Professional Documents
Culture Documents
Review The Internal and Foreign Policies of Oliver Cromwell As Lord Protector
Review The Internal and Foreign Policies of Oliver Cromwell As Lord Protector
গৃহযুদ্ধের আবির্ভাবে ক্রমওয়েল স্বীয় দক্ষতার বলে দ্রুত পুরোভাগে স্থান দখল
করেন। যুদ্ধের সময় তিনি অশ্বারোহী যোদ্ধা হিসেবে অল্প সময়ের মধ্যে খ্যাতি
অর্জ ন করেন এবং নিজেকে একজন শ্রেষ্ঠ অশ্বারোহী সেনানায়ক হিসেবে
প্রতিষ্ঠিত করেন। পূর্বে তাঁ র কোন সামরিক শিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও তিনি
যুদ্ধক্ষেত্রে সর্বশ্রেষ্ঠ সেনাপতির যোগ্যতা প্রদর্শন করেন। তিনি পার্লামেন্ট
পক্ষের সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন করে দুর্দান্ত 'আয়রন সাইডস' বা 'লৌহপার্শ্ব
সেনাবাহিনী গঠন করেন । এরপর তিনি নিউ মডেল আর্মি' নামে একটি সুদক্ষ
সেনাদল গঠন করেন। এ বাহিনীর দ্বারাই তিনি চূ ড়ান্ত জয়লাভ করে প্রথম
চার্লসের আশা-ভরসা সম্পূর্ণরূপে ধূলিসাৎ করেন।এরূপে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে
ক্রমওয়েল স্বীয় সামরিক প্রতিভাবলে ইংল্যান্ডে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ও
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূ ত হন। প্রথম চার্লসের মৃত্যুদণ্ডের পর
শাসনভার রাম্প পার্লামেন্টের উপর ন্যস্ত থাকলেও প্রকৃ ত ক্ষমতা তাঁ র হাতেই
ছিল। এ সময় তিনি আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের রাজসমর্থকগণকে দমন করে
এ দুই দেশে নিজের কর্তৃ ত্ব প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৬৫৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁ রই নির্দে শে
রচিত 'ইনস্ট্রু মেন্ট অব গভর্নমেন্ট'-এর শর্তানুসারে তিনি ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও
আয়ারল্যান্ডের 'লর্ড প্রোটেক্টর' (রাষ্ট্ররক্ষক; রাষ্ট্রনায়ক) নিযুক্ত হন।
অভ্যন্তরীণ নীতিঃ
আইন সংস্কার:
প্রোটেক্টর হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করার পর ক্রমওয়েল 'কোর্ট অব চ্যান্সারি'
(Court of Chancery) এবং অন্যান্য আইন সংস্কারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ
করেন। দেশের প্রচলিত আইন ব্যবস্থার কোথায় কি ত্রুটি রয়েছে তা পরীক্ষা
করে দেখার জন্য তিনি বিখ্যাত আইনবিশারদ ম্যাথিউহেলের সভাপতিত্বে
একটি সুদক্ষ কমিশন নিয়োগ করেন। তাঁ র অধীনে নতু ন শাসনতন্ত্র 'ইনসট্রুমেন্ট
অব গভর্নমেন্ট'-এর বিধান অনুসারে পার্লামেন্টীয় সংস্কারের একটি পরিকল্পনা
কার্যকর করা হয় এবং ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড একই পার্লামেন্টের
অধীনে একত্রিত হয়। এরূপে ক্রমওয়েল ইনসট্রুমেন্ট অব গভর্নমেন্ট'-এর
মাধ্যমে ইংল্যান্ডকে একটি লিখিত শাসনতন্ত্র প্রদান করেন। তিনি পার্লামেন্টীয়
শাসনে বিশ্বাস করতেন এবং পার্লামেন্টের মাধ্যমে দেশ শাসনের চেষ্টা
পার্লামেন্টের মাধ্যমে একটি সুদৃঢ় শাসনব্যবস্থা প্রবর্ত ন করাই তাঁ র লক্ষ্য ছিল।
কিন্তু তাঁ র এ চেষ্টা ব্যর্থ হয়।এছাড়া, 'বারা' (Borough)-র সদস্যসংখ্যা ৪৩০
হতে ১৩৯-এ হ্রাস করা হয় এবং অপ্রয়োজনীয় বা তু চ্ছ শহরগুলোর সদস্যপদ
বিলুপ্ত করে বৃহত্তর ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বণ্টন করে দেয়া হয় ।
ধর্মীয় নীতিঃ
ধর্মীয় ব্যাপারে ক্রমওয়েল সে যুগের তু লনায় সর্বাপেক্ষা উদার নীতি অবলম্বন
করেন। তিনিই ইংল্যান্ডের প্রথম শাসক যিনি রোমান ক্যাথলিক ছাড়া আর
সকল সম্প্রদায়কে ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রদান করেন। তাঁ র ধর্মীয় সহিষ্ণু তার ধারণা
বর্ত মান যুগের তু লনায় সংকীর্ণ মনে হলেও তৎকালীন যে কোন ইউরোপীয়
রাষ্ট্রের তু লনায় অনেক বেশি উদার ছিল। তার সমালোচকগণ তাঁ র আকাঙ্ক্ষার
কথা বলেন। তাঁ র আকাঙ্ক্ষা ছিল বটে, কিন্তু তা তাঁ র ধর্ম ও দেশের জন্য। তিনি
কখনও তাঁ র ব্যক্তিগত লাভের জন্য আকাঙ্ক্ষী ছিলেন না এবং যা কিছু
করেছেন সবই দেশের মঙ্গলের জন্য করেছেন। পোপ ও বিশপপন্থীরা (অর্থাৎ
ক্যাথলিকগণ) ছাড়া তিনি পিউরিটানদের সকল ধর্মনীতি দলের প্রতি সহিষ্ণু
নীতি অবলম্বন করেন। প্যারিস গির্জার পুরোহিতগণের কার্যকাল ও চরিত্র
অনুসন্ধান করার জন্য তিনি একটি আদেশ জারি করেন। এ অনুসন্ধানের ফলে
যাঁ রা অসৎ কিংবা কমনওয়েলথের প্রতি আস্থাহীন প্রমাণিত হন, তাঁ দের গির্জা
থেকে বহিষ্কার করা হয়। ক্রমওয়েল পিউরিটান মতবিরোধী অনুষ্ঠানাদি বন্ধ
করে দেন। গির্জার তোজোৎসব এবং খ্রিস্টের জন্মদিনের আড়ম্বরপূর্ণ উৎসব
বন্ধ করে দেয়া হয়।
পার্লামেন্টীয় শাসনঃ
ক্রমওয়েল পার্লামেন্টীয় শাসনে বিশ্বাস করতেন। পার্লামেন্টের মাধ্যমে একটি
সুদৃঢ় শাসনব্যবস্থা প্রবর্ত ন করাই তাঁ র অভ্যন্তরীণ নীতির উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু
তাঁ র এ চেষ্টা ব্যর্থ হয়। প্রোটেক্টর পদে অধিষ্ঠিত হয়ে ১৬৫৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি
প্রোটেক্টরেট পার্লামেন্ট আহ্বান করেন। বিরুদ্ধ সমালোচনার ভয়ে পূর্বাহ্নেই
একশ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়। তবু পার্লামেন্টের সাথে ক্রমওয়েলের বিরোধ
হয়। পার্লামেন্ট অধিবেশনে মিলিত হয়েই শাসনতন্ত্রের তীব্র সমালোচনা শুরু
করে এবং এর সংশোধন দাবি করে। বিরক্ত হয়ে ক্রমওয়েল পার্লামেন্ট ভেঙে
দেন ।
প্রথম দুজন স্টু য়ার্ট রাজার আমলে ইংল্যান্ড ইউরোপে যে মর্যাদা হারিয়েছিল,
ক্রমওয়েল তা পুনরুদ্ধার করেন। এভাবে বিচার করলে দেখা যায়,
ক্রমওয়েলের বৈদেশিক নীতির সাফল্যের তু লনায় তাঁ র অভ্যন্তরীণ নীতির
সাফল্য -নগণ্য ছিল।
সমালোচনাঃ ক্রমওয়েলের পররাষ্ট্র নীতি ইংল্যান্ডের জন্য সে সময় বিরাট
সুফল নিয়ে এলেও অনেক ঐতিহাসিকের মতে এটি ভবিষ্যতের নিরিখে
ত্রুটিহীন ছিল না। ক্রমওয়েল স্পেনকে ইংল্যান্ডের প্রধান শত্রু বলে ধরে
নিয়েছেন। কিন্তু প্রকৃ তপক্ষে স্পেন ছিল পতনোন্মুখ, অপরদিকে ফ্রান্স ছিল
দ্রুত উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। সুতরাং স্পেনের বিরুদ্ধে ফ্রান্সকে সাহায্য করে
ক্রমওয়েল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের প্রধান শত্রু ফ্রান্সকেই অধিকতর শক্তিশালী
হবার সুযোগ দিয়েছেন। ভবিষ্যতের ঘটনাবলি এর সাক্ষ্য বহন করেছে। চতু র্দ শ
লুইয়ের শাসনাধীনে ফ্রান্স কিছুকাল পরেই ইউরোপের শান্তি ও স্বাধীনতার
পক্ষে বিঘ্নস্বরূপ হয়েছিল। ক্রমওয়েলের বৈদেশিক নীতির সমর্থনে বলা যেতে
পারে যে, এর বিকল্প হিসাবে ক্রমওয়েলের তখন আর করার কিছুই ছিল না।
কারণ, প্রায় এক শতাব্দী যাবৎ স্পেন ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ধর্মীয় প্রশ্নে ঘোর
বিরোধিতা চলছিল। এ ধর্মীয় প্রশ্নই ক্রমওয়েলকে স্পেনবিরোধী নীতি অবলম্বনে
প্ররোচিত বা বাধ্য করেছিল এবং শুধু ক্রমওয়েলকেই নয়, তাঁ র
সেনাবাহিনীকেও। এটি ভু ললে চলবে না যে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেলে
ক্রমওয়েলের ক্ষমতা এক সপ্তাহও টিকত না; আর তা নিশ্চয় ঘটত যদি
ক্রমওয়েল স্পেনের সাথে মৈত্রীস্থাপন করতেন।