বাকিরা তাদের «মতামত» প্রদান করতে পারবে।
143
নিয়ম তৈরির পর বিতর্কের জন্য কিছু বিষয় নির্ধারন করতে তাদের সাহায্য করব�ো এবং সব শেষে শিক্ষার্থীরা
প্রাপ্ত ফলাফল গুল�ো বিশ্লেষন করে একটি সঠিক সিদ্ধান্তে প�ৌঁছান�োর চেষ্টা করবে।
মূল্যায়ন ক�ৌশল:
সমষ্টিগত মূল্যায়ন: বাঁধ বিতর্ক
নির্দেশনা
শিক্ষার্থীরা বাঁধ বিতর্কের জন্য লিখিত প্রতিবেদন তৈরি করবে যার তথ্য তারা তাদের অনুসন্ধানী কাজের
মাধ্যমে এবং অনলাইনের সাহায্যে পাবে। এরপর তারা ৩টি দলে ভাগ হয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সামাজিক
জীবনে বাঁধের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক প্রভাবকে কেন্দ্র করে তিনটি বিতর্কে অংশগ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে
প্রতিটি দল যেক�োন�ো একটি সুপরিচিত বড় বাঁধ কে নেবে ( ফারাক্কা, তিস্তা ও টিপাইমুখ)। প্রত্যেকদল তাদের
ভিতরে ছ�োট�ো দুটি দল গঠন করে একদল বিষয়ের পক্ষে ও অন্যদল বিপক্ষে অবস্থান করবে। প্রতিটি দল
তাদের যুক্তিগুলি বিশদ বিবরণে উপস্থাপন করবে।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে বাঁধযুক্ত নদীগুলি এক একটি জটিল সিস্টেম, যেখানে অনেকগুলি প্রক্রিয়া যেমন উজানে
একরকম আবার ভাটিতে অন্যরকম হয়। একটি বাঁধ নির্মাণের কথা বিবেচনা করার সময় এই সমস্ত সম্মিলিত
প্রক্রিয়া গুলিকে বিবেচনায় আনতে হবে। শিক্ষার্থীরা তাদের বিতর্কে একটি নদী বাঁধের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান
নেবে, আমরা লক্ষ্য করব�ো যেন তারা সমস্যাটিকে অতি-সরল করার চেষ্টা না করে। আমরা তাদের যুক্তি বা
তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে কৃষি, শিল্প, শক্তি, জনস্বাস্থ্য ইত্যাদি সহ - একটি অঞ্চলের জন্য একটি বাঁধ নির্মাণ বা না
নির্মাণের পরিণতিগুলি ভাবতে সাহায্য করব�ো।
বিস্তারিত:
▪ প্রতিটি দল তাদের প্রাথমিক যুক্তি (গুলি) উপস্থাপন করার সুয�োগ পাবে [8 মিনিট]।
▪ যুক্তিগুলি খণ্ডন [6 মিনিট]
▪ প্রতিটি বিতর্কের উপসংহারে, গ্রুপের বাকিরা তাদের «মতামত» প্রদান করবে।
▪ প্রত্যেক দল তিনটি বাঁধের মধ্যে যে ক�োন�ো একটি বেছে নেবে। এটি নির্মাণের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান
নেবে এবং তাদের অবস্থানকে সমর্থন করার জন্য যুক্তিগুলি উপস্থাপন করবে। যাদের দলের অবস্থান
বাঁধ নির্মাণের «বিরুদ্ধ» হয়, তাহলে তাদের বাঁধ নির্মানের নেতিবাচক দিকগুলি ব্যাখ্যা করতে
হবে। আর যাদের অবস্থান বাঁধ নির্মাণের «জন্য» হয়, তাহলে তাদের নদী ব্যবস্থার আন্তঃসংযুক্ত
উপাদানগুলির (জলবিদ্যুৎ, বন্যা প্রতির�োধ ইত্যাদি) উপর বাঁধের প্রভাবগুলি স্পষ্ট করতে হবে।
▪ প্রত্যেক দল তাদের বিপক্ষ দল যে যে যুত্কিগুল�ো আনতে পারে তার সমাধান কি হতে পারে তা ভেবে
রাখবে (বির�োধী দলের যুক্তি খণ্ডন উপস্থাপন করতে প্রস্তুত থাকবে।) উদাহরণস্বরূপ, যদি ফারাক্কা
বাঁধের পক্ষে বিতর্ক করে, তাহলে কীভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং জীবন ও সম্পত্তির সম্ভাব্য ক্ষতির
বিষয়গুলি কিভাবে পরিচালনা করা যেতে পারে তা ভেবে রাখতে হবে।
▪ প্রত্যেকদল অন্যান্য দলের বিতর্কের সময় একজনকে পর ্যবেক্ষক হিসাবে রাখবে যে প্রতিটি বিতর্কে
যুক্তি ও যুক্তি খন্ডনসহ একটি সংক্ষিপ্ত মতামত (~2/1 পৃষ্ঠা) লিখে রাখবে।
▪ সকল বিতর্ক শেষ হওয়ার পর আমরা ফলাফলগুলি গণনা করব এবং আল�োচনা করব।
144
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
মূল্যায়ন রুব্রিক্স: পারদর্শিতার নির্দেশক 10 এর জন্য
আগের সেশন গুল�োর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আমাদের সুপেয় পানির উৎসগুল�ো দেখেছে। এখন তারা আমাদের যে
এক সম্পদে ভরা এক সুবিশাল সমুদ্র আছে সেটা সম্পর্কে জানবে।
▪ এই সেশনে আমরা তাদের সম্প্রতি বাংলাদেশের যে সমুদ্র সম্পদে এক বিশাল জয় হয়েছে সে বিষয়টি
তাদের বাংলাদেশের নতুন সমুদ্রসীমা সহ একটি মানচিত্রের মাধ্যমে দেখাব�ো।
পরে তারা এবিষয়ে যে তথ্য গুল�ো আছে তা পড়বে এবং ছকে আমরা আমাদের সমুদ্রের ক�োন ক�োন অঞ্চলে কি
কি অধিকার পেলাম তার একটি তালিকা তাদের বইয়ে দেওয়া ছকে তৈরি করবে।
145
অঞ্চল কি কি অধিকার পেলাম
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান (অনুশীলন বই) পৃষ্টা নং 149 এ মানচিত্রটি ব্যবহার করবেন।
▪ সবশেষে একটি মজার খেলার মাধ্যমে সুপেয় মাটির উপরের পানি সম্পর্কিত কাজ শেষ করবে।
যেখানে তারা রেখা টেনে একটি পানির ফোঁটাকে বাঁধের কাছে প�ৌঁছে দেবে।
146
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
147
▪ এরপর আমরা একটা মজার পরীক্ষার সাহায্যে মাটির নিচে পানির স্তর কেমন ভাবে থাকে, ভূপৃষ্ঠের
পানি এবং ভূগর্ভস্থ পানির মধ্যাকার সম্পর্ক এবং কি কি কারণে কি কি সমস্যা হতে পারে তা
অনুসন্ধান করতে তাদের সাহায্য করব�ো।
ভূপৃষ্ঠের পানি এবং ভূগর্ভস্থ পানির সম্পর্কের পরীক্ষণ:
ভূপৃষ্ঠের পানি এবং ভূগর্ভস্থ পানির সম্পর্কের পরীক্ষণ টি নির্দেশনা অনুযায়ী করার পর পরীক্ষণের ভিত্তিতে
স্তরসমূহের বর্ননা ছকে লিখবে। আমরা লক্ষ্য রাখব�ো যেন পরীক্ষণের সময় যে যে স্তর গুল�ো দেখেছে,
ছবির সাহায্যে তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারে।
প্রয়�োজনীয় উপকরণ: ১. স্বচ্ছ প্লাস্টিক কাপ ২. বরফ চূর্ণ ৩. ভ্যানিলা আইসক্রিম ৪. স্প্রাইট/ সেভেন আপ
লিটার (এসব পানীয় দ্রব্য কে কার্বনেটেড পানি ও বলা হয় ) ৫. মিনি চকলেট চিপস/বিস্কুটের চূর্ণ ৬.ড্রিংকিং
স্ট্র ৭. ফুড কালার
পদ্ধতি: {এখানে একটি ছবি আঁকতে হবে যেখানে একটি পরিষ্কার প্লাস্টিকের কাপ এর নিচের দিকে বরফ তার
উপর স্প্রাইটের একটি স্তর, তার উপর আইসক্রিমের একটি স্তর, সবার উপরে কিছু চক�োস/ চকলেট চিপস্ এর
স্তর থাকবে এবং দুটি স্ট্র উপর থেকে নীচ পর ্যন্ত দেওয়া থাকবে।}
1. প্রথমে কিছু বরফের টুকর�ো দিয়ে একটি পরিষ্কার প্লাস্টিকের কাপ এর অর্ধেক পূর্ণ করে আমরা একটি মাটির
নিচের জলাভূমি তৈরি করব�ো। বরফের টুকর�ো গুল�ো ভূগর্ভস্থ পানি ধরে থাকা নুড়ি গুলিকে ব�োঝায়।
2. শুধু বরফ ঢেকে কার্বনেটেড পানি য�োগ করি। কার্বনেটেড পানি দ্বারা আমরা ভূগর্ভস্থ পানিকে ব�োঝাব�ো।
3.এরপর আইসক্রিমের একটি স্তর যুক্ত করি (এটি বেশ শক্তভাবে জলজভূমির উপরে একটি স্তর» হিসাবে
দেখাতে হবে)। প্রকৃতিতে, স্তরটি কাদামাটি বা চুনাপাথর এর মত�ো দুর্ভেদ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি যা অভ্যন্তরে ও
বাইরে পানির চলাচলে বাধা দেয়।
4.আইসক্রিমের উপরে মিনি চিপস বা বিস্কুটের চূর্ণ য�োগ করি। এটি দ্বারা আমরা মাটির স্তর কে ব�োঝাব�ো।
5.মাটির স্তর এর শীর্ষে খাদ্য রঙের কয়েক ফোঁটা য�োগ করি। এই খাদ্য রঙ দ্বারা আমরা ভূপৃষ্ঠের যেক�োন�ো
দূষিত পানি কিভাবে ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করতে পারে সেটা দেখব�ো।
ভূপৃষ্ঠের পানি দূষণের সম্ভাব্য উৎসগুল�ো নিয়ে বন্ধুরা আল�োচনা করি।
6.একটি স্ট্র ব্যবহার করে, আমাদের জলাভূমির কেন্দ্রে একটি “কূপ” খনন
করি। ধীরে ধীরে স্ট্র মুখে নিয়ে টেনে কূপ পাম্প করা শুরু করি। ভু-জলতল
এর পতন খেয়াল করি। খাবারের রঙ কূপের মধ্যে চুইয়ে যাওয়ার এবং শেষ
পর ্যন্ত ভূগর্ভস্থ পানিতে মিশে যাওয়ার সময় ন�োট করে রাখি। এছাড়াও লক্ষ্য
করি কিভাবে কূপের চারপাশের এলাকা ডেবে যেতে শুরু করে, যা ভূগর্ভস্থ
পানির হ্রাসের প্রভাব কে প্রতিনিধিত্ব করে।
7.ধীরে ধীরে আরও কার্বনেটেড পানি য�োগ করে আমাদের জলজভূমিকে
পুনরায় ভর্তি করি, যা বৃষ্টির পানির সাথে ভূগর্ভস্থ পানির মিশে যাওয়াকে
প্রতিনিধিত্ব করে।
৮. কিছু জায়গায় কৃত্রিম রিচার্জ ব্যবহার করে জলাধারগুলিকে পূরণ করতে
পারি। যেমন কূপে ইনজেকশনের মাধ্যমে বা ভূমি পৃষ্ঠের উপর পানি ছড়িয়ে
দেওয়ার মাধ্যমে যেখানে এটি মাটিতে প্রবেশ করতে পারে। প্রকৃতিতে যখন
ভারী বৃষ্টি হয় তখন এভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নতুন করে ভর্তি হয়।
148
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
▪ পরীক্ষন শেষে শিক্ষার্থীরা এতক্ষন যা পর ্যবেক্ষন করেছে তার সাহায্যে নিচের ছকটি পূরণ করবে।
ছকে ১,২,৩.... সংখ্যা গুল�ো দ্বারা মাটির নিচে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরগুল�ো কে ব�োঝান�ো হয়েছে।
ক্রম স্তরের বিবরণ
১
২
৩
৪
৫
৬
৭
৮
৯
▪ ছক পূরণ শেষ হলে শিক্ষার্থীরা বেশি বেশি মাটির নিচের পানি উত্তোলণের ফলে কি কি সমস্যা হতে
পারে এবং সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য উপায় কি কি হতে পারে তা দলীয় আল�োচনার মাধ্যমে খজে ুঁ
বের করবে। পরে স্থানীয় পর ্যায়ে সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য উপায়সমূহ বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ ক্লাবের
মাধ্যমে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
নিজেদের এলাকার ভূগর্ভস্থ পানি টেকসই ব্যবস্থাপনায় কি কি কর্মসূচী নেওয়া যায় তা ঠিক করবে।
কাজটি দলীয় আল�োচনার মাধ্যমে করবে।
1. ক�োটি ক�োটি বছর আগে, পৃথিবীর বড় 2. ক্ষয়প্রাপ্ত উদ্ভিদ একটি 3.সময়ের সাথে ধীরে ধীরে
একটা অংশ জলাভূমি দ্বারা আচ্ছাদিত নরম স্তর তৈরি করল�ো যাকে এই কাদা ও বালি
ছিল�ো। পিট বলে। সময়ের সাথে পাথরে পরিণত হল�ো এবং
যখন জলাভূমির উদ্ভিদগুল�ো প্রাকৃতিক/ সাথে এই পিট
পিট কয়লায় পরিবর্তিত হয়ে
অন্য ক�োন�ো অজানা কারনে মারা গেল�ো কাদা এবং বালির নিচে চাপা গেল�ো।
তখন পড়ে গেল�ো।
তারা নীচে ডুবে গেল�ো।
▪ পরে এই ধরণের খনিজ সম্পদ গুল�ো পৃথিবী ও বাংলাদেশের ক�োথায় ক�োথায় আছে তা দুটি পৃথক
ুঁ বের করবে এবং বইয়ে দেওয়া ছকে পূরণ করবে।
মানচিত্রের মাধ্যমে খজে
জ্বালানি সম্পদসমূহ
কয়লা
প্রাকৃতিক গ্যাস
খনিজ তেল
ইউরেনিয়াম
খনিজ পদার্থ
বক্সাইট
তামা
স্বর্ণ
ল�োহার আকরিক
রুপা 150
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
151
পৃথিবীর মানচিত্র ও বাংলাদেশের মানচিত্রের সাহায্যে পৃথিবীর ও বাংলাদেশের ক�োথায় ক�োথায় কি কি
ধরণের খনিজ সম্পদ আছে সেগুল�ো খজে ুঁ বের করবে এবং ছকে পূরণ করবে।
বাংলাদেশে বিদ্যমান খনিজ সম্পদগুল�ো নিয়ে একটি প্রকল্প ভিত্তিক কাজের মাধ্যমে এসব সম্পদ কি
অবস্থায় আছে, ক�োন সম্পদ কি কি কাজে লাগে অথবা এসব সম্পদ উত্তোলনের সময় কি কি পরিবেশ
গত সমস্যা হতে পারে এবং এসব সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপায় সমূহ খজে ুঁ বের করবে। কাজটি অনুসন্ধান
প্রক্রিয়ার ধাপ অনুসরণ করে করবে। আমরা লক্ষ্য রাখব�ো যেন ধাপগুল�ো সঠিক ভাবে অনুসরণ করা
হয়।
▪ প্রকল্পের কাজটি করার জন্য তারা উপরে দেওয়া বিষয় গুল�োর উপরে প্রশ্ন তৈরি করে নিচের যেক�োন�ো
একটি উপায় অবলম্বন করে প্রকল্পের কাজটি শেষ করবে।
ক. সম্ভব হলে একটি খনি এলাকা পরিদর্শন করবে।
খ. এ সম্পর্কিত ক�োন�ো ভিডিও দেখতে পারে
গ. ইন্টারনেট, বই অথবা ক�োন�ো অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাক্ষাতকার গ্রহণ করতে পারে।
▪ প্রকল্পে কাজ শেষ হলে তারা তাদের প্রাপ্ত ফলাফল একটি ইলেকট্রনিক বা হাতে লেখা পত্রিকা আকারে
বের করবে।
152
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব ও সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরিবার, বিদ্যালয় এবং সমাজে
এমন কিছু কাজের তালিকা তৈরি করবে যা এসব সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করবে এবং সে
সকল কাজ তারা বছর ব্যাপী নানা কার ্যক্রমের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে।(সামষ্টিক) (রুব্রিক্স ব্যবহার
করে মূল্যায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবক ও মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করবেন। নিচে রুব্রিক্স দেওয়া
আছে।
153
কাজের নমুনা তালিকা:
পরিবারে সম্পদের টেকসই ব্যবহার মূলক কাজ:
১. ব্যবহারের সময় ছাড়া পানির কল বন্ধ রাখা
২. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ করা
৩. বৃষ্টির পানি সংরক্ষন করা।
৪...........
৫...........
৬............
৭..............
বিদ্যালয়ে সম্পদের টেকসই ব্যবহার মূলক কাজ:
১. বিদ্যালয়ে যেখানে বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা পর ্যবেক্ষণ করা এবং যেখানে পুনর্ব্যবহার হতে পারে তা ন�োট করা।
২. শ্রেণীকক্ষ এবং বিদ্যালয়ের অন্যান্য এলাকায় আল�ো বন্ধ করে রাখা যখন সেগুলি ব্যবহার করা হয় না।
৩. শক্তি সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার না করার সময় কম্পিউটারগুলিকে স্লিপ ম�োডে রাখতে সবাই কে
অনুর�োধ করা।
৪..........
৫............
৬...........
৭...........
সমাজে সম্পদের টেকসই ব্যবহার মূলক কাজ:
১. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে পচনশীল ও অপচনশীল এই দুই ধরণের বর্জ্য আলাদা করে সংগ্রহ
করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ/ প�ৌরসভায় অনুর�োধ পত্র প্রেরণ।
২. এলাকায় পুকুর, খাল বা অন্যান্য পানির উৎস যা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তা পুনরায় ব্যবহার য�োগ্য করে
ত�োলার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ/ প�ৌরসভায় অনুর�োধ পত্র প্রেরণ।
৩. এলাকায় পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ সহ সব ধরণের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারে সচেতনতা মূলক প�োস্টার
বিলি করা।
৪..........
৫..........
৬.........
[ শিক্ষার্থীর বৃষ্টির পানি সংরক্ষন করছে এমন একটি ছবি, বিদ্যালয়ে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য আলাদা
ভাবে রাখা হচ্ছে এরকম নমুনা ডাস্টবিন এর ছবি আঁকতে হবে।]
154
কমান�ো পুনরায় ব্যবহার পুনর্ব্যবহার
▪ সবশেষে তারা পরিবার ও বিদ্যালয়ের যে যে কাজ এর তালিকা করেছিল�ো সেগুল�ো বাস্তবায়ন শুরু
করবে এবং এলাকার টেকসই উন্নয়ন মূলক কাজগুল�ো ক্লাবের মাধ্যমে এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি
কর্মকর্তা ও বয়স্ক ব্যক্তিদের সহয�োগিতায় বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে
পারদর্শিতার নির্দেশক ১১ এর মূল্যায়ন:
বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব ও সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরিবার, বিদ্যালয় এবং সমাজে এমন
কিছু কাজের তালিকা তৈরি করবে যা এসব সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করবে এবং সে সকল কাজ
তারা বছরব্যাপী নানা কার ্যক্রমের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে। (সামষ্টিক মূল্যায়নে য�োগ হবে)
▪ এই কাজটি করার জন্য তারা তাদের বই এ উল্লেখিত পদ্ধতি অনুসরণ করবে। এক্ষেত্রে পরিবারে তার
টেকসই উন্নয়নের ভুমিকা বিষয়ের মূল্যায়নটি অভিভাবক করবেন।(রুব্রিক্স এর মাধ্যমে)
156
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
৩।বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক বিভিন্ন কার ্যক্রমের বিভিন্ন কার ্যক্রমের নিজ পরিবার
সম্পদের সাথে মানুষের মাধ্যমে নিজ পরিবার মাধ্যমে নিজ পরিবার বিদ্যালয় ও এলাকায়
জীবনের সম্পর্ক অনুধাবন বিদ্যালয় ও এলাকায় বিদ্যালয় ও এলাকায় বিভিন্ন ধরণের
করে স্থানীয় পর ্যায়ে এসকল বিভিন্ন ধরণের বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক প্রাকৃতিক সম্পদের
সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের প্রাকৃতিক সম্পদের সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার সুষ্ঠু ব্যবহার কিভাবে
মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন সুষ্ঠু ব্যবহার কিভাবে কিভাবে করা যায় তা করা যায় তা কিছু
মূলক কাজে সক্রিয় করা যায় তা চিহ্নিত চিহ্নিত করতে পারছে কিছু ক্ষেত্রে চিহ্নিত
অংশগ্রহণ করছে। করছে এবং স্থানীয় কিন্তু এবং স্থানীয় পর ্যায়ে করতে পারলেও
পর ্যায়ে সেসব উপায় সেসব উপায় সমূহ সেসব কাজ কিভাবে
সমূহ বাস্তবায়ন বাস্তবায়ন মূলক কাজে বাস্তবায়ন করা
মূলক কাজে সক্রিয় সক্রিয় মন�োভাব দেখাচ্ছে যায় সে ধরণের
অংশগ্রহণ করছে। না। পরিকল্পনায়
ইতিবাচক মন�োভাব
দেখাচ্ছে না এবং
স্থানীয় পর ্যায়ে
বাস্তবায়ন মূলক
কাজে সক্রিয়
অংশগ্রহন করছে না।
157
অভিভাবক দ্বারা মূল্যায়ন
টেকসই উন্নয়ন মূলক কাজে নিজ দলের সদস্যদের মূল্যায়ন
পুর�োপুরি করেছে, কিছুটা করেছে, আরও অনেক ঊন্নতি করতে হবে- এই কথা গুল�ো ব্যবহার করে ফিডব্যাক
দিতে পারি আমরা।
মূল্যায়নের ক্ষেত্র পুর�োপুরি পালন করছে আংশিক পালন করছে পালন করতে অনীহা বা
অবহেলা লক্ষ্য করা যাচ্ছে
ব্যবহারের সময়
ছাড়া পানির অপচয়
করছে না।
ঘর থেকে বের
হওয়ার সময়
বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ
করা
পরিবারের বিভিন্ন
ধরণের সম্পদ
সংরক্ষনে বাড়ির
বড়দের সাহায্য
করছে এবং
ছ�োট�োদের সচেতন
হতে সাহায্য করছে
যে ক�োন�ো ধরণের
সম্পদ সংরক্ষনে
ও টেকসই উন্নয়নে
ইতিবাচক মন�োভাব
দেখাচ্ছে
158
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
159
160
ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান-শিক্ষক সহায়িকা
2023 শিক্ষাবর্ষ
সপ্তম -শ্রেণি
ইতিহাস ও সামাজিক িবজ্ঞান
শিক্ষক সহায়িকা
161