Professional Documents
Culture Documents
Chaos in Higher Education in West Bengal
Chaos in Higher Education in West Bengal
উচ্চশিক্ষায় লন্ডভন্ড
দেবেশ দাস
২০১৫ সালে বেশ কয়েকবার দিল্লি যেতে হয়েছিল কতগুলি কাজে। গেলেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি)
অফিসে যেতাম একটা জরুরি কাজে, সেটা হচ্ছে কমিশন থেকে একটা টাকা আসার কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা
প্রোজেক্টে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আসছে না, তার তাগাদা দেওয়া। প্রায় এক বছর ধরে তাগাদা দিচ্ছি। ২০১৪ সালে মোদির
সরকার হওয়ার সময় বলেছিল, এই তো সরকার এলো, কয়েকদিন যাক, তারপর হবে। সেটাই বছর ঘুরে গেল। শেষে
একদিন এক বড়ো অফিসারের সাথে দেখা করে রাগ করেই ইউজিসি-র দুর্বল কর্মসংস্কৃ তি নিয়ে দু-চার কথা বলে
ফেললাম। কর্মসংস্কৃ তি নিয়ে বলায় ভদ্রলোকের বোধহয় মনে লেগে গেল। বললেন - ‘আমি রোজ সকালে সাড়ে
৯টায় আসি, বিকালে ফিরি। তু মি আমার টেবিলে কোনো ফাইল পড়ে আছে দেখেছ? আমি সব ফাইল ছেড়ে দিয়েছি।
সারাদিন এই চেয়ার-টেবিলে পুতু লের মতো বসে থাকি, আমার কোনো কাজ বাকি নেই, সব ফাইল আমার সই করা
হয়ে গেছে, আমার সইয়ের পর একটা মিটিঙে সিদ্ধান্ত হবে, সিদ্ধান্ত হলে তারপর আমার আবার কাজ।’ এই
ভদ্রলোকের কাছ থেকেই জানলাম, এই ধরনের মিটিং সাধারণত কয়েক মাস অন্তর হয়, মিটিঙে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর
উপস্থিতিতে হওয়ার কথা, কিন্তু তিনি এক বছর ধরে মিটিং করার সময় দিতে পারছেন না বলে মিটিং হচ্ছে না, ফলে
এই ধরনের কোনো ফান্ড রিলিজও বন্ধ।
শিক্ষার মতো এক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর নিয়ে মন্ত্রীর এই উদাসীনতা দিয়ে যে বিজেপি সরকারের শুরু তার প্রভাব কিন্তু গত
৯ বছর ধরেই চলছে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে যেসব জায়গায় কেন্দ্রীয় সরকারের রুটিনমাফিকও যা কিছু করণীয় আছে, সে
সবেও গয়ংগচ্ছভাব বা চূ ড়ান্ত অপদার্থতা। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, এনআইটি ইত্যাদি কেন্দ্রীয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন উপাচার্য বা ডিরেক্টর পদ খালি পরে থাকে। একসময় কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রায় অর্ধেক
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপচার্য ছিল না। [১]
যেখানে উপাচার্য বা ডিরেক্টর পদে নিয়োগও হচ্ছে, সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই পাঠানো হচ্ছে আরএসএস’র সদস্যদের,
ইউজিসি এবং বিভিন্ন সংস্থা নির্দে শিত বা ন্যূনতম যোগ্যতার শর্ত পর্যন্ত মানা হচ্ছে না। এই ধরনের লোক খুঁজে পেতে
দেরি হওয়ার জন্যই এই পদগুলি ফাঁকা পড়ে থাকছে সম্ভবত।
মাত্র তিনটি উদাহরণ। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টরিক্যাল রিসার্চে র চেয়ারপার্সন
করা হয় আরএসএস’র এক সক্রিয় সদস্য জেলাপ্রাগদা সুদর্শন রাওকে, তিনি এসে রাম সেতু নিয়ে গবেষণার প্রস্তাব
দিয়েছিলেন। ২০২২ সালে জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করা হয় শান্তিশ্রী পণ্ডিত-কে, জানা যায় তিনি আগে
নিয়মিত তাঁর টু ইটার অ্যাকাউন্ট থেকে মুসলিম বিদ্বেষী টু ইট করতেন, পরে সেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেন। ২০২২ সালে
ইউপিএসসি-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে ডঃ মনোজ সোনিকে, সাধারণত এই পদে কোনো আইএএস অফিসার বা
নামি শিক্ষাবিদকে বসানো হয়, সোনির সেই স্তরের শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। মোদি মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় তিনি মোদির
বক্তৃ তা লিখে দিতেন, তাঁকে সবাই ‘ছোটে মোদি’ বলে ডাকত; এর আগে মাত্র ৪০ বছর বয়সে মোদি তাঁকে একটি
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করেন, দেশের কণিষ্ঠতম উপাচার্য। [২]
এছাড়া বিজেপি আরএসএস সদস্যদের রাজ্যে রাজ্যে রাজ্যপাল করে পাঠাচ্ছেন, যাঁরা পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের
আচার্য হচ্ছেন, আর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে হস্তক্ষেপ করতে নিয়মনীতির কোনো ধার ধারছেন না।
সরকারের অপদার্থতার আরেকটা উদাহরণ, অধ্যাপকপদে নিয়োগ। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ কেন্দ্রীয় শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানগুলিতে অধ্যাপকপদে প্রচু র খালি পদ আছে। বাস্তবে দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগই হচ্ছে না। এই ব্যাপারে সারণি ১
দেখুন। প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভ র ভারত গড়ার কথা বলেন। আইআইটিগুলিতে ৩১ শতাংশ পদ খালি, তার মধ্যে
আইআইটি-খড়গপুরে ৫৪ শতাংশ পদ খালি। প্রযুক্তির উন্নত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে, বিশেষত বিজ্ঞান-প্রযুক্তির এই
প্রতিষ্ঠানগুলিতে এত পদ খালি রেখে আত্মনির্ভ র ভারত হবে?
সারণি ১: ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে অধ্যাপক পদে আসন সংখ্যা, খালি পদ ও খালি পদের
শতাংশ [৩]
মুখে প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞানের গবেষণায় জোর দেওয়ার কথা বলেন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে একদম তরুণ যাঁরা গবেষণা
করেন সেই পিএইচডি ছাত্রদের কাছে খোঁজ নিয়ে দেখুন, যাঁরা পরীক্ষা দিয়ে ফেলোশিপ পাওয়ার জন্য নির্ধারিত
হয়েছেন, অন্যান্য দেশের মতো তাঁরা এদেশে নিয়মিত সেই ফেলোশিপ পান না৪। ফেলোশিপ ছাড়া তাঁদের একটা
কনটিনজেন্সি গ্রান্ট পাওয়ার কথা - পরীক্ষা নিরীক্ষার খরচ, ফিল্ডে যাওয়া, কনফারেন্সে যাওয়া ইত্যাদি খরচের জন্য।
সে টাকা বেশিরভাগ সময় আসে না৪। ২০২০ সাল থেকে কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চে র
অনেকগুলি ফেলোশিপ স্কিম বন্ধ হয়ে গেছে। [৪] সামাজিকভাবে পিছিয়ে-পড়া অংশ দলিত-আদিবাসী ছাত্র-
ছাত্রীদের গবেষণা করার জন্য রাজীব গান্ধী ফেলোশিপ, ৬ ধরনের সংখ্যালঘুদের জন্য মৌলানা আজাদ ফেলোশিপ
ছিল, সব বন্ধ করে দিয়েছে বিজেপি সরকার। [৪]
পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা আরও খারাপ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দিনের পর দিন স্থায়ী উপাচার্য নেই। ঐতিহ্যবাহী কলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ যিনি স্থায়ী উপাচার্য ছিলেন, তাঁর নিয়োগ সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। কারণ তাঁর
নিয়োগপত্রে সই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে, যা তিনি করতে পারেন না, সই করার কথা আচার্যের। এমন লজ্জার
ঘটনা দেশে কোথাও ঘটেনি।
রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের দ্বৈরথে উচ্চশিক্ষা উঠে যাওয়ার জোগাড়। সম্প্রতি রাজ্যপাল আচার্য হিসাবে কিছু
নিয়োগ করছেন, সেখানে ইউজিসি নির্দে শিত কোনো গাইডলাইনস তিনি মানছেন না।
উপাচার্য নিয়োগের মতো রুটিন কাজই করা যাচ্ছে না, আবার অন্য কাজ! অধ্যাপকপদে স্বাভাবিকভাবেই নিয়োগ
হচ্ছে না। কলকাতায় অবস্থিত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কত অধ্যাপক পদ আছে, আর তার কত পদ খালি, তা খোঁজ
নিয়ে যা জেনেছি তা সারণি ২-তে দেখুন। ভাবতে পারেন, কলকাতার মতো ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ৫০
শতাংশ অধ্যাপক পদ খালি থাকে, তবে কী পড়াশুনা হবে? খোঁজ নিলে দেখবেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়তেও অবস্থা
তথৈবচ। খোঁজ নিয়ে জানলাম, পুরোপুরি সরকারি কলেজগুলিতে প্রায় দুই-তৃ তীয়াংশ কলেজে স্থায়ী অধ্যক্ষ নেই,
কমপক্ষে এক তৃ তীয়াংশ অধ্যাপক পদ খালি।
সারণি ২: তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট অধ্যাপক পদে অনুমোদিত এবং খালি পদের সংখ্যা ও শতাংশ
বিশ্ববিদ্যালয় মোট অনুমোদিত পদ খালি পদ খালি পদের শতাংশ
কলকাতা ৭৯৩ ৩৯৮ ৫০
যাদবপুর ৮৬৮ ২৪৩ ২৮
রবীন্দ্রভারতী ১৯৯ ৭৮ ৩৯
আর আছে কলেজে কলেজে ছাত্র সংগঠনের নামে শাসক দলের দাপাদাপি। কলেজে কলেজে ছাত্রভরতিতে
ছাত্রসংগঠনের দুর্নীতি, শিক্ষকদের গায়ে হাত, অপমান। ভাঙড় কলেজে অধ্যাপিকার গায়ে জল ভর্তি জগ ছুঁ ড়ে
মারেন তৃ ণমূল নেতা। রায়গঞ্জ কলেজে ছাত্র পরিষদের হয়ে ৫৬ বছরের তৃ ণমূল নেতা অধ্যক্ষের জামার কলার ধরে
টেনে নিয়ে গেলে, মুখ্যমন্ত্রী বলেন - ‘বাচ্চা ছেলের কাজ’।
আসলে কী কেন্দ্রীয় সরকার, কী রাজ্য সরকার - দুই সরকারেরই শিক্ষা অগ্রাধিকারের তালিকায় পড়ে না। বামফ্রন্ট
সরকারের আমলে শিক্ষায় অগ্রাধিকার ছিল বলেই উচ্চশিক্ষা ও বিদ্যালয় শিক্ষার আলাদা ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিল।
কাজটাও ছিল প্রচু র। এখন দুই দপ্তরের একই মন্ত্রী। বাম আমলে মাদ্রাসা শিক্ষার জন্যও আলাদা মন্ত্রী ছিল, এখন
মুখ্যমন্ত্রীর ৮ টা দপ্তরের একটা মাদ্রাসা, সেই ৮ দপ্তরের মধ্যে আছে স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, আছে ভূ মি সংস্কারের মতো
গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর।
আবার কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের এত অপদার্থতা, অকর্মণ্যতা দেখছেন তো, কিন্তু কখনো কখনো এরা খুবই সক্রিয়।
শিক্ষকপদে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পুর্বতন শিক্ষামন্ত্রী বেশ সক্রিয় ছিলেন। যথেষ্ট
সক্রিয়তার সাথেই বিজেপি আরএসএস’র লোকদের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢোকাচ্ছে।
সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সরকার এমন নীতি নিচ্ছে, যাতে শিক্ষার ক্ষতি হছে। তথ্য বলছে বিজেপি এবং তৃ ণমূলের
আমলে কেন্দ্রে ও রাজ্যে শিক্ষার বেসরকারিকরণ বেশ বেড়েছে। সারণি ৩ দেখুন। সারা দেশে বিজেপি’র প্রথম ৭
বছরে সরকারি কলেজ যেখানে বেড়েছে ২৩ শতাংশ, সেখানে বেসরকারি কলেজ বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। একইসময়ে
পশ্চিমবঙ্গে এই দুটির শতাংশ যথাক্রমে ২১ ও ৬৭। সারা দেশের তু লনায় পশ্চিমবঙ্গে সরকারি কলেজ কম বাড়ছে,
বেসরকারি কলেজ বেশি বাড়ছে।
সারণি ৩: সারা দেশে ও পশ্চিমবঙ্গে ২০১৩-১৪ ও ২০২০-২১ সালে সরকারি ও বেসরকারি কলেজের সংখ্যা [৫]
সারা দেশ পশ্চিমবঙ্গ
সরকারি বেসরকারি সরকারি বেসরকারি
২০১৩-
৭,২৩০ ২২,১০০ ৪০৬ ৫৬৮
১৪
২০২০-
৮,৯০৩ ৩২,৬৯৭ ৪৯২ ৯৫০
২১
৭ বছরে
বৃদ্ধির ২৩ ৪৮ ২১ ৬৭
শতাংশ
শিক্ষাকে বেসরকারিকরণই যে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি, তা ২০২০ সালে নতু ন যে শিক্ষানীতি আনা হয়েছে, তা থেকে
বোঝা যায়। বিভিন্ন জায়গায় সেখানে বেসরকারি উদ্যোগকে মদত দেওয়ার ঝোঁক প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু ভাষণে বা
লিখিতভাবে আপনি অনেক বড়ো বড়ো কথা পাবেন। যেমন শিক্ষানীতিতে লেখা আছে সরকারি উদ্যোগ বাড়ানোর
কথা। খসড়াতে বলা হয়েছিল বিভিন্ন দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে ভারত থেকে বেশি জিডিপি-র শতাংশ ব্যয় হয় (এই শতাংশ
ভারতে ২.৯, ভূ টানে ৭.৫, ফিনল্যান্ডে ৭, ব্রাজিলে ৬, ইংল্যান্ডে ৫.৫, মার্কি ন যুক্তরাষ্ট্রে ৫)। [৬] [৭] ভারতে অন্তত
জিডিপি-র ৬ শতাংশে ওঠার কথা বলা হয়েছে শিক্ষানীতিতে। [৭] [৮] কিন্তু বাস্তবে বিজেপি সরকার আসার পর
থেকে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয়ের শতাংশ দিন দিন কমছে, শিক্ষানীতির খসড়া প্রকাশের পরও কমেছে। এই ব্যাপারে সারণি
৪ দেখুন।
সারণি ৪: ২০১৩ সাল থেকে ২০২৩: বিভিন্ন বছরের কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে শিক্ষাক্ষেত্রে বরাদ্দের শতাংশ [৯]
২০১৩ ২০১৫ ২০১৭ ২০১৯ ২০২১ ২০২৩
বিদ্যালয়
শিক্ষা, ২.৯৮ ২.৩৮ ২.১৬ ২.০৩ ১.৫৮ ১.৫৩
সাক্ষরতা
উচ্চশিক্ষা ০.৯৭ ১.৫১ ১.৫৫ ১.৩৭ ১.১০ ০.৯৮
মোট শিক্ষা ৩.৯৫ ৩.৮৯ ৩.৭১ ৩.৪০ ২.৬৮ ২.৫১
শিক্ষানীতিতে সরকার বলছে যে - ৩,০০০ ছাত্র-ছাত্রীর নিচে কোনো কলেজ থাকবে না, বিভিন্ন কলেজকে জোড়
বেঁধে নতু ন কলেজ হবে। [৮] এতে ৫৭ শতাংশ কলেজ উঠে যাওয়ার কথা। আসলে সরকারি কলেজগুলি উঠে
যাবে। নতু ন কলেজ গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনেক দূরে হবে, বেশিরভাগ যেতে পারবে না, হয় পড়া ছেড়ে দেবে,
নয়তো পয়সা খরচ করে বেসরকারি কলেজে ভরতি হবে।
দেশের প্রয়োজনেই বিষয়ভিত্তিক নামি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর জন্য আইআইটি, মেডিকেল
সায়েন্সের জন্য এইমস, আইনের জন্য আইন বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। বিদেশেও এ ধরনের উদাহরণ আছে।
শিক্ষানীতিতে বলা হচ্ছে - ২০৩০ সালের মধ্যে এসব তু লে দিয়ে সব প্রতিষ্ঠানকে বহুমুখী করে দিয়ে সব কিছু পড়ানো
হবে। [৮] এতে অবশ্যই এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি ও দেশের ক্ষতি হবে।
এখনো পর্যন্ত দেশে গবেষণা করার জন্য ফান্ডিং-এ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যেখান থেকে অর্থ সাহায্য আসে, এখন এই
সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মাথার উপর বসানো হচ্ছে ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন নামে আরেক সংস্থাকে; মূলত, সেই সমস্ত
কিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। [৮] আগের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন বহুমুখী গবেষণার বিকাশের জন্য,
বর্ত মান শিক্ষানীতিতে এই অতিকেন্দ্রীকতার ঝোঁক গবেষণার বিকাশে ক্ষতি করবে।
আসলে উচ্চশিক্ষার বারোটা বাজছে। ইচ্ছাকৃ তভাবেই বারোটা বাজানো হচ্ছে। দেশে এবং রাজ্যে।
সূত্রঃ