Download as pdf or txt
Download as pdf or txt
You are on page 1of 18

1

প্রথমে চোখ খুলে সাবইকে কিরকম


আবছা দেখল বিজয়।দেখল পায়ের
কাছে লক্ষ্মী বসে।খাটের পাশে এক
ধারে দাঁড়িয়ে চিঠি হাতে সুপ্রিয়াদেবী
কান্নাকাটি করছেন।সৌমিলি একটু
দূরে দাঁড়িয়ে।বিজয় বিড়বিড় করল
বিজয়–আমি কোথায়?
লক্ষ্মী–সেই প্রথমবারের মতই আমরা
দুজন এখন খাটে আছি… আমায়
চিনতে পারছ তো?...আমি
লক্ষ্মী…তু মি ম-তে মাইনে দাও,
আমি গ-তে গতর দি
2

বিজয়– আমার বিয়ে হবে না?...হবে


না আমার বিয়ে?
কথাটা বলে আবার চোখ বোজে
বিজয়
লক্ষ্মী–আহা…মানুষটার দুঃখ আর
চ-তে চোখে দেখা যায় না গো…
মানুষ থেকে কেরম যেন একটা কাক
হয়ে গেছে…যতবার বাসা বাঁধার
ট্রাই করছে কোকিলে ডিম পেড়ে
পালাচ্ছে… (সুপ্রিয়াদেবীর দিকে
তাকিয়ে)সব দোষ আপনাদের…
আমার তো মনে হয় সব জেনে শুনে
প্ল্যান করে আপনারা এটা করেছেন
3

সুপ্রিয়াদেবী জোরে কাঁদতে থাকেন।


সৌমিলি চোখ রাঙায়
সৌমিলি–কি বলতে চাইছিস কি তু ই
লক্ষ্মী ও থেমে থাকে না।কোমড়ে
আঁচল বাঁধতে বাঁধতে তেড়ে যায়
লক্ষ্মী–এই…এই…আমাকে
তু ইতু কারি করার তু ই কে রে?...এক
রত্যি মেয়ে…নাক টিপলে দুধ
বেরোয়…এখুনো জায়গার জিনিস
জায়গায় আসেনি…তু ই আমায় চোখ
দেখাচ্ছিস ঢ্যামনা মেয়েছেলে
কোথাকার
সৌমিলি–ভদ্রভাবে কথা বলুন
4

লক্ষ্মী–এই তো খিস্তি খেয়ে আপনি


আজ্ঞে বেরিয়েছে…
সুপ্রিয়াদেবী কাঁদতে থাকে।ঠিক এই
সময়েই মিসেস কর ঘরে ঢোকে।
লক্ষ্মী–এই যে দিদি…দেখ দেখ কি
অবস্থা করেছে মা-মেয়ে মিলে এই
লোকটার
মিসেস কর খাটের কাছে এসে অজ্ঞান
হয়ে থাকা বিজয়কে দেখে তারপর
বলে
মিসেস কর–চিঠিটা দেখি
সুপ্রিয়াদেবী কাঁদতে কাঁদতে হাতের
চিঠিটা এগিয়ে দেন।মিসেস কর
5

পড়তে থাকে আর লক্ষ্মী গজগজ


করতে থাকে
লক্ষ্মী– এই রকম অনামুখো ভাগ্য
কারুর দেখিনি মাইরি…একটা করে
চিঠি লিখে একটা করে বৌ পালায়
মিসেস কর চিটিটা পড়ে কিছু একটা
ভেবে সবাইকে বলে
মিসেস কর– মাসিমা আজ কত
জনকে invite করা হয়েছে?
সুপ্রিয়াদেবী–তা চারশোর মত তো
হবেই
6

মিসেস কর–ঐ চারশোর মধ্যে এমন


কয়েকজন মেয়ে তো থাকবেই যাদের
বিয়ে হয়নি কিন্তু হব হব করছে
সুপ্রিয়াদেবী–মানে?
মিসেস কর–মানে আপনারা দুজনে
এরকম মেয়েদের খুজে ঁ বের করুন
যাদের বিয়ের জন্য তার বাড়ির
লোক ছেলে খুজ ঁ ছে…একজন হলে
চলবে না কিন্তু…minimum পাঁচ
জন
লক্ষ্মী–তারপর?
7

মিসেস কর–তারপর তাদের মধ্যে


থেকে বিজয় যার গলায় মালা পরাবে
সেই হবে আজকের কনে
লক্ষ্মী–সয়ম্বর সভা?...
মিসেস কর– yes…আজ বিজয়ের
বিয়ে হবেই
লক্ষ্মী–উফ জমে যাবে মাইরি
সৌমিলি আর সুপ্রিয়াদেবী মুখ
চওয়াচায়ি করে
মিসেস কর–আমি কিন্তু seriously
বললাম কথাটা
লক্ষ্মী–আমিও তাহলে ওদের সঙ্গে
খুজ
ঁ তে বেরোই দিদি?
8

মিসেস কর–যাও আর দেরি কোর না


লক্ষ্মী–চল চল…আমার যে কি
উ-তে উত্তেজনা হচ্ছে
লক্ষ্মী,সৌমিলি আর সুপ্রিয়াদেবীকে
নিয়ে বেরিয়ে যায়
মিসেস কর এগিয়ে দরজায় ছিটকিনি
তু লে ঘুরতেই দেখে বিজয় ঝিমোতে
ঝিমোতে খাটে বসে আছে
বিজয়– আমায় একটা কলসী-দড়ি
দেবেন?...কিম্বা একটু বিষ…কিছু না
পেলে একটা ব্লেড হলেও চলবে
মিসেস কর–আদদামরা ছেলে হয়ে
এসব বলতে লজ্জা করছে না?
9

খ্যাঁকখ্যাঁক করে উঠল মিসেস কর


বিজয়–(কাঁদ কাঁদ হয়ে)আর কি
করব বলুন তো…চার বছরের বিয়ে
করা বউ আপনার বরের সঙ্গে কেটে
পরল,পরের বউ বিয়ের আগেই
পালাল…লগ্ন ভ্রষ্ট বর আমি… আত্ম
হত্যা করা ছাড়া আর অন্য কোন
উপায় তো দেখছি না
মিসেস কর–চু প করে বসুন
তো…আপনার জন্য বউ অর্ড ার
দিয়েছি…এলেই বিয়ে হয়ে যাবে
বিজয় আর কথা বলে না।মিসেস কর
পায়চারি করতে থাকে
10

মিসেস কর– আপনার বিয়ে আজ


আমি দিয়েই ছাড়ব
বিজয়–বলছি ইয়ে…লীলাকে ফিরিয়ে
আনলে হয় না?
মিসেস কর– ওর বিয়ে হয়ে গেছে
শরতের সাথে
বিজয়– আপনি যে বলেছিলেন শরৎ
কে ডিভোর্স দেবেন না?
মিসেস কর–ভেবেছিলাম কিন্তু ওর
ঐ মুখ আমি আর দেখতে চাই না
তাই দিয়ে দিয়েছি
বিজয়– লীলা আমাকে কিছু জানালো
না তো?
11

মিসেস কর–কেন? জানালে কি


করতেন?...বাড়ি গিয়ে ফু লশয্যার
খাট সাজিয়ে দিতেন?...আজেবাজে
না বকে চু পচাপ বসুন তো…বিয়ে
আজ আপনার হবেই
বিজয়–আপনি বিয়ে করছেন না
কেন?
মিসেস কর–মানে?...যাকে তাকে
বিয়ে করে নেব?
বিজয়–তাহলে আমার বেলা এত
উঠেপড়ে লেগেছেন কেন?
মিসেস কর–আপনার এই বিয়েটা
আমি ঠিক করেছিলাম আর সেটা
12

যখন হয়নি তখন আপনার জন্য


মেয়ে খুজে
ঁ আনাটা আমার দায়িত্বের
মধ্যে পরে
বিজয়–তাহলে আপনার বিয়ে
দেওয়াটাও আমার কর্ত ব্য…অতএব
আমি আবার বিয়ে তখুনি করব
যখন আপনি বিয়ে করবেন
মিসেস কর–মানে?
বিজয়–মানে আপনাকে একা ফেলে
রেখে আমি বউ নিয়ে ঘর করতে
পারব না…দুজনে এক সঙ্গে একা
হয়েছি…এক সঙ্গে দোকা হব
13

মিসেস কর–বাঃ…এই কথা গুলো


আগে মনে পড়েনি কেন?
বিজয়–পরে ছিল কিন্তু ভয়ে
আপনাকে বলতে পারিনি
মিসেস কর–সত্যি করে বলুন
তো,আমাকে কি শুধুই ভয় পান?
বিজয় চু প করে থাকে
মিসেস কর–কি হল বলুন?
বিজয়–বললে চাকরি থেকে তাড়িয়ে
দেবেন না তো?
মিসেস কর–না বললে দেব
বিজয় মাথা নিচু করে বলে
14

বিজয়– আমি আপনাকে…মানে


…আপনাকে আমার
মিসেস কর–কাল থেকে আপনি আর
কাজে আসবেন না
বিজয়–ভালো লাগে
মিসেস কর–আরেকবার বলুন
বিজয়–ভালো লাগে
মিসেস কর–এটা এত দিন বলেন নি
কেন?
বিজয়–কারণ আমাকে আপনার
ভালো লাগার কোন কারণ নেই…
আমাদের মধ্যে কোন মিলই নেই
মিসেস কর–আছে…
15

বিজয় মিসেস করের দিকে তাকায়


মিসেস কর–আপনার আর আমার
মধ্যে অনেক কিছু ই আছে যেটা
দুজনেরই same to same…
আমাদের সব থেকে বড় common
factor হল আমরা দুজনেই relation
এ ধাক্কা খেয়েছি… দেখুন,আপনি তো
চার বছর ধরে আপনার বউ এর মন
যুগিয়ে চলার চেষ্টা করলেন…কিন্তু
লাভ কি কিছু হল?
বিজয় ঘাড় নেরে “না” বলে
মিসেস কর–আপনি ভাবতেন
আপনাদের দুজনের মনের খুব
16

বিজয়–আপনি আমার বউ হয়ে গেলে


আমার চাকরিটা থাকবে তো?
মিসেস কর মুখটা ব্যাজার করে বলে
মিসেস কর–থাকবে
বিজয়–কোন দিন চিঠি লিখে
পালাবেন না তো?
মিসেস কর বিজয়ের কাছে এসে বলে
মিসেস কর– নাঃ
বিজয়–(দাঁত কেলিয়ে)আমি রাজি
দূর থেকে থেমে যাওয়া সানাই আবার
বাজতে শুরু করে
17

মিসেস কর–তাহলে আজ থেকে আমি


তোমার বাড়ির বস আর তু মি
তোমার অফিসের… done?
বিজয়–(বোকা বোকা হেসে)done
বলেই মিসেস করকে পাওয়ার
আনন্দে নাকি চাকরিটা গেল না এই
আনন্দে জানা নেই তবে বিজয়
মিসেস করকে জড়িয়ে ধরলেন। এমন
সময় দরজায় ধাক্কা শুনে দুজনেই
দরজার দিকে ঘুরে তাকায়।লক্ষ্মীর
গলা পাওয়া যায়
লক্ষ্মী– দিদি…একটাও মেয়ে পাওয়া
গেল না…কি করব?... দিদি?
18

বিজয় আর মিসেস কর দুজনে


দুজনের দিকে তাকিয়ে হেসে আবার
একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে।দূর থেকে
ভেসে আসা সানাই এর সঙ্গে হঠাৎ
করে তবলা বাজতে শুরু
করল।দেওয়ালে ঝোলানো ফ্রেমে
বাঁধানো সেলাই এর লেখা দেখা
গেল–”সমাপ্ত”

You might also like